“স্কুলে থাকার সময় বিয়ে নিয়ে অনেক কথা শুনতাম। বিয়ে করতেই হয়, সংসার-সন্তান-সন্ততি, কত কী। বেশ বিরক্ত লাগত। বিয়ের আচার-আচরণগুলো ভালো লাগলেও বিয়েতে আমার কোনো বিশ্বাস নেই। আজ বাড়িতে সব জানে। মা আশাবাদী হয়তো আমি আমার ভালোবাসার পুরুষটিকে বিয়ে করব। কিন্তু আমার তেমন ইচ্ছে নেই।
আগে ভাবতাম, আমার সুশিক্ষিত বাবা আমার সমকামিতা মেনে নেবে। কিন্তু আমার আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মাকে বোঝতে বেগ পেতে হবে। আসল ঘটনাটি একদম বিপরীত। স্কুলে থাকাকালীনই সমকামিতা আমাদের সমাজে স্বীকৃত নয় – একটা পারিবারিক আলোচনাতে বাবা বলেছিল। আমার সিরিয়াল-প্রিয় মা ততদিনে ‘দোস্তানা’, ‘মেমরিস ইন মার্চ’ দেখে ফেলেছে। আর তখন একটি হিন্দি জনপ্রিয় সিরিয়ালে (মর্যাদা/মরয়াদা, ইন্দ্রানী হালদার ছিলেন) অন্যতম প্রধান চরিত্র ছিল সমকামী এবং মায়ের চরিত্রটির জন্য বেশ সহানুভূতি ছিল। সে দিনই বুঝেছিলাম, মা তার সন্তানকেও বুঝবে। হ্যাঁ মা বুঝেছে। কিন্তু আমি যেহেতু অত্যন্ত আদুরে, তাই মা-র এখন চিন্তা তার অবর্তমানে আমার কী হবে। আমি আদরে বড় হলেও নিজের ও বাড়ির দেখাশোনা, দায়িত্ব পালনে অক্ষম নই। হ্যাঁ কিছু কিছু বেসিক কাজ পারি না, সেটা অন্য কথা। তবে মা-র ভয়টা অমূলক নয়। আমি একা থাকতে পারি না। তাই বিয়ে না করলেও ভবিষ্যত কী তা নিয়ে মাঝে মাঝে যে চিন্তা হয় না, তা নয়। তার উপর আমি স্বাধীনচেতা, স্বাবলম্বী, নিজের মতপ্রকাশে ভয় পাই না। এমন মানুষের সঙ্গে ঘর করা (হোক না লিভ ইন) সত্যিই দুরূহ। তাই চিন্তা হয়।
তবে এখন প্রধান চিন্তা হল রোজগারটা আর একটু বাড়াতে হবে। সেভিংস করতে হবে। কেউ থাকুক না থাকুক – অর্থের অভাবে যেন কষ্ট না পাই। তাই বন্ধুগণ, প্রেম নিয়ে ঘ্যানঘ্যানানি থাকবে। বিয়ে নিয়ে দ্বিধা থাকবে, সমস্যাও থাকবে। কিন্তু নিজের পায়ে দাঁড়াতেই হবে, বিয়ে করে বা না করে।”