আমার ঠাকুরদা মশাই, বাবু বিরাজমোহন, ছিলেন ২৫০% বাঙাল এবং আলাপচারিতায় ঢাকা বিক্রমপুরের ‘হল অফ ফেম’ এ নাম ওঠানোর যোগ্যতাসম্পন্ন। দেশভাগের সময় কলকাতায় এসে থিতু হয়েছিলেন। দক্ষিণ কলকাতার লেক-সন্নিহিত কেয়াতলায় আমাদের বাড়িটি ১৯৫১-৫২ সালে স্থাপিত হয়। পাঁচ আর ছয়ের দশকে দাদু আর তাঁর চার বন্ধুর (হাইকোর্টের জজসাহেব, সিভিল সার্জেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ইম্পেরিয়াল ব্যাঙ্কের ম্যানেজার – সবাই অবসরপ্রাপ্ত)
‘অ-মাইক’ কণ্ঠের “ডরাই কারে?” ইত্যাদি শব্দে লেকের দক্ষিণ প্রান্ত সকাল-বিকেল উচ্চকিত হতো।
সে হেন দাদু কলকাতায় আসার পরে মাত্র দু’টি সিনেমা দেখেছিলেন। ঠাকুমার সঙ্গে, আলেয়া হলে, ‘ভক্ত প্রহ্লাদ’ আর বন্ধুদের সঙ্গে আর একটি ছায়াছবি। দাদু নিজেই সে কথা শুনিয়েছেন বহুবার – “বোঝলা না, আমরা চার জইনে ১৯৫৩ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে গেছিলাম কালিঘাটের উজ্জ্বলা সিনেমায়। পতাইক্যা (জজসাহেব; পতাকাভূষণ... পদবী মনে নেই) কইল –‘আরে, ফেব্রুয়ারির বিশ তারিখ বায়োস্কোপখান বাইরোইসে, এখন নিশ্চয় টিকিট পাওয়া যাইব।’ গিয়া দেখি কি লাইন! যাই হোক, দ্যাখলাম সিনেমা। কি অ্যাক্টোই না করসে ঢাকার পোলাখান – আরে, আমাগো ভানু! হলের থিকা বাইরইয়া কিছুক্ষণের জইন্য দ্যাশ ছাড়োনের দুঃখ ভুইলা গেসিলাম, দাদুভাই। আহা!”
এপারে সাতের দশকের শেষভাগে ঢাকায় যখন স্কুলে নীচের ক্লাসে পড়ি, তখন ভানুর ক্যাসেট বন্দী কৌতুকের সিরিজ খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। এখনো মনে আছে, টুইন ওয়ানে সেই সব কৌতুক শোনার জন্য আমরা কচিকাঁচার দল ভীড় করতাম, যদিও অনেক বুদ্ধিদীপ্ত হাস্যরস বোঝার মতো বুদ্ধি পাকেনি।
পরে কলেজে পড়ার সময় ভিডিও ক্যাসেটে কিছু ছায়াছবি দেখে আমরা রীতিমত তার ভক্ত হয়ে উঠেছিলাম, খুবই শক্তিশালী অভিনেতা।
তাকে নিয়ে আদ্যপান্ত লেখাটি খুব ভাল। লেখককে অনেক ধন্যবাদ