এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাইদির মৃত্যু

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৬ আগস্ট ২০২৩ | ১২৬৫ বার পঠিত
  • একটা ভয় কাজ করত যে ক্ষমতা পরিবর্তন হলে আইনের মারপ্যাঁচে বা যে ভাবেই হোক সাইদিকে দুই আঙুল উঁচু করে জেল থেকে বের হতে দেখতে হবে। তা দেখতে হচ্ছে না এইটা একটা স্বস্তির খবর। একজন যুদ্ধাপরাধী, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি জেলে মৃত্যু বরন করেছেন। ভক্তগণ কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছেন। অথচ সাইদির মত ভণ্ড এই ভূখণ্ডে খুব কমই আসছে। ধর্মকে ব্যবসায় রূপান্তরে সাইদি একজন বিল গেটস! সাইদির কপাল খারাপ প্রযুক্তির উৎকর্ষের সময় সে জেলে পচতে ছিল। ভিউয়ের জগতে সাইদি আসতে পারলে বাংলার জমিনের ইতিহাস উল্টে যেত! আজকে যারা ভিউ বিক্রি করে করে খাচ্ছে তারা সাইদির কাছে শিশু। এই ব্যবসার প্রতিষ্ঠাতা সাইদি। ক্যাসেট কিনে মানুষ সাইদির ওয়াজ শুনত। সাইদি সম্পর্কে আহমদ ছফা লিখেছেন, "অন্য মাওলানার মিলাদ আমি শুনেছি। তাঁরা ধর্মকথা পুণ্যকথা বলেন। কিন্তু সেগুলো বোরিং লাগে। মাওলানা সাঈদীর ক্যাসেট যখন শুনলাম, বুঝতে পারলাম মিলাদ কাকে বলে। এখনে ধর্ম অর্থ মোক্ষ কাম সব মেলে। হযরত সাঈদী যদি গান করতেন, মাইকেল জ্যাকসনের কাছাকাছি পৌঁছুতেন। অভিনয় করলে ছবি বিশ্বাসকে ছাড়িয়ে যেতেন। নাচ করলে বুলবুল চৌধুরীর রেকর্ড ম্লান হয়ে যেত। নাচ গান অভিনয় এবং তার ওপর ধর্মকথা এই একের ভেতর চার তিনি সমন্বয় করেছেন। তাঁকে কি করে আমি সামান্য মানুষ বলব। সুতরাং বরণীয় স্মরণীয়দের তালিকায় আমি সাঈদী সাহেবকে একটা জায়গা দিয়ে বসে আছি।" (নিকট ও দূরের প্রসঙ্গ/ আহমদ ছফা, ১৯৯৫)

    আমার সুযোগ হয়েছে দুইটাই শোনার। একটা হচ্ছে ক্যাসেটে বা সরাসরি সাইদির ওয়াজ শোনার আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে সাইদির রাজনৈতিক বক্তব্য শোনার। সরা মানে হচ্ছে মাটির তৈরি ঢাকনা, ঠুনকো জিনিস, কেউ কেউ ধরণীকে ওই মাটির তৈরি সরা মনে করে, ধরা কে সরা জ্ঞান কথাটা ওই জায়গা থেকেই আসছে। সাইদি ক্ষমতায় থাকতে ধরাকে সরা জ্ঞান করত। ওর যে আস্ফালন ছিল মঞ্চে বসে তা লিখে প্রকাশ করার মত না। রাজাকার হিসেবে স্বীকৃত একজন মানুষের ওই আস্ফালন যারা না দেখছে তারা সাইদির আসল চেহারা দেখেনি, কোনদিন বুঝতেও পারবে না দাড়ি টুপির আড়ালে কি ভয়ংকর সব কথা বলত এই লোক।

    আলেম বলে বলে ফেনা তুলে ফেলছে কেউ কেউ আজকে। অথচ সাইদির মত ভণ্ড খুব একটা দেখা যায়নি এর আগে। তিনি বিচার চলাকালে নিজের নামের বিকৃতি শুনে প্রতিবাদ করেন, কোরানের আয়াত দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে কারও নাম বিকৃতি গর্হিত কাজ, ধর্ম সমর্থন করে না। অথচ দিনের পর দিন জাহানারা ইমামের, ডক্টর কুদরতে খুদার নাম বিকৃতি করে ওয়াজ করে গেছেন! তখন একবারের জন্য কোরানের সূরা হুজরতের ১১ নাম্বার আয়াতের কথা মনে আসে নাই! এর পরেও উনি বিশিষ্ট আলেম! আজাহারি আহাজারি করে সাইদির জন্য কান্নাকাটি করে!

    ট্রাইব্যুনাল চলা সময়ে সারাদেশে সমস্ত জামাতিরা সমস্বরে চিৎকার করছে এই বলে যে মুক্তিযুদ্ধের সময় সাইদি নাবালক ছিল, সাত আট বছরের শিশু ছিল। অথচ মৃত্যুর পরে সবাই দেখি জন্ম ১৯৪০ সাল লিখছে! বয়স নিয়ে এইটা আরেকটা ভণ্ডামি না? এইটা অবশ্য জামাতিদের ভণ্ডামি, সাইদি নিজে কোনদিন অস্বীকার করেন নাই যে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় জামাতের কর্মী ছিলেন না। শুধু অভিযোগ যেগুলা সেগুলার সময় তিনি সেখানে ছিলেন না! এইটা শুধু সাইদি না, নিজামি, কাদের মোল্লা সবাই একই সুরে কথা বলে গেছেন ট্রাইব্যুনালে। তাদের এই সব ভণ্ডামি সব সময়ই চলত, তাদের সমস্ত ভণ্ডামি বৈধ, কেউ যদি বলে তাহলেই সে সরকারের লোক, আওয়ামীলীগের দালাল!

    সাইদি ওয়াজে জান্নাতের টিকেট বিক্রি করত! আর আমার দেশের সাদাসিধে মানুষ এমন মানুষের কথায় নাচত! সাইদির জেল হাওয়ার পরে মানুষ সাইদিকে চাঁদে দেখতে পাইছে বলে দাবী করছে। দেশ জুড়ে হাঙ্গামা হয়েছে, মানুষ মারা গেছে! গতকাল ঢাকায় মৃদু ভূমিকম্প হয়েছে, আর সাইদির ভক্তকুল বলা শুরু করেছে সাইদির মৃত্যুতেই এই ভূমিকম্প! এই শ্রেণীর সমর্থক থাকলে লাগে কিছু আর? যাই হোক, ওয়াজের ওই সব দিনে সাইদি নিজেকে হয়ত ঈশ্বরের কাছাকাছি কিছু একটা মনে করত। একবার ইরাকে আমেরিকা আক্রমণের পরে কক্সবাজারে এক ওয়াজে তিনি বলে বসেন আমেরিকান বা ব্রিটিশ, যাকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিশোধ নিতে হবে! এই ওয়াজের ক্যাসেট ইংল্যান্ডের চ্যানেল ফোরের হাতে পরে। এমন লোক কীভাবে ইংল্যান্ডের ভিসা পায় বলে প্রশ্ন তুলে চ্যানেল ফোর! ফলাফল সাইদির বিলেত সফর বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে অবশ্য সাইদির আমেরিকার ভিসা বন্ধ হয়। নাইন ইলিভেনের পরে আমেরিকা সারা দুনিয়ায় নানা জনের উপরে নিষেধাজ্ঞা দেয়, বাংলাদেশ থেকে একমাত্র সাইদির নাম ছিল সেই তালিকায়।

    মৃত্যুর পরে একটা নতুন ঘটনা সামনে আসছে। যা অবশ্যই কাম্য ছিল না আমাদের কাছে। সুখরঞ্জন বালীর একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বিচার চলাকালীন সময়ও শুনেছিলাম, কিন্তু তখন এর গুরুত্ব বুঝতে পারিনি। তিনি একবার সাক্ষী দেন সাইদিকে দোষী সাব্যস্ত করে। পরে তিনি নিজের জবানবন্দি বদল করতে চান। তাকে কে বা কারা অপহরণ করে নিয়ে যায়। দ্বিতীয় সাক্ষ্য আর তিনি দিতে পারেন নাই। আসামি পক্ষ বলে রাষ্ট্র সাক্ষ্য দিতে দেয় নাই, অপহরণ করে নিয়েছিল। অন্য দিকে পুলিশ বলে এইটা আসামিপক্ষের কাজ, ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ইচ্ছা করে এই কাজ করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে এই কাজ করছে তা দেখার বিষয় না। রাষ্ট্রের উচিত ছিল সাক্ষীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আর তা দিতে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্র কি ভয় পেয়েছিল যে জবানবন্দি পরিবর্তন করে সাইদিকে নির্দোষ দাবী করলে সাইদি মুক্তি পেয়ে যাবে? এমন হওয়ার তো সুযোগ ছিল না। কারণ সুখরঞ্জন বালীর অভিযোগ ছাড়াও অন্য আরও কয়েকটা অভিযোগের চাক্ষুষ সাক্ষী ছিল, তাদের সাক্ষীতে কয়েকবার করে ফাঁসি দেওয়া যেত সাইদিকে। ইব্রাহিম কুট্টির হত্যাকাণ্ডের বিচারের সময় প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী পাওয়া যায়। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মফিজ উদ্দিন পসারী ৮ নম্বর অভিযোগের ঘটনায় ইব্রাহিম কুট্টিকে হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী।

    অন্য আরেকটা অভিযোগে সাক্ষী গোলাম মোস্তফা সাইদিকে শনাক্ত করলে তাকে তার ঘরে ঢুকে কুপিয়ে মেরে ফেলে পিশাচেরা। এমন কিছুর ভয়ে বালী জবানবন্দি পরিবর্তন করতে চেয়েছিল কি না জানি না। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে তাকে নিরাপত্তা দেওয়া, ভরসা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রের। সাইদি মারা যাওয়ার পরে আজকে যখন সুখরঞ্জন বালী বলে বেড়াচ্ছে সাইদি নির্দোষ ছিল, রাষ্ট্র তাকে সাক্ষী দিতে দেয় নাই, এইটা স্পষ্ট প্রমাণ থাকা স্বত্বেও বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করল। যা ভবিষ্যতে পুরো ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। ক্ষমতার পালা বদলে আজকের মৃদু প্রতিবাদ, মিনমিন করে ভুয়া বলা কণ্ঠস্বর বজ্রকন্ঠে বলবে ভুয়া ট্রাইব্যুনালে মাওলানা সাইদিকে, আল্লামা সাইদিকে, কোরানের পাখি সাইদিকে জেল দিছিল সরকার। সেই সাথে সব মামলাই ভুয়া বলে বেড়াতে পারবে জামাত বিএনপি। অথচ একটু মাথা খাটালেই এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা যেত। আমি জানি সাইদি অপরাধী, কিন্তু যারা ইমান এনে বসে আছে জামাতের প্রতি, তাদের সামনে এই ঘটনা অন্য কিছুর প্রতি আর বিশ্বাস আনতে দিবে না। তারা ভাল অস্ত্র পেয়ে গেছে বলা চলে।

    স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পার হয়ে গেছে। তখনের যে তরুণ সে এখন সময়ের নিয়মেই বৃদ্ধ। আজকে বৃদ্ধের ফাঁসি দেখে, মৃত্যু দেখে মনে হতেই পারে এই সব বয়স্ক লোকদেরকে এখন শাস্তি দিয়ে কী লাভ? কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে বয়স্ক লোকটাকে কেউ শাস্তি দিচ্ছে না, দিচ্ছে তার পাপকেই, যা সে তরুণ বয়সে করেছেন। দেশের সাথে বেইমানী করার আগে যেন কেউ হাজার বার ভাবে তার জন্য এই শাস্তি। পঞ্চাশ বছরের উপরে হয়ে যাওয়ায় রক্তাক্ত ইতিহাস খুব একটা রেখাপাত করে না আমাদের অনেকের মনে। অথচ এখনও নানা জায়গায় গণ কবর পাওয়া যায়, আমাদের তা জানার ইচ্ছাই হয় না। সময়টা বেশি হয়ে যাওয়ায় মুক্তিযুদ্ধ নিজেই এখন অনেকের কাছে বিরক্তিকর বিষয় আর তাই মুক্তিযুদ্ধে কার কী ভূমিকা আর তার জন্য শাস্তি অনেকের কাছে সরকারের চাল ছাড়া আর কিছু না।

    আর এখানেই আপনার সাথে আমার পার্থক্য। যদি কেউ এমন মনে করে থাকেন, যদি কেউ সাইদি প্রেমিক থেকে থাকেন তাহলে আমাকে বন্ধু ভাবার দরকার নেই, আপনি বিদায় নেন। আপনার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। সমকালীন রাজনীতি আর মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ, বঙ্গবন্ধু ইত্যাদি যদি গুলিয়ে ফেলেন তাহলে আর কোন গপ্পই থাকে না। আপনার থেকে যত দূরে থাকা যায় তত মঙ্গল আমার জন্য।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৬ আগস্ট ২০২৩ | ১২৬৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ১৬ আগস্ট ২০২৩ ০৯:১৯522535
  • দেইল্লা রাজাকার মরসে এইডা ভাল। সেই সময়েই ভূমিকম্প হইছিল। ত আমার ঢাকার বন্ধুরা কয় হ্যারে জাহান্নামে গাইঢ়্যা দেওনের লাইগ্যাই ভূমিকম্প।
  • | ১৬ আগস্ট ২০২৩ ০৯:২৫522536
  • ইকি সেকেন্ড প্যারা কোথায় হাওয়া হয়ে গেল! আবার লিখি 
    শেখ হাসিনা তখনো ক্ষমতায় আসেন নি। সেই সময় সামহোয়্যারইন ব্লগে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আরা জামাতীপক্ষের লোকেদের মধ্যে তুমূল লড়াই চলত। আমি তখন ইউনিকোডে লিখতে পারতাম না বলে চুপচাপ পড়ে চলে আসতাম।  মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকেরা (যাঁদের অনেকেই এখন আমার বন্ধু) যেভাবে নিরন্তর তথ্য তুলে ধরে মিথ্যা প্রচারের বিপক্ষে লড়ে গেছেন সে রীতিমত শিক্ষণীয়। 
  • একক | ১৬ আগস্ট ২০২৩ ১১:০৭522537
  • কাল সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় সাঈদি ভক্তদের মরাকান্না চলেছে। একটা ফেবু গ্রুপ আছে,  বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় জার্মান ভাষা সংস্কৃতি আউসবিল্ডুং দিয়ে কিভাবে জার্মানি আসা যায় এসব নিয়ে উতসাহ দেওয়ার গ্রুপ, আদতে ভক্তদের নেটওয়ার্ক।  সেখানে তো এন্ডলেস শোকসভা!!  
  • &/ | 151.14.***.*** | ১৬ আগস্ট ২০২৩ ২৩:৪৪522547
  • ফেসবুকে এই নিয়ে এত পোস্ট দেখছি যে বলার নয়! যেন বন্যায় ভেসে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও তুমুল তর্কবিতর্ক লেগে যাচ্ছে। কী ভয়ানক ব্যাপার যে স্বাধীন একটা দেশে এই কান্ড চলছে।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:a82b:f2e8:d7f5:***:*** | ১৮ আগস্ট ২০২৩ ০৮:৩৬522583
  • জেলেই মারা গেছে, এটা ভাল, আইনের মার প্যাঁচে ছাড়া পেয়ে যায় নি। 
     
    বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধী-দের বিচার এবং শাস্তির চেষ্টা করছে। দেরীতে হলেও, ভাল উদ্যোগ 
  • :|: | 174.25.***.*** | ১৯ আগস্ট ২০২৩ ০০:২০522604
  • "ধরাকে সরা জ্ঞান" করা মানে জগতকে শুধু ঠুনকো ভাবাই নয় -- একই সঙ্গে পৃথিবীটাকে ছোটো এবং সীমিত এমন কিছু ভাবা যা কিনা একহাতে পাকড়ে নেওয়া যায় এমনও বটে।
  • কিংবদন্তি | ১৯ আগস্ট ২০২৩ ১১:৩৭522610
  • অরণ্য দা, হেভিওয়েট সবার বিচার শেষ, শাস্তিও দেওয়া শেষ। হেভি ওয়েটদের মধ্যে সাইদিকে আর গোলাম আযমকে শুধু মৃত্যুদণ্ড দেয় নাই আদালত। সাইদিকে আজীবন কারাদণ্ড আর গোলাম আজমকে দিয়েছিল নব্বই বছরের কারাদণ্ড। সাইদিকে কেন আজীবন দেওয়া হইছিল মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে তা নিয়ে প্রচুর বাকবিতণ্ডা আছে। আর গোলাম আযমকে বয়স বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেয়নি আদালত। পছন্দ হয়নি কিন্তু যুক্তি ছিল আদালতের কাছে। তবে দুইজনই শাস্তি ভোগ করা অবস্থায় মারা গেছে এইটাই স্বস্তি। এরা বেঁচে থাকলে সামনে ক্ষমতার পালা বদলে হলে খুব বড় বিপদ তৈরি করত সবার জন্য। 
    &, স্বাধীন দেশে যে আরও কত সিনেমা দেখতে হয় আমাদের তা বলে বুঝানো যাবে না। আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে অন্তত দশ জনের মত পাইছি যারা আওয়ামীলীগের পোস্টধারী নেতা, প্রোফাইলে মুজিব কোট পরা ছবি লাগানো অথচ সাইদির মৃত্যুতে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে। এই সব নেতাদের আওয়ামীলীগে প্রবেশ হয়েছে খুব বেশিদিন আগে না হয়ত। আর এরাই সামনে ডুবাবে দলকে। 
  • guru | 103.175.***.*** | ১৯ আগস্ট ২০২৩ ২১:০৭522633
  • শরীফ ভাই ,
     
                   অনেক ধন্যবাদ | খুবই ভালো লিখেছেন ভাই | নিজের মনের কথা স্পষ্ট ভাবে লিখেছেন | 
     
    "ক্ষমতার পালা বদলে আজকের মৃদু প্রতিবাদ, মিনমিন করে ভুয়া বলা কণ্ঠস্বর বজ্রকন্ঠে বলবে ভুয়া ট্রাইব্যুনালে মাওলানা সাইদিকে, আল্লামা সাইদিকে, কোরানের পাখি সাইদিকে জেল দিছিল সরকার।"
     
    ক্ষমতার পালা বদলের সম্ভাবনা নেই ভাই | দুটি প্রমান আছে |
     
     
    ২ | তবে সবচেয়ে বড় প্রমান আপনি নিজে ভাই | ক্ষমতার পালা বদলের সম্ভাবনা থাকলে আপনি কি ভাই ফিরে আসতে চাইতেন রোমানিয়া থেকে এতো তাড়াতাড়ি ভাই ?
     
    "আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে অন্তত দশ জনের মত পাইছি যারা আওয়ামীলীগের পোস্টধারী নেতা, প্রোফাইলে মুজিব কোট পরা ছবি লাগানো অথচ সাইদির মৃত্যুতে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে। এই সব নেতাদের আওয়ামীলীগে প্রবেশ হয়েছে খুব বেশিদিন আগে না হয়ত। আর এরাই সামনে ডুবাবে দলকে। "
     
    তাহলে এদের আওয়ামীলীগে নেওয়া হলো কেন ভাই ? হাসিনা আপা আমার আপনার মতো বান্দার থেকে রাজনীতি অনেক ভালো বোঝেন | তিনি কি না জেনেই এদের নিজের দলের রাজনীতিতে নিয়েছেন ?  আমার তো মনেহয়না ভোট নিয়ে ওনার চিন্তার কোনো কারণ আছে | পুরো আওয়ামী লীগ দলটাই এখন হাসীনা আপার সঙ্গে সমর্থক | আল্লার নিয়মে একদিন সবকিছুকেই শেষ হতে হবে | ওনার স্বাভাবিক মৃত্যুর সঙ্গেই আওয়ামী লীগ দলটাও শেষ হবে যেমন এপার বাংলাতে জ্যোতি বসুর মৃত্যুর একদশকের মধ্যে সিপিএমের রাজনৈতিক মৃত্যু ডেকে এনেছে | এখন দেখুন তখন মানে ধরুন ২০৪০ এর পরে কোনোএক সময়ে তখন আপনার মতো মুক্তমনা মুক্তিযুদ্ধের সমর্থকদের ভীষণভাবেই প্রয়োজন হবে যেহেতু আমার মনে হয় তখন প্রকৃতির নিয়মেই আওয়ামী লীগের দুর্বলতা আসবে অনেক বেশি করেই | তখন সে সময়ে আপনাদের নতুন করে আওয়ামী লীগ তৈরী করতে হবে পুরোনো মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে | কাজটা নিঃসন্দেহে খুবই কঠিন | শুভেচ্ছা রইলো ভাই |
     
     
  • aranya | 2601:84:4600:5410:f0e2:2463:7d6d:***:*** | ২০ আগস্ট ২০২৩ ০২:১১522639
  • গুরু মাত্র ৫ বার শরীফ - কে 'ভাই' বলে সম্বোধন করেছেন। এই স্নেহের প্রকাশে আমি অভিভূত :-)
  • কিংবদন্তি | ২১ আগস্ট ২০২৩ ০১:১৪522749
  • অরণ্য দা, কমেন্টে রিয়েক্ট দেওয়ার ব্যবস্থা নাই গুরুতে, খুব অভাব অনুভব করলাম আপনার কমেন্টে একটা হা হা না দিতে পেরে! 
     
    গুরু, আপনে আমাকে যে সম্মান দিলেন তাতে আমি অভিভূত। আমি আসলে অতখানির যোগ্য না। আপনি যেভাবে আমার দেশে ফেরার সাথে আওয়ামীলীগ সরকারের টিকা থাকাকে মিলিয়ে দিলেন! আহা! দারুণ! তবে দুঃখিত, আমি এগুলা চিন্তা না করেই আসছি। বিএনপি সরকার এর মধ্যে ক্ষমতায় এসে গেলেও আসতাম। কারণ আমার আসতে কোন বাধা নাই। এইখানে লেখালেখি করে দেখি এমন ভাবার দরকার নাই যে আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ কেউ। আমি দেশে থাকা বা বিদেশ থাকা দিয়ে কারও কোন মাথা ব্যথা নাই। আমার নিজেরও নাই। আমি আসছি পায়ের ব্যথা নিয়ে। ভারত যেতে চাচ্ছিলাম চিকিৎসার জন্য। হুট করেই আপনাদের সরকার ভিসা প্রক্রিয়া এমন জটিল করে ফেলছে যে যাওয়ার আর কোন উপায়ই নাই। 
    যাই হোক, শেখ হাসিনা সরকার টিকে থাকবে কি না তা সময়েই বলে দিবে। বর্তমান রাজনীতি নিয়ে একটা লেখার ইচ্ছা আছে আমার। ভাবনা গুলো গুছিয়ে নিতে পারলেই লেখব। এখন একটু বলি, আপনি যে সংবাদের লিংকটা দিয়েছেন তা বেশ বড় প্রভাব ফেলেছে দেশের রাজনীতিতে। সাইদির মৃত্যুতে বিএনপির অমন আহাজারি করা ঠিক হয়নি। আর বিএনপি বরাবরই কেন জানি রাজনীতির অ আ ক খ বুঝে না। অমন আহজারি না করলে হয়ত ভারত এমন একটা বিবৃতি দিত না। সাইদির মৃত্যুর পর বিএনপির আচারন জামাতের সাথে বিএনপির প্রেম সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস এনে দিয়েছে সবার মনে। আপনার মত আমিও অপেক্ষায় আছি সামনের নির্বাচনে কী হয় তার জন্য। দেখা যাক কী হয়। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন