এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • হল্যান্ডের গল্প - ১ - একটি বৃষ্টি ভেজা বিকেল, ভ্যান গঘ এবং ...

    সুদীপ্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ২২ এপ্রিল ২০২৩ | ১১০০ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)
  • ঠিক চার দিনের নোটিশে বিদেশযাত্রা, এ-জিনিস আগে কখনো হয়নি বটে; আরে বাবা ফকির আদমি তো নই যে ঝোলা উঠিয়ে চললাম, নেহাতই সংসারী মানুষ! কিন্তু দোকানে মাঝে মধ্যে এমন খরিদ্দার আসে যে তাদের চাহিদা সামলানো মুখোমুখি না হ'লে বড় দায় হয়ে ওঠে!  অগত্বা শনিবার সন্ধ্যেয় দোকানের মাধ্যমে হোটেলের বুকিং শেষ করে রোববার সকাল সকাল বিমানে চেপে বসা গেল। যাত্রাপথ দুবাই হয়ে নেদারল্যান্ডসের অ্যামস্টারড্যাম শহর। যাত্রাপথের বিবরণে বেশী ঢুকবো না, তবে গন্তব্যে নামার পর এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে হাওয়ার তেজ দেখে অবাক হলাম, সে কি হাওয়া - মানে হু হু করে হাওয়া, কমতি বা বাড়তি নেই, একই তেজে সারা শহরময় দেশময় সর্বত্র শুধু হাওয়া দাপিয়ে বেড়াচ্ছে! সাধে কি আর হাওয়া-কলের দেশ! 
     
    দেশের নাম এখন যদিও নেদারল্যান্ডস, তবে লোকজন এখনো হল্যান্ড নামটাকে বেশ আঁকড়ে রয়েছে দেখলাম। আমার কাজকর্ম, ঘোরাঘুরি-ও এই পুরনো হল্যান্ড অঞ্চলেই। পরে জানলাম, এখানকার সরকার হল্যান্ড কেন্দ্রিক পর্যটনকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতেই নাম পরিবর্তনের এই প্রয়াস নিয়েছেন। এমনকি স্যুভেনির ও অন্যান্য জিনিসপত্রেও হল্যান্ড নামের ছড়াছড়ি। তাই এই লেখার শিরোনাম রইল হল্যান্ডের নামেই। আর ছোটবেলার হান্সের গল্প দিয়ে যে দেশের সাথে পরিচয় আর সঙ্গে বাস্তেন, বার্গক্যাম্প, গুলিট, নিস্তেলরুই, রাইকার্ড, রবেন, ভ্যান পার্সি - এদের জড়িয়ে 'হল্যান্ড'-এর শিকড় মনের ভেতরে ছড়িয়ে যাওয়া - সে অনুভব সহজে যাওয়ার নয়!  তো এই যে এয়ারপোর্টে এসে নামলুম এর নাম হল স্কিফোল এয়ারপোর্ট। এখানে বলি, এদেশের জায়গার নামে যদি  'sch' থাকে তো তার উচ্চারণ হয় 'স্ক'। পরদিন সকালে আমার যাওয়ার ছিল অ্যামস্টারড্যাম স্লটারডেইক (বা স্লটারডিক), সেইমত এয়ারপোর্ট থেকে সহজেই ডে রিটার্ন-এর টিকিট নিয়ে চেক ইন করে নেমে এলাম বেসমেন্টে, এখান থেকেই দু'ধরণের ট্রেন ছাড়ে - স্প্রিন্টার আর ইন্টারসিটি। স্প্রিন্টার-এ ওয়াই-ফাই থাকে ইন্টারসিটি-তে নেই। তবে ইন্টারিসিটি যেহেতু দূরগামী তাই গতিবেগ বেশ বেশী। নেদারল্যান্ডসের গণপরিবহণ খুবই ভালো, সেটা অবশ্য পরের কয়েকদিনে বুঝেছিলাম। আর লোকজন-ও বেশ মাই-ডিয়ার, কিছু জিগ্যেস করলে সাধ্যমত সাহায্য পাওয়া যায় দেখলাম। আপিসের জানলা থেকেই প্রথম দেখতে পেলাম উইন্ডমিল বা হাওয়া-কলের সারি, একটা-দুটো নয়, একেবারে সার দিয়ে। তবে এগুলো সেই ট্র্যাডিশনাল কাঠের তৈরী উইন্ডমিল নয়, একেবারে আধুনিক প্রযুক্তি-তে তৈরি। 
     


    যখন এদেশে আসার কথাই উঠল, তখন দুটো জায়গা প্রথমেই মাথায় এসেছিল - ভ্যান গঘ মিউজিয়াম আর অ্যানা ফ্র্যাঙ্কের বাড়ি।  যদিও কাজকর্ম সামলে কতদূর কি করা যাবে জানা ছিল না। আর সহকর্মী যে দু-একজন আছে, তাদের বাড়ি এতটাই দূরে যে আপিস ছাড়া দেখা হওয়ার জো নেই, সুতরাং নিজেকেই চেষ্টা-চরিত্র গবেষণা করে বেরিয়ে পড়তে হবে। কিন্তু এ দেশ এমন ভয়ানক ডিজিটাল দেশ, জানা ছিল না। এয়ারপোর্ট চত্বরের খান তিন-চার দোকান ছাড়া কোথাও ক্যাশের চল নেই, এমনকি কোনো মিউজিয়ামে গেলে অনলাইন টিকিট বুক করে তবে যেতে হয়, অন-দ্য-স্পটের কোনো ব্যাপার-ই নেই! এসব জেনে যখন প্রথম সেসব ওয়েবসাইট দেখা শুরু করলাম, সব টিকিট-ই ভোঁ-ভাঁ। এক সহকর্মী আপিসে জানান দিল এখানে নাকি মাঝে মাঝে দিনের বা তার পর দিনের টিকিট ছাড়ে কিছুক্ষণের জন্যে, সুতরাং হাল না ছেড়ে চেষ্টা করলে লেগেও যেতে পারে। অবশেষে ২৯শে মার্চ  টিকিট জুটল অ্যানা ফ্রাঙ্কের বাড়ির ৫ই এপ্রিলের জন্যে, আর ৩০শে মার্চ ভ্যান গঘ মিউজিয়ামের টিকিট জুটল ৩১শে মার্চের জন্যে।
     
    ৩১শে মার্চ শুক্রবার, আমার টিকিট বিকেল চারটেয়। সকাল থেকেই এদিকে শুরু হয়েছে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। অবশ্য এ-দেশে এমন বৃষ্টি এসে থেকেই দেখছি, খুব যে ছাতা বা রেনকোট লাগে তা নয়, তবে হালকা ওয়াটার-প্রুফ জ্যাকেট হলেই কাজ চলে যায়,এমনকি প্যান্ট বা জুতো-ও সেভাবে ভেজে না। তবে হাওয়ার বেগের চোটে ছাতা এখানে অচল। এনেছিলাম রেন-পঞ্চো, কিন্তু সেসব ব্যাগবন্দী রেখেই  মাভৈঃ বলে বেরিয়ে পড়লাম আর ঠিক  তিনটে কুড়িতে এসে নামলাম অ্যামস্টারড্যাম সেন্ট্রাল স্টেশনে। গুগল ম্যাপ খুলে দেখলাম সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে ভ্যান গঘ মিউজিয়াম প্রায় তিন কিলোমিটার হাঁটা, আর হাতে সময় ৪০ মিনিট। খুব অসুবিধে নেই তবে বৃষ্টি আর রাস্তায় থিকথিকে পর্যটকের ভিড় সামলে যেতে হবে। আর একটা মিনিট-ও পরে যাওয়া চলবে না, কারণ মিউজিয়াম ৬টায় বন্ধ আর প্রতিটা মিনিট গুরুত্বপূর্ণ। মাথার উপর জ্যাকেটের হুডটা টেনে দিয়ে জোর গতিতে হাঁটা শুরু করলাম, ডান পাশে রয়্যাল প্যালেস পেরিয়ে এলাম, সারি সারি ক্যাফে, কফিশপ (এখানে ক্যাফে আর কফিশপ কিন্তু আলাদা প্রজাতি, কেন আলাদা সে রোমাঞ্চকর হোম-ওয়ার্ক পাঠকের জন্যে থাক না হয়), খাবার-দাবার, চীজ আর স্যুভেনির-এর দোকান, ছবির মত প্রতি ব্লক অন্তর একটা করে ক্যানাল চলে গেছে শহরের বুক চিরে; তাতে ছায়া পড়েছে দুদিকের বাড়িঘর অট্টালিকার, কিন্তু আপাততঃ সেসবে মন দেওয়ার একেবারে সময় নেই। হনহন করে হেঁটে চলেছি, মোড় ঘুরছি, ম্যাপ দেখছি  আর সময় কমছে; বৃষ্টিরও বিরাম নেই  কখনো কমছে কখনো বাড়ছে। অবশেষে দূর থেকে ছবিতে দেখা রেইকস (বা রিকস) মিউজিয়ামের বিরাট প্রাসাদোপম অট্টালিকা দেখা দিল। প্রায় এসে পড়েছি, আর একটু সামনে একটা পার্কের মত জায়গা পার হতেই চোখে পড়ল ভ্যান গঘ মিউজিয়ামের বাড়িটা, খুব ভিড় নেই, টিকিটের বারকোড স্ক্যান করে ভিতরে ঢুকে ঘড়িতে দেখলাম ৩ টে ৫৯! 
     
    রিকস মিউজিয়াম

     
    ভ্যান গঘ মিউজিয়াম 


    "অমরত্বের প্রত্যাশা নেই ,
    নেই কোনো দাবী-দাওয়া ,
    এই নশ্বর জীবনের মানে
    শুধু তোমাকেই চাওয়া..."
     
    রাস্তায় চলতে চলতে অবচেতনে মনে আসছিল ভ্যান গঘের জীবন, জানি না কেন 'জাতিস্মর' গানটাই ভেসে উঠছিল তার সঙ্গে। ১৮৫৩ থেকে ১৮৯০ - একটা লোকের মাত্র ৩৭ বছরের জীবন, যে হঠাৎ তার ২৭ বছর বয়সে আবিষ্কার করে ফেললো যে সে শিল্পী হতে চায়, চিত্রশিল্পী; আর ঠিক পরের দশটা বছর সেই চিত্রশিল্পই তার নশ্বর জীবনকে এনে দিল অমরত্ব! মিউজিয়ামের চারটি তলায় ধাপে ধাপে হলঘরের মত স্টুডিও-তে যত্ন করে সাজিয়ে রাখা ছবির সম্ভার, অধিকাংশ-ই ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের, তবে বেশ কিছু ছবি আছে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত মুহুর্তের আর শিল্পীর যেমন পল গগ্যাঁ, বার্নার্ড, কোনিং প্রমুখের। জুনডার্ট থেকে লন্ডন, ফ্রান্স আবার লন্ডন, ব্রাসেলস আবার ফিরে আসা নিজের দেশে - সাথে বার বার বদলে যাওয়া জীবিকা, কখনও বা সম্পূর্ণ জীবিকাহীন হয়ে যাওয়া, ভাই থিও-র সাথে গড়ে ওঠা হৃদ্যতা, চিঠিতে আঁকা ছোটো ছোটো ল্যান্ডস্কেপ, ধর্মের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগী হয়ে পড়া, শেষে থিও-র অনুপ্রেরণায় চিত্রশিল্পের মনোনিবেশ ১৮৮০-র দিকে। ভ্যান গঘ চিত্রশিল্পকেই বেছে নিলেন ঈশ্বর সাধনার একটি পথ হিসেবে। দশ বছরে এঁকে ফেললেন প্রায় নশো-র কাছাকাছি  অবিস্মরণীয় তৈলচিত্র! কিন্তু সারাজীবন তাঁকে ঘিরে রইল এক অদ্ভুত বিষণ্নতা আর অস্থিরতা!  মিউজিয়ামে ঢুকে প্রথমেই একটি চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসতে হয় বেসমেন্টে। একপাশের সর্পিল হলঘরে ঢুকতেই আলো-আঁধারিতে ধাপে ধাপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের জীবন, তার সাথে পারিবারিক ছবি, ভ্যান গঘের স্কেচ, থিও-কে লেখা চিঠি, কথোপকথন। ভ্যান গঘের জীবন, ভ্যান গঘের ছবি, ভ্যান গঘ হয়ে ওঠা - সবই থিও-ময়! ভ্যান গঘ হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান থিও-র, আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে, ছবি আঁকার অনুপ্রেরণা, এমনকি কিভাবে সেসব অমূল্য কাজকে সংরক্ষণ করা যাবে বা বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়া যাবে, সর্বত্র ছায়ার মত রয়ে গেছেন থিও। ১৮৮৪ থেকে থিও-র (থিও ছিলেন একজন আর্ট ডিলার) মাধ্যমে প্যারিসের বাজারে ছবি বিক্রির কথা ভাবতে শুরু করেন ভ্যান গঘ, যদিও প্রথম দিকে সাড়া মেলে নি তেমন। অবশেষে ১৮৮৫ তে এল সেই বিখ্যাত ছবি 'দ্য পট্যাটো ইটারস'। আলোআঁধারি-তে একটি কৃষক পরিবার টেবিলের চারধারে গোল হয়ে বসে আর টেবিলের প্লেটে, সদস্যদের হাতে আলুর সমাহার, টি-পট থেকে কফি পরিবেশন চলছে। মিউজিয়ামের তৃতীয় তলের বারান্দার একপাশে ঝোলানো এই ছবি। তার সামনের বেঞ্চে বসে দেখি সেই ছবি খানিক সময় ধরে। এই ছবি আঁকার পর ভ্যান গঘ চলে আসেন প্যারিসে আর তাঁর তুলির এই আলো-আঁধারি (যেটা পট্যাটো ইটারস-এ বেশ স্পষ্ট) ধীরে ধীরে উজ্জ্বল রঙের পরশ পায় প্যারিসের শিল্পীদের সান্নিধ্যে এসে, তাঁর ছবির নিজস্ব ধারা, ঔজ্জ্বল্য, রঙের বাঙ্ময়তা প্রকাশ পেতে থাকে।  'দ্য ব্রিজ..' , 'দ্য হার্ভেস্ট' , 'ফিশিং বোটস ...', 'দ্য বেডরুম' -এর মত ছবিগুলির আত্মপ্রকাশ ঘটে! মিউজিয়ামের দেওয়াল জুড়ে একের পর দেখতে থাকি, মাঝে মাঝে যেন নিজেকে চিমটি কেটে দেখে নিতে ইচ্ছে হয়, ছবির গল্পগুলো পড়ে মনে হয় এই তো সামনে গমের ক্ষেতের সামনে ক্যানভাস নিয়ে বসে রয়েছেন ভ্যান গঘ কখনো নদীর ধারে, কখনো সমুদ্রের ধারে বসে ঢেউ-এর তালে তালে নাচতে থাকা নৌকোগুলোকে অনায়াসে ফুটিয়ে তুলছেন ক্যানভাসের অপার্থিব নীলের মাঝে ('সী-স্কেপ...')! মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ দিতেই হবে গোটা মিউজিয়াম জুড়ে যে মায়াবী আলোর আবহ আর প্রতিটা ছবির গল্পগুলোকে এত সুন্দরভাবে ধরে রেখেছেন! প্রতিটি ফ্লোরে, প্রতিটি হলেই পর্যাপ্ত রক্ষীরাও ঘুরে বেড়াচ্ছে, এই অমূল্য সম্পদের রক্ষণে।

    দ্য বেডরুম, দ্য ইয়েলো হাউস , দ্য ল্যাংলয়েস ব্রিজ , দ্য হার্ভেস্ট









    মিউজিয়ামের প্রথম ফ্লোরে অর্থাৎ দো-তলায় উঠলে একটা দিক জুড়ে শুধুই আত্ম-প্রতিকৃতি - সেলফ-পোর্ট্রেট। বিভিন্ন সময়ের, বিভিন্ন মুহূর্তের আবেগ, পোষাক আর হ্যাট (স্ট্র হ্যাট, ফেল্ট হ্যাট ইত্যাদি) একেক ছবিতে এক এক রকম ভাবে প্রতীয়মান! অধিকাংশ ছবি-ই ১৮৮৭ সালের, অন্য ছবিও আছে এই সময়ে যেমন 'দ্য স্কাল'। সে-সময়ে নিজস্বী বা সেলফি-র ধারণা ছিল না, কিন্তু ভ্যান গঘের এই সেলফ-পোর্ট্রেটগুলো  দেখে অবাক হতে হয়, যেন নিজেই টাইমার দিয়ে সেলফি তুলেছেন ক্যামেরায়, ছবির রঙ, অভিব্যক্তি এত জীবন্ত! 
     






    আমি যে আঁকার স্কুলে প্রথম আঁকা শিখতে যাই, তার নাম ছিল 'খেয়াল-খুশী'। এখন মনে হয়, এর চাইতে ভালো নাম আঁকার স্কুলের আর কিছু হতে পারত না। ফুল-ফল-সব্জী আঁকায় হাত পাকিয়ে, প্রথম হাতে একটা ছবি ধরিয়ে দিদিমণি বলে দিলেন, "এটার মত আঁকার চেষ্টা করো, নিজের মত করে"। ছবিটা একটা বড়সড় বই থেকে, একটা ফুলদানী, তাতে কিছু ফুল, নীচেও কিছু ছড়িয়ে আছে। তেলরঙে আঁকা, সেটাই আমাকে প্যাস্টেলে তুলতে হবে। কার আঁকা ছবি জানা ছিল না, দেখে বেশ ভালো লেগেছিল, ফুলগুলো থেকে যেন রঙ চুঁইয়ে পড়ছিল! আর কি উজ্জ্বল! ফুলদানীটা অবশ্য অত ভালো লাগেনি। এঁকেছিলাম নিজের মত, ফুলদানী বদলে, ফুলও নিজের চেনা শোনা কিছু, কিন্তু রংটা কিছুতেই ধরতে পারিনি, নিজের মত লাল-হলুদ-নীল মিশিয়ে দিয়েছিলাম! দিদিমণিকে অনুযোগ করতে হেসেছিলেন শুধু, হাসির কারণ তখন বুঝিনি, বোঝার বয়সও হয় নি, বইটা বন্ধ করতে গিয়ে একঝলক দেখেছিলাম, পাতার কোণে ছোট্ট করে লেখা, 'ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ'। পরে আঁকার পরীক্ষায় পড়তে গিয়ে পড়েছিলাম ভ্যান গঘ, পল গগ্যাঁ, ভারমিয়ের - এঁদের ছবির কথা! প্রাথমিক রঙ, রেখাচিত্র এসব কত কি! ২০২৩ এ এসে অবশেষে দেখা পেলাম সেই ফুল আর ফুলদানীর, একেবারে এক ঝটকায় বছর বত্রিশ পিছনে সেই দিনটায় নিয়ে গিয়ে ফেলল! ভ্যান গঘের অস্থির জীবনী সেই কবে অঙ্কন পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নোত্তরে লিখে এসেছি, তারও কুড়ি-বাইশ বছর পর শ্রীজাত 'তারাভরা আকাশের নীচে' লিখে ফেলবেন শারদীয়ার পাতায়, পড়ে মুগ্ধতা বাড়বে! তার আগেই অবশ্য 'Starry Night' দেখে ফেলেছি নিউ ইয়র্কে। তবে ছোটোবেলার সেই প্রথম প্যাস্টেলে কাঁচাহাতের ছবি, ফুলদানী পছন্দ না হওয়া আর এখন নিজের চোখের সামনে দেওয়ালের ফ্রেমে স্বমহিমায় ভাস্বর সেই বই এর পাতায় দেখা 'Vase with Chinese Asters and Gladioli, 1886' - এক অর্বাচীনের দিকে স্বয়ং ভ্যান গঘ যেন তাকিয়ে দেখছেন আর মিটি মিটি হাসছেন! ভোর-রাতের স্বপ্ন - এমনই হয় বোধ হয়!

    ভ্যান গঘ মনে করতেন, একজন মানুষের কৃত্রিম স্থিরচিত্রের চেয়ে প্রতিকৃতি অনেক বেশী বিশুদ্ধতা আনে, তার মনের ভাবনাগুলোকে আরও ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে চিত্রশিল্পীর চোখ; ভ্যান গঘের 'Self Portrait' গুলো কাছ থেকে দেখে এখন বুঝলাম, ওর চেয়ে সত্যি কিছু নেই!
     
    এই সেই ফুল আর ফুলদানী

     
    অতঃপর পল গগ্যাঁ! সাল ১৮৮৮। তিনি এসে হাজির হলেন আলজ-এ (বা আর্লজ-এ), ভিনসেন্টের সাথে একই বাড়িতে (দ্য ইয়েলো হাউস) উঠলেন এবং আরও কিছু বিস্ময়কর ছবির জন্ম দিল দুই ক্ষণজন্মা চিত্রশিল্পীর এই বসবাস  আর সান্নিধ্য! দুজনেই দুজনের প্রতিকৃতি আঁকলেন। এমনকি ভ্যান গঘের অনুরোধে গগ্যাঁ আর বার্নার্ড দুজনেই আঁকলেন দুজনের প্রতিকৃতি,সে আর এক গল্প! পল গগ্যাঁ ফুটিয়ে তুললেন - ভ্যান গঘ নিবিষ্ট মনে গড়ে তুলছেন সূর্যমুখীদের জগৎ (দ্য সানফ্লাওয়ারস), তারা যেন ক্যানভাস ছেড়ে জলজ্যান্ত ফুল হয়ে টেবিলের ফুলদানীতে নেমে আসছে! 






     
    'কি লেখে সে, কবিতা? না কবিতা রচনা করে তাকে!' 

    ছোটোবেলায় শারদীয়া সন্দেশ বা শুকতারায় লীলা মজুমদারের একটা লেখার শিরোনাম ছিল 'আমার বাবা ছবি লেখে', প্রমদারঞ্জন রায়-কে নিয়ে লেখা! পরে পড়েছি রবীন্দ্রনাথ-ও একসময় অবন ঠাকুরকে এরকম-ই 'ছবি লেখা'র কথা বলেছিলেন। এখানকার পরিপাট্য দেখলে আমাদের কলকাতা জাদুঘরে অবন ঠাকুর, গগনেন্দ্রনাথ, যামিনী রায়ের ছবিগুলোর কথা ভেবে খারাপ লাগে অথচ সেসব ছবির-ও তো এমন-ই কত গল্প আছে, সেসব-ও তো এমন করে সাজানো যেত!  যাক, ১৮৮৮ থেকে ১৮৮৯ - ভ্যান গঘ এঁকেছেন পাঁচটি সূর্যমুখীর ছবি ফুলদানী-সহ, বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মিউজিয়ামে তারা ঠাঁই পেয়েছে।  এখানে যেটি আছে, সেটি ১৮৮৯-এর।  হলের মাঝামাঝি এক দেওয়ালের সামনে ভিড় দেখে উৎসুক হয়ে এগিয়ে যাই, হলুদ এক ঝলক চোখে আসে, এই সেই সূর্যমুখীরা, দ্য সানফ্লাওয়ারস! হলুদের তিনটি শেড-এ ভ্যান গঘ এঁকেছেন এই ফুলকে। দেখলে বিশ্বাস হয় না, ছুঁয়ে দেখার প্রবল বাসনাকে দমিয়ে রেখে এগিয়ে যাই।  মনে পড়ে এই সময়েই এঁকেছেন তারা-ভরা আকাশের রাত অর্থাৎ স্টারি নাইট, সে অবশ্য এখানে নেই, আছে নিউ ইয়র্কের মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্ট-এ, ২০১২ তে তাকে দেখে এসেছিলাম!  চোখ থেকে ছবি  সরে যায় ছায়ার মত, নতুন গল্প আসে-যায়। সমস্যা ঘনায় চিত্রকরের জীবনে! পল গগ্যাঁ শিল্পকে নিয়ে আসেন কল্পনার জগৎ থেকে, ওদিকে ভ্যান গঘের শিল্পজগৎ বস্তুধর্মী, দুজনের মধ্যে খুঁটি নাটি নিয়ে বচসা, দৃষ্টিভঙ্গির টানাপোড়েন অবশেষে বিচ্ছেদ নিয়ে আসে। প্রচন্ড মানসিক অস্থিরতা, তাড়নায় একটি রেজর নিয়ে এমনকি বন্ধুকে ভয় দেখান ভিনসেন্ট পরে সন্ধ্যেবেলা নিজের-ই কানের একাংশ কেটে ফেলে এক দেহ-পসারিণীকে উপহার দিতে চান! অগত্যা হাসপাতাল, মানসিক চিকিৎসালয়, ক্ষণিক আরোগ্য, আবার অস্থিরতা, এই নিয়ে চলতে থাকে জীবন, অথচ এই সময়েই জন্ম নিতে থাকে একের পর এক অমূল্য সৃষ্টি!  অর্চার্ড, গমের ক্ষেত , ল্যান্ডস্কেপ..  
     
















    অ্যাসাইলামের ভিতরের বাগানে, বাইরে ভিনসেন্ট তাঁর অবিরাম সৃষ্টি চালিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু মনের অস্থিরতা বেড়ে চলে, যে তেলরং-এর অমৃতে তাঁর স্বর্গরাজ্য রচনা করছেন, সেই তেলরং-ই অমৃত ভেবেই কি খেয়ে ফেলেন ভিনসেন্ট? অথচ সেই ভিনসেন্ট-ই এই সময়ে এক বছরে এঁকে ফেলেন শ-দেড়েক ছবি, এক একটি মাস্টার-ক্লাস!  অতিরিক্ত পরিশ্রম মানসিকভাবে তাঁকে আরও শ্রান্ত করে তোলে। ইতিমধ্যে থিও বিয়ে করেন জোহানা-কে (বা য়োহানা)। ১৮৯০ তে তাঁদের শিশু-সন্তানের জন্যে উপহার পাঠান ভিনসেন্ট, অ্যামন্ড ব্লসম, নিজের হাতে এঁকে, থিও আর জো  শিশুপুত্রের নামও রাখেন ভিনসেন্ট। মূল ছবিটি তো রয়েছেই, মিউজিয়ামের একটি দিকে পুরো দেওয়াল জুড়ে সেই অ্যামন্ড ব্লসম বানানো হয়েছে কৃত্রিমভাবে, পর্যটকরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে ছবি তুলছেন সেই পটভূমিকায়, সুযোগ ছেড়েছি বললে অন্যায় হবে।  এরপরেই আসে থিও-র জীবিকা পরিবর্তনের ভাবনা, ভ্যান গঘের অস্থিরতা, আর্থিক অনিশ্চয়তার টানাপোড়েন, এবং অবশেষে ২৭শে জুলাই!  ক'দিন আগেই এঁকেছেন বজ্রগর্ভ মেঘের নীচে দিগন্ত-জোড়া গমের ক্ষেত, এঁকেছেন মাটির উপরে-নীচে ছড়িয়ে যাওয়া শিকড় - সেই শিকড় খুঁজতেই কি ট্রিগার টেনে দিলেন বুকে! থিও এলেন, কিন্তু কিছু করার ছিল না - ২৯শে জুলাই অমরত্ব পেয়ে গেলেন রং-তুলি-ক্যানভাসের দুনিয়ায়। 

    এরপর থিও বাঁচেন নি বেশীদিন! কিন্তু জোহানা আগলে রেখেছিলেন ভিনসেন্টের সব অমূল্য সম্পদ, জোহানা না থাকলে আজ এভাবে আমরা কেউ ভ্যান গঘকে চিনতাম কিনা সন্দেহ, ছবির কথা তো দূরেই থাক! কিছু ছবি দিলাম নীচে, কিন্তু সামনে থেকে চাক্ষুষ দেখা সেই রঙের খেলার জাদুর পরশ তাতে থাকবে কিনা, জানা নেই! 

    কিছুটা মন-খারাপ,কিছুটা বিহ্বলতা, কিছুটা  আনন্দ বুকে নিয়ে যখন মিউজিয়াম থেকে বেরোলাম ঘড়িতে ঠিক ছটা, মিউজিয়াম বন্ধ হচ্ছে। বাইরে বৃষ্টি নেই, তবে মন-খারাপ করা বিকেলে মেঘ করবেই, আমরা জানি!  ঘোর-লাগা অবস্থায় ফিরে যেতে যেতে রিকস মিউজিয়ামের বিরাট হলের নীচ দিয়ে ফিরে আসতে আসতে আবার পিছে দেখে নিই একঝলক, বিদায় ভ্যান গঘ।

    তারপর? ফিরে আসার পথে ভ্যান ওয়ান্ডেরান-এ স্ট্রুপ-ওয়াফেল তো খেতেই হত। আর ড্যাম স্কোয়্যার-এ এসে রয়াল প্যালেস, ন্যাশনাল মনুমেন্ট এসব ভালো করে আবার দেখে নেওয়া গেল। এখানে চাতালে আপনমনে ঘুরতে থাকা পায়রাগুলো বেশ স্বাস্থ্যবান,আর একেবারেই ভয় পায় না মানুষকে। সন্ধ্যে নামার একটু আগে, পশ্চিমে নয়, পূবের দিকে ওদের-ই একটা ঝাঁকের উড়ে যাওয়া দেখতে দেখতে এগিয়ে চললাম সেন্ট্রাল স্টেশনের দিকে, গন্তব্য হোটেল! 
     
    রয়্যাল প্যালেস

     
    ন্যাশনাল মনুমেন্ট

     
    ড্যাম স্কোয়্যার, রয়্যাল প্যালেসের সামনের চাতাল 

     
    রাতের অ্যামস্টারড্যাম


    বৃষ্টি থেমেছে, হাওয়ার দাপটে মেঘ সরেছে, নীল আকাশে ফুটে উঠছে একটি দুটি তারা, আজকের রাত, সে তো হতেই হবে তারা-ভরা আকাশের! 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ২২ এপ্রিল ২০২৩ | ১১০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুদীপ্ত | ১২ মে ২০২৩ ২০:১৭519722
  • সামান্য পরিমার্জন করে দিতে হল। তবে ব্লগে একের বেশী ছবি একসাথে আপলোড করলে সব কেমন পরপর ঘেঁষাঘঁষি হয়ে যায় দেখছি , দুই ছবির মাঝে স্পেস আনতে বেশ কষ্ট করতে হয়।
  • kk | 2601:14a:502:e060:33e1:c2a1:6047:***:*** | ১২ মে ২০২৩ ২১:৩৫519724
  • বাঃ, খুব ভালো লাগলো পড়তে আর দেখতে। এই বছরের প্রথম দিকে অ্যামস্টার্ডামে অল্প কিছু সময় কাটিয়েছিলাম। সেই কথা মনে পড়লে মনের ওপর কেমন একটা শান্ত প্রলেপ পড়ে যায়, ছটফটানি কমে আসে।
    আরো পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
  • | ১২ মে ২০২৩ ২১:৪১519725
  • আহা ২১ বছর আগের স্মৃতি হিলিবিলি কেটে গেল মগজের মধ্যে।
     
    ব্লগে একাধিক ছবি অ্যাডানোর WA হল যেখানে যোগ করতে চাস সেখানে প্রথমে একাধিক এন্টার মেরে নিবি ছবি আর আগের পরের লাইন মনে করে ততগুলো এন্টার। ৩ টে ছবি যোগ করতে ৭ টা এন্টার।  এরপির ছবিগুলো জায়গামত তুললেই হল। দরকারে এক আধটা লাইন পরে মুছে দিলেই চলে।
  • সুদীপ্ত | ১৩ মে ২০২৩ ১৯:৪৮519768
  • গুরুর রোবট-দের ধন্যবাদ ছবিগুলো ঠিক ঠাক করে দেওয়ার জন্যে smiley
     
    ধন্যবাদ কে কে, হ্যাঁ আর-ও দু-তিনটে পর্ব আছে।
     
    থ্যাঙ্কু দমদি, করব পরেরটায়। হল্যান্ডের আমার আরেকটা প্রিয় পর্ব ছিল অ্যানা ফ্র্যাঙ্কের বাড়ি আর আউশভিৎস মেমোরিয়াল,সেটার কথাও বলব পরে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন