২১ নভেম্বর, বাংলাদেশের জাতীয় সশস্ত্র বাহিনী দিবস। আগে পত্রিকায় দেখতাম রঙ্গিন ক্রোড়পত্র বের করত দৈনিক পত্রিকা গুলো। বিমান, ট্যাংক, সৈন্যদের ছবি, সবার উপরে থাকত সাত বীর শ্রেষ্ঠের ছবি। এইটা কেন জানি দেখি নাই। হয়ত বের করে কিন্তু আমি দেখি নাই। সশস্ত্র বাহিনী দিবস সম্পর্কে এই ধারণা ছিল আমার। আর দেখতাম পরেরদিন পত্রিকায় সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানের ছবি, বর্ণনা। এই একদিনে দেখা যেত বিএনপি আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টির নেতারা সবাই এক সাথে হচ্ছে। দুই নেত্রী বা দুই দলের বড় কোন নেতা কথা বলছে এমন ছবি খুব আগ্রহের বস্তু ছিল তখন। সেই দিন বহু আগেই বাসি হয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে। তবে নোবেল ম্যান এবার তার কিছুটা হলেও ফিরিয়ে এনেছে। এবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সব দলের মানে আওয়ামীলীগ ছাড়া সব দলের নেতারা সেনানিবাসে হাজির হয়েছিল। আমরা আবার দেখতে পেলাম বিএনপি, জামাতের নেতারা হাসিমুখে সেনানিবাসে। আমরা দেখলাম সমন্বয়কেরা নতজানু হয়ে খালেদা জিয়ার সাথে কথাবার্তা বলছে। হাস্যজ্জল মুখে জামাতের আমির সমন্বয়কদের সাথে কুশল বিনিময় করছে। এমন সৌহার্দপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশই তো আমরা চেয়েছিলাম, তাই না? তো, হয়েই গেল! অবশেষে সবাই সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকিল! ... ...
যে বন্যা নিয়ে লেজেগোবরে করে ফেলেছে ইউনুস প্রশাসন সেই বন্যা নিয়েই কৃতিত্ব নিয়ে নিলেন তিনি! আরে ভাই আমাদের এলাকায় মানুষের ঘর বাড়ি আমরা তুলে দিচ্ছি, আমাদের বন্ধুদের একটা ফাউন্ডেশন আছে তার মাধ্যমে। আমি একেবারে মাঠের খবর জানি যে কিছু করেন নাই আপনেরা! একের পর এক বাড়ি নাই হয়ে গেছে। তীব্র স্রোতে এমন ভাবে বাড়িঘর নিয়ে চলে গেছে যে দেখলে মনে হয় টর্নেডো হয়ে গেছে! আমরা আমাদের সাধ্যমত করছি। সরকারের তরফ থেকে আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাই নাই। কিছু বাড়ি আছে দ্রুত দাঁড়া করানো দরকার, বাড়িতে মেয়ে আছে, কলেজে পড়ে, অনার্সে পড়ে এমন মেয়ে আছে বাড়িতে। এরা এখন কই যায়? সচ্ছল পরিবার না, এদের আত্মীয় স্বজনও সব গরিবই, কে জায়গা দিবে? এরা থাকেই কই, বাথরুম করে কই? আমি চোখের সামনে দেখে হতবাক হয়ে গেছি। কিচ্ছু করার নাই যেন! মানুষ কত অসহায় যে হয়ে পড়ে প্রকৃতির হাতে তার এক অন্য রকম নজরানা দেখলাম আমরা। আর তিনি বলছেন বন্যা পরিস্থিতি দারুণ ভাবে সামলিয়েছেন! মিথ্যুক। ... ...
আওয়ামীলীগ এবার সবাইকে নুর হোসেন দিবসে নুর হোসেন চত্বরে জড়ো হওয়ার জন্য ডাক দিয়েছে। এই ডাকের রহস্য আমি বুঝিনি। এইটা শুধুই ডাক দিয়ে দেখা? সরকার কেমন আচারন করে? ভেরিফাইড পেজ থেকে যে প্রতি নিয়ত বলা হচ্ছে বিকাল তিনটায় সবাই যেন জিরো পয়েন্টে চলে যায় এইটা কেন? কতজন যাবে? অল্প কয়েকজন গেলে হাস্যকর হয়ে যাবে না? এবং ওই অল্প কয়েকজনকে ধরে বেদুম মাইর দেওয়া হবে, পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। এখন যখন তুমুল ধর পাকড় শুরু হয়ে গেছে তখন কর্মীদের এমন বিপদে ফেলার যুক্তি কী? এতদিন শুধু মামলা হয়েছে। এখন ধরা চলছে সমস্ত শক্তি দিয়ে। যে যেখানে আছে সেখানেই খুঁজে বের করছে পুলিশ। দৈনিক খবর পাচ্ছি হয় ধরা পড়ছে কেউ না হয় কত টাকায় রফা হয়েছে সেই খবর! এমন পরিস্থিতিতে সবাইকে গুলিস্তান যাওয়ার আহবানের মানে কী? এখনই দেখলাম বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যে ছাত্র জনতা নুর হোসেন চত্বর দখল করে বসে আছে! রাতেই তারা অবস্থান নিয়ে নিয়েছে। কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখলাম প্রকাশে বলছে রাম দা নিয়ে আসতে, যারা আসবে সবাইকে কুপিয়ে মনের ঝাল মেটাবে! একজন লিখেছে পুলিশের হাতে দেওয়া যাবে না, পুলিশ কিছু করার আগেই কুপাইতে হবে! যিনি এই পোস্ট দিয়েছেন তার সাথে আমাদের মাহফুজ আলমের গলাগলির ছবিও বের হয়ে আসচ্ছে! তো এই পরিস্থিতিই তো স্বাভাবিক, তাই না? এর মধ্যে কেন ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কর্মীদের? আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা সব আছে দৌড়ের ওপরে, কাদেরকে বলি দেওয়ার জন্য পাঠানো হচ্ছে এখানে? সরকারের তরফ থেকে বলেছে আওয়ামীলীগের এমন কর্মসূচি দেওয়ার কোন সুযোগ নাই! তার মানে তাদের অবস্থানও পরিষ্কার। এমন হওয়ার তো কোন সম্ভাবনা নাই যে আওয়ামীলীগ বিকাল তিনটায় কয়েক লাখ কর্মী জমা করবে গুলিস্তানে? সেই দিন আছে? সেই সুযোগ ছিল যখন এই ছাতার আন্দোলন হাত থেকে চলে যাচ্ছিল তখন। তখন যদি আওয়ামীলীগ ঘোষণা দিত তাহলে দশ লাখ মানুষ ঢাকায় আনা কোন ঘটনাই ছিল না। প্রশাসন ছিল, কর্মীরা ছিল। এই আন্দোলন কোনদিনই এই পর্যন্ত আসতে পারত না। ওই দিন হয়েছে বাসি, এইটা আওয়ামীলীগ ভুলে গেছে? ... ...
ঢাকা শহরে হাঁটলেই নানান তামশা দেখা যায়। আজকে এজতেমা নিয়ে তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপের যে ঝগড়া তার অন্য একটা রূপ দেখছে ঢাকাবাসী। সাদ পন্থিদেরকে কঠোর বার্তা দেওয়ার জন্য হাজার হাজার মোল্লারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হয়েছিল। কড়া হুশিয়ারি দিয়েছে এরা। বলেছে মাওলানা সাদ যদি দেশে আসে তাহলে সরকার পতন আন্দোলন শুরু করবে তারা! এগুলা তো হচ্ছে আজকের এই সভার একটা দিক। দ্বিতীয় দিকটা হচ্ছে কুৎসিত। সারাদেশ থেকে এই যে হুজুরেরা আসল। এরা এসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আর কতক্ষণ? ঢুকে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গিজগিজ করছে টুপিওয়ালাদের দিয়ে। বুঝে না বুঝে কে জানে, কেউ কেউ রোকেয়া হলেও ঢুকে গেছে, সামসুন্নাহার হলেও ঢুকেছে শুনছি। কলা বিভাগের কোন এক মেয়েদের বাথরুমে ঢুকে বসে আছে! মূত্র বিসর্জন নিয়ে বেকায়দায় পরা হুজুরেরা লাইন দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির দেওয়াল ভিজাচ্ছে এমন ছবি সামনে আসছে! হুজুর মানুষ, ঢাকায় আসছে, ঢাকা সম্পর্কে কী শুনে আসছে কে জানে, ছাত্রী যাদের পাইছে তাদেরই নানান জ্ঞান বিতরণ করেছে! এক বোরকা পরা নারীকে প্রশ্ন করেছে আপনের এইখানে কী কাজ? একজন নারীর পোস্ট দেখছি গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টাও করছে আল্লার এই বান্দারা! ... ...
গতকাল ( ৩০/১০/২০২৪) রাতে ঢাকা আসছি। মহান (!) বিপ্লব ( না গণ অভ্যুত্থান?) সংগঠিত হওয়ার পরে প্রথম আসলাম। রাতে তেমন আলামত না পেলে সকাল থেকে বেশ ভালো ভাবেই বুঝলাম আমি ঢাকা আসছি! রাতে যখন গন্তব্যের দিকে যাচ্ছি তখন দেখলাম নানান দেওয়াল লিখন। ইউনুস সাহেব এই সব দেওয়াল লিখনকে বাধাই করে নিয়ে গিয়েছিলেন জাতিসংঘে। আমি যেগুলা দেখছি সেগুলাও নিয়ে গেছে কি? আমি দেখলাম বাঁচার পথ খেলাফত খেলাফত লেখা। মূর্খ আমি দেখলাম আরবিতে কী জানি লেখা! তো এগুলা নিয়ে গেছেন তিনি? ... ...
যারা জানে না সেই সব পাঠকদের জন্য বলি একটু। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ পত্র রাষ্ট্রপতির কাছে নাই এমন খবর প্রকাশের পরে খুব গরম হয়ে গেল সমন্বয়কসহ উপদেষ্টারা। পারলে সেদিনই নামিয়ে ফেলেন রাষ্ট্রপতিকে তার পদ থেকে। এমন কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করা হল তাকে যে বলার মতো না। যে এই রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নিয়ে উপদেষ্টা হয়েছে সেও বলতে লাগল চুপ্পুকে টেনে নামানো হবে। তার পদে থেকে যে তিনি রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারেন না, বললে তা আইন লঙ্ঘন হবে এইটা বুঝার বা চিন্তা করার প্রয়োজনও বোধ করে নাই এরা। দেড় দুইশজন মিলে বঙ্গভবনের সামনে খুব আন্দোলন করল। সাধারণ মানুষ পাত্তাও দিল না এই সবে। সেনাপ্রধান দেশের বাহিরে, এই ফাঁকে কিছু করে ফেলবে এমন একটা শঙ্কার কথা আমি গত লেখায় লিখেছিলাম। এরপরে কী হল? এরপরে ম্যালা দোষে দোষী, এতদিন ধরে যারে ইচ্ছামতো গালিগালাজ করছি, সেই বিএনপি একটা ঐতিহাসিক কাজ করল। তারা সোজা জানিয়ে দিল রাষ্ট্রপতিকে এই মুহূর্তে সরিয়ে সাংবিধানিক যে জটিলতা তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে এতে তারা সায় দিচ্ছে না, এটা তারা চায় না! বিএনপির এই একটা ঘোষণা সব এক ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিল। কই গেল আল্টিমেটাম, কই গেলে আজকেই, ত্রিশ মিনিটের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে বলে আস্ফালন! সব দিঘির জলের মতো শান্ত নিটোল! ... ...
আসিফ নজরুল রাষ্ট্রপতিকে শপথ ভঙ্গ করেছেন বলেছেন। খুব ভালো, রাষ্ট্রপতি আগে বলছে তিনি পদত্যাগ পত্র পেয়েছেন এখন বলছেন পান নাই। এইটা তো মিথ্যাই বলা হয়েছে। হয় তখন বলেছেন অথবা এখন বলছেন। যদিও আমার মনে হয় না তিনি ইচ্ছা করে মিথ্যা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরে তখন তাঁর আসলে কী করার ছিল? গোঁ ধরে বসে থাকা? না আমি পদত্যাগ পত্র না দেখে ভাষণ দিব না? তাঁর আসলে উপায় ছিল না। সেই সময় অনুযায়ী যা করার তাই তিনি করেছেন। যাই হোক, ধরেই নিলাম মিথ্যাই বলেছেন। শপথ ভঙ্গ করেছেন। মাননীয় আইন উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুল কি শপথ ভঙ্গের এই একটাই উদাহরণ দেখেছেন এই কয়দিনে? আর কেউ শপথ ভাঙ্গে নাই? আর কেউ সংবিধানের বিপরীতমুখী কথা বলে নাই? জনাব নাহিদ ইসলাম যে সরাসরি জাতির জনককে অস্বীকার করল তা শপথ ভঙ্গের ভিতরে পরে নাই? আমাদের সংবিধানের চারের ক ধারায় স্পষ্ট করে বলা আছে - "জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারী ও আধা-সরকারী অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করিতে হইবে।" নাহিদ সাহেবসহ সবাই যে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলছেন তা শপথ ভঙ্গ করে নাই? আপনি মানেন না, জাতির জনককে বদলে দিবেন সব বুঝলাম। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না করছেন ততক্ষণ পর্যন্ত এই সংবিধান মেনে চলতে আপনি বাধ্য। আইনের লোক এইটা তো না জানার কথা না! না এখানে আমরা যা করব তাই হচ্ছে সঠিক বাকি গুলো সব ভুয়া। কিংবা আমরা যা বলব তাই সত্য, আমরা যাকে মিথ্যা বলব তা মিথ্যা! আমরা যাকে অপরাধী বলব তারাই অপরাধী। ইউনুস রাজ বলে কথা, হতেও পারে! তবে আজকে আপনের ক্ষমতা আছে, যা ইচ্ছা করে গেলেন, বলে গেলেন, এইটাই শেষ না। ইতিহাসে এগুলা লেখা থাকবে। আপনারা সংবিধান ভঙ্গ করেছেন, করেছেন, করেছেন! ... ...
শেরপুরের বন্যার অবস্থা ভয়াবহ। পাহাড়ি ঢল এমন ভাবে আসছে যে এখন মনে হয় বন্যা হইছে না যেন টর্নেডো হয়ে গেছে। সব বাড়িঘর ভেঙ্গেচুরে শেষ। সরকারি সাহায্য নাই। ইউনুস সাহেব ফেনি কুমিল্লার সময় এক হাজার কোটি টাকার ত্রাণ তহবিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার ঘোষণাতেই মোসাহেবিরা বাহ বাহ! কি দারুণ কাজ বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলছিল। কিন্তু দেখা গেল সেই তহবিলের কোন খবর নাই। আমরা বাংলাদেশী না অন্য কোন দেশের অংশ তাও ঠিক মতো ঠাওর করতে পারছি না। মানুষের কোন বিকার নাই। সরকার তো দায়িত্ব পালন করবে? তারও কোন হুশ নাই। এইটা বলার জন্য এই প্রসঙ্গ আনি নাই। পূজার ছুটিতে জেলার সকল এবং সফল ছেলেমেয়েরা সব বাড়ি ফিরেছিল। বন্যার জন্য সবাই ঝাঁপিয়ে পরে কাজ করেছে। এক সাথে কাজ করেছি আমরা। এদের মধ্যে একজন সচিবালয়ে আছেন। মানে হচ্ছে প্রশাসনের একদম টপ লেবেলেই কাজ করেন তিনি।শেষ দিন, ছুটি শেষ, পরেরদিন চলে যাবেন। আমি সুযোগ পেলাম কথা বলার। বললাম ভাই, অবস্থা কী? ভিতরে কী চলছে? তিনি যা বললেন তা হচ্ছে কিছুই ঠিক নাই। সব অগোছালো। আগা থেকে পাতা পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা চলছে। কোন নিয়ম নীতি নাই। আর? আর শিবির আর জামাতের কর্মীরা সমানে ঢুকছে প্রশাসনে! উনার বক্তব্য হচ্ছে শোন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি, শিবির দেখলেই চিনি। এরা সব মিছিল করে নানা পোস্টে ঢুকছে। বিএনপির পুলাপান তো তৈরিই না যে ঢুকবে। আর এরা সব তৈরি হয়েই বসে ছিল। ইউনুস কী প্লান করছে জানি না। যা দেখলাম তাই কইলাম। ... ...
বলার মতো তো কিছু খুঁজে পাইই না উল্টো রিসেট বাটন টিপে সমস্ত অতীত মুছে দিতে চান প্রধান উপদেষ্টা। এদিকে প্রধান উপদেষ্টার সহকারী বলছেন মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে পাকিস্তানের ইসলাম থেকে বাংলাদেশের ইসলামকে আলাদা করার জন্য। আজকে তিনি আবার তার ফেসবুক প্রোফাইলের কাভার ফোটো দিয়েছেন পাঁচজন নেতার ছবি। কে কে? সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা, আবুল হাশিম, যোগেন মন্ডল ও মাওলানা ভাসানি! হুমায়ুন আজাদ লিখেছিলেন - ‘‘শেখ মুজিব দৈহিকভাবেই মহাকায় ছিলেন, সাধারণ বাঙালির থেকে অনেক উঁচুতে ছিলো তার মাথাটি, সহজেই চোখে পড়তো তার উচ্চতা। একাত্তরে বাংলাদেশকে তিনিই আলোড়িত-বিস্ফোরিত করে চলেছিলেন, আর তার পাশে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে যাচ্ছিল তার সমকালীন এবং প্রাক্তন সকল বঙ্গীয় রাজনীতিবিদ।" দেখা যাচ্ছে এগুলা মাহফুজ আলমের হিসেবে নাই বা তিনি বঙ্গবন্ধুকে ছাড়াই নতুন এক ইতিহাস তৈরির ফিকির খুঁজছেন। আংকেল স্যাম সাথে থাকলে সবই সম্ভব। অসম্ভব বলে কিছু নাই। ... ...
মাহফুজ আলমের একটা সাক্ষাৎকারের কথা বলাই হয় নাই। প্রথম আলোতে তিনি দীর্ঘ সাক্ষাতকার দিয়েছেন। কীভাবে কত বছর আগে থেকে সব শুরু, পরিকল্পনা সব কিছু সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন। এ ছাড়াও তিনি সুন্দর সুন্দর কথা বলেছেন অনেক গুলা। এবং আমার মূল চিন্তা যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ তাই আমি সব বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তার ধরনা দিয়েই তাকে মাপতে গেলাম। কথার প্যাচ ধরতে পারলে দেখা যায় তিনি সুন্দর করে মুক্তিযুদ্ধের এক নতুন তত্ত্ব এনে হাজির করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে পাকিস্তানের ইসলাম থেকে এই মুল্লুকের ইসলামকে আলাদা করার জন্য! উদ্ধৃতি দিচ্ছে প্রথম আলোর সাক্ষাতকার থেকে, - "১৯৭১ হয়েছিল বাঙালি মুসলমান সম্প্রদায়ের দুটি বোঝাপড়া থেকে। ১৯৪৭ সালের আগপর্যন্ত ইসলামের সঙ্গে তার যে বোঝাপড়া ছিল, সেটা বদলে গিয়েছিল। তারা বুঝতে শুরু করল, বাংলার ইসলাম পাকিস্তানের ইসলামের সঙ্গে যায় না, এমনকি উত্তর ভারতের ইসলামের সঙ্গেও নয়। ফলে তারা পাকিস্তানি ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড়াল।" মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে আমার লিটমাস পেপার। তুমি কোন ক্ষেতের মুলা তা এই পরীক্ষাই সহজে ধরা যায়। ব্রাত্য রাইসুরে এমনে আমি খুব একটা পছন্দ করি না। কিন্তু এই সাক্ষাতকার প্রসঙ্গে তাঁর একটা ফেসবুক পোস্ট এখানে শেয়ার না করে পারছি না। ওইটা আমারও বক্তব্য বলেই শেয়ার করছি, তিনি লিখেছেন, - "মুক্তিযুদ্ধ মানে হচ্ছে পাকিস্তানি ইসলামের বিরোধিতার যুদ্ধ, এইরকম যারা বলতেছেন তারা ভয়ঙ্কর কথা বলতেছেন। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধরে ধর্মীয় সিলসিলা রক্ষার যুদ্ধ হিসাবে সীমিত করার ষড়যন্ত্র আছে। অবশ্য ইসলামি দলগুলি যদি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে চায় তবে মুক্তিযুদ্ধরে ধর্মের যুদ্ধ হিসাবে দেখানোটা অত্যন্ত কাজে লাগার মত বিষয় হবে। মুক্তিযুদ্ধ ধর্মের যুদ্ধ ছিল না। কোনো অর্থেই ছিল না।" ... ...