আব্বাসের সাক্ষাৎকার লোকে হাঁ করে গিলেছে। পক্ষের লোক, বিপক্ষের লোক, আমার মতো সিনিক, সব্বাই। ব্রিগেডের মূল তারকা ছিলেন আব্বাস। মিডিয়া থেকে বামপন্থী, সবাই সেভাবেই ফোকাস করেছেন। শুক্রবারও, একটি রাজনৈতিক সাক্ষাৎকার, শেষ কবে এত লোক এত মন দিয়ে শুনেছেন, বলা কঠিন। আব্বাসের এই আকর্ষণের রহস্য কী? একটা কারণ, দেখেশুনে মনে হচ্ছে, উনি একজন জননেতা, মানে নিজের পিছনে লোক জমা করতে পারেন। সুমন আজকের সাক্ষাৎকারের শুরুতেই বললেন, ব্রিগেডের জনসমাবেশের জৌলুস অনেকটাই আব্বাসের অবদান। আব্বাস নিজেই ব্রিগেডে দাঁড়িয়ে বলেছেন, আরেকটু সময় পেলে দ্বিগুণ লোক করে দিতেন। এসবের সত্য মিথ্যা যাচাই করা অবশ্য খুবই কঠিন, অন্তত যতদিন না আব্বাস নির্বাচনে সাফল্য পাচ্ছেন, বা তাঁর অনুপস্থিতিতে বাম ব্রিগেড খাঁখাঁ করছে। কিন্তু যেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, আব্বাসের মূল আকর্ষণ তাঁর টাটকাপনায়। রাজনীতির জলে তিনি একেবারে নতুন মাছ। ক্ষমতার আকাশে নতুন পাইলট। সাক্ষাৎকারে সেটা তিনি স্পষ্ট করে বললেন। বললেন, যে, রাজনীতিটা তিনি বুঝতেন না, সদ্য এখন এসে বুঝছেন। সেটা সত্যি হোক বা মিথ্যে, এই নতুনত্ব, এই টাটকাপনাই তাঁর আকর্ষণ।
বামরা অনেকদিন মাটির কাছাকাছি লোককে ফোকাসে আনেনি। টিভিতে যে মুখগুলি, সবই শিক্ষিত। যেটুকু নড়াচড়া, তাও শিক্ষিত অংশটিকে নিয়েই। কেন, সে অবশ্য বোঝা মুশকিল, দেবলীনা হেমব্রমের মতো নেত্রী থাকতেও। কিন্তু সে অন্য কথা। যে কোনো কারণেই হোক, আব্বাস, এই কাঁচা আনকোরা মাটির গন্ধটি সরবরাহ করছেন। তিনিই এখন পিছিয়ে পড়া গরিব মানুষের প্রতিভূ। আনকোরা এক তাজা রক্ত। যদিও তিনি গরিব তো ননই, অশিক্ষিতও নন; ধর্মতত্ত্বে মাস্টার্স, অন্তত যা শোনা গেল। কিন্তু উচ্চারণে অপরিশীলিত, ভাবে সরল। উচ্চারণে র ফলার অপপ্রয়োগ নিয়ে তাই আর কারো বিশেষ মাথাব্যথা নেই। আব্বাস নিজেও এই ইমেজটি সচেতন প্রচেষ্টায়, অথবা চেষ্টাহীন ভাবে ধরে রেখেছেন। ভঙ্গিটি বিনয়ী, উচ্চারণ গ্রাম্য, এবং জটিল প্রশ্নের উত্তর দেন অত্যন্ত সরল ভঙ্গিতে। সাক্ষাৎকারে তাঁর সবকটি বিতর্কিত ভিডিওই এক এক করে দেখানো হয়। সবকটির উত্তরই আব্বাস এমন ভাবে দেন, যেন তিনি গ্রামের ছেলেটি। হুট করে রাজনীতিতে ঢুকে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছেন। অত জানতেনও না। কিছু কথা ভুল করে বলে ফেলেছেন, না-জানাটুকুও তিনি স্বীকার করে নেন। রাজনীতিকরা সচরাচর যা করেননা। ফলে আক্রমণাত্মক প্রশ্নের উত্তর যথাযথ না হলেও তাঁর ভাবমূর্তি, পছন্দের লোকদের কাছে, একরকম করে অটুটই থেকে যায়। কিছু মধ্যবিত্ত হাসে। কিন্তু তাঁর আবেদন তো এই মধ্যবিত্তের কাছে না।
সমস্ত প্রশ্নোত্তরের মধ্যে এই সারল্য সর্বোচ্চ শিখরে ওঠে দুটি ক্ষেত্রে। প্রথম, যখন তিনি অকপটে জানান, যে, তিনি মমতার কাছে ৪৪ টি আসন চেয়েছিলেন। কিন্তু মমতা দিতে রাজি না হওয়ায় বামজোটে গেছেন। প্রশ্নকর্তা সুমন, শুনে হাঁহাঁ করে ওঠেন, যেমন করারই কথা, সে কী, এ তো দলবদলুদের মতোই সুবিধেবাদ। দিদি টিকিট দেননি বলে আপনি অন্যদিকে চলে গেলেন? যেটা সুমন বলেননি, সেটা হল, মুসলিম আইডেন্টিটির ধারক ও বাহক না হলে তো সোজা বিজেপিতেই চলে যেতেন। প্রশ্নটা সুমন করেননি, কারণ, ভদ্রলোকের সঠিকত্ব বা ভাবমূর্তি রক্ষার একটা দায় থাকে। সরল গ্রাম্যতার সে দায় নেই। তাই আব্বাস অকপটে বলেন, তা প্যারাফ্রেজ করলে এরকম দাঁড়ায়, "যখন গিয়েছিলাম, তখন তো রাজনীতি জানতাম না। দিদিকে ভালো ভেবেছিলাম। তারপর রিসার্চ করে দেখলাম উনি ভালো না।" কথাটা শুনতে ভালই। আব্বাসসুলভও। কিন্তু ততটা সরলও না। ফলো আপ প্রশ্ন যা হতে পারত, কিন্তু হয়নি, "আপনি রাজনীতি জানেননা, দল খুলে ফেললেন, জোটের প্রস্তাবও করে ফেললেন, কোনো রিসার্চ না করেই? উনি রাজি হয়ে গেলে কী করতেন?" একেবারে প্রশ্নটা আসেনি তা নয়, একটু ঘুরিয়ে এসেওছে। এবং এর উত্তরটা খুব অজানা নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোটে রাজি হয়ে গেলে এই সরল বালক বামদের বিরুদ্ধে বলতেন। অন্য একদল তাঁকে ডিফেন্ড করতেন। এখনকার সমর্থকরা র-ফলার ভুল ধরতেন এবং ভিডিও ভাইরাল করতেন। সেটা সবাই জানেন, এবং কেউই স্বীকার করবেন না। আব্বাসও ততটা সরল বালক নন, যে, এই বাস্তব চিত্রটা জানেন না। তিনি সরকারের চারটে পায়ের একটা পা হতে চান। ব্যস। ফলে শুধু সারল্য নয়, তিনি এইসময়ের জোট এবং দলবদলের রাজনীতির প্রতীকও বটে, যেখানে টিকিট না পেলে হাসতে হাসতে দল পাল্টে ফেলা যায়। যেখানে এক হাতে চে'র উল্কি নিয়ে অন্য হাতে পদ্মফুল ধরা যায়। এও অবশ্য সারল্য, এক অদ্ভুত সারল্য, যে, ক্ষমতার অলিন্দে পৌঁছতেই হবে। কোনো এক রাস্তা দিয়ে। রাস্তাটা যাই হোক তাতে কিছু এসে যায় না। সে ব্যাপারে আব্বাসের কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে বলে মনে হয়না। তিনি দেবলীনা হেমব্রম নন।
দ্বিতীয় যে প্রশ্নটির উত্তর আরও সোজা ব্যাটে এবং ততোধিক সারল্যের সঙ্গে আব্বাস দেন, সেটি হল সেই বিখ্যাত গাছে বেঁধে পেটানোর উক্তি প্রসঙ্গে। তিনি যা বলেন, তার মর্মার্থ হল, বদ লোক হলে পেটাতে হবেনা? পুলিশ থানায় নিয়ে গিয়ে আসামীকে পেটায় না? জেলে পেটায় না? ভাবতে অবিশ্বাস্য লাগে, পুলিশের পেটানো যে বেআইনি সেটা তিনি জানেননা। বলা মাত্রই সেটা মেনেও নেন, এবং দুঃখপ্রকাশও করেন। যেটা আজকের রাজনীতিতে বিরল। তারপরেই তিনি আরও একটি চমকপ্রদ কথা একই নিঃশ্বাসে বলে ফেলেন। কী সেটা? হিন্দুদের মসজিদে যাওয়া এবং মুসলমানদের মন্দিরে যাওয়া উচিত নয়। আবারও সঞ্চালকের হাঁহাঁ। এবং এবার পরিণত রাজনীতিকের মতোই কথা ঘুরিয়ে ফেলেন আব্বাস। কিন্তু বোঝা যায়, যে, সহিষ্ণুতার যে পাঠটি আমরা দিতে এবং নিতে অভ্যস্ত, আব্বাসের চিন্তার বৃত্ত তার বাইরে। সেই ভাবনারও নিশ্চয়ই কিছু খদ্দের আছেন। কিন্তু কথা হল, ধর্মনিরপেক্ষতার এই পাঠ, বামরা হজম করবেন কী ক'রে। যে তৃণমূল রামনবমীকে অ্যাডাপ্ট করে ফেলে বিজেপিকে ঠেকাতে, তাদের পক্ষেও এই ছোঁয়াছুঁয়ির এই গোঁড়ামিকে ধর্মনিরপেক্ষতা হিসেবে মেনে নেওয়া সম্ভব না। তাহলে বামরা?
বামরা খুব সম্ভবত ভাবছেন, নিশ্চিত করে জানা নেই, এ হল নরম কাদার তাল। এই সারল্যকে নিজের মতো করে গড়েপিটে নেওয়া যাবে। পুলিশের পেটানো যে বেআইনি, মহিলাদের গাছে বেঁধে ঠ্যাঙাব বলা যে অনুচিত, এসব শিখিয়ে পড়িয়ে নেওয়া যাবে। কিন্তু হিসেবে একটা ভুল হওয়া খুবই সম্ভব। শহুরে মানুষরা দূর থেকে দেখে গ্রাম্যতাকে সারল্যের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। গ্রাম্য চাষিভাই মানেই সরল ও গোলগাল নয়। বরং উল্টোটাই। চাষি মাত্রেই ভাই নন, তাঁদেরও উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং হিসেবনিকেশ থাকে। সেখানে শহুরেদের যেকোনোদিন নিজের মাঠে তিন গোল দিতে তাঁরা সক্ষম। এখানে উচ্চাকাঙ্ক্ষাটি খুব সহজ। সরকারের চারটি পায়ের মধ্যে একটি হয়ে ওঠা। ওঠার পথটি সিঁড়িমাত্র। আব্বাসকে কেউই সেভাবে চেনেন না, আশা করা যায় জোটসঙ্গীরা চেনেন। আব্বাস বা আরও কোনো বড় খেলোয়াড়ের হাতে তাঁরা স্রেফ সিঁড়ি হয়ে যাবেন না।
ইন্টারভিউ দেখলাম। লেখকের বিশ্লেষণের সঙ্গে সহমত।
ঠিক কথা।
একদম ই ভুল অ্যানালিসিস। এবং সৈকতের কাছ থেকে অনভিপ্রেত। সৈকত তার বিশ্লেষণী শক্তিকে স্রেফ সিপিএম বিরোধিতার জন্য ব্যবহার করেছে এই ক্ষেত্রে, হুইচ ইজ ফাইন বাট নট মাচ এল্স। এবং সিদ্দিকী তৃণমূল অ্যালায়েন্স হলে সৈকত আর যাই হোক আর্বান পারসেপশনের গ্রামীন সারল্য নামক বোগাস বিষয়টাকে তার আর্গুমেন্টের প্রধান স্তম্ভ হিসেবে ইউজ করত না এবং সিদ্দিকী কে সিদ্দিকুল্লার কন্টিনিউয়েশন হিসেবেই দেখত:-))))
গ্রামের লোক সরল সাধা সিধে এই ন্যারেটিভ প্রাইমর্ডিয়াল কনশাসনেসএর ধারণা ওয়ালা নকুদের মধ্যেই প্রবল?:-)))) বামেদের দুর্নাম, গ্রামের অশিক্ষিত কে মাথায় তোলার জন্য আর পঞ্চায়েত করে তাদের রাজনীতির দলাদলি তে আনার জন্য, গ্রামীন কোরাপশন জিনিসটার সমসাময়িক রূপটির জন্ম দেওয়ার জন্য :-))) যেন ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের আগে লোকে শুধুই বাঁশি বাজাত :-)))
গ্রামীন সারল্যের ধারণাটা কোন আর্গুমেন্ট ই না, সিপিএম এর কোন গোপন ডকুমেন্ট ফাঁস হলে খুব ই অবাক হব, যেখানে নেতৃত্ত্ব এই আই এস এফ এর অ্যালায়েন্স টা করছেন, সিদ্দিকীর গ্রামীন সারল্যের জন্য :-))))
সারা দেশে মুসলমান দের একটা পার্টি নেই। যেখানে যাকে পারেন ভোট দেন। একই রাজ্যের মধ্যেও নানা রকম গ্রুপ কে দল কে ভোট দেন, তাও তাঁদের লোকে ব্লক ভোটিং এর জন্য নিন্দে করে। সারা দেশের মুসলমানদের পার্টি , পার্টিশনের স্কারের জন্য শুধু না, নানা রকম লোক থাকায় সেটা সম্ভব ও না। তবু তাঁদের ভোট ব্যাংক বলা হয়ে থাকে।
আসামে আই ইউ ডি এফ, ওয়েসির মিম, আর সিদ্দিকীর নিজস্ব নানা আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট আছে। সিদ্দিকীর টা নতুন দল এবং নেতৃত্ত্বে , চয়ন করা প্রার্থীতে শুধু মুসলমান না নানা রকম লোক আছে।
বড় দলের মাইনরিটি মুখ হঅওয়া ছাড়া পাবলিকলি নিজেকে বিশ্বাসী পরিচয় দিতে চাওয়া মুসলমান এর নিজস্ব রাজনৈতিক দল নেই, এবং থাকাটাকে হিন্দু সামাজিক ক্ষমতাশালীরা খুব বিপদের জিনিস মনে করে গাল দেবে এটাতে অবাক হওয়্যার কিছু নেই। সেরকম অসংখ্য ওঁছা প্রতিক্রিয়া আমরা সর্বত্র দেখছি। সেটা প্রবন্ধাকারেও আগেও দেখা গেছে।
সিদ্দিকীর দল কতগুলো প্রয়োজন থেকে উঠে এসেছে। বিশ্বাসী মুসলমান দের নিজেদের রাজনৈতিক সংগঠন কেন থাকবে না, এটা পরিষ্কার না। আর মিম আর আই ইউ ডি এফ এর তুলনায়, ঘোষিত প্রার্থীর তালিকায়, সরকারী পদাধিকারীর তালিকায় এই নতুন দলটির সত্ত্বা বৈচিত্র ঢের বেশি। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশীয় আশরফী এলিট মুসলমান, বম্বের বিশাল বড়লোক ব্যাবসায়ী রা, কেউ বিশ্বাসী , কেউ অবিশ্বাসী, লালু মুলায়াম নীতিশ এর টিঁকে থাকা বিভিন্ন গ্রুপ গুলির সংগে অ্যালায়েন্স করা নেতারা, এইসব এর থেকে, আসামের আই ইউ ডি এফ আর এই সিদ্দিকীর দলের মূল বেস টা রুরাল, এবং তার কারণ ভারতীয় সেকুলারিজমের মধ্যে যে উত্তর ভারতীয় গঙ্গা যমুনা সংস্কৃতির অ্যাকোমোডেশন রয়েছে , সেটাকে অন্য রিজিওনাল দল আঞ্চলিক কারণে রিজেক্ট করে বা রামচন্দ্র গুহর মত করে অ্যানালিসিস করলে 'এনরিচ' করে :--))) বাস্তবতার বিভিন্নতা বিভিন্ন দল তৈরী করে, নানা অ্যালায়েন্স হয়, এতে এত কথার কি আছে বুঝলাম না।
সৈকতের বিশ্লেষণে আসলে এবিপি আনন্দের সাক্ষাৎঅকার গ্রহণকারী চালিয়াত সাংবাদিক ভদ্রলোকের হতাশাটার একটা ছায়া পড়ছে, সিদ্দিকী কে দিয়ে ভোটের আগে বিস্ফোরক মৌলবাদী কথা বলানো যায় নি। শুধু ইকুয়াল টার্ম্স e অংশীদারিত্তএর কথ বলা হয়েছে, তাতেই লোক জন হিলে গেল।
সারা দেশের সব রকম আইডেন্টিটির সব রকম ডিসপেন্সেশন এর সব রকম পোলিটিকাল অ্যালায়েন্স নিয়ে থিয়োরেটিশিয়ান রা বামেরা আইডেন্টিটি বোঝেনা বলে বিলাপ করবেন, আর রেটোরিকে আইডেন্টি অ্যাভয়েড করে একটা দল তৈরী হয়েছে, যার প্রভাব পরীক্ষিতই না, দক্ষিন বঙ্গের এক দুটো জেলায় সীমা বদ্ধ থাকার সম্ভাবনাই বেশি, তাকে নিয়ে এই উচাটন, আসলে প্রিভিলেজের নিরাপত্তার অভাব। সংরক্ষন বিরোধিতার অন্য দিক মাত্র।
সৈকত শার্প প্রাবন্ধিক , আমার প্রিয় প্রাবন্ধিক দের মধ্যে একজন, যা সব মন ছুঁয়ে গেলো টাইপের লেখায় জীবন উত্যক্ত সেই ডোবায় রিলিফ স্বরূপ তার কাছ থেকে এই বিশ্লেষণ পাওয় খুব ই দুঃখের। শেষ বাক্যটার সঙ্গে বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য্যর বক্তব্যের মিল রয়েছে, যেখানে খুব ই আশানুরূপ ভাবেই, এই অ্যালায়েন্স কে ভবিষ্যতের মারামারির ভিত্তি বলে দেখা হয়েছে, এবং সেটা দিয়েই নতুন হিন্দু কনসোলিডেশন প্রচেষ্টা রয়েছে।
এনার্সি হবে, এন পি আর হবে , সি এ এ হবে, আসামের ভোটে তার রিয়াকশন হবে, পশ্চিমবঙ্গের ভোটে হবে না তা হয় না। বিহারের ভোটে মীম কে মহাজোটে নেওয়া হয় নি কেন তার বিশেষ উত্তর নেই। এক বড় দলে ছোটো হয়ে থাকো এই প্রত্যয় ছাড়া। এখানে মমতা কেন সিদ্দিকী দের নেন নি তিনি বলতে পারবেন। নিলে সিদ্দিকীর কি রেটোরিক হত সেটা নিয়ে সরল আর্বান হিসেবে আর স্পেকুলেট করছি না ঃ-))))তবে না নেওয়ার ফলে কি রেটোরিক হয়েছে আপাতত সেটা আমরা দেখতে চাইলে দেখা যাচ্ছে।
ঃ-))))হাস্যকর :-))))
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
বঙ্গীয় বামেরা ভাবছেন, তাঁরা আব্বাসকে ব্যবহার করবেন। আসলে তাঁরাই আব্বাসের দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছেন। আব্বাস এই তথাকথিত বামপন্থীদের ভণ্ডামিকে খুব স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে দিয়েছেন। যেভাবেই হোক ক্ষমতা ফিরে পেতে হবে; তার জন্য কোনো ধর্মোন্মাদ গোষ্ঠীর হাত ধরতেও তাঁদের কোনো আপত্তি নেই। আর এর বিরুদ্ধে কথা বললেই বামেরা গালাগালি দিচ্ছে! সবাই ভণ্ড, হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক; একমাত্র তাঁরাই ধর্মনিরপেক্ষ! বুঝতে পারছেন না , মুখোশ খুলে গেছে, ক্ষমতালোভী মুখ আর আড়ালে নেই! নাকি বুঝেও বুঝতে চাইছেন না!
আব্বাস এঁদের উলঙ্গ রূপ প্রকাশ করে দিয়েছেন! অনেক ধন্যবাদ, আব্বাস!
এই বিশ্লেষণে কিছুটা সহমত, অনেকটাই নই। দৃষ্টিকোণের সঙ্গে একেবারেই নই। সেসব দীর্ঘ আলোচনা। কিন্তু মন্তব্য হিসাবে লেখার শেষাংশের প্রেক্ষিতে একটা কথাই বলার - আব্বাসকে "সরল গ্রাম্য বালক" হিসাবে বাম নেতারা দেখছেন, এমন ভাবাটাও আদতে সারল্য। বাম নেতারা যথেষ্টই "রিসার্চ" করেছেন বলে আমার ধারণা। তাঁরা একটা ঝুঁকি নিয়েছেন, যেটা নিতেই হত। এবং সেটা নেবার ব্যাপারে তাদের চেয়ে যোগ্য ভারতে কেন, পৃথিবীতে আর কোন দল আছে বলে মনে হয় না। ৩৪ বছর একটা দশ দলের জোট সরকারকে টিকিয়ে রাখার অভিজ্ঞতা যাদের আছে, এই ঝুঁকি তারা ছাড়া কে নেবে?
দেখেছি ইন্টারভিউ টা। সুমন পরের পর বাউন্সার দিয়েছে। এত কঠিন বিপদে আর কাউকে ফেলেছে কিনা বলা মুশকিল। তবে সুমনের দোষ নেই কারন আব্বাস ই এই পিচের কিউরেটর ছিল। ওর অতীত ই ওকে কামড়াতে ফিরে এসেছে। যাই হোক তবু ডিফেন্ড করেছে বুদ্ধিমত্তা র সাথে। ও টাটকা হতে পারে, গ্রাম্য হতে পারে, সরল নয় বরং ভীষণই তীক্ষ্ণ বুদ্ধি। বাম যেন এই আগুনকে সঠিক ভাবে সামলায়। নইলে পরবর্তী তে কি হবে ভগবান জানে। লেখক খুব ভালো বিশ্লেষণ করেছেন।
সিপিএম সমর্থকদের মধ্যে যাঁরা মুসলমানের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অ্যালায়েন্স সইতে পারবেন না, তাঁরা অন্যত্র ভোট দেওয়াই মঙ্গল, বিজেপির আমলে বামপন্থীদের সঙ্গে সরকারের নিশানায় থাকা ধর্মের লোকের নেতৃত্তএর রাজ্নৈতিক দলের অ্যালায়েন্স না হলেই অবাক হওয়ার ব্যাপার ছিল।
সিপিএম সমর্থকদের মধ্যে যাঁরা মুসলমানের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অ্যালায়েন্স সইতে পারবেন না, তাঁরা অন্যত্র ভোট দেওয়াই মঙ্গল, বিজেপির আমলে বামপন্থীদের সঙ্গে সরকারের নিশানায় থাকা ধর্মের লোকের নেতৃত্তএর রাজ্নৈতিক দলের অ্যালায়েন্স না হলেই অবাক হওয়ার ব্যাপার ছিল।
সিদ্দিকি, সিদ্দিকুল্লার এক্সটেনশন? I SEE
মুসলমানদের রাজনৈতিক দল? চমৎকার ধর্মনিরপেক্ষ মতাদর্শ! এবার বিজেপির সঙ্গে জোট করলেই ষোলোকলা পূর্ণ হয়!
আচ্ছা একটা জিনিস একটু কেউ ক্লিয়ার করবেন , শুনছি isf নামে নাকি কোনো দল নেই। যা আছে তা হল রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিশ পার্টি। এরাই বিক্রম চ্যাটার্জি, মিলন মান্ডি এদেরকে প্রার্ত্থই করেছে।
সামারি
সিদ্দিকুল্লা হল পোষা মুসলমান। সিদ্দিকীর নিজস্ব উচ্চাশা আছে। অতএব সিদ্দিকুল্লা ভাল মুসলমান, সিদ্দিকী খারাপ মুসলমান।
লেখক সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে কোন বক্তব্য নেই। কিন্তু লেখাটা বাঙালি উচ্চবর্ণের ইসলামফোব হিন্দুদের পছন্দ হবে।
সোর্স এর বিষয়ে ঃ নতুন গতি কাগজের ফেস বুক পেজ থেকে নেওয়া। সেখানে এটা গতকালকের পোস্ট ছিল। ওয়াটার মার্ক ও দেওয়া রয়েছে। প্রসংগত নতুন গতি সাধারণ ভাবে তৃণমূল সমর্থক জাতীয়তাবাদী মুসলমান দের কাগজ। আমি গুরু তেই তাদের কোন একটা ঈদ সংখ্যা কাগজ নিয়ে রিভিউ করেছিলাম একবার , ক্যাজুয়ালি। প্রেডিইকটেবলি , তাঁরা দুটি প্রসংগ এড়িয়ে চলেন, কাশ্মীর এবং ১৯৭১ পরবর্তী তে সেকুলার মুসলমানের কালচারাল সেন্টার হিসেবে ঢাকার এমার্জেন্স। তাঁদের মূল কাজটা অবশ্য বিউটিফুল ছিল, বিংশ শতকের প্রথম ভাবে, মুসলমান ইন্টেলেকচুয়াল দের সম্পর্কে নানা প্রবন্ধ।
দেবলীনা হেমরম বিষয়ে একটু বলি, ভদ্র মহিলা সিপিএম দলের বিধায়ক। শুধু এই যোগ্যতায় তিনি বিধান সভার ভেতরে গুঁতো গুঁতি মারামারির শিকার ও হয়েছেন, শাসক দলের বিধায়ক দের হাতে ।
গত কয়েকটা ব্রিগেডে প্রধান স্পিকার, এবারে শেষ বক্তা ছিলেন। সুতোরাং পার্টির আভ্যন্তরীন বিলিং এ তিনি ই প্রধান বক্তা। আনন্দবাজার তাঁকে রেটিং এ একটু রঞ্জন দার মত করে উঁহু দিয়েছে :-)))) আর বলেছে গতবার ভালো বলেছিলেন, সেটা গতবার বলেছিলেন কিনা অবশ্য একটু খুঁজে দেখতে হবে। দেবলীনা কে পার্টির রাজ্য কমিটির আগামী সম্পাদক হিসেবে দেখতে পেলে খুব ই খুশি হব, বা বিধান সভার পরিষদীয় দলের নেত্রী হিসেবে দেখতে পেলে।
দেবলীনা কে সিপিএম পার্টি ভালোবেসে গুরুত্ত্ব দেয় নি। আদিবাসী দের কাছে পার্টির ক্রেডিবিলিটি বাড়ানোর জন্য দিয়েছে, আবার আদিবাসী নেত্রী হিসেবেও শুধুই আইডেন্টিটি পলিটিক্স এর কথা বলছেন না এই কারণেই গুরুত্ত্ব দিয়েছেন। আদিবাসী দে কাছে ক্রেডিবিলিটি কমার ব্যাপারটার একটা দিক অবশ্য প্রোপাগান্ডা ওয়ারের হার, সেখানে অসংখ্য পারর্টির সাধারণ সমর্থক মাওবাদী তৃণমূলী কম্বাইনের হাতে খুন হয়েছেন, পার্টির গ্রহণযোগ্যতা সেই অঞ্চলে এবং সারা রাজয়ে বাড়ার কথা। সেটা বাড়েনি তার একমাত্র কারণ প্রোপাগান্ডা ওয়ারে সিপিএম এর হার। আরেকটা দিক ও খুব সহজবোধ্য। সিপিএম পার্টির কৃষিক্ষেত্র নিয়ে যে পজিশন ছিল, ৮০ ব ৯০ এর দশকে, a সেটা পাহাড়ে বা জঙ্গলে পপুলার হওয়া সম্ভব ছিল না, যেখানে চাষ প্রধান জীবিকা হওয়া কঠিন, তার ফলে এবং জাতি প্রশ্নে অ্যালিয়েনেশন এখানে হয়েছে, তার ধাক্ক পাহাড় বা জংগল কে হাসিয়েও মেটানো যায় নি। দেশে বা রাজ্যে প্রান্তিকতা নানা ধরণের থাকবে, এট নতুন কিসু না। তার সংগে বিভিন্ন পার্টি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে এনগেজ করবে।
এবার ভোটে যেটা নিশ্চিত বলা যায়, পশ্চিমে , বিজেপির ভোট লোকসভার ২০১৯ এর তুলনায় কমবে, তৃণমূল ও বামের ভোট বাড়বে। উত্তরবংগ সম্পর্কে সেট বলা যায় না , বিজেপি সেখানে ভালো ফল করার একটা সম্ভাবনা আছে। বাকি কোথাও ই বিজেপির বিশাল ভালো ফল হবার বিশেষ চান্স এখনো কম, তবে হ্যান লোকে স্পেক্ট্যাকল দেখতে এবং নিজেরি পেছনে নিজেই রকেট বাজি লাগাতে পছন্দ আগে করে নি তা না :-))))
Tapas Das | ১৫ মার্চ ২০২১ ০৯:৫২
সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আর পার্টির অন্ধ আনুগত্য এক জিনিস নয়। কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যকে আর্ষসত্য রূপে গ্রহণ করতে হবে, কোনো দ্বিমত চলবেনা; এই নির্বোধ চিন্তা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর!
তবে এটাই রাজনৈতিক দলগুলোর আসল রূপ। তাঁরা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও আসলে এতে বিশ্বাস করেন না! তাঁরা স্পষ্টভাবে মনে করেন, তাঁরা যা বলবেন সাধারণ মানুষ সেটাই বিনা প্রশ্নে মেনে নেবে! আর প্রশ্ন তুললেই সে প্রতিক্রিয়াশীল! ডান, বাম, গেরুয়া - সব দলের একই মানসিকতা!
দেবব্রত বিশ্বাস বহুদিন আগেই এই ভণ্ডামিকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে দিয়েছেন!
সবার আগে সাধারণ মানুষকে পার্টির ক্রীড়নক ভাবা বন্ধ করুন! আপনারা কেউ প্রফেট-পয়গম্বর নন যে আপনারা যা বলবেন তাই বিনা প্রশ্নে মেনে নিতে হবে!
প্রত্যেকেটা মেনস্ট্রীম দলের সঙ্গে মুসলমান রা এনগেজ এর আগেও করেছেন। এখন রাজনৈতিক দল তৈরী করে করছেন। ১৯৮০ র দশক থেকে আমরা কাঁসিরাম দের দেখেছি, তারো আগে দলিত প্যান্থার পার্টি দেখেছি, ৯০ এর দশকে যাদব দের পার্টি দেখেছি, আমাদের(হিন্দু উচ্চবর্ণ লিবেরাল দের ) এতদিনে আইডেন্টিটি পলিটিক্স এর নানা ডিসপেন্সেশনে অভ্যেস হবার কথা, হয় নি দেখা যাচ্ছে।
পোলিটিশিয়ান, সিদ্দিকুল্লার উচ্চাশা কিছু কম নেই। এবং থাকাটা অপরাধ ও না। তাঁকে মুখ্য্মন্থ্রীত্ত্ব অফার করা হলে তিনি গ্রহণ করবেন না, এরকম কোন প্রমাণ আছে কি? কোন রাজনীতিবিদ ই করবেন কি?
ঘটনা হল, উনি কোন সময়ে কি রেটোরিক ব্যবহার কখন করছেন। সাচার কমিটির রিপোর্টের পরে রুরাল মুসলমান দের একটা অ্যাসারশনের দরকার ছিল, সেটা সিদ্দিকুল্লা দিয়েছিলেন। অন্য ব্যক্তব্য নিয়ে প্রচুর কন্ট্রোভার্সি ছিল, কিন্তু তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতিটা মূলতঃ ছিল বড় এমার্জিং দলের কাছ থেকে ডিল আদায় করা। সেটা আইনি এবং ইউনিভার্সাল হলে , এবং ওয়েলফেয়ার স্টেটের কারেকশন হিসেবে ক্যাটিগোরাইজ করা গেলে, সিদ্দিকুল্লা ই হিরো হতেন, ঘটনা চক্রে সেটা হয় নি। তার নানা কারণ রয়েছে এবং বাঙলার মুসলমান পলিটিক্স শুধুই সেকুলার জাতীয়তাবাদী মালদা মুর্শিদাবাদী ঘরানার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি। ভাষাr ভিন্নতা ইত্যাদি রয়েছে। এর উপরে এনার্সি, সি এ e হবে, বিজেপি বলে বেড়াবে সেটা তাদের বর্ডার ডিস্ট্রিক্ট এর কর্মসূচী, আর নতুন ফ্রন্ট তারা গড়বে না এটা খুব ই অবাক করা কান্ড হত।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ই এখনো সাধারণ মুসলমান ভোটারের প্রধান চয়েস। কংগ্রেস সেদিক থেকে দইতীয়। সব ধর্মের ভোটার দের সাধারণ ভোটার দের মধ্যেই তিনি ই সবচেয়ে পপুলার। তবে তাঁর পপুলারিটি কোরাপশন ইত্যাদি কারণে একটু ডেন্টিং হয়েছে। সিদ্দিকী ভোটে কোথাও আদৌ না জেতার সম্ভাবনাই বেশি। একেবারে নতুন দল। কিন্তু এই দলটার পরে মুসলমান রা আরো নিজেদের দল গড়বেন রাজ্যে। এবং সকলেই অন্য দলের মধ্যে না থেকে নতুন ধরণের ফ্রন্ট পলিটিক্স তৈরীর চেষ্টা করবেন বলেই মনে হয়।সেই বিষয়টাই নর্মালাইজ হবে। কিছুদিন পরে এট নিয়ে কেউ ই দুশ্চিন্তা করবে না।
তবে সারা রাজ্যের কোন ধর্মের সবাই কোন দিন ই এক দলকে ভোট দিতেন না,এ বার ও দেবেন না।
খুব আজগুবি কথা। পার্টির কথা , সিপিএম পার্টির কথা কেউ ই শোনে না। আপাতত ৭% শুনছে। পরে আরো কম ব বেশি শুনবে। পার্টির কথা শুনে সব মুসলমান রা বামপন্থী বা সব হিন্দু ভোটার রা মুসলন সাম্প্রদায়িক হয়ে যাবেন এরকম ভাবনার কি কোন এভিডেন্স আছে? সিপিএম পার্টির মধ্যে যারা সিদ্দিকী কে সইতে পারছেন না, এরকম অনেক লোক আছেন, তাঁরা হাঁটা দ্ন অসুবিধে কি? কেন দিছেন নিজেদের কাছে পরিষ্কার থাকলেই হল।
কংগ্রেস এর সমর্থনে জনতা দলের সমর্থনে ধর্মগুরু রা ফতোয়া দিতেন, তাও কংগ্রেস এর ভোট কমত, যখন যাকে লোক মনে করতো ভোট দিতো, নব্বই দশকে বহুবার হয়েছে। একবার লালু, কোথাও মুলায়ম কখনো নীতিশ ভোট পেয়েছেন। মুশলমান রা পার্সোনাল ল নিয়ে ভাববে আর ব্লক ভোটিং করবে এই পর্যন্ত প্রেডিক্টেবল বিহেভিয়র ছিল, এবার তাঁরা রাজনৈতিক দল কারা শুরু করেছেন, আও আঞ্চলিক এবং আঞ্চলিক এর মধ্যেই একেবারে স্থানীয় প্রভাব নিয়ে, তাও পৃথিবীর সবার রাজনৈতিক দল হবার পরে, তাতে লোকে মাইরি চমকে চোদ্দ হয়ে যাচ্ছে।
দীপ
বোধি নির্বাচনের সময়ে একটি রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সমর্থক হিসেবে দলের লাইন ধরে কিছু বক্তব্য রেখেছেন। সেটাই স্বাভাবিক নয়কি?
ওর বক্তব্য পছন্দ না হলে পয়েন্ট ধরে কাউন্টার করুন। খামোখা ব্যক্তি আক্রমণ কেন? ও তো নিজেকে প্রফেট/পয়গম্বর বলে নি।
বরং আপনার বক্তব্যটা গুরুঠাকুর মার্কা লাগছে।
নিশ্চিন্ত থাকুন, পাবলিক কোন পার্টির 'ক্রীড়নক' নয়। ভোট দেয়ার পেছনে নানান ক্রস ইন্টারেস্ট কাজ করে। 2রা মে!
বোধির ফোরকাস্ট সত্যি হলে ও যা খেতে চাইবে খাওয়াব। বাম আসুক, কং আসুক, তিনো আসুক-- বিজেপি যেন না আসে।
ইলেকশন জিতলেই ফ্যাসিবাদ ঠেকানোর লড়াই শেষ হয় না, একটু অক্সিজেন তো পাওয়া যাবে। হিটলারও ইলেকশন জিতেছিল।
আমি এরকম কেন কোনরকম ফোরকাস্ট কোথাও করিনি। গ
আমি কয়েকটি বক্তব্য রেখেছি
ক - বিজেপি কে যতটা বড় শক্তি হিসেবে দেখানো হচ্ছে ততটা বড় শক্তি তারা নয়। তারা ভারতের বহু জায়গায় সমর্থন হারাচ্ছে। এখানে যারা বিজেপিকে বিশাল ফোর স হিসেবে দেখছেন তারা হয় ভীতুর ডিম নয় নিজেরা এই ইলেকশনে বিজেপিকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বা সারল্যে অন্ধ হয়ে বিজেপি কে সাহায্য করে দিচ্ছেন।
খ - মমতা ইজ ফরমিডেবল। তবে তাঁর পপুলারিটি র পরীক্ষা হচ্ছে মেডিয়ার সাহায্য ছাড়া জেতার, প্রথমবার হচ্ছে।
গ- আরেকটা কথা বলছি, আই এস এফ আসার জন্য তারা সিপিএম কে ভোট দিতে পারবেন না তারা অন্যত্র ভোট দিলে আমি অখুশি হবো না। মোট ভোট বা সিট কমলেও। নানাধরনের মাইনরিটি র সঙ্গে বামপন্থীদের আলায়েন্স থাকার ই কথা।
ঘ - বামদের ভোট বাড়বে বলেই আমি সিপিএম সমর্থক হিসেবে মনে করছি। আমি আরো কয়েকটা জিনিস মনে করছি।সেটা সরকার গড়ার জন্য যথেষ্ট কিনা বলার মত সার্ভের ডেটা আমার কাছে নেই। আমি মনে করছি, কেবল পর্যবেক্ষন এবং তার বায়াস আর জেনেরালিটির অভাব সহ
১-পশ্চিম বঙ্গের পশ্চিমে বিজেপির শতাংশ ভোট ২০১৯ এর তুলনায় কমবে।
২ - আর্বান ইউথ এর কিছু ভোট সিপিএম এর বাড়বে। স্বল্পশিক্ষিত দের মধ্যেও বাড়বে, যে ডেমোগ্রাফিকটা মূলতঃ তৃণমূলের। মম্তার দলের লোকের কোরাপশন এর একটা কারণ। এই ক্রোধের পুরো ভোট বিজেপি তে যাবে না।
৩। তৃণমূলের এবং বামদের মহিলা ভোট বাড়বে। বিজেপির পক্ষে মহিলা ভোট দেশের অনেক জায়গাতেই কমেছে।
বোধিদা, এখানে দুটো কথা বলার আছে। আপনি বারবার বলছেন মুসলিম রাজনৈতিক দলের কথা। এটাকি সেকুলারিজম এর পরিপন্থী নয়। এভাবেই তো মুসলিম স্বার্থ, মুসলিম রাষ্ট্র এর কথা উঠে আসবে আবার। এরপর সেটা দেখিয়ে বিজেপি বলবে মুসলিম স্বার্থ নিয়ে যদি কেউ দল করে তাহলে হিন্দু স্বার্থ নিয়ে করলে কি দোষ। কেন তাহলে সাম্প্রদায়িক বলা হবে। তখন বাকি যেটুকু মুখোশ হালকা লেগে আছে তা ঝেড়ে সরাসরি সংবিধান সংস্কার বা হিন্দু রাষ্টের দাবি তুলবে। এরকম ভাবে তো পোলারাইজেশন বাড়বে বই কমবে না।
আমি মনে করছি স্বতঃস্ফূর্ত ভোট হলে তৃনর 60-40 চান্স আছে। কারণ হল মমতার জনসমর্থন। কিন্তু ভুলে গেলে চলবেনা এটা পশ্চিমবঙ্গ এবং এখানে মেশিনারি দিয়েই ভোট বৈতরণী টপকানো হয়। নানা জায়গায় যে বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী মধুর লোভে বিজেপিতে গেছে। তারা ই ভোটের সময় ভোট করাবে। তাই মমতার জন্য চাপের বিষয়। মমতার দলে এমনকি গ্রহণযোগ্য মুখেরও প্রবল অভাব হয়েছে। তাই টলিউড থেকে পাইকারি দরে সেলেব নিয়ে এসে গুঁজে দেওয়া হয়েছে। কিছু জায়গায় তা নিয়েও ক্ষোভ অন্তর্দ্বন্দ্ব আছে। বিজেপিতে যারা গেছে তারা সোৎসাহে ভাবছে জান প্রাণ দিয়ে লড়ে ভোট বের করে সোনার বাংলার মোয়া খাব আর আমিও অভিষেকের মতো বাড়ি করব। এছাড়া যেভাবে মূল বিজেপি টাকা ছড়িয়ে এবং খেটে নানা জায়গায় যত সংগঠন দাঁড় করিয়েছে সেগুলোও ভালোই শক্ত, কারন দেওয়াল দখল , পার্টি অফিস দখল, ফ্লেক্সের জায়গা দখল এসব দিকে তিনো পিছিয়ে পড়েছে। নানা জায়গায়, সব জায়গায় নয়। যাই হোক এটুকু বলার যে বাংলায় বিজেপি কে কাগুজে বাঘ মনে করার মতো ভুল না করাই ভালো।
তবে বিজেপির ও কিছু অন্তর্দ্বন্দ্ব আছে, খাওয়া খাওই আছে। তদুপরি বাম আছে আন্টি ইনকামবেনসি ভোট বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নেয়ার জন্য। লড়াই কঠিন হবে কিন্তু মনে হচ্ছে বাম জোট ভোটের পর দিদির সাথে হাত মিলিয়ে সরকার গড়বে, বিজেপিকে ঠেকানোর জন্য। আর তিনো মূল একদম বাজে হারলে জানিনা। তখন কপালে দুঃখ আছে।
"মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোটে রাজি হয়ে গেলে এই সরল বালক বামদের বিরুদ্ধে বলতেন। অন্য একদল তাঁকে ডিফেন্ড করতেন। এখনকার সমর্থকরা র-ফলার ভুল ধরতেন এবং ভিডিও ভাইরাল করতেন। সেটা সবাই জানেন, এবং কেউই স্বীকার করবেন না। "
কতটা খাঁটি বিশ্লেষণ বোধিসত্ত্বের কমেন্টই তার প্রমাণ।
আব্বাসের সঙ্গে সুমনের সাক্ষাৎকার হাফ দেখেছি, তাই মন্তব্য করতে সাহস পাচ্ছিলুম না। নানা মন্তব্য পড়ে এখন মনে হচ্ছে হাফ বা পোয়াটাক বা আরও কম দেখেও মন্তব্য করায় অসুবিধে নেই।
এ-বি-পি আনন্দ ছাড়াও আর কার হয়ে সুমন কাজ করছিলেন? আব্বাসকে তো অনেক পুরোনো চলচ্ছবি দেখানো গেল, দিলীপ ঘোষকে দেখানো যেত না? অথবা মমতাকে? বোকা (সরল বলাটাই বুঝি ভদ্রতা?) আব্বাস কিন্তু চালাক সুমনকে - ওই যে দাবা খেলায় কী যেন বলে? - করে দিলেন বোকা-বোকা হাসতে হাসতে। বেশ কিছু মন্তব্য পড়ে বোঝা গেল, সিপিএম-বিজেপি-তৃণ নির্বিশেষে দর্শক মজা পেয়েছে।
ইলেকশনের রেজাল্টের ব্যাপারে জ্যোতিষীগিরি করে লাভ নেই, তাবড় তাবড় সেফোলজিস্ট-স্ট্যাটিস্টশান অক্কা পান।কিন্তু সোজা ভোটে বিজেপি সোনার বাংলা গড়ার সুযোগ পাবে বলে মনে হয়না। অতএব পোস্ট-ইলেকশন শপিঙের জন্যে মোদী-শাহ দু'ভাই প্রস্তুত হচ্ছে। ওদের শপিং লিস্টে নতুন একটা নামের জন্যে বঙ্গবাসী মনে মনে প্রস্তুত?
@বোধিদা আমি নতুন গতি তে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তার উৎস সম্মন্ধে আমার জানা নেই। কিন্তু ইলেকশন কমিশনে যে তথ্য জমা পড়েছে সেই অনুুুযাই এটা পেলাম। এখানে রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিশ পার্টি লেখা।
২০২১ বিধান সভা ভোটে বাংলায় মহাজোটে বামেরা বলির পাঠা হবে।
"আনকোরা মাটির গন্ধটি সরবরাহ করছেন। তিনিই এখন পিছিয়ে পড়া গরিব মানুষের প্রতিভূ। আনকোরা এক তাজা রক্ত। যদিও তিনি গরিব তো ননই, অশিক্ষিতও নন; ধর্মতত্ত্বে মাস্টার্স, অন্তত যা শোনা গেল। কিন্তু উচ্চারণে অপরিশীলিত, ভাবে সরল। উচ্চারণে র ফলার অপপ্রয়োগ নিয়ে তাই আর কারো বিশেষ মাথাব্যথা নেই।"
সৈকতদা আপাতত দৃষ্টিতে হয়তো ঠিকই বলেছেন। কিন্তু সরলীকরণটি খুবই খেল মনে হলো, সরি। রাজনৈতিক বাহ্যরূপই সব নয়, বিশেষ করে এটি যখন নাট্যমঞ্চের সাজপোশাক হয়।
প্রসংগত, এপারে ২০১৩ সালে শাহবাগ গণবিস্ফোরণের বিপরীতে হেফাজত ইসলাম নামক উগ্র মৌলবাদী দল "নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে" মতিঝিল শাপলা চত্বরে যখন শোডাউন করে, তখন জামাত-হেফাজত তাত্ত্বিক ফরহাদ মাজহার একে "গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরাও" এর তকমা দিয়ে রাষ্ট্র বিপ্লব ধারণাটিকে ঘেঁটে দিয়েছিলেন।
পরে জানা গেছে, শাপলা চত্বরের সমাবেশ ও জ্বালাও-পোড়াও আসলে ছিল বিএনপি-জামাত-হেফাজতের তেঁতুল হুজুর কোং-এর সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা! যা অবশ্য শিগগিরই মাঠে মারা যায়। ...
একইভাবে আব্বাস কোনোভাবেই সংখ্যালঘু মুসলিমদের প্রতিনিধি নন, কথিত গরীব মানুষের প্রতিভূ তো (সর্বহারা নেতা?) ননই, একেকটি ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য রাখার তিনি কত টাকা ফি নেন, এটুকু জানা গেলেই হলো, এই বিশ্বাসের ভাইরাসের জাতই আলাদা, ফ্যানাটিক ফারাবি গোত্রীয়।
তিনি আসলে মেষছাল গায়ে আপাদমস্তক একটি নেকড়ে, ফুরফুরা শরীফের সুফিবাদের আতর-সূর্মা মাখা গাছপাকা তালেবান, উগ্রবাদী জেহাদী, যার দর্শন রক্তাক্ত মুসলিম তরবারীতে খেলাফত প্রতিষ্ঠা। এরই মধ্যে গুনধর ভোটের ময়দানে যৎসামান্য ভেল্কি দেখিয়েছেন, সময়ে তার দন্তনখর আরও বেরুবে, এটি অনিবার্য প্রায়, ক্রমশ প্রকাশ্য।