গল্পের কুশীলব যদি হয় রক্তমাংসের মানুষ, তাহলে বড়ো মুশকিল হয়। গ্রীক কবি হেসিওডের মত তখন আমাদের সত্যি ঘটনা চোলাই করে, চরিত্রদের বাজপাখী ও পাপিয়ার মোড়কে পরিবেশন করতে হয়। হাজার হোক, আপনি কি সদ্যপ্রয়াত কংগ্রেস নেতার মাস্তানি সম্পর্কে নির্মমভাবে লিখতে পারবেন? পারবেন না। তার বদলে ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে হবে, সেই যে এক ছাপোষা পাপিয়া ছিলো, সে যখন বাজপাখীর মুঠোয় বন্দী তখন বাজপাখী বিরক্ত হয়ে তাকে বললো, অমন বোকার মত কাঁদছো কেন? দুমিনিটে লাশ ফেলে দিতে পারি, জানো? পার্টির হয়ে চাঁদা না পটল কি তুলবে সেটা এখন আমি ঠিক করবো। অবশ্যই আমি একটু স্বাধীনতা নিলাম। কলমটাকে হেসিওডের বাজপাখীর মত বাগিয়ে ধরেছি, কে ঠ্যাকায়?
আমরা এখন মৃত্যুর সাথে আক্ষরিক অর্থেই রাস্তা হাঁটি। মড়কযাপন। সব সময়ই দেখেছি, জ্যান্ত মানুষ মরে গেলেই দ্রষ্টব্য হয়ে যায়। টালিনালায় ভেসে যাওয়া ফুলে ওঠা লাশই হোক, কি গাছ থেকে গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত দেহ। সুমন একাই ভেসে যাওয়া লাশ দেখেননি। তারাপদ রায় লিখেছিলেন কাঁকুড়গাছির মোড়ে আত্মহত্যা করা গৃহবধূর লাশ দেখতে এমন ভিড় হয়েছিলো যে বাসট্রাম বন্ধ হয়ে যায়। গল্ফ ক্লাবে দল বেঁধে খেলতে গিয়ে দেখেছিলাম অনেকখানি অংশে ঘাস দেখা যায়না এমনি ভিড়। উঁচু ডাল থেকে গলায় দড়ি দেওয়া নারীদেহ, সদ্য নামিয়ে আনা হয়েছে। টালিনালার একটা ছোট কংক্রিটের ব্রিজ ভেঙে গেছিলো ভার সইতে না পেরে, এক দুজন মারাও যায়। মৃত শরীরের প্রতি এই তীব্র অনুরাগ দেশের বাইরে আর কখনও দেখিনি। মানুষ গেঁথে গেঁথে অজস্র গল্পের জন্ম হয়। আমরা যারা হাজার হাজার দিন খেয়ে ফেলেছি, তার থেকে কিছু দিন অনাবশ্যক আত্মীকরণের পরেও, দুয়েকটা গল্প পড়ে থাকে।
ছোটোবেলায় খুব শুনতাম, রিকেটের মত চেহারা। রিকেটের মত বলে ঠিক কোন কথা হয়না, কিন্তু তখন সার্ব্বজনীন জ্ঞানগম্যির বহর খুবই অল্প ছিলো । তো, আমাদের পাশেই একটি ছোট পরিবার ছিলো, রোগা, কালো চারজন মানুষের পরিবার। বুড়ো বাপ, তাঁর ছেলে পুত্রবধূ ও নাতনি । গরীব বলে, না কিপটে বলে এখন আর মনে নেই, সংকুচিত দেখতাম সে-বাড়ির দিদিস্থানীয়া মেয়েটিকে। সেই রিকেটের মত, কালো শরীরের মেয়ের চোখ ছিলো বড়ো আর ধারালো, তাই তাকে জোনাকি বলে তামাশা করতো কিশোর কিশোরীরা। একদিন হঠাৎ ঐ পরিবারের কর্তা, বুড়ো ও বিপত্নীক বাবা উন্মাদ হয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। এরপর কয়েক বছর আরো সংকুচিত হয়ে কাটিয়ে শেষে "জোনাকি"র বাবা বাড়ি বিক্রি করে দেশের বাড়িতে চলে যাওয়া মনস্থির করেন। সেইমত বিলিবন্দোবস্ত হয়ে যেদিন ওঁরা বাড়ি ছেড়ে বেরোবেন, ধূমকেতুর মত উন্মাদ বুড়ো বাপ ফিরে আসেন। সবাই সত্যি সত্যি দেশেই চলে যাওয়ায় পরবর্তী নাটকীয় ঘটনাবলী আমাদের জানা হবেনা। দেশে গেলেই লোকে মরে যায়, লিখেছিলেন কে যেন একটা। আশা হয়, মৃত্যুচেতনাজর্জর এই সময় ফুরোবার আগেই আমরা তাঁকে একেবারে ভুলে ফেলতে পারব।
বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিকে চাইতে ভয় হয়, অকারণে পরিচিত অপরিচিত মানুষ মরে যাচ্ছে। মরে যাচ্ছে, এবং তারপরেই আমরা খুব তাদের কথা বলছি। মানুষটা মরে গেলে ফ্রিতে পাওয়া ওষুধ তার কী কাজে লাগে জানতে চেয়েছিলেন মিতভাষী দরিদ্র এক কবি। কয়েক কোটি বইয়ের কপি বিক্রি হয়েছে তাঁর, অসংখ্য মরণোত্তর প্রশংসা বরাদ্দ হয়েছে। আমাদের কাছে উপস্থিত সে প্রশ্নের উত্তর নেই।
সদ্যমৃত মানুষের ছবিগুলো ভুলতে, বরং পুরনো কটা বাজে গল্প করি। গল্পগুলো সম্পূর্ণ ভুলও হতে পারে, হতে পারে কেন, সম্পূর্ণ ভুলই হবে। এসবই সত্তর ও আশির দশকের কথা। সরলতায় ভরা একটা সময়, যখন এমনকি হিন্দি ছবির ভিলেনও ভালো করে খুন জখম ধর্ষণ শেখেনি। যখন স্থানীয় নকশাল নেতা খুন হয়ে গেলে প্রাইভেট ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের বড়দিদি ছুটি দিতে পেছপাও হতেন না –এসব সেই অদ্ভুৎ সময়ের কথা। আশির দশকই সেই অপূর্ব সময় যখন একজন ডাকসাইটে কংগ্রেস প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারের দেওয়াল লিখনে ঢ্যাঁড়শের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে -- অসংখ্য ঢ্যাঁড়শ জুড়ে জুড়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অমুক কুমার তমুককে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন লেখা। সাদা চুনকাম করা দেওয়ালে আঁকা সবুজ উজ্জ্বল ঢ্যাঁড়শ দিয়ে লেখা নাম, আর তারপর অন্যান্য নানারঙের ইত্যাদি তথ্যাবলী। বাংলা সাহিত্যে ম্যাজিক রিয়েলিজমের ইতিহাস লেখা হলে ঐ শিল্পীর নাম সেখানে রাখা উচিত।
সত্তরের ও আশির দশক আমায় চিরকালই খুব মুগ্ধ করে। রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় বলে শুধু নয়। সত্তরের দশকে যাঁদের বয়স পঁচিশ থেকে পঞ্চাশ তাঁদের সারল্য আমি জ্ঞান হওয়া ইস্তক দেখেছি। সারল্য, আত্মবিশ্বাস, আর ধারাবাহিকতা। এই বিষয়ে আমার ছোটদাদুর গল্পটাই প্রথমে বলতে হবে।
যৌবন গিয়ে প্রৌঢ়ত্ব ছুঁই ছুঁই, এমন সময় ছোটদাদু চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেন। তখন চাকরি চলে যাওয়া তেমন কোন বড়ো ব্যাপার ছিলোনা, লোকের হামেশাই চাকরি যেত। পরিবারও খুবই সচ্ছ্বল ছিলো -- চারটি কন্যাসন্তানের পিতা ছোট্দাদু বাড়ি এসে "কোনো ভদ্রলোকের বাচ্চা চাকরি করেনা" ঘোষণা করে তাস পিটতে বসে গেলেন। যৌথ পরিবারের কর্তা, বড়োদাদু মার্চেন্ট আপিসের বড়োবাবু। তিনি নার্ভাস হয়ে পরের মাসেই একটা পাকা চাকরির বন্দোবস্ত করে বাড়িতে এসে ছোটভাইকে বলার পর ছোটদাদু নাকি অট্টহাস্য করে বলেছিলেন, "তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে বড়দা? সত্তর টাকার মাইনে পেয়ে এসে আমি এখন পঞ্চাশ টাকায় ঢুকবো?"! বলা বাহুল্য ছোটদাদুকে আর কোনদিন উপার্জন করতে দেখা যায়নি, এবং যৌথ পরিবারটি অনতিবিলম্বে স্বখাতসলিলে ধরাশায়ী হয়। তারপরের দুই প্রজন্ম মুখে রক্ত তুলে খেটেও সেই বিলাসিতার ঋণ চোকাতে পারেনি। যে দারিদ্র পাকিয়ে ধোঁয়া টানে কবি, যে দারিদ্রে জলের ছিটে দিয়ে উজ্জ্বল করে তোলে আঁকিয়ে - সেই রাজকীয় শিল্পমন্ডিত দারিদ্র নয়। শস্তা অগৌরবের দারিদ্র। আকালের সন্ধানে যাঁদের নিয়ে বানানো হয় আর যাঁরা বানান --- এই দুই দলের মাঝে পড়ে থাকা অনূর্ব্বর জমির মত এ দারিদ্র। আমরা মুখ ফিরিয়ে নিই। সেদিন এক বন্ধুকে সিরিয়াস বাংলা ছবি দেখেছে কিনা জিগ্যেস করায় সে বললো ঐতো সব ডিপ্রেসিং ছবি। বললো তার নাকি একটাই ডায়লগ মনে আছে, কোন এক ছবিতে সে শুনেছে সেই লাইন- "দেওয়ালে পেচ্ছাপ করছেন কেন?" বললো, ছবিটা বোধহয় মৃণাল সেনের, জানিস?
আমি অন্যমনস্ক হয়ে বাপ্পাদার বাবার কথা ভাবছিলাম। সেসব অনেকদিন আগের কথা, তখনও লোকে দ্য ওয়াল বলতে রাহুল দ্রাবিড় বুঝতো না। যদিও গল্পটা আদ্যন্ত ধারাবাহিকতার। অতএব, এরপর আপনাদের অতি অবশ্যই বাপ্পাদার বাবার কথা শুনতে হবে। আমাদের পাড়ায় শতাধিক জয় ও সহস্রাধিক বাপ্পা ছিলো। প্রমিত বাংলায় গোটা পাড়া তাদের পুকুরপাড়ের জয়, রুবিরিনি বাপ্পা, লম্বা জয়, অ্যালসেশিয়ান বাপ্পা ইত্যাদি নামে ডাকতো। তো, সেই অসংখ্য বাপ্পাদের একজনের বাবার প্রিয় দৈনিক রিচুয়াল ছিলো বাড়ির পাঁচিলের গায়ে পেচ্ছাপ করা। বাড়িটি পাকা, বাথরুমযুক্ত, ও তিনতলা, বাপ্পাদারা একতলায় থাকতো। বাড়িটিতে ভেতরের দিকে একটা বাগানও ছিলো। বাপ্পাদার বাবা অনায়াসেই বাড়ির বাথরুমে, বা পাঁচিলের ভেতরের দিকে জলত্যাগ করতে পারতেন-- তাতে সবার অগোচরেই কাজটি হতে পারত। কিন্তু কোন অজ্ঞাত কারণে তিনি সর্বদা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে, ঐ বাড়িরই দেওয়ালে হিসি করতে বসতেন। পাড়ার হেন লোক ছিলোনা যাঁরা বিষয়টি সম্পর্কে জনান্তিকে কোন সুচিন্তিত মতামত দেন নি, কিন্তু বাপ্পাদার বাবার ধারাবাহিকতায় কোন বিচ্যুতি আসেনি। আমাদের সরু গলিটি একদিন মেট্রো রেলের কাজ শুরু হয়ে বিধান রায়ের কপালের মত চওড়া হলো। ল্যাম্পপোস্টের আলো যা জ্বলত বিদ্যেসাগরমশাই দেখলে হতাশ হয়ে রেড়ির তেলে ফিরে যেতেন। সেই আলো হ্যালোজেন হলো। আগে খেলাশেষে আঁশফলের গাছের দীর্ঘ ছায়ার দিকে তাকিয়ে আমরা শশব্যস্ত বাড়ি ফিরতে ফিরতে দেখতাম বাপ্পাদার বাবার মগ্ন জলত্যাগ। সেই তপোবনসুলভ নির্জন কানন পরে বাস অটো মিনিবাস আর পথচলতি আপিসফেরতা লোকের ভিড়ে গমগম করতে লাগলো -- বাপ্পাদার বাবা ধারাবাহিক। আগে লোডশেডিং এর সময় অনুচ্চস্বরে আমরা বলতাম "জেঠুর জন্য একদিন পাঁচিলটা ধ্বসে যাবে"। ঐ একই ডায়লগ তিনটে প্রজন্ম সম্ভবত বলেছিলো। হিন্দি ছবির ডায়লগ আর গানের কথার মত রিসাইকল্ড হতে থাকলো সেই নিভৃত জলসিঞ্চনের জনশ্রুতি, যদ্দিন না ভদ্রলোক শয্যাশায়ী হয়ে মারা গেলেন। পাঁচিলটা পড়েনি। বরং বাপ্পাদার বাবা মরে যাওয়ায় তার এখন জীবন অনেক সতেজ স্বাস্থ্যে ভরা।
সেদিন দেখি দুধের জ্যারিকেনের বাইরে লেখা "স্মিথ'স টু পার্সেন্ট রিডিউসড ফ্যাট মিল্ক"। দেখেই আমার সমরের খাটাল আর হরিণঘাটার কথা মনে পড়ে গেল। মনে পড়ে, হরিণঘাটার নাম শুনে প্রথমেই আমি কেমন ঘেঁটে গিয়েছিলাম। হরিণের দুধ দেয় নাকি? এমনকি দুধের বোতলের মুখের রাংতাটা তুললেই মাখনের যে স্তর লক্ষ করা যেত, আমার ধারণা হয়েছিলো সেটা হরিণের দুধ বলেই। কই সমরের খাটাল থেকে আনা গোরুর দুধে তো তেমন থাকেনা! অবশ্য সমরের খাটালের দুধে দুধটাই ভেসে থাকতো। আমেরিকার মত ধুরন্ধর ব্যবসায়ী হলে সমর কায়দা করে সেটাকেই "সমরের টু পার্সেন্ট রিডিউসড ফ্যাট মিল্ক" বলে মলে সাপ্লাই দিত। যাই হোক, কথায় কথায় কোথাকার দুধ কোথায় গড়ালো, গল্পে ফিরি। আশির দশকে কোন এক রোদেলা সকালে আমি একটি কঠিন প্রশ্ন করে লাঞ্ছিত হই। রোদেলার সঙ্গে সঙ্গে সকালটিকে, অন্য বেশিরভাগ দিনের মতই দুধেলাও বলা যায়। হরিণঘাটার দুধের শিশি আনতে আমি ব্যাজার মুখে বাজারমুখে যাচ্ছিলাম। পথেই পুকুরপাড়ের জয়ের মায়ের সাথে দেখা। এ যখনকার কথা হচ্ছে, তখন আমি খুবই মিতভাষী ছিলাম, তার প্রধান কারণ ছিলো আমার মুখে কথার পিঠে কথা জোগাতো না। তো, হয়েছে কি, কাকিমা আমায় দেখে ঝড়ের গতিতে ভালো আছিস? ঠাকুমা ভালো আছে? এইসব বাজে প্রশ্ন করে আমায় বিচলিত করে দেন। আমার মনে হতে থাকে এখুনি আমারও একটা কুশলজিজ্ঞাসা করা উচিত। আমিও খুবই জলদি কাউন্টার অ্যাটাকে চলে যাই। রাইট ব্যাক থেকে লেফট উইং পর্যন্ত একটা বিশাল এরিয়াল পাসের মত করে "জয়ের বাবা ভালো আছে?" প্রশ্নটি ছুঁড়ে দিয়ে সরকারি দুধের ডিপোর দিকে চলে যাই। জয়ের মা স্বামী সম্পর্কে এই সরল প্রশ্নটি কেন জানি নিতে পারেন নি। আশির দশক পাকামি একেবারে পছন্দ করতোনা। পরবর্তীকালে ছাত্র হিসেবে আমায় অনেক শিক্ষক শিক্ষিকা বলেছেন -- আমি প্রশ্ন কম করি। আমার ধারণা জয়ের বাবা সম্পর্কিত কুশলপ্রশ্ন ও তার পরিণতি এজন্য দায়ী।
প্রশ্ন কম ছাত্রদের জন্য সন্দেহজনক হতে পারে, শিক্ষকদের কিন্তু সে কারণে কোন অসুবিধায় পড়তে হতনা। আমাদের অঙ্কের এক মাষ্টারমশাই রোজ ক্লাসে এসে একটা করে অঙ্ক দিতেন। দিয়ে পুরো সময়টা ঝিমোতেন, আর আমরা কাটাকুটি খেলতাম। ক্লাসের শেষে প্রবল হইচইয়ের মধ্যে উনি ধড়মড় করে উঠে অঙ্কের উত্তরটা বোর্ডে টুকে দিয়ে চলে যেতেন। এই শেষের সময়টায় মেক্সিকান ওয়েভ হত, চিৎকারে কানে তালা লেগে যেত। স্যার কোন কোনদিন এতে সামান্য বিচলিত হয়ে হাতের কাছের কয়েকটা গালে চটাচট থাপ্পড় কষিয়ে বেরিয়ে যেতেন। বলা বাহুল্য, বারো ক্লাস অবধি খালি অঙ্কের বাজে ছাত্রদের কথাই ফলাও করে বলতে শুনলাম, এমন আশ্চর্য্য খারাপ অঙ্কের মাষ্টারমশাইদের নিয়ে কেউ রা কাড়েনি।
এশিয়া আর ইউরোপের বেশ কিছুটা জুড়ে অঙ্ককে বিশেষ শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়, ওপরের ঘটনাবলী তারই প্রতিফলন। মধ্য এশিয়ায় থাকাকালীন এই নিয়ে একটা মজার গল্প শুনেছিলাম। উজবেকিস্তানের একটি মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে ইউক্রেনের এক ছেলের। পাত্রটি খুবই মেধাবী, সাফল্যের সঙ্গে গবেষণা শেষ করে সে এখন নামজাদা অধ্যাপক --বিষয় স্ট্যাটিসটিক্স। বিয়ের সময় দুই পরিবার একত্র হয়েছে, খানাপিনা নাচাগানা চলছে ---এর মধ্যেই হঠাৎ ঝুলি থেকে একটা এইসা কেঁদো বেড়াল বেরিয়ে পড়লো। জানা গেল, মেয়ের মা হবু জামাতা স্ট্যাটের অধ্যাপক সেকথা রিস্তেদারদের বলতে লজ্জা পেয়েছেন, তাই সবাই জানে উনি অঙ্কের প্রফেসর। আমাদের ক্লাসের একজন খুব বদরাগী অঙ্কের মাষ্টারমশাইকে ছুঁচোর ডাক নকল করে আওয়াজ দিলে উনি কান্ডজ্ঞানরহিত হতে মারধর করতেন। সে যে কি তান্ডব, তার সাথে শুধু মৃত্যুর আগে ভীষ্মের ভয়ঙ্কর যুদ্ধেরই তুলনা হয়। একদিন আমিও অকারণে তাঁর হাতে মার খেয়েছিলাম, খুব দুঃখ হয়েছিলো। কৃতবিদ্য স্ট্যাট প্রফেসরের দূর্গতির গল্পে সামান্য শান্তি পেলাম। পৃথিবী এমনই নির্দয়।
আমার ব্যক্তিগত ভাবে এই ধরণের লেখা বেশী ভালো লাগে, ফুটনোট দেওয়া প্রচুর রেফারেন্স দেওয়া লেখা গুলির থেকে। আশা করব এমনটা চলবে।
বেশ লাগলো। রসবোধের তারিফ করতে হবে।
মজাও লাগলো, একটু পেছনে তাকিয়ে দেখাও হলো ।রাজার বাবা সম্পর্কে কুশল প্রশ্নটি তুলনাহীন
মজাও লাগলো, একটু পেছনে তাকিয়ে দেখাও হলো ।রাজার বাবা সম্পর্কে কুশল প্রশ্নটি তুলনাহীন
সরল প্রশ্ন সবাই কী আর নিতে পারে? :))
ভাই টিম, এমন ল্যাখা আরও ল্যাখোনা কেন? পেডান্টিক জিওপলিটিক্স প্রাঞ্জল করে দেওয়া দুচারখানি মাঝে মাঝে লিখিতে পার, কিন্তু আমাদের মতন মেজরিটি বুড়ো ও আ্যন্টি-ইন্টালেকচুয়ালদের মুখ চেয়ে এই লেখাই বেশি লিখিও।
#নো-ল্যাখা-ফর-ওল্ড-মেন :-(