
" সেই আমারে পথ দেখাবে 
যে আমারে চায়..." 
ভ্যাপসা গরম। আর সাধারণত এই সকালের দিকে খড়্গপুর লোকালগুলোতে ভিড়টাও ততোধিক। উচ্ছের তেতোগন্ধ, লম্বা বরবটির বান্ডিল, বেগুনের বস্তা... আর পিঁপড়ের মত মানুষ সবাই ঠাসাঠাসি করে এগিয়ে যাচ্ছে। এই কিলবিল করে উঠে পড়া ট্রেনে এবং চিলচিৎকারে নেমে যাওয়া একেকটি জনপদ... আশ্চর্য লাগে। মানুষের এই দীর্ঘ সময় ধুঁকতে থাকা সময়কে, একটা ট্রেন বয়ে নিয়ে চলেছে কোন আশার দিকে। আর লোকাল ট্রেনের মানুষদের মানসিকতাও সে ধরণের। কাকে টপকে কার ঘাড়ে যে পড়তে চায় তারা... ঠেলাঠিলি। হুটোপুটি।  কে কোথায় নামতে চায়, বারবার জানতে চাওয়া... পরে উঠেও কব্জা করে নেওয়ার ইচ্ছে অন্ততঃ পক্ষে একটা সিটের। হাসি পায়। কিন্তু মুখ ঠিক ততটাই গোমড়া হয়ে থাকে। এই ট্রেনের মধ্যে হেসে ফেলাটাও একটা গর্হিত কাজ।  সত্যিই তাই! এত দুঃখ, দারিদ্র্য,  কষ্ট নিয়ে এই পিঁপড়ের মত মানুষগুলো প্রতিপ্রত্যহ জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছে, সেখানে আর হাসির জায়গা কোথায়! 
তারমধ্যেও একটা দুটো চির আনন্দের লোক পাওয়া যে যায় না সেখানে তা নয়! কিন্তু তারা বাউল। তারা পাগল। সারা বগির কুচুটে চোখগুলো তার দিকে তাকিয়ে থাকে। আর ভাবতে থাকে, কীভাবে জখম করা যায় এই হাসি! এই আনন্দ স্বরূপ ন্যাকামিকে। তিনি এগিয়ে আসছেন, হাতে তাঁর নাইলন সুতোর ব্যাগ। ব্যাগের মধ্য থেকে উঁকি দিচ্ছে একটা খবরের কাগজ আর কালো ছাতা। যেন খবর পেয়েই বেরিয়ে এসেছেন তিনি, যেন জেনেশুনে খবর আসে তাঁর কাছে... আর তিনি তাঁর ছিমছিমে শরীর নিয়ে বেরিয়ে এসে খুঁজে পেয়েছেন এই লোকাল ট্রেন। মাঝে একটা মুরগী,  যেটা ছিল এক ভদ্রমহিলার ব্যাগের ভেতর...  বোধহয়,  ঘুম ভেঙে জেগে ওঠে ডাক দিল আজানের। সুতির জামা পরা সেই ভদ্রলোকটি বুঝে গেলেন, এই মুরগী যাবে চাকুলিয়া হাটে... ইশারায় আমাকে ডেকে বলবেন, এখানে দাঁড়াও, দশ মিনিটে পাওয়া যাবে সিট... বসার আয়োজন!  আর আমি মুগ্ধ দর্শক,  জাদুগর খুঁজে পাওয়ার বিশ্বাসে, হৃদয়ে শুরু হয়েছে গুরু গম্ভীর বৃষ্টির আয়োজন... (শুধু জায়গা ছিল না বলেই, ময়ূর হওয়া হল না এ জন্মে!) 
এভাবেই সিট আসছে, যাচ্ছে। সিটের অধিকার পাচ্ছে অন্যকেউ... আবার অন্যকেউ সুযোগ বুঝে চেপে বসছে অন্যের ঘাড়ে... উদাসীন বাউল যাঁরা, তাঁরা ছাড়া এই পৃথিবী বড়ই প্ররোচনাময়। সবকিছুই যেন খুবই কষ্টের।  তাঁকে ছাড়া আনন্দ নেই, আলো নেই, এগোনো -পেছনো নেই। ভাবছি। আর দেখছি ঘাটশিলা পর্যন্ত ছিল তাঁর আসা যাওয়ার খেলা। আর এই পথটাই ছিল লীলাময়তায় ভরা। ভাবছিলাম,  এই মায়ার পৃথিবীতে কে যে ঈশ্বর! কে যে অন্ধকার! 
বাচ্চার কান্না, ঘামের গন্ধ, চিৎকারের রঙ বেরঙের সুরে ভাসতে ভাসতে, ট্রেন গালুডিহি পেরিয়ে ঢুকে পড়ে আসনবনীতে... আহা খানিক পরেই জামশেদপুর!  
 adam | unkwn.***.*** | ১১ আগস্ট ২০১৯ ০৫:৩২78924
adam | unkwn.***.*** | ১১ আগস্ট ২০১৯ ০৫:৩২78924 দ | unkwn.***.*** | ১৭ আগস্ট ২০১৯ ০৬:০৮78925
দ | unkwn.***.*** | ১৭ আগস্ট ২০১৯ ০৬:০৮78925 
	 দাদামশায়ের থলে থেকে প্রশাসনের পাঠ : দিলীপ ঘোষ
 দাদামশায়ের থলে থেকে প্রশাসনের পাঠ : দিলীপ ঘোষ নো থ্রোনস, নো ক্রাউনস, নো কিংস : নূপুর রায়চৌধুরী
 নো থ্রোনস, নো ক্রাউনস, নো কিংস : নূপুর রায়চৌধুরী তবিলদারের দুনিয়াদারি পর্ব ১৬- নরমানডির তটে- পর্ব দুই : হীরেন সিংহরায়
 তবিলদারের দুনিয়াদারি পর্ব ১৬- নরমানডির তটে- পর্ব দুই : হীরেন সিংহরায় সেই দিন সেই মন - পর্ব ২৭ : অমলেন্দু বিশ্বাস
 সেই দিন সেই মন - পর্ব ২৭ : অমলেন্দু বিশ্বাস কাদামাটির হাফলাইফ - ইট পাথরের জীবন : ইমানুল হক
 কাদামাটির হাফলাইফ - ইট পাথরের জীবন : ইমানুল হক অমলেন্দু বিশ্বসের কবিতা ২৮ : অমলেন্দু বিশ্বাস
 অমলেন্দু বিশ্বসের কবিতা ২৮ : অমলেন্দু বিশ্বাস শূন্য এ বুকে.. .... প্রথম পর্ব  : Somnath mukhopadhyay
 শূন্য এ বুকে.. .... প্রথম পর্ব  : Somnath mukhopadhyay মন খারাপের টুকরো আকাশ : Sarbani Ray
 মন খারাপের টুকরো আকাশ : Sarbani Ray লা পত্নী ভ্যানতাড়াঃ পর্ব ১০  : রানা সরকার
 লা পত্নী ভ্যানতাড়াঃ পর্ব ১০  : রানা সরকার বাংলাদেশ সমাচার - ১২  : bikarna
 বাংলাদেশ সমাচার - ১২  : bikarna পদ্যঃ চল্লিশ বছর ধরে কাগজটা সাদাই ছিল : Amitava Mukherjee
 পদ্যঃ চল্লিশ বছর ধরে কাগজটা সাদাই ছিল : Amitava Mukherjee ইতিহাসের তথ্য বিকৃতি এবং মিথ নির্মাণ : Ranjan Roy
 ইতিহাসের তথ্য বিকৃতি এবং মিথ নির্মাণ : Ranjan Roy পুরোনো দিনের হারানো স্মৃতি  : SD
 পুরোনো দিনের হারানো স্মৃতি  : SD দীপাবলী  : R
 দীপাবলী  : R  নদীর ধারে বসত : র২্হ
 নদীর ধারে বসত : র২্হ