দ্বিতীয় ধাপ। যাত্রা শুরু
রাতের গভীরতা আলমুস্তাফার গলায় জমাট বাঁধে। নৈঃশব্দ্যের মাঝখানে তাঁর ধীরলয়ে উচ্চারণ,
"মৌমাছির কাছে একটি ফুল হল জীবনের ঝর্না
আর ফুলের কাছে মৌমাছি, ভালোবাসার দূত
ফুল আর মৌমাছি এদের এই দেওয়া নেওয়া বড় মধুর
জীবনে এর বড় প্রয়োজন, এবং প্রয়োজনের ঊর্ধ্বে অতীন্দ্রিয় আনন্দময়!”
আলমিত্রা বলে ওঠে, বড় সুন্দর বললেন আপনি। আপনার আখ্যানের সঙ্গে এর হয়তো কোন যোগ আছে! আলমুস্তাফা বলতে থাকেন, রাত অনেক হল, বিশ্রাম নেবার আগে, আগামী দিন শুরু করার আগে খানিকটা বলি তাহলে।
দাউদের পুত্র সুলেইমানের কাছে চলল রানি বিলকিস! হ্যাঁ, এমনি ভাবেই লেখা আছে কোরানে। এই আখ্যান হিব্রু বাইবেল, খ্রিস্টীয় গাথা ও কোরানে এক গোলকধাঁধাঁ তৈরি করে রেখেছে। ইসরায়েল হল এই রহস্যের আঁতুড়ঘর। সূর্য মন্দিরে পুজো সাঙ্গ হলে রানির যাত্রা শুরু হল। উটের পিঠে চাপানো হল পথ চলার রসদ। কম দিন তো নয়! দীর্ঘপথ। এ যাত্রা তো নিছক যাত্রা নয়, এ হল অভিযান। এক দাপুটে সাহসী নারীর অভিযান। এ পথের কষ্ট সে নিজেই বেছে নিয়েছে। দারুণ দহন বেলা। মাথার ওপরে খর সূর্য। মরুঝড়। রুখু বাতাস! জলকষ্ট। মরুদস্যু। এতো সব উপেক্ষা করে এক দুঃসাহসিক অভিযানে বেরিয়েছে রানি, মরুভূমির পথহীন পথে।
প্রবল তপ্ত বালু ঝড় সিমুম, ভয়ঙ্কর তার তাণ্ডব সেই তাণ্ডবও সয়ে নিয়েছে রানি চিতা বুনো শেয়াল হায়নারা ওঁত পেতে থাকে বিষে হিশহিশিয়ে ওঠে কেউটে, মরু সাপ আর কাঁকড়া বিছে তবু চলেছে রানি, বিপদ মাথায় নিয়ে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে তার চেয়ে বড় কথা আলোকিত হবার আগে যাচাই করে নেওয়া তাহলে কি রানির অহমিকা ছিল? হয়তো ছিল।যাত্রাপথে কখনো কখনো মরূদ্যানে মিলে যেত বহু আকাঙ্ক্ষিত ছায়া, শীতল জল, তাজা খেজুর নয়তো কোন গ্রাম বা শহরের প্রান্তে অথবা মরুভূমির বালিতে তাঁবু ফেলা হত।
রানি চলেছে দীর্ঘ অভিযানে, সঙ্গে যাচ্ছে কী? উটের পিঠে বোঝাই হয়ে আছে থরে থরে সোনার ইট। শেবার মাটির নিচে তাল তাল সোনা শেবা শহরের সোনার কথা সলোমনের কানেও পৌঁছেছিল। মৃত্তিকা আরও সম্পদ দিয়েছিল রানির হাতে হিরে চুনি পান্না নীলা আর হলুদ সবুজ লাল নীল সাদা ছাই রঙা অ্যাগেট পাথর মসৃণ করে কাটা, পালিশ করা আরব আকাশের রোদ্দুরে ঝিকমিকিয়ে উঠত তাদের রঙ সেই সব দুর্মূল্য রত্নের বস্তাও চেপেছে উটের পিঠে আর কী কী বইছে মরুজাহাজের দল? বলতে পারো আলমিত্রা?
— সুগন্ধি, তাই হবে আশা করছি।
— হ্যাঁ ঠিক, সুগন্ধি যার গন্ধে আকুল হয়ে ওঠে সমুদ্রবাতাস। গাছের চোখের জল জমাট বেঁধে যায় সুগন্ধি রজনে গোছা গোছা মশলা, ফ্রাঙ্কইন্সেন্স সমেত বিপুল পরিমাণ সুরভি তখন মশলা বা সুগন্ধির দাম সোনার চেয়ে কিছু কম ছিল না এই সুগন্ধি আর মশলার ওপরে কব্জা কাবু করার তাগিদে কত নতুন নতুন পথের আবিষ্কারে মেতেছিল দুনিয়া। আর আছে আরবি ভেষজ প্রলেপ। এই প্রলেপের অনেক গুণ, ব্যথা যন্ত্রণা কমিয়ে দেয়, হজম ভালো হয়, ঘুম ভালো হয়, খিদে হয় উদ্বেগ শান্ত হয় এই প্রলেপের নিশ্চয়ই খুব সমাদর হবে জেরুজালেমে এ শেবার একেবারে নিজস্ব সম্পদ।
সোনা সুগন্ধি জড়িবুটি রত্নসম্ভার! শেবার রানি চলেছে জেরুজালেম। যেতে যেতে রানি কী করছে? মনেমনে মহড়া দিচ্ছে প্রশ্নবাণগুলোকে নেড়েচেড়ে ধার দিয়ে রাখছে মনের সিন্দুকে নিজেকে তৈরি করতে করতে পথ চলছে রানি বিপুলকে যাচাই করতে গেলে তার সমকক্ষ হতে হবে সমকক্ষ না হলে পরখ হবে কেমন করে? তা না হলে সেটা হয়ে উঠবে অক্ষমের আর্তনাদ! রানি তো সেই দলে পড়ে না সেই কোন কাল থেকে হেঁয়ালির মধ্যে জ্ঞান আর মেধা যাচাই এর খেলা শুরু হয়েছে উদ্ভট শ্লোক! তার ভেতর থেকে অর্থ খুঁজে বের করে আনো রানি নিঃসীম মরুভূমির বুকে একাকী চলতে চলতে নিজেকে তৈরি করছে এক মনে আর ভাবছে রাজা তার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন তো? রাজা তার হাত থেকে উপহার নেবেন তো?মরুজাহাজের আঁকাবাঁকা এক দীর্ঘ সারি মরুভূমি ভেঙে ভেঙে চলেছে তারা নিজেকেও কি ভেঙে ভেঙে চলেছে রানি? এই যাত্রা পথে কত অনিশ্চিয়তা ও বিপদ মাথায় নিয়ে চলেছে সে! প্রতিমুহূর্তেই নিজেকে নানাভাবে নতুনরূপে দেখছে সে! বন্ধু দেশের পাশ দিয়ে, শত্রু দেশের সীমানা দিয়ে আগে থেকেই অনেক প্রস্তুতি নিতে হয় সশস্ত্র কড়া নজরদারি।
এক কুঁজওয়ালা উট জল না খেয়েই অনেক দূর দৌড়তে পারে। শত্রুদেশ যাতে কোন বিপদ না ডেকে আনতে পারে তাই রানি এবং তার সঙ্গের মূল্যবান সম্পদ ওই উটের পিঠে এক দল বাছাই সৈন্যের সঙ্গে শত্রুর নাগালের বাইরে চলে যেত দ্রুত। জেরুজালেম পৌছনোর আগে রানি শেবার ক্যারাভান বহুবার তাঁবু ফেলেছে চলার পথে! প্রায় পঁচাত্তর দিন লেগেছিল গন্তব্যে পৌছতে কুড়ি পঁচিশ মাইল চলার পর থামার দরকার হয় — উটদেরও বিশ্রাম দরকার তাদেরও রোগ ব্যাধি আছে।
রানি বসে আছেন স্বচ্ছ তন্তুর পর্দা ঢাকা চৌখুপির মধ্যে উটের পিঠে, মাটি থেকে উঁচুতে। কখনো পর্দা খানি একটু ফাঁক করে বাইরেটা দেখে নেয় চকিতে জেরুজালেম কত দূর? শুধু চোখে পড়ে ধুধু বালু, ঝলসানো খর পথে একাকী কাঁটা গাছ, বালিয়াড়ির ঢালে অস্তায়মান সূর্য, কখনো বা মাথার ওপরে অজস্র নক্ষত্রের জলসা, ওই ওই এক খানা উল্কা খসে গেল!
— আলমুস্তাফা, রানি কেমন দেখতে ছিল? সুন্দর? আলমিত্রা জিগ্যেস করে।
— রানি বড় সুন্দর! তুমি কাকে সুন্দর বল আলমিত্রা? “সৌন্দর্য হল অনন্তের মুকুর অনন্তকে আরশি তে ধরতে পারো আলমিত্রা? পারো না কারণ তুমিই অনন্ত, তুমিই আয়না।”
— আপনার কথা বড় হেঁয়ালির মত শোনায়, আলমুস্তাফা!
— কোনটাই হেঁয়ালি নয়- মানুষকে সুন্দর করে তার মেধা, তার মনন, তার বুদ্ধি, তার উজ্জ্বল অন্তরাত্মা। তার তো সবই ছিল, তাই সে সুন্দর! তবে হ্যাঁ, তুমি যা জানতে চাইছ তাও ছিল বৈকি! সলোমন নাকি তাকে সেকারণেও দেখতে চেয়েছিলেন। ওষধি জড়িবুটির দেশ শেবা, কাজেই রানির সঙ্গে ছিল নানান রূপটান অঙ্গলেপ দাবদাহ ধুলো মরুভূমির রুক্ষতা থেকে যা রানির ত্বককে রাখত নরম, সিক্ত, মসৃণ। গিরিমাটি জলে ভিজিয়ে তুলি দিয়ে আঁকত ঠোঁট, দুই চিবুকে আলতো ছোঁয়া কাঠি দিয়ে চোখের পাতায় ও নিচে লাগাত কাজল চোখের কোণা থেকে সেই টানা কাজলরেখায় লেগে থাকত তার দুটি একটি চূর্ণ কুন্তল ভুরু দুটিও তুলিতে আঁকা। এখানেই শেষ নয়, সুগন্ধিদেশের রানি সে, মূল্যবান পাথর আর সোনার দেশের রানি সে — তার সারা শরীর জুড়ে সুগন্ধের হিল্লোল আর অলঙ্কারের জৌলুস! রেশম বস্ত্রের কোমলতা।
— আলমিত্রা, রাত গভীর হয়েছে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস শুধু শোনা যাচ্ছে চল, বিশ্রাম নেবার আগে তোমাকে একটু ঘুরপথে ছেড়ে দিই।
— ঘুরপথে ছেড়ে দিলে আমি ফিরে আসব কেমন করে আলমুস্তাফা?
— ঠিক ফিরবে। তবে শোনো, এক দীর্ঘ পথের শেষে অপেক্ষা করছে এক আলোর শিখা সেই আলোর সন্ধানে ঘর ছাড়ল, দেশ ছাড়ল, রাজত্ব ছাড়ল শেবার রানি, এ যাত্রা এক চিরকালের যাত্রা- তিমিরবিনাশী আলোর সন্ধানে মানুষের এই যাত্রা অনন্ত, এর শেষ নেই। রানির যাত্রা, সেই আলোক সন্ধানী অভিযান। মৌলানা রুমি কী বলেন জানো আলমিত্রা?
— রুমি? আনাতোলিয়ার সেই পণ্ডিত যিনি অহং ধুয়ে ধুয়ে মরমিয়া হয়েছিলেন,? কী বলেছেন তিনি, আলমুস্তাফা?
— রুমি লিখছেন, শেবার রানির রাতের আঁধারে ভাবতে বসে মনে পড়ে কবে যেন সে একবার অগাধ ধনরাশি পাঠিয়েছিল রাজা সলোমনকে যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন! বস্তুপুঞ্জ জড়ো করা এই সম্মান তিনি চান নি তাই এবারে রানি নিজে চলেছে কারণ বণিকনেতা তামরিনের মুখে সবকথা শুনে সলোমনের আকর্ষণ সে ত্যাগ করতে পারেনি! নদী যেমন সাগরের দিকে সব বাধা চুরমার করে এগিয়ে যায়, আগুনে যেমন পতঙ্গ পুড়ে মরে তেমন ভাবে এগিয়ে চলছে সে—
একদিন সকাল হলে সবাই দেখল সারা পথ জুড়ে সোনালি রেণু যেদিকে তাকাও শুধু সোনালি রেণু সূর্যের আলোয় ঝলমল করছে। “জেরুজালেম এসে গেল রানি” পাহারাদার সেনারা হেঁকে বলে। “পথে এসব কী ছড়িয়ে আছে? দেখতো ওগুলো কি বালি?” রানি উটের পিঠ থেকে ঘেরাটোপের মধ্যে বসে বলে ওঠে।
সোনার দেশের লোক তারা তাদের জন্মগত জহুরিচোখ। “না, রানি, বালি নয়! এতো সোনার ধুলো যতদূর চোখ যায় সোনার ধুলো দেখতে পাই!” সেনারা জবাব দেয়! রানি শিহরিত হয়!সোনার ধুলো? সলোমনের দেশের ধুলো সোনার? ধুলো হয়ে পায়েপায়ে লুটিয়ে থাকে মহার্ঘ সোনা? এই সুদীর্ঘ পথে, এতদিন ধরে চল্লিশটা উটের পিঠে তাল তাল সোনা মানে ধুলো বয়ে এনেছে সে? বুক থেকে তীব্র হাহাকার উঠে আসে! ধুলো বয়ে নিয়ে চলেছি তাঁকে দেব বলে?
“এই তো তোমার আলোকধেনু, সূর্য তারা দলে দলে
কোথায় বসে বাজাও বেণু, চরাও মহাগগনতলে”
২
এদিকে তার কাফিলা এসে পড়ল একটা মস্ত শোরগোলের জায়গায়— দু-দুটি বাণিজ্য পথের সংযোগস্থল, হই হই ব্যাপার! সরাই রয়েছে, খাবারদাবার পাওয়া যায়। সারি সারি ক্যারাভান উট, ঘোড়া, গাধা ভিনদেশি বণিক গজল্লা হাঁকডাক — রানির এতো বড় কাফিলা দেখে সবাই উৎসুক! কে? কে চলেছেন? কোথায়? কোথায়? কী ব্যাপার? কী ব্যাপার? কেন? কেন? এতো দূর পথ চলেছেন? সঙ্গে কী নিয়ে যাচ্ছেন ? এখান থেকে, এই বাণিজ্যপথ থেকে রাজা সলোমনের প্রচুর রাজস্ব আসে সড়কপথে বাণিজ্যের জন্য শেবার বণিকেরাও এই পথের ওপর খুব নির্ভরশীল, সফল বাণিজ্য মানে রাজকোষে অর্থাগম।
এখন বিকেলের পড়ন্ত আলোয় তার ঘেরাটোপের ভেতর থেকে জায়গাটা দেখে নেবার চেষ্টা করে রানি। রানি যে পথ অতিক্রম করছে তা অজানা পথ নয়, রেশমপথের মতই সুগন্ধিপথও খুব বিখ্যাত ছিল, জানো আলমিত্রা। তামরিন, সে কেবল রানির বনিক সমাজের নেতাই নয়, সে রানির দূতও বটে! বহুদিন পর পর সে যখন দেশে ফিরে আসে রানি তার কাছে দুনিয়ার খবর পায়।
এবারে সলোমনের কথা বলার পর সে আরো কিছু কথা বলেছিল রাজা সলোমনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে তামরিনের সে রানিকে বলেছিল রাজা সলোমন বানিজ্যপোত সাজাচ্ছেন লোহিত সাগরে ভাসবে রাজার সওদাগরি তরী। সলোমনের সঙ্গে আছে টায়ারের রাজা হিরাম। এদিকে শেবার ঘরে অর্থ আসে বাণিজ্য থেকেই। রানির মনের কোণে উঁকি দেয় এক টুকরো চিন্তার মেঘ, এর আগে রাজা তার উপঢৌকন ফিরিয়ে দিয়েছেন দূরত্ব, ভুল বোঝাবুঝি বাড়াতেই থেকেছে। সামনাসামনি কথা বলার থেকে আরামের আর আশ্বাসের কিছু আর হয় না, তাই রানি সরাসরি কথা বলতে চায়, কোন দূতিয়ালি নয়। এইতো সুযোগ এসেছে, রানি চায় না তাদের ব্যাবসা বাণিজ্যে কোনরকম বাধা বা লোকসান আসুক।
— বুঝলে আলমিত্রা, এক দিক থেকে বলতে পারো রানির এই জেরুজালেম যাত্রা বাণিজ্যিক লেনদেনের এক বৈঠক দুই রাজারানির মধ্যে দেনা পাওনার কথা! ওই মৌমাছি আর ফুলের দেওয়া নেওয়া কেজো কথার আকাশে কখন রামধনু উঠে আসে, কেউ আগে থেকে জানতে পারেনা! আজ বাদলার দিন বৃষ্টি ঝাপট মারছে দেখ কেমন! সামনের পথ কিছুই দেখা যাচ্ছেনা জলধারায় সব অস্পষ্ট সদর দরজা বন্ধ করে দাও আলমিত্রা।
রানি ওদিকে তার তাঁবু গুটিয়ে আবার যাত্রা শুরু করেছে। ভাবছে তামরিন তাকে আর কী কী বলেছিল? আরো কয়েকটা কথা মনে করে দেখি একবার। শরত কালের শেষে হিম হিম মরুসন্ধে। তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে দ্রুত। প্রেমের বন্যায় সব ছেড়ে কাঙালের মত যখন মানুষ বেরিয়ে পড়ে পথে, প্রেমিকের উদ্দেশ্যে। সে রকম কি মনে হচ্ছে রানিকে? পিছনে পড়ে আছে তার যত্নে গুছনো রাজ্যপাটতার প্রাসাদ তার প্রজা সে চলেছে একা।
“একা?
একা মানে কী?
এসেছ একা
ফিরে যাবেও একা
যেতে যেতে মিশে যাবে ঘোর কুয়াশায়"
চমৎকার। খুব আগ্রহ ভরে লেখাটি পড়ি
বেশ
অসাধারন শব্দের ছবি। অনন্য বর্ননা ।
অনেক বার ভাববার চেষ্টা করেছি কোন ভাষায় শিবার রানি বাক্যালাপ করলেন রাজা সলোমনের সংগে!
খুব ভালো লাগলো।