এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  ঘুমক্কড়

  • বাঙালের কলিকাতা দর্শন! অদ্যই বিদায় ও শেষ রজনী! ( পঞ্চম ভাগ) 

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | ঘুমক্কড় | ২৪ জুন ২০২২ | ১৫৮০ বার পঠিত
  • পঞ্চম দিন
    ২৩/০৬/২০২২

    রনি, আজকে কোন গপ্প নাই। আজকে হচ্ছে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নেওয়ার দিন। যে বন্ধুর বাসায় উঠেছিলাম, আজকে তার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। বিদায় নেওয়ার বড় কারণ কালকে বেশ সকালে উঠে যেতে হবে স্টেশনে। কাওসারদের সাথে থাকলে ওদের সাথে এক সাথে যাওয়া যাবে, যা আমার জন্য সহজ হবে। বিদায় নেওয়ার আগে ও আমাকে বিশ্ব বাংলা বলে এক জায়গায় নিয়ে গেল। এটা হচ্ছে নিউ টাউনে! এদিকে আসা হয়নি। বুঝলাম এ এক নতুন দুনিয়া। এর ভাবসাব আলাদা, এদিকের লোকের চেহারা আলাদা, পোশাক আলাদা, কথাবার্তা আলাদা। বিশ্ব বাংলায় দুপুরে খাওয়া গেল না। ওদের সময় সম্পর্কে আমার বা আমার বন্ধুর কোন ধারণা ছিল না। অজ্ঞতা অন্য এ জায়গায় যাওয়া হল। আল্লা মালুম কি কি খেলাম। বন্ধুর বেশ অনেক টাকা বের হয়ে গেল, এইটা বুঝতে পারলাম শুধু।

    এরপরে শুধু দৌড়। সেই গল্প থাক। আজকে এই কয়দিনে কলকাতা সম্পর্কে আমার ধারণা তোমাকে বলি। আমি প্রথম কলকাতা নামার পরে কাওসারের সাথে দেখা হওয়ার আগ পর্যন্ত মনে মনে একটা উদাহরণ তৈরি করে বসে ছিলাম। কাওসারের সাথে দেখা হলে ওকে বলব প্রথম দর্শনে আমার অনুভূতির কথা। আমাকে দেখে কাওসার আমার মনের কথা কেড়ে নিয়ে বলে ফেলল। ও বলল, শরীফ, কলকাতা দেখে তোমার ময়মনসংহ শহরের মত মনে হয় না? আমিও একই কথা বলার জন্য বসে ছিলাম! আসলেই আমার কাছে মনে হচ্ছে কলকাতা বড় একটা ময়মনসিংহ শহর। কলকাতা অনেক বড় শহর, ঢাকার চেয়েও বেশ বড়। কিন্তু আজকে নিউ টাউন দেখার আগ পর্যন্ত আমার শুধুই মনে হচ্ছিল কলকাতা একটা বড় ময়মনসিংহ শহর।

    তুলনা করাটা আমার খুব একটা পছন্দের জিনিস না। কিন্তু যেহেতু বাঙালি জাতির সবচেয়ে জনবহুল দুইটা শহর দেখেছি, মানে একটা বেশ ভাল করেই দেখিছি আরেকটা গত পাঁচ দিনে এখানে এক চিমটি, ওইখানে এক চিমটি করে যতদূর বুঝেছি আর কি, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে একটু তুলনা করছি। মানে বুঝার জন্য যে আমরা কই দাঁড়িয়ে আছি আর জুদা হয়ে যাওয়া আমার ভাইয়েরা কই আছে।

    আমার কাছে সবচেয়ে বড় পার্থক্য লেগেছে কলকাতার ট্রাফিক। ব্রিটিশদের তৈরি শহরে বলেই হোক, ভাল পরিকল্পনা জন্যই হোক, এঁদের এখানে দারুণ ভাবে সিস্টেমটা কাজ করছে। বেশির ভাগ রাস্তা যথেষ্ট প্রসস্থ, সবাই ট্রাফিক আইন মানছে। আমি এই কয়দিন অনেক রাতেও ঘুরেছি শহরের এ মাথা থেকে ও মাথা। মানুষ অত রাতেও ট্রাফিক আইনের প্রতি সম্মান দেখাচ্ছে, মানছে। এই কয়দিনে আমি মাত্র একজনকে ট্রাফিক আইন মানতে দেখিনি, গত পরশু রাতে ফেরার সময় দেখি এক তরুণ আরেক তরুণীকে তার মোটর সাইকেলর সামনে বসিয়ে মোটর সাইকেল চালাচ্ছে! এবং তিনি কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই লাল বাতি জ্বলা অবস্থায় শা করে চলে গেল! মোটর সাইকেলের তেলের ট্যাঙ্কের উপরে অত রাতে একজন নারী কী করছিলেন তা আমাকে জিজ্ঞাস করে লাভ নাই। বড় বড় শহরের ব্যাপার, আমি মফস্বল শহরের পুলাপান এগুলার কী বুঝব?

    যাই হোক, ট্রাফিক সিস্টেম আসলেই চমৎকার। ঢাকা এদিক থেকে ঢের পিছনে পরে রয়েছে। এখানে যখন সিগনাল বাতিই যথেষ্ট ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য সেখানে আমাদের ঢাকায় বেশ বড় একটা মোড়ে অন্তত চারজন ট্রাফিক পুলিশ, দুই একজন ট্রাফিক সার্জন দাঁড়িয়ে থেকেও হিমসিম খায়, জ্যাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা মূল্যবান সময় নষ্ট করে দিচ্ছে। এদিক থেকে কলকাতা দারুণ।

    কলকাতায় উগ্র মানসিকতার মানুষ আমি খুব কমই দেখছি। কিন্তু এও সত্য আমার বন্ধুকে খুব গোপনে আমাকে বলতে হয়েছে যে আমি গরু খাব কি না! কোন সমস্যা হয়নি কিন্তু ভয়টা কাজ করেছে, এটা বড় ব্যর্থতা। নাগরিক ভয় পাচ্ছে সে কী খাবে তার জন্য। একই ভয় আমাদের ওদিকেও এক পক্ষ পাচ্ছে। হুট করেই আমি যখন বুঝি যে আমি এখানে সংখ্যালঘু, এই অনুভূতি কীভাবে বুঝাব?

    ঢাকার রাস্তার নাম গুলা দারুণ। কলকাতার রাস্তার নামগুলো অসাধারণ লাগছে আমার। কার্ল মার্ক্সের নামে, লেনিনের নামে রাস্তা, এইটা আমরা চিন্তাও করতে পারি নাই। এবং অদূর ভবিষ্যতেও তেমন কোন সম্ভাবনা নাই। সামনে দেলোয়ার হোসেন সাইদির নামে রাস্তার হওয়ার যতটুকু সম্ভাবনা তার সিকি ভাগের সম্ভাবনা নাই মার্ক্সের নামে ঢাকার কোন রাস্তার নাম।

    রনি, কলকাতায় মার খাচ্ছে বাংলা। এটা বলে বুঝানোর মত না। অকারণে মানুষ হিন্দি বলে! কেন বলে নিজেও জানে না। আপদমস্তক বাঙালি, কোন আন্দাজে হিন্দি বলে চলে সবাই? আমরা ঢাকা থাকা কালে হিন্দি শুনলেই মনে করতাম বিহারী কেউ আছে আশেপাশে! প্রথম নেমে যখন হিন্দি শুনলাম একজনের মুখে তখন আমার মনে হল আরে বিহারী না কি!
    না, বিহারী না। এরা শিক্ষিত, ভদ্র এবং সবাই হিন্দিতে কথা বলতে চায়। রিকশাওয়ালা, উবার চালক, ট্যাক্সই চালকদের দেখে আমার মনে হয়েছে এরা হয় সবাই ভিন্ন প্রদেশ থেকে এসেছে না হয় এদের মানসিক সমস্যা আছে। এই রোগের চিকিৎসা নিয়ে কলকাতা কী ভাবছে আমার জানা নাই। ভাবছে কি না তাও জানা নাই। এদিক থেকে আমরা যোজন যোজন দূরে এগিয়ে আছে। বাংলা আমাদের এখনও একমাত্র ভাষা। উবার ডাকেন, হেলিকপ্টার ডাকেন, ড্রাইভার আপনাকে আমাদের দেশে বাংলায়ই ডাক দিবে, এইটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই।

    যাই হোক, হোটেল রুমে ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে বসেছি লেখার জন্য। কালকে ভোরে আমি চলব দেশের উদ্দেশে। আমাদের ওইদিকে সিনেমার প্রচার করত, বিজ্ঞাপন করত মাইক দিয়ে। সিনেমা যেদিন শেষ শো হবে সেদিন মাইকে বলত, অদ্যই বিদায় ও শেষ রজনী!  রনি, আমার হচ্ছে অদ্যই বিদায় ও শেষ রজনী!

    শেষ করার আগে একটা গপ্প বলে শেষ করি, সেদিন সিনেমা দেখতে গিয়ে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে। বলতে মনে ছিল না। আমারা বা আমি সবসময় সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে গেলে সিনেমা শুরুর আগে আমাদের জাতীয় পতাকা দেখে অভ্যস্ত ছিলাম। সিনেমা শুরুর আগে এখানে প্রথমে মোদী বন্দনা হল, সাড়া দুনিয়া ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে এমন একটা দাবী করে একটা বেশ গা গরম করে দেওয়ার মত গান পরিবেশিত হল। গরম গান বললাম কারণ হচ্ছে গান শুনে আমারই মনে হচ্ছিল এক্ষণই ঝাঁপিয়ে পড়ি মোদীর পাশে থেকে যুদ্ধ করার জন্য! এরপরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই ঐতিহাসিক সঙ্গীত। আমি সবার সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। দারুণ একটা অনুভূতি।
    শুভ রাত্রি কলিকাতাবাসি। ভাল থাকবেন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ২৪ জুন ২০২২ | ১৫৮০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ২৪ জুন ২০২২ ০৬:১০509322
  • সালাম শরীফ ভাই,  ভাল থাকবেন ।
    আবার আসবেন। 
    खुदा হাফিজ !
  • Amit | 121.2.***.*** | ২৪ জুন ২০২২ ০৬:৪০509323
  • বেশ ভালো লাগলো সিরিজটা। এরকম ভাবে আনপ্ল্যান্ড কোথাও ঘুরে বেড়ানোর সত্যি অন্য মজা। কলেজ লাইফে র পর থেকে আর কোনোদিন হয়নি। ফ্যামিলি নিয়ে ঘুরতে গেলে সবকিছু আমাদের বড়ো বেশি প্ল্যান করে যেতে হয়। বসে দম ​​​​​​​নেওয়ার ​​​​​​​সময় ​​​​​​​থাকে ​​​​​​​না। ​​​​​​​শুধু দৌড়ে ​​​​​​​দৌড়ে সব ​​​​​​​পপুলার ​​​​​​​জায়গা গুলোতে ​​​​​​​ছবি ​​​​​​​তোলার ​​​​​​​রাশ। মানুষ ​​​​​​​চেনার ​​​​​​​সুযোগ ​​​​​​​আর হয়ে ​​​​​​​ওঠে ​​​​​​​না। 
     
    আমার ও  খুব ইচ্ছে একবার ঢাকা আর চট্টগ্রাম এরকম ভাবে হটাৎ গিয়ে নিজের মতো করে ঘুরে ঘুরে দেখার। দাদুরা এসেছিলেন ওখান থেকে  বহু বছর আগে। হয়তো হবে কোনো একদিন। 
     
    আবার আসবেন এদিকপানে। কে জানে হয়তো কোনোদিন হটাৎ দেখাও হয়ে যাবে। দুনিয়া বড়ো বৈচিত্রময় জায়গা। 
  • guru | 103.175.***.*** | ২৪ জুন ২০২২ ০৮:০৭509324
  • "রনি, কলকাতায় মার খাচ্ছে বাংলা। এটা বলে বুঝানোর মত না। অকারণে মানুষ হিন্দি বলে! কেন বলে নিজেও জানে না। আপদমস্তক বাঙালি, কোন আন্দাজে হিন্দি বলে চলে সবাই? আমরা ঢাকা থাকা কালে হিন্দি শুনলেই মনে করতাম বিহারী কেউ আছে আশেপাশে! প্রথম নেমে যখন হিন্দি শুনলাম একজনের মুখে তখন আমার মনে হল আরে বিহারী না কি!
    না, বিহারী না। এরা শিক্ষিত, ভদ্র এবং সবাই হিন্দিতে কথা বলতে চায়। রিকশাওয়ালা, উবার চালক, ট্যাক্সই চালকদের দেখে আমার মনে হয়েছে এরা হয় সবাই ভিন্ন প্রদেশ থেকে এসেছে না হয় এদের মানসিক সমস্যা আছে। এই রোগের চিকিৎসা নিয়ে কলকাতা কী ভাবছে আমার জানা নাই। ভাবছে কি না তাও জানা নাই। এদিক থেকে আমরা যোজন যোজন দূরে এগিয়ে আছে। বাংলা আমাদের এখনও একমাত্র ভাষা। উবার ডাকেন, হেলিকপ্টার ডাকেন, ড্রাইভার আপনাকে আমাদের দেশে বাংলায়ই ডাক দিবে, এইটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই।"
     
    ধন্যবাদ ভাই সত্য কথাটা বলার জন্য |
  • Kishore Ghosal | ২৪ জুন ২০২২ ১৯:৩৩509343
  • শরীফভাই, খুদা হাফিজ। আশা করি এতক্ষণে ভালোভাবেই বাড়ি পৌঁছে গেছেন। 
     
    আমাদের বাংলা নিয়ে যে কথা বলেছেন, নির্জলা সত্যি - পয়লা বোশেখ, ২৫শে বোশেখ আর ভাষা দিবসে অধিকাংশ শিক্ষিত বাঙালি -  বাংলা ভুলের যাওয়ার জন্যে ইংরিজিতে গর্বমিশ্রিত আক্ষেপের কথা বলেন। 
     
    আপনার সুন্দর লেখাটির জন্যে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।  
  • কিংবদন্তি | ২৫ জুন ২০২২ ০০:০১509347
  • ধন্যবাদ সকলকে। আমি বেশ ভাল ভাবেই ঢাকা পৌঁছেছি।  কলকাতা ঘুরার ইচ্ছা ছিল অনেক আগে থেকেই। যে ঝটিকা সফর করে এলাম এমন করে এত ঐতিহ্যবাহি একটা শহর চোখের দেখা দেখা যায় অনুধাবন করা যায় না। আমার ভিসার মেয়াদ আছে নভেম্বর পর্যন্ত। এর মাঝে অন্তত আরেকবার যাওয়ার ইচ্ছা আছে। ইচ্ছা আছে কলকাতা না, ভারতের আরও ভিতরের দিকে কোথাও ঘুরে আসার। কলকাতায় আমি যে খুঁজে খুঁজে কেউ যায় না, জানে না এমন জায়গায় গিয়েছি এর প্রধান কারণ হচ্ছে নানা সময়ে নানা গল্প উপন্যাস, প্রবন্ধ পড়ে পড়ে তীব্র একটা আবেগ তৈরি হওয়া। সুনীলের ট্রিলজি, সমরেস শীর্ষেন্দুর বিখ্যাত উপন্যাস গুলা যখন পড়ি মানে সেই আজ থেকে প্রায় বিশ বছর আগে, তখন থেকেই মনের ভিটরে লালন করে চলছি যে আমি কলকাতা গেলে সবার আগে এই সব জায়গায় যাব।
    আমি এর জন্য কৃতজ্ঞ সমরেস বসু, আবুল বাসার, সুনীল, সমরেস, শীর্ষেন্দুদের প্রতি। এঁরা এত চমৎকার করে কলকাতাকে আমার চোখের সামনে তুলে এনেছে যেন আমি চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পারি কলকাতাকে। ঢাকা আমার প্রাণের শহর। এর জ্যাম, গরম, প্রচণ্ড জোরে হর্ন বাজানো, উদ্ভট সুরে ফেরিওয়ালার চিৎকার সবই আমার কাছে মধুর লাগে, মনে হয় এই সব না থাকলে ঢাকা বুঝি মরেই যাবে। আর কলকাতাকে মনে হত সব সময় স্বপ্নের শহর। এর জন্য কৃতিত্ব দিতেই হয় সেই সব লেখকদের। আমি কলকাতার সিনেমা দেখি না বললেই চলে। তাই বর্তমানের কোন সিনেমা পরিচালকদের অবদান আছে তা বলতে পারছি না। 
    সেই ঘোর লাগা এক চোখ নিয়ে আমি বনগাঁ লোকালে শেয়ালদাহ স্টেশনে নেমে ছিলাম। ঘোর লাগা চোখে দেখার ফলেই আমার চোখে অনেক কিছুই ধরা পড়েনি। বা আমি চাইনি এমন কিছু লিখতে যা এই শহরকে কোন ভাবে ছোট করে। শুধু এই কয়দিন ঘুরে দেখে যা লিখছি তা না, আমি কোনদিনই এমন কোন কিছু লেখি নাই যা কলকাতা বা কলকাতাবাসীদের ছোট করে। মজা করেও সম্ভবত আমি লেখি নাই। আমি জানি এই শহরে অনেকেই আছেন এদিক থেকে গিয়েছেন, প্রচণ্ড কষ্ট চাপা দিয়ে  সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। অনেকের মনেই এই বাংলা নিয়ে দারুণ ফ্যান্টাসি কাজ করে, তীব্র আবেগ কাজ করে। আমি অত বড় পাষণ্ড হয়ে যাই নাই যে তাঁদের সেই আবেগকে, স্মৃতিকে কষ্ট দিব, নষ্ট করব। আমার বিন্দুমাত্র লাভ লোকসান নাই এতে। কিন্তু যখন এখানে, এই বাংলাদেশে তীব্র ভাবে ভারত বিরোধী একটা স্রোত চলমান থাকে, সেই স্রোতে পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতাবাসীদেরও ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চায়, সবাইকেই একই কাতারে হিসাব করে ঝাঁপিয়ে পরে অনলাইন যোদ্ধারা, তখনও আমাকে, আমার পরিচিত লোকজনদের কাছে আমার গালি খাওয়ার খুব সম্ভাবনা থাকার পরেও আমাকে তখন লিখতে হয় সাম্যের কথা, সৌহার্দ্যের কথা। কারণ আমি জানি ওইখানে কোথাও কোন মাসিমা পূর্ববঙ্গে তাঁর বাবার বাড়ির একশ কিলোমিটার দূর থেকে আসার কারো জন্যও স্নেহের ডালী মেলে ধরে। আমি এই আবগকে কে বুঝি, শ্রদ্ধা করি।  
    যতটুকু লেখছি তা আমার কাছে মনে হয়েছে লেখা জরুরি, তাই লেখছি। যদিও আমি লেখা না লেখায় খুব একটা পার্থক্য হবে এমন আমি ভাবিও না, আর তা আমার ভাবার কাজও না। 
     
    এরপরে গেলে দক্ষিণেশ্বর যাব, আনন্দবাজারের আর্কাইভ দেখব। আর হিল্লি দিল্লী যে দিকে চোখ যায় চলে যাব। সবাই ভাল থাকবেন। 
  • আবাপ | 185.22.***.*** | ২৫ জুন ২০২২ ০০:১৮509350
  • আবাপর কর্মী না হলে আনন্দবাজারের আর্কাইভ দেখা যায় না ।
  • dc | 2401:4900:1cd1:3d9f:41ca:7489:c5ca:***:*** | ২৫ জুন ২০২২ ০৯:৩৬509355
  • আমার মনে হয় আবার যদি ইন্ডিয়াতে আসেনই তো কলকাতা না, অন্যান্য জায়গা ঘুরে দেখতে পারেন। কলকাতা আদৌ সেরকম কিছু দেখার বা ঘোরার মতো জায়গা না, তার চেয়ে পশ্চিম বঙ্গের অন্যান্য জায়গাগুলোয় ঘুরতে পারেন। বা সাউথ ইন্ডিয়ায় চলে আসতে পারেন, পুরো ওয়েস্টার্ন ঘাটস ঘুরে দেখার আর থাকার মতো অসাধারন সব জায়গায় ভর্তি। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন