এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কলতান ও ইলিনা - ৩২ 

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৯ নভেম্বর ২০২৫ | ৫৯ বার পঠিত
  • (৩২)

    গৌতম রায় বললেন, ' তাহলে ব্যাপারটা মোটামুটি জানা হয়ে গেল। আমি ডিসিশান নিয়েছি আর দশ মিনিট ওয়েট করব। তারপর ফোর্স অ্যাপ্লাই করতে হবে। আননেসেসারিলি আর কোন কোক্সিং-এর মধ্যে যাব না। এবার চার্জ করার দরকার। কাস্টডিতে নিয়ে প্রপারলি ইন্টারোগেট করলে ফ্রুটফুল আউটকাম অবশ্যই আসবে। কলতানবাবু নিশ্চয়ই প্যালপ্যাবল এভিডেন্স কালেক্ট করেছেন। হোপফুলি সেগুলো প্রোডিউসড হলে পজিটিভ রেজাল্ট আসতে পারে.... '
    বলে কলতানের মুখের দিকে তাকালেন।
    কলতান একবার ঘড়িতে সময় দেখল। তারপর বলল, ' পজিটিভ রেজাল্ট অনেক দূরের জিনিস।
    আগে তো কাস্টডিতে পান... '
    --- ' এত পেসিমিস্টিক হচ্ছেন কেন। আমি যতদূর জানি আপনাকে, ইটস কোয়াইট আনবিকামিং টু ইউ... '
    --- ' কথাটা আপনারা আমার চেয়ে অনেক বেশি বোঝেন। জানেন কিনা জানিনা, আমি কোন পারিশ্রমিক পাচ্ছি না কেসটা ডিল করার জন্য। কারণ যে আমাকে অ্যাপয়েন্ট করেছিল, মানে ইলিনা স্নাইডার সেন,সে তো আর নেই। শুধু বিবেক চালিত হয়ে কাজটা করছি... যাতে আসল অপরাধী ধরা পড়ে। কোনরকম অন্যায় আপোষকে আমি ঘৃণা করি। কিন্তু আমার হাতে আর কতটুকু আছে। আসলে এই মর্বিড সিস্টেমের ওপর আমি ভীষণভাবে বিশ্বাস হারিয়েছি... ইনক্লুডিং জুডিশিয়ারি... '
    শুনে গৌতম রায় চুপ করে রইলেন। বোধহয় মনে মনে কলতানের কথাগুলো মেনে নিলেন। একটু পরে বললেন, ' তবু আসুন আমরা ক'জনে হাতে হাত মেলাই। দেখা যাক, কতদূর কী করতে পারি। কাউকে না কাউকে নিশ্চয়ই পাশে পাব... ফ্রাস্ট্রেটেড হলে তো চলবে না ... '
    ঘড়ি দেখে বললেন, ' পাঁচ মিনিট হয়ে গেল... '
    কৃষ্ণেন্দুবাবু বললেন, ' হ্যাঁ তা হল... '
    এই সময়ে গৌতম রায়ের মোবাইল বাজতে লাগল।
    গৌতমবাবু ফোন কানে লাগিয়ে একটু তফাতে সরে গেলেন। এ ডি জি নর্থের ফোন।
    --- ' হ্যাঁ স্যার বলুন... না এখনও ফোর্স থ্রু করিনি... লাস্ট আল্টিমেটাম দিয়েছি দশ মিনিটের জন্য... ফাইভ মিনিটস অলরেডি ওভার। শুদ্ধসত্ত্ব স্যার... হ্যাঁ হ্যাঁ, নাম শুনেছি... ঠিক আছে স্যার... আপনি আমাদের পাশে একটু থাকবেন... তারপর কী খেলা খেলতে হয় দেখিয়ে দেব... আই সোয়্যার... হ্যাঁ কলতান গুপ্ত আছে... হ্যাঁ এসেছে... ইন ফ্যাক্ট হি ইজ দা সোর্স অফ অল এভিডেন্সেস... প্রোটোকল মেনটেন করছি স্যার... ইউ ক্যান ব্যাঙ্ক অন মি ... রাইট স্যার... না বাস্তব গল্পের বইয়ের মতো হয় না... শিয়োর শিয়োর... আচ্ছা ঠিক আছে স্যার... অবশ্যই ফিড ব্যাক দেব... ওক্কে... '

    ফোন বন্ধ করে এপাশে ফিরে এলেন গৌতম রায়। বললেন, ' রৌনক সেনগুপ্ত ফোন করেছিলেন। বাড়ি থেকে ফোন করেছিলেন এত রাতে। হোল হার্টেডলি ব্যাক আপ করছেন আমাদের ক্র্যাক ডাউনকে। বেশ চার্জড হয়ে আছেন মনে হল। সব কিছু তো পজিটিভ মনে হচ্ছে, এখন দেখা যাক... '
    কলতান বলল, ' ইটস হ্যাপি থিং ফর আস। তবে এত ওভার অপটিমিস্টিক হবেন না মিস্টার রায়।
    দেয়ার আর মেনি এ স্লিপ বিটুইন দা কাপ অ্যান্ড দা লিপ ... '
    --- ' ইয়েস... আই নো ইট অ্যান্ড টেন মিনিটস ইজ অ্যাবাউট টু বি ওভার... সো লেটস... '
    তার কথা শেষ হওয়ার আগেই টেন বাই ফোর-এর দরজা খোলার আওয়াজ হতে লাগল। কলতানরা সকলে ওদিকে তাকিয়ে রইল। কলতান দেখল শার্ট প্যান্ট, মোটা সোলের কালো রঙের বুটজুতো পরে অশ্বিনী তেওয়ারি ভিতর দিক থেকে কলাপসিবল দরজার তালা খুলছে।

    কলাপসিবল সরিয়ে দরজার মুখে দাঁড়িয়ে বলল, ' কই আসুন... সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা গেল না? এটা কী কারও বাড়িতে আসার সময় হল? '
    কলতান হাসিমুখে বলল, ' ও... এটা তালে তোমার বাড়ি? উকিলবাবুর ও বাড়ি নাকি? ওনাকেও আশা করি এখানেই পাব। আর যার সঙ্গে একটু আগে কথা হল, তিনি? তারও দর্শন পাব নিশ্চয়ই
    অশ্বিনী তেওয়ারি কেন জবাব দিল না। পিছন ফিরে হাঁটতে হাঁটতে বলল, ' চলে আসুন, চলে আসুন... যা দেখবার চটপট দেখে নিন। রাতকা নিদ বরবাদ কর দিয়া আপলোগেনে... '
    অশ্বিনীর কথাবার্তা রীতিমতো জড়ানো এবং ভাবভঙ্গী বেপরোয়া এবং উত্তেজনাহীন।
    গৌতম রায় উষ্মাজড়িত গলায় বললেন, ' শাট আপ স্টুপিড! চটপট দেখব কি ধীরে ধীরে দেখব তুমি ইন্সট্রাকশান দেবে? '
    তার মনে হল এটা প্রায় চোদ্দশ স্কোয়্যার ফিটের ফ্ল্যাট। আসবাবপত্র নেই বললেই চলে। অবশ্য ভিতরে গেলে বোঝা যাবে।
    কলতান বলল, ' আমরা তো কিছু দেখতে আসিনি, শুধু তোমাদেরই দেখতে এসেছি.... এই তো... উকিলবাবুও আছেন। জানতাম আপনাকে এখানেই পাব। ভালোই হল। অনেক কথা জমে আছে। আর... আর ইনি নিশ্চয়ই শ্রীযুক্ত বিল্বদল ঘটক... নমস্কার স্যার নমস্কার ... কী সৌভাগ্য যে আপনার দেখা পেলাম। আমি সেই কবে থেকে আপনার সাক্ষাৎ পাবার চেষ্টা করছি। আপনার হুন্ডাই গাড়িটা... '
    মোটা গোঁফওয়ালা, খুব ফর্সা, মোটাসোটা রঙীন আভার কাঁচের দামী রিমলেস চশমা পরা একজন বসে আছে। চোখের তলা লালচে এবং ফোকা ফোলা। জামা প্যান্ট বেল্ট এবং অশ্বিনীর মতো মোটা সোলের বুটজুতো পরে বসে আছে। মাথার চুল এবং মোটা গোঁফ লালচে বাদামী রঙে ছোপানো।
    সে নিষ্পলক হিমশীতল চোখে চুপচাপ কলতানের দিকে তাকিয়ে রইল। সাধারণ লোক ওই দৃষ্টিতেই কুপোকাত হয়ে যাবে।
    প্রায় কুড়ি সেকেন্ড পরে সে গৌতম রায়ের দিকে মুখ ঘোরাল।
    হাঁটুতে হাত বুলিয়ে খরেখরে নীচু গলায় বলল, ' কী চাই? '
    গৌতম রায় বললেন, ' দেখাচ্ছি। কৃষ্ণেন্দুবাবু... স্টার্ট সার্চিং... '
    --- ' রাইট স্যার... '
    তিনজন ফ্ল্যাটের ভিতরের দিকে গেল। নয়ন পাল একা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
    ঘটকবাবু গৌতমবাবুর মুখের দিকে একইরকম শীতল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। গা সিরসির করানো দৃষ্টি। গৌতম রায়ের মাথা গরম হয়ে গেল বিল্বদলকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে।
    তিনি বলে উঠলেন, ' যাঃ বাবা ... ওরকম ছাগলের মতো তাকিয়ে আছেন কেন? '
    ঘটক মশাই কিন্তু একেবারেই উত্তেজিত হলেন না।
    রুমাল বার করে চশমাটা একবার মুছে নিলেন।
    তারপর বললেন, ' মাঝরাতে ভদ্রলোকের ফ্ল্যাটে ঢুকে ঝামেলা করছেন। এর রেজাল্ট কী হতে পারে জানা আছে? আপনি কী হেডকোয়ার্টারের স্টাফ? যা জানাবার ওখানেই জানাব... '
    গৌতমবাবু বললেন, ' খুব ভাল কথা। জানান না... '
    কলতান বলল, ' সব স্বীকার করে নিলে শাস্তি কিন্তু অনেক কমে যেতে পারে। জানেন নিশ্চয়ই মাত্র এক গ্রাম নারকোটিক রিট্রিভড হলেও লাইফ টার্ম হতে পারে... '
    ঘটকবাবু ভ্রু তুলে একইরকম অচঞ্চল দৃষ্টিতে কলতানের দিকে তাকালেন।
    ঠোঁট বেঁকিয়ে হেসে বললেন, ' দেখুন, চেষ্টা করে দেখুন। খুঁজুন... আপনিও খুঁজুন না... খুঁজতে যখন এসেছেন খুঁজুন। দেখুন এক গ্রামও খুঁজে পান কিনা... '
    --- ' না না... আমি আশাই করি না যে ঘরের মধ্যে ব্রাউন সুগারের গোডাউন সাজিয়ে বসে আছেন আপনারা। ওসব তো ঘরে থাকে না। থাকে শরীরের খাঁজে খাঁজে... '
    --- ' মানে.... '
    --- ' মানেটা আপনি জানেন না বিল্ববাবু... এটা বিশ্বাসযোগ্য ব্যাপার হল? যাই হোক, সেটা আমার কাজ না। কাস্টডিতে নিয়ে এনারা আপনাদের শরীর, আপাদমস্তক ঝেড়েঝুড়ে কোটি টাকার গুঁড়োর সন্ধান পাবেন বলে আমার ধারণা। সেটা এনাদের দপ্তরের দায়িত্ব, আমার না। আমি শুধু ক্লুটা দিলাম, আ- পাদ - মস্তক... '।
    আমি শুধু আমার ক্যালকুলেশানটা মিলিয়ে নিতে চেয়েছিলাম... আপনাদের তিনজনকে একসঙ্গে এখানে পাওয়া যায় কিনা। এক আপনি, দুই জটা মানে উকিলবাবুর কর্মচারী সেজে থাকা অশ্বিনী তেওয়ারি যার হরিশঙ্কর নামে কোন পরিচিত লোক নেই, শ্যামবাজারে আদৌ কোন আস্তানা নেই এবং যে একজন এক্সপার্ট ড্রাইভার এবং আমাকে বলেছিল সে গাড়ি চালাতেই জানে না। এছাড়া একজন লেডি কিলারও বটে... '
    এখানে অশ্বিনী বলে উঠল, ' তাতে কী হল? '
    --- ' কী হল সেটা কাস্টডিয়াল ইন্টারোগেশনের সময় বলব। সবই বলব, কিছু বাকি রাখব না। যেটা বলছিলাম... তিন নম্বর লোক হলেন আমাদের উকিলবাবু। তাকেও এখানে পেয়ে গেলাম। পাওয়ারই তো কথা। কলকাতায় এটাই তো ঘাঁটি। এখানেই তো আসবার কথা আজকে। ঘটকবাবুর নামে ইন্ডিগোর যখন কোন ফ্লাইট বুকডই হয়নি। যাক ওসব কথা ঠিক সময় ঠিক জায়গায় হবে। আর চার নম্বর হল দেবপ্রভ রাহা।
    তাকে অবশ্য এখানে আশা করিনি। উনি এবং ওনার স্ত্রী খুনের মামলায় ফেঁসে গেছেন। দুজনে মিলে বাঘবন্দী খেলার ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত। খাঁচা থেকে বেরোতে পারবে না কোনভাবেই।
    আর, পঞ্চম ব্যক্তি হতে পারত ইলিনা স্নাইডার সেন। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হল তিনি আর পৃথিবীতে নেই .... '
    কলতান এবার অশ্বিনীর দিকে তাকিয়ে বলল, ' কেন বল তো অশ্বিনী, ইলিনা মরল কেন.... সমস্যাটা কী হল? '
    অশ্বিনী চমকে উঠে বলল, ' আমি তার কী জানি? আজিব বাত তো... '
    --- ' আচ্ছা অশ্বিনী, রাইসিন কাকে বলে জান? '
    --- ' সেটা আবার কী? '
    --- ' তোমার তো ভালোভাবেই জানার কথা, যাক ওসব গল্প পরে হবে... ভাব ভাব... মিস্টার জটাশিউ ঝালানি, কী করবে ভাবতে থাক... ' কলতান বলল।
    কথা হয়ত আরও গড়াত। কিন্তু এই সময়ে স্বরূপবাবুরা ভিতর থেকে এখানে চলে এলেন।
    --- ' কিছু নেই স্যার... কিছু ট্রেস করা গেল না... ' কৃষ্ণেন্দুবাবু বললেন।
    কলতান বলল, ' সেটা জানা কথাই। ঘরে কিছু থাকলে এরা জীবন থাকতে দরজা খুলত না। দরকার হলে ঘরে আগুন লাগিয়ে সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে জাল কেটে বেরিয়ে যেত। কিন্তু বৈজ্ঞানিক নিয়ম অনুযায়ী এ ব্রহ্মান্ডে কোন বস্তু হারায় না। কোন না কোন অবস্থায় কোন না কোন
    স্থানে থাকে। এই মাঝরাতে ঘরের মধ্যে তিনটে লোকের স্যুট বুট পরে বসে থাকাটা কেমন চোখে লাগছে না গৌতমবাবু? তাই আ-পাদ-মস্তক খুঁজুন আপনারা আপনাদের ঘরে নিয়ে গিয়ে। আর অন্যান্য ঢাকনাগুলো আমি ওখানেই খুলব সরকারিভাবে। শুধু বাদামী গুঁড়ো তো নয়। দু দুটো খুনের ব্যাপার আছে। সেটাও তো কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই না? মানুষের প্রাণের কি দাম নেই ! দেখুন কী করবেন... '
    গৌতম রায় বললেন, ' অ্যাই চলুন চলুন... বাকি রাত আমাদের বাড়ি আরামে ঘুমোবেন জুতো টুতো খুলে। অজিতাভ... এ ঘরটা একবার দেখে নাও
    আর কোন জুতো টুতো খুঁজে পাও কিনা... '
    অজিতাভ বলল, ' হ্যাঁ দেখে নিচ্ছি... '
    মিনিট পাঁচেকের মধ্যে অজিতাভ চার জোড়া জুতো বার করে নিয়ে আসল। বুট জুতো। কালো ও বাদামী। সব ক'টার মোটা শুকতলা।
    অজিতাভ বলল, ' এই যে স্যার... '
    --- ' হমম্.... হয়ত কয়েক কোটির সম্পত্তি... ', কলতান বলল।
    গৌতম রায় কিছু বুঝলেন কিনা বোঝা গেল না। বললেন, ' নয়নকে ডাক, গুছিয়ে নিক সব... '
    বিল্বদল ঘটক এখনও নির্বিকার। বললেন, ' পুলিশের লোকের কি লজ্জা ঘেন্না বলে কিছু নেই!
    জুতোগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছে.... ছ্যাঃ.... আমি এদের রুচি দেখে অবাক হয়ে যাই... '
    গৌতমবাবু সে কথায় কান না দিয়ে বললেন, ' আপনাদের মোবাইলগুলো দিয়ে দিন... '
    --- ' দেখুন... খুব বেআইনি কাজ করছেন কিন্তু... আমি এক্ষুণি ফোন করছি... ' ঘটকবাবু বললেন। অজিতাভ প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে মোবাইলটা ছিনিয়ে নিল। তারপর বিক্রমজিতের কাছে গিয়ে বলল, ' মোবাইলটা দিন... যা বলবার কোর্টে বলবেন... দিন দিন... ফোর্স অ্যাপ্লাই করতে বাধ্য করবেন না... '
    বিক্রমবাবু মোবাইলটা দিয়ে দিলেন। অজিতাভ ওটা গৌতমবাবুর হাতে দিল।
    অজিতাভ এবার অশ্বিনীর দিকে যাচ্ছিল। সবাই বসে থাকলেও অশ্বিনী দাঁড়িয়ে ছিল।
    সে আচমকা ছুটে পালাতে গেল খোলা দরজা দিয়ে। দরজা দিয়ে বেরিয়েও গেল। অজিতাভ তড়িৎ গতির প্রতিক্রিয়া দেখাল। সঙ্গে সঙ্গে তাড়া করল অশ্বিনীকে প্যান্থারের গতিতে। সিঁড়ির প্রথম ল্যান্ডিং -এ গিয়ে অশ্বিনীকে মানে জটাশিউ ঝালানিকে ধরে ফেলল। এক অদ্ভুত কায়দায় পাকড়ে টানতে টানতে ঘরের মধ্যে নিয়ে এল। জটা নড়াচড়াই করতে পারছে না।
    কলতান বেশ অবাক হল দেখে যে এত কান্ডের পরও বিল্বদলবাবু দু হাঁটুতে হাত রেখে উদাসীন ভঙ্গীতে বসে আছেন এবং মাঝে মাঝে আপনমনে মাথা নাড়ছেন এবং মুখে চুকচুক করে আওয়াজ করছেন।
    কয়েকটা অস্ফুট কথা কলতানের কানে এল --- ' বয়েসই বেড়েছে, বুদ্ধি বাড়েনি... দামড়া খোকা সব... '
    জটাকে পাকড়ে নিয়ে আসার পর তার মুখে সস্ফুট কথাও শোনা গেল। কলতানকে বোধহয় দলের সর্দার বা পালের গোদা ভেবে তার দিকে তাকিয়ে আত্মবিশ্বাসে ভরভুর গলায় ঘটক মশাই বললেন, ' এভাবে সার্চিং হয়... স্নিফার ডগ নিয়ে আসতে হয়। ছেলেমানুষ সব... কী চাই বলুন না... কেন ফালতু লাইফ রিস্ক নিচ্ছেন? পরিবার নিয়ে বাস করেন। কত চাই বলুন না। যা পাবেন হাই ফাই লাইফ কাটাতে পারবেন বাকি জীবন... '
    কলতান মনে মনে বলল, ' ইনসিডিয়াস স্পিসিজ।
    সমাজ এদের সযত্নে লালন পালন করছে... '

    (ক্রমশ)

    ******
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন