কেবলীকে চেনেন আপনারা? সেই যে “টিংটিঙে রোগা, থাকার মধ্যে মাথায় ঘন চুল, মুখচোরা আর প্র্যাকটিকালে ভয়। কেমিস্ট্রি ছাড়া সবকিছু পড়তে ভালোবাসে, পাকপাড়া থেকে এসে ট্রামে করে কলেজ যায়। দুদিন বাদে বাদেই সর্দিকাশিতে ভোগে, গরম-ঠান্ডা, বৃষ্টি-ধুলো অথবা কোনোরকম কারণ ছাড়াই দিগ্বিদিক কাঁপিয়ে তার হ্যঁচ্চো-ও-ও শুরু হয়।” কি বললেন, চেনেন না? তাহলে গোবুকে তো চেনেন? “ডাক্তারির ছাত্র, বেজায় গম্ভীর, নেহাত দরকার না পড়লে কথাটথা কয় না, সবসময় রামগরুড় মুখ করে ঘোরে কিন্তু পেটে শয়তানি বুদ্ধি গিসগিস করে, চশমার ডাঁটি কোনোরকমে পড়িমরি করে কানের সঙ্গে ঝুলে থাকে।” ধুস তাকেও চেনেন না! কি বললেন, আমি কি করে চিনলাম? রসুন, বলছি।
তখনও গুরুর সঙ্গে তেমন ভাল পরিচয় হয় নি। মানে নামটুকু শুনেছি, ওয়েবসাইটটা কয়েকবার খুলে দেখেছি, তবে ওই অবধিই। নিয়মিতভাবে ফলো -টলো করা হয় না। তবে আগে ওয়েবসাইটটা কয়েকবার ঘাঁটাঘাঁটি করে বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং আলোচনার সন্ধান পেয়েছিলাম। তাই নামটা মাথায় থেকে গেছে। তবে খুব সত্যি কথা বলতে তখন অফিসে বসে ইন্টারনেটে বাংলা কন্টেন্ট দেখতে ভয়ও করত, কে জানে ভাষা না বুঝে সেই সাইটকে যদি কেউ নিষিদ্ধ সাইটের লিস্টে তুলে দিয়ে থাকে আর সেসব না জেনেই আমি সেই সাইটটিতে পা দিয়ে ফেলি, তাহলে তো প্যানডোরার বিপদ-বাক্স খুলে যাবে। কিন্তু সেদিন কাজের মাঝে একটু ফাঁকা সময় হাতে ছিল। ঝোঁকের মাথায় কি একটা বাংলা শব্দ দিয়ে সার্চ করতে দিলাম। তারপর এই শব্দ থেকে ওই শব্দ করতে করতে কখন যেন গুরুর সাইটে পৌঁছে গেছি। অলস ভাবে ব্রাউজ করছি। হঠাৎ চোখ আটকালো একটা টইতে। জমিয়ে আড্ডা হচ্ছে। পড়তে পড়তে পেটের মধ্যে বগবগিয়ে হাসি উঠতে লাগল। প্রথমে ঠোঁটের ফাঁকে, তারপর মুখ জুড়ে, শেষকালে হো হো করে। এদিকে রামগরুড়ের ছানা আমাকে অমন হাসতে দেখে দু একজন বন্ধুও কৌতূহলী হয়ে কাছে এল। খুব উৎসাহে তাদেরও পড়ানো হল। তারপর সমবেত হাসি। অফিসে বসে এমন অনাবিল হাসির মুহূর্ত তো চট করে মেলে না। এরই ফাঁকে চট করে একবার লেখকের নামটা দেখে নিলাম। কুমু। সেই প্রথম পরিচয়। আপনাদেরও পড়াই একটু সেই লেখাটার অংশ। তাহলেই বুঝবেন কোন জাদুকাঠিতে আমা-হেন হুঁকোমুখোর মুখেও হাসি ফুটেছিল।
দুজনেরই আপেল কেনা কখন হয়ে গেছে, তাই ফলওলার সামনে থেকে একটু ডানদিকে সরে এসে হাতমুখ নেড়ে তক্কো হচ্ছিল এবং এটাও ডকুমেন্টেড থাকা উচিত যে অত উত্তেজনার মধ্যেও কেবলী তিনবার অর্পিতাকে বলেছিল ওই হতচ্ছাড়া চুন্নি কোমরে বা মাথায় বেঁধে নিতে যাতে বারে বারে উড়ে এসে গায়ে না পড়ে।
নিয়তির অমোঘ ও কুটিল চক্রান্তে পাশেই এক ভালোমানুষের – দিন-নেই টাইপ চেহারার পেশিবহুল গোরু মন দিয়ে পচে যাওয়া মসালা দোসা খাচ্ছিল, নিজেদের সমস্যায় অতিরিক্ত ভারাক্রান্ত থাকায় এরা দুজনে তার ফোঁস ফোঁস দীর্ঘশ্বাস, হিংস্র চাউনি, কঠিন ভ্রুকুঞ্চন কিছুই খেয়াল করেনি।
— অত লম্বা লম্বা ডায়ালগ মুখস্থ করব বসে বসে? আমাকে পেয়েছিস কী?
— এইসান দেব একটা কানের গোড়ায়, টেপ বাজবে তো, মুখস্থ করতে লাগে?
সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মধ্যে যা ঘটল বর্ণনার অতীত। অর্পিতা বোধহয় ভাবল কেবলী সত্যি মারবে, রিফ্লেক্সে হাত ছুঁড়ল, কী করে কে জানে চুন্নি উড়ে গিয়ে গোরুর মাথায় পড়ল, শোনা গেল ভয়ংকর হাড়হিম করা এক গর্জন আর ফলওলার আর্তনাদ,
— ভাগো, ভাগো জলদি ভাগো-ও-ও…
অত জোরে কেবলী জীবনে কোনোদিন ছোটেনি, সেও শাড়ি পরে। প্রাণ হাতে করে দৌড় কাকে বলে সেদিন বোঝা গেল। মরুবিজয়ের কেতনের মতো চুমকি বসানো নীল চুন্নি শিংয়ে উড়ছে, গরুর এবংবিধ চেহারা যতবার মনে আসছে তত স্পিড বেড়ে যাচ্ছে, এদিকে দু-হাত ভরতি বাজার। রাস্তার লোকেরা হইহই করে উঠেছে, কিন্তু কোনোদিকে তাকাতে বা থামতে পারা যাচ্ছে না, এদিকে দম ফুরিয়ে আসছে।
পাড়ায় এক বিপুল বপু কমলা চুলের ডাক্তার ছিলেন, তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট রেখেছিলেন এক ইঞ্জেকশনপটু তরুণীকে। ফলে অসুখ যত সামান্যই হোক, ওনার কাছে গেলেই অন্তত ৫টি ছুঁচ অবধারিত। মহল্লার সকলেই এটি জেনে যাওয়াতে রুগীপত্র বিশেষ হত না, যদিও চেম্বার রোববারেও খোলা থাকত। ডাক্তার আর সুঁইকুমারী রাস্তায় দাঁড়িয়ে লোকজন দেখে সময় কাটাতেন।
সেদিনও দুজনে হাসি হাসি মুখে দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখছিলেন – চোখে পড়তেই কেউ কিছু বোঝার আগে অর্পিতা একহাতে কেবলীকে টেনে নিয়ে ফুটবল খেলার কায়দায় দুজনের মাঝখান দিয়ে গলে গিয়ে চেম্বারে ঢুকে ধড়াম করে দরজা বন্ধ করে দিল। ডাক্তার আর সুঁইকুমারী বাইরে রয়ে গেলেন।
সংসার করিয়ে গিন্নিরা যেখানে যে অবস্থায় যত সুকঠিন প্যাঁচের মধ্যেই থাকুক, তাদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে সাংসারিক (অ)কর্তব্যের ছবিটি (ঠাকুরওমনে হয় এইধরনের কিছু বলেছিলেন)।
বাইরে ডাক্তার ও সুঁইকুমারীর সমবেত গগনভেদী আর্তনাদ, লোকজনের হইচই, পাড়াতুতো কুকুরবাহিনীর উচ্চস্বরে প্রতিবাদ – এতসবের মধ্যেও চেম্বারে ঢুকে প্রথমেই কেবলীর নজরে পড়ল ডাক্তারবাবুর ফোনটি (ততক্ষণে দুই বন্ধু নিজেদের মধ্যে ফিরে এসেছে, এ দরজা ভেঙে ঢোকার ক্ষমতা গোরুর হবে না)। অকম্পিত হাতে ফোন তুলে দৃঢ়স্বরে কেবলী বাড়ীতে বলে দিল ছেলেকে ক্যারাটে ক্লাস থেকে নিয়ে আসতে। গোবুচন্দ্র যথারীতি সামান্য প্রতিবাদ করছিলেন, তোমরা কোথায় আছ? আমি তো ঠিক চিনি না ক্যারাটে ম্যাডামের বাড়ি (পড়ুন – টিভিতে ম্যাচ চলছে) এইসব। তার উত্তরে আরও দৃঢ়স্বরে কেবলী জানিয়ে দিল, “আমাদের গোরু তাড়া করেছে, এ জীবনে বাড়ি ফেরা হবে কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ফিরতে না পারলে সবুজ ব্যাগে ব্যাংকের পাশবই ও টাকা রাখা আছে।” সেই সেলফোন, এটিএম কার্ডবিহীন সময়ে ব্যাংকের বইয়ের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এবার গোবুরাজ রীতিমতো আর্তনাদ জুড়ে দিলেন, “সে কী!! কাল আমার বিদেশ যাওয়া আর আজ তুমি উদোমাদার মতো গোরুকে তাড়াতে গেলে? গোরু তোমার কী ক্ষতি করছিল?”
কান শুনতে ধান শোনা এইসব লোকজন কেন যে সংসার করে?
নীল ওড়না, গান্ধারী ও শুক্লপক্ষের চাঁদ। মারকাটারি গল্প একখানা! প্রায় প্রতিটি অক্ষর যেন হাসির রসে ডুবিয়ে এনে স্ক্রিনে ছেড়ে দেওয়া। মোটা দাগের সুড়সুড়ি দেওয়া হাসি নয়, বুদ্ধিদীপ্ত ঝকঝকে হাসি। অথচ সে হাসির পিছনে খোঁচা নেই, বিদ্রূপ নেই। আর শুধু হাসিই নয় কিন্তু, সেই সঙ্গে গল্পটা শেষ হলে একটা মন-আলো-করা ভাব জড়িয়ে থাকে অনেকক্ষণ। হাস্যোজ্জ্বল মুহূর্তকে অতিক্রম করে আরও একটু অন্য কিছুর আভাস যেন। একেই কি সত সাহিত্য বলে?
এরপরে খুঁজে পেতে আগের লেখাগুলো বার করে পড়েছি। নিজেও পড়েছি, একা হেসে স্বস্তি নেই, অন্যদেরও পড়িয়েছি। ততদিনে কুমুদি বলে উল্লেখ করা শুরু করেছি লেখককে, এও জেনে ফেলেছি, কুমুদির আসল নাম জয়ন্তী অধিকারী। উন্মুখ হয়ে বসে থেকেছি, আবার কবে কুমুদি লিখবেন। অনাবিল হাস্যরসের যোগানদার তো হাতে গোনা! কুমুদির তৈরি চরিত্র গোবু আর কেবলী ততদিনে বড় প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছে। অবশ্য ততদিনে এও জেনে ফেলেছি যে কুমুদি শুধু লোক হাসানোর কারবারি নন, বাস্তব জীবনে তিনি একজন সিরিয়াস বিজ্ঞানী। বিজ্ঞান-বিষয়ক সিরিয়াস প্রবন্ধও তাঁর হাতে চমৎকার উৎরোয়। আর সেই সঙ্গে তিনি বিজ্ঞানের জগতে মেয়েদের উপস্থিতি নিয়েও ভাবেন। এই সব বিষয়ে তাঁর মননশীল লেখাগুলো অনেক ভাবনার খোরাক যোগায়। তবু সবার উপরে কেবলী সত্য।
২০১৯ র দিল্লি বইমেলাতে কুমুদির এতাবৎ প্রকাশিত লেখাগুলোর থেকে কিছু লেখা একসঙ্গে করে একটা বই বেরোল। কুমুদির রোমহর্ষক গল্পসমূহ। গুরুচন্ডা৯-র থেকেই। এই বইতে সব গল্পই অতি প্রিয়। আর বইটা নিয়ে কথা বলতে গেলে আমার ইচ্ছে করে পুরো বইটাই কোটেশন হিসেবে তুলে দেই। গল্পগুলো মানে প্লটগুলো মজাদার তো বটে, কিন্তু প্লটের অন্তর্নিহিত মজা আর চরিত্র বর্ণন কুমুদির অননুকরণীয় সরস বর্ণনায় যে কোথায় উঠে গেছে তা আর কি বলব। এই যেমন ধরুন না সাইকেল চালাতে শেখার গল্পটাই – প্রথম সাইকেল চালাতে শেখার অনেক মজার মজার গল্প আমাদের অনেকেরই স্টকে আছে, কিন্তু সেই গল্পই একবারটি পড়ে দেখুন কুমুদির বয়ানে, “একটি সাইকেল ও দেহলিজ”
। দেখবেন কখন যেন আপনিও আওড়াতে শুরু করেছেন, “ডরাইলেই ডর”। কোন গল্প ছেড়ে কোন গল্পের কথা বলি! কেবলীর কলেজ জীবন, গোবু মহারাজের সঙ্গে তার প্রেম জীবন এবং বিবাহপর্ব - এসব তো আমাদেরই গল্প, শুধু নিজেরা যেন দেখতে শিখি নি – কুমুদি হাতে ধরে দেখিয়ে দিলেন।
কুমুদি হলেন সিচ্যুয়েশনাল কমেডির বিবরণে সিদ্ধহস্ত। ঘটনাই হোক, পরিবেশ বর্ণনাই হোক বা চরিত্রগুলোই হোক – প্রতিটিই হল অনবদ্য। আর কতটা যে অনবদ্য তা বলে বোঝানর সাধ্যি আমার নেই। একটা ছোট্ট লেখা “একটি বর্ষণস্নাত দিন ও স্যারের সুতহিবুকযোগ” - এক ঝটকায় নিয়ে ফেলে নিজেদের কলেজ জীবনের ল্যাবরেটরিতে। স্যারদের বিয়ে টিয়ের মত অভাবনীয় ঘটনা তখন যে কি উত্তেজনা তৈরি করত সেটা হয়ত অনেকেরই মনে থাকবে। আর কুমুদির বিবরণে সেটা কেমন মজাদার চেহারা নিতে পারে তা অনুমান করাই সম্ভব। কিন্তু তারপরের বিবরণটুকু? আবার উদ্ধৃতি দেওয়ার লোভ সামলানো গেল না।
নতুন শার্ট পরে ল্যাবে ফিরে স্যার প্রথমে পর্ণার সামনে পড়লেন,
“স্যার স্যার, সেই যে বৃষ্টির দিন, পোর্টিকোতে ভেজা খাতা দেখালাম, সেই যে আপনি ইয়ে পরে…, পুরো খাতা নতুন করে লিখে এনেছি, স্যার”
কটমট করে একবার তাকিয়ে খাতা টেনে নিয়ে স্যার ঝড়ের মতো সই করতে লাগলেন।
পেছনে আমরা, “স্যার মানে ইয়ে মিষ্টি মানে…” বাক্য সম্পূর্ণ করার অবশ্য সাহস হয় না।
কী ভেবে কে জানে, পরদিন স্যার এলেন বিশাল এক সন্দেশের বাক্স হাতে।
— হ্যাঁরে, সন্দেশটা খেতে খুব ভালো, কিন্তু কেমন সবজেটে দেখতে! কপার সল্ট মেশানো নাই তো? খেয়ে ক্লাসশুদ্ধু সক্কলে সশরীরে সগ্গে?
— থাকতে পারে, স্যার বরাবর আমাদের ওপর চটা। তার ওপর পর্ণা যা কেলো করল!
— ইঁ ইঁ, আমি কী করলাম রে? আমি জানব কী করে যে স্যার ওই সময় বিয়ে করতে যাচ্চেন?
— বিয়ে অর নো বিয়ে, কারও নীল স্যুটে কাদাজল ফেলা উচিত না। যাগ্গে, এখন জিগিয়ে আয় দেখি, কতটা কপার মেশানো আছে?
ল্যাগব্যাগ করে পর্ণা টিচার্স রুমে হাজির হল—
“স্যার, কপার সল্টের পার্সেন্টেজ কত?”
স্যার একলাই ছিলেন, ভারী অন্যমনস্ক হয়ে হাসিহাসি মুখে কিছু ভাবছিলেন, কী শুনলেন কে জানে, উত্তর দিলেন, “টেন পার্সেন্ট।”
— স্যার বলচেন, টেন পার্সেন্ট।
— মাত্র? ওতে কিছু হবে না, নির্ভয়ে খেয়ে ফ্যাল।
— জগন্নাথদা পেয়েছে তো?
আর কথা বাড়াব না। শুধু একটাই কথা শেষ করার আগে বলার। এই ধরণের লেখার অনেক সময় একটা সমস্যা থাকে যে এগুলো অনেক সময় একটি বিশেষ সময় আধারিত হয়, সামাজিক শ্রেণি নির্ভরও হয়। ফলে একটি বিশেষ শ্রেণীর বিশেষ প্রজন্ম, যারা সেই সময়টাকে হৃদয়ে ধারণ করে, তারাই শুধু এর রসগ্রাহী হয়। শ্রেণীর ব্যাপারটা ভাল বলতে পারব না, তবে কুমুদির এই বইটা কিন্তু পরপর তিন প্রজন্মের মুখে সমান চওড়া হাসি ফুটিয়েছে, এটা পরিক্ষিত সত্য।
এটাই দুঃখ যে কুমুদি চলে গেলেন। এই বছর। আমার হাজার দুঃখেও মন ভাল করার জাদুগর। পৃথিবীর হাসির ঝকঝকে আলোটা একটু কমে গেল।
কুমুদির রোমহর্ষক গল্পসমূহ
জয়ন্তী অধিকারী
প্রকাশক – গুরুচন্ডা৯
প্রাপ্তিস্থান :
অনলাইনে — কলেজস্ট্রীট ডট নেট
বাড়িতে বসে বইটি পেতে হোয়াটসঅ্যাপে বা ফোনে অর্ডার করুন +919330308043 নম্বরে।