এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • কারফিউ ডাইরি! 

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৪ জুলাই ২০২৪ | ৯৩৮ বার পঠিত | রেটিং ৪ (২ জন)
  • কোটা আন্দোলন, উপলব্ধি
    কারফিউ - প্রথম রাত!  
    ইন্টারনেট ছাড়া দ্বিতীয় রাত। 
    ২০.০৭.২০২৪  

    আগে সময়ের মূল্য নাম একটা রচনা আমাদেরকে পড়তে হত। সময় চলে গেলে, সময়ের কাজ সময়ে না করলে কী সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে তা নিয়ে রচনা লিখতে হত। এত বছর পরে মনে হচ্ছে এই রচনা যদি সরকার ঠিকঠাক পড়ত বা উপলব্ধি করত তাহলে বর্তমান এই দুর্যোগের চেহারা এমন হত না। এই ক্রান্তি কালীন সময়ে কোন অজানা কারণে সরকার প্রতিটা কাজ দেরি করে করেছে, একটা কাজও সময় মত করে নাই। উল্টো এমন সব সিদ্ধান্ত  নেওয়া হয়েছে যা অবিশ্বাস্য তৈরি করেছে, সরকার আস্থা হারিয়েছে, বিপুল জনগোষ্ঠীকে শত্রু হিসেবে তৈরি করেছে। এরা সরকারকে প্রতিপক্ষ মনে করছে। যদি সব স্বাভাবিক হয়, স্বাভাবিক হয় লিখছি কারণ আমি যখন এই লেখা লেখছি ( ২০ জুলাই, ২০২৪, রাত ১.৪০ মিনিট) তখন কোন কিছুই স্বাভাবিক নাই। ২৪ ঘণ্টা হয়ে গেছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নাই, মোবাইল নেট আরও আগে থেকে বন্ধ। অনেকেই টেলিভিশন কী ভুলেই গেছে, এখন বুঝতেছে না খবর কই পাবে! এই পরিস্থিতিতে সরকার রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করেছে। কারফিউ জারির জন্য মাইক মারা হয়েছে? না! মানুষ জানবে কীভাবে? উত্তর নাই। নেট নাই, সবার কাছে টেলিভিশন নাই, এদিকে কারফিউ শুরু হয়ে গেল। সারাদিনে দেশ জুড়ে ঠিক কতজন মারা গেছে সহিংসতায় তার সঠিক হিসাব জানি না। একবার শুনলাম ২৭ জন মারা গেছে! আগের দিন মারা গেছে ১৯ জন, তার আগের দিন ৬ জন! পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝা যাচ্ছে? এবং কে নেই প্রাণহানি? উত্তর হচ্ছে মানুষ সরকারি চাকরিতে কোটা চায় না! কোটা যা আছে তার যৌক্তিক সংস্কার চায়! এই তর্কে শুরু, এরপরে মারামারি, কেন মারল বলে আরও মারামারি, এরপরে শক্তির ভয়ংকর প্রদর্শনী! এরপরের ইতিহাস লাশ! আমি আমার ভাইগ্না ভাগ্নিদের বলছিলাম  একটা লাশ হলে এই আন্দোলন অন্য রূপ নিবে। কেউ ইচ্ছা করে আন্দোলন বেগবান করার জন্যও লাশ ফেলে দিতে পারে। আমি একটা লাশের ভয় পাচ্ছিলাম! লাশ যখন পড়া শুরু হল তখন প্রথম চোটেই ছয় জন! এই সময়েও সময় ছিল, প্রধানমন্ত্রী সেইদিন সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিবেন। আমি আশা করলাম এই মহিলার একটা ম্যাজিক বাক্যই সব স্বাভাবিক করে ফেলতে পারে। কিন্তু না! আমাকে অবাক এবং হতাশ করে দিয়ে কোন ঘোষণাই আসল না। এই কয়দিন যা বলে আসছিল সরকার তারই পুনরাবৃত্তি করা হল শুধু! আবার সময়ের কাজ সময়ে হল না! 

    দেশের অন্যতম প্রাচীন দল একের পর এক ভুল করে যেতে থাকল। সরকার সমাধান করতে চাইল ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা নীতিতে। ফলাফল আরও লাশ! কোন সুস্থ মানুষ এই পরিস্থিতি মেনে নিতে পারে না। এখনকার সময়ে সবার হাতে হাতে মোবাইল ক্যামেরা, ইন্টারনেট। সমানে ভিডিও ছবি শেয়ার হচ্ছে। না চাইলেও দেখতে হচ্ছে বীভৎস সব দৃশ্য। এই সব ছড়ানো বন্ধের লক্ষ্যে প্রথমে ফেসবুককে মন্থর করে দেওয়া হল, পরে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হল। কিন্তু এইটাও সময়ের কাজ সময়ে হয়নি। ততক্ষণে সারাদেশ উত্তাল হয়ে গেছে!। ব্রডব্যান্ড লাইনও যে বন্ধ হবে তা আমি অনুমান করে ফেলছিলাম আগেই। আমি দুই একজনকে জানিয়েও দিলাম যে দেশ পুরোপুরি ইন্টারনেটের বাহিরে চলে যাচ্ছে। অন্ধকার এক সময়ে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। নেট ছাড়া কোন কিছুই যে সম্ভব না এইটা কে কাকে বুঝায়? 

    ছাত্রদের আন্দোলন কখন কোন ফাঁকে হাত বদল হয়েছে আমি জানি না। কিন্তু হাত যে বদল হয়েছে তা আমি নিশ্চিত ছিলাম। ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বিটিভি অফিসে আগুন দিয়েছে এইটা আমি বিশ্বাস করি না, যাত্রাবাড়ীতে ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন দিয়েছে ছাত্ররা এইটা কেউই বিশ্বাস করবে না। মেট্রো রেলে আগুন দেওয়া হয়েছে, রেলে আগুণ দেওয়া হইছে! গতকাল নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে, নরসিংদীর  কারাগারে আক্রমণ করে কয়েদি ছাড়িয়ে নিয়েছে, ৮০০ জনের বেশি কায়েদি পালিয়েছে! এগুলা ছাত্রদের কাজ না। কাদের? 

    যে ম্যাজিকেই হোক, নির্বাচন যেমন ঢঙেরই করুক, কীভাবে যেন আওয়ামীলীগ এতদিন টিকে গেছে। মানুষের খুব একটা মাথা ব্যথা নাই এই নিয়ে। ২০০৬ সালে বিএনপি জামাত ক্ষমতা থেকে নামছে। এরপরে দুই বছর সেনা সমর্থিত সরকার দেশ চালিয়েছে। আর তারপর থেকে আওয়ামীলীগ দেশ চালাচ্ছে। ১৮ বছর ধরে ক্ষমতার বাহিরে থাকা দলটা বা দল গুলো কেন কিছুই করতে পারল না? জনগণ কেন আওয়ামীলীগের নানা অন্যায়ের প্রতিবাদে  নেমে আসল না? এগুলার উত্তর দেওয়ার ম্যালা জ্ঞানী গুণী আছেন। সত্য হচ্ছে জনগণ তাদের সাথে যায়নি। এত বছরে নানান সময়ের বিএনপি জামাতের আন্দোলনে মনে হয়েছে এইটা তাদের দায়, তারা কীভাবে ক্ষমতায় আসবে এইটা তারাই ভাবুক, আমরা দূর থেকে দেখব, আমরা অংশ নিব না। যার ফলে টাকা দিয়ে মিটিং মিছিলে লোক নিয়ে যেতে হয়েছে, নিজেদের কিছু কর্মী ছাড়া সাধারণ মানুষের কোন অংশ ছিল না বলতে গেলে। তাদের সাথে যায় নাই কিন্তু মানুষের কী চিরন্তন বিদ্রোহী মেজাজ হারিয়েছে? না। ২০১৮ সালে যখন কোটা আন্দোলনের প্রথম পত্র শুরু হয় তখনও বিএনপি জামাত অবাক হয়ে দেখছে ছাত্রদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। এবং আন্দোলন কব্জা করার  জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সেবার জুত হয়নি। এবার সরকারের অবিশ্বাস্য সব সিদ্ধান্তের কারণে আবার যখন ছাত্রদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন চালু হল তখনও  তারা হাজির। ওদের কাছে এইটা এত বছরের স্বপ্ন। এত মানুষের অংশ গ্রহণে কোন আন্দোলন এইটা তাদের কল্পনাতীত ছিল। তারা ডাক দিলে লোক আসে সাতজন, তাও এর মধ্যে তিন জন জামাত দুইজন বিএনপির কর্মী বাকি দুইজন তামশা দেখার জন্য! সেইখানে এতো এতো মানুষ সরকার বিরোধী স্লোগান দিচ্ছে! জামাত তো আরও খুশি, এরা নিজেদের রাজাকার বলেও স্লোগান দিচ্ছে! এই আন্দোলন তারা কব্জা করতে চাইবে না এইটা সম্ভবত বাংলাদেশের কেউই আশা করে নাই। ভুল বললাম, আমাদের সরকার হয়ত ভেবেছিল! হয়ত ভেবেছিল যে ছাত্ররা দুই একদিন হাওকাও করে পরে তারা একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে দিবে, তাই মেনে নিয়ে চলে যাবে। ২০১৮ সালে যেমন হয়েছিল। 

    ফলাফল? যারা এক সপ্তাহ আগে চিন্তা করে পাচ্ছিল না কী করে খাবে, দিন কেমনে পার হবে? কেউ হয়ত চিন্তা করতেছিল সব বাদ দিয়ে মুদির দোকান দিয়ে বসে যাই। তারাই স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিল গদিতে বসার! যারা অন্ধ, দিক হারা নাবিক, কোন পথে কই যাবে জানে না। সরকার যেন দায়িত্ব নিয়ে, পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ? বলে হাত ধরে বাতি জ্বালিয়ে  হাতে মশাল ধরিয়ে পথ দেখায় দিল যে প্লিজ, এইদিক দিয়ে এসে আমাদের শেষ করুন! যে দল গত বছর তুমুল আন্দোলন করবে করবে ভাব নিয়ে বসে ছিল, কিন্তু পরে  দেখা গেল তারা আসলে বসে ছিল কখন আমেরিকা এসে মুখে তুলে খাওয়াবে তার জন্য। সেই দলকে সরকার যেন ভাত বেড়ে মুখে তুলেই খাওয়ানো শুরু করল! 

    এখনও কিছুই হয়নি। সেনাবাহিনী নেমেছে। কারফিউ চলছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাদের কি ওই জোর আছে যে সেনাবাহিনীর সাথে লড়বে? যদি লড়ে তাহলে কী হবে? এরপরে তো সরকারের হাতে আর কিছুই থাকল না। গত দুইদিন যেভাবে মানুষ মরেছে সেই ভাবেই যদি কারফিউ চলাকালীন সেনাবাহিনীর হাতে মরে তাহলে পরিস্থিতি কই গিয়ে দাঁড়াবে? বহিবিশ্বের চাপ আসবে না? সরকার টিকে থাকতে পারবে? আমি জানি না। বিএনপি জামাতের তো হারানোর কিছু নাই। না মরেই কী বেঁচে থাকতে পারবে? আর কোন উপায় আছে সামনে? এসপারওসপার করার কথা ভাববে না? আমি জানি না এইটাও। 

    আমাদের কী হবে?  পরিস্থিতি দেখে যতদূর মনে হয়, যতখানি বুঝি  আর্মিকে অতিক্রম করে সরকারকে ফেলতে পারবে না কেউ। চেষ্টা করলে আরও লাশ পড়বে। কারা মারা যাবে? ছাত্র ছাত্রীরা, বিএনপি জামাত করা লোকজন এই দেশেরই মানুষ। এত এত লাশের স্তূপের উপর দিয়ে সরকার যদি টিকেও যায় তাহলে সেই সরকারকে সমর্থন দেওয়ার সামর্থ্য থাকবে আমার? এই কয়দিন যে লাশ পড়ছে তাই তো মেনে নেওয়া কষ্টকর! যাদের কারণেই হোক, যে দলেরই হোক, এতো গুলা লাশ! কীভাবে মেনে নেওয়া সম্ভব? আমার ভাইগ্না ভাগ্যক্রমে বাড়িতে। ওর সেমিস্টার শেষ, তাই বাড়িতে। ও হলে থাকলে কী হত? আমার ভাগ্নি পারিবারিক কারণে গণ্ডগোল দানা বাধার ঠিক সকালে চলে আসছিল বাড়িতে। ও হোস্টেলে থাকলে কী হত? ওদের সহপাঠীরা তো গেছে আন্দোলনে, ওরা যেত না? আমার খালাতো বোন জাহাঙ্গীর নগরের হলে ছিল। আমি দৈনিক ওকে জিজ্ঞাস করছি টিকে আছে? সব ঠিক আছে? এই যে আতঙ্ক, এর হিসাব কী? আমার কেউ ভাগ্যক্রমে সুস্থ আছে, ভালো আছে। যারা মারা গেল তাদের পরিবার কী চিন্তা করছে আজকে? এই সব শেষ হলেও এই যে একটা প্রজন্মকে শত্রু জ্ঞান করে ঝাঁপিয়ে পড়া, এরা যতদিন বেঁচে থাকবে কোনদিন ভালো কিছু চিন্তা করবে এই সরকার সম্পর্কে? 

    কী হবে আমি জানি না। আমিই কী করব তাও জানি না। আমি এইসবে অভ্যস্ত না। আমার জ্ঞান বুদ্ধি থমকে যাচ্ছে। আমরা যারা নৈতিক সমর্থন দিয়ে গেছি এই সরকারকে তার বড় কারণ এর উল্টো দিকে এত বড় সব অশ্বডিম্ব বসে আছে যে আমাদের আর উপায় থাকে নাই। আমাদের কী করা উচিত? পরেরটা পরে, আগে জ্বলন্ত বাস থেকে নামি? হিসাবে তো তাই বলে, আগে নামি পরে দেখা যাবে। কিন্তু হিসাবই তো সব না। কারণ আরেকটা হিসাব বলে যে এইই আছে তোমার, যে কয়দিন বেঁচে আছ, কোনমতে দিন পার করে মরে যাও।  

    কিংবা আমি জানি না, হয়ত এইটা বাংলাদেশের জন্য টারনিং পয়েন্ট!, হয়ত ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। হয়ত অহেতুক আমি ভয় পাচ্ছি। হয়ত পরিবর্তন আসলেও ভালো কিছুই হবে। হয়ত যতদূর এগিয়েছে বাংলাদেশ তারচেয়ে বহুদূর যাবে আরও। আমার জ্ঞান বুদ্ধি বলে তার কোন সম্ভবনা নাই। দুম করে বিশ বছর পিছিয়ে যাবে বাংলাদেশ। আর আবেগ বলছে আশা রাখ, আশায়ই তো বাঁচিয়ে রাখছে আমাদের, আশার ভেলাই বাঁচিয়ে রেখেছে আমাকে। আগামীর ভোর সম্ভাবনার হোক, সমস্ত কালিমা কেটে যাক। শুভ হোক, সুন্দর হোক। শান্তি নেমে আসুক ধরিত্রীর বুকে। 

     রাত .৪২ মিনিট। 

    কারফিউ - দ্বিতীয় রাত। 
    ইন্টারনেট ছাড়া তৃতীয় রাত। 
    ২১.০৭.২০২৪ 

    সকাল হতেই কারফিউয়ের প্রকৃত চিত্র দেখা গেল। সবাই নিজেদের মতো করে একটা ব্যাখ্যা বের করেছে হয়ত। কারণ সবাই বেড় হচ্ছে, সবাই বাজারে যাচ্ছে, রিকশা অটো চলছে। রাতে আমি অনেকেকেই ফোন দিয়া জানিয়েছিলাম যে কারফিউ আসছে, রাস্তায় সেনাবাহিনী থাকবে, কাজেই সাবধান। সকালে এই চিত্র দেখে একটু বেকুবই লাগল নিজেকে। 
    টিভিতে দেখলাম দুপুর বারোটা থেকে দুইটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। আমি বারোটায় বের হলাম বাসা থেকে। আমার কাছে মনে হল সবাই ধরেই নিয়েছে কারফিউ, আর্মি এগুলা যারা জ্বালাও পোড়াও করছে, ভাংচুর করছে তাদের জন্য। সাধারণ মানুষ এইটাকে স্বস্তি হিসেবে দেখেছে।  

    প্রথম আলো লিখেছে সর্ব মোট ৮৩ জন মারা গেছে! তিরাশিটা প্রাণ! কেন ঝরল এই উত্তরের সন্ধান পাওয়া যাবে কোনদিন? ইন্টারনেট না থাকাতে গত পরশু ঢাকা সহ দেশ জুড়ে কী হয়েছে তার খবর সবাই পায়নি। টেলিভিশনে যতখানি আসছে তা পর্যাপ্ত না।  প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী শুধু এইদিনই মারা গেছে প্রায় ৫০ জন। আমি লেখার সময় লিখছি সংখ্যা, কিন্তু এগুলা তো সংখ্যা না, এগুলা প্রতিটা একজন মানুষ, এদের পরিবার ছিল, দুঃখ কষ্ট, হাসি প্রেম সব ছিল। এরা এখন সংখ্যা হয়ে গেল! কিসের বলি হল, কার কোন হিসাবের মারপ্যাঁচে এই মানুষ গুলো হারিয়ে গেল! 
    জবাব দিবে কে? 

    সরকার তাণ্ডব হয়ে যাওয়ার পরে নমনীয়। এখন আর আগস্টের সাত তারিখ শুনানির গল্প বলে না। এটর্নি জেনারেল আপিল করে আগামী কাল রবিবার শুনানির দিন এগিয়ে নিয়ে আসছে। শুনানি হবে, রায়ও হবে। ছাত্ররা আট না নয় দফা নিয়ে আইন মন্ত্রীর সাথে দেখা করেছে। কিছু ন্যায্য দাবী তো আছেই কিছু আছে উচ্চাবিলাসি দাবী। যেমন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাইতে হবে! এ সম্ভবত হওয়ার নয়। সকাল দশটায় শুনানি শুরু হবে। রায়ও কালকেই দিয়ে দিবে। 

    তবে আমার ধারণা দেখানোর জন্য হলেও সরকার কাওকে কুরবানি দিবে। হয়ত কোন মন্ত্রীকে পদত্যাগ করাবে, পুলিশের কারও চাকরি যাইতে পারে। ছাত্রলীগের কারও কপাল পুড়তে পারে। গেরেফতার হবে হয়ত। উল্টো দিকে আরেকটা কাজ হওয়ার খুব সম্ভাবনা আছে। তা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় স্থাপনা গুলোতে যারা আক্রমণ করেছে তাদেরকে খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করা। এখানেই বিপদ। কাকে যে ধরে ঢুকাবে তার কোন হিসাব থাকবে না। ছাত্ররা আজকে জানিয়ে দিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্থাপনা গুলোতে আগুন দেওয়ার সাথে কোন ছাত্র জড়িত না। এইটা আমি যখন শুনছি তখনই বলছি যে সাধারণ ছাত্ররা বিটিভি ভবনে আগুন দিবে না, সেতু ভবনের সমস্ত গাড়ি পুড়িয়ে দিবে না, মেট্রো রেল যেটা ঘোর আওয়ামীলীগ বিরোধী পর্যন্ত স্বীকার করে যে ঢাকার জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসছে এই জিনিস। সেই মেট্রোর দুইটা স্টেশন এমন পুড়েছে যে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে এই দুইটা ( মিরপুর দশ আর কাজীপাড়া স্টেশন) স্টেশন আবার চালু করতে এক বছর সময় লাগবে! মানুষের লাশের বিপরীতে এগুলা করে যেন সরকারকে ব্যালেন্স এনে দিয়েছে যারাই এই কাজ করেছে তারা। 

    মানুষের ভিতরে পঞ্জিভুত ক্ষোভ ছিল এইটা সত্য। কোন কোন ক্ষেত্রে হয়ত তার বহিঃপ্রকাশও ঘটেছে। এগুলা বুঝা যায় হল গুলাতে ছাত্রলীগের দলীয় নেতাদের অবস্থা দেখলে। ঢাবির ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের রুম থেকে বালিশ তোষক টেনে ফেলে দিয়েছে ছাত্ররা। ইডেনে কোন নেত্রীকে সবাই মিলে কান ধরে হল থেকে বের করেছে। এগুলা কিন্তু আন্দোলন ছিনতাই হয়ে যাওয়ার আগেই, মানে সাধারণ ছাত্ররাই করেছে। কারণ ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে রাজার মতো চলে, বাকিদের নিজেদের অধিনস্ত মনে করে। এইটা সাধারণ ছাত্রদের মনে প্রচণ্ড ক্ষোভের জন্ম দিয়েছিল। 

    পুলিশের প্রতিও ক্ষোভ দেখা গেছে। এইটা সাধারণ ছাত্রদের কাণ্ড মনে হয় নাই আমার। এত বছর ধরে যে রাজনৈতিক দলের কর্মীরা পুলিশি অত্যাচারের শিকার হয়েছে তারা তাদের ক্ষোভের প্রকাশ করেছে। নির্মম ভাবে পুলিশকে পিটিয়ে মারছে! এগুলা যে উল্টো কাজ করে এইটা বুঝে নাই সম্ভবত। যখন পুলিশের গায়ে হাত পরে তখন পুলিশের পক্ষে অ্যাকশনে যাওয়া সহজ হয়। নৈতিক দিক থেকে সে তখন মুক্ত হয়ে যায়। একজন পুলিশের গায়ে হাত মানে সবার গায়ে হাত এইটা সম্ভবত পুলিশের জন্য ইউনিভার্সেল ট্রুথ, সব জায়গার জন্য, সব সময়ের জন্য চিরন্তন সত্য। পরশুর নিহতের সংখ্যা বেশি হওয়ার এইটা একটা কারণ হতে পারে। গত পরশুর জন্য আরেকটা সত্য হচ্ছে এইদিন রাস্তায় সাধারণ ছাত্র ছিল না। এইটা পুরোটাই রাজনৈতিক খেলা হয়েছে। বিএনপি সমাবেশ ডেকে ছিল পল্টনে, জামাত বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেস্টরা করেছিল। কাজেই বুঝাই যাচ্ছে কী হয়েছে। 

    পরশু শেরপুর একজন পুলিশ মারা গেছে শুনেছিলাম। পরে কালকে শুনলাম ওইটা গুজব। আহত হয়েছে কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন। এমনে শেরপুর শহর শান্ত ছিল। আমরা বরাবরই একটু ঝামেলা মুক্ত জেলা। খুব বেশি উত্তাপ আমাদের এদিকে দেখা যায় না।  প্রথম দিন হুট করে কিছু একটা  করার চেষ্টা করেছিল। শহর গরম হয়ে গেছিল। এবং এইটা পুরোটাই ছাত্রদল, বিএনপি দ্বারা পরিচালিত ছিল। আমার শহরের কে কোন দল করে এইটা আমি ভালো করেই জানি। কাজেই এখানে যে প্রথম দিন থেকেই ছাত্রদের হাতের বাহিরে ছিল আন্দোলন এইটা নিশ্চিত আমি। 

    ইন্টারনেট ছাড়া জীবন বেশ কঠিন তা সবাই হাড়ে হাড়ে বুঝছে এখন। ফ্রিলেন্সিং সংগঠনের একজন বলল একদিনে প্রায় এক মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে! এইটা প্রথম দিনের কথা বললাম, এরপরে এই ক্ষতি কই গিয়ে ঠেকেছে? জেনারেল ব্যাংকিং তো বিপদে আছেই, মোবাইল ব্যাংকিং এ বিকাশ এক নাম্বার। বিকাশ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে নেটের কারণে। সবার জীবনে যেন অন্ধাকার নেমে আসছে। মোবাইল রিচার্জ করা যাচ্ছে না। ইন্টারনেট জীবনকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছে যে বাসা বাড়িতে টেলিভিশনও নাই! ইন্টারনেটে টিভি দেখে! ইউটিউবে খবর দেখে! খুব মুশকিল হয়ে গেছে এদের জন্য। তবে এদের থেকে বড় বিপদ হচ্ছে সেই প্রজন্ম যারা বই পড়ার কথা স্বপ্নেও ভাবে না! জীবনকে রিল শর্টস ইনিস্টা ফেসবুকে আবদ্ধ করে ফেলেছে যারা তারা। নেশাখোরদের মতো নেশার টান উঠছে অনেকের! কী করবে বুঝছে না! একটু পরে পরে মোবাইল হাতে নেয়, গ্যালারিতে ছবি দেখে, আবার রেখে দেয়। একটু পরে আবার এই কাজের পুনরাবৃত্তি করে! অনেকেই বাচ্চাদেরকে মোবাইল হাতে দিয়ে ইউটিউবে ব্যস্ত রেখে নিজে অন্য কাজ করে। এরাও বিপদে আছে। কেউ তো আর আগের মতো ডাউনলোড করে রাখে না কিছু। এখন তো নেট নাই! এখন? 
    আমার একটু বিপদ হয়েছে। মোবাইলটা কয়েকদিন আগেই নষ্ট হয়েছে, আমি বহু কষ্টে বাটন সেটে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টায় ছিলাম। এর মধ্যে পুরো  বাংলাদেশ আমার কাতারে এসে গেল! ম্যাকবুকে স্টোরেজ কম থাকায় আমিও কোন কিছুই ডাউনলোড করে রাখি নাই। বইপত্র পড়ছি, একটু আধটু বাহিরেও যাচ্ছি। কিন্তু কিছুই দেখা নাই এইটা আমার জন্যও বিপদ। পরে পুরান একটা পর্টেবল হার্ডডিস্ক ছিল ওইটা খুঁজে বের করলাম, সংযোগ পেতেই চায় না। বহু কষ্টে পাওয়া গেল, দেখলাম পাইরেট অফ ক্যারাবিয়ানের সব গুলো সিনেমা আছে, আর আছে এক্স ফাইলের চার নাম্বার সিজন! মনে হয় চলে যাবে এই দিয়ে! 

    কিন্তু এগুলা হচ্ছে মূল সমস্যা রেখে টুকরা আলাপ। আমাদের এদিকে বলে খাউজানি আলাপ!  কিন্তু মূল সমস্যার কথা আসলে আমার বলার কথা না। আমি রাষ্ট্র যন্ত্রের কতখানি বুঝি? গতকাল রাতে ঢাকার আমার এক ছোট ভাই বন্ধু প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ছিল। ও আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে। আগে ছাত্রলীগ করত। পরে ও সকালে আমাকে ফোন দিয়ে বলল ভাই সব শান্ত হয়ে যাবে। ওরা যখন ধানমন্ডি ছিল তখন না কি সেখানেও আক্রমণের একটা চেষ্টা হয়। কিন্তু এদিকে প্রবল শক্তি থাকায় তা আর হালে পানি পায়নি। তখন সেখানে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন, তিনি ওদের সবাইকে বলেন যে আমার উপরে বিশ্বাস রাখ, আমি সব স্বাভাবিক করে দিব, তোমরা সবাই চুপচাপ থাক। এরপরেই সম্ভবত আর্মি কারফিউয়ের সিদ্ধান্ত আসে বা এইটা হয়ত আরও আগে থেকেই পরিকল্পনা করা ছিল, আমি অনুমান করলাম শুধু। 

    এই যে আশ্বাস, সব স্বাভাবিক করে দিব, এইটা একজন কখন বলে? নিজের উপরে কতখানি আস্থা থাকলে এইটা বলতে পারে? এবং এই যে একক ক্ষমতার স্তূপ জমা হয়েছে এক জায়গায়, একজনের কাছে এইটা খুব খারাপ। একজনের কাছে এতো ক্ষমতা থাকলে তার বহিঃপ্রকাশ বেশির ভাগ সময়েই বাজে ভাবে হয়। আমরা ভাবি সুপারম্যান থাকলে তিনি কত উপকার করত মানুষের! দা বয়েজ নামে অ্যামাজন প্রাইমের একটা সিরিজ আছে, ওইটাতে সুপারম্যানের মতো যে একটা চরিত্র আছে, নাম হচ্ছে হোমল্যান্ডার। হোমল্যান্ডার কোনমতেই ভালো থাকতে পারে ন্না, নিজের একক শক্তি তাকে ধীরে ধীরে দানবে পরিণত করে। এখনও বিপদ পুরোপুরি কাটেনি সরকারের। যদি লক্ষণ অনুযায়ী কেটেই যায় এই বিপদ। তাহলে বুঝতে হবে অফুরন্ত ক্ষমতার অধিকারী হয়ে গেছেন তিনি। আর সেই অনুযায়ী দানব হয়ে গেছেন না হওয়ার পথে আছেন তা হয়ত সময় বলে দিবে।   
    কিন্তু সময়র অপেক্ষা না করেই এইটা এখনই বলে দেওয়া যায় যে এবারের, এই  কোটা আন্দোলনের দ্বিতীয় পত্রে সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে কালো অধ্যায় হয়ে থেকে যাবে। আজ থেকে দশ বিশ পঞ্চাশ বছর পরেও মানুষ মনে করবে এইদিন গুলাকে, যেখানে সব চেয়ে কম মূল ছিল মানুষের জীবনের। 

    ধার্মিকেরা বলে ঈশ্বর সব মঙ্গলের জন্যই করেন। একদিন মঙ্গল হবে হয়ত। সেই মহান মঙ্গলের দেখা পাওয়ার আশায় বেঁচে আছি, বসে আছি! 

    রাত .০০ মিনিট। 

    কারফিউ  -  তৃতীয় রাত  
    ইন্টারনেট ছাড়া বাংলাদেশ  -  চতুর্থ  রাত
    ২২.০৭.২০২৪ 

    কারফিউ জারি করার পরে আমাদের এদিকে শান্ত থাকলেও অনেক এলাকায় তাণ্ডব হয়ে গেছে। সেই তুলনায় দ্বিতীয় দিনে  গণ্ডগোল কম হয়েছে।  যদিও প্রকৃত চিত্র কালকে পত্রিকা আসলে পাওয়া যাবে। প্রথম দিন আমার ধারণা মানুষ কারফিউ জারি হয়েছে এইটা ঠিকঠাক জানতে পারেনি বা বুঝতে পারেনি। আগেরদিনের মতোই জোসে আন্দোলনে চলে আসছে, আর্মি পুলিশ  অ্যাকশন নিতে দ্বিধা করেনি। নানান ব্যাখ্যা খুঁজি আর কি! 

    গতকাল সুপ্রিম কোর্ট শুনানি শেষে রায় দিয়েছে। কোটা  নিয়ে সরকারের  প্রজ্ঞাপন বাতিল করে যে হাইকোর্ট  রায় দিয়েছিল ওইটা বাতিল করেছে।  সেই সাথে রায়ে বলা হয়েছে কোটা হবে সাত শতাংশ। পাঁচ ভাগ পাবে মুক্তিযোদ্ধা আর বাকি দুই ভাগে পাবে ক্ষুদ্র নৃ জনগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ। প্রধান বিচারপতি ছাত্রদের শান্ত হতে বলেছেন, যত খুন হত্যা হয়েছে সবগুলার বিচার করার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। সব মিলিয়ে এই রায় ঐতিহাসিক রায়। সবার মন মতো রায়। আশা করা যায় যে এরপরে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে। 

    এমন সময় গুলোতে গুজব খুব ব্যস্ত সময় পার করে। কত গুজব যে বাতাসে ঘুরছে তার কোন হিসাব নাই। হুট করেই শুনলাম খালেদা জিয়া মারা গেছে! তাড়াতাড়ি টেলিভিশন চালু করলাম, না, কোথাও এমন কোন সংবাদ দেখাচ্ছে না! পরে শুনলাম তিনি অসুস্থ, হাসপাতালে আছেন! এই মহিলা এখন  মরলে আরেক কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে না? গুজব যে কেন ছড়ায় এ  আর কী না বুঝি? 
    কালকে কারফিউ  চলা অবস্থায় বের হয়েছিলাম। সবাই বের হচ্ছে,  রিকশা চলছে, অটো চলছে। আমিও বের হলাম। এখানে একটা প্রাচীন মন্দির আছে, ওইটা এখন ইশকনের তত্ত্বাবধায়নে। সেখানে একটা  খাবারের দোকানের মতো আছে। দেখলাম সিঙ্গারা ভাজছে। গরম সিঙ্গারা নিয়ে কাছেই আমার মেজোপার বাসা সেখানে গেলাম। ভাইগ্না ভাগ্নিদের মুখে একটু হলেও হাসি ফুটল। রায় শোনার জন্য বেশি দেরি করিনি। চলে আসছি বাসায়। 
    এর মধ্যে এক দারুণ খবর পেলাম। আমাদের এফটিপি সার্ভার চালু আছে! মানে সেখানে রাখা নানান সিনেমা সিরিজ আমি ইচ্ছা করলে  স্ট্রিমিং করে বা ডাউনলোড দিয়ে দেখতে পারব। এই খবরেও ভাইগ্নিদের এবং আমার বোনেরও নির্মল আনন্দ লাভ হল। 

    বই পড়ছি সিদ্ধিরগঞ্জের মোকাম,  লেখকের নাম মিহির সেনগুপ্ত। লেখক বরিশালের লোক। এত চমৎকার করে শেকড়ে ফেরার গল্প বলেছেন যা এক কথায় অবিশ্বাস্য! তপন রায় চৌধুরীর বইয়ে এই লেখক আর বইয়ের কথা পড়েছিলাম, জোগাড় করেছিলাম আগেই এখন পড়ছি। দুর্দান্ত একটা বই। 

    মানুষের মনের খবর তো পাওয়া মুশকিল। এখন একটু বেকায়দায় পড়াতে  অনেকের দেখি মুখ খুলেছে সরকারের সমালোচনায়। আমাদের মতো দেশে কোনদিন কোন সরকার জনপ্রিয় হতে পারবে না। আওয়ামীলীগ যে তরিকায় ক্ষমতায়  টিকে আছে এই এক তরিকা ছাড়া কোনদিন কোন সরকার একের অধিক মেয়াদ টিকতে পারবে না। এতটুকু একটা দেশ, সম্পদ অল্প, উপচে পড়ছে মানুষ। কীভাবে খুশি করবেন? এর উপরে আছে আরও নানা ধরণের চাপ। বৈশ্বিক মন্দা, বিশ্ব রাজনীতি, যুদ্ধ, করোনা একটার পরে একটা লেগেই আছে। লড়াই করবেন কেমনে? 

    তারপরেও যদি মানুষ গুলো একটু নৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন হত! লুটপাট লেগেই আছে। প্রধানমন্ত্রীর  পিয়ন চারশ কোটি টাকা কামাই করেছে! এখানে কে কাকে ধরবে? ম্যানেজার যদি না ই জানে তার পিয়ন চুরি করছে তাইলে সে কেমন ম্যানেজার? জানি এইটা সরল যুক্তি হয়ে গেল। কিন্তু এগুলা তো খেয়াল রাখতে হবে। আমি যখন ক্ষমতার কেন্দ্রে তখন আমি এইটা হিসাব করতে হবে না যে আমাকে বা আমার পদকে ব্যবহার করে কেউ যেন অন্যায় সুযোগ না নিতে পারে? দুই একজন করে ধরা পড়া শুরু হয়েছিল,  এর মধ্যে এই কাহিনী। কে জানে কোন পাপ ধামা চাপা দেওয়ার জন্যই এমন কাণ্ড ঘটল কি না! 

    আমি প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম যে এই আন্দোলনের ভিত্তি কী? কেন আন্দোলন হচ্ছে? বুঝাই যাচ্ছিল সরকার এইটা সংস্কার করবে। সুপ্রিম কোর্ট একেবারে পাতলা কোন রায় দিবে না। এর মধ্যে কী হয়ে গেল যে রক্ত দিতে হল জীবন দিতে হল! পাপ ধামাচাপার কথা কেন বলছি? বলছি এ ছাড়া আর যুক্তি খুঁজে পাই না। কেন সরকারের মন্ত্রী, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ্যে বলেন যে কোটা বিরোধী আন্দোলন ছাত্রলীগ একাই রুখে দিবে! এই একটা ঘোষণা যে কী সর্বনাশ করেছে তা বলে বুঝানো অসম্ভব! এর আগ পর্যন্ত ছাত্ররা  মিটিং করছে, মিছিল করছে  রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করেছে, সব স্বাভাবিক ছিল। এই ঘোষণার পরদিন ঢাবির ক্যাম্পাস রণক্ষেত্র! ছাত্রলীগের কাজ এইটা? ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসের আরেকদিকে মিটিং করত, মিছিল করত। ক্যাম্পাসে  তারাও আছে  এইটা  থাকলেই চলত। ওরে  নায়ক রে! এই সূত্রপাত হল। অ্যাটম  ফিউশনের মতো  তা শুধু বেড়েই  গেছে, থামাথামি নাই। ওবাইদুল কাদের কেন হুট করে এমন মন্তব্য করেছিল তার খোঁজ নেওয়া উচিত না? 

    এই ঘটনার আগের কিছুদিনের ঘটনা গুলো দেখলে একটু বুঝা যাবে হয়ত। ঈদে সরকারি এক কর্মকর্তার ছেলে ১৫ লাখ দিয়ে ছাগল কিনতে গেছে! কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে অজগর বের হওয়া শুরু হল। হাজার কোটি টাকার কারবার।  এর আগে বেনজিরের কেলেঙ্কারি বের হল, সাবেক সেনা প্রধানের নানা কিচ্ছা বের হল। এগুলা নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই  দেশের ইতিহসের সেরা কেলেঙ্কারি বের হল। বাংলাদেশ পাবলিক  সার্ভিস কমিশনের তত্ত্বাবধানে যত পরীক্ষা হয়, সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগের যত পরীক্ষা তার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে আসছে গত ত্রিশ বছর ধরে! নব্বইয়ের দশকে যে প্রশ্ন কিনে বিসিএস ক্যাডার হয়েছে সে এখন সরকারের কোন পদে থাকতে পারে? নিশ্চিত ভাবেই খুব খুব উঁচু কোন জায়গায় আছেন তিনি! পিএসসির চেয়ারম্যানের ড্রাইভার ক্যামেরার সামনে স্বীকারোক্তি দিচ্ছে যে প্রশ্ন ফাঁস করে  যা কামাই  করেছে সব আল্লার রাস্তায় খরচ করেছে। গাড়ি চালকের ছেলে দেশ সেরা দামী গাড়ি চালায় দুইটা! এই গাড়ি চালক এই কাজ করেই কোটি কোটি  টাকা কামাই করেছে। যারা উপরের দিকে বসে আছেন তারা কত  পেয়েছেন?  কত কামাই করেছেন? এই খোঁজ গুলো নেওয়ার আগেই পুরো দেশ মাতাল হয়ে গেল কোটা নিয়ে! হাস্যকর একটা বিষয় নিয়ে আন্দোলন, জীবন দেওয়া, জীবন নেওয়া! আমি বলছি না আমার কথাই ঠিক, আমি একটা চিন্তার খোরাক দিলাম  শুধু। নব্বইয়ের দশকে একজন প্রশ্ন যৌতুক হিসেবে  দিয়েছেন।  প্রশ্ন দিয়ে মেয়েকে বিয়ে করিয়েছেন, ভদ্রলোক শুধু  নিজে ক্যাডার হবেন? নিজের বোনকেও ক্যাডার বানিয়েছেন। এই যে শ্বশুর জামাই তারা যে পর্যায় আছেন  তারা পারে না এমন কোন কাজ সম্ভবত বাংলাদেশে নাই। এদের নাম পরিচয়  আসার আগেই এমন কাণ্ড হতে হল? 

    বাংলাদেশের দুর্নীতি ধরা  খুব মুশকিল। কারও নাম সামনে এসে গেলে, কেউ রাম ধরা খেলেই একমাত্র বিচার হয়, অন্তত বিচারের চেষ্টা করা হয়। এখানে এক ডিপার্টমেন্টের লোক অন্য ডিপার্টমেন্টের আকাম কুকামের  খবর জানে। এ ওকে সাহায্য করে ও করে একে! মিলেমিশে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ! এখানে হারার প্রশ্নই নাই। এই যে সব ডিপার্টমেন্ট মিলেমিশে খাওয়া এগুলাকে ধরবেন কেমনে? আর অন্য চাকরি তো আছেই বিসিএসের প্রশ্ন কিনে যে সরকারের কর্মকর্তা হয়েছেন তাকে  এখন কীভাবে খুঁজে বের করবেন? 

    যদি সব স্বাভাবিক হওয়ার পরে প্রশ্নপত্র ফাঁস, জড়িতদের শাস্তি, যারা প্রশ্ন কিনেছে তাদের নাম প্রকাশ্যে আসে তাহলে আমি ধরে নিব আমার হাইপথিসিস ভুল ধরে নিব। আর যদি দেখি এই বিষয় গুলো জাস্ট হারিয়ে গেছে, কেউ কোন সাড়াশব্দও করছে  না  এগুলা নিয়ে তাহলে আমি আমার এই হাইপথিসিসে অনড় থাকব। আমি ধরে নিব প্রশাসনের বিশাল সংখ্যক কর্তা ব্যক্তিদের বাঁচানোর জন্য দেড় দুইশ জনের বলি নেওয়া হল! 

    আমি জানি এগুলা পাগলের প্রলাপের মতো। কারণ আসলেই তাই হয়ত।  কারণ কেন এই আন্দোলন হল আর গণ্ডগোল হল এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই আমাকে বলেছে এইটা শেখ হাসিনার ইগোর কারণে, গুয়ারতুমির জন্য! এখানেই আমার হিসাব মিলে না। এই মহিলা সম্ভবত এই সময়ের অন্যতম সেরা রাষ্ট্র নায়কদের মধ্যে একজন! বাড়িয়ে বলছি মনে হচ্ছে? আমার কাছে তা মনে হয় না। এই মহিলা এই পিচ্চি দেশে বসে রাশিয়া থেকে সাহায্য নিয়া আসে, ভারতকে বন্ধু হিসেবে  রাখে আবার চীনের সাথেও মধুর সম্পর্ক বজায় রাখে। অন্যদিকে আমেরিকার চোখ রাঙ্গানিকে থোড়াই কেয়ার না করে  একটার পর একটা রাজাকারদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছেন! একক ক্ষমতা তাঁকে ধীরে ধীরে দানবে পরিণত করছে কি না জানি না।  কিন্তু তিনি বোকা, আবেগে, ইগোর বসে ছাত্রদের সাথে এমন আচারন করেছেন এইটা আমি বিশ্বাস করি না। আমার ধারণা  পুরোটাই সুচিন্তিত চালের অংশ। 

    আমি তখন ঢাকা থাকি। সংসদ ভবনে যাওয়ার দাওয়াত পেলাম। আমাদের শেরপুরের এমপি সংসদের হুইপ। তিনি আমাদেরকে ডাকলেন, আমরা যারা শেরপুরবাসি ঢাকা থাকি তাদেরকে। আমি সংসদের ভিতরে ঢুকতে পারব এই লোভে চলে গেলাম। যেখানে মন্ত্রীরা মিটিং করে এমন একটা বিশাল বড় রুমে আমাদেরকে বসানো হল। সবাই তাঁকে তেল দিচ্ছে! তিনি তা  উপভোগ করছেন। নানাজনে নানা কথা বলছেন। তখন, ২০১৪ সালের কথা, তখন তিনি সেখানে একটা কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন মাহাথির মোহাম্মদকে দেখছেন না? আমরাও তেমনই করব, ওইটাই ফর্মুলা!  আমি ভাবলাম বাহ! খারাপ কী! বাংলার মাহাথির মোহাম্মদ যদি শেখ হাসিনা হয় তাহলে ক্ষতি কী? 

    আমরা গরিব, গরিব একটা মাহাথির মোহাম্মদ পেয়েছি! এরচেয়ে ভালো কিছু আর কপালে নাই আমাদের! খুশি থাক, ভালো থাক প্রিয়! 

    রাত .২৭ মিনিট   

    কারফিউ - চতুর্থ রাত 
    ইন্টারনেট ছাড়া পঞ্চম রাত
    ২৩.০৭.২০২৪ 

    কারফিউ চলমান। আজকে প্রথম আর্মির গাড়ি দেখলাম, এই কয়দিন শুধু শুনেছি আর্মি আমাদের জেলা সদরেই ঘুরাফেরা  করছে। আজকে রাস্তায় যেতেই হুশ হুশ করে পাঁচ সাতটা গাড়ি ধাই করে চলে গেল। পথচারী সব অ্যাটেনশন হয়ে রাস্তার দুইপাশে দাঁড়িয়ে গেল। তিনারা চলে গেলেন কই জানি আল্লা মাবুদ জানে! 

    আজকে দুপুর দুইটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। বের হয়েছিলাম। পত্রিকার খোঁজ করলাম।  প্রথম আলো লিখেছে এই কয়দিনের সংঘর্ষে ১৭০ জন মারা গেছে। এবং এটাও  জানিয়েছে যে তারা এখনও সকল হাসপাতাল ক্লিনিক গুলোতে খোঁজ নিতে পারেনি। মানে হচ্ছে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। আমি ভেবেছিলাম কারফিউ শুরু হয়ে গেলে, রাস্তায় আর্মি থাকলে গণ্ডগোল হয়ত কমে যাবে। কমেছে কিন্তু থামছে না! থামছে না কেন? এইটাই তো ভয়ংকর অবস্থা। বেপরোয়া হয়ে আর্মির সাথে লড়াই করতে গেলে সর্বনাশ না? লাশের সংখ্যা বাড়বেই শুধু। সরকার এই কারণেই ইন্টারনেট দিচ্ছে না। মানুষ অসহ্য হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই শুনছি ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছে। মফস্বল শহরে, গ্রামে ইন্টারনেট ছাড়াও জীবন চালিয়ে নেওয়া যায়, ঢাকায় অসম্ভব। ফ্ল্যাট জীবনে যদি নেট না থাকে, টিভি  না থাকে তাহলে এই ফার্মের মুরগির মতো জীবন গুলো কি করে বাঁচবে? 

    সকালে দেখলাম টিভিতে বাইডেন আমেরিকার নির্বাচনে প্রার্থিতা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কমলা হারিসের নাম আসছে সামনে! এ এক ঐতিহাসিক কাণ্ডই হবে যদি কমলা হারিস জিতে। ট্রাম্প আবার বলেছে কমলাকে হারানো তার জন্য সহজ হবে। আইন কানুন বুঝি কম, ক্যাপিটাল হলে আক্রমণে জড়িত থাকার তথ্য প্রমাণ থাকার পরেও ট্রাম্প নির্বাচন করতে পারবে? আসত আমাদের দেশে! চার পাঁচশ মামলা দিয়ে দশ পনেরোটায় এমন রায় আসত যে আগামী কয়েকশ বছরে তাদের কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতেই পারত না। 

    অন্য দেশের নির্বাচনের খবর শুনে, পড়ে ভালোই লাগে। ভারতে নির্বাচন হয়ে গেল। কী দারুণ! আমরাই পরে গেছে  গ্যাঁড়াকলে! উদ্ধারের কোন সম্ভবনা নাই। না, এমন না যে আওয়ামীলীগ নানা ছলাকলায় থেকে যাচ্ছে, সব দোষ আওয়ামীলীগের। ব্যাপারটা অনেকাংশেই বরং উল্টো। আওয়ামীলীগ বিশেষ করে যদি নির্দিষ্ট করে বলি শেখ হাসিনা উনার চারপাশে অন্ধকার করে রেখেছেন। উনি নাই এরপরে আর কিছু নাই! উনি  দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছেন, এই নষ্ট, পচে গলে যাওয়ার মতো একজনেরও কাছাকাছি কেউ নাই! বিপদ হচ্ছে এইটা। যাদের জনগণের পাশে এই সময় থাকার কথা তারা আমাদেরকে এবং নিজেরা আওয়ামীলীগের দয়ার উপরে ছেড়ে দিয়েছেন। এমন অদ্ভুত সমস্যার সমাধান কী?

    ১৭০ জন মারা গেছেন! এইটা কতটা দুঃখজনক কীভাবে বুঝাই! শুরুতে যখন পরিস্থিতি ঘোলা হচ্ছিল তখন আমি কিছু ছাত্রদের বলেছিলাম কী কী হবে, কতদূর গেলে সরকার কতদূর যাবে, কী করবে? আমি যেন দিব্য দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছিলাম কিসের পরে কী হবে। মোটামুটি সবই মিলে গেছে। তখন তাদেরকে বলেছিলাম, সরকার পক্ষেরও কয়েকজনকে বলেছিলাম যে আর্মি সরকারকে উদ্ধার করবে। সরকার পরে যাওয়ার আগে সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করবে। এবং এতে করে হয়ত টিকেও যাবে।  কথা হচ্ছে এতে যত সংখ্যক লাশ পড়বে সেই লাশকে পারিয়ে কীভাবে আমাদের মতো মানুষের সমর্থন পাবে? আমরা তখন করব কি? এত এত লাশ অস্বীকার করে অন্ধের মতো এরপরেও বলে যেতে হবে বিকল্প নাই? আপনিই শেষ আশা ভরসা! ১৭০ জন মারা গেছে! যা আগে অনুমান করছিলাম, আশঙ্কা করেছিলাম তাই ঘটে গেছে। যে প্রশ্নের ভয় পাচ্ছিলাম সেই প্রশ্নই এখন সামনে! মুখ তিতা লাগছে, কী করা উচিত আমাদের? নৈতিক সমর্থন দেওয়ার কোন যুক্তি আছে? 

    আমি পক্ষ নিতে চাচ্ছি না। আসলে আমি পক্ষ নেই নাই কখন। আমি নিজেকে দর্শক হিসেবে দেখি। দেখি যাই শুধু। নিজের জ্ঞানে যা বুঝি তাই বলি। এখানেও, মধ্য রাত হলে লেখার ভূত চাপে তাই লিখতে বসে যাই। ইন্টারনেট নাই, সময় নষ্ট করার কোন উপায় নাই। তাই লেখার আগ্রহ আরও বেশি। লিখে রাখছি ভাবনা গুলো। কোনদিন হয়ত কোথাও প্রকাশ হবে। লিখতে লিখতেই নানান চিন্তা আসে, লিখতে থাকি তাই। সারাদিনের নানান ভাবনা হাজির হয় এই সময়ে। এখন হচ্ছে সেই প্রশ্ন! আমি, আমার মতো যারা আছে তাদের পক্ষে এই মুহূর্তে কী করা উচিত? 

    এই অবস্থায় চট করে বিরোধিতা তো করাই যায়। সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু আমি কী সোজা চোখে যা দেখা যাচ্ছে তাই দেখাব শুধু? সরকার বলছে, আজকে টিভিতে দেখলাম প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের সাথে দেখা করেছে, সেই সংবাদে দেখলাম তিনি বলছেন জামাত শিবির এই তাণ্ডবের জন্য দায়ী। জামাত শিবির ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে। প্রশ্ন হচ্ছে আগে পানি ঘোলা করল কে?  প্রধানমন্ত্রী বলছেন এবার তিনি জামাত শিবিরের শেষ দেখে ছাড়বেন! নিষিদ্ধ করা হবে? এইটা তো কতদিনের দাবী আমাদের। কেন এতদিনে করা হল না? 

    জামাত শিবির যে এই আন্দোলনে ছিল এইটা তো মিথ্যা না। আমি নিজে একটা মিছিলের ভিডিও দেখছি যেখানে স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল জাতির পিতা ইব্রাহিম, বঙ্গবন্ধু ঘোড়ার ডিম! এই ধরণের স্লোগান কারা দিতে পারে? কিসের আন্দোলন, কিসের কী এরা পৌঁছে গেল বঙ্গবন্ধু পর্যন্ত! এই যে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করার চেষ্টা এইটাই তো থমকে দাঁড় করিয়ে দেয় আমাদের। সবাই বলে আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ব্যবসা করছে। হয়ত সত্য বা হয়ত না সত্যই। এর জবাব কী হবে? আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা করছে আর এর জবাবে আর সবাই কী করছে? আর সবাই ধরেই নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ আর আওয়ামীলীগ যেহেতু পরিপূরক তাই আওয়ামীলীগের বিরোধিতা করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে! এতে সুবিধা আওয়ামীলীগ আরও বেশি করে নিচ্ছে। সব দোষ আওয়ামীলীগের! 

    চাকরির কোটার জন্য এই প্রজন্ম মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করতেও ছাড়ে নাই। সমস্ত কিছুর বাহিরে এইটাও মনে থাকবে আমার। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার আগে, ৭৫ সালের পর থেকে এই দেশে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বলা যেত না। কতজন মুক্তিযোদ্ধাকে মারা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপ্রধানের সময় তার কোন হিসাবও পাওয়া যায় না। এরপরে আওয়ামীলীগ যখন ক্ষমতায় আসল তখন তারা মুক্তিযুদ্ধকেই হাতিয়ার হিসেবে নিলো। শেখ হাসিনা না থাকলে রাজাকারদের বিচার এই দেশে অসম্ভব ছিল। আমার মনে হয় একেকজন একেকটা কাজের জন্যই দুনিয়ায় আসেন। কাজ সমাধা হয়ে যাওয়ার পরে বাকি সময় আর নষ্ট না করে উপভোগ করে যাওয়া উচিত। শেখ হাসিনা সম্ভবত এই একটা কাজের জন্যই টিকে ছিলেন, সবাই চলে গেলেও তিনি সমাধান করেই ছেড়েছেন। কিন্তু তারপর? সবচেয়ে  দুঃখজনক হচ্ছে এখন সরকারের পতন হলে এমন একটা আন্দোলনের ফলে পতন হবে যেখানের স্লোগান ছিল তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার! অনেকেই এইটাকে আয়রনি বলার চেষ্টা করছে। আসল আয়রনি তো হবে এইটা যদি এই আন্দোলনে সরকারের পতন হয়! যে শাহবাগ উত্তাল হয়েছে তুমি কে আমি কে বাঙালি বাঙালি বলে, যেখানের বিখ্যাত স্লোগান ছিল কাদের মোল্লা কাদের মোল্লা তুই রাজাকার তুই রাজাকার! তুই রাজাকার থেকে আমি রাজাকার, এইটাই দুনিয়ার সেরা আয়রনি! সরকার পতন হলে এই আয়রনি তাকে অতিক্রম করবে। এগুলা লাগে বুকের মধ্যে। আমি জানি অনেকেই আমাকে কনট্যাক্স বুঝাবে, কেন বলছে বুঝাবে, কিন্তু আমার মাথা আউলায় যায়, আমি কী করব!  

    কিন্তু আবার ঘুরে ফিরে আমি সেই প্রশ্নের সামনে! তাই বলে ১৭০ জন লাশ! সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে রেখেছে। যেদিন যখন ইন্টারনেট চালু হবে তখনই আমি কিছু হৃদয়বিদারক ছবি দেখতে পাব। স্কুল কলেজের বাচ্চা কোন ছেলের লাশ, সেই লাশ নিয়ে বিহ্বল চোখে মায়ের দৃষ্টি! রক্ত মাখা শার্ট! পুলিশ আর্মির নানান বর্বরতার ভিডিও! কিংবা গুলি খাওয়া ছবির পাশে আগের তোলা হাস্যজ্জল কোন তরুণের ছবি! আমি চিন্তা করে এখনই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। মানুষ কীভাবে যে সহ্য করবে কে জানে। তখন সরকার এদেরকে আবার কোন তরিকায় নিয়ন্ত্রণ করবে কে জানে।  তখন তো এই প্রশ্ন আরও বড় হয়ে সামনে আসবে! আবার শুধু যে এইসবই আসবে তাও তো না। আন্দোলনকারীরাও সীমা অতিক্রম করেছে বহু জায়গায়  বহুভাবে। পুলিশ যে কতজন মারা গেছে তার না কি কোন হিসাব নাই। যাত্রাবাড়ীতে দুইজন পুলিশকে মেরে  ঝুলিয়ে রেখেছিল!  আরও কত কত দৃশ্য যে আসবে সামনে।  বাঁচার উপায় হচ্ছে অনলাইনেই না ঢোকা,  ফেসবুক টুইটারে না  যাওয়া। উট পাখির মতো বালিতে মুখ গুঁজে পুরো দুনিয়াকে অস্বীকার করে টিকে থাকা। দেখি নাই তাই জানি  না  কিছু! 

    পাইরেটস অফ ক্যারাবিয়ানের একটা সিনেমায় দুই জলদস্যু নৌকায় বসে আছে, একজন  কিছু একটা পড়ার চেষ্টা করছে। দ্বিতীয়জন তাকে বলল আরে তুই তো পড়তেই জানোস না,  ওইটা নিয়া কী করস? জলদস্যু উত্তর দিল আরে এইটা বাইবেল, এইটা পড়ার চেষ্টা করলেও সোয়াব আছে! আমরা সুখ কী জিনিস জানি না, সুখের ভান করেই আশা করছি কেউ আমাদেরকে সুখে থাকার কৃতিত্ব দিবে!  হায় জীবন, হায় বাংলাদেশ! 

    গতকালের ভালো খবর হচ্ছে জ্যোতিরা থাইল্যান্ডের সাথে সাত উইকেটে জিতেছে। এশিয়া কাপ চলছে। প্রথম ম্যাচ হেরেছিল ওরা শ্রীলঙ্কার সাথে। এই ম্যাচ জিতে সেমি ফাইনালের পথ পরিষ্কার থাকল। টিভিতে খেলা দেখলাম। জ্যোতিকে দেখলাম।  সব ঠিক থাকলে এবার দেশের মাটিতে হতে যাওয়া টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপেও জ্যোতিই নেতৃত্ব দিবে দলকে। নেট নাই, ওর সাথে কথাই বলতে পারছি না।  না হলে বলতাম ওকে যে এমন কালো একটা সময়ে উদযাপনের কোন উপলক্ষ যদি ওরা এনে দিতে পারত তাহলে জাতি হয়ত স্বপ্ন দেখাটা বন্ধ করত না। এশিয়ার সেরা হওয়ার সক্ষমতা তো আমাদের মেয়েদের আছেই।  এবার হলেই সমস্যা কী? একটা  উপলক্ষ  খুব জরুরি এই সময়। জ্যোতিরে,  বাংলাদেশ আশীর্বাদ দিবে তোদেরকে! 

    রাত .০০ মিনিট। 

    কারফিউ - পঞ্চম রাত
    ইন্টারনেট ছাড়া ষষ্ঠ রাত
    ২৪.০৭.২০২৪ 

    আজকে কারফিউ শিথিল ছিল দুপুর একটা থেকে তিনটা পর্যন্ত। কারফিউ শিথিল করলেও ওই অল্প সময়ের জন্য দোকানপাট খুলছে না কেউ। দুই একটা  খুলছে কিন্তু শহর নিষ্প্রভ। কেমন জানি মরা মরা অবস্থা। 

    ঢাকা চট্টগ্রামের কিছু জায়গায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট দিয়েছে। শেরপুরেও কিছু সময়  না কি  ছিল শুনলাম। আমি  বুঝতেই পারিনি কোথা দিয়ে এসে কোথা দিয়ে চলে গেছে। ওই অল্প একটু সময়ের জন্য আসা নেটেই না কি মানুষ ভিপিএন দিয়ে ফেসবুকে ঢুকে প্রলয় কাণ্ড করে ফেলছে! সরকার এইটাই ভয় পাচ্ছে। অদ্ভুত হলেও সত্য যে সরকার ফেসবুককে ভয় পাচ্ছে। কালকে আমি যা লিখেছিলাম, মানুষ নেটের সুযোগ পাওয়া মাত্র নিজেদের সব বক্তব্য নিয়ে হাজির হবে, ঝাঁপিয়ে পড়বে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ার জন্য। সরকার এইটাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে জানে না। বা সেই পদ্ধতিই খুঁজছে, উত্তরণের উপায়ই হাতড়ে বেড়াচ্ছে। 

    আমার ধারণা জোরেশোরে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্টের ছবি ভিডিও, পুলিশ মারার ছবি, ভিডিও প্রচার শুরু করবে সরকার। মুশকিল হচ্ছে সরকার আস্থা হারিয়েছে। সত্য বললেও বিশ্বাস করবে না কেউ। এমনেই  জনপ্রিয় সরকার না বর্তমান সরকার। তার মধ্যে এমন একটা ম্যাসাকার করে জনপ্রিয়তা আরও হারিয়েছে। এই বন্ধুর পথ  পারি দেওয়া কঠিন হবে  এবার। কালকে  সরকার বিদেশি কূটনীতিকদের  নিয়ে যেখানে যেখানে রাষ্ট্রীয় ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে সেখানে নিয়ে যাবে। ঘুরিয়ে দেখাবে। বিদেশিদের বুঝানো হবে  কেন কীভাবে কী হয়েছে। 

    এইটা করার দরকার পরছে  কারণ ডক্টর  ইউনুস না কি কোথায় কলাম লিখেছে, সেখানে তিনি বিশ্ব নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন! পররাষ্ট্র  মন্ত্রী এইটাকে দেশদ্রোহিতা বলে মন্তব্য করেছেন! পাশের দেশের মমতা ব্যানার্জিও কী জানি মন্তব্য করছেন বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে। দেশের চাপ থেকে বৈদেশিক চাপ বড় চাপ। সরকার দেশে তো মেরে ধরে সব লাইনে আনছে।  বিদেশিদের কে  কীভাবে বুঝ দিবে? সেই জন্যই মনে হয় শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা। 

    আমিও সরকার যা বলছে তা  বিশ্বাস করছি না। কিন্তু এইটা ঠিক না। তারা  যে কথা বলছে তা খতিয়ে দেখা উচিত।  কারণ আজকে সংবাদে বেশ কিছু অডিও ক্লিপ শুনলাম, ম্যাসেজের স্ক্রিনশট দেখলাম। শিবির নেতাদের কথাবার্তা, স্ক্রিনশট সব।  সরাসরি  বলছে সবাই  কখন কোথায় থাকবে,  কী করতে হবে। তাদের পরিকল্পনা ছিল ব্যাপক। মধ্যপ্রাচ্য থেকে টাকা আসছে।  ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে, কোন এলাকাকখন দখল হবে, আগের দিন কে কোন  সাফল্য পেয়েছে এই সব পাওয়া যাচ্ছে তদন্তে। এমন  করে  যদি  ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার  করে কেউ সরকার পতনের আন্দোলন করে তাহলে  সেই আন্দোলন প্রতিহত করা কঠিন। 

    মন্ত্রী বলল আজকে সরকার আগে আক্রান্ত হয়েছে পরে  আত্মরক্ষা করতে গিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এইটা সম্ভত পুরোপুরি সত্য না। তবে এইটা সত্য যে এমন একটা  আয়োজন করে রেখেছিল বিরোধী পক্ষ আর তার কোন কিছুই সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা জানত না। কই ঘুমিয়ে আছিল কে জানে! এখন কেউ কেউ বলছে শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে!  এত বড় আয়োজন অথচ গোয়েন্দা সংস্থা কিছুই জানে না! জানলে জিনিসটা দানা বাধার আগেই শেষ করে দেওয়া যেত না? তথ্য আগে জানার মানে কি যদি  বিপদ থেকে উদ্ধারই না  করা গেল? 
    মধ্য প্রাচ্যে মানে আরব আমিরাতে এক কাণ্ড করেছে এই দেশের মানুষ। ওইখানে  সমাবেশ করেছে এবং গণ্ডগোল করেছে। পঞ্চাশ জনের উপরে পুলিশ ধরেছে, সাময়িক ভাবে ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য। সৌদিতেও না কি এমন কাণ্ড করেছে বাংলাদেশিরা। কী অদ্ভুত এক জাতি!

    ঢাকার বাহির থেকে বুঝা মুশকিল  ঢাকায় কি চলছে। আমার এক বন্ধু  গাড়ি নিয়ে শেরপুর থেকে ঢাকা গেছে গতকাল। দুইশ কিলো রাস্তা ও তিন ঘণ্টায় চলে গেছে। কোন গাড়ি নাই, রাস্তা ফাঁকা। ও বলল গাজীপুর চৌরাস্তা পার হওয়ার পরে শুধু আগুনের চিহ্ন। বিআরটিয়ের নতুন রাস্তার যাত্রী ছাউনির জন্য এলিভেটর এনেছিল, কয়েকটা লাগিয়েছিলও। আর কিছু এনে রাখছিল লাগাবে বলে। সব পুড়ে শেষ! পুরো রাস্তায় এখনও তাণ্ডবের চিত্র আছে। রাস্তা থেকে ইট পাটকেল কিছুই সরানো হয়নি। ওর কাছে মনে হচ্ছিল যুদ্ধ বিধ্বস্ত কোন এলাকায় প্রবেশ করছি যেন ও! 

    গণ্ডগোল শুরুর পাঁচদিন পরে যাত্রাবাড়ী এলাকা উদ্ধার করতে পারছে প্রশাসন। এইটা দিয়ে বুঝা যায় গণ্ডগোলের তীব্রতা। ঢাকার একটা জায়গা আন্দোলনকারী (!)  হাত থেকে ফেরত পেতে পাঁচ দিন লাগছে, এবং এতে সেনাবাহিনীর সাহায্য লাগছে! এরা কী করতে চাইছিল?  অবিশ্বাস্য না এইটা? যাত্রাবাড়ী উদ্ধার হওয়ার পরে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক খুলে দেওয়া হয়েছে। কালকে সেনা প্রধান যাত্রাবাড়ী এলাকা ঘুরে দেখেছেন। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছেন। বলেছেন ক্ষোভ থাকতে পারে কিন্তু তার বহিঃপ্রকাশ রাষ্ট্রয়, জনগণের সম্পদ নষ্ট করা হতে পারে না। 

    আজকে রায় অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এখন থেকেই এই প্রজ্ঞাপন কার্যকরী হবে। মানে কালকে থেকে যে সরকারি নিয়োগ পরীক্ষা হবে সেখানেই এই বিধি প্রয়োগ হবে। এর ফলে ঐতিহাসিক এক অধ্যায় পার করল বাংলাদেশ। মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতি নিয়ে একটা ক্যাচাল ছিল, সেটাও শেষ, কোটা পাবে শুধু মাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা। পাঁচ শতাংশ দেওয়া হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, বলা হয়েছে এইটা তাদেরকে সম্মান করে দেওয়া হয়েছে। এক শতাংশ পাবে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী, এক ভাবে পাবে প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ। নারী আর জেলা কোটা বাদ পড়ল। নারী কীভাবে বাদ পড়ল বুঝলাম না। আইন মন্ত্রী দেখি বলছে আন্দোলনকারী নারীরা আন্দোলন করার সময় বলেছে যে তারা নারী কোটা চায় না টাই বাদ দেওয়া হয়েছে! এগুলা হচ্ছে রাগের প্রকাশ! আন্দোলন করছস দিলাম না কোটা! এইটা অবশ্যই দরকার ছিল। 

    পরিস্থিতি কেমন যাচ্ছে তা লিখে কতখানি বুঝাতে পারছি জানি না। গুমট একটা পরিবেশ। যে যার সুবিধা মতো গল্প বানাচ্ছে, ছড়াচ্ছে। সত্যের চেয়ে গুজব বেশি চলে এখানে। ভারতকে দিয়ে দিল দেশ, ভারত নিয়ে নিলো ইত্যাদি তো পুরাতন গুজব। এগুলা এখন নতুন করে রঙ মেখে হাজির হচ্ছে। মানুষ বিশ্বাসও করে এগুলা। খালেদা জিয়া মরে গেছে, সরকার এইটা প্রকাশ করতে দিচ্ছে না! কারণ এতে গণ্ডগোল আরও বেড়ে যাবে। ম্যালা মানুষ এই গুজব খেয়েছে! 

    ঢাকায় জীবন যাপন কঠিন হয়ে যাচ্ছে এইটা মফস্বলে থেকেও বুঝছি। নিত্যপণের দাম লাফ দিয়ে বাড়ছে। পাইকারি বাজারে এক দর খুচরা বাজারেই আরেক দর। পাইকারিতে দাম কমছে কারণ যা আনছে তা বিক্রি হচ্ছে না। শাক সবজি নষ্ট হয়ে যাবে। অন্যদিকে খুচরাতে যে যেভাবে পারছে দাম আকাশে তুলে বিক্রি করার চেষ্টা করছে। দুইয়ের সমন্বয় কীভাবে হবে কে জানে! 

    তবে চাহিদা যোগানের নতুন নজির স্থাপন হয়েছে অভ্যন্তরীণ বিমান ভাড়ায়। ঢাকা রাজশাহীর বিমান ভাড়া ছিল সাড়ে তিন হাজার টাকা। এখন এমন পরিস্থিতিতে যখন যোগাযোগের অন্য মাধ্যম সব বন্ধ তখন বিমানের ভাড়া কত হতে পারে? সাড়ে তিন হাজারের টিকেট পাঁচ হাজার? দ্বিগুণ? সাত হাজার? না! বারো হাজার করে এখন সাড়ে তিন হাজার টাকার টিকেটের দাম! কোন বুক পিঠ নাই! চোখ বন্ধ কর কোপ! 

    আমার খালা খালুকে নিয়ে ঢাকায় আটকা পড়েছিল এক হাসপাতালে। খালুর চিকিৎসার জন্য গেছেন এবং গিয়েই ফেঁসেছেন। খালাতো ভাইও সাথে ছিল ও ফেঁসেছে আরেক জায়গায়। আর এদের মেয়ে ফেঁসেছিল  জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কী একটা অবস্থা। আমি  আমার খালাতো বোনের কাছ থেকে জাহাঙ্গীরনগরের খবর নিতাম। পরে  পরিস্থিতি এমন হল যে  কীভাবে বাড়ি ফিরবে  তার কোন ঠিক না। অবশেষে এরা পুরো পরিবার কালকে বাড়ি ফিরেছে। এখন পর্যন্ত আমার কেউ কোন ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া সবাই বাড়িতে  নিরাপদে আছে।  কিন্তু আমি জানি কতগুলা পরিবারে আর কোনদিন  আগের মতো সুখ বয়ে আসবে না। তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে বাকি জীবন পার করবে কতগুলো পরিবার। এই শোক সইবে কীভাবে জানি না। আমি আপনজনের স্বাভাবিক মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকেই মুক্তি পাই না, কুড়ে কুড়ে খায়  তাদের স্মৃতি। এই  অকারণে প্রাণ হারানো  ছেলে গুলোর পরিবার কীভাবে সহ্য করবে এই কষ্ট! ভাবলে আর কিছু ভালো লাগে না।   

    যুগে যুগেই সিংহাসনের জন্য যুদ্ধ হয়েছে আর প্রাণ গেছে সাধারণ মানুষের। সেই প্রাচীন কাল থেকেই এই রীতি। রাজা বাদশাও মরেছে কিন্তু তারচেয়ে শত শত গুণ বেশি মরেছে সাধারণ মানুষ। মুশকিল হচ্ছে আমরা সভ্য বলে নিজেদের দাবী করি এখন। 

    রাত .৪৮ মিনিট 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৪ জুলাই ২০২৪ | ৯৩৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • . | ২৪ জুলাই ২০২৪ ১৯:২৮535254
  • দিনলিপিটা সময়ের দলিল হয়ে রইল
  • r2h | 192.139.***.*** | ২৪ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩৯535255
  • এই লেখার অপেক্ষায় ছিলাম।
    এই দুর্যোগের মধ্যেও সময় নিয়ে লেখার জন্য কোন ধন্যবাদ ও সাধুবাদই যথেষ্ট না। গুজব, স্পেকুলেশন, বিদ্বেষ ও বিভেদের সুযোগসন্ধানী এজেন্ডার ভিড়ে অপেক্ষা করছিলাম কবে কখন ইন্টারনেট চালু হবে ও শরীফ কিছু লিখবে।

    মন দিয়ে পড়ছি।
  • Guru | 157.4.***.*** | ২৪ জুলাই ২০২৪ ২১:১০535262
  • আপনার সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে মেলেনা কিন্তু আজকে খুব ভালো লাগছে আপনাকে আবার লিখতে দেখে l ভালো থাকুন আর লিখতে থাকুন l
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:4a8e:36a:ca8d:***:*** | ২৪ জুলাই ২০২৪ ২১:৪৬535263
  • আমি সাধারণত কোন লেখা নিয়েই উচ্ছ্বসিত হই না। এটা নিয়ে হচ্ছি। এই রেকর্ডের দরকার আছে।
     
    আপনি আরো লিখুন। আপনার পরিচিতদের লিখতে উৎসাহিত করুন।
     
    জাফর ইকবাল কি বলছেন খবর পেলাম না।
  • | ২৪ জুলাই ২০২৪ ২৩:১১535268
  • জরুরী প্রয়োজপ্নীয় দিনলিপি। ভাল থাকুন যতটা সম্ভব।
  • কিংবদন্তি | ২৫ জুলাই ২০২৪ ০১:৪৩535275
  • দিনলিপির চেয়ে আমার চিন্তা ভাবনা সম্ভবত এখানে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। যেমন মনে হয়েছে লিখে গেছিলাম। বানান টানানে হাত দেওয়া দরকার ছিল, নেট থাকবে না ভয়ে যেমন ছিল অমনেই এখানে পোস্ট করে দিছি।  নেট এখনও আছে তবে খুব দুর্বল। কোনমতে টিকে আছে, শ্বাস নিচ্ছে এমন অবস্থা। 
     
    জাফর ইকবাল নতুন করে কী বলবে? উনার এক মন্তব্যেই ঝড় বয়ে গেছে। দেশের প্রায় সমস্ত অনলাইন বুক শপ ঘোষণা দিয়ে  উনার বই নামিয়ে দিয়েছে। তারা আর কেউ উনার বই বিক্রি করবে না। রকমারি, বুকস অফ বেঙ্গল সহ আরও অনেক গুলো। উনার আবেগ বুঝার চেষ্টা কেউ করেনি আবার উল্টো হচ্ছে উনি ছাত্রদের আবগে বুঝার চেষ্টা করেনি। 
    জাফর ইকবাল সম্পর্কে আমার মূল্যায়ন হচ্ছে  লোকটা আজীবন মানুষের গালি খেয়ে গেছে।  কেউই দেখতে পারে না। বাচ্চাদের জন্য বই লেখে।  আমরা উনার কিশোর উপন্যাস, কল্পবিজ্ঞানের বই পড়ে বড় হয়েছে। বড় হওয়ার পরে মুগ্ধ হয়ে উনার কলাম পড়েছি। আমার মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসার পিছনে উনার একক অবদান আছে। আমার চিন্তা চেতনা তৈরি করতে উনার লেখা সাহায্য করছে। আমি কতখানি উনাকে পছন্দ করি তা এইটুকু বললে বুঝবেন, ক্লাস নাইনে যখন রেজিস্ট্রেশন হয় তখন আমাদেরকে স্কুল থেকে একটা ফরম দিয়ে বলা হয়েছিল নাম পিতা মাতার নাম লিখে আনতে। এখানে যে নাম দেওয়া হবে আজীবন সেই নামই থাকবে। আমি মুহম্মদ জাফর ইকবালের নামের মতো করে দিলাম নিজের নাম মুহাম্মদ সাদেকুজ্জামান। উনার যে মুহম্মদ, মুহাম্মদ না এইটা আমি খেয়ালই করি নাই। অনেক পরে খেয়াল করছি যে আরে উনার নাম তো  মুহম্মদ! তখন খেয়াল করলে আমি মুহম্মদই দিতাম! 
    তো কথা হচ্ছে জাফর ইকবাল  সিলেটে যখন কোপ খেল তখন বা তারপরে উনার ভিতরে একটা পরিবর্তন আসল। উনি নিজে খেয়াল করেছেন কি না জানি না। তবে পরিবর্তন আসছে। বাংলাদেশে কেউই কোপ খেয়ে বেঁচে ফিরে নাই, উনি ফিরেছেন, এখন দুইজন না চারজন পুলিশ নিয়ে সব সময় ঘুরেন। এই যে ব্যাপারটা এইটা সরকারের প্রতি কঠোর হতে তাঁকে বাঁধা দেয়, হয়ত অজান্তেই দেয়।  উনার নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের অনশন ভাঙ্গানোর জন্য সরকার জাস্ট তাঁকে ব্যবহার করল! উনি একটা বইয়ে কষ্ট পেয়ে লিখেছেন যে কেউ যদি কথা দিয়ে কথা না রাখে তাহলে কী করতে হয় তা তিনি জানেন না। সরকার তাঁকে কথা দিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে গেছিল শাহজালালের ছাত্রদের অনশন ভাঙ্গানোর জন্য।  বিপদ শেষে সরকার ভুলে গেছে সব, একটা কথাও রাখেনি। উনি লিখেছেন শুরুতে ফোন দেওয়ার চেষ্টা করতেন, যে মন্ত্রীরা তাঁকে কথা দিয়েছিল তারা তাঁর ফোন ধরেন না এখন আর! 
    এই যে এত বড় একটা প্রতারণা হল উনার সাথে,  উনার পাশে কেউ নাই। উল্টা তাঁকে নিয়ে রসিকতা করে সবাই! জামাত শিবিরের পুলাপান আগে তাঁকে ব্যাঙ্গ করে ষাঁড় ডাকত। অদ্ভুত এক প্রজন্ম এসেছে তারা না বুঝেই শুধু মজা নেওয়ার জন্যই এখন তাঁকে ষাঁড় ডাকছে! আর এই আন্দোলনে  উনার ওই কথার পরে তো যারা নিজেদের মুক্তা চিন্তার অধিকারী বলত,  মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলত এমন মানুষও তাঁকে ষাঁড় বলে যাচ্ছে। কখন কোন ফাঁকে জামাতিদের ফাঁদে পড়ছে নিজেও জানে না এরা। হুমায়ুন আহমদেও যুদ্ধ করেনি অথচ মুক্তিযুদ্ধ না করার জন্য সব গালি খাইত হয় জাফর ইকবালের! কেন? এই  প্রশ্নেই সব উত্তর লুকিয়ে আছে। কিন্তু সবাই এখন ব্যস্ত ব্যা ব্যা করতে! 
     
    আমরা যখন বড় হই তখন বিএনপি জামাত ক্ষমতায়। ৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় তবুও দাপট ছিল বিরোধী দলের। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসল বিএনপি জামাত জোট। এইটা  বলে বুঝানো যাবে না যে একটা দল বা জোট জিতে এমন বিভীষিকা চালাতে পারে দেশ জুড়ে। শত শত হিন্দুদের বাড়িতে আক্রমণ হল, লুট হল, ধর্ষণ হল। পূর্ণিমা ধর্ষণ সেই সময়ের আলোচিত ঘটনা। যার মা ধর্ষকদের বলেছিল বাবারা তোমরা একজন একজন করে আস, আমার মেয়েটা ছোট! আমারা এই সব দেখে সহজেই আমাদের পথ  ঠিক করে নিতে পারছিলাম। ওই দল, ওই জোট আমাদের না এইটা পরিষ্কার বুঝে গেছিলাম। এর আগ পর্যন্ত  বুঝিনি, এইটা একটা দল ওইটা আরেকটা দল, এই তো! তীব্র ঘৃণা তৈরি করে দিতে সাহায্য করছিল সেই সময়ের জামাত বিএনপি জোটের সব কাজকর্ম। 
    এরপরে দেখলাম জামাতের শীর্ষ নেতাদেরকে মন্ত্রী বানানো হল। তারা আবার চিহ্নিত রাজাকার। আমার মনে আছে আমাদের শেরপুরের নিউ মার্কেট মোড়ে বিশাল জন সমাবেশ। কামরুজ্জামানের সাথে কে কে ছিল মনে নাই তবে আলী আহসান মুজাহিদ ছিল। তার সে কী আস্ফালন! সরাসরি হুংকার দিচ্ছিল মাইকে। এইটা ২০০৮ সালের নির্বচনের সময়ের ঘটনা সম্ভবত। আমাদের বিচার করবে? করেন কত সাহস আছে আপনাদের! এমন সব কথা। এগুলাও আমাদেরকে, আমাকে পথ খুঁজে নিতে সাহায্য করছে। এগুলা দেখে শুনে বড় হয়েছি। এখন আমার বুক সেলফে যত বই আছে তার মধ্যে অনেকখানিই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের উপরে বই। মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ার  কারণও জাফর ইকবাল। তিনি একটা লেখায় লিখেছিলেন যে অল্প বই পড়ে যদি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে চায় কেউ তাহলে এই চারটি বই পড়তে হবে, বলে তিনি চারটি বইয়ের নাম দেন। আমি যখন বই কেনা শুরু করলাম, তখন ওই লিস্ট ধরে চারটা বই কিনে নিলাম। এই শুরু হল আমার মুক্তিযুদ্ধের উপরে বই পড়া। 
     
    আমাদের প্রজন্মের অনেকের গল্পই এমন। কিন্তু সত্য হচ্ছে সময় বয়ে গেছে অনেকখানি। ২০০৮ সালে যে জন্ম নিয়েছে তার বয়স কত এখন? সে তো আগের কোন কথাই জানে না। তার জানার প্রয়োজন নাই। সে কেন আগে বিএনপি জামাত অত্যাচার করছে সেই গল্প শুনবে? সে দেখে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায়, নানা নয় ছয় করছে আওয়ামীলীগ। যে ছেলে ২০১৪ সালে এসএসসি দিয়েছে সে এখন কী করে? সে দেখে সব শোষণ আওয়ামীলীগই করছে। তাদের নেতারাই লুটপাট করে খাচ্ছে। সব দোষ আওয়ামীলীগের। এই প্রজন্মের কাছে বর্তমানটাই শেষ কথা। সর্বশেষ ১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের সময় কেউ কেউ আবার একটু চেতনা ফিরে পেয়েছিল। এরপরেও পার হয়ে গেছে প্রায় এক যুগ। তো যেটা হয়েছে তা হচ্ছে আমরা যেমন ওই সময় বিএনপি জামাত সম্পর্কে তীব্র ঘৃণা নিয়ে বড় হয়েছিলাম এখনকার এই বাচ্চা বাচ্চা পুলাপান এরা আওয়ামীলীগের প্রতি ঘৃণা নিয়ে বড় হচ্ছে, হয়েছে। হওয়ার ম্যালা কারণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, করবে না কেন?     
     
    বর্তমান এই পরিস্থিতি আরও তীব্র করে তুলল এই ঘৃণা। সরকার নতুন প্রজন্মের কাছে আর যেতে পারবে কি না আমার সন্দেহ আছে। মহা পরাক্রমশালি আওয়ামীলীগ সরকারকে এই যন্ত্রণা নিয়েই চলতে হবে। ২০৪১ সাল পর্যন্ত যে ভিশন দেখানো হচ্ছিল তাতে এই আন্দোলন বড়  ধাক্কা হয়ে লাগবে।  এবার কোনমতে উত্তরে গেলেও কতদিন টিকে থাকতে পারবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।  
  • . | ২৫ জুলাই ২০২৪ ০২:৩৩535276
  • শরীফ,
    একটা প্রশ্ন সরাসরি করছি। বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষ কেন এত তীব্র?
  • . | ২৫ জুলাই ২০২৪ ০২:৩৫535277
  • আরও একটা প্রশ্ন। ভারতবিদ্বেষ জলবন্টনের জন্যই কি?
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:4a8e:36a:ca8d:***:*** | ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৪:২৯535283
  • বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় এলে তারপর কি দাঁড়াবে? সংখ্যালঘুদের অসুবিধা হবে। বিজেপি ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব চালু করতে বেশ অনেকটা পাবলিক সাপোর্ট পাবে। যদি কংগ্রেসও ক্ষমতায় আসে ভারতের সাথে সম্পর্ক তো কিছুটা নষ্ট হবেই। কার সাথে সম্পর্ক ভাল হবে? চীন না আমেরিকা?
     
    বামপন্থী প্রগতিশীলরা চপারের কোপ খাবেন। কেউ কেউ বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে যাবেন তসলিমার মত। তারপর? 
     
    অর্থনীতির কি হবে? হাসিনার সময়ে অর্থনীতি কিছুটা ভাল হচ্ছিল বলেই শুনেছি। বিএনপি জামাতের আমলে কি হবে?
  • Guru | 157.4.***.*** | ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৬:৪৪535284
  • @সাদেক ,                                                                            আমি মনে করি শেখ হাসিনার আমলে সত্য সত্যই বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে l মাথাপিছু আয় , মোবাইল ইন্টারনেট , নারী শিক্ষা, পরিকাঠামো সব বিষয়েই অনেক উন্নতি হয়েছে l কিন্তু , সমস্যা হচ্ছে যে নতুন একটা শহুরে শ্রেণী উদ্ভব হয়েছে তাদের aspirations অনেক সময়েই এতো বেশী যে এখন এই প্রজন্মই দায়ী যা হচ্ছে তার জন্যে l
  • NRO | 165.124.***.*** | ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৬:৫২535285
  • DON'T WORRY. সরকার পড়ার chance zero. হাসিনা সরকার থাকবে। 
  • Guru | 157.4.***.*** | ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৬:৫৭535286
  • @শরীফ ,                                                                             বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আরো একটা খুব বাজে ব্যাপার হচ্ছে , দুই বিরোধী দল যারা একসময়ে নিজেরা হাতে হাত মিলিয়ে এরশাদের শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে , তারা একে অন্যকে একেবারেই সহ্য করতে পারবেনা l এটা কেন হয়েছে ? খালেদা জিয়া পৃথিবীতে না থাকলে কি দুই দলের সম্পর্কটা ঠিক হতে পারে ?  কি বলেন ? আমার মনে হয় , unfortunately মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে এমনভাবে দুটো মেরুতে পোলারাইজড হয়েছে বাংলাদেশ , যে আর কোনো উপায় নেই l কি বলেন? 
  • Guru | 157.4.***.*** | ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৮:১৮535292
  • @.,                                                                            ইন্টারনেট ও একটা বড়ো কারণ l ইন্টারনেটে নার্রাটিভের মাধ্যমে মানুষকে ভুল বোঝানো খুবই সোজা l অবশ্য নার্রাটিভের আর দোষ কি , গত দশ বছরে ভারতে বলিউড যেভাবে মুসলিম বিদ্ধেষ কে মেনস্ট্রিম করে তুলেছে , বলিউডের কাছে ত এখন বাঙালী মানেই "ঘুসপেটীয়া", তাতে বাংলাদেশ থেকে এন্টি হিন্দু  রিঅ্যাকশন আসা নর্মাল l                                                                           ভারতের কাছে হাসিনার কোনোই এখন বিকল্প নাই , বলাই বাহুল্য l 
  • কিংবদন্তি | ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৫:৪১535307
  • যোষিতা  দি, হিন্দু বিদ্বেষ তো সেই ১৯৪৭ সালেই বপন করা হয়েছিল। এরপরে ১৯৭১ সালে যখন সব মিলেমিশে গেল তখন সুযোগ আসছিল সব ভুলে এক হাওয়ার। আদি গ্রামীণ সমাজের মতো, যেখানে ধর্ম কখনই বড় প্রশ্ন হয়ে আসেনি। কিন্তু এরপরেই ১৯৭৫! বঙ্গবন্ধুকে নানা জায়গা থেকে চাপ দেওয়া হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধান থেকে তুলে নেওয়ার জন্য, তিনি রাজি হওন নাই। শত বাধার পরেও তিনি এই সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন। আর ১৫ আগস্টের ভোরেই রেডিওতে  বলা হয়েছে ইসলামিক রিপাবলিক অফ বাংলাদেশ! এই যে পিছনে হাঁটা, এই হাঁটাকেই পথ করে নিয়েছে পরবর্তীতে বিএনপি, এরশাদের জাতীয় পার্টি। জিয়াউর রহমান  বিসমিল্লাহ লাগিয়েছিল  সংবিধানে আর এরশাদ রাষ্ট্র ধর্মই প্রবর্তন করে বসল! এগুলা বললাম মানে হচ্ছে একটা পক্ষ সব সময়ই ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। হিন্দু বিদ্বেষকে জীয়েই রাখা হয়। বিএনপি মনে করে হিন্দুরা হচ্ছে আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংক। কাজেই তারা হিন্দুদের পক্ষে কিছু বলতে রাজি না।  বাবরি মসজিদ দাঙ্গার সময়  বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। দাঙ্গা হতে দিয়েছিল বিএনপি! 

    এই হিন্দু ট্যাগ থেকেই ভারত বিদ্বেষ। হিন্দুরা ভারতে এক পা দিয়ে রাখছে। হিন্দু মানেই ভারত প্রেম। এই যে  সরল ভাবে এমন করে বলে দেওয়া এইটা হিন্দুদের আরও  অসহায় করে ফেলে। তাই  ভারতের প্রতি টানও আসেই। আর আসলে এখানকার মানুষ খোঁচা দিবেই,  বলবেই কথা। 

    এইটা হচ্ছে একটা  দিক। ভিন্ন দিক যেটা তুমি বললাম, পানি বণ্টন, এইটা তো আছেই। আরও নানা কারণ আছে। যেগুলার অনেকগুলাই যৌক্তিক। সীমান্তে হত্যা। পশ্চিমবঙ্গের বা কলকাতাবাসীর কোন ধারণা নাই কি পরিমাণ মানুষ সীমান্তে হত্যা করা হয়। এমন পরিস্থিতি সম্ভবত পাকিস্তান ভারত সীমান্তেও হয় না। ডাটা দেখলে মনে হবে দুনিয়ার সবচেয়ে ভয়ংকর সীমান্ত হচ্ছে ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত। অথচ বন্ধু রাষ্ট্র বলে গলা ধরে জড়াজড়ি করছি আমরা। ফালানির ওই ঝুলন্ত লাশ বাংলাদেশের মানুষ জীবনেও ভুলবে  না। এই সব ব্যাপারে আমার নিজেরও ক্ষোভ আছে। বেশি ক্ষোভ হচ্ছে এই পাশের মানুষ যখন এই বিষয় নিয়ে প্রতি নিয়ত কথা বলে যাচ্ছে ঠিক সেই সময়  ওইপাশ থেকে নিরব, কেউ জানেই না কী হচ্ছে সীমান্তে। 

    বর্তমান সরকারও দায়ী।  সরকার যে তরিকায় টিকে আছে তা অনেকের পছন্দ না। অনেকটা ওপেন সিক্রেট হচ্ছে ভারতের সমর্থনেই সরকার  টিকে আছে। তাই সরকারের বিরোধিতা করার  জন্যও ভারত বিরোধিতা করতে হবে। 
    সর্বপরি বিএনপি জামাত তো আছেই, তারা ভারত বিদ্বেষকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে বহুকাল ধরেই। তাই এই বিদ্বেষ চালু থাকবেই, এরা কোনদিন মরতে দিবে না।    
  • কিংবদন্তি | ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৫:৪৭535308
  • একটু নেট পাওয়ার পড়েই গুজব তার কাজ  শুরু করে দিয়েছে। এক নম্বর গুজব হচ্ছে ঢাকায় এক ধরণের সাদা গাড়ি দেখা যাচ্ছে, সেখানর সবাই হিন্দিতে কথা বলছে! দুই নম্বর গুজব হচ্ছে ইন্ডিয়ান আর্মি ঢাকায় টহল দিচ্ছে। কেউ কেউ এই দাবীও করছে সেই ২০০৮ সালে বিডিয়ার বিদ্রোহের পর থেকেই ইন্ডিয়ান আর্মি সব নিয়ন্ত্রণ করছে, এরপর থেকে আর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাই! 
    তিন নাম্বার গুজব হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ মেরে ফেলেছে সরকার! হাজার হাজার লাশ কী করল, এদের বাপ মারা কেন নিজেদের সন্তানের খোঁজ করছে না, না কি তাদের সহ পুরো গোষ্ঠী ধরে খুন করে ফেলেছে সরকার তার উত্তর জানি না! 
    এমন হৃদয় বিদারক একটা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে এই সব গুজব উল্টা কাজ করছে, হাস্যকর করে ফেলছে সব! কিন্তু এদেরকে কে বুঝাবে! 
  • . | 194.56.***.*** | ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৬:০২535309
  • হ্যাঁ, এগুলোতো মোটামুটি জানা তথ্য।
    একটা দেশ, যার প্রায় পুরো সীমান্তই অন্য আরেকটি দেশ দিয়ে ঘেরা, অল্প কিছুটা মায়ানমার, বাকিটুকু বঙ্গোপসাগর, সেক্ষেত্রে কতকটা দমবন্ধ লাগেই। বুঝেছি।
    আমি কিবরিয়া র "আপন ঠিকানা" নিয়মিত দেখি, কিছুটা আঁচ করা যায়।
    সবই কেমন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
  • . | ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৬:২১535310
  • শরীফ,
    আমি সত্যিই জানিনা, কী ভাবে বোঝাবো যে ক্লস্ট্রোফোবিয়া জিনিসটা কখনও কখনও মানুষের মনের ওপর কেমন চাপ সৃষ্টি করে।
    হয়ত লোকজন শুনলে হাসবে, তবে ছোটো ছোটো দেশের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যদি সীমান্ত পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে যেতে পাসপোর্ট ভিসার ঝামেলা থাকে, তাহলে ক্লস্ট্রোফোবিয়ার ব্যাপার আছে মানুষের জীবনে। এই পৃথিবীর প্রচুর ছোটোছোটো দেশে এই freedom of movement এর সমস্যা নেই, আইনতঃ। ইয়োরোপে নেই, দেশগুলো সব ছোটো ছোটো, কিন্তু আশেপাশের দেশে যাতায়াত করবার জন্য সেরকম ঝামেলা নেই।
    আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যেও পারস্পরিক বোঝাপড়া আছে, খুব বেশি শত্রুতা বা যুদ্ধ না হল, তারা অবাধে যাতায়াত করতে তো পারেই, কিছু কিছু দেশের কারেন্সীও অভিন্ন, কতকটা ইয়োরোপের মত। মধ্য এবং দক্ষিণ অ্যামেরিকার মধ্যেও ছোটোছোটো দেশগুলো মিলে মিশে থাকে। তাদের ভাষাও মোটামুটি কাছাকাছি। আরব দেশগুলোর মধ্যেও টুকটাক সমস্যা কি দুমদাম মারামারি থাকলেও, এতটা কড়াকড়ি নেই সীমানা পেরোনোর। একটা গভীর ঘনবসতিপূর্ণ ছোটো আকারের দেশ বাংলাদেশ। প্রতিবেশি দুটিমাত্র দেশ, যেখানে যেতে হলে লালফিতের ফাঁস রয়েছে। নচেৎ ফেলানির মতো হবে; অথচ দেশদুটোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। কেমন একটা অক্সিমোরোন না?
  • Guru | 2409:4060:218d:bee3:85a8:9471:45f2:***:*** | ২৫ জুলাই ২০২৪ ২১:৪৪535334
  • @.,                                                                           খুব ভালো পয়েন্ট টা ধরেছেন l
  • . | ২৫ জুলাই ২০২৪ ২১:৫৩535336
  • অর্থনৈতিক বৈষম্যের জন্যই হচ্ছে। নইলে জনস্রোত একমুখী হবে। মোটামুটি ব্যালেন্স থাকলে হয়ত ফ্রীডম অফ মুভমেন্টটা করা যেত। ধর্ম টর্ম ফালতু যুক্তি।
  • . | ২৫ জুলাই ২০২৪ ২২:০৬535339
  • এদিকে বিজেপি বঙ্গভঙ্গের ডাক দিচ্ছে!
  • . | ২৫ জুলাই ২০২৪ ২২:০৯535340
  • পশ্চিমবঙ্গকে তিন টুকরো করবার মতলব। ভাবা যায় না!
  • কিংবদন্তি | ২৫ জুলাই ২০২৪ ২৩:০১535345
  • @.,  দুঃখিত, আমি উপরে ভুলে যোষিতা দিদিকে ম্যানশন করছি! 
    আপনি যে দৃষ্টিতে দেখছেন এইটা তেমনও না। আমাদের এদিকে সীমান্ত গুলো সম্পর্কে ধারণা না থাকলে মনে হবে এখান থেকে ভারত যাওয়ার জন্য বুঝি গুলি খাচ্ছে। এতে মনে হবে ঠিকই তো, অবৈধ ভাবে  আসবে কেন? কিন্তু আসলে ব্যাপার হচ্ছে এখানকার সীমান্ত গুলো আশেপাশে অনেকের বাড়ি, জমি আছে, চাষবাস হয়, গরু চড়ে। বেশির ভাগ সময় এরাই যাওয়া আসা করে। ফেলানির ক্ষেত্রেও  তাই হয়েছে। আরেকটা ক্ষেত্রে যাওয়া আসা হয় তা হচ্ছে চোরাকারবারি। এখন কেউ যদি চোরাকারবারি এক তরফ থেকেই সম্ভব, মানে ওইপাশের সাহায্য ছাড়া এপাশ থেকে একাএকাই করা সম্ভব তাহলে কিছু বলার নাই। কিন্তু আমরা জানি এইটা সম্ভব না। ওই পাশের লোকজনকে থামাতে পারছেন না গুলি মারা হয় শুধু এদিকের মানুষের। অর্থনৈতিক  বৈষম্য আছে, কিন্তু এর মানে এই না যে এখন বর্ডার ওপেন করে দিলে, ইউরোপের মতো করে দিলে সবাই দলে দলে ভারত রউনা দিবে। এইটাও একটা টিপিকাল চিন্তা ভাবনা। 
     
    যাই হোক, এই আলোচনা আসলে এখানে অপ্রাসঙ্গিক। কারফিউ ডাইরি লিখছি না এখন কিন্তু দেশে কারফিউ এখনও চলছে। মানসিক অবস্থা খুব খারাপ এখন। নানা ধরণের কথা শুনতে হচ্ছে। কবে ঠিক মতো শ্বাস নিতে পারব বুঝতেছি না, দম বন্ধ লাগে  শুধু।  
  • aranya | 2601:84:4600:5410:a8f4:7f0b:a309:***:*** | ২৫ জুলাই ২০২৪ ২৩:১০535346
  • শরীফ,  লেখা পড়ছি । তোমার মত মানুষ আরও অনেক থাকলে ভাল হত। 
    সাবধানে থাক। আর কিছু বলার নেই এই মুহুর্তে 
  • . | ২৫ জুলাই ২০২৪ ২৩:৩৭535355
  • আমিই তোর যোষিতাদিদি।
  • . | ২৫ জুলাই ২০২৪ ২৩:৪১535356
  • আমি চাই সীমান্তগুলো কাঁটাতারে মৃত্যুতে গুলিতে ভয়ের সীমান্ত না হয়ে থাকে। দুপারের মানুষই ভয় কাটিয়ে বাঁচুক। এতো সেই দুই জার্মানির মধ্যিখানে বের্নিল ওয়ালের মত হাল। সীমান্ত যদি ভুল করেও পার হয়, গুলি খেয়ে মরে যেতে হবে কেন? 
  • . | ২৫ জুলাই ২০২৪ ২৩:৪৩535357
  • বের্লিন
  • Guru | 2409:4060:218d:bee3:85a8:9471:45f2:***:*** | ২৬ জুলাই ২০২৪ ০১:৪৬535367
  • @.,                                                                           দুই বার্লিনের মধ্যে কোনোরকম থার্ড পার্টি ছিলোনা l এখানে দুই বাংলার মানুষের মধ্যে দিল্লি নামক একটা দুর্লঙ্ঘ প্রাচীর আছে l সেটি যতদিন থাকবার  ততদিন কাঁটাতারের বেড়াই শেষ কথা l
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন