এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে

  • ফারাও-এর দেশে কয়েকদিন - অন্তিম পর্ব

    সুদীপ্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৪৮৪ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • ফেরার পথে আজ আমাদের মধ্যাহ্নভোজ হল একটি ভারতীয় রেস্তোঁরায়, নাম হল ‘A Taste of India’। ভারতীয় বলছি বটে, তবে ইজিপ্সিয়ান খাবারের রেশই তাতে বেশী, তাতে আমাদের দুজনের অবশ্য পোয়াবারো। ‘সানেয়া সেমাক’ নামে এক ধরণের ইজিপ্সিয়ান পদ্ধতিতে তৈরী বেকড ফিশ খেলাম এখানে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমাদের ঐতিহাসিক মিশরের পাট চুকিয়ে রওনা দিলাম খানিক আধুনিক মিশরের দিকে, হুরগাদা শহরে, লোহিত সাগরের তীরে। সেখানেই আমরা একটা দিন সমুদ্রের তীরে কাটিয়ে দেশের পথ ধরব।
     
    হুরগাদাতে আমাদের থাকার ব্যবস্থা রিসর্ট মারকিওর হুরগাদা-তে, এখানে আমরা এসে পৌঁছলাম প্রায় সন্ধ্যে সাড়ে সাতটার দিকে। মাঝে একবার কফি ব্রেক রাখা হয়েছিল রাস্তায়। বিরাট এলাকা জুড়ে এই রিসর্ট, নিজস্ব একটি সমুদ্রতট-সহ। রিসেপশনে ঘর নির্দিষ্ট হয়ে যাওয়ার পর আমাদের সকলের হাতে একটি ব্যান্ড বেঁধে দেওয়া হল, এটি দেখালেই রিসর্টের চত্বরে যত্র-তত্র ঘুরে বেড়ানো যাবে, স্ন্যাক্স কাউন্টার আর বার-এ খাদ্য-পানীয় মিলবে। পানীয় অবশ্য প্রতিদিন যে কোনো একটি বিনামূল্যে, তার পরে নিজস্ব খরচে। রিসেপশন পেরিয়ে কিছু স্যুভেনির-এর দোকান, তারপর একদিকে স্ন্যাক্স কাউন্টার-কাম-বার আর একদিকে ড্যান্স-ফ্লোর। আরও খানিক এগিয়ে বিরাটাকার দুটি সুইমিং পুল, আর তার ওপারেই লোহিত সাগর। বাঁপাশে একটি বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে রেস্তোঁরা, এলাহি খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা, আর দুদিকে ছোটো ছোটো সুন্দর কটেজ-এর সারি। প্রতি কটেজেই তিন-চারটি করে ঘর। দেখেই আমাদের ভালো লেগে গেল। ঘর থেকে জানলা খুলে সামনেই সমুদ্র, যদিও জল তার এতই শান্ত যে ওপারে দিগন্তের বিস্তার না থাকলে জলাশয় বলে ভুল হয়! আমেরিকাতে যেমন সাধারণ হ্রদের ধারে বীচ বানিয়ে রাখে লোকে, এ যেন ঠিক তেমন! ঢেউ তো এক ছিটে-ফোঁটাও নেই। আমাদের ব্যাগ পৌঁছে দেওয়া হল সকলের ঘরে ঘরে। আজ বাকি সময়টুকু বিশ্রাম, আমরা খাওয়া দাওয়া সেরে সোজা চলে গেলাম হোটেলের লাগোয়া বীচ-এ; সমুদ্রের জলে চাঁদের আলো পড়ে মায়াবী হয়ে উঠেছে। ঠান্ডা ভালোই রয়েছে, যার ফলে আমরা দুজন ছাড়া আশেপাশে জনমানুষ নেই। শান্ত সমুদ্রে বহুদূরে একটি-দুটি জাহাজের আলো। মেঘমুক্তো আকাশে একমুঠো মুক্তদানা ছড়িয়ে দিয়েছে কেউ। চোখ সয়ে গেলে আবছা আলোয় অর্ধচন্দ্রাকার বালুতট স্পষ্ট  হয়ে ওঠে। একপাশে সারি দিয়ে লাগানো বেতের ছাতা, তার নীচে পাতা আরামকেদারা কিছু। এখানেই খানিক বসে এই নিস্তব্ধতা-কে উপভোগ করি। শান্ত সমুদ্রের জল তীরে এসে মৃদু ছলাৎ ছলাৎ শব্দ তোলে শুধু। গত সাতদিন ধরে প্রাচীন সভ্যতার যে বিপুল ঐশ্বর্য দেখলাম তারই স্মৃতি রোমন্থন করি। রাতে ঘরে ফিরেও তার রেশ যেন কাটতে চায় না! 
     
    সকাল  আটটায় প্রাতঃরাশ সেরে আমরা বেরিয়ে পড়লাম লোহিত সাগরের রোমাঞ্চকর ভ্রমণে। ভূগোলে পড়ার আগেও জীবনে প্রথম লোহিত সাগরের কথা জেনেছিলাম টিনটিনের কল্যাণে, ‘লোহিত সাগরের হাঙর’ পড়ার সূত্রে (হ্যাঁ টিনটিনের একটি বই-ও আজ অবধি ইংরাজীতে পড়িনি, পাছে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অনবদ্য অনুবাদ ধাক্কা খায়, তাই স্নোয়ি আজও কুট্টুস হয়েই থেকে গেছে)। হোটেল থেকে খানিক দূরে একটি বন্দরে গিয়ে আমরা উঠলাম আমাদের জন্যে নির্দিষ্ট করে রাখা ত্রিতল-বিশিষ্ট ইয়াট, ‘মুনলাইট’-এ। ইয়াট একধরণের ছোটো জাহাজ। এর বেসমেন্ট এ রয়েছে আমাদের মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা। এর উপরের তলে সকলের বসার জায়গা, এই অংশটি কাচ দিয়ে ঢাকা। এর উপরের তলে পিছনের দিকে কিছুটা খোলা জায়গায় বসার ব্যবস্থা, আর সামনের দিকে রোদ পোহানোর ব্যবস্থা। ইয়াট-এ ওঠার পর ইয়াটের ক্যাপ্টেন আমাদের বাকি ক্রু-দের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে কিছু নির্দেশাবলী জানালেন। আমরা প্রথমেই যাবো স্নর্কেলিং এর জন্য লোইত সাগরের বুকে একটি অঞ্চলে যেখানে কোরালের আধিক্য বেশী। সেখানে গিয়ে দেখলাম আরও দু-তিনটি ইয়াট এসে হাজির হয়েছে স্নর্কেলিং-এর উদ্দেশ্যে। আমরা অবশ্য এখানে স্নর্কেলিং করব না ঠিক করে রেখেছিলাম। এর আগে আন্দামানের নীল আইল্যান্ডে এ-জিনিস করেছিলাম, একজন নুলিয়া খুব যত্ন করে সমুদ্রের গভীরে নিয়ে গিয়ে আমাদের স্নর্কেলিং করিয়েছিলেন। অসাধারণ সব রঙিন কোরাল আর মাছের সমারোহ দেখেছিলাম। এখানেও অবশ্য তিনজন ক্রু  জলে রয়েছেন সবসময়, কিন্তু জল দেখে মনে হয়, এ যেন পুকুরে ডুবসাঁতারে নামা, এত নিস্তরঙ্গ। এই লোহিত সাগরের কোরাল অবশ্য  উপর থেকে ততটা আকর্ষণীয় বলে মনে হল না। যাঁরা স্নর্কেলিং করে এলেন, তাঁরাও মোটামুটি একই কথা বললেন। তবে সে যাই হোক, সাগরের জল এত ঘন নীল, একে লোহিত সাগর বলতে অসুবিধেই হয়।  সমুদ্রবিজ্ঞানীরা বলেন হয়ত কোনো এক সায়ানোব্যাকটিরিয়া-র প্রকোপে আর ক্রিয়াকলাপে কোনো কোনো অংশের জল লাল দেখাত এই সমুদ্রের, সে থেকেই এই নাম। তবে আদতে লোহিত সাগর ভারত মহাসাগরের একটি অংশ আর আশ্চর্যের কথা এই সমুদ্রে কোনো নদী-ই এসে মিলিত হয় নি। এর জলও খুবই লবণাক্ত। স্নর্কেলিং এর জায়গা থেকে এবার আমাদের ইয়াট ছুটে চলল আরও গভীর সমুদ্রে, ডলফিন দেখার উদ্দেশ্যে। প্রায় ঘন্টাখানেক চলার পর দেখতে পাওয়া গেল একটি ঝাঁকের, কাতারে কাতারে ডলফিন তরতরিয়ে জল কেটে ছুটে চলেছে। কখনো লাফিয়ে উঠছে, কখনো ডুব মারছে, কখনো প্রায় ইয়াটের গায়ে এসে সঙ্গে সঙ্গে চলেছে আর মাঝে মধ্যে অদ্ভুত সব শব্দ করছে। সে এক অপূর্ব দৃশ্য! বেশ চলছিল এরকম প্রায় আধঘন্টা মতো, হঠাৎ চারপাশ থেকে আরও খানচারেক ইয়াট আর স্পীডবোট ধেয়ে এল পিছনে, ব্যস, দু তিন মিনিটের মধ্যে প্রায় পুরো ডলফিনের ঝাঁকটাই হাওয়া! যাক, সে আর কি করা যাবে, সকলেই দেখতে চায়, আমরা তবু এত লম্বা সময় ধরে ডলফিনের খেলা দেখলাম।
     
    এরপর আমরা চললাম আরেকটি গন্তব্যে, মাঝসমুদ্রে ব্যানানা বোটে চড়তে। এই বোট বা নৌকোটি রাবারের তৈরী আর হাওয়া ভরে ফোলানো। দেখতে ঠিক পাকা কলার মতো-ই আর রং-ও হলুদ। উপরে ছয় জন করে বসতে পারে, একটি করে আঙটা লাগানো আছে ধরে থাকার জন্যে। এর সামনে একটি মোটরচালিত বোটে এই ব্যানানা বোট বেঁধে দেওয়া হয় আর দুরন্ত গতিতে মোটরবোট চলতে শুরু করলে এই ব্যানানা বোট-ও কোনোমতে টাল সামলে পাল্লা দিয়ে জল কেটে দৌড়োয়। জলের ফোয়ারা, দুরন্ত গতির সাথে শরীরের ভারসাম্য রাখা আর অসীম সমুদ্রের বুকে ছুটে চলা, একেবারে রোমহর্ষক ব্যাপার বটে। সবাই মিলে খুব উপভোগ করলাম এই রাইড। এরপর ইয়াটেই হলো মধ্যাহ্নভোজ, সামুদ্রিক মাছ, মীটবলস, নুডলস, সব্জী, স্যুপ, বাকলাভা ইত্যাদি। হালকা যন্ত্রসঙ্গীতের তালে তালে খানিক পা মেলানো হল সবাই মিলে, কারণ আজই আমাদের মিশরে শেষ দিন। আগামীকাল কায়রো ফেরা এবং সেখান থেকে সোজা মুম্বই। সামাহ আর সুশান্তের সঙ্গে আমরা কিছু ছবি তুলে রাখলাম স্মৃতি হিসেবে। সামাহ এখান থেকেই বিদায় নেবে কায়রোর উদ্দেশ্যে, অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে কিছু উপহার সবাই মিলে তুলে দেওয়া হল সামাহ-র হাতে।
     
    বন্দরে ফিরে এসে আমরা কয়েকজন এবার রওনা হবো সাবমেরিন ডাইভের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে। দলের বাকি বন্ধুরা হোটেলে ফিরে গেলেন। আমরা দুটি ছোটো গাড়িতে করে রওনা হলাম আরেকটি বন্দরের উদ্দেশ্যে। পরে এই গাড়িই আমাদের পৌঁছে দেবে হোটেলে। এই সাবমেরিন ডাইভের খরচ আমাদের দুজনের পড়ল প্রায় সাড়ে চার হাজার ইজিপ্সিয়ান পাউন্ড। এই দ্বিতীয় বন্দর থেকে একটি বড় মোটরবোটে চড়ে আমরা চললাম সাবমেরিন প্ল্যাটফর্মের দিকে, যেটি রয়েছে গভীর সমুদ্রে। আমাদের সঙ্গে আরও কিছু বিদেশী পর্যটক যোগ দিলেন। যাত্রা শুরুর আগে আমাদের গলায় পরিয়ে দেওয়া হল সাবমেরিনের নামাঙ্কিত কার্ড, প্রতি কার্ডে আলাদা নম্বর বসানো। আমাদের সাবমেরিনের নাম – সিন্দবাদ। সাবমেরিন প্ল্যাটফর্ম-টি আসলে ভাসমান বলে মনে হলেও নীচের দিকে সম্ভবতঃ কোনোভাবে আটকানো আছে একি স্থানে স্থির রাখার জন্যে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমাদের সামনেই ভুস করে জলের উপর ভেসে উঠল ‘সিন্দবাদ’। আগের পর্যটক-দলকে ফিরিয়ে আনা হল, তাঁরা এক এক করে প্ল্যাটফর্মে উঠে আসতেই আমাদের নামার পালা। এখনও অবধি সাবমেরিনে ঢুকেছি দুটি জায়গায়। একটি বিশাখাপত্তনমের বালুতটে রাখা সাবমেরিন আই এন এস কুরুসুরা, এটি অবশ্য একেবারেই ছোটো; আর একটি সেই আমেরিকার বাফেলো নাভাল পার্কে রাখা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত ইউ এস এস ক্রোকার SS-246 – এটি অবশ্য বিশাল মাপের। তবে সত্যি সত্যি সাবমেরিনে উঠে সমুদ্রের গভীরে ডাইভ দেবো সেই ছোটোবেলায় পড়া নটিলাস-এর মতো, এ অবশ্য অনন্য অভিজ্ঞতা! সাবমেরিনের ছোট্ট লোহার সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে এলাম, এটি অবশ্য সত্যিকার যুদ্ধের কাজে ব্যবহৃত সাবমেরিন নয়, শুধুই পর্যটকদের উদ্দেশ্যে বানানো। ভিতরে একটি লম্বা করিডোর, তার দুপাশে সারি দিয়ে কাচের জানলা আর প্রতিটি জানলার সামনে একজন করে বসার ব্যবস্থা। আর একেবারে সামনে রয়েছেন চালক; সবাই বসার পর সাবমেরিনের উপরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হল ল্যাচ ঘুরিয়ে। এরপর টের পেলাম ব্যালাস্ট ট্যাঙ্কে জল ভরে দিয়ে সমুদ্রতল ছেড়ে নীচে নামছে সাবমেরিন, ডাইভ শুরু। প্রায় ৪৫ ফুট নীচে নামার পর সামনের দিকে চলতে শুরু করল। বাইরে দুজন ক্রু ডুবুরীর পোষাক পরে মাছেদের খাবার দিচ্ছে আর প্রতিটি জানলার সামনে সেই মাছের দঙ্গলকে নিয়ে ঘুরছে। বারাকুডা, ইন্দো-প্যাসিফিক সার্জেন্ট, গোল্ড-ব্যান্ড ফিউজিলিয়া, ফাইভ-লাইন কার্ডিনাল এরকম বেশ কিছু মাছ চিহ্নিত করতে পারলাম। আজ্ঞে না, আমি মৎস্য-বিশারদ নই, ওই জানলার পাশেই মাছেদের ছবিসহ তালিকা দেওয়া ছিল, তা থেকেই লোহিত সাগরে বসবাসকারী এই মাছেদের চিনে নেওয়া। এরপর সুন্দর সুন্দর রঙবেরঙের কোরালও দেখলাম বেশ কিছু। তবে কিছু কৃত্রিম জিনিসও রাখা রয়েছে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্যে, হাঙরের কঙ্কাল, পুরনো জাহাজের ভাঙা অংশ, নোঙর ইত্যাদি। প্রায় ৪৫ মিনিটের সফর শেষে আবার আমরা ভেসে উঠলাম সমুদ্রপৃষ্ঠে, প্ল্যাটফর্মের গায়ে।  সাবমেরিন ডাইভের অনবদ্য অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে এবার আমরা ফিরে চললাম হোটেলের দিকে।

    রিসর্টের অলস বিকেলে সমুদ্রতটে সূর্যাস্ত উপভোগ করে, আমাদের দলের অন্য পর্যটকদের সঙ্গে গল্প-গুজব করে কাটিয়ে দিলাম। আজ তাড়াতাড়ি নৈশাহার সেরে বিশ্রাম। পরের দিন ভোরের নৈসর্গিক সূর্যোদয় যেন আমাদের এই সফল মিশর পর্যটনের মধুরেণ সমাপয়েৎ! হুরগাদা বিমানবন্দরে আসার পথে বাসে আমরা সবাই এক এক করে ভাগ করে নিলাম সেই মধুর অভিজ্ঞতা।  কায়রোতে নেমে আমাদের পাঁচ ঘন্টার অপেক্ষা, সুশান্তের ব্যবস্থাপনায় সেখানেই হল মধ্যাহ্নভোজের সুন্দর ব্যবস্থা। কায়রোতে দুটি আধা ভারতীয় রেস্তোঁরা আছে, ‘রেড এলিফ্যান্ট’ আর ‘হোয়াইট এলিফ্যান্ট’;  প্রথম আসার পর আমরা গিয়েছিলাম হোয়াইট এলিফ্যান্টে। আজকের মধ্যাহ্নভোজ প্যাক হয়ে এল ‘রেড এলিফ্যান্ট’ থেকে। কায়রো বিমানবন্দরে বিমানের অপেক্ষায় বসে ভাবছিলাম আমাদের এই পুরো ট্যুরের কথা, ভ্যালি অব দ্য কিংস-এ পুরো একটা দিন কাটালে কি আরও ভালো হত? অথবা দেনদেরা-র হাথোরের মন্দিরটা যদি দেখা যেত, যার নাম এখানে এসেই প্রথম শুনেছি! হ্যাৎসেপশুটের মন্দিরে পুন্ত-এর সঙ্গে বাণিজ্যের ছবি বা রাণীর ফারাও হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করার গল্পের ছবি দেখা হল না যে! যেখানেই ভ্রমণে যাই, নিঃশেষে কি কোনো কিছুই দেখা হয়? হয় না তো!  আসলে, মিশর ভ্রমণ তো বটেই, যে কোনো ভ্রমণই যেন দিনের শেষে ছোট গল্পের মতো,

    “অন্তরে অতৃপ্তি রবে,
    সাঙ্গ করি মনে হবে
    শেষ হয়ে হইল না শেষ।”

    মিশর নিয়ে যা পড়েছিলাম, যা জেনেছিলাম, তা আরও সহস্রগুণে ধরা দিল এই ভ্রমণের সূত্র ধরে, সেকথাই বা অস্বীকার করি কি করে! সাড়ে চার হাজার বছরের ইতিহাস মাত্র ন’দিনের আয়নায় ধরে রাখা, সেই সভ্যতাকে স্পর্শ করার স্মৃতি চিরদিনের করে রেখে দেওয়া, সে-ও কি কম কিছু! কায়রোর আকাশ থেকে মিশর ছেড়ে যাবার মুহূর্তে অবধারিতভাবে তাই মনে হল –

    “যাবার দিনে এই কথাটি বলে যেন যাই-
    যা দেখেছি যা পেয়েছি তুলনা তার নাই।“

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৪৮৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুদীপ্ত | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ২১:২১531095
  • ছবি ইত্যাদি দেওয়া গেল না, browser cache পরিষ্কার করে, অন্য browser ব্যবহার করে, incognito করেও দেখলাম, ছবি আপলোড হচ্ছে না। এ কি শুধু আমার ক্ষেত্রে হচ্ছে? কিন্তু বাকি সব তো ঠিকই আছে। ভাটে জানিয়েছিলাম, পরে ঠিক ঠাক হলে ছবি দেব।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:927f:3f75:8a77:***:*** | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৩২531099
  • এই লেখাটা সময় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ।
  • পাপাঙ্গুল | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪১531101
  • আমিও একবার টেস্ট করে দেখলাম। ছবি আপলোড হচ্ছে না। 
  • | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ২২:১২531103
  • না ছবি আপলোড হচ্ছে না। গুরু টেক টিম আপ্পডেট দেবে আশা করি।
  • সুদীপ্ত | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ২২:১৩531104
  • অনেক ধন্যবাদ পলিটিশিয়ান , শুরু থেকে সঙ্গে থাকার জন্যে, উৎসাহ নিয়ে পড়ার জন্যে, প্রশ্ন করে উৎসাহ দেওয়ার জন্যে! 
     
    পাপাঙ্গুল -  টেস্ট করার জন্যে ধন্যবাদ! যাক তাহলে আমার দিক থেকে সমস্যা নেই। পরে না'হয় কিছু ছবি দিয়ে যাব সমস্যা ঠিক হলে।
  • সুদীপ্ত | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ২২:২২531105
  • হ্যাঁ দমদি,যাক তাড়া নেই , আসল ছবিছাবা সব দেওয়া হয়ে গেছে , এই পর্বে শুধুই নানাবিধ আমোদ-প্রমোদ। পরে দেব না'হয়। তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ লেখা শুরু থেকে সঙ্গে থাকার জন্যে,উৎসাহ দেওয়ার জন্যে!  
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন