এই দশম পর্ব শুরু করছি অরূপদার অ্যানেকডোট নিয়ে। সময়টা সত্তর দশকের শুরুর দিকেই। অরূপদা ডাকসাইটে ফরেন কোম্পানির এগজিকিউটিভ। তো সেই কাটিং এজ অব টেকনোলজি কোম্পানির হ্যামারিং হেড অব ম্যানেজমেন্ট সদলবলে গেছেন এক কলিগের বিয়েতে। তখন সবেমাত্র ইতি-উতি কেটারারেরা আসতে শুরু করেছেন। সে বিয়েবাড়ীতেও এক কেটারার হাজির। মেনু তখনো গতানুগতিক। তবে কলাপাতার বদলে ল্যামিনেটেড শালপাতার গোল থালা। তার উপরে কাগজের ন্যাপকিন। খাওয়া শেষ হলে একজন এসে প্রতি পাতের পাশে লাল-নীল-হলদে রঙের প্লাস্টিকের বাটি দিয়ে গেলে সবাই হতভম্ব হয়ে যায়। এখন কি আবার স্যুপ দিয়ে শুরু করতে হবে? সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে, আর তখনই আরেক মূর্তিমান কেটলিতে করে গরম জল ঢেলে-ঢেলে দিয়ে গেলো বাটিগুলোতে। সাসপেন্সের শেষ সীমায় পৌঁছেছে নিমন্ত্রিতের দল, আর সে সময়েই আরেক ব্যক্তি এসে প্রতি বাটিতে একটা করে পাতলা প্লাস্টিকের টুকরো ফেলে দিয়ে চলে গেল। পুরো নেমন্তন্ন বাড়ীতে এক নিবিড় নীরবতা। চারদিক সাসপেন্সে থমথম। অতঃকিম?
সিনিয়র ম্যানেজার রাগবি খেলেন, খুব বীর। তিনিই বললেন, “ওহে, এটা বোধহয় সাবান। এটাতেই হাত ধুতে হবে”। কিছুটা দোনোমোনো করে সাহস করে বাটিতে হাত ডুবিয়ে সবাই তো বিস্ময়ে অধীর। সত্যই তাই! সেই ঈষদুষ্ণ, ফেনিল, সুগন্ধি জলে বার বার হাত ধুয়ে অবশেষে ন্যাপকিনে হাত মুছে অভিভূত প্রত্যেকেই। টেকনোলজির জয়ধ্বনি দিতে দিতে বাড়ি ফিরেছিলেন সেদিন সবাই।
টেকনোলজি কি শুধু সাবানেই আটকে ছিল? না, না। দু’একটা বাড়িতে তখন গোলাপজল স্প্রে করে অতিথিদের সুরভিত করা হত। প্রায় সব সময়েই বাড়ীর একেবারে শিশুদের এই কাজ দেওয়া হত - তারাও ব্যস্ত থাকত আর অতিথিরাও বিরক্ত হতেন না। তাদের হাঁটুর কাছটাই যা একটু গোলাপিত হত। এইবারে দেখলাম, একটা সরু মতন ফুলেল তোরণ বানানো হয়েছে, নীচে ওয়েলকাম লেখা গালিচা। উরেঃবাব্বা। তাতে পা দিলেই ফ্যাঁচ করে একগাদা গোলাপজল ঠ্যাস করে মাথায় এসে পড়তো। শীতকালে, বিশেষত টেকো লোকদের পক্ষে, মোটেই ব্যাপারটা আরামের ছিল না। অনেকে তো প্রথম অভিজ্ঞতায় চমকে ছত্রিশ হয়ে হেঁচকি-টেঁচকি তুলে একশা। তায় কৌতূহলী হয়ে হানি যুগল ভুরু, আকাশ পানে তাকালেই ফের আরেক দফা ফ্যাঁচাত। একবার অভিজ্ঞতার পরে দ্বিতীয় কোনও বিয়েবাড়ীতে ঐ ফাঁদ দেখলে লোকে লাফ দিয়ে গালিচা পার হয়ে বা পাশ কাটিয়ে ভিতরে ঢুকতেন। ওটা বেশীদিন চলেও নি।
আর সেই সমাজ বিপ্লব? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। এসে গেছে কেটারার। বাঙালী নেমন্তন্ন বাড়ীর সব ক’টি প্রথাই এক এক করে বিদায় নেবে।
সব ফ্যামিলিতেই একজন সাধন ঠাকুর থাকতেন। আরে না না, গুরুদেব নয়। উনি রান্নার ঠাকুর। সব অনুষ্ঠানেই উনি হাতা-খুন্তি নিয়ে হাজির। আমাদের পরিবারের জনের নাম ছিল সাধন। তাই ঐ রকমের নাম। অন্য পরিবারে হয়তো ভোলা বা হরিপদ - এই সব নামের ‘ঠাকুর’ থাকত। ভিয়েন তাঁরাই সামলাতেন। স্পেশাল আইটেম বাদ দিলে বাজারটাও ওঁরাই করতেন।
প্রথম দিকটায় কেটারারদের একটা চোরাগোপ্তা ভাব ছিল - শহর দিয়ে গ্রাম ঘেরো। বড়লোক বাড়ী থেকে শুরু করে ট্রিকল-ডাউন-থিওরিতে পৌঁছে যাও মধ্যবিত্ত ঘরের হেঁসেলে। একটা হাইব্রিড ব্যাপারও ছিল। পরিবেশনে আর সেই প্যান্টের উপর গামছা দেওয়া দাদা-কাকার দল নয় - রীতিমতো জুতো মোজা পরা, ইস্ত্রি করা শার্ট-প্যান্ট পরা পরিবেশনকারীদের দল। এমন কি, একটা ল্যাগব্যাগে টাইও থাকতো। বাপ রে বাপ! ভিয়েনে তখনও লুঙ্গি বা গামছা পরা সাধন ঠাকুর বা হরিপদ ঠাকুর - কিন্তু বাইরে ওরকম তাক লাগানো “কেটারার”। লোকে ভয়ে সিঁটিয়ে থাকত। আরেকটা মাছ চাইব কি করে? ইংরেজিতে বলতে হবে নাকি? আর গাদামাছকে ইংরেজিতে বলেই বা কি?
ক থেকে চন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত - সর্বত্রই উল্টে গেল, পাল্টে গেল। পরিবার ক্রমশ ছোট হচ্ছে। রুই-বিশারদ ভবেনদা কবেই গত হয়েছেন। ছোটদাদুও আর পয়সা কড়ির হিসেব রাখতে পারেন না। সন্টুদা চলে গেছে গাল্ফে। ইয়ং ম্যানের অভাব।
কেটারার আসায় প্লেট প্রতি খাবারের খরচায় ঐ “সপরিবারে, সবান্ধবে” নেমন্তন্ন করাটাও উঠে গেল। কার্ড হাতে দিয়ে পরিষ্কার বলা হত – “আপনি আর মিসেস কিন্তু অবশ্যি আসবেন” - যার অন্তর্নিহিত অর্থ হল, শুধু আপনারা দুজনেই আসবেন। আপনার মা-ও নয়। আপনার কলেজে পড়া ছেলেও নয় আর সদ্য চাকরি পেয়ে মফঃস্বল থেকে আসা ভাইও নয়। জাস্ট আপনারা দুইজন। ঠিক আছে?
ঘোষাল বাবুর বিশাল সংসার - এগারোজন মানুষ। ওঁকে “সবাই আসবেন” বললে তো সত্যিই সবাই-ই চলে আসবেন। এগারো প্লেটের খরচা গুনতেই ঘাম ছুটে যায়। গৃহকর্তার দরাজ-দিল ঠিকই, কিন্তু টাকার তো গাছ নেই। তাই “পাড়া শুদ্দু সব্বাইকে” খেতে ডাকার নিয়মটাও হাওয়া হয়ে গেল। তাই খুব সিলেক্টিভ, খুব স্পেসিফিক নেমন্তন্ন।
প্রথম দিকে সেরকম জাঁদরেল কেটারার ছিল না। পাড়ারই মুখার্জী বাবুর “মুখার্জী কেটারার”। বায়না পেলে রান্নার লোকজন নিয়ে হাজির। নিজস্ব কর্মচারী কেউ নেই। এক দিনে একটার বেশী বায়নাক্কা সামলাতে পারতেন না। তাই আগেভাগেই বুক না করলে মুশকিল।
মেনুতে ঘোরপ্যাঁচ কিছু ছিল না। একই খাবার। শুধু বাড়ির কাউকে ঝক্কি পোয়াতে হত না। ব্যস।
মেনুতে প্রথম ঝটকা এলো শেষপাতে। আইসক্রিম!! এসে গেলো আইসক্রিম। সে এক তুমুল ব্যাপার। ঐ কোয়ালিটি কোম্পানির আইসক্রিম কিন্তু সহজলভ্য ছিল সর্বত্রই। কিন্তু বিয়ে বাড়ীতে সেটাই দেখে - সে যে কি হ্যাংলামি হতো ভাবা যায় না। আর কেটারারও দেবে না - একটা করে দিয়েই, পরের ব্যাচের জন্য এমন হৈ-হুল্লোড় করে শোরগোল পাকাতেন, যে বনেদী গণ্ডার ছাড়া আর কেউ দ্বিতীয়টির জন্য অপেক্ষা করতে পারতেন না।
আস্তে আস্তে সেরকম লোক দ্যাখানো, বুক ফোলানো হ্যাংলামোও উঠে গেল। সেই যে পঞ্চাশ পিস মাছ বা এক কেজি মাংস বা ষাটটা রসগোল্লা খাওয়া লোকেরাও - তারাও আর রইল না। সুনীল গাঙ্গুলি লিখেছিলেন, বাঙালরা আসার পর কলকাতার তাবৎ ভুতুড়ে বাড়ি থেকে বনেদী ভুতেরা পালিয়ে গেছিল। জ্যান্ত মানুষেরাই জবরদখল করে নিয়ে ছিল সেই সব ভুতের বাসা - সে রকমই, নেমন্তন্ন বাড়ীতে যত ঠাট বাট বাড়তে থাকল, সেই হ্যাংলা লোকেরাও কেমন কুয়াশা হয়ে গেলেন।
বিজলি সিনেমার পিছনে ছোট্ট দোকান থেকে কেটারিং শুরু করলো বিজলি-গ্রিল। ক্রমশ গমগমিয়ে উঠল তাদের বিজনেস। ফিস-ওর্লি এনে বাজারে হাল্লাগুল্লা এনে ফেললেন তাঁরা। নারান স্যান্নালের মেয়ের বিয়েতে সুনীতি চাটুজ্যে মশায় এসে চেপে ধরলেন ম্যানেজারকে –“ওর্লি নামের ব্যুৎপত্তি কি?” কেউই জানেন না। শেষ পর্যন্ত সাব্যস্ত হল ফ্রান্সের অর্লি শহর থেকেই এই নামকরণ। হবেও বা। সেই তেল-চপচপে মাছের ডিশ খেতে যেমনই লাগুক, স্রেফ নামের ঝাঁজেই কুপোকাত হল বাঙালী।
মেনু কার্ডও আসতে শুরু করল তখন। আলুর দমের নাম হল আলু দম-ফুকত। মুগের ডালের নাম হল মুগমোহন। মুরগির ঝোলকে পাতি ঝোল বললে বড্ড সাদামাটা শোনায় - তাই চিকেন কড়াই বা লহরী চিকেন গোছের নাম দেওয়া হল। ফুলকপির প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব খাইয়ে বেবাক লোকদের কিংকর্তব্যবিমুঢ় প্রচেষ্টাও কি হয়েছিল কখনও?
তবে সব থেকে শেষে বদলাল মেনু। ঐ একই ধাঁচের মেনুতে ফিস-ওর্লি টাইপের এক-আধটা গেরিলা আক্রমণ ছাড়া তেমন খুব একটা এক্সপেরিমেন্ট হয়নি।
জানি না ব্যাপারটা আপনাদের নজরে এসেছে কিনা - সেটা হচ্ছে বিয়েবাড়ির মেনু থেকে ডিমের অনুপস্থিতি। ডিম কি ফ্যালনা নাকি? কিন্তু আমি কখনো শুনিনি ডিমের কোনও পদ দেওয়া হচ্ছে বিয়েবাড়িতে। প্রায় সত্তর বছর আগের কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ির মেনুতে দেখলাম ডিমের টিকলি পোলাও। টিকলি মানে বড়া। বোধহয় আলু-ডিমের বড়ার পোলাও। এ ছাড়া কখনও ডিমের ছোঁয়া দেখিনি কোনও মেনুতে।
আর আরেক বিপ্লব ঘটে গেলো পরিবেশনে। পাত-পেড়ে খাওয়ার জায়গার পাশেই হল বুফের ব্যবস্থা। নেমন্তন্নটা যতটা নৈর্ব্যক্তিক করা যায়। ঐ যে পিসিমা-গোছের একজন ঘুরে-ঘুরে বলে যেতেন, “পেট ভরে খেয়ো কিন্তু সকলে। নিজের বাড়ির মতন করে চেয়ে চেয়ে খেয়ো” - এই লব্জটি ছাড়া আমাদের ছোটবেলার বিয়েবাড়ি ভাবাই যেত না। সেটি আর রইল না। বুফে চালু হতে সকলেই খুশি। আর ব্যাচের পরাধীন নই। মাংসের জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে থেকে-থেকে-থেকে শেষটায় সেই লুচি আর ডাল খেয়েই পেটটা প্রায় ভরিয়ে দেওয়ার কোনও দরকার নেই। সরাসরি মাংসের ট্রে-তে পৌঁছে গেলেই বা আটকাচ্ছে কে? আপনি শর্ট লিস্টেড, আপনি নিমন্ত্রিত, আপনি স্বাধীন। টেবিলে-চেয়ারে বসে খেতেন তখন শুধু সিনিয়র-সিটিজেনরা আর বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে মায়েরা। বাকি সবাই বুফে-তে। প্লেট হাতে নিয়ে নানান লোকদের সাথে গালগল্প করে ঘুরে ফিরে খাওয়া। তবে এই স্বাধীনতা বিনামূল্যে আসেনি। কত শত শাড়ি, পাঞ্জাবি, শালের আত্মত্যাগের পরে বাঙালী দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে কাঁটা বেছে মাছ খেতে শিখেছে, কয়জনা সেই করুণ ইতিহাসের খবর রাখেন?
ড্রাই ক্লিনিং-রর দোকানে কি এখনও শোনা যায় সেই উদ্বিগ্ন প্রশ্ন, “শালের এইখান-টায় টমেটোর চাটনির দাগটা চলে যাবে তো? চাটনিতে কিন্তু কিসমিসও ছিল”।
কোনটা কার্য, কোনটা কারণ জানি না। বা হয়তো ইতিহাসের অমোঘ যাত্রা। ক্রমশই বুফে-ফ্রেন্ডলি মেনু শুরু হল। তেমন একবগ্গা ঝোলের ডিশ আর নেই। সুড়ুত করে ঝোলটুকু চেটে খাওয়ার আওয়াজও বিলুপ্ত হল। চারিদিকে শুধু কচর-মচর শব্দ। আর কি কখনও লোকে “কবজি ডুবিয়ে” খাবে?
হৈ-হৈ করে মেনুতে ঢুকে পড়ল বিরিয়ানি আর চিকেন-চাপ। এমন কি স্যালাডও। আচ্ছা, বিয়ে বাড়িতে গিয়ে কে খায় বলুন তো – গাজর-শসা-টমেটোর ককটেইল? সে যতই না ভিনিগারে চোবানো পেঁয়াজের ফালি রেখে লোক ভোলানোর চেষ্টা করুন।
ব্যস। এই পর্যন্তই। আর নয়। গত তিরিশ বছর ধরে আমি প্রবাসে। আত্মীয়-স্বজন-এর বিয়েতে বার-কয়েক গেছি ঠিকই কলকাতায়, কিন্তু প্রবাসের মতন এখন বহু বিয়েবাড়িই হয় হোটেলে, রিসর্টে বা ক্লাবে। সগর্বে ঝলমল করে “বার”"। হার্ড ড্রিংকের অবাধ ও অঢেল প্রবেশ। বিরিয়ানির পাশেই থাকে পাস্তা। লুচি বা রাধাবল্লভির বদলে তিন-চার কিসিমের “ইন্ডিয়ান রোটি”। প্রবাসী মানুষের কথা মনে রেখে “ভেজ” খাবারের বেশ রমরমা। এইরকম। শেষপাতে মিষ্টির দলে লেডিকেনিকে হটিয়ে এসে গেলো গুলাব-জামুন। ম্যাংগো-সুফলে।
সেই অর্থে সাবেকি বাঙালিয়ানা খুব একটা নেই।
প্রবাসে, খাওয়ার বশে - সেই সব গপ্পো আবার আরেক দিন হবে’খনে।
আচ্ছা, শুনুন। ডিডি-র কিচাইনের সিরিজ ওয়ানের এখানেই আপাতত সমাপ্তি। ছোটা সা ব্রেক। আবার আসিব ফিরে সিরিজ টু-তে। শিগগিরই।
বনেদি গন্ডার - উফফ!
যেই ভাবছি, এটা একদম ডিডি ঘরানার লেখা হচ্ছে, ব্যাস, লিখে দিলেন শেষ কিস্তি
কিন্তু ডিডি। আশির দশকের গোড়াতেও দেখেছি বিয়েবাড়ির কার্ডে লেখা থাকতো " আপনি / সবান্ধবে "। কেউ কেউ ঐ সবান্ধবে-টা কেটে দিতেন। সেই জন্যে আমি বিয়ের কার্ড এলেই উন্মুখ হয়ে দেখতাম সবান্ধবে কাটা আছে নাকি। আপনিওয়ালাদের একজন বাবাকে নেমন্তন্ন করতে এসেছেন, তাঁর সামনেই বলে বসলাম, দেখি , দেখি, আপনি না সবান্ধবে? তাতে উনি লজ্জা পেয়ে বললেন, তুমিও এসো । জানি না এটা আমাদের ঐ শহরেরই বৈশিষ্ট্য কি না ।
এক জ্যেঠতুতদিদির বিয়ে হয় আমাদের বাড়ি থেকে। তাতে জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সবই আমার বাবাকে করতে হচ্ছিলো। কার্ড ছাপা হয়ে বাড়িতে এলে দেখি ঐ অব্লিগেটরি অবলিকটি নেই। নিজেই বসিয়ে দিতে যচ্ছিলাম, (প্রুফ কারেকশান আর কি ), এমন সময়ে বাবা এসে কানে প্যাঁচ দিয়ে বললেন, আমাদের বাড়িতে ঐ অবলিকটি থাকে না। সবাই আসবে।
ওটা আমিও দেখেছি - আশির দশকে (নন কলকাতা নন পব)। আর থাকতো সরকার দ্বারা অতিথি নিয়ন্ত্রন আইন মোতাবেক..., আর পত্রদ্বারা নিমন্ত্রনজনিত ত্রুটি।
আমাদের কেটারার আসতে আসতে নব্বই। সেও ওই মুখার্জি কেটারার মত।
বেড়ে লাগল শেষ পর্ব টা। তবে এটাতো আর শেষ না, সিজন ফিনালে ছিল। আবার দেখা হবে পরবর্তী সিজনে।
দাঁড়িয়ে বুফের ব্যাপার টা অসম লিখেছেন।
যা , শেষ হয়ে গেলো। গোগ্রাসে পড়ছিলাম সবকটা
অসাধারন লেখা। সেই পুরনো দিনের কলাপাতায় নেমন্তন্ন খাওয়া থেকে এখন ক্লাবে বা হোটেলে গিয়ে বুফে খাওয়া! তবে দাঁড়িয়ে খেতে আমার ভাল্লাগে না, বুফে হলেও টেবিলে বসে খাই, বারকয়েক যাওয়া আসা করতে হয় এই যা।
এবাবা জানেন না ডিম তো অযাত্রা। কোনো শুভকাজে কক্ষুণো ডিম থাকে না। যেমন পরীক্ষা দেওয়া বা দূরে কোথাও যাওয়ার সময় ডিম খেতে এমনকি ডিম চোখেও দেখতে নেই। শুধু লম্ব ট্রেনযাত্রায় কখনো কখনো ডিমের কষা নেওয়া চলে, তাও যদি ঠাকুমা দিদা গোছের কেউ সঙ্গে না থাকে তবেই।
বাঙালি ক্রমে সভ্য হৈল। আপনি অবলিক ইত্যাদির বদলে ছাপা হতো শুধু 'আপনি'। ভাগ্যবানদের জন্য লাল কালিতে 'সবান্ধবে' শব্দটি হাতে লিখে জুড়ে দেওয়া হতো।
কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি টাইপ ভোজ খেয়েছি হায়দরাবাদে অশরাফ বনেদি মুসলিম দাওয়াতে। নো বুফে। মস্তো মস্তো গোল টেবিলের চারদিকে বসা। মাঝখানে নবাবি ডিজাইনের গামলা, পরাতে অনন্ত কিসিমের ভোজ্য, মূলত আমিষ, বার বার ভরে দেওয়া হচ্ছে। অশরাফ মুসলিমরা ওখানে গোমাংস সেবা করেন না। মুর্গি, কচি পাঁঠা এবং বৃদ্ধ মেষ। কবাব, কোর্মা, রেজালা। নান, পরাঠা। তিন-চার রকমের পুলাও ও বিরিয়ানি। কিং সাইজের থালা। তোলো আর খাও। ফেরার সময় গাড়ি চালানোর এনার্জিটুকুও বাঁচতো না। শরীরের সব অক্সিজেন পেটের বিপ্লব সামলাতেই ভ্যানিশ।
পুনরাগমনায় চ ডিডি'দা .....
বাঙালি ক্রমে সভ্য হৈল। আপনি অবলিক ইত্যাদির বদলে ছাপা হতো শুধু 'আপনি'। ভাগ্যবানদের জন্য লাল কালিতে 'সবান্ধবে' শব্দটি হাতে লিখে জুড়ে দেওয়া হতো।
কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি টাইপ ভোজ খেয়েছি হায়দরাবাদে অশরাফ বনেদি মুসলিম দাওয়াতে। নো বুফে। মস্তো মস্তো গোল টেবিলের চারদিকে বসা। মাঝখানে নবাবি ডিজাইনের গামলা, পরাতে অনন্ত কিসিমের ভোজ্য, মূলত আমিষ, বার বার ভরে দেওয়া হচ্ছে। অশরাফ মুসলিমরা ওখানে গোমাংস সেবা করেন না। মুর্গি, কচি পাঁঠা এবং বৃদ্ধ মেষ। কবাব, কোর্মা, রেজালা। নান, পরাঠা। তিন-চার রকমের পুলাও ও বিরিয়ানি। কিং সাইজের থালা। তোলো আর খাও। ফেরার সময় গাড়ি চালানোর এনার্জিটুকুও বাঁচতো না। শরীরের সব অক্সিজেন পেটের বিপ্লব সামলাতেই ভ্যানিশ।
পুনরাগমনায় চ ডিডি'দা .....
@ LCM
কোনো কায়দাতেই রয়ে যফলা দেওয়া যাচ্ছে না। এ কি অনাছিষ্টি কান্ডো।
ব্যা byaa
এইও, বিরতি মানে কী? এসব অস্বৈরণ চলবে না। খাওয়া না হোক অন্য কিছু - কিউবার বিপ্লব, পরমাণুর ইতিহাস, কোন্নগড়ের সমুদ্র - যে কোন টপিকে হপ্তায় একটা করে ডিডি-কলাম চাই। নইলে সম্পাদকদের দেখে নেওয়া হবে।
সম্বিতবাবুর প্রস্তাব আমি সেকেন্ড আর থার্ড করলাম।
কিন্তু ডিমের ডেভিল কখনো কখনো স্যালাডের সাথে প্রথম পদ হিসেবে খেয়েছি মনে হচ্ছে যেন!
র-এ যফলা - যেমন, rally বা random - -- গুরু পদ্ধতিতে লিখতে পারছি -
র্যালি (ryaali)
র্যান্ডম (ryaanDam)
ডিডির এই সিরিজ পড়তে পাবার জন্যই টইতে টই টই সার্থক। ঃ-)
ভারী সুন্দর। আনন্দ পেলাম।