এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • রুহানি - পর্ব ২ - শহর-এ-দাস্তান

    সুপর্ণা দেব লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৮ জুলাই ২০২০ | ৩২০৮ বার পঠিত
  • শহর-এ-দাস্তান

    ছত্তর মঞ্জিল থেকে আবছা আলো এসে পড়েছে গোমতীর জলে । দূরে বসে ছত্তর মঞ্জিলের একটা হালকা রেখাচিত্র দেখছি শুধু। উলটে তাওয়া কি পরাঠা আর গালউটি কাবাব। মুখে দিলেই যেন দিলরুবা বাজিয়ে দিচ্ছে রুহানি ফিরদৌস।
    আর তক্ষুনি, গজল গাইয়ে ঠিক আমার দিকে তাকিয়ে, আরে হ্যাঁ, আমার দিকেই তাকিয়ে সেই মোক্ষম ফয়েজ নজম ছুড়ে দিলেন, চলে ভি আও কে গুলশনকা কারোবার চলে, গুলোমে রং ভরে…

    গোলাপের কারবার কি বন্ধ করে রাখা যায়? গোলাপ বিছানো পথে সেই কবে ফিরদৌস চলে গেছে। তাকেই তো খুঁজতে এই শহরে আসা।
    “কফস উদাস হ্যাঁয় ইয়ারো, সবাসে কুছ তো কহো।” এই পিঞ্জরা তো উদাস হয়ে আছে, ভোরের হাওয়াকে কিছু তো বলে যাও। সেই ভোরের হাওয়াকে বললাম, “চলো, ফিরদৌসকে খুঁজি চলো।” সে বললে, “ইয়ার্কি নাকি! খোদ নবাবের শহরে এসে নিমিস না খেয়ে ফিরদৌস কেন ভগবানকে খুঁজতেও আমি যাব না। তুমি গোমতীনগর থেকে সোজা আমিনাবাদ চলো এখন।” সেই হু হু ঠান্ডায় আমিনাবাদে গিয়ে মুখে দিলাম নিমিস। নিমেষেই শেষ হয়ে যায়, স্বাদে একেবারে স্বর্গসুধা। মাখ্‌খন মালাই। গল্পে বলে, মাটির পাত্রে শিশির ভেজা ঘাসের ওপর, কাঁচা দুধ রেখে দিতে হবে। যে সে দিনে নয় মোটেও , পুন্নিমের চাঁদের দিনে। তারপর হুরি-পরিরা নেমে কী করে আমার অত কথা জানা নেই। মোটের ওপর কয়েক ঘণ্টা পরে সেই দুধকে ভালো করে ঘুঁটতে হবে। ঘুঁটতে ঘুঁটতে ঘুঁটতে ঘুঁটতে যে আলতো আদুরে নবনীত জমা হবে তাকে আর-একটু চাঁদির তবক-টবকের গয়না পরিয়ে হাজির করা হবে নিমিস। তবে এখন বানানো যাবে না সোহন হালুয়া। এসবের জন্য দরকার জমজমাটি ঠান্ডা। এখন আবার তেমন ঠান্ডা পড়েনি কিনা।

    ভোরের হাওয়া নিমিস খেয়ে চম্পট দিয়েছে। ফিরদৌসকে খুঁজে বের করা কি চাট্টিখানি কথা! তার জন্য দম চাই, শক্তি চাই, জুনুন চাই। সকালের নরম আলোকে বললুম, “যাবি?” ওকে সঙ্গে নিয়ে এসে পড়লাম বাজপায়ী কচুরি ভাণ্ডার। হজরতগঞ্জে। লখনউতে এসে বাজপায়ীর কচুরি যে না খেয়েছে তার জীবন বৃথা। অমন খাসা কচুরি আমি কোথাও খাইনি। এ যাকে বলে একেবারে ডিভাইন। নবাবের শহরে সব কিছু মাপমতো। এধার ওধার হবার কোনো জো নেই। বাজপায়ীর মালিক নিজে এসে বলেন, শুধু আলুর সবজি কেন? মটর লাও, মটর। মাখোমাখো সুসিদ্ধ মটরের রসা আর সেই দেবভোগ্য কচুরি ফিরদৌসকে ভুলিয়ে দেবে, গ্যারান্টি! তেলতেলে, চুপচুপে, মশল্লায় বিজবিজে, কোনোটাই নয়। আরাম করে চোখ বুজে খেতে হয়। সেখান থেকে চটপট আবার আমিনাবাদ। আবার আমিনাবাদে কেন? কেন আবার? ফিরদৌসকে খুঁজতে বেরিয়েছি, আর মাথায় দোপাল্লি টোপি উঠবে না। তা হয় না। তবে কিনা আমিনাবাদ ভারী ঘিঞ্জি বাজার। বাজারের ভেতরে গাড়ি ঢোকে না। পায়ে হেঁটে টোপির দোকানের ঢুকি। নবাবদের শহর বলে কথা। এক জমানায় ফ্যাশন আর ইস্টাইলে রাজধানী দিল্লিকে টক্কর দিত! একবার চারকোনা টুপি চালু হল। তার নাম চৌঘশিয়া। তারপর পাঁচকোনা। মাথায় টুপি পরানোর জন্য কম মেহনত করেনি এই শহর। তবে এর মহব্বতের কাছে টুপি পরার জন্য সবাই মাথা পেতে দিয়েছে। দিল্লি থেকে এক শাহজাদা এসেছেন। দু-টুকরো কাপড়ের টুপি পরে। দোপাল্লি টুপি। সাদা কাপড়ে চিকনের সূক্ষ্ম কাজ। সুন্দর ছিমছাম টুপি। আমজনতার টুপি। বড়োলোক পয়সাওয়ালা আমির শাহজাদারা মাথা সাজাতেন নুক্কাদার টুপি দিয়ে। সোনা-রুপোর সুতোয় এমব্রয়ডারি করা, বেশ জমকালো। নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের তো শখশৌখিনতার অন্ত ছিল না। তিনি গোলাপ ফুল লাগানো স্যাটিনের আলমপসন্দ নামে একটা জবরজং টুপি চালু করেন যেটা একেবারেই ফ্যাশনট্রেন্ড হতে পারেনি।



    ফিরদৌসকে খুঁজতে গিয়ে টুপি কেনা হয়ে গেল। সকালের আলো এখন দুপুরের ঝাঁ ঝাঁ রোদ। তবে শীতের দিনে সে রোদ যেন জামেওয়ার শাল।
    আরে জনাব, নবাবের শহরে এসে যদি মালাই গিলোরি না খেয়েছেন তো লোকে কী বলবে? চোখ বন্ধ করে সোজা রাম আস্রের দোকান। মালাই গিলোরি, আহাহাহা! এতটুকু মাপজোকের এদিক ওদিক হবার জো নেই। কী মাপা মিঠাস, কী মাসুম তবক। মালাইয়ের তবকে কুচি কুচি মিছরি, দানা দানা পেস্তা। আর সেই মালাই পাতার গিলোরি। মাশা আল্লাহ! এ একটা খেলে আর-একটা খেতে ইচ্ছে হবে। শুধু তাই নয়। ফিরদৌসকেও ভুলে যাবেন। বেশক!

    রাম আস্রের দোকান থেকেই বলে দেবে এই গিলোরির কিসসা। নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের নাকি পান খাওয়া বারণ করে দিয়েছিলেন হেকিম। আরে মিয়াঁ, উনি এত পান খেতেন যে আপনার চোখ কপালে উঠে যাবে। নবাব এখন করেনটা কী? তাই পানের মতন করে এই মালাই পাতা নবাবকে সেজে দেওয়া হত। পানের মতোই টুক করে তুলে মুখে পুরে চোখ বুজে ফেলতেন।
    রাম আস্রের দোকান থেকে মালাই গিলৌরি খেয়ে মনে বেশ একটা অকারণ খুশি খুশি ভাব এল। লখনউয়ের কোনো মিষ্টি একেবারেই স্বাদে কিটকিটে নয়। কী অভিজাত এখানকার মিষ্টির স্বাদ! আমাকে দ্যাখ আমাকে দ্যাখ, এই হ্যাংলাপনা একেবারেই নেই। একেবারে জাত বনেদি!
    রোদের আলো তুখোড়। টাঙায় করে কাইজারবাগ চললাম। পুরোনো পুরোনো বাড়ি। বাড়ির খিলানে অযোধ্যার রাজাদের জোড়া মাছের মোটিফ। ঠিকানা মিলিয়ে মিলিয়ে আমি সেই হাভেলির সামনে দাঁড়ালাম। গলা খাঁকরিয়ে বললাম, ফিরদৌস দাস্তানগো আছেন নাকি?
    কোনো সাড়াশব্দ নেই। ভাঙা হাভেলির দরজার লাল-নীল কাচ দিয়ে পড়ন্ত দুপুরের কমলা আলো। ফিরদৌস আছেন নাকি, ফিরদৌস?

    “কে?” এক মহিলা বেরিয়ে এলেন। জর্দার গন্ধ ভুরভুর করছে। গায়ে পশমিনা শাল। নাকে হিরের কুচি। একটা পান আর গোলাপের চাপ চাপ গন্ধ চারিদিকে।
    তিনি মিষ্টি করে বললেন, “ভেতরে আসুন, ভেতরে আসুন। কাকে খুঁজছেন?”
    আমি বললুম, “এটা ফিরদৌস দাস্তানগোর বাড়ি তো?”
    তিনি বললেন, “ফিরদৌস তো নেই। ও কি জানে আপনি আসবেন?”
    আমি বললাম, “বলেছিলাম যে লখনউ গেলে দেখা করব।”
    — আপনার সঙ্গে ফিরদৌসের কোথায় আলাপ হয়েছিল?
    আমি বললাম, “সেই যে, জোনাকি মেলায়।”
    উনি বললেন, “জুগনুকা মেলা? আরে বাহ। এসো, এসো। আমি ফিরদৌসের খালাজান। ফিরদৌসের বন্ধু যখন, তখন তুমি বলেই ডাকি? কী বল?”
    আমি বললাম, “নিশ্চয়ই। তবে ফিরদৌস যখন নেই আমি তাহলে আজ যাই।”
    উনি বললেন, “তা আবার হয় নাকি? আমাদের তেহজিবের শহর। মহব্বতের শহর। মেহমানকে দরজা থেকে ফিরিয়ে দেব, তাও আবার এই দুপুরবেলায়? এসব আমি দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারি না।”

    অগত্যা ভেতরে গেলাম। গদি তাকিয়াও আছে, সোফাও আছে। সবই বেশ পুরোনো । কিন্তু পরিচ্ছন্ন। আমাকে উনি খুব যত্ন করে বসালেন। খালাজানকে বললাম, “আপনার নাম জানতে পারি, পিসিজান?”
    উনি বললেন, “আফসানা।” আমি বললাম, “আরে বাহ, দাস্তানগোর পিসি আফসানা।”
    উনি বললেন, “হবে না-ই বা কেন? আমাদের হল গল্পবলিয়েদের গুষ্টি। নবাবদের সামনে বাড়ির ছেলেরা খুব জাঁক করে হামজানামা শোনাত। কিন্তু অন্দরমহলে যেতুম আমরা, মেয়েরা। কাকপক্ষীও জানত না। আমি অবাক হয়ে বললাম, “ও মা! তাই? কই, গুজিস্তা লখনউতে শরর একথা লিখে জাননি কিন্তু।”
    উনি বললেন, “ও মা! সে তো কেউ জানতই না। শরর লিখবেন কীভাবে? লখনউ হল দাস্তানের শহর। এর আনাচে কানাচে গল্প লুটোপুটি খাচ্ছে। আর দাস্তানকে ধরে রাখে মুখের ভাষা। সেই ভাষার দখলে মেয়েদেরকে "উহটাতে পারেনি কোনোদিন।”
    আমি বললাম, “পিসিজান দু-একটা কিস্‌সা না শুনে আমি কিন্তু যাব না।” উনি হাসতে হাসতে বললেন, “দোপাল্লি টোপি, হাতে মালাই গিলোরি, এমন জমকালো আংরাখায় নিজেই তো একটা দাস্তান হয়ে বসে আছ। গল্পগাছা হবে খন, আগে তো কিছু খাও।
    একটা রেকাবিতে করে যা আমার সামনে রাখা হল তার নাম মিঠি খিচড়ি। আফসানা পিসি বললেন, “বেটা এই মিঠি খিচড়ি সুফি সাধুবাবা ফরিদের খুব পছন্দের ছিল। হালকা, মিঠা, গরম। খেয়ে দ্যাখো, ভালোলাগবে।
    আমি বললাম, “খুব সুন্দর গন্ধ বেরুচ্ছে।”
    পিসি বললেন, “আমাদের লখনভি খানায়একটু গন্ধ বেশি থাকে। এতে দারচিনি আর জাফরান মেশানো হয়েছে। মুগডাল আর চাল ছাড়াও এতে দুধ আর খোয়া মেশানো হয়।”
    খেতে খেতে গল্প হচ্ছিল। পিসি বললেন, “যা বলছিলাম, লখনউয়ের ভাষা বা বুলিই আমাদের আসল পরিচয়।” সেখানে মেয়েপুরুষ, গরিব-বড়োলোক—কোনো ভেদ নেই। একবার লখনউয়ের বাইরের একজন লোক ভাবল লখনউয়ের ভাষা নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। যাই, গিয়ে শুনে আসি কীরকম ভাষা ওদের। চকবাবাজারে গিয়ে দ্যাখে বেশ একটি ডাগর গুলফারোশ মানে ফুলওয়ালি ফুল বিক্রি করছে। সে ফুলওয়ালির দিকে একেবারে সামনাসামনি এসে ড্যাবড্যাব করে দেখতে লাগল। গুলফারোশ তাকে বলল, কী দেখছেন অমন করে? জানেন না এই শহরে অমন ড্যাবডেবিয়ে দেখাকে অসভ্যতা বলে?
    সেই লোকটি বলল, সবুজ পোশাকে ঢাকা একটি শরীর দেখছি।
    গুলফারোশ বেশ ঝাঁঝিয়ে বলল, না মিয়াঁ, তুমি লখনউয়ের লোক মোটেই নও।
    সে লোকটি খানিক ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলল, না না, আমি তো এখানকারই।
    গুলফারোশ বলল, না জনাব, হতেই পারে না। লখনউয়ের লোক এমন ভাবে কথা কইবেই না! আপনি যা বলেন তাকে আমরা বত্তমিজি বলি!
    লোকটা এবারে জিজ্ঞেস করল লখনউয়ের লোক হলে কীভাবে বলত?
    গুলফারোশ বলল, মন দিয়ে শুনে নিন, লখনভি জবান বলত, সবুজ ফানুশে একটি শিখাকে জ্বলে উঠতে দেখলাম!
    আমি বললাম, “আহা আহা! হায় হায়!”
    আফসানা পিসি বললেন, “আমাদের কথা কইবার ঢং নিয়ে যে কত কিস্‌সা আছে, বলে শেষ করা যাবে না। এক নবাব, সাধারণ পোশাকে তাঁর উজিরকে সঙ্গে নিয়ে রাতের বেলা মহল্লায় মহল্লায় ঘুরে বেড়াতেন হালহকিকত জানবার জন্য। একদিন অন্ধকার গলি দিয়ে যাবার সময় নবাব শুনতে পেলেন একটা মেয়ে বলে উঠল, আরে আরে ও তো চলে যাচ্ছে। নবাব একটু ঘাবড়ে গেলেন। তারপরেই শুনতে পেলেন আর-একটি মেয়ে বলছে, সে নেই তো, তাই! নবাব আরও চমকালেন। আর-একটি মেয়ে বলে উঠল, সে থাকলেও তো চলেই যেত না, থাকত।
    নবাব তো এই হেঁয়ালি কথাবার্তা শুনে খুব কৌতূহলী হয়ে পড়লেন। পরদিন তিনি ওই তিনটি মেয়েকে ডেকে পাঠিয়ে এক দাবড়ানি দিয়ে বলেন, অ্যাই, কাল রাত্তিরে কীসব কথা বলছিলি তোরা? আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছিলাম না।
    মেয়ে তিনটে খুব রেগে গেল। ছোটোবোনটা ফট করে বলে বসল, দিদি, এই দিদি, আমার তো মনে হচ্ছে ওইটা। মেজবোন বলল, তাহলে তো সেইটা থাকত! বড়োদিদি বলল, না না, সেইটা না থাকলেও ওইটা হয়।
    নবাব বললেন, হচ্ছেটা কী? তামাশা হচ্ছে? এখানে এসে আবার ওইরকম করে কথা কইছিস?
    বড়োবোন বলল, না না হুজুর। আপনাকে নিয়ে তামাশা করব এমন সাহস আমাদের নেই। আমরা খুব গরিব। বাপ-মা নেই। তিন বোন চিকনের সেলাই করে দিন গুজরান করি।
    ছোটোবোন দেখল, প্রদীপটা নিভে যাচ্ছে। হুজুর, সবসময় অভাব-অনটনের কথা মুখে আনি কেমন করে? ভালোলাগে না। তাই বোন বলল, ও তো চলে যাচ্ছে। মেজবোন বলল, সে নেই তো, মানে তেল নেই, তাই প্রদীপ নিভে যাচ্ছে। আমি বললাম, তেল থাকলে তো প্রদীপ নিভতই না। জ্বলত।
    নবাব বললেন, আচ্ছা বুঝলাম। কিন্তু আজ আমার সামনে এগুলো কী বলা হল?
    মাথা নীচু করে বড়োবোন বলল, ছোটোবোন বলছিল, আমার তো মনে হচ্ছে ওইটা, মানে কোনো জানোয়ার। মেজবোন বলল, তাহলে তো সেইটা থাকত, মানে শিং। আমি বললাম, শিং না থাকলেও জানোয়ার হয়, মানে গাধা!
    নবাবকে গাধা বলা! এদের তো গর্দান যাবে একেবারে। কিন্তু শহরটা যে লখনউ। এই বাকচাতুর্যে নবাব খুব খুশি হলেন। লখনউ বলেই এত তারিফ পেল তারা, বুঝলে?”
    আমার তো গল্পের নেশা লেগে গেছে। বললাম, “পিসিজান, আরও শুনব কিন্তু।”
    আফসানা পিসি বলল, লখনউয়ের রইস আদমিদের খুব বোলবোলাও ছিল। কায়দাকানুন, ঠাটবাট। তবে মাঝে মাঝে ফসকে যাওয়ার ঘটনাও ঘটত। একদিন এক রইস লোক তার নিজের নফরকে সাথে নিয়ে কোনো এক এলাহি নেমন্তন্নে গেছেন । সেখানে নেমন্তন্নবড়ির নফররা হুকুম তামিল করার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। একখানি জাফরানরঙা লম্বা ভাতের দানা পড়ে গেল বাড়ির কর্তার দাড়িতে। একজন নফর হালকা গলায় সুর করে বলল, ফুলের তলে বুলবুলছানা তারে উড়িয়ে দে না, উড়িয়ে দে না। বাড়ির কর্তা অমনি টুক করে ভাতটি ঝেড়ে ফেলে দিলেন। এদিকে আমাদের এই রইস তো মুগ্ধ চোখে পুরো ব্যাপারটি দেখছিলেন। ওখানে যারাই ছিল সবার চোখেই একটা চাপা প্রশংসা। বাহ! কী দারুণ সহবত। একেই বলে কায়দা, কেতা, দস্তুর।
    এদিকে এই রইস কর্তারও প্রবল ইচ্ছে হল অমন কিছু একটা করতে হবে। বাড়িতে দাওয়াত বসল। প্রচুর মান্যগণ্য লোকে নেমন্তন্ন করা হল। নফরকে আগে থেকেই শিখিয়ে পড়িয়ে তৈরি করে রাখা হল। এখন শুধু দেখানোর অপেক্ষায়। রইসটি ইচ্ছে করে দাড়িতে একটা ভাত ফেলে দিয়ে নফরকে চোখ দিয়ে ইশারা করতে লাগলেন। নফর চুপ, সে কোনো কথাই বলে না। তিনি আবার ইশারা করলেন, নফর তখন মাথা চুলকিয়ে বলে উঠল, ওই যে সেদিন, কাদের বাড়িতে কীসের না কীসের কথা হয়েছিল, আপনার দাড়িতে তাই হয়েছে!
    বোঝো কাণ্ড!”
    আমি খুব একচোট হাসলাম। বললাম, “বেলা পড়ে আসছে পিসি, এবারে যাই।”
    পিসি বললেন, “ও মা, পান না খেয়ে অতিথি চলে গেলে আমার নিন্দে হবে না! এ গিরধর, পান নিয়ে আয়।
    পিসির গিরিধারী পান নিয়ে এল। পিসি বললেন, “লখনভি পানের কিস্‌সায় আমরা রাত কাবার করে দিতে পারি। এই গিরধর তোমাকে পানের নমুনা শুনিয়ে দেবে। কথায় বলে কিনা দাস্তানগোর বাড়ির তোতাপাখিও দাস্তান বলে।”
    গিরিধারীও হাসি হাসি মুখে বলল, “পিস্তাই পান, জাফরানি পান, বেগমপসন্দ পান। পেঠে কা পান, বাদামি পান, সউফিয়া পান, আওনলে কা পান, খট্টামিঠা পান, শাহি গিলোউরি পান, হজমে কা পান, সিনে মে দরদ পান…।

    দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে মুচকি হেসে পিসিজান বললেন, “ফিরদৌস কেন কস্মিনকালে আমার কোনো ভাইপোই ছিল না। তবে এই শহরে গলিতে গলিতে ফিরদৌস পাবে। আর জোনাকি, রাহনুমাহয়ে তাদের কাছে তোমাকে নিয়ে যাবে।
    ফিরদৌস এ হুশ্ন ওই শক হ্যাঁয় দামানএ লখনউ
    আঁখোমে বস রহে হ্যাঁয় গাজালানএ লখনউ
    আর হ্যাঁ, এই ঠান্ডায় যদি নিহারি খেতে ইচ্ছে করে আকবরি গেট চলে যাবে।”


    হাতে সময় ছিল, তাই রেসিডেন্সি চলে গেলাম।
    রেসিডেন্সির গেট পেরিয়ে ঢুকেই আমার গায়ের রোম খাড়া খাড়া হয়ে গেল। সত্যি! বাতাসে যে ভাইব্রেশনটি ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে তার গন্ধটা যেন সন্দেহজনক। বাইরে রাস্তায় যথেষ্ট লোকজন, খাবারদাবারের দোকান। কিন্তু সেই পেল্লাই ফটকটা পেরিয়ে যেই ভেতরে ঢুকে গেলাম মনে হল কারা যেন আসে পাশে, কারা যেন আশেপাশে। এই, কারা রে তোরা?
    প্রচুর গাছপালা, ঘন সবুজ। শীতের পড়ন্ত বিকেল। এই ম্লান আলোয় গাছপালার মধ্যে রেসিডেন্সির ভাঙা বাড়িগুলো।
    গেটের দারওয়ান বলেই দিয়েছিল ঠিক সাড়ে পাঁচটায় বন্ধ করে দেব। কোনোটা রেসিডেন্ট সাহেবের বাংলো, কোনোটা গেস্টহাউস, কোনোটা ব্যাঙ্কোয়েট হল, অফিস, কামান, পেয়াদা-বরকন্দাজ, ফোয়ারা-ফানুস। নবাবের দরবারে ব্রিটিশ রেসিডেন্ট সাহেব মজুত থাকত। তার খাস জমিদারি এই বিশাল এলাকা। এইসব রেসিডেন্ট সাহেব আর তার সাঙ্গোপাঙ্গদের শতরঞ্জকে খিলাড়িতে দেখেছি আমরা।



    জমিজিরেত সবই, নবাবের কাছ থেকেই পাওয়া। মোদ্দা কথা রেসিডেন্সি বানাতে দিয়ে নবাবরা খাল কেটে কুমির এনেছিল। আর সেই কুমিরেরা প্রবলভাবে জাঁকিয়ে বসে এলাহি কাজকারবার শুরু করে দেয় রেসিডেন্সির মধ্যে। সিপাহিবিদ্রোহের সময় রেসিডেন্সি ঘেরাও করে রাখা হয় প্রায় ছ-মাস আর ভেতরে চলে নির্বিচার ব্রিটিশহত্যা। কেউ বাদ যায়নি। শিশু, মহিলা—কেউই। প্রায় আড়াই হাজার মানুষ এর ভেতরে মারা গেছিল।
    লাশের পাঁজা চারদিকে ছড়ানো থাকত। সবাইকে প্রথামাফিক কবর দেওয়া সম্ভব হয়নি।
    এই রেসিডেন্সি, আমাদের দেশের হন্টেড হেরিটেজ জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্যতম ভুতুড়ে জায়গা।
    লোকজন বলে, রাতের বেলায় একটা সাদা চামড়ার বাচ্চা নাকি লোকজনকে বলে আমাকে বাড়ি নিয়ে চল। তারপর মিলিয়ে যায়। একটি মহিলা সাদা শাড়ি পরা, গেটের ওধারে অদৃশ্য হয়ে যায়। লখনউ ইউনিভার্সিটির তিনটি ছেলে বাজি ধরেছিল। একজন ওখানে রাত কাটাবে বলে বাজি ধরে। পরের দিন তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। মৃত্যুর কারণ হার্টঅ্যাটাক।
    রেসিডেন্সি নিয়ে গল্পের শেষ নেই। সাড়ে পাঁচটার পর জায়গাটা শুনশান।

    ঘড়িতে প্রায় সাড়ে পাঁচটা। ছাতিম ফুল গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। সে কী জমাট গন্ধ রে বাবা!
    খুব তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসি। সামনেই দেখি পানি-বাতাসা। এটা যদিও ভালো পানি-বাতাসা খাবার জায়গা নয়, তবুও আমি এগিয়ে গেলাম। পানি-বাতাসা বিক্রি করছে একটা ছোট্টখাট্টো দেহাতি মানুষ। এ তো কোনোমতেই গোরাসাহেব হতে পারে না!
    আমি বললাম, “চট করে পানি-বাতাসা দাও তো।”
    সে একগাল হেসে বলল, “দেব বলেই তো দাঁড়িয়ে আছি।”

    —আচ্ছা ভাইসাব, এখানে মানে ওই যে, মানে ভূত-টুত আছে, লোকে যে বলে?
    —কী বলব মেমসাহেব, কেন যে লোকে ভূত ভূত করে চেঁচায়, আজ অবধি বুঝতেই পারলাম না। এই তো সেদিন কী দাঙ্গাটাই না বাধল! সন্ধের মুখে উট্রামসাহেব বললেন, ফিরদৌস একটা ড্রিঙ্ক বানিয়ে দাও। বানিয়ে দিলাম। আমি উট্রামসাহেবের মিশিবাবাকে খাওয়াচ্ছিলাম। সাহেব আবার বললেন, ফিরদৌস, তামাক সাজো। হঠাৎ একটা গুলি এসে সাহেবের মাথা এফোঁড় ওফোঁড় করে দিল। আমি মিশিবাবাকে নিয়ে পেছনের বাগান দিয়ে দে দৌড় দে দৌড়। তারপর থেকে তো দিব্যি আছি। মিশিবাবাও আছে। একটা জোয়ান ছেলে একদিন বেশ রাতে বাংলোর বারান্দায় বসেছিল একাএকা। উট্রামসাহেব আর আরও ক-জন সাহেব বেরিয়ে এলেন। ছেলেটা দেখি...

    —ও মেমসাহেব, পানি-বাতাসা নিন, আরে আরে আরে! ভাগতে কিউ হ্যাঁয়?


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৮ জুলাই ২০২০ | ৩২০৮ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    আগ - Soudamini Shampa
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Nirmalya Bachhar | ১৮ জুলাই ২০২০ ১৩:৩৮95283
  • ফয়েজ সায়েবের গানটা জবরদস্ত। আমি তো মাঝে মাঝেই লুপে শুনি। 

    আর ফুলের তলে বুলবুলছানার গল্পটা উপেন্দ্রকিশোরে পড়েছিলাম। 

    বেশ লাগল পড়তে। 

  • | ১৮ জুলাই ২০২০ ১৪:৫৬95289
  • এ পর্বটা মনে হয় একটু তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল।
  • Amit | 203.***.*** | ২০ জুলাই ২০২০ ০৬:০৭95346
  • এতো প্রাণবন্ত সব বর্ণনা পড়ে মুজতবা আলি সাহেবের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে. অসাধারণ. এই পর্বটা আরো হলে বেশি ভালো লাগতো.
  • গবু | 2402:3a80:aa6:f646:33bd:285d:24e3:***:*** | ২১ জুলাই ২০২০ ০০:০৯95383
  • একদম যাকে বলে দিল তরর হয়ে গেল!

    লাজওয়াব! নাজুক!
  • i | 59.102.***.*** | ২১ জুলাই ২০২০ ১৩:৫৫95401
  • এমন লেখার সঙ্গে ছবির দরকারই হয় না; পড়তে পড়তে এমনকি স্বাদ, গন্ধ পাচ্ছি।
    অসাধারণ।
  • এসদে | 2409:4060:20d:6ca2:14b:6bec:2cb9:***:*** | ২১ জুলাই ২০২০ ১৮:৫৪95406
  • আমিনাবাদে গেলেন আর টুন্ডার কাবাবের গল্প শোনালেন না? অথবা চওকের পুরোনো টুন্ডা? নেহারি পরোটার ব্রেকফাস্ট? গলাওটি কাবাব আর শিরমাল? 

  • এসদে | 2409:4060:20d:6ca2:14b:6bec:2cb9:***:*** | ২১ জুলাই ২০২০ ১৮:৫৯95407
  • এই নিমিস কাশীতে গেলে হয় মালাইয়ে, স্বর্গীয় জিনিষ।

  • de | 59.185.***.*** | ২২ জুলাই ২০২০ ১৪:৪২95423
  • गुलों में रंग भरे, बाद-ए-नौबहार चले

    चले भी आओ कि गुलशन का कारोबार चले

    क़फ़स उदास है यारों, सबा से कुछ तो कहो

    कहीं तो बहर-ए-ख़ुदा आज ज़िक्र-ए-यार चले

    चले भी आओ...

    जो हमपे गुज़री सो गुज़री मगर शब-ए-हिज्राँ

    हमारे अश्क तेरे आक़बत सँवार चले

    चले भी आओ...

    कभी तो सुबह तेरे कुंज-ए-लब्ज़ हो आग़ाज़

    कभी तो शब सर-ए-काकुल से मुश्क-ए-बार चले

    चले भी आओ...

    मक़ाम 'फैज़' कोई राह में जचा ही नहीं

    जो कू-ए-यार से निकले तो सू-ए-दार चले

    चले भी आओ...

  • ডা রুমী আলম, মিরপুর, ঢাকা। | 27.13.***.*** | ২৩ জুলাই ২০২০ ২৩:৪৯95451
  • খাবারের মাঝে ভুতের ছায়া। জাফরানি গন্ধে ওঠে আসে হারানো ইতিহাস। অনেক ধন্যবাদ।             

  • Tim | 174.102.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০২০ ০৬:২২96027
  • একটু রয়ে সয়ে পড়ছি, সবে দ্বিতীয় পর্ব। কোন কোন পর্ব ছোট হলেও ক্ষতি নেই। মেহদি হাসানের গলা শোনা গেল "কফস উদাস হ্যায়..." পড়তে পড়তে। একটা জিনিস খেয়াল করছি, এখনও পর্যন্ত দুটো পর্বেই এটা হলো, পড়লাম, আর খুব ভালো কাবাবের মত উবে গেল। আগের পর্বে ঠিক কী পড়েছিলাম মনে নেই শুধু পড়ার একটা আবছামত স্মৃতি আছে। রান্না যে ভালো হচ্ছে এতেই মালুম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় প্রতিক্রিয়া দিন