এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • আটহাজারী মোহ

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ | ৭৭০ বার পঠিত
  • প্রাককথন:

    ২০১৯ সালের মে-জুনে একাকী ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম উত্তরাখন্ডের কিছু স্থানে। তখন এভারেস্ট, মাকালু ইত্যাদি পর্বতে কিছু বঙ্গসন্তানের মৃত্যু হয়েছিল। শহরতলীর এক একাকী তরুণী 'এভারেস্ট অভিযাত্রী' তাঁর শেরপা গাইডের বিরুদ্ধে প্রকাশ‍্যে এনেছি‌লেন কিছু বিস্ফোরক অভিযোগ। একাকী ভ্রমণকালে আমি ডিজিটাল দুনিয়ার তরজা থেকে দুরে থাকি। তাই ঐসব খবর কিছুই জানতাম না। কলকাতা থেকে এক বঙ্গবন্ধু সেই খবর হোয়াতে পাঠিয়ে এ বিষয়ে আমার অভিমত জানতে চাইলে‌ন। বিষয়টি আমার‌ আগ্ৰহের পরিমন্ডলে থাকায় বলেছিলাম, এখন নয়, বাড়ি ফিরে এ বিষয়ে জানাবো। পরে তাকে নিম্নোক্ত অভিমত জানিয়েছিলাম। মনে হয় তা এখনো এবং হয়তো বহুদিন প্রাসঙ্গিক থাকবে। 
                           ★ ★ ★ ★ ★ ★ 
       ১৯৫৩ সালে প্রথম আরোহণের পর  ২০১৯ অবধি ৭০০০ এর বেশি পর্বতারোহী এভারেস্ট শিখরে পদার্পণ করেছেন। আনুমানিক ৭০% আরোহণ হয় নেপালের দিক থেকে চিরাচরিত South-East Ridge via South Col রুট ধরে। এই পথে‌ই হিলারি-তেনজিং জুটি প্রথম এভারেস্ট শৃঙ্গে চড়েন। আনুমানিক ২৮% সামিট হয় তিব্বতের দিক থেকে North-East Ridge via North Col ধরে। এই পথে দুই দক্ষ ব্রিটিশ অভিযাত্রী - পিটার বোর্ডম‍্যান ও জো টাস্কার নূন‍্যতম সরঞ্জাম নিয়ে  এ্যালপাইন শৈলী‌তে আরোহণ করতে গিয়ে ১৯৮২ সালে প্রায় শিখরের কাছ থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। সে ছিল এক দুঃসাহসিক অভিযান।
     
     এযাবৎ আবিস্কৃত এভারেস্ট শিখর আরোহণের ১৮টি সম্ভাব্য রুটের মধ‍্যে এই দুই প্রচলিত রুটেই ৯৮% সামিট হয়ে থাকে। কারণ এ দুটি রুট তুলনামূলক ভাবে কম বিপজ্জনক। এপথে কমার্শিয়াল গাইড বা শেরপাদের সার্ভিস পাওয়া যায়। মাত্র ২% এভারেস্ট সামিট হয় বাকি ১৬টি অপ্রচলিত রুটে যার মধ‍্যে East Face রুট অত্যন্ত বিপজ্জনক কারণ সেখানে উচ্চ পর্বতগাত্রে অনেক হ‍্যাঙ্গিং গ্লেসিয়ার থাকায় এ্যাভালাঞ্চ বা তুষার‌ধ্বসের সম্ভাবনা প্রবল। 
     
      ১৯২৪ সালে তৃতীয়‌বার ব্রিটিশ এভারেস্ট অভিযানে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা প্রবাদপ্রতিম ব্রিটিশ অভিযাত্রী জর্জ ম‍্যালোরীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন - এতো দূর্গমতা, দূর্ঘটনার সম্ভাবনা সত্ত্বেও পর্বতারোহীগণ এভারেস্ট শৃঙ্গে চড়তে যান কেন? উত্তরে ম‍্যালোরী যা বলেছিলেন তা পর্বতারোহণ মহলে কিংবদন্তী‌ হয়ে গেছে -  "Because it is there". সেই ম‍্যালোরী‌ই বলেছিলেন 'Only less wise (অর্থাৎ অত‍্যন্ত বেপরোয়া) climbers may try East Face route, but definitely it is not for us'. ম‍্যালোরী ও তাঁর সহ-অভিযাত্রী এ্যান্ড্রু আর্ভিন North-East Ridge ধরে চড়ছিলেন। ৯‌ই জুন শিখরের মাত্র আটশো ফুট নীচে তাঁদের শেষ দেখা যায়। ৭৫ বছর পর ম‍্যালোরী‌র মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়।
     
       তবু অসমসাহসী অভিযাত্রী কঠিন চ‍্যালেঞ্জ‌ও মোকাবেলা করতে চায়। তাই পূর্ব গাত্র ধরেও ১৯৮৩ সালে এক আমেরিকা‌ন অভিযান হয়। প্রায় ৩৮ দিনের প্রবল ঝুঁকি‌পূর্ণ কঠিন কসরতের পর দলনেতা James D. Morrissey’র নেতৃত্বে তাঁরা অবশেষে শিখরে চড়তে সমর্থ হন। পরবর্তীকালে এই রুটে হাতে গোনা অভিযান হয়। 
     
        ১৯৭৫ সালে বিখ্যাত ব্রিটিশ অভিযাত্রী ক্রিশ বনিংটনের নেতৃত্বে Everest South-West Face অভিযান সফল হয়। ১৯৭৫ সালের সফল অভিযানে ছিলেন সেই জমানার কিছু দিকপাল পর্বতারোহী - ডুগল হাস্টন, হ‍্যামিশ ম‍্যাকিনিস, ডগলাস স্কট, পিটার বোর্ডম‍্যান, নিক ইস্টকোর্ট, টুট ব্রেথ‌ওয়েট, মিক বার্ক প্রমূখ। বস্ত‌ত নিক ও টুটের ঐ উচ্চতায় এক কঠিন ও বিশাল Rock Face আরোহণ‌ই ছিল ঐ অভিযানের সফলতার মূলে। নিক শিখরের কাছ থেকে পড়ে মারা যান। সমসাময়িক পর্বতারোহীদের কাছে স্কটিশ টাইগার, ওলড ফক্স অফ গ্লেনকো ইত্যাদি নানা আদরের ডাকনামে সুপরিচিত, মাউন্টেন রেসকিউ এক্সপার্ট হ‍্যামিশ সেই অভিযানে‌র মাঝপথ থেকে ফিরে যান অসুস্থ হয়ে। 
     

      
     শ্রেণীগত ভাবে পর্বতে ওঠার মূলতঃ তিনটি পথ হতে পারে - গিরি‌শিরা (Ridge), গাত্র (Face), বা দুটি গাত্রের অন্তর্বর্তী নালা (Gully) ধরে। বেশিরভাগ অভিযান‌ই হয় এই তিনটি‌র বিবিধ সমন্বয়ে। এর মধ‍্যে শেষোক্ত দুটি পথে তুষারধ্বস (Avalanche) জনিত বিপদের সম্ভাবনা বেশি। উপরোক্ত ছবিতে তুষারধ্বসের বিপদের মাত্রা হিসেবে নীল, কমলা ও লাল রেখা‌গুলি যথাক্রমে Ridge, Gully এবং Face সূচক। ঢাল যতো তীব্র হবে তুষারধ্বসের সম্ভাবনা ততো বাড়বে। Gully বা Face এ পাথরে খাঁজখোঁচ বেশী থাকলে তুষারধ্বসের সম্ভাবনা অপেক্ষা‌কৃত কম হতে পারে, মোলায়েম হলে সম্ভাবনা যে বাড়ে তা স্বাভাবিক বুদ্ধি‌তেই বোঝা যায়। 
     
       এভারেস্টে তো বটেই, ঐ SW Face Expedition তখন ছিল পৃথিবীর প্রথম সর্বাধিক উচ্চতম গাত্র বরাবর আরোহণের অভিযান। সেটি একটি কঠিন ও বিপজ্জনক রুট তাই ১৯৫৩ তে প্রথম এভারেস্ট শিখর আরোহণ হলেও ঐ রুটে বিশেষ কোনো অভিযান হয়নি। সফল Everest SW Face অভিযানের দলনেতা ক্রিশ তার আগে নেপালে অন্নপূর্ণা-২, নুপৎসে, সুইশ আল্পসে আইগার নর্থ ফেস এবং সদ‍্য (১৯৭৫) গাড়োয়াল হিমালয়ে চ‍্যাঙাব‍্যাঙ শিখর অভিযান করে হাত পাকিয়েছেন। ১৯৭০ সালে নিজে শিখরে না চড়লেও সফলভাবে অন্নপূর্ণা সাউথ ফেস অভিযানের নেতৃত্ব দিয়ে Himalayan Long Face Climbing এর অভিজ্ঞতা  অর্জন করেছেন। সেবা‌র‌ও দলে ছিল তখনকার কিছু প্রবাদপ্রতিম পর্বতারোহী - ডন হুইল‍্যান্স, ডুগল হাস্টন, নিক ইস্টকোর্ট, মিক বার্ক, আয়ান ক্লো, মার্টিন বয়সেন প্রমূখ।  হাসিখুশি আমূদে, দলের সবাই‌কে মাতিয়ে রাখা আয়ান অবতরণের সময় পড়ে মারা যান।  ঐ দলের অনেকে‌ই ১৯৭৫ সালে এভারেস্ট দক্ষিণ-পশ্চিম গাত্র ধরে আরোহণ অভিযানে ছিলেন। ১৯৭২ সালে‌‌ ক্রিশ নিজেও Everest SW রুটে ২৭৩০০ ফুট অবধি চড়ে অসফল হয়ে ফিরে এসেছি‌লেন। অর্থাৎ কঠিন রুটে এভারেস্ট আরোহণ মোটেও সহজসাধ‍্য নয়। 
     
       প্রচলিত রুটের বাইরে এভারেস্টে এই সব রুটে খুব কম প্রচেষ্টার কারণ বেস ক‍্যাম্প পৌঁছতেই দীর্ঘ, দূর্গম পদযাত্রা, খুব কম অভিযাত্রীর জন‍্য নিঃসঙ্গ‌তাবোধ, বাণিজ্যিক শর্তে অভিজ্ঞ শেরপা ও অন‍্যান‍্য সাহায্য পাওয়ার ক্ষীণ সম্ভাবনা, প্রবল ঝুঁকি ও পর্বতারোহণের টেকনিক্যাল চ‍্যালেঞ্জ। তবে এগুলি‌ই প্রকৃত অভিযানের মূল অনুষঙ্গ। 
     
      একসময় চারধাম পদযাত্রা শুরু হতো হৃষিকেশ থেকে। তখন তীর্থযাত্রীরা যাওয়ার আগে আত্মীয়‌স্বজন, বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা করে যেতেন। কারণ পথের দুর্গমতা ও প্রকৃতির অনিশ্চয়তা হেতু যাত্রা সম্পূর্ণ করে বা মাঝপথ থেকেও বেঁচে ফিরে আসার নিশ্চয়তা থাকতো না। জিম করবেটের অনবদ‍্য লেখনীতে আছে কুখ‍্যাত রূদ্রপ্রয়াগের লেপার্ডের কাহিনী। ১৯২৬ সালে জিমের গুলি‌তে ভবলীলা সাঙ্গ করার আগে অবধি আট বছরে সে ১২৫ জনেরও বেশি মানুষ‌ মেরেছি‌ল। তাদের অধিকাংশ‌ই ছিল কেদারনাথ বা বদ্রীনারায়ণ যাত্রাপথে চটিতে রাতের আশ্রয় নেওয়া হতক্লান্ত তীর্থ‌যাত্রী। এখন বদ্রীনাথ অবধি বাস চলে যায়। সামান্য পথ হাঁটতে হয়। কেদারনাথেও ট‍্যাঁকের জোর থাকলে হেলিকপ্টারে কয়েক মিনিটে  পৌঁছে ভিআইপি দর্শন করে এক বেলাতেই ফিরে আসা যায়।
     
      প্রচলিত (৭০%) সাউথ কল রুটে এভারেস্ট  আরোহণও এখন প্রায় সেই পর্যায়ে পৌছে‌ছে। ঐ পথে শিখরে চড়তে গেলে তিনটি শর্ত পূরণ হলেই চলে - এজেন্সি ফি, পারমিট ফি ও আনুষাঙ্গিক মিলিয়ে ভারতীয় টাকায় ৩০ লাখের মতো খরচ করা‌র ট‍্যাঁকে‌র জোর, অনুকূল আবহাওয়া এবং অবশ‍্যই শারীরিক সামর্থ্য। কারণ ছাব্বিশ হাজার ফুটে‌র ওপর অতি-উচ্চতাজনিত 'ডেথ জোনের' প্রাকৃতিক প্রতিকুলতা চিরকাল‌ থাকবে। ঐ উচ্চতা‌য় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে‌ও নিজের শরীর‌টিকে টেনে তোলা‌ই অতিশয় পরিশ্রমের ব‍্যাপার। 
     
      এ বাদে পুরো রুট নির্দেশিত। 'আরোহণ মরশুম' শুরু হওয়া‌র আগে খুম্বু আইসফলের সাম্প্রতিক ক্রিভাসের (বরফের ফাটল) ওপর পেতে দেওয়া হয় ব্রীজ ল‍্যাডার, পতনের সম্ভাবনাময় জায়গা‌য় লাগানো হয় ফিক্সড রোপ। তাই এখন অভিযান বলতে বোঝা‌য় শেরপা গাইডের সাহায‍্যে, ফিক্সড রোপে জুমার লাগিয়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা এড়িয়ে কোনরকমে শিখরে পৌঁছে মুহুর্তে‌র জন‍্য স্নো-গগলস খুলে কয়েকটি ছবি  তুলে প্রমাণ করা - "আমি উঠেছি।" অতঃপর দেশে ফিরে সংবর্ধনা, কাগজ, টিভিতে সাক্ষাৎ‌কার, ফেসবুক পোষ্টের মাধ্যমে প্রতিভাত হয় আত্মপ্রসাদের প্রদর্শনবাদীতা। এই পথে এভারেস্ট আরোহণে প্রকৃত  'অভিযান'-সূলভ প্রতিকূলতা, অনিশ্চয়তার  অভাবে অভিযাত্রী সূলভ উপলব্ধির সম্ভাবনা কম।
     
      প্রকৃত অভিযান (Expedition) এবং অন্বেষণ (Exploration) সুলভ মানসিকতা, সাহসিকতা, দক্ষতার উদাহরণ খুঁজলে অনেক পাওয়া যায় দুর অতীতে। ধরা যাক -  না কোনো শিখর অভিযান নয় - শুধুমাত্র নন্দাদেবী পর্বতে‌র পাদদেশে (বেসক‍্যাম্প) পৌঁছনোর পথ আবিস্কার। বিভিন্ন অভিযাত্রীর প্রায় পঞ্চাশ বছরের সম্মিলিত অনুন্ধানের পর দুই প্রবাদপ্রতিম ব্রিটিশ পর্বতারোহী - এরিক শিপটন ও বিল টিলম‍্যান - কয়েকবারের প্রচেষ্টার পরেও  হাল না ছেড়ে অবশেষে  ১৯৩৪ সালে খুঁজে পান ঋষিগঙ্গার নদীখাত ধরে নন্দাদেবী‌র পাদদেশে পৌঁছনোর পথ। আজও ঐ পথেই যেতে হয় নন্দাদেবী বেসক‍্যাম্প। দ্বিতীয় কোনো পথ আবিষ্কার হয়ে থাকলে আমার জানা নেই। ব্রিটিশ পর্বতারোহী Hugh Rutledge ১৯৩০ সালে তিনবার নন্দাদেবী আরোহণের বিফল প্রচেষ্টার পর আমেরিকা‌র টাইম ম‍্যাগাজিনে লেখেন, শিখরে চড়া তো দুরের কথা, নন্দাদেবী‌র পাদদেশে পৌছানো‌‌ই উত্তর মেরু অভিযানের মতো কঠিন প্রচেষ্টাসম।
     
       বহুবার আসার ফলে হিমালয়ে‌র কিছু অঞ্চল ছিল এরিকের কাছে নিজের তালু‌রেখার মতো পরিচিত। তবু দুর্গম হিমালয়ে পথ খুঁজে বের করা‌ই নয়, এরিক শিপটনের ছিল জহুরীর চোখ। তিনিই পূর্ববর্তী এভারেস্ট অভিযানে এসে লক্ষ্য করেন তেনজিং‌য়ের অসামান্য শারীরিক সক্ষমতা। তখন তেনজিং ছিলেন নিছকই এক HAP বা High Altitude Porter. তাঁর কাজ ছিল ফিক্সড রোপ ধরে উচ্চ শিবিরে মাল পৌঁছানো।  অনেক HAPই যখন উচ্চ ক‍্যাম্পে মাল ফেরী করে ক্লান্ত, তেনজিং তখন‌ও ফুরফুরে। মজা করে সবাই বলতো, ওর তো দু জোড়া ফুসফুস!  এরিক বুঝলেন তেনজিং‌কে আরোহণের ট্রেনিং দিলে সে হতে পারে এক দক্ষ পর্বতারোহী। ক্লিশে শোনা‌লেও বলতে‌ই হয় - বাকিটা ইতিহাস।
     
       ইদানিং এভারেস্ট 'অভিযান' বলে যা হয় তা আসলে High Altitude Guided Climb. কিছু এ্যাডভেঞ্চার‌প্রেমী ট‍্যূরিস্ট‌ যেমন সুইস আল্পসে গাইডের সাহায‍্যে ম‍্যাটারহর্ণ শিখরে ওঠেন - কতকটা তেমনি। তবে ১৮৬৫তে ব্রিটিশ অভিযাত্রী এডোয়ার্ড হুইম্পারের নেতৃত্বে প্রথম ম‍্যাটারহর্ণ আরোহন ছিল এক দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা। তখন‌ও তুষারক্ষেত্রে পর্বতারোহনের জন‍্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্লাইম্বিং গীয়ার - Crampon (বরফে চড়ার জন‍্য জুতোর তলায় লাগানো‌র কাঁটা) এবং Ice axe  বা তুষার কুঠার আসেনি। ওঠা, নামা, স্টেপ কাটিং, সারভাইভ‍্যালের জন‍্য তুষার গুহা খনন (snow cave), এ্যাঙ্কর হিসেবে ব‍্যবহার করে বিলে (belay) করা বা ক্রিভাস থেকে কাউকে রেসকিউ করা, আচমকা নিজের পতনরোধ এহেন বহুবিধ কাজে এটি পর্বতারোহী‌দের কাছে অত‍্যন্ত উপযোগী, প্রায় জীবনদায়ী একটি টুল। হুইম্পার তাঁর সঙ্গী‌দের নিয়ে মামূলী Alpenstock (বল্লমের মতো লোহার সুঁচালো ফলা লাগানো লাঠি) সম্বল করে চড়তে গেছি‌লেন ম‍্যাটারহর্ণ। ঐ অভিযানে অবরোহনের সময় দলের চার সঙ্গী পড়ে মারা যান।
     
        তবে অত‍্যধিক উচ্চতা‌, ঠান্ডা ও আবহাওয়ার  অনিশ্চয়তা জনিত কারণে শেরপা গাইডের সাহায্যে চড়লেও এভারেস্ট আরোহণ‌ ম‍্যাটারহর্ণের কয়েকগুণ কঠিন সংস্করণ। এভারেস্টে শীতকালে জোরে হাওয়া চললে Wind Chill Factor -50 এর কাছাকাছি নেমে যেতে পারে যার ফলে খোলা জায়গায় শরীরের কোনো উন্মুক্ত অংশ - যেমন নাক, আঙ্গুলের ডগা বা হিসু ক‍রতে গিয়ে বার করা চুঙ্কুরি - কয়েক সেকেন্ডের মধ‍্যে তুষার ক্ষত বা ফ্রস্ট বাইটে আক্রান্ত হতে পারে। 
     
       তাই শুনেছি এভারেস্ট অভিযাত্রীদের টয়লেট টেন্টে বা তুষার গুহায় হিসি, পটি করে বরফ চাপা দিয়ে দেওয়া বিধেয়। ঐ ঠান্ডায় ব‍্যাকটেরি‌য়াও নিস্ক্রিয় হয়ে যায়। ফলে মানসিক অস্বস্তি বাদে সংক্রমণজনিত বাস্তবিক সমস্যা নেই। এই সব প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করা ছাড়া এখন ‘এভারেস্ট অভিযান’ কেবল শেরপাকাকুর পিছু পিছু হাঁটি হাঁটি পা পা করে ওঠা। তিরুপতি বালাজি দর্শনের মতো ২৭৬০০ ফুটে ব‍্যালকনিতে আগে থাকা 'অভিযাত্রী‌দের' পিছনে লাইন দিয়ে দাঁড়া‌তে‌ও হয় বেশ খানিকক্ষণ। চড়া‌র পালা এলে শিখরে পৌঁছে একহাতে পতাকা - অন‍্য হাতে V দেখিয়ে শেরপার দ্বারা ছবি তোলা - এইসব এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে আটহাজারী শিখর-শিকারি‌দের হুজুগ। 
     
        আটহাজারী ক্লাবে এভারেস্ট বড়দা বলে তথায় হুজুগে‌র মাত্রা বেশী। এভারেস্টের তুলনায় অনেক কঠিন কারাকোরাম হিমালয়ে পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম শিখর মাউন্ট গড‌উইন অস্টেন বা K2 অথবা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পশ্চিম হিমালয়ে নবম উচ্চতম শিখর Killer Mountain নাঙ্গা পর্বতে আরোহণ। নবম উচ্চ‌তম হলেও, নাঙ্গা পর্বতের দক্ষিণ গাত্র যা রূপাল ফেস নামে পরিচিত তা রূপাল ভ‍্যালি থেকে শিখর অবধি প্রায় পনেরো হাজার ফুট। ফলে এই রুটে আরোহণ পৃথিবীতে তাবৎ পর্বতের মধ‍্যে সর্বাধিক। তুলনায় এভারেস্টের বেস ক‍্যাম্প‌ই অনেক উঁচুতে, যেখান অবধি ট্রেকিং করে গিয়ে আসল ক্লাইম্ব সাড়ে এগারো থেকে বারো হাজার ফুটের মতো।


    সমীহ উদ্রেককারী নাঙ্গা পর্বতের রূপাল ফেস
     
     তৃতীয় উচ্চতম শিখর কাঞ্চনজঙ্ঘা‌ও কম দূরূহ নয়। তবে সেসব স্থানে এই হুজুগে ভীড় নেই। এই হুজুগে‌র জন‍্য‌ এখন পয়সা দিয়ে এজেন্সি মারফৎ এভারেস্ট চড়তে আসা 'পর্যটকদের' বলা হয় 'ক্লায়েন্ট'। যাদের ট‍্যাঁকের জোর বেশী বা স্পনসর জোটাতে করিৎকর্মা, তারা আবার সাত সমূদ্র পেরোনোর মতো সপ্ত মহাদেশের সাতটি উচ্চতম শিখর  (যা 'সেভেন সামিটস' বলে পরিচিত) চড়তে যায়। তার সবকটি অবশ‍্য আট হাজার মিটার নয়। তবে তাতে কিছু যায় আসে না।  ওটাও একটা রেকর্ড সেটিং কীর্তি বলে গণ‍্য হয়। 
     
        এভারেস্ট সহ পৃথিবীতে চোদ্দটি আট হাজার মিটারের বেশি উচ্চতা‌র শিখরের আটটি‌তেই নেপাল থেকে চড়া যায়। কিছু ব‍্যতিক্রমী অভিযান ছাড়া এহেন এভারেস্ট শিখর 'পর্যটন' থেকে‌ই নেপাল সরকারের ভালো‌ আমদানি হয়। বহু স্থানীয় মানুষের রুটিরুজি চলে। তাই আবেদনকারী‌র ঐ উচ্চতায় আরোহণের যোগ‍্যতা, শারীরিক ক্ষমতা আছে কিনা তা বিচার না করে‌ই পারমিট ফি  দিলে চড়ার অনুমতি পাওয়া যায়। পয়সার বিনিময়ে সে অনুমতি আদায়ের দায়িত্ব‌ও এজেন্সি‌র। ফলে ইদানিং‌কালে এমন অনেকে এভারেস্ট চড়তে যায় যার হিমালয়ে আরোহণের পূর্ব‌-অভিজ্ঞতা বলতে ছিল কয়েকটি HAT (High Altitude Trek) করা। 
     
      যোগ‍্যতা ও সামর্থ্য বিচারের অলিখিত দায় আবেদন‌কারীর নিজের। তারা সেটা ঠিকমতো করতে পারে না বা অতি উচ্চাভিলাষী‌ হওয়ার ফলে ঘটে নানা দুর্ঘটনা ও মৃত্যু। তখন মানবিক কারণে বহুল খরচে হেলিকপ্টারে মৃতদেহ উদ্ধার করে দেশে আনতে হয়। পঁচিশ হাজার ফুটের ওপর পাতলা হাওয়ায় অধিকাংশ হেলিকপ্টার উঠতে পারে না। ফলে ওপরে কারুর মৃত্যু হলে শেরপা‌দের মাধ‍্যমে অনেকটা নীচে নামাতে হয়। সে খরচ না যোগাতে পারলে চিরতুষারের রাজ‍্যে আরোহী‌ হিম সমাধিস্থ হয়ে পড়ে থাকে। এমন কিছু জমাট মৃতদেহ চলার পথের দিশা নির্দেশক। মানে অমুক হাইটে তমুক খাঁজের পাশে নীলপোষাকের হাঁটু মুড়ে বসে থাকা বডির পর ডানদিকে যেতে হবে।
     
      এতো অহেতুক মৃত্যু‌মিছিলে‌র ফলে কোনোদিন যদি নেপাল সরকার নিছক অর্থ উপার্জনের লক্ষ‍্য ত‍্যাগ করে এভারেস্ট সহ নেপাল হিমালয়ে যেকোনো আট হাজার মিটারের ওপর শিখরে চড়ার জন‍্য‍ আবেদন‌কারীর নূন‍্যতম আরোহণের যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ ও পূর্ব অভিজ্ঞতার শংসাপত্র বিচার করে তবে‌ই চড়ার অনুমতি দেন - তাহলে সেটা দায়িত্ব‌বোধের পরিচায়ক হতে পারে।
      
        ছ হাজার মিটারের কম উচ্চ‌তার শিখরে চড়তে গেলে IMF Grant, sponsor ইত‍্যাদি নাও পাওয়া যেতে পারে। তবে খুঁজলে এখনো কিছু অনামা, অনাঘ্রাতা, টেকনিক্যালি ডিফিকাল্ট ছ-হাজারী শিখরে চড়া যেতে পারে। অথবা পরিচিত শিখরে পূর্বারোহিত রুট ছেড়ে নতুন রুটে ওঠা যেতে পারে। পর্বতারোহণের কৃতিত্ব হিসেবে এসবের মান‍্যতা শেরপা গাইডের সাহায‍্যে এভারেস্টে ওঠার থেকে‌ কম নয়। তবে, তেমন শিখরে আরোহণ করে ঘরে ফিরে মিডিয়ার ফ্ল‍্যাশের ঝলকানি পাওয়ার পরিমান বা সম্ভাবনা কম। কারণ অনেকে হয়তো সেসব শিখরের নামই জানে না। অথবা মোট্‌টে ছ-হাজার মিটার - ভেবে অনেকে নাক সিঁটকোতেও পারে। কেবল অভিজ্ঞ পর্বতারোহী‌রাই সেই উদ‍্যমের আসল কদর বুঝবেন। আর তৃপ্ত হবে প্রকৃত অভিযাত্রী‌ক স্বত্তা।
     
      তেনজিংকে যখন প্রশ্ন করা হয়, আপনার জীবনের কঠিন‌তম পর্বত আরোহণের অভিজ্ঞতা কোনটি। প্রশ্ন‌কর্তা ভেবেছিলেন তেনজিং বলবেন - এভারেস্ট। কিন্তু তিনি বলেন - নন্দাদেবী পুর্ব এবং পশ্চিম শিখরের সংযোগকারী প্রায় দু কিমি দীর্ঘ গিরিশিরা ধরে যাওয়া ছিল তাঁর জীবনের কঠিন‌তম এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। এক ফরাসী অভিযানে হারিয়ে যাওয়া এক সহ অভিযাত্রী‌কে খুঁজতে গিয়ে তাঁর ঐ রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা হয়। 
     
      পর্বতারোহণ ফুটবল বা ক্রিকেটের মতো দর্শক পরিপূর্ণ স্টেডিয়ামে আয়োজিত খেলা নয়। এতে নেই দর্শকের উত্তাল করতালি বা চিলতে পোশাকের চিয়ার লিডারদের মনোরঞ্জনী উল্লাসবিভঙ্গ। এতে নেই কর্পোরেট  স্পনসরদের ব‍্যানারের ঝলকানি। পর্বতারোহণে গেলে প্রকৃতির আপাত সৌন্দ‍র্যের আড়ালে অনুভব করা যায় তার নির্মম, করাল রূপ। সুদূর, দুর্গম, নির্জন সেই ভয়াবহ প্রাকৃতিক পরিবেশে কখনো স্রেফ বেঁচে থাকাটাই হতে পারে কঠিন সংগ্ৰাম, নিদারুণ সংকটময়। তাই পর্বতারোহণে গিয়ে একটি শৃঙ্গ জয় করতে পারলে সেই সাফল্য অবশ‍্যই আনন্দদায়ক, তবে নিজের সামর্থ্য, সাহস, দক্ষতা ও সহ‍্যের সীমা অতিক্রম করতে পারার উপলব্ধির মধ‍্যেই প্রকৃত  পর্বাতোরোহী খুঁজে পান আসল চ‍্যালেঞ্জ। সেটাই অভিযাত্রী‌ক সত্তার আসল প্রাপ্তি।
     
    পুনশ্চঃ - আমার অভিমত হুজুগে এভারেস্ট শিখর-শিকারীরা অর্বাচীনের ভাবনা হিসেবে উপেক্ষা করলে অধমের মনে করার কিছু নেই। তবে এর নির্গলিতার্থ‌টি অনুধাবন করতে পারলে - মানে যেভাবে হোক এভারেস্ট শৃঙ্গে আরোহণের আটহাজারী মোহ ত‍্যাগ করতে পারলে - অযথা কিছু প্রাণের অপচয় কমতে পারে। বাঁচে করদাতার অর্থে 'বডি আনার' খরচ‌। কমে দূর্ঘটনার পর প্রকাশ‍্যে নানা চাপান উতোরের পাঁচালী।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ | ৭৭০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:a80e:9b09:b27e:***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:৪৪527581
  • "বিকজ ইট্স দেয়ার" - এটা বোধায় মানব সভ্যতার কোর প্রিন্সিপল গুলোর একটা, আর অন্য সব প্রাণীদের থেকে এই একটা জায়গাতে আমরা আলাদা। আমরা বেশীর ভাগ কাজ করি কেন? কেন লোকে হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীটার প্রতিটা কোনা আবিষ্কার করে চলেছে, কেন জেমস ক্যামেরন আর অন্যান্যরা মারিয়ানার ট্রেঞ্চ অবধি নেমেছে, কেন মানুষ এখন চাঁদে আর মঙ্গলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, একদিন সারা সোলার সিস্টেমে পৌঁছে যাবে (ইউরোপা বাদ দিয়ে)? একদিন যখন লার্জ ম্যাজেলানিক ক্লাউড এর একপাশে এলিয়েনদের সাথে আমাদের দেখা হবে আর আমাদের প্রশ্ন করবে তোমরা এখানে এলে কেন, তখনও আমার এই উত্তরই দেব - বিকজ ইট্স দেয়ার :-) 
  • বিকজ | 117.194.***.*** | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:০৮527584
  • ইটস দেয়ার কথাটা জর্জ কোস্টাঞ্জা-ও বলেছিলো। বিশদ জানতে হলে সাইনফিল্ড দেখুন। 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:a80e:9b09:b27e:***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৪৯527586
  • কোন এপিসোড? সাইনফেল্ড আমার অল টাইম ফেভারিট সিরিজ! 
  • Arindam Basu | ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২১527595
  • খুব ভাল লিখলেন সমরেশবাবু | 
    একদিকে "ক্লায়েন্ট" আর তাদের বণিকদের দাপটে, আর অন্যদিকে নেপাল সরকারের এভারেস্ট দেখিয়ে টাকা কামানোর নেশায় এভারেস্টের নিজস্ব ইকোসিস্টেমের বারোটা বেজে গেছে |  উষ্ণায়ণের কারণে বরফ গলছে, তার সঙ্গে মৃতদের শরীর বেরিয়ে আসছে | চার বছর আগের একটা লেখায় দেখলাম,
    "A large area below the summit has earned the discordant nickname “Rainbow Valley” for being filled with the bright and colorfully dressed corpses of maintainers who never made it back down. The sight of a frozen hand or foot sticking out of the snow is so common that Tshering Pandey Bhote, vice president of Nepal National Mountain Guides Association claimed: “Most climbers are mentally prepared to come across such a sight.”
    হিমালয় গলছে, আগে যেখানে গ্লেসিয়ার ছিল তার নীচে এখন গ্লেসিযাল লেক তৈরী হচ্ছে | আমাদের এখানে আমরা মাউন্ট কুকে এ জিনিস প্রত্যক্ষ করেছি, এভারসেটের উচ্চতার তুলনায় মাউন্ট কুক কম উঁচু, কিন্তু এখানেও ক্লাইমবিং কঠিন। এবং তুলনায় কম উঁচু বলে উষ্ণায়ণের প্রভাব অনেকটাই  | বছর দুয়েক আগেও নিশ্চিন্তে গরমকালের দিকে কিছুটা পাহাড়ের গ্লেসিয়ার ট্রেক করা যেত, আজকাল এমন "টুরিস্টদের" ভিড়, এই সময়টায় যাওয়াই দুষ্কর। গেলেও থাকার জায়গা পাওয়া যায় না। 
     
  • Ranjan Roy | ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৩:০২527618
  •  সমরেশ 
        অনেক অজানা তথ্য দিলেন। একটা পারস্পেকটিভ পেলাম। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন