ওই লম্বা সাদা বাড়িটার কাঠের ছোট্ট গেট খুলে ঢুকে বাগানটুকু পেরিয়ে গেলেই বেশ সোজা পথে আমার বাড়ি যাওয়া যায়। সাদা বাড়িটায় কেউ থাকে না। কাজেই বাধা দেবার লোকও নেই। একটা নাম না জানা হলুদ ফুল, খালি দু-মিনিট গল্প করতে চায় গায়ে পড়ে।
এই পথে গেলে বাড়ি ফেরা সহজ। তা না হলে ঘুরপথে উৎরাই চড়াই। ডান দিকের বাড়ির দানবের মতো কুকুরগুলো কী বিশ্রী চিৎকার করে যেন আমি চুরি করতে এসেছি ওদের বাড়ি। তাই এই শর্ট কাটটাই আজকাল পছন্দ হয়। আজ দারুণ সব পটারি তৈরি হল। গরম আভেন থেকে একের পর এক বেরিয়ে আসছে আমাদেরই নকশা করা সব শিল্পকাজ! অলিভ সবুজ, খুব ঘন কালচেটে, সামান্য তামাটে মিশেল, অপূর্ব! হালকা লালচে একটা আলতো শেড। দারুণ পছন্দ হল আমার। ভাবছি নিজেই নিয়ে নেব বাড়ির জন্য। এই করে করে আমার আর ব্যাবসাপত্তর হল না। সব কাজ-টাজ গুছিয়ে তালা লাগিয়ে মেয়েগুলোকে দোলের উপহার হাতে ধরিয়ে এবার বাড়ির পথে। সুগন্ধী মোমবাতিতে ছোট্ট ছোট্ট ফুল-পাতা লাগিয়ে বেশ নকশা তুলবে ওরা হোলির ছুটির পর। শুকনো ফুল, শুকনো পাতা। অথচ রং নষ্ট হবে না। ডাইরির পাতা। ল্যাম্প শেড। আর এখানে ফুল লতাপাতার তো অভাব নেই।
গতকাল কী প্রচণ্ড বৃষ্টি ছিল। আজ আকাশ কেমন পরিষ্কার। দূরে নন্দাদেবী আর ত্রিশূল পাহাড়ের মাথায় দিনের শেষ আলোটুকু মিলিয়ে যাচ্ছে। পমেগ্রানেট আর কেরালা লাইম। এই দুটো দিয়ে একটা গন্ধ বানাব। এসবই আমার নতুন শেখা কাজ কিনা! এইসব ভাবতে ভাবতে কখন বাড়ির ছোট্ট কাঠের গেট খুলে ঢুকে পড়েছি।
দেখেছ! প্রতাপ এখনও পাপোষগুলো তোলেনি! যদি বৃষ্টি এসে যায়। আলো জ্বলা ছোট্ট বাড়িটা। মোমরঙা আলো জ্বেলে আমার জন্য বসে আছে। চিমনি দিয়ে গলে গলে বেরুচ্ছে স্বপ্নস্রোত, ছোটো ছোটো কুণ্ডলী পাকিয়ে দুটো পাইন গাছের মাঝে আটকা পড়ে গেছে যে চকচকে রুপোর থালাটা দেখা যাচ্ছে, তার চারদিকে ঘুরপাক খাবে ওরা। সেডার। দেওদার কাঠ জ্বালিয়েছে প্রতাপ। কী তার সুগন্ধ! আমার ছোট্ট বাড়ির চিমনি দিয়ে সেই সুবাতাস সারা পাইনবনে ছড়িয়ে পড়ছে। দেওদার গাছকে জড়িয়ে ধরছে। আমি ঘরে না ঢুকে একটু বেতের চেয়ারে বসি। সামনে ঝিমঝিমে অন্ধকার। নাশপাতি গাছে ফুল আসবে সেই মে মাসে। আরে, এ কী! চন্দ্রবাবু যে হাতের নাগালের মধ্যে এসে গেছেন। বড্ড বেশি জ্বল জ্বল করছেন যে।
Last night the moon came dropping its clothes in the street.
I took it as a sign to start singing
Falling up into the bowl of sky,
The bowl breaks
সেই আলোর বাটি ভেঙে খান খান হয়ে গান হয়ে ছড়িয়ে পড়ল। আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে। চাঁদ, অন্নপূর্ণার মাথার কিরীটে এখন অসক এ মেহতাব ঢালবেন। চন্দ্রবাবুর কিরণমালা। যেন গলানো রুপো। আচ্ছা, ওই পমেগ্রানেট আর কেরালা লাইম নিয়ে যে পারফিউমটা বানাব ওর নাম দেব অসক এ মেহতাব?
Thirst drove me down the water
Where I drank the moon’s reflection
মাথার ওপর ওরিয়নের বেল্ট। ধক ধক করছে তিনটি তারা পাশাপাশি। কালপুরুষ। মাথার ওপর জেগে থাকে কালপুরুষ। এই দেওদার পাইনের জঙ্গলে আমার এই শান্ত কুটিরে সে আমায় পাহারা দেয় রাতভোর। আমি নিশ্চিন্তে ঘুমোই। প্রতাপের কি কিছু ঠিক আছে? কখনও কানে শোনে, কখনও শোনে না। উধাও হয়ে যায় মাঝে মাঝে। ডেকে ডেকে গলা ব্যথা হয়ে যায় আমার।
পাহাড়ের কোলে ছোট্ট একটা গ্রাম। চারদিক জুড়ে কুমায়ুন গাড়োয়াল হিমালয়। মাথার ওপর অজস্র নক্ষত্রের জলসা। আমার ভাইপো অরো থাকলে বলত, ওই যে ঠামি, ওই যে দাদু। আমি তো আরও অনেক প্রিয়জনকেই দেখতে পাই। ওরা আমার মাথার ওপরে ইমনকল্যাণ রাগ হয়ে ঝরে পড়ে। পাইনের বনে শোঁ শোঁ হাওয়া। সে হাওয়ার মাতাল শব্দ শুনে মনে হয় সামনেই কোথাও সমুদ্র আছে। যেন এখনই হাজির হবে বড়ো বড়ো গাঙচিল। ঠোঁটে মাছ ঝুলিয়ে।
I have a thirsty fish in me
That can never find enough
of what it’s thirsty for!
Show me way to the ocean!
প্রতাপ রাতে রান্না করেছে ছোলে, জিরা আলু আর রুটি। গরম গরম। নাশপাতি গাছে ঘেরা আমার রান্নাঘর। রান্নাঘরের পুরোটাই কাচের দেয়াল। ওখানেই টেবিলে বসে খাই। মাথার ওপর ডোমের আলো। ওম ওম গরম ঘর। এই খাবারের যে কী স্বাদ কী স্বাদ! এত সাধারণের মধ্যে এত আনন্দ, তুচ্ছতার মধ্যে এত মাধ্বী ধারা এতদিন যেন বুঝতেই পারিনি।
গাছে গাছে ঘষা লেগে আগুন জ্বলে যায়। আমাদের বাড়ির বাইরে দেখবে পোড়া দাগ, দেওদার গাছের গায়ে। পুড়ে যাওয়া দেওদার কাঠ নিয়ে আসা হয়। টুকরো করে রাখা হয়। সে আরও পুড়ে পুড়ে আমার ঘরকে গন্ধে উষ্ণতায় সোহাগে ভরিয়ে রাখে। আমার এ ধূপ না পোড়ালে গন্ধ কিছুই নাহি ঢালে…
Last year I gazed at the fire
This year I’m burnt kabob.
আলো নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। কাঠের ছাদে পাইন ফল টুপ টুপ খসে পড়ে, পাতা সরসর করে।
সকালের আলোয় নন্দাদেবী, ত্রিশূল অন্নপূর্ণা লালে লাল হয়ে বলে ওঠে, আজ যে হোলি। আমি অমনি শুনতে পাই পাহাড়ে ঢোলের আওয়াজ। দূর থেকে ভেসে আসছে। আজ তেওহার। এখানে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সবাই রং মাখায়। সবাই একজায়গায় জড়ো হয়ে একে অন্যকে রং লাগিয়ে দিচ্ছে। কেউ তোমাকে জোর করে রং দেবে না। হাতে হাতে মিঠাই, আঙুর। মিঠাই-এর কথায় মনে হল, আজ হোলি। ঘরে কিছু মিছু আনিয়ে রাখা দরকার। অবিশ্যি কেই বা আসবে আমার বাড়ি। কিন্তু আয়োজনটি যে সম্পূর্ণ হওয়া চাই। যদি আমায় পড়ে তাহার মনে …। ভালো মিষ্টি কিনতে হলে আলমোড়া যেতে হবে। এই জায়গাটা তো একেবারেই গ্রাম। আলমোড়া বাজারে খিম সিং মোহন সিং রোউতালার দোকান থেকে বালমেঠাই, চকোলেট আর সিঙ্গোরি কিনে আনতে হবে। সিঙ্গোরি ভারী মজার। পাতায় মোড়া নারকেল আর ক্ষীরের মিঠাই। চকোলেট কিন্তু একটা মিষ্টির নাম। মিষ্টি আনতে গেলে গোবিন্দই ভরসা। আলমোড়া প্রায় দশ কিলোমিটার দূর। ফোন করে গোবিন্দকে ডেকে আনতে হয়। ওর গাড়িতে করেই এখানে সেখানে যাই। বিশু পাগলাও জুটে যায়। এসেই বলে দাও দেখি তোমার ঘরে ফুল সাজিয়ে দিই। সাদা গোলাপি চেরি, গোলাপ, রডোডেন্ড্রন, জেরেনিয়াম, ফ্লক্স। বিশু চেঁচায়, অত যে ফুলদানি বানাও পটারি ওয়ার্কশপে সেগুলোই আনো না দু-চারটে। কী হবে ঘরে জমিয়ে রেখে!
ভেতর থেকে এনে ওর হাতে দিই। সে ফুল সাজায়। আবির সাজায়। আবার গান ধরে। বিকশিত প্রীতিকুসুম হে …। আমি বলে উঠি, বাবা, তুই তো দিব্বি গাইতে পারিস রে। সে উৎসাহ পেয়ে আরও গাইতে থাকে। এ ভাবেই জমে ওঠে আমার পাহাড়বাড়ির বসন্ত উৎসব।
Again near the top of mountain
The anemone’s sweet features appear
The hyacinth speaks formally to the jasmine,
“peace be with you”. “And peace to you lad!
Come walk with me in this meadow”
আকাশ জুড়ে পাহাড়। ওই আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায়, এমনটাই। কাসার দেবীর মন্দির আমার বাড়ি থেকে দু-কিলোমিটার দূরে। আমি থাকি পাপারসালি নামে একটা জায়গায়। মন্দিরে হেঁটে যেতে খানিক সময় লাগে। মন্দিরে ওঠা, সে কিন্তু ভারী কঠিন। এই মন্দিরের কাছেই আছে জিও ম্যাগনেটিক লাইন। ভান আলেন লাইন। সারা পৃথিবীতে মোটে তিনটে। তার মধ্যে কাসার একটা। স্বামী বিবেকানন্দ এখানে একটা গুহায় নিবিড় সাধনা করেছিলেন। সে গুহার আকার সিংহের মতো। সেখানেই মন্দির।
ভূচৌম্বিক শক্তির প্রভাবে এখানে ধ্যান জমে খুব ভালো। জীবন সহজসরল। সহজসরল জল তৃষিতকে তৃপ্ত করে। তাই গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে যাদের তারা বারবার কাসারে আসে। গোলোকধাঁধাঁয় দিশেহারার দলও আসে, কারণ তাদের একটা সরল-সিধে পথ চাই। পথ দেখাও। এই পথ খুঁজতে খুঁজতে হিপির দল ডেরা বাঁধে কাসার দেবীতে। তাই কাসার দেবী গ্রামে মোহনের দোকান দোলমা রেস্তোরাঁয় হরেক রকম খাবার পাওয়া যায়।
এসব করেই দিন কাটে বেশ। আমি নকশা আঁকি, রং মেশাই, বই খুলে জাপানি ওয়াবি সাবি দেখি। সৌন্দর্য সব কিছুতেই। বাঁকা-টেরার মধ্যেও। তোমার দেখার চোখ বদলাও শুধু। মেটে লালের পাশে ফিরোজা, গোলাপির পাশে ছাই আর পিঁয়াজ রঙের পাশে প্যাস্টেল সবুজ মিশিয়ে মিশিয়ে দেখি। রোদের রং পালটায়, ছায়া দীর্ঘতর হয়। কত পাখি কত রকমের ডাক। এর মধ্যে দেখি শিরিনের ছবির বই এসেছে।
মরক্কোর ঘন জমাট রং। আর হরেক রকম নকশা। আমি ভাবি এখান থেকে কয়েকটা তুলে নেব আমার পটারি ডিজাইনে কাজে লাগবে।
কাসার দেবীর মন্দিরের পাশে ওই পাথরের সরু লম্বাটে ঝুলন্ত চাতালটায় বসলে মনে হয় শূন্যে ভেসে আছি। ওর ভেতর দিয়ে গেছে সেই চুম্বকরেখা। ওখানেই বব ডিলান তাঁর গান বাতাসে মিশিয়ে দিয়েছিলেন। পাখিরা সেই সুর তুলে নিয়েছিল। আর আকাশ থেকে অকস এ মহতাব হয়ে ঝরে পড়েছিলেন আলেন গিন্সবারগ।
বিশু পাগল বলে, আজ পূর্ণিমা। তোমার ছাদের ঘরে আমাকে থাকতে দেবে?
আমি বলি, কেন রে পাগলা?
সে বলে ওই ছাদের কাচ দিয়ে চাঁদ দেখা যায়। আজ চাঁদের আবির মেখে ঘুমাই। জানো তো! রাত গভীর হলে তোমার ছাদে পরি নেমে আসে!
বলিস কী? এ তো আমার জানা ছিল না।
কেন? জানো না! পাতাল ভুবনেশ্বর ছাড়িয়ে সেই যেখানে বরফ আর গলে না ওখানে আসে তো ওরা। গ্রামের লোকেরাও বলে। দেখা যায় ওদের। গন্ধর্ব, কিন্নর, পরি! যদি যাবে তো বলো। তবে হাঁটতে হবে কিন্তু অনেকটা!
গভীর রাতে নিভন্ত চুল্লির কাঠের চিটির পিটির শব্দের মধ্যে বব ডিলান আমার বারান্দায় বসে জ্যোৎস্নায় ভিজে ভিজে গান করেন
How does it feel, how does it feel?
To be without a home
Like a complete unknown, like a rolling stone
সেই গান কখন পাখিরা শিখে নিয়েছিল, বললাম না! চোখ খুলে ভারী একটা আরাম হল। ঝকঝকে রোদ্দুরে পাহাড়দেবতারা দরাজ হাসি হাসছে। ঝরে-পড়া চেরি ফুলে ফুলে আমার এক উঠোন বসন্ত হয়ে আছে। আমি হালকা গরম জামা পরে দরজা খুলে বাইরে বেতের চেয়ারে বসি। বিশু পাগলা কোন্ ভোরে রান্নাঘরের দরজা দিয়ে চলে গেছে। কতটা চাঁদের আলো মাখল, পরি এসে কী বলে গেল জানতে হবে তো!
প্রতাপকে ডাকব ডাকব করছি, চা খাব। তখনই মোবাইল বেজে উঠল।
—সুপর্ণাজি, হোপ ইউ আর ফাইন।
—হ্যাঁ, ভালো আছি। আপনি কে বলছেন?
—আমি রশ্মি। বাড়ির চাবি খুঁজে পেতে অসুবিধে হয়নি তো? পেতলের ঘণ্টার পাশে পাখির দানা খাবার জায়গার পাশে, যেমন বলেছিলাম। আগের দিন সব কিছু নিজের হাতে সাজিয়ে রেখে এসেছিলাম আপনার জন্য।
—আপনার কথা আমি ঠিক বুঝতে পারছি না! আমিই তো এ বাড়িতেই থাকি, কাছেই আমার পটারির ওয়ার্কশপ ।
—আরে! কী আশ্চর্য! আমারও তো পটারি, ন্যাচেরাল টাই ডাই এসবের কাজ। প্রায় একশো কিলোমিটার দূরে থাকি। আপনি এরপর আমার এখানেও বেড়িয়ে যাবেন কিন্তু। এখানে বহু পুরোনো গুহা আছে, পাতাল ভুবনেশ্বর। গোবিন্দ বলে একটা ছেলে আছে ওকে বললে, গাড়ি চালিয়ে নিয়ে আসবে। হোপ, ইউ লাইকড মাই হাউস। চাবি খুঁজে পেতে নিশ্চয়ই অসুবিধে হয়নি?
—চাবি? কেন? চাবি লাগানো থাকবে কেন? প্রতাপ আছে তো। ওই-ই তো সব দেখাশোনা করে আমার। আমি তো দেখেছি দরজা খোলা, ফ্লাস্কে গরম জল, টেবিলে খাবার, ফায়ার প্লেসে আগুন, দেওদার কাঠের গন্ধ। রোদের গন্ধ মাখা তোয়ালে, আয়োজনের কোনো কিছু কম তো দেখিনি।
প্রতাপ? মানে প্রতাপ ভাইয়া? প্রতাপ ভাইয়া তো আজ তিন বছর হল মারা গেছে। এই বাড়িটা, এই স্নো ভিউ বাংলোটাকে খুব খুব ভালোবাসত। আমাদের বাড়ির কেয়ারটেকার ছিল। ফ্যামিলি মেম্বার ছিল বলতে পারেন। কিন্তু আপনি কী করে ওকে দেখলেন? সুপর্ণাজি, আর ইউ ওকে? অল ওয়েল?
তারপর সেই সাদা বাড়িটার শর্ট কাট রাস্তা ধরে গোবিন্দ আমাকে ওর গাড়িতে তুলে নিল। চোখের আড়ালে হুশ হুশ করে স্নোভিউ বাংলো, পাহাড়ের নামজাদা শিখরগুলো একে একে কেমন মিলিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি জানি প্রতাপ ওখানে আবার আসবে, আমার জন্য স্যুপ বানাবে ও। সেডার কাঠ দিয়ে ফায়ারপ্লেস সাজাবে। ওকে দেখতে পাবে শুধু বিশু পাগলা। আর কেউ না!
অসক এ মেহতাব থেকে চেরি ফুলের মাথায় তখন শিশির জমতে থাকবে। আর সব চেরিফুলের ভেতরে জ্বলতে থাকবে এক একটা জোনাকি!
My soul, don’t try to answer now!
Find a friend and hide.
But what can stay hidden?
Love’s secret is always lifting it’s head
out from under the covers,
“Here I am”
আবার ভাল লাগল। মায়াবি পরিবেশ তৈরিতে সিদ্ধহস্ত আপনি। কাব্যিক। এই যে এইখানটায়— ‘আলো জ্বলা ছোট্ট বাড়িটা। মোমরঙা আলো জ্বেলে আমার জন্য বসে আছে। চিমনি দিয়ে গলে গলে বেরুচ্ছে স্বপ্নস্রোত, ছোটো ছোটো কুণ্ডলী পাকিয়ে দুটো পাইন গাছের মাঝে আটকা পড়ে গেছে যে চকচকে রুপোর থালাটা দেখা যাচ্ছে, তার চারদিকে ঘুরপাক খাবে ওরা’।
কিন্তু আমার চোখ আটকে গেল আলমোড়ার দুই মিষ্টিতে। একটা খেয়েছি। বালমিঠাই। কিংবদন্তীর মিষ্টি যেন। লোকসাহিত্যে জায়গা করে নিয়েছে। দেখলে আমাদের রাজ্যের মালদার রসকদম্বের আত্মীয় মনে হয়। রসকদম্ব গোল। বালমিঠাই লম্বাটে। আর ক্ষীরের পাক অনেক কড়া। দ্বিতীয়টি মিষ্টিটা হল সিঙ্গোরি। খাইনি। কিন্তু এক বরিষ্ঠ সহকর্মীর কাছ থেকে শুনেছি। একটা বিশেষ গাছের পাতায় মুড়তে হয় মিষ্টিটা। পাতাটা স্থানীয় ভাষায় মালু বলে শুনেছি। এটা কী গাছ যদি একটু জানান। এই পাতাটার গন্ধ মিষ্টিটার বৈশিষ্ট্য। যেমন জঙ্গলমহলের মাস পিঠা মুড়তে হয় শালপাতায়।