এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • গৃহবন্দীর টোটকাঃ হাজার বছরের প্রেমের কবিতা

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    বইপত্তর | ২৪ জুন ২০২৫ | ১৬১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • গৃহবন্দীর টোটকাঃ হাজার বছরের প্রেমের কবিতা
    মুখড়া                                                           
     ফের গা ম্যাজম্যাজ করছে? ভাইরাল ফিভার? নাকি যার- নাম –করতে- নেই সেই মহামারীর চতুর্থ ইনিংস?
    ঘরে সাতদিন ধরে স্বেচ্ছাবন্দী? 
     রোজ রোজ ওই এক বা দুটি চেহারা দেখে খিটখিটে হয়ে পড়েছেন? 
     
    নো আড্ডা! নো গসিপ! সিগ্রেটের আকাল!

    বুড়ো মানুষের কথাটা শুনুন, পড়ে ফেলুন “ হাজার বছরের প্রেমের কবিতা” – একটি আনকাট ডায়মন্ড। এতে আছে খ্রীষ্টপূর্ব ষোড়শ শতাব্দী থেকে খ্রীষ্টীয় সপ্তদশ শতাব্দী পর্য্যন্ত প্রেমের কবিতার সংগ্রহ। 
     
    কোন ভাষায় ? বাঙলা ভাষায়, কিন্তু সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, মিশরীয়, হিব্রু, চীনা, গ্রীক, লাতিন, আরবী , জাপানী এবং ফারসী থেকে। সম্পাদনা করেছেন অবন্তী সান্যাল ১৩৬৬ বঙ্গাব্দে , প্রচ্ছদ পূর্ণেন্দু পত্রী।
    আরে ঘাবড়ে যাবেন না , কোনো গবেষণা বা পন্ডিতি ফলাচ্ছি না ।
     এ একেবারে প্রেমের কবিতা। 
     
    নবরসের শ্রেষ্ঠ রস শৃঙ্গাররসের ছড়াছড়ি,মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে উপচে পড়ছে ।

    অনুবাদ করেছেন রবীন্দ্রনাথ, সত্যেন দত্ত, কাজী নজরুল ইসলাম, হেমেন রায় থেকে শুরু করে বিষ্ণু দে, মঙ্গলা চরণ চট্টো, সিদ্ধেশ্বর সেন, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী,  অবন্তী সান্যাল নিজে এবং কিছু অধ্যাপককুল ।
     সব অনুবাদ হয়তো তেমন উতরোয় নি , কিন্তু এহ বাহ্য।  
     
    আসল কথা সে যুগে আমরা ভিক্টোরীয় রুচির বেড়ি পরে প্রেম ও কামের মধ্যে পাঁচিল তুলে দিইনি, দেহের পাঁক ছাড়া প্রেমের পদ্ম ফোটে না বলেই মনে করা হত । তাই ঘরবন্দী অবস্থায় এই কবিতাগুলি যে শিলাজিতের কাজ করবে তার গ্যারান্টি দিচ্ছি ।

    বিশ্বাস হচ্ছে না ? আসুন, সংস্কৃত সাহিত্যে। 
    মূল ভাষাটি আপনিও জানেন না , আম্মো না । কিন্তু চৌরশতক, অমরুশতক এবং ভট্টিকাব্যের নাম তো সবারই জানা। নিন কিছু হাতে গরম উদাহরণ।

    প্রথম অন্তরা
    জানতেন কি সে যুগে মেয়েরা নিজেদের কামনার কথা অসংকোচে প্রকাশ করতেন? 
    আমি শুধু টিজার হিসেবে নারীকবিদের লেখা তুলে দিচ্ছি । যেমন  লোপামুদ্রা, শীলা ভট্টারিকা, মারুকা, মোরিকা, বিজ্জকা, বিকটনিতম্বা, ভাবক দেবী এবং কিছু অজ্ঞাত।

    শীলা ভট্টারিকাঃ
    কৌমার মোর হরেছিল যেই, সেই বর, সেই চৈত্ররাতি;
    তেমনি ফুল্ল মালতীগন্ধ, কদম্ব-বায়ু বহিছে মাতি;
    আমিও তো সেই!—তবু সেদিনের সে- সুরতলীলা কিসের তরে
    রেবাতটে সেই বেতসীর মূলে আজিও চিত্ত আকুল করে?

    --- চৈতন্যদেবের নাকি এই শ্লোকটি – যঃ মম কৌমারহর  স মম বর—শুনে ভাব হত , মূচ্ছো যেতেন! 
    আম্মো!

    এক অজ্ঞাতনামাঃ
    “ আকারে চন্দ্র, কূজনে কোকিল, পারাবত চুম্বনে,
    গতির ভঙ্গে হংস, হস্তী বিলাস-বিমর্দনে;
    যুবতিকাম্য সব গুণ আছে – কী আর বলিব আমি—
    না থাকিত যদি দোষটুকু--- সে যে মোর বিবাহিত স্বামী”।

                   --   হে ভগবান!  উনি অজ্ঞাতনামাই থাকুন।
    মোরিকাঃ
    বিরহের শ্বাসে কত না তাহার কাঁচুলি নিত্য ছিঁড়িয়া পড়ে
    একবার তুমি এস ওগো,-- আর সেলাইয়ের সুতো নাই যে ঘরে।।

                      ---উরিত্তারা,     ক্লাস টেনে পড়ার সময় বইটার পাতা উলটে ছিলাম!

    অবন্তীসুন্দরীঃ
    যাত্রাসময়ে গুরুজন মাঝে তেয়াগি লজ্জা ভয়,
    স্রস্তবসনা ধরিনু তোমায় ভুলে গেছ নির্দয়!

    ভাবক দেবী
     “আগে সে মোদের ছিল একদেহ, ছিল নাতো ছাড়াছাড়ি,
    তারপর তুমি নহ আর প্রিয়, আমি আশাহত নারী।
    এখন আমি যে শুধুই গৃহিণী, তুমি শুধু মোর স্বামী,
    প্রাণ ছিল মোর কুলিশ-কঠিন, তারি ফল লভি আমি।“

    অজ্ঞাতঃ
    “কাল যে কন্ঠে চলেছিল মোর বাণীর মহোৎসব—
    অয়ি প্রিয়া! অয়ি মানসী! কান্তা! নিরুপমা! মধুময়ী!
    সে-কন্ঠে শুধু ধূসর গদ্য ‘ওগো, হ্যাঁগো’ আজ জয়ী—
    এই তো জীবন; স্বপ্ন কবিতা নিছক মিথ্যা সব”।

                  --- খাঁটি কথা কালীদা!

    বিজ্জকাঃ
    ধন্য তোমরা সখী তোমাদের এত কথা থাকে মনে?
       --পটু চাটু যত নর্মবিলাস হয়েছিল প্রিয় সনে।
    কটিবসনের বন্ধন যবে টুটাল সে প্রিয় কর,
    শপথ আমার, যদি কিছু আর, মনে থাকে তারপর”?

    এবার একটু অমরুশতক হয়ে যাক ।

    “লাজে মরে যাই, কি আর বলিব,
               প্রিয়তম মোর অতুলনীয়,
    যখন যেমন, তখন তেমন
              বিধিমতে লাজ হরিল প্রিয়”।।

    “মিথ্যাবাদিনী! স্নানে গিয়েছিলি? নদীজলে সব ধুয়ে এলি,
    আমি কি জানিনা  প্রসাধন যত কাহার অঙ্গে থুয়ে এলি”!
     

    “শয্যায় মোর এল যবে প্রিয়তম,
    নীবীবন্ধন আপনি খসিল মম,
    নিতম্বতটে লুটালো শিথিল শাড়ি,
    এইটুকু শুধু স্মরণ করিতে পারি”।।

    ---- এ হে, বড্ড বেশি ইয়ে হয়ে গেছে। সেন্সার কেস দেবে নাতো!
    এবার বিশুদ্ধ প্রেমের চৌপদীটি দেখুন।

    রাজহস্তীঃ
    তোমার মুখের আদল পায়নি চাঁদ,
    তাইতো বিধাতা গড়বার বাসনায়,
    মণ্ডলী-চাঁদ টুকরো টুকরো করে
    যুগ-যুগান্ত ধরে।।

            --- এ’নিয়ে আর কোন কথা হবে না।

    সঞ্চারী
    বিশাল সংস্কৃত সাহিত্য ভান্ডারে মাত্র বুড়ি ছুঁয়ে গেলাম। 
    রয়ে গেল অথর্ববেদ, ভট্টিকাব্য,চৌরশতক, রঘুবংশ, মেঘদূত। 
    পাতা ওল্টালাম না গীতগোবিন্দমের-- গোস্বামী জয়দেব যার ভূমিকায় বলছেন এ কাব্য দু’ধরণের পাঠকের জন্যে -- যারা হরিনামের  রসাস্বাদন করতে চান আর যারা বিলাসকলায় পারঙ্গম হতে চান। এতসব করলে খর্চা আছে ।

    কিন্তু এবার একটু দম নিয়ে রবীন্দ্রনাথে ফিরছি। “অভিজ্ঞান শকুন্তলম” এ শকুন্তলা দুষ্যন্তের রাজদরবারে এসে প্রতীক্ষা করছেন। গান গাইছে হংসপদিকা , কবির অনুবাদে ফুটে উঠেছে নারীমৃগয়ায় অভ্যস্ত রাজার স্বভাব।

    “নবমধুলোভী ওগো মধুকর, চ্যূতমঞ্জরী চুমি,
    কমল আসনে যে প্রীতি পেয়েছ, কেমনে ভুলিলে তুমি”?

    বৌদ্ধসাহিত্য বড় কট্টর, বড় নাক উঁচু। অবন্তী সান্যাল মশাই খুঁজে-টুজে মাত্র দু’জায়গায় শৃঙ্গাররসের সন্ধান পেয়েছেন। 
    এক, ‘পঞ্চশিখ গন্ধর্বের গান’; যেখানে গন্ধর্বটি গান গেয়ে  পথে পথে ফিরছে এক অপ্সরাকে—‘ কোথায় গেল পাপাঙ্গুলের মেয়ে’? নির্বাণ তুচ্ছ, তার  আলিঙ্গন কাম্য।

    কিন্তু একী! বিখ্যাত বৌদ্ধ দার্শনিক ‘প্রমাণবার্তিক’ রচয়িতা ধর্মকীর্তি এ কি লিখেছেন?

    “বুঝিনা এহেন রূপটি স্রষ্টা নয়ন মেলিয়া কেমনে গড়ে;
    নয়নে পড়িলে মুগ্ধ বিধাতা ছাড়িত কি তারে ক্ষণেক তরে?
    নিমীলিত-চোখে এ রূপ সৃষ্টি সম্ভব নয় , বুঝেছি তাই
    --বুদ্ধের এই কথাটি সত্য , জগতের কোন স্রষ্টা নাই”।।

    ---মাইরি! অতবড় দার্শনিক, নারীর রূপ দেখে বুদ্ধবচনে নিশ্চিত হলেন যে এই দুনিয়ার স্রষ্টা কোন ঈশ্বর বলে কিছু নেই। কারণ, ঈশ্বর থাকলে নারীকেও তিনিই সৃষ্টি করতেন, কিন্তু তারপরে তাকে ছেড়ে কি করে থাকতেন?
     
      আমিও এই চৌপদীটি পড়ে প্রাকযৌবনে নাস্তিক হয়ে গেছলাম, আজও তাই আছি ।

    দ্বিতীয় অন্তরা
    যাদের উপরের পদ্যগুলো একটু গুরুপাক লাগছে তারা এই বইয়ে সংস্কৃত ,হিব্রু , পালি  বা ফারসি ছেড়ে চিনা  বা জাপানী কবিতায় গিয়ে মুখ বদলাতে পারেন। একেবারে  সূক্ষ্ম তুলির টানে আঁকা দ্বিমাত্রিক ল্যান্ডস্কেপ উপভোগের আনন্দ পাবেন।
     
    আমি ওল্টাচ্ছি প্যাপিরাসের পাতা। আটকে গেলাম নায়িকার রূপ-বর্ণনায়ঃ

    “দীর্ঘগ্রীবা দ্যুতিময় স্তনবৃন্ত দুটি,
    পদ্মের কলিকা যেন অঙ্গুলির যথার্থ উপমা,
    ক্ষীণমধ্য, নিবিড় নিতম্ব,
    কী লাস্যে লীলায় হাঁটে ধরণীর বুকে,
    বিমোহিত পুরুষেরা সম্বিত হারায়।
    যাকে সে আশ্লেষ দেয়
    তার কী উল্লাস!
    কামতপ্ত তরুণের দলে
    সবচেয়ে ধন্য সেই, সেই তো নায়ক”।

                      আর একটি গীতিকবিতার আমেজ আনা পদ্য দেখুন।
    নেক্রোপলিসের লিপিকারঃ নাখৎ -সেবেক

    “প্রিয়ার প্রমোদ-কক্ষে তোমার সঙ্গে এনো প্রেম,
    হে হৃদয়! এস একা, সঙ্গী ছাড়াই—
    লীলাসঙ্গিনীকে যদি একান্ত ঘনিষ্ঠ পেতে চাও।
    ঝড়ে ওড়ে তো উড়ুক নলখাগড়ার ছাউনি বারান্দার
    হাওয়ার পাখায় ভর দিয়ে মাথায় নামুক সর্বনাশ।
    তবু ঝড়ে উড়বে না , পুড়বে না –আমার প্রেম”।।

                         আর এ’দুটোকে কী বলা যায়?
       “ আমার বঁধুর দেহ যেন এক পদ্মকুড়ির দীঘি,
    স্তন ও তো নয় , রসে ডগোমগো যমজ ডালিম দুটি,
    ভুরূ দুটো যেন মেরুবনে পাতা শিকারী মেয়ের ফাঁদ,
    আর আমি এক বুনোহাঁস দেখ ধরা পড়ে গেছি ফাঁদে”।

          এবং

    “উরুযুগলের আশ্লেষ মাগ’ যদি
    স্তনযুগ মরে কেঁদে।
    ক্ষুধায় পীড়িত বলে কি বন্ধু
    এখনই যাবে চলে ?
    --তুমি কি ঔদরিক”?
    ---- তা একটু পেটুক ছিলাম বটে!

    এবার একটু অন্যরকম। 
    সে যুগেও প্রেম এবং রাজনীতি মিলেমিশে যেত।

    “ওরা আমায় যতই মারুক ধরুক,
    লাঠিসোঁটায় তাড়িয়ে তাড়িয়ে নিয়ে যাক প্যালেস্টাইন-ভূমি,
    তালপাতার ডাঁটার ঘায়ে ইথিওপিয়া পার করুক,
    সড়কি উঁচিয়ে পার করুক,
    বল্লম দিয়ে পেড়ে ফেলুক মাটিতে-
    ফাঁদে ওদের পা দেব না , কিছুতেই না,
    ভুলবো না তোমাকে, ভুলবো না তোমার প্রেম”।।

    ঢের হয়েছে। এভাবে চললে সারারাত পুইয়ে যাবে । 
    মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে খাঁড়িটা পেরিয়ে গ্রীস দেশে ঘুরে এযাত্রা সবাইকে রেহাই দেওয়া যাক , নইলে চোঁয়া ঢেঁকুর উঠবে।

    গ্রীক কাব্য , সমপ্রেম এবং সাফো
    ‘সমপ্রেম’ শব্দে নাক সিঁটকালে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ গীতিকবি সাফো’র রচনার স্বাদ থেকে বঞ্চিত হবেন। বিষ্ণুদের লাইনটি মনে করুনঃ “ সাফোর ঝর্ণা-কলকল্লোলে হোমারের ষটমাত্রা”। আর এখন তো পেনাল কোডের ৩৭৭ ধারায় সমপ্রেম অপরাধ নয় । কাজেই আদিযুগের মহিলা কবি সাফো’র দুটো কথা শুনেই নিন।

    প্রেম
    প্রেম সে পাহাড়ী ঝড় ওকের চূড়ায়,
    বিকম্পিত শাখাপত্র করেছে আমায়।

    একক শয়নে
    চাঁদ চলে গেছে ,
    কৃত্তিকা গেল,
    মধ্যরাতি।
    প্রহর যায়
    প্রহর যায়
    একলা কাটাই সঙ্গীহীন।।

    সঙ্গিনীর প্রতি
    “আহা, কত কাছ থেকে শোনে সে রূপালী
    তোমার বচন, প্রেমে গদগদ হাসি ।

    তাইতে হৃৎপিন্ডে বন্য আমার হৃদয়ে—
    মুহুর্তেও যদি দেখা পাই,
    কন্ঠ অবরূদ্ধ আর রসনা ভঙ্গুর,
    সমগ্র শরীর ব্যাপ্ত মজ্জামাংস নিচে
    লেলিহান অদৃশ্য অনল”।।

    এবার একটি অন্য স্বাদের কবিতা, ফিলোদেমসের লেখাঃ
    তিরস্কার
    তোমার চুমো বলে, তুমি জান তুমি কি চাও,
    আমি আরও বিভ্রান্ত হই।
    তাই যখন ফিসফিসিয়ে বলি , ‘এই তো আমি, গ্রহণ কর, এসো’,
    তুমি ইতিউতি চাও, কাশো এবং অধিবেশন স্থগিত রাখো
    অনির্দিষ্ট কালের জন্যে।
    তুমি কি প্রেমিক, না রাষ্ট্রসভার সদস্য?

    শেষ পাতে আমার পরিবেশন অধ্যাপিকা বাণী রায়ের অনুবাদে দেবরাজের সমপ্রেমের বিষয়ে এই চমৎকার রচনাটি।
    কালিমাক্ষাস এর কবিতা প্রেমিক জিউসঃ

    “ঘৃণা করে যদি সে আমাকে,
    তবে তুমি হে জিউস, ঘৃণা কোর তাকে।
    থিওক্রেতাস, থিওক্রেতাস আমার!
    অপরূপ শ্যাম কিবা দেহ
    ঘৃণা কোরো তাকে
    ঘৃণা করে  যত সে আমাকে
    চতুর্গুণ ঘৃণা কোরো তাকে।

    ­­­­দেবতা জিউস আমি করেছি শপথ
    স্বর্ণকেশ গানুমেদে- নামে,
    তোমারও যৌবনে তুমি করেছ প্রণয়,
      --আর কথা নয়”।।

    বাদ পড়ে গেল ওল্ড টেস্টামেন্ট থেকে কিং সলোমনের গানের ডালি যার সামান্য উল্লেখ মুজতবা আলীর ‘শবনম’ উপন্যাসের শেষের দিকে রয়েছে। 
    বাদ পড়ল আরও অনেক কিছু। তিনহাজার বছরের রত্নভান্ডারে আমি শুধু জানলা দিয়ে একটু উঁকি মেরেছি মাত্র , বাকিটা আপনারা করুন।
     
     
    তেহাই
     করোনা -১৯ ভাইরাসটি যেমন আমাদের অনেক দূরকে নিকট করেছে, তেমনই নতুন করে ভালবাসতে শিখিয়েছে।
    খুঁজে খুঁজে ফোন করছি—কেমন আছ? ভালো থেকো;  আকাশের ঠিকানায় নামটি যেন লিখতে না হয় ।

    আমাদের জন্যে সমস্ত মন্দির-মসজিদ-গির্জাঘর-গুরুদ্বারার দরজা বন্ধ; আর্তের আর্তনাদ কোন দেবতার কাছে পৌঁছচ্ছে না । আমাদের বাঁচাতে পারে ভালবাসা, মানুষের জন্য মানুষের নির্বিচার ভালবাসা। 
    আশা করি তিনহাজার বছরের এই প্রেমের কবিতাগুলো আমাদের ভালোবাসার প্রত্যয়ে বিশ্বাসী করবে।
     পুঃ ১
    এই বইটি এখন আউট অফ প্রিন্ট, কারও কারও ব্যক্তিগত সংগ্রহে ছেঁড়াখোঁড়া অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু পিডিএফ ডাউনলোড করা যাচ্ছে। অতএব, বুঝ লোক যে জান সন্ধান।।
    পুঃ ২
           আর তিনহাজার বছরের প্রেমের কবিতা যদি মহায়দের একেবারেই না পোষায় তো গদ্য পড়ুন গে’ ;  যান  “ভারত প্রেমকথা”য়; ষাট -সত্তর বছর আগের বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা। আমাদের বাবা-কাকাদের বিয়ের সময় নববধূদের ভাগ্যে উপহার হিসেবে এর এক বা একাধিক কপি জুটতো।       

     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ২৫ জুন ২০২৫ ০৭:০৭745150
  • শুধু প্রথম অনুচ্ছেদ ছাড়া আর কিছু মনে হয় বদলাননি। আবারও একই রকম আনন্দের  সাথে এই অতীব সরস লেখাটির স্বাদ নিলাম।  এবং রঞ্জনদা,  এই সুযোগে আরও একবার আপনাকে অপার কৃতজ্ঞতা জানালাম।
  • Ranjan Roy | ২৫ জুন ২০২৫ ১২:২৫745152
  • আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ l
    ar কে বিশেষ,  লিঙ্ক দেবার জন্য.
  • Nirmalya Nag | ২৭ জুন ২০২৫ ১৩:৪৫745160
  • চমৎকার। এই বই মনে হচ্ছে আমাদের কলেজ জীবনে বইমেলার তাকে সাজানো দেখেছি, পাতাও উল্টেছি নিশ্চয়। 
  • Nirmalya Nag | ২৭ জুন ২০২৫ ১৩:৫৪745161
  • ar কে ধন্যবাদ। ভূমিকা অংশটি ভাল করে পড়ার ইচ্ছে রইল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন