

বাজেটের পর, এনডি টিভিতে প্রণয় রায় কথায় কথায় বলছিলেন, কেন সব ভোট একসঙ্গে করা উচিত নয়, তা বাজেট দেখলেই বোঝা যায়। যেসব রাজ্যে যে বছর ভোট হয়, সেখানে কেন্দ্রীয় বাজেটে কিছু না কিছু বরাদ্দ করা হয়।
এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তামিলনাড়ু, কেরালা, বাংলা ও আসাম কিছু না কিছু পেয়েছে। প্রাপ্তির ভাঁড়ার কতটা তা বাজেটের বিভিন্ন বিশ্লেষণে চোখে পড়বে। বিশ্লেষণ তো সারা দিন চলবে, চলবে পর পর কয়েক দিনও। কিন্তু যা চোখে পড়ছে, তা হল, রাস্তা উন্নয়নের জন্য অর্থ বরা্দ্দ হয়েছে তামিলনাড়ু, কেরালা ও বাংলায়।
কেরালার জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, বাংলায় সড়ক কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা, চেন্নাই মেট্রোর নবপর্যায়ের জন্য ৬৩ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে, চেন্নাইয়ে মৎস্যবন্দর ও জাতীয় সড়ক কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ হয়েছে আরও ১.০৩ লক্ষ কোটি টাকা।
খুব সাদা চোখে, দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে কম টাকা বরাদ্দ হয়েছে বাংলার জন্য, সবচেয়ে বেশি অর্থ তামিলনাড়ুতে।
এর দু রকম ব্যাখ্যা হতে পারে। বা তিন রকম। প্রথম, যেসব জায়গায় যত পরিমাণ প্রয়োজন ততটুকু বরাদ্দ হয়েছে। তামিলনাড়ুতে উন্নয়ন, মৎস্যবন্দর তৈরি প্রয়োজন, তাই সেখানে বেশি টাকা বরাদ্দ। কেরালায় তার চেয়ে কম দরকার, তাই কেরালার স্থান দ্বিতীয়ে। আর এ রাজ্যে, সড়ক উন্নয়ন সবচেয়ে কম প্রয়োজন, তাই সবচেয়ে কম টাকা এখানে বরাদ্দ।
আবার ব্যাপারটার এরকম ব্যাখ্যা হতে পারে, যেখানে ক্ষমতায় নেই, সেখানে কম টাকা বরাদ্দ করে, এবং যেখানে সহযোগী শক্তি ক্ষমতায়, সেখানে বেশি টাকা বরাদ্দ করে, দেখিয়ে দেওয়া যে আমাদের হাতে বঞ্চনার অধিকার রয়েছে।
তৃতীয়ত, যেখানে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই, সেখানে কম অর্থ বরাদ্দ করা।
কিন্তু এগুলি সবই কনস্পিরেসি থিওরির মধ্যে পড়ে হয়ত। সাদা চোখে তথ্য হিসেবে যেটুকু এখনও দেখা যাচ্ছে, বাংলায় যে টাকা বরাদ্দ হয়েছে, তার উল্লেখযোগ্য অংশ খরচ হবে কলকাতা-শিলিগুড়ি সড়কের জন্য।
উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগকারী এই রাস্তার বেহাল দশা বহুলচর্চিত। কয়েক বছর আগে পর্যন্তও, ট্রেনের টিকিট না পেলে, কলকাতা বা শিলিগুড়ি থেকে বাসে চেপে বসা ছিল জলভাত সহজ। কম ভাড়ার বাস, রকেট বাস, উত্তরবঙ্গ পরিবহণের মাঝারি মানের বাস, এসি বাস, টয়লেটসহ বাস, অজস্র রকমের বাস যাতায়াত করত এ রাস্তায়। রাস্তার হাল ক্রমশ খারাপ হওয়ায়, রাজ্য পরিবহণ নিগমের বাসের যাতায়াত কমেছে, এবং পরিবহণসূত্রে আয় সরকারের, এবং বেসরকারি উদ্যোগীদেরও ব্যাপক পরিমাণে কমেছে।
ভোটের কয়েক মাস বাকি থাকতে এই সড়কের হাল ফেরাতে অর্থ প্রদান নির্মলা সীতারমণের বার্তা প্রদান। পাইয়ে দেবার বার্তা। পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে, উত্তরবঙ্গে বিজেপির শক্ত এলাকা হয়ে উঠছে বলে দলগতভাবে তারা মনে করে। ফলে সেখানকার মানুষদের এইভাবে একটি তুষ্টি বার্তা দেওয়া হচ্ছে, এমন ব্যাখ্যাও সম্ভব।
কথাটা আরও দৃঢ়ভাবে মনে হয়, আরেকটা আঙ্কিক হিসেব দেখলে। আসাম ও বাংলার চা বাগানের উন্নতিকল্পে ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ, আসাম ও সন্নিহিত বাংলার দিকে এবারের বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির মধ্যে কোনও সূক্ষ্ম হিসেব নেই। এ একেবারেই বিজেপির গোদা খেলা। বিজেপিসুলভ। এর মধ্যে সরকার, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধাঁচা খুঁজতে গিয়ে লাভ নেই। সময়ের অপব্যয় হবে।
:-( | 42.***.*** | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:১২102248নি জার্ক রিয়াকশনই হয়েছে বটে। কিন্তু খুব কি দরকার ছিল এরকম একটা ঘণ্ট পাকানো বিশ্লেষণের ? এও হয় ,এর ৯০ কি ১৮০ কি ২৭০ ডিগ্রি বিপরীতও হয় ,৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে শেষমেশ গোল গোল ঘোরা ছাড়া কিছুই বোঝা গেলনা। কনস্পিরেসি থিয়োরির নামে বিল কেটে মাইরি এরকম সব সম্ভাবনাকে হাজির করা ঘ্যাঁট কম দেখা যায়,খুব কম কনস্পিরেসি থিয়োরিতেই। যখন যা কিছু হবে তাকেই যেদিক দিয়ে ইচ্ছা ব্যাখ্যা করা সম্ভব , লেখার মধ্যে দেওয়া 'দুরকম বা তিনরকম ব্যাখ্যা' দিয়েই লেখার শেষ প্যারার সর্বশেষ সিদ্ধান্তকে নেগেট করে দেওয়া যায়, সব সম্ভাবনাই যেখানে হরেদরে সমান, অসমান হলেও সেই নিয়ে একটি লাইনও নেই, তখন বুঝতে হবে লেখকের বিশ্লেষণ বলে কিস্যু নাই। এর থেকে শুধু সাদা চোখে দেখা তথ্যগুলি পরিবেশন করলেই হত।
আর হতেই পারে ,হতেই পারে কেন,বিজেপির সরকারের বাজেট অবশ্যই বিজেপির খেলা ,কিন্তু যে যুক্তিতে বিজেপির গোদা খেলা,বিজেপিসুলভ বলা হল,তা লেখার শুরুর যুক্তি দিয়েই কেটে যায়। যেকোন দলই যে রাজ্যে আসন্ন নির্বাচন,সেখানে কিছু বেশি টাকা ঢালবে এতে গোদা বিজেপিসুলভ খেলার আছেটা কি ?
আরো বড় প্রশ্ন হল, এরকম বালখিল্য তড়িঘড়ি রিয়াকশন দেওয়া লেখা নামানোর খুব দরকার ছিল কি ?
Dhuttor | 2405:8100:8000:5ca1::58f:***:*** | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:৫৩102251গুরু সান্ধ্য আজকাল হচ্ছে। চাট্টি হাবিজাবি দিয়ে পাতা ভরানো
b | 14.139.***.*** | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:১৪102256দুত্তোরের সঙ্গে একমত।
বিবেক মৌলিক | 2409:4064:2ea4:eb63::2b09:***:*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:৩৪102270আমার তো এই নী-জার্ক বিশ্লেষণ টা মনঃপূত এবং যথাযথ মনে হয়েছে, হতে পারে বিজেপি দলটিকে এই প্রতিবেদক যে চোখে দেখেছেন আমিও সেই চোখেই দেখি এবং সঠিকভাবেই দেখি, দ্বিতীয়ত আমি বাছুর নই এবং চাড্ডি তো নইই।
বাল্যখিল্য | 2409:4060:2000:4189:994d:ebb5:a4e6:***:*** | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:২৭102290এখানেও চাড্ডিরা ঢুকে পড়েছে মনে হচ্ছে।
আরো বিস্তারির আলোচনার অপেক্ষায় থাকলাম