এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • মনের স্বাস্থ্য ও নারী

    অনুরাধা কুন্ডা লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৪ মার্চ ২০১৯ | ১১৮৪ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)







  • শরীর, শরীর, তোমার মন নাই কুসুম?

    মেয়ে হল কুসুম। কুসুমসদৃশ তার ত্বক, তার ওষ্ঠাধর, তার কপাল। কুসুমসদৃশ কোমলতা পাবার জন্য যতো লোধ্ররেণু, সরবাটা, ময়শ্চারাইজার, নাইট ক্রিম, বেসনের প্রলেপ। জন্ম ইস্তক তার কানের গোড়ায় কেউ না কেউ বলেইছো, শোনো, তুমি মেয়ে। তুমি ফর্সা। রোদে যেও না, রং পুড়ে যাবে। শোনো, তুমি কালো, রং ফর্সা হবার ক্রিম মাখো, নইলে কেউ ফিরে দেখবে না। তুমি বেঁটে। কষ্ট হোক,তাও হিল পরো। নইলে বেগুন গাছে আঁকশি দিতে হবে বলে পাত্রপক্ষ বাতিল করে দেবে। তুমি লম্বা, মানে ঢ্যাঙ্গা। এমনভাবে সাজো যাতে একটু কম লম্বা দেখায়। নয়তো ছেলেরা কমপ্লেক্সে ভুগতে পারে। তোমার চোখে এত বেশি পাওয়ার! লেন্স পরো। হাত পা খড়খড়ে? সর্বদা ব্যাগে রাখো হ্যান্ডলোশন। শরীর কে যত্নে রাখো, যাতে সারাদিন আগুনের পাশে বসে রাঁধলেও ত্বক সুন্দর থাকে। ক্লান্তির ছাপ যেন না পড়ে এতটুকু। পত্রিকা জ্ঞান দেয়, রান্না করতে করতে মুখে মেখে নিন টোম্যাটোর রস; পোড়া ভাব কেটে যাবে। আপিস যাবার সময় ব্যাগে রাখুন ফাউন্ডেশন আর গয়না। টয়লেটে ফ্রেশ হয়ে বিয়েবাড়ি চলে যান। পার্টি থাকলে আরেক সেট্ পোশাক রাখুন সঙ্গে। শরীরকে যত্নে রাখুন, আগলে রাখুন সতীচ্ছদ। সাইকেল চড়িস না বেশি মেয়ে, হাইমেন্ ছিঁড়ে যেতে পারে। নাচ ? বস্তি প্রদেশের অতিরিক্ত ব্যবহার মেয়ে মানুষের ভালো নয়। আস্তে হাঁটো। ধীরে মৃদুস্বরে কথা বলো। চোখ আনত অনাঘ্রাত থাকো। তোমার শরীর তো নিবেদনের জন্য। মনের কথা আসছে কোথায়? মনকে পকেটে পুরে রাখো, যাতে শশী-রা বলতে পারে, শরীর, শরীর, তোমার মন নাই কুসুম?

    গালব মাধবীকে বললেন, অশ্বমেধের ঘোড়া চাই আমার সুন্দরী। তুমি এই রাজার অঙ্কশায়িনী হয়ে তাঁকে পুত্র দাও। তিনি আমাকে অশ্ব দেবেন। স্ত্রী মাধবীকে এইভাবে বারবার বিভিন্ন রাজার কোলে তুলে দিলেন গালব। মাধবী তাঁদের সন্তান দেবেন। আর গালব পাবেন অশ্বমেধের ঘোড়া। প্রতিবার সন্তান জন্ম দেবার পর মাধবী ফিরে পাবেন তাঁর কুমারীত্ব।

    যেমন কুমারীত্ব ফিরে পেতেন দ্রৌপদী। প্রতিটি স্বামী সহবাস, যার মেয়াদকাল একবছর, হয়ে গেলে দ্রৌপদী-র কুমারীত্ব ফিরে আসতো যাতে পরবর্তী স্বামী পান কুমারী স্ত্রী।

    যাগযজ্ঞ হত কুমারীত্ব প্রত্যাবর্তনকালে। কী ছিল সেই যজ্ঞপ্রণালী যাতে ফিরে আসতো এই নারীদের কৌমার্য? সতীচ্ছদ অবিক্ষত হত পুনরায়? সেকি হাইমেনোপ্ল্যাস্টি? যার প্রসার গণিকা থেকে উচ্চবিত্তমহল পর্যন্ত সম্প্রসারিত আজ? স্বাভাবিক চিন্তা তাই বলে। এক-এক জন গণিকা প্রায় দশ-পনেরো বার হাইমেনোপ্ল্যাস্টি করান সতীচ্ছদ পুনর্নির্মাণ করার জন্য। খদ্দের পুরুষ কুমারী যোনির দাম দেন বেশি। ঠিক যেমন বিবাহে প্রয়োজন হয় কুমারী যোনি। অবিক্ষত সতীচ্ছদ। সতী শব্দটিও পুরুষের নির্মাণ। সৎ এর বিপরীত যদি সতী হতো তবে ল্যাটা ছিল না। সৎ অর্থে আমরা বুঝি নিয়মনিষ্ঠ, ন্যায়পরায়ণ। সতী মানে স্বামীপরায়ণ, কুমারী-হাইমেন, একপুরুষগামী। স্বামী ব্যতীত অন্য পুরুষে যে দৃষ্টিপাত করে না, সে-ই সতী। তাই সাবিত্রী সতী। বেহুলা সতী। সীতা সতী। দ্রৌপদী-র সতীত্ব নিয়ে টানা-হ্যাঁচড়া। মশকরায় কর্ণ বললেন, পাঁচ স্বামীর এক স্ত্রী! সে সতী না গণিকা!

    মহামতি পরাশর মৎসগন্ধা সত্যবতীর কাছে কি চাইলেন? শরীরই বটে। কুন্তিভোজ দুর্বাসার সেবা করতে এগিয়ে দিলেন কিশোরী পৃথাকে। দুর্বাসার শর্ত ছিল, কিছুতেই তাঁকে "না" বলা যাবে না। অতএব কুমারী ও কিশোরী কুন্তী বাধ্য হলেন দুর্বাসাকে তাঁর শরীর দিতে।

    মহাভারত পড়লে মনে হতেই পারে যে নারী ছিল শুধু জরায়ু। পুত্রগন্ধে সংসার ভরিয়ে দিতেই তার জন্ম। অম্বা আর অম্বালিকার কি বা দোষ ছিল ভয়ংকর দর্শন বেদব্যাসকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নেবার? তাঁরা রাজকন্যা। রাজকুলবধূ। রাজপুরুষ আশা করা কি তাঁদের পক্ষে খুব দোষনীয় হত? নাহ্। সেসব ধর্তব্যের মধ্যে কেউ ধরেনি। উওম্যান ইজ উওম্ব। এই থিয়োরি অবলম্বন করে বয়ে চলেছে আমাদের মহাকাব্যের মূল রসায়ন। সীতাকেও রামচন্দ্র দিব্য কুকুরে চাটা ঘি বলে দিলেন। সীতা বারবার বলেছেন, আমার শরীরকে রাবণ স্পর্শ করেছে মাত্র। কিন্তু আমার মনে শুধু তুমি ছিলে হে রামচন্দ্র। আমি শারীরিকভাবে দুর্বল বলে রাবণ আমাকে হরণ করতে সমর্থ হয়েছে। কিন্তু মন তো ছিল তোমার কাছে।

    সীতার মনকে থোড়াই পাত্তা দিয়েছে কেউ!

    কাজেই মহাকাব্য থেকে মহাজীবন, যেদিক পানেই চাওয়া যাক না কেন, মেয়েদের শরীরটাই মুখ্য হয়ে উঠেছে। আবার ভণ্ডামির শেষ নেই বলে, যেই মেয়ে নিজের শরীর বা শরীরের ইচ্ছে-অনিচ্ছে সম্পর্কে সচেতন হয়েছে, অমনি সমাজ তাকে খারাপমেয়ের তকমা এঁটে দিয়েছে। কবি লিখে দিলেন "উঁচু স্তনে চেনা যায় নারী।" হায় রে! নারীর পরিচয় কি শুধু তার উঁচু স্তন! হোক না ভিখারিণী, তবু কি তার মন থাকিতে নাই পথিক?

    মহামতি রুশো বলেছিলেন, মেয়েজন্ম শুধু পুরুষকে সন্তুষ্ট করার জন্য। বলেছিলেন, মেয়েরা যেমন শারীরিকভাবে দুর্বল, তেমনি মানসিকভাবেও দুর্বল। তাছাড়া তাদের বোধবুদ্ধি কম। কাজেই সেজেগুজে, নেচেকুঁদে, ছলাকলা করে যদ্দিন পারো পুরুষকে ভুলিয়ে রাখো। সে তোমাকে রাণী করে রাখবে। মানে ভালোভাবে পুষবে। একটু এদিক-ওদিক যাবে। তা পুরুষমানুষের তাতে দোষ নেই। রোজ ডাল-ভাত খেয়ে বিরক্ত হলে একআধদিন চপ-কাটলেট খাওয়ার অধিকার তাদের থাকতেই পারে বলে নিদেন দিয়েছিলেন রামকৃষ্ণদেব। মোটের ওপর মেয়ে মানে শরীর। অথচ সে শরীরের ওপর মেয়ের না আছে অধিকার, না আছে নিয়ন্ত্রণ। এহেন অবস্থাতে মনের অবস্থা কি হতে পারে? মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবতে গেলে এই প্রসঙ্গগুলি বাদ দেওয়া যায় না। শরীর বাদ দিয়ে মন নয়। আবার মন বাদ দিয়েও শরীর নয়।

    সাধারণভাবে দেখতে গেলে মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা কম। পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা আরো কম। কারণ তাদের আধিপত্য বেশি। মেয়েদের শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়েই কেউ মাথা ঘামায় না, তো মানসিক স্বাস্থ্য!

    মেয়েদের মধ্যে নিউরোটিক ডিসঅর্ডার এবং নার্ভাস ব্রেকডাউনের হার আশঙ্কাজনক। খুব স্বাভাবিকভাবেই। তুমি দুর্বল। তোমার পুরুষ নামক উদ্ধারকারী ছাড়া গতি নেই ...এই তথ্যসমূহে সমৃদ্ধ মেয়ে নিজেকে পুতুল ভাবে। পুতুলের মতো সুন্দর মেয়েদের ভালো বিয়ে হয়। পুতুল-পুতুল মেয়ে এক কাঙ্খিত বিশেষণ। পুতুল যে ইচ্ছাবিহীন খেলনা, তাকে যেমন রাখা হবে সে তেমনি থাকবে, সেকথা মেয়ে-পুতুলের মনে থাকে না। তারা জানেও না। তারপর যখন একেক করে পুতুলের হাত পা ভাঙা হয় বা পুরোনো পুতুল ছুঁড়ে ফেলে আনা হয় নতুন পুতুল, তখন আসে বিপর্যয়ের পালা।

    মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্যক্ষয়ের প্রধান কারণ হল নিজেকে পুতুল ভাবা। টুকটুকে ফর্সা বার্বি হল আদর্শ মেয়েপুতুল। পুতুলমেয়ে নিজের শরীরকে তৈরি করে পুরুষের মনোরঞ্জনার্থে। মাজে ঘষে। বিউটি পার্লার যায়। চুল রং করে। হাই হিল পরে। ক্যাপ্রি পরে। পিরিয়ড হলে সেই মেয়ে আবার নিজের শরীরকে অশুচি ভাবে। পি এম এস নিয়ে ক’জন সচেতন? অধিকাংশ মেয়ের অভিযোগ থাকে "শরীর খারাপ" কালীন পেট ব্যথা এবং অন্যান্য অসুবিধে সংক্রান্ত। এই পেট ব্যথা অনেক সময় নারীত্বের সমার্থক হয়ে দাঁড়ায়। ঋতুস্রাবকালে পেট ব্যথা না হলে যেন সে পূর্ণ নারী নয়। যার যত পেট ব্যথা সে তত বেশি নারী। অথচ বিজ্ঞান বলছে যে যদি মেয়েরা নিয়মিত শরীরচর্চা করে তবে ঋতুকালে সমস্যা হবার কথা নয়। সমস্যা যদি হয় তবে তা অপুষ্টিজনিত কারণে। অথচ পি এম এস একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। ঋতুকালের আগে যেটা সব মেয়ে কমবেশি শারীরিকভাবে উপলব্ধি করেন। অথচ জানেন না। শারীরিক অস্বস্তির সঙ্গে থাকে মেজাজের ওঠানামা। তার কারণ সবটাই হরমোনের খেলা। অথচ সম্পূর্ণ না-বুঝে খিটখিটেপনার বিশেষণ চাপিয়ে দেওয়া হয় মেয়েদের ওপর। বলা হয় ছিঁচকাঁদুনে। নয় রগচটা। খতিয়ে দেখা হয় না নারীশরীরের অভ্যন্তরে কাজ করে চলেছে এমন এক হরমোন যার সামান্য এদিক ওদিকে মন-মেজাজ ও শরীর, সবই নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। প্রি এবং পোস্ট - দুটোই আছে পি এম এসে। প্রি অনেক বেশি। ইস্ট্রোজেনের চলাচলে যে মুড ওঠানামা, বিপন্নতা, বিষণ্ণতা, প্রচন্ড রাগ, সেনসিভিটি , ঘৃণার উদ্রেক হতে থাকে, বেচারা মেয়ে নিজেই জানে না তার গূঢ় রহস্য। মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হতে গেলে এই বিষয়ে নজর দিতে হবে বইকি। মেয়েটা পাগলাটে বলে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে চলবে না। পিরিয়ডকে ট্যাবু বলে ধরে রাখলে চলবে না। তার আগেপিছে সবকিছু দেখার দরকার আছে। তা না করে, "এই যে তুমি পুতুল, বারো বছর বয়স হলে তোমার পিরিয়ড হবে আর তুমি নারী হয়ে যাবে, কয়েক বছর নিজেকে আগলে রাখবে এক বিশেষ পুরুষের জন্য আর বিয়ে হয়ে গেলেই তোমার শরীরের ওপর অধিকার হবে তার যে তোমার বর; তারপর একটি বা দুটি সন্তান হলেই তোমার নারীজন্ম সার্থক; শেষমেশ চল্লিশে মেনোপজ এবং তারপর তো তুমি আর নারী থাকবে না কারণ মেনোপজ হয়ে যাওয়া নারী পিতৃতন্ত্রের চোখে নারী নয়"...এমত ফর্মূলায় দীক্ষিত মেয়েদের মানসিক সমস্যা হবে না তো কার হবে?

    মেয়ে যতদিন না নিজেকে মানুষ ভাববে, ততদিন তার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা তৈরি হবে না। পিতৃতন্ত্র তো ভাবেই, তদ্বারা যুগযুগান্ত ধরে ব্রেইনওয়াশড ও প্রতিপালিত নারীকুল তো এই-ই ভাবে যে, সে জরায়ু মাত্র। সন্তান ধারণ না করতে পারলে তার জীবন বৃথা। একটি সন্তানের আকাঙ্ক্ষা করে নিজের শরীরের ওপর কী হারে নিরীক্ষা চালায় নারী! হয়তো সেই পরীক্ষানিরীক্ষার ফল খুব ভালো নয়। কিন্তু কাজ করে যায় অভ্যন্তরে এক মানসিক শর্ত। তাকে মাতৃত্ব অর্জন করতেই হবে যেকোনো মূল্যে। আগেকার দিনে নিঃসন্তান বধূরা হয় পরিত্যাজ্য হতেন নয়তো ঘটা করে দাঁড়িয়ে স্বামীর বিয়ে দিতেন তাঁরাই। সূর্যমুখী কী ভেবে কুন্দনন্দিনীকে ঘরে এনেছিলেন মনে পড়ছে? কপালকুণ্ডলাকে কি বলেছিল পাড়ার মেয়েরা? সোনার পুতলী ছেলে/দিব তোর কোলে তুলে/দেখি ভালো লাগে কি না লাগে।" কপালকুন্ডলা অত বাধানিষেধ মানেনি। মানতে পারেনি। সে ভেসে গিয়েছিল।

    মাতৃত্ব মেয়েদের এক কঠিন পরীক্ষা। তাও হতে পারে মানসিক অবসাদের অন্যতম কারণ। ছেলেসন্তান না মেয়েসন্তান। পুংশিশুর মায়েদের এখনো পর্যন্ত প্রচ্ছন্ন বা প্রকট গর্ববোধ বা আত্মবিশ্বাস থাকে বৈকি। শিশুজন্মের পর ব্লুজ সম্পর্কে ওয়াকিবহালই বা কতজন! তারপর আছে সন্তানের দেখাশোনা। কর্মরতা মায়েদের ওপর অতিরিক্ত চাপ। বাচ্চাদের ক্ষতি হচ্ছে না তো? ছেলে ভবিষ্যতে দেখবে মা কে? কেমন থাকবে মেয়ে? মায়ের হাতে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা না থাকলেই এই চিন্তাও আসে। এইসব নিয়ে মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্য ঘোরতর বিপন্ন।

    একটু ভেবে দেখুন।

    ছেলে হল সোনার আংটি। বেঁকা হলেও ক্ষতি নেই।

    মেয়েদের সাতহাত কাপড়ে কাছা হয় না।

    পুড়বে মেয়ে উড়বে ছাই, তবে মেয়ের গুণ গাই।

    শতপুত্র সমকন্যা যদি যোগ্য পাত্রে পড়ে।

    সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে।

    অতি বড় ঘরণী না পায় ঘর/অতি বড় সুন্দরী না পায় বর।

    হলুদ জব্দ শিলে, চোর জব্দ কিলে, আর দুষ্টু মেয়ে জব্দ হয় শ্বশুরবাড়ি গেলে।

    প্রাচীন প্রবাদ বলছেন? আমরা মানি না? মুখে মানেন না। কাজে খুব মানেন। এইসব প্রবাদ আজও বেঁচে আছে মেয়েদের মানসিক রোগের জড় হয়ে।

    মেয়ে সন্তান জন্মেছে। অবসাদ।

    স্বামী অমনোযোগী। অবসাদ।

    বিবাহ হয়নি। অবসাদ।

    বিবাহ হয়েছে। অবসাদ।

    সন্তানের রেজাল্ট খারাপ। অবসাদ (মা হয়ে দেখতে পারোনি?)।

    মেয়ের বিয়ে। দুশ্চিন্তা। ছেলের বউ। গভীরতর দুশ্চিন্তা।

    আপনি যদি মেয়ে হন, খুব কম মহিলা নির্ভীকভাবে নিজের স্বামীর সঙ্গে আপনাকে আলাপ করিয়ে দেবেন। সমস্যা কোথায়? ঐ মহিলার? তার স্বামীর? না আপনার? মেয়েদের মনের মধ্যে কোথাও কুটকুট করে। যদি স্বামী হাতছাড়া হয়ে যায় কি হবে তাহলে? মানসিক ব্যাধি।

    শ্বাশুড়ি ভাবেন ছেলেটি বুঝি হাতছাড়া হল। এও ব্যাধি ।

    এই যে মেয়েটি ক্লিভেজ দেখিয়ে ,আর কটাক্ষপাতে ভাবে রাজ্য জয় করে ফেলা যাবে, থাই উন্মুক্ত করে ভাবে সে জিতে নিয়েছে পুরুষটিকে, সেও আসলে ততটাই অজ্ঞ। ততটাই অসহায় ভাবে মানসিক রোগগ্রস্ত হয়ে হাতিয়ার করেছে সে নিজের শরীরকে।
    সাধারণ টি-শার্ট আর প্যান্টালুন পরা মেয়ে ভালবাসেনা পুরুষতন্ত্র। তাই মেয়েদের প্রয়োজন ডিজাইনার পোশাক। অফ্ শোল্ডার। কোল্ড শোল্ডার। শরীর দেখানো বা ঢাকা - সব নির্মাণ করে পিতৃতন্ত্র।
    নিজেকে ভালবেসে না। পুরুষের ভাল লাগানোর জন্য এত আয়োজন। দোষ নেই। বিপরীত লিঙ্গের আকর্ষণ স্বাভাবিক এবং সত্য। কিন্তু সেটা মেধা বা মন নির্ভর না হয়ে শুধুমাত্র শরীরনির্ভর হলে মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্য কখনও বলবান হবে না এই পাওয়ার পলিটিক্সের খেলাতে। দড়ি কিন্তু পিতৃতন্ত্রের হাতে আজও।

    তুমি শাড়ি না জিন্স পরবে সেই ঠিক করে।

    সেই ঠিক করে তুমি ভালো না খারাপ।

    সেই পুজো করে। কিংবা রেপ।

    সঙ্গমে সেই শ্রেষ্ঠ। সেই কুলধ্বজ।

    মেয়েরা বড় করে ভাবতে পারে না। মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু। মেয়েরা দুর্বল এবং কুচুটে। পিতৃতান্ত্রিক এই তকমাগুলো পেয়েও যখন মেয়ে শুধু পুরুষের চোখে লোভনীয় হয়ে উঠতে চায়, তখন ধরে নিতেই হয় যে গন্ডগোল তার মানসিক স্বাস্থ্যে; যে স্বাস্থ্যকে ঠিকমত বেড়ে উঠতে দেওয়াই হল না।

    ডিপ্রেশন আর রিপ্রেশন - ভয়ানকভাবে সম্পৃক্ত। পুরুষের রিপ্রেশনের চেহারা এক। মেয়েদের রিপ্রেশনের চেহারা আরেক। রিপ্রেসড মেয়ে ভয়ানক দজ্জাল - শ্বাশুড়ি হয়ে অন্য মেয়ে কে দমন করে, মেয়ে বস ততোধিক কঠোর রাজত্ব চালায় নিজের জায়গায়। অমিত রায়-রা মুচকি হেসে বলে "দুর্বলের রাজত্ব"। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাসঙ্কুল হলে এইসব আমাদের চোখের সামনে ঘটে। প্রতিনিয়ত।

    মেয়েদের শরীর নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে ছিল না বহুকাল। জন্মনিরোধক আবিষ্কার হওয়ার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। কিন্তু মানসিকভাবে এখনও মেয়ে কি নিজেই নিজেকে চালনা করে? নাকি প্রথা অনুযায়ী ভাবতে থাকে যে তাকে চালনা করার রশিটি বাল্যে পিতার, যৌবনে স্বামীর আর বার্ধক্যে পুত্রের?

    সুস্থ শরীরেই সুস্থ মনের বাস। এই বাণীর ওপরে কোনো কথা হয় না। অথচ দেখুন, মেয়েসন্তান অপুষ্টিতে ভোগে অধিকতরভাবে। ঋতুকাল নিয়ে নাজেহাল হয়। ডাক্তার বলেন, বিয়ে হলে ঠিক হবে। বিবাহ যেন সকল রোগের ঔষধি! ওদিকে আবার প্রবচন বলে যে বিয়ের পর মেয়েদের সব রোগ ধরা পড়ে! অপুষ্টিতে ভোগা মা জন্ম দেন অপুষ্ট সন্তানের। মেয়ে হলে তার ভাগে দুধ বা ডিম জোটে কম। এরপর সে বেড়ে ওঠে এই ধারণা বুকে আঁকড়ে যে বিবাহ-ই তার উজ্জ্বল উদ্ধার। তাই ডাক্তার তরুণীও পণ দিয়ে বিয়ে করে। অধ্যাপিকাও প্রহৃত হন। মনের রোগ দিন-দিন বাড়তেই থাকে। তাকে ভিক্টিমাইজ করা সহজতর। শরীর নিয়ে বিব্রত মেয়েদের মন। এই শরীর পবিত্র না অপবিত্র এই ভাবতে ভাবতে তার জীবন শেষ। মন জেরবার। যে শরীরকে সে অতি কষ্টে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে ভিড় বাসের নোংরা হাতের থেকে, সেই শরীরকে অনিচ্ছা সহবাস করতে হতেই পারে, যদি স্বামী চান। মানসিক অস্বাস্থ্যের আরেক চেহারা পাওয়া যায় যখন মেয়ে শরীরকে হাতিয়ার করে স্কপোফোলিক গেজকে প্রশ্রয় দিয়ে চলে। শরীর নিয়ে ছুঁচিবাই এবং ছুপা-রুস্তমি উভয়ই সমান ভয়ংকর।

    মি টু রব হল। ভালো কথা। কিন্তু প্রতিবাদ এত পরে কেন? কাজের সুবিধা নেবার জন্য শরীর ব্যবহার করার বহুদিন পরে বুঝতে হবে যে সে এক্সপ্লয়টেড? কেন তখনই প্রতিবাদ নয়? কেন তখনই সপাটে চড় নয়? সেও তো মানসিক জোর; মানসিক সুস্বাস্থ্য।

    শরীর পবিত্র বা অপবিত্র কিছুই নয় - কবে আমরা এমনকরে ভাবব? সাজাবো নিজেদের নিজস্ব ভালো লাগায়? কবে চিনবো নিজের শরীর, নিজের ইস্ট্রোজেনের আশ্চর্য চলন? কবে জানবো যে মেনোপজ মানে ফুরিয়ে যাওয়া নয়? আদৌ ফুরিয়ে যাওয়া বলে কিছুই নেই। মানুষমাত্রেই নিজেতে সম্পূর্ণ। কবে তার মন এই সত্যটিকে মেনে অন্য মানুষকে ভালবাসবে?

    মন ভালো রাখার উপায় হাতের কাছেই থাকে। মনোরোগী হয়ে যাবার আগেই মেয়ে গান গেয়ে উঠুক। নাচুক নিজের ছন্দে। উড়ুক সাইকেলে।

    মেয়েদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি, স্বাভাবিক যৌনতা কোনও সুস্থ পরিসর না পেলে মানসিক অস্বাস্থ্য দূর করা যাবে না। সমাজ তো বটেই, মেয়ে নিজেও নিজেকে নিছক যৌনবস্তু বলেই ভেবে যাবে। কতজন মেয়ে স্বাভাবিক যৌনতাকে প্রকাশ করতে পারে, পরিতৃপ্ত হতে পারে? এর সঙ্গে বহুগামিতা গুলিয়ে ফেলার কোনো কারণ নেই, অথচ নারী তার যৌনতার কথা বললে সমাজ তাকে নষ্টা বলবেই।

    রাস্তাতে গর্ভবতী পাগলিনী দেখেছেন? আহা! কে তার অসহায়তাকে ঠুকরে খেয়েছে! অনেক পাগলিনীর মুখে শুনেছি অশ্লীলতম কথা,গালিগালাজ। কানে আঙুল দিয়ে সরে যাবার কোনো কারণ নেই। এসবই হল স্বাভাবিক যৌনতার অবদানের ফল।

    অবদমনের রাজনীতি তৈরি করেছে জেন্ডার পলিটিক্স। নারী-পুরুষের অনর্থক অর্থহীন বাইনারি। বাইনারি পোষণের অব্যর্থ ফল মনোরোগ। মানসিক অস্বাস্থ্য। শুধু মেয়ে না, ধর্ষক পুরুষও মনোরোগী। “যারে তুমি পশ্চাতে ঠেলিছ, সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে”।

    মনোরোগের অনুষ্ঠান শুনলে শুনতে পাবেন মধ্যবয়সী গৃহবধূদের কথা। ছেলেমেয়ে বড় হয়ে গেছে। স্বামী কর্মব্যস্ত। নারীটি হাহাকার করছেন তাঁর অনন্ত একাকিত্ব আর মেনোপজ উত্তীর্ণ অনিরাপত্তাবোধ নিয়ে। কোন অদৃশ্য বাইনারির ভুয়া নির্মাণ নারীকে মনহীন, মননহীন, যৌনতাহীন এক কাঠপুতুল করে রেখে দিয়েছে; যার সামাজিক দায় শুধু পরিতৃপ্ত করা। নারীর পরিতৃপ্তির কথা কে ভাববে? কেউ না ভাবলে মেয়ে নিজেই ভাবুক নিজস্ব সন্তুষ্টির কথা। ভালভাবে বাঁচা হল শেষ কথা। পঞ্চাশ বছর আগে নারী যে যে শর্তে বেঁচেছেন, আজো তিনি সেই সেই শর্তে বাঁচবেন বুঝি?

    নারী বুঝে নিক নিজের শরীর ও মন। পরিচর্যা করুক নিজস্ব চাহিদামত। প্রেম আসুক স্বতঃস্ফূর্ত বৃষ্টির মত। সে যেন শিকল না হয়। বিবাহ বা সন্তানধারন কোনটিই অনিবার্য নয়, কম্পালসরি নয়; কেবল চয়েস। সমাজ যদি এই বিবর্তন ও বিনির্মানকে মেনে নেয়, মনোরোগ কমতে বাধ্য। এই দুটি ঘটনা মেয়েদের ঠেলে দেয় মাল্টিটাস্কিং নামক গাঁজাখুরি চাপের দিকে।

    দশভুজা কনসেপ্ট এক বাড়তি চাপ। হয় না। অবশ্যই হয় না। দু’হাতে দশকাজ করতে গেলে যেটা হয় সেটা হল স্ট্রেস। ফলাফল হলাহল, মাথাব্যথা, দুশ্চিন্তা, ডিপ্রেশন, নার্ভের অসুখ। পারছি তো সব কাজ ঠিকঠাক সামলাতে? পারছি তো দশভুজা হয়ে উঠতে? ফিগার ঠিক আছে তো? স্বামী অন্য মেয়েদের সঙ্গে লিপ্ত না তো? চামড়া কুঁচকে যাচ্ছে না তো?

    জীবনের অনিবার্য গুলোকে হাসিমুখে মেনে নিয়ে মাল্টিটাস্কিংকে টা-টা করে দিন। পারি না করতে সব কাজ এক হাতে। জোর গলায় বলুন, আপনি মাটির প্রতিমা নন; রক্তমাংসের মানুষ। আপনার বৃষ্টিতে ভেজা দরকার। গলা ছেড়ে গান গাওয়া দরকার। রোজ রান্না করতে আপনার ভালো নাই লাগতে পারে। আপনার মেকওভার করে চামড়া চকচকে করা দরকার নেই। তাতে আপনার ডিপ্রেশন আরো চোখে পড়ে। সহজ ছন্দে নিজেকে সাজান। ভালোবাসুন নিজের শরীর আর মনকে। তাদের ভালো রাখুন এমনভাবে যাতে তারা আপনাকে ভালো রাখে। মানসিক স্বাস্থ্য বড় সূক্ষ্ম তন্ত্রীতে বাঁধা থাকে। তাকে বাজাতে হয় নিপুণ শিল্পীর দক্ষতায়। আমরা শিল্পী হয়ে উঠি না কেন? বিবর্তন আসুক সুস্বাস্থ্যের হাত ধরে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৪ মার্চ ২০১৯ | ১১৮৪ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    কথা - Arnab Dutta
    আরও পড়ুন
    লোকটা - Kunal Basu
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Dyuti Mustafi | ***:*** | ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৫:০৬79136
  • এই লেখাটি আর টিন এজার টাল মাটাল দুটি এক সাথে পড়লে তো বদ হজম। যাক, লেখাগুলি খুব ই ভালো, যুগোপযোগী।
  • | ***:*** | ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৫:৪১79137
  • বেশ ভাল লেখা।
    টুকটাক কিছু দ্বিমত ও কিছু বক্তব্য আছে। পরে লিখবো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন