এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • মধ্যপ্রাচ্য! 

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২০ নভেম্বর ২০২৩ | ৯১৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • ঠিক এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে যা হচ্ছে তা কোন সুস্থ মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় মানুষ মেনে নিচ্ছে। মানুষের মেনে নেওয়ার ক্ষমতা দেখে অবাক হতে হয়। পুরো দুনিয়া জুড়ে যে ইসলামোফোবিয়া সেই থেকে লাইন টেনে এখানে সরাসরি ইজরাইলের পক্ষ নেওয়া হচ্ছে। ইজরাইলের পক্ষ নেওয়ার মত যুক্তি গুলো আমি খুব করে বুঝার চেষ্টা করেছি। এক নাম্বার সমস্যা হামাস। মানুষ হামাসকে আর দশটা ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনের সাথে গুলিয়ে ফেলছে। আইএস, আল কায়দা আর হামাস একই জিনিস বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। সেই একই সূত্রে বর্তমান হামাসের যে আক্রমণ, হুট করেই বেসামরিক মানুষ হত্যা এইটাকে প্রমাণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এর ফল স্বরূপ ইজরাইল পুরো ফিলিস্তিন জুড়ে যা করছে সব বৈধ বলে রায় দিয়ে দিচ্ছে। পশ্চিম তীর, যেখানে হামাসের নাম গন্ধ নাই সেখানেও যে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে তার বৈধতাও দিচ্ছে সবাই, যারা ইজরাইল আত্মরক্ষা করছে বলে গলা ফাটাচ্ছে।

    ব্যাপারটা কেমন একটা উদাহরণ দিলে ভাল মত বুঝা যাবে। ধরুন গত বিএনপি আমলের কথা। সারা দেশে বাংলা ভাইয়েরা, জেএমবি বোমা মারল। জেএমবির ঘাঁটি ছিল রাজশাহী অঞ্চল, বাঘমারা। এখন বাংলা ভাইকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বা জেএমবিকে ধ্বংস করার জন্য যদি সরকার পুরো রাজশাহী জুড়ে বোমা ফেলা শুরু করত আকাশ থেকে, ব্যাপারটা কেমন হত? আরেকটা উদাহরণ দেই। আমাদের বাঙালীদের সাথে চট্টগ্রামের পাহাড়িদের সাথে লেগে থাকেই প্রায়ই। একদিন পাহাড়িরা দিল একটা আকাম করে। ফলে আমাদের রাষ্ট্র সমস্ত পাহাড়িদের উপরে মিগ ২৯ দিয়ে বম্বিং শুরু করে দিল! উদাহরণটা বেশি সরলীকরণ হয়ে গেছে স্বীকার করছি। কিন্তু ব্যাপারটা অনেকটা এমনই। হামাস হুট করেই ইজরাইলে আক্রমণ করে যা করছে তা অবশ্যই ঘৃণ্য। আমি হামাসের নৈতিক আদর্শ, হামাসের কেন জন্ম হল এই সব প্রশ্ন দূরে রেখেই বলছি। হামাস যা করছে তা মেনে নেওয়ার মত না। বাড়ি বাড়ি ঢুকে সাধারণ মানুষ মেরে কী প্রমাণ করতে চেয়েছে তারা আমি জানি না। আমি জানি তা মোটেও সুস্থ কিছু না। কিন্তু এখন তার জবাব দিতে গিয়ে ইজরাইল যা করছে? তাকে কী দিয়ে ব্যাখ্যা করবেন? সরাসরি মানবাধিকারের সমস্ত নিয়ম কানুন ভঙ্গ করছে, যুদ্ধাপরাধ করছে ঘোষণা দিয়ে! প্রচণ্ড মুসলিম বিদ্বেষ থেকে মানুষ ফিলিস্তিনকে বাদ দিয়ে ইজরাইলকে সমর্থন দিচ্ছে। অথচ এই ক্ষেত্রে শুধু মানুষ হলেই যথেষ্ট ছিল ফিলিস্তিনদেরকে সমর্থন দেওয়ার জন্য।

    ইজরাইল ফিলিস্তিনির ইতিহাস আপনার না জানলেও চলবে। কার দোষ, কার জমি এই সব নিয়ে আলাপ করতে গেলে জীবনেও সমাধান আসবে না। সমাধানের জন্য দরকার দুই পক্ষের সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ। আমি মানুষই দেখি না, সুস্থ মাথার মানুষ তো দূরের জিনিস মনে হয় এখন। নমনীয় হতে হবে, ছাড় দিতে হবে দীর্ঘ, স্থায়ী শান্তির জন্য। অথচ এখন পর্যন্ত যতজনের আলাপ শুনলাম, দেখলাম, পড়লাম, কেউই সেই পথে যেতে রাজি না। একটা বড় যুদ্ধ হোক, এসপারওসপার করে ফেলব এবার এই হচ্ছে মনোভাব সবার। কোমরে কার কতখানি জোর তা সবাই জানে কিন্তু আমি নামলে অমুক অমুক আমার সাথে থাকবে না? এই জোরেই গলা ফাটাচ্ছে। মরছে সাধারণ মানুষ, মরছে শিশু, নারী!

    একটু খেয়াল করলে দেখবেন ইউরোপের বেশির ভাগ দেশই ইজরাইলকে সমর্থন দিচ্ছে। জার্মানি বিশেষ করে খুব তৎপর এই ব্যাপারে। কেন? উত্তরটা সহজ কিন্তু কুৎসিত। এক হচ্ছে জার্মানি ইহুদি গণহত্যার দায় অস্বীকার করতে পারে না। তাই ছলে বলে কৌশলে এখন ইহুদিদের পক্ষেই থাকে। আর হচ্ছে পুরো ইউরোপও অপরাধ বোধে ভুগে, গিল্টি থেকে ওরা বাধ্য হয় ইহুদিদের সমর্থন দিতে। ইহুদিদের সাথে মুসলমানদের দ্বন্দ্ব হচ্ছে এই সেদিনের। কিন্তু শতাব্দী থেকে শতাব্দী ইহুদিদেরকে ক্রিশ্চিয়ানিটির নামে অত্যাচার করে গেছে ইউরোপ। অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক এক জায়গায় বলছে পুরো মধ্যযুগে ইহুদিদের অবস্থা এমন ছিল যে তাদেরকে মানুষ বলে মনে করত না। এই কারণেই তিনি বলছেন ওই অন্ধাকার সময়ে শেক্সপিয়ার যখন লেখে ইহুদির রক্তও লাল তখন ওই একটা লাইন পুরো শেক্সপিয়রের সমস্ত লেখার মধ্যে সবচেয়ে সাহসী কথা হয়ে উঠে। ইহুদিদের রক্তও লাল এইটা বলাও কত সাহসী! কত চমৎকার ছিল ইহুদিদের অবস্থা।
    মজার ব্যাপার হচ্ছে ইহুদিরা এখন হোলোকাস্ট ভিক্টিম কার্ড খেলছে! বারবারে হোলোকাস্টের প্রসঙ্গ টেনে আনছে, যদিও এখানে গণহত্যাটা তারাই চালাচ্ছে গাজায়! ইউভ্যাল নোয়া হারিরির মত মানুষও প্রতিটা সাক্ষাৎকারেই এই প্রসঙ্গ টেনে আনছে এবং আত্মরক্ষার গল্প বলে গাজায় যা হচ্ছে সব কিছুর বৈধতা দিয়ে দিচ্ছে। এখন গাজায় একটা প্রাণ পর্যন্ত টিকে থাকবে কি না তাদের এই ঢালাও বোমাবর্ষণে তা তাদের বিবেচ্য না। আশ্চর্য কাণ্ড! সবাই তা মেনে নিয়ে দেখছে, কেউ শক্ত হাতে প্রতিরোধের কথা ভাবছে না।

    ইহুদিদের সাথে ইউরোপ তথা খ্রিস্টানদের দ্বন্দ্ব কোথায়? যিশুর মৃত্যু হচ্ছে এই দ্বন্দ্বের শুরু। মিথ আছে যেদিন যিশুকে ক্রুশে চড়ানো হবে তখন রাজা বলছিল একে ক্রুশে দিয়ে মারার কী আছে? জনতা মানে ইহুদিরা চিৎকার করে বলেছিল না একে ক্রুশে দিতেই হবে। রাজা বলছিল তাহলে এর রক্তের দায় আমি নিব না। ইহুদিরা বলেছিল আমরা ওর রক্তের দায় নিলাম, আমরা এবং আমাদের পরবর্তী সকল প্রজন্ম এই দায় নিবে। বলা হয়ে থাকে সেই থেকে অভিশপ্ত ইহুদিরা, যারা কোনদিন এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পায় নাই। যদিও বর্তমান সময়ে ইহুদিদের দেখে তাদেরকে অভিশপ্ত বলার মত কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। সেখান থেকেই শুরু, খ্রিস্টানরা এই জন্য ইহুদিদের দায়ী করেছে একটা সময় পর্যন্ত এবং যতখানি পারছে তাদের জীবনকে নরক তুল্য করে রেখেছিল।

    অন্য দিকে মুসলিমদের অবস্থা চিন্তা করে দেখেন। মুসলিম ব্রাদারহুড মুসলিম উম্মাহ এগুলা আমার কাছে ভুয়া কথা মনে হয়। কোন কার্যকর ব্যবস্থা এদের দ্বারা আজ পর্যন্ত নেওয়া হয় নাই। মুসলিমরা বর্তমান সময়ে ভাগ্য বিতাড়িত জাতি বলে মনে হয়। কেন? ইয়েমেনে মানুষ মেরে ফিনিশ করে দিচ্ছে অথচ কোথাও কোন টু শব্দ হয়নি। না মুসলিম বিশ্বে না মানবতার, মানবধিকারের আঁতুড়ঘর ইউরোপের কোথাও কেউ কোন প্রতিবাদ করছে, কেউ বলতে পারবে না এই মানুষ মারার জন্য কোন একটা উন্নত দেশে রোড মার্চ হইছে, মানুষ জমায়েত হয়েছে, বিক্ষোভ হয়েছে। এর থেকে সামান্য ঘটনায় সিডনি থেকে বার্লিন নিউ ইয়র্ক থেকে প্যারিসে মিছিল শুরু হয় যেতে দেখছি আমরা। শুধু ইয়েমেন না, সিরিয়ায় যা হয়েছে তার প্রতিবাদই কয় জায়গায় কে করেছে? কেউ না। মুসলিমরাও যখন দেখে ঘাতক এখানে মুসলিম তখন তারাও চুপ! পশ্চিমা বিশ্ব তো বটেই, ডাবল স্টান্ডার্ড দেখাইতে মুসলিমরাও পিছিয়ে নেই। মুসলিমরা যখন এক সাথে একমাত্র ইহুদিদের আকামের সময় চিৎকার করে তখন কেউ কেউ এর ভিতরে অন্য কিছু খুঁজে পায়। কেউ কেউ বলে মুসলিমদের রক্তের ভিতরে জিনের ভিতরে ইহুদি বিদ্বেষ ঢুকে আছে, তখন আসলে কিছু বলার থাকে না। এই বলার অধিকার সম্ভবত মুসলিমরাই দিচ্ছে।

    যাই হোক, আলাপ অন্যদিকে চলে গেছে। কথা হচ্ছিল বর্তমান সময় নিয়ে। এই সময়, এই অস্থির সময়ে আমি অপেক্ষা করছি একটা বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরের, যিনি শান্তির কথা বলবেন। এখন পর্যন্ত যত শক্তিশালী গলা শোনা গেছে সবই যুদ্ধের পক্ষের। এবার মধ্যপ্রাচ্য ঠাণ্ডা করে ছাড়বে এই হচ্ছে বক্তব্য। এই তরিকায় যে জীবনেও শান্তি আসবে না এইটা কে কাকে বুঝাবে? কালকে ইজরাইল আমেরিকার সমস্ত শক্তি নিয়ে নেমে যদি ফিলিস্তিন নামের যে অংশটুকু টিকে আছে তার পুরোটা যদি কব্জা করে নেয়, সকলকে ধরে ধরে যদি মেরে ফেলে তবুও কি শান্তি আসবে মধ্যপ্রাচ্যে? কিংবা নয়া যে জোট তৈরি হচ্ছে আরেকটা, রাশিয়া, চীন, ইরান মিশর, তুরস্ক সবাই মিলে যদি ইজরাইলটাকেই খেয়ে ফেলে তবুও শান্তি আসবে? সবাই জানে যে তা হবে না। বরং এই দ্বন্দ্ব, এই বিদ্বেষ আরও লম্বা হবে, আরও দীর্ঘ হবে অপেক্ষা শান্তির জন্য। আলোচনাই পারে একমাত্র শান্তির সুবাতাস আনতে। এর আগে আলোচনায় বসে দুই দেশের তিনজন শান্তিতে নোবেল জিতেছিল ( ইয়াসির আরাফাত, শিমন পেরেজ ও আইজাক রবিন), এবার মনে হচ্ছে হিংসার জন্য কোন পুরস্কার থাকলে তা জিতার জন্য সবাই এক পায়ে তৈরি।

    যে পক্ষেরই হোক, রক্ত যতদিন ঝরছে ততদিন শান্তির কোন সম্ভাবনা নাই। অন্যায় হোক, অনৈতিক হোক, যখন আমার বিরুদ্ধ মতের কারো রক্ত ঝরছে তখন আমি খুশি। এই ভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় না। ১৩শ শতকের ইরানের সাদী নামের এক কবি বনি আদাম নামে একটা কবিতা লেখছে। এইটা আবার নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘের দালানেও নাকি লেখা আছে। কী কবিতা? -

    "Human beings are members of a whole,
    in creation of one essence and soul.
    If one member is afflicted with pain,
    other members uneasy will remain.
    If you have no sympathy for human pain,
    the name of human you cannot retain."

    জাতিসংঘ লাইন গুলা শুধু দালানে না লিখে যদি অন্তরেরও ধারণ করত আর আমরা যদি বুঝতাম কথা গুলো! তাহলে কত সমসয়ারই না সমাধান হয়ে যেত!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ২০ নভেম্বর ২০২৩ | ৯১৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Q | 49.207.***.*** | ২০ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৭526300
  • ঠিক ঠিক ঠিক 
  • swapan kumar mondal | ২০ নভেম্বর ২০২৩ ২১:৪৯526310
  • ঠিক আর ভুল আপেক্ষিক যেমন সত্য বলে কিছু হয়না। কিন্তু হিংসার বদলে হিংসা কখনো শান্তি আনেনি সভ্যতার ইতিহাস তাই বলে।
  • guru | 103.2.***.*** | ২১ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৪526338
  • খুব ভালো লিখেছেন ভাই। আমার একটা জিনিস জানার ইচ্ছে আছে। বাংলাদেশের সেক্যুলার মুক্তমনা এরা কেকে কাদের পক্ষে? কেন? আমি এখানে অনেক তথাকথিত সেক্যুলার মুক্তমনাকে দেখেছি যারা ইসরায়েলকে ভীষণ ভাবে সাপোর্ট করাই শুধু নহে গাজাতে জেনোসাইডের পক্ষে।
  • sd | 2405:8100:8000:5ca1::266:***:*** | ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৫০526346
  • Many Palestinians in Gaza have protested against Hamas for its brutality and mismanagement of funds. Money meant to go to Palestinians instead goes to buying mansions for Hamas leaders or for buying missiles. Gazans protest by rioting in the streets and are gunned down unceremoniously. Their protests are barely covered by any media. No one cares. No one is interested in hearing about these courageous rebels that risk their lives to say they are sick of fighting. They want peace with Israel. They want a prosperous future for their children. But Hamas does not want peace. It wants to annihilate Israel and everyone in it. It is not ambiguous about this. This is clear to anyone who has witnessed any of the Al-Quds demonstrations that are held across the planet, even in Western countries, annually. Chanting hateful rhetoric in the streets is generally unacceptable in those Western countries, unless it is virulent antisemitism —that is ignored.
     
    -Yasmine Mohammed
  • গঙ্গারাম | 115.187.***.*** | ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:১০526348
  • @গুরু
    বাংলাদেশের প্রয়াত মুক্তমনা ব্লগার শহীদ অভিজিৎ রায় বরাবরই প্যালেস্টাইনের ওপর  ইজরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন। আরও অনেকেই হয়তো। বর্তমানে বাংলাদেশের ভিস্তিক ইজরায়েলের দালালি করছে কারণ তাঁদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে কোন ধারণা নেই, তারা ইজরায়েলের আগ্রাসনটাকে ইহুদি মুসলিম দ্বন্দ্ব ভাবছে। তবে সব প্রগতিশীল তা করছেন না, দুই বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি ঘোষিতভাবেই ইজরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধেই। 
  • কিংবদন্তি | ২২ নভেম্বর ২০২৩ ০১:০৬526363
  • গুরু, বাংলাদেশে ইজরাইলের পক্ষে একজনও বলার মত নাই। আমি অন্তত দেখি নাই। আমি যে টুকু লেখছি, মানে হুট করে হামাসের হামলা করাটা যে অন্যায় হয়েছে এইটাও কেউ বলছে না। রাষ্ট্রীয় ভাবে সরাসরি ইজরাইলকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। মজার বিষয়টা অন্য জায়গায়। আওয়ামীলীগ বিরোধী শক্তি এখন প্রবলভাবে আমেরিকা নির্ভর। বিএনপির নেতারা সব হা করে তাকিয়ে আছে আমেরিকার দিকে। রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে ভগবান ডেকে অবতার ডেকে বক্তব্য দিচ্ছে বিএনপির নেতারা। এখন এমন পরিস্থিতি ইজরাইলকে গালি দিয়ে এরা কেউই আমেরিকার বিরাগভাজন হতে চাচ্ছে না। যার কারণে এর আগে এর চেয়েও অল্প কাণ্ডে ঢাকার রাজপথ প্রকম্পিত করে ফেলেছে যারা তারা এখন পর্যন্ত ইজরাইলের বর্তমান আগ্রাসন নিয়ে টু শব্দ করেনি! এইটা যারা বাংলাদেশে নাই, বাংলাদেশ সম্পর্কে জানে না তেমন তাদেরকে বুঝানো মুশকিল। আমারা ছোট থেকেই দেখে আসছি এই চিত্র। প্রায়ই ইজরাইলের দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি দেয় এবং যখন জানে যে দেশে ইজরাইলের কোন দূতাবাস নাই তখন হতাশ হয়ে রাস্তা আটকিয়ে চিল্লাফাল্লা করে, কেউ কিচ্ছু বলে না, সরকার মৌন সমর্থন দেয়। এখন সরকার পতন আন্দোলনের জন্য, আমেরিকাকে পাশে পাওয়ার জন্য কোথাও কোন শব্দ নাই। আমাদের ছোট শহর শেরপুরে এতদিনে দুই চারটা মিছিল হয়ে যেত যদি অন্য সময় হত। একটা মানব বন্ধন পর্যন্ত দেখলাম না! এইটা একটা আশ্চর্য ঘটনা!  
  • Nabhajit | ২২ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৫526377
  • আপনার বক্তব্যের সাথে একমত নই। আপনি বলছেন - হামাস কে অন্য ইসলামি জঙ্গিদের সাথে তুলনা করা ঠিক নয়। কালকের খবর , হামাস হাসপাতালের ঘরে এ কে ৪৭ লুকিয়ে লড়াই করছে , সাধারন মানুষকে ঢাল বানিয়ে হাসপাতাল , স্কুল আর সাধারন বস্তির নীচে সুরঙ্গ বানিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির লড়াই চালাচ্ছে ইরানের মদতে। হামাসের স্কুলে বা শাখায় বাচ্চাদের শেখানো হয় একজন ইহুদীকে মেরে কিভাবে নিজের পরিবারকে গর্বিত করা যায়। হামাসের সাধারন পরিবার গর্ব অনুভব করে যদি তাদের সন্তান হিউম্যান বোম্ব হতে রাজী হয়। আমার মনে হয় না কোনো সত্যিকারের উদারপন্থী মুসলিম হামাস কে এরপরও বিপ্লবী ভাববে। 
    - ইসরাইল না কি পশ্চিম সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের মারছে! গত সপ্তাহে আমি ছিলাম জর্ডনের পূর্বে ডেড সী তে যা না কি প্যালেস্তাইনের/ ইসরাইলের পশ্চিম দিক। সম্পুর্ন শান্ত দেখেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে জেরিকো যেতে পারিনি কারন প্যালেস্টাইন ২০ জন ইসরাইলের লোক কে গুলি করে মেরেছিল। ২০ সংখ্যা টা এত কম যে রিপোর্ট হয় নি। 
    - এদিকে হিজবুল্লা উত্তরে হানা দিয়ে ইহুদি মারছে অকারনে, তার কোনো প্রতিফলন আপনার লেখায় দেখলাম না। 
    আপনি অনেক পুরোনো ইতিহাস লিখেছেন , ইহুদি দের দ্বারা যীশুর হত্যার গল্প কিন্তু তার অনেক পরের গল্প লেখেন নি । মুহাম্মদ রেইরুটে পড়তে এসে কিভাবে গুন্ডাবাহিনী দ্বারা দখল করেছিল লেবানন । তারপর প্রোটেকশন মানির নাম করে জিজিয়া কর চালু করে মধ্যপ্রাচ্য কে একরকম ইসলামিক কলোনী  তে রূপান্তরিত করে। 
    ইসলামোফোবিয়ার গল্প করছেন , কোথায় মুসলিম হত্যা হচ্ছে সেই গল্প করছেন কিন্তু সেমেটিসম নিয়ে আপনার মাথাব্যাথা নেই কেন। লেখার মধ্যে জোর করে প্রমান করতে চাইছেন আপনার উদারমন কিন্তু ঘুরে ফিরে মুসলিম ভাইদের প্রতি দরদ বেশী দেখাচ্ছেন । গাজা র ফিলিস্টিনিরা যখন মিশরের অধীনে ছিল তখনও অত্যচারিত ছিল। সারা দুনিয়ার মুসলিম ভাইদের তখন কোনো দরদ দেখিনি। 
    আমি গনহত্যার বিরোধী। সুদানে লেক মরছে রোজ , হয়ত হামাসের থেকেও অনেক বেশী কিন্তু কারো কোনো মাথাব্যাথা নেই কেন? কারন সে লড়াই ধর্মের নয়। রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ এখনো থামেনি কিন্তু আমরা হাঁপিয়ে পড়েছি ওই যুদ্ধ নিয়ে কারন কোনো ধর্মের লড়াই ছাড়া আর কোনো লড়াই য়ের প্রপাগান্ডা হয় না। 
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন