অথচ, সেভাবে পাওয়া হলো না আপনাকে!
যৌবন যখন
শৈশব থেকে কৈশোরে ছুটে গেল
প্রৌঢ়ত্বের আকাশে ঘনিয়ে এল
গোধূলি
এগোতে এগোতে
এক দীর্ঘ গভীর
আফসোসের রেখা টানতে টানতে
আপনার দিকে
ছুটে গেছি বারবার...
প্রেমে
প্রত্যাখানে
বিচ্ছেদে
আদরে
শিক্ষায়
অশিক্ষায়
কলঙ্কে
অপমানে
সম্মানে
অসম্মানে
রাতের কান্নায়
সকালের ঘাসফুলে
সুন্দর যখন সুন্দরের চেয়েও সুন্দর
এবং যাপন
যখন একাকী
অজান্তে, আপনি থেকে কখন যে তুমি
'তুমি' হয়ে গেছ!
কখন যে এ মন,
এ সত্ত্বা
এই অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব বোধ
তোমাকে উপাস্য ভেবে
সখা ভেবে
আনন্দ ভেবে
আগুনের দিকে ছুটে যাওয়া পতঙ্গের মতো
জড়িয়ে ধরেছে
মুক্ত করেছে আকাশের দিকে
শেকল ছিঁড়ে মাটির উপর
ভেসে গেছে বাতাসের মতো
সহস্র অপমানেও সহজ থাকতে থাকতে
মরতে মরতে
মরতে মরতে
বাঁচিয়ে দিয়েছ তুমি
চোখের জলে ধুয়ে নিয়ে
শিখিয়েছ আবার চোখের জলে
ধন্য হতে
আমার শ্রান্তি, ক্লান্তি
ভুলিয়ে দিয়েছ
বিচ্ছেদ, বিরহ
আমি শূন্য হয়ে গেছি
শুরুর থেকেই শুরু করেছি
শেষ থেকে উঠে দাঁড়িয়েছি শেষে
তোমার জন্য ঠাকুরসাহেব
মুখ তুলে চেয়েছি আজ
যেমন প্রথম শিশুর চোখ
মুখ তুলে দাঁড়িয়ে
একাকীত্বময় জীবনের
একেকটি অন্দরমহল খুঁজতে গিয়ে
খুঁজে পেয়েছি নির্জন এক সৈকত
আমার হাতের পোড়া দাগে
চোখের নীচে বিষাদের অন্ধকারে
উপাখ্যানের কাছে
লোককথার মতো
নত হয়ে আছি
শুধু
প্রেমে
কেননা, এত দুঃখের ভেতর দিয়ে
না পুড়লে আমার মন
কিছুতেই তোমাকে পেত না
কিছুতেই তোমার গানের কাছে
বাড়িয়ে দিত না সাহস
কিছুতেই বুঝতে পারত না
অতীত এবং আগামীকে ছেড়ে
ক্ষণিকের জন্যও
কীভাবে বেঁচে নেওয়া যায়!
কীভাবে অসংখ্য কবরস্থান সরিয়ে
শ্মশানের ছাই ঘেঁটে
বের করে আনা যায়
স্নিগ্ধ মধুর এক জ্যোতিকে
আলোয় আলোয়
ভরে যায়
রাতের বালিশ
অপমানের ছুরি
আমার কাটা দাগ
নোনা ঘা
মুগ্ধ চোখে তোমাকে ভাবি
তোমাকে দেখি
চেয়ে থাকি
আর
ভাবি
এবং ভাবি...
কেন চেয়ে আছ গো মা !
নিপুণ তুমি
নিষ্ঠুর
নিজেকে সরিয়ে নিলে
আমার কাছ থেকে
স্পর্শসুখ থেকে
রাতের গভীর একাকীত্ব থেকে...
এই কান্না
এই বোধ
এই সৌন্দর্য
এই প্রেম
আমাকে কোথায় নিয়ে যাবে রবীন্দ্রনাথ?
শুধু, শূন্য এক খেয়ার দিকে
তাকিয়ে থেকে
শূন্য হয়ে যাওয়া ছাড়া!
কীভাবে পূর্ণ হব
যদি
এভাবে অপূর্ণ না-ই হই?