এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • হল্যান্ডের গল্প – ৫ – পুনশ্চ (বেলজিয়াম, কিন্ডারডাইক ও অন্যান্য)

    সুদীপ্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৮৮৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • “শীতের হাওয়ার লাগলো নাচন আমলকীর ওই ডালে ডালে”

    হল্যান্ডের গাঁ-গঞ্জে, পথে-ঘাটে আমলকীর দেখা না মিললেও স্কিফোল এয়ারপোর্টের বাইরে বেরোলেই ডিসেম্বরের শীতের হাওয়া আপনার শরীরে নাচন লাগাবেই। আর তার সঙ্গে যদি থাকে বৃষ্টি, তবে ষোলো-আনা পূর্ণ! এবার যদিও দিন-দশেকের জন্যে যাওয়া আর কাজের চাপের জন্য খুব বেশী ঘোরাঘুরি হয়ে ওঠেনি, তবুও বাঙালীর পায়ের তলায় সর্ষের তরঙ্গ রোধিবে কে! সুতরাং তার-ই মাঝে ‘হরে মুরারে’ বলে বেরিয়ে পড়া; তবে এবারের ঘোরাঘুরি খুব-ই সংক্ষেপে সারা, তাই এই লেখা অনেকটাই হবে যাতায়াতের পথ আর ছবি-নির্ভর। আগের বার নেদারল্যান্ডস-এর মধ্যে আর  আশেপাশের বেশীর ভাগ জায়গাই দেখা হয়ে গিয়েছিল, তাই এবার ভেবেছিলাম সুযোগ পেলে পাশের দেশ বেলজিয়ামে-ও ঢুঁ মেরে আসবো। আর আগেরবার জ্যানসে স্ক্যানসের প্রসঙ্গে কিন্ডারডাইকের কথাও উঠে এসেছিল, তাই মাথায় ছিল সেটাও যদি দেখে আসা যায়।

    শীতের সঙ্গে যে পরিচয় আগে আমেরিকার মিসৌরী-তে থাকতে ঘটে গেছে (ওখানে লোকে কয় ‘মিড-ওয়েস্ট-এর শীত’), সে বড় বিষম জিনিস! মাইনাস ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় সকালে উঠে ড্রাইভ-ওয়ে থেকে বরফ সরানো, গাড়ির কাঁচ, মাথা থেকে পুরু হয়ে জমে থাকা বরফের স্তর সরিয়ে ফেলার সেসব খন্ডযুদ্ধ সেরে ফেলার পর হল্যান্ডের এই ঠান্ডা বিশেষ কিছু নয়, কিন্তু এর হাওয়া একেবারে হৃদয়-বিদারক, বিশেষতঃ এই ভরা শীতে! তবু এখানে আসার পর প্রথম দুদিন সূর্যের মুখ দেখা গেল। সাড়ে আটটায় যখন আলো ফুটছে, আমি ততক্ষণে আপিসে। আবার যখন বেরিয়ে পড়ছি পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটায়, ততক্ষণে আঁধার নেমে গেছে প্রায়। এবার আরেকটু অসুবিধে যা হল, সেটা হল এদের রেলপথ আর স্টেশন জুড়ে কনস্ট্রাকশন, আর প্রায়শঃই ট্রেনের সূচী আর গতিপথ বদল, কখনো বা একেবারেই ট্রেন বাতিল। মাঝে মধ্যে এমন অবস্থা যে, দেখেশুনে মনেই হচ্ছিল না যে দেশের বাইরে আছি। তবুও বলব এ-দেশের পাবলিক ট্রান্সপোর্টের জবাব নেই, যেখানে আমাদের দেশে প্রায় পরিকল্পনা-মাফিক দৈনন্দিনের গণপরিবহন-কে (সরকারী তো ছেড়েই দিলাম) আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়ে চলেছে। যাই হোক, একটাই সপ্তাহান্ত আর তার-ও মাত্র এক-দেড় দিন সাকুল্যে হাতে রয়েছে যেহেতু, সুতরাং ব্রাসেলস (বা ব্রুসেলস, উচ্চারণের বিশুদ্ধতায় যাবো না) যাওয়ার ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করলাম। স্কিফোল থেকে সরাসরি ব্রাসেলস যাওয়ার সব ট্রেন বাতিল লাইনে কাজের জন্যে। সমস্যায় পড়লাম। যেহেতু বাসে যেতে চাই না, তাহলে ভেঙে ভেঙে যেতে হবে, স্প্রিন্টার আর ইন্টারসিটি ট্রেন মিলিয়ে তিন বার পরিবর্তন, ঘন্টা তিন-সাড়ে তিন মত যাত্রাপথ। সব রুট দেখে ঠিক করলাম ব্রেডা হয়ে যেতে হবে। ব্রেডা থেকে ব্রাসেলস সরাসরি স্প্রিন্টার বা ইন্টারসিটি আছে, ঘন্টা দেড়েক লাগে। এবার স্কিফোল থেকে ব্রেডা, মাঝে একবার পরিবর্তন, কিন্তু সে স্টেশনের নাম (‘s-Hertogenbosch) উচ্চারণ করতে গেলে দাঁত ভেঙে যাওয়ার যোগাড়, যদিও সাদা বাংলায় হার্টোজেনবশ বা হার্টোগেনবশ, কিন্তু সত্যিকার ডাচ উচ্চারণ তা মোটেই নয় যা ট্রেনে উঠে শুনেছিলাম। যাই হোক সেই স্টেশনে নেমে আবার ব্রেডা-র ট্রেন ধরতে হবে। তবে উচ্চারণ বা অজানা জায়গার শিহরণ দিয়ে কে আর কবে বাঙালী রক্তকে ঠান্ডা করতে পেরেছে! স্কিফোলের আন্তর্জাতিক  ট্রেন রিজার্ভেশন কাউন্টারে গিয়ে প্ল্যান জানাতেই বয়স্ক ভদ্রলোক রীতিমতো প্রিন্ট করে প্রথমে এক কপি দিয়ে দেখে নিতে বললেন, আমি আর একটু দেখে শুনে নিয়ে সম্মতি জানাতেই ব্রাসেলস জোন-এর একটা টিকিট বানিয়ে প্রিন্ট আউট দিয়ে দিলেন বারকোড সমেত। আমি টিকিট নিলাম ব্রেডা থেকে ব্রাসেলস জোন, ব্রেডা পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসের মধ্যেই, সুতরাং সরাসরি দিনের দিন টিকিট কেটে নেওয়া যাবে। এখানে বলে রাখি, আন্তর্জাতিক টিকিটের দাম এখানে ছুটি-ছাটা বা সপ্তাহান্তের উপর নির্ভর ক’রে ওঠা-নামা করে, আমার স্কিফোল থেকে দাম পড়ল সব মিলিয়ে প্রায় চল্লিশ ইউরো মত। আসা-যাওয়া নিয়ে প্রায় আশি। আর-একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, টিকিট হল ব্রাসেলস জোন-এর। এই জোনের মধ্যে তিনটি স্টেশন পড়ে, যে কোনোটিতেই ওঠানামা চলে। ব্রাসেলস এয়ারপোর্ট, মাঝে সেন্ট্রাল আর সব-শেষে জুইড-মিডি। শুক্রবার আপিস-ফেরতা এসব ব্যবস্থা সম্পন্ন করে এলাম, এবার বেরিয়ে পড়লেই হয়!

    শনিবার সকালে প্রাতঃরাশ সারার সময় ছিল না, তাই আগের রাতে রিসেপশনে বলে রেখেছিলাম। সকালে যত্ন করে একটা ক্যারি ব্যাগে গোটা দুয়েক টোস্ট, ক্রয়সাঁ, বেকন, চিজ, জুসের বোতল আর একখান আপেল ভ’রে আমার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল। সকাল সাতটায় এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেলাম, তখনও বাইরে অন্ধকার। ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে বাইরে ‘I Amsterdam’ চিহ্নের সামনে সুন্দর করে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে, এয়ারপোর্টের ভিতরেও। আমার প্রথম স্প্রিন্টার এলো সকাল সাতটা কুড়িতে। প্রথমে ঘন্টা দুয়েক পরে গিয়ে নামব সেই হার্টোগেনবশ-এ। সেখান থেকে দশ মিনিট পরে ব্রেডার ট্রেন, প্ল্যাটফর্ম বদলাতে হবে শুধু। এখানে প্ল্যাটফর্ম-কে ডাচ ভাষায় বলে স্পুর। ট্রেনে জানলার ধারে বসে খাবারগুলো গরম থাকতে খেয়ে নিলাম। এত সকালে লোকজন তেমন নেই বললেই চলে ট্রেনে। ঘন্টা খানেক পরে সুন্দর সূর্যোদয় দেখা গেল ট্রেনে বসেই; হার্টোগেনবশ থেকে পরের স্প্রিন্টার ধরে ব্রেডাও পৌঁছে গেলাম নির্বিঘ্নে সকাল দশটার মধ্যে। ব্রেডাতে নেমে দেখি ইন্টারসিটি তৈরি ব্রাসেলস জুইড মিডির জন্যে। উঠে আরাম করে বসে পড়লাম, যথারীতি যাত্রী বিশেষ নেই। মাঝে শুধু টিকিট চেক করে গেলেন একজন টিটি। কখনো কখনো পাসপোর্ট বা শেঙ্গেন ভিসা এঁরা চেক করেন, তবে আমাকে কিছুই দেখাতে হয় নি টিকিট ছাড়া আসা-যাওয়ার সময়। এক সারি হাওয়া কলের পাশ দিয়ে ট্রেন ঢুকে পড়ল বেলজিয়ামে আর ঠিক ঘন্টাখানেক পরেই পৌঁছে গেলাম অ্যান্ত্বোয়ার্প। বাড়ি-ঘরের চেহারায় বিশেষ বদল নেই, জায়গায় জায়গায় দেওয়ালের গ্রাফিটিও একই ধরণের। তবে হাওয়া কলের সংখ্যা কমে গেছে বেশ। অ্যান্ত্বোয়ার্প থেকে আধঘন্টা পরেই এলো ব্রাসেলস এয়ারপোর্ট আর তার পরের স্টেশন-ই সেন্ট্রাল। আগে যেমন বলেছিলাম, এসব দেশে সব দ্রষ্টব্য-ই মোটামুটি থাকে সেন্ট্রাল স্টেশন-কে ঘিরে। এয়ারপোর্ট থেকে সেন্ট্রাল স্টেশন আসার মধ্যেই ট্রেন থেকে দেখতে পেলাম অ্যাটোমিয়াম, এটি তৈরি ন’টি স্টেইনলেস স্টিলের গোলক দিয়ে, কেমিক্যাল বন্ডের আকৃতির। প্রতিটি গোলক লোহা বা আয়রনের (Fe) অ্যাটম-কে চিহ্নিত করে। আর এই প্রতিটা গোলক নাকি আয়রনের একটি অ্যাটমের তুলনায় ঠিক ১৬৫ বিলিয়ন গুণ বড়। পুরো আকৃতির উচ্চতা প্রায় ১০২ মিটার।
     


    ব্রাসেলস সেন্ট্রাল স্টেশন - বাইরে ও ভিতরে 

    সেন্ট্রাল স্টেশনের বাইরে এসে গুগল ম্যাপে দেখে দেখে ঘুরে নিলাম রয়্যাল প্যালেস, সেন্ট মাইকেল ক্যাথিড্রাল। রাস্তাঘাট একইরকম যা অ্যামস্টারড্যামে দেখেছি, এমনকি স্থাপত্য-ও বিশেষ আলাদা কিছু নয়। আসলে এই অঞ্চলগুলোও একসময় পুরোটাই নেদারল্যান্ডের অংশ ছিল। বেলজিয়াম বলে এখন যে দেশকে আমরা চিনি, তার পত্তন ১৮৩০ এর বেলজিয়ান বিপ্লব-এর পর। রাস্তাঘাট বেশ ফাঁকাই, গাড়িঘোড়াও বেশ কম, কিন্তু যেটা সমস্যা হল, প্রবল ঠান্ডা, এবং বোকার মত গ্লাভস না আনায় হাত বাইরে আনা যাচ্ছিল না। হাঁটতেও বিশেষ সুবিধে হচ্ছিল না। বেশীক্ষণ এভাবে হাঁটা যাবে না বুঝে গ্র্যান্ড প্লেসের দিকে চললাম। গ্র্যান্ড প্লেস ইউনেস্কো-র ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটগুলোর একটি, এবং বলা হয় বিশ্বের অন্যতম সুন্দর শহর-কেন্দ্র। এর ঠিক মাঝখানে একটা বড় চাতালের মত, তার একপাশে দক্ষিণে রয়েছে টাউন হল। তার ঠিক বিপরীতে কিং’স হাউজ। দুয়ের-ই গথিক স্থাপত্য আর মধ্যযুগের নির্মাণ। বাকি সব দিকেই পুরনো সব প্রাসাদের ভিড়। সঙ্গে রয়েছে সুদৃশ্য কাফে-রেস্তোঁরা-স্যুভেনিরের দোকান। আগতপ্রায় ক্রিসমাসের জন্যে একটি কৃত্রিম আস্তাবল-ও বানানো হয়েছে, সঙ্গে মেরী, যীশু, তিন জ্ঞানী ব্যক্তির অবয়ব। পুরো চত্বরেই দেশ-বিদেশের মানুষজনের ভিড়, প্রাণোচ্ছ্বল পরিবেশ। এখান থেকে টাউন হলের বাম পাশের গলিপথে কিছুটা এগোলেই বিখ্যাত মানেকিন পিস। এটি একটি নগ্ন শিশুর প্রস্রাবরত মূর্তি ফোয়ারার ঢং-এ বসানো আর বেলজিয়াম দেশের একটি বিশেষ প্রতীক। এর ব্যাপারে বেশ কিছু গল্প আছে; কেউ বলে দ্বাদশ শতকে ল্যুভেন আর গ্রিমবার্গেন রাজ্যের দুই সেনার যুদ্ধে এই দুই বছর বয়সের শিশুটি ছিলেন ল্যুভেনের ডিউক তৃতীয় গডফ্রে যাঁকে দেখে তাঁর সৈন্যদল অনুপ্রেরণা পেতে যুদ্ধক্ষেত্রে একটি উঁচু গাছে মাচা বানিয়ে রেখে দেন যাতে উপর থেকে রাজা আর তাঁর সৈন্যরা একে অপরকে দেখতে পারেন। যুদ্ধ চলাকালীন যখন ল্যুভেনের শোচনীয় অবস্থা, তখন এই শিশুটি ওরফে ডিউক উপর থেকে গ্রিমবার্গেনের সেনাদের উপর প্রস্রাব করে দেন, আর তাই দেখে উৎসাহিত হয়ে ল্যুভেনের সেনারা মরণপণ যুদ্ধ করে গ্রিমবার্গেন-কে হারিয়ে দেয়। অন্য একটি গল্পে চতুর্দশ শতকে কোনো এক বিদেশী শক্তি ব্রাসেলস শহরকে অবরোধ করে বিষ্ফোরক দিয়ে প্রাচীর গুঁড়িয়ে দিয়ে শহরে ঢোকার পরিকল্পনা করে। জুলিয়ানস্কে নামে এক শিশু সেকথা জানতে পেরে সেই বিষ্ফোরকের জ্বলন্ত সলতে-র উপর প্রস্রাব করে নিভিয়ে দেয়, ব্রাসেলস-ও সেযাত্রা বেঁচে যায়। এখন গাছের উপর থেকে শিশুর প্রস্রাব দেখে সৈন্যদলের অনুপ্রেরণা পাওয়া বা প্রস্রাব করে বিষ্ফোরকের সলতে নেভানোর সময় বাকি সেনারা কি করছিল, সেসব প্রশ্ন করে আর বিব্রত করবেন  না, গল্পের গরু দেশ-বিদেশ নির্বিশেষে গাছে ওঠে। সে যাই হোক, এই শিশুমূর্তি-টিকে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পোষাক পরিয়ে দেওয়া হয়,  আমি যেমন দেখলুম প্রস্রাবরত এক শিশু সান্তাক্লজ, অর্থাৎ শিশুটিকে ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে সান্তার পোষাকে সাজানো হয়েছে। এরপরের গন্তব্য লা ব্যুটিক টিনটিন। টিনটিনের দেশে এসে এ তো একবার দেখতেই হয়। তবে তেমন কিছু নয়, একটি দোকান, সেখানে প্রমাণ মাপের এক টিনটিনের মূর্তি দাঁড়িয়ে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছে, তার ভিতরে কাঁচের শোকেসে টিনটিনের বইগুলোর সাথে বিভিন্ন চরিত্রের ছোটো ছোটো প্রতিমূর্তি বানিয়ে রাখা আলাদা আলাদা শোকেস-এ গল্প অনুযায়ী, কোথাও পান্ডুলিপির অংশ কিছু এইসব। আর সঙ্গে আকাশছোঁয়া দামের স্যুভেনির। এই অবধি দেখে শুনে বেরিয়ে ক্ষান্ত দিলাম বেলজিয়াম ভ্রমণে, প্রচন্ড ঠান্ডা বেশ বেকায়দায় ফেলে দিল; বরং মনে হল এসেছি যখন বেলজিয়ান ওয়াফেল আর চকোলেট চেখে নেওয়া যাক ফিরে যাওয়ার আগে। একটু একঘেয়েমি-ও এসে গিয়েছিল, নেদারল্যান্ড বা বেলজিয়ামের বড় শহর ইত্যাদিতে বিশেষ কিছু পার্থক্য নেই, সেই সেন্ট্রাল ঘিরে কিছু প্রাসাদোপম বাড়ি, একটা খোলা চাতাল, কাফে-রেস্তোঁরার ছড়াছড়ি এইসব। বরং ক্যানাল-গুলোর জন্যে অ্যামস্টারড্যাম আরও একটু রূপসী। গ্র্যান্ড প্লেস থেকে একটু পিছনে সরে এসে সারি দিয়ে ওয়াফেল আর চকোলেট-এর দোকান। ভালো দেখে একটা ক্যাফে-তে ঢুকে ক্যারামেল ক্রীম-সহ একটা ওয়াফেল নিলাম। এইখানে পেলাম আমার বেলজিয়াম আসার সার্থকতা! হালকা দারুচিনির গন্ধমাখা গরম নরম ওয়াফেল, ক্যারামেল-ক্রীম আর উপরে ছড়িয়ে দেওয়া নানা ধরণের ছোটো ছোটো বেরীর টুকরো, বাদামের গুঁড়ো মিশে মুখের ভিতর গলে যাওয়ার আগে যে তূরীয় আনন্দ দিয়ে গেল, তা ভাষায় প্রকাশ করা দায়। নাহ, নিঃসন্দেহে এত সুস্বাদু ওয়াফেল এর আগে কখনো খাই নি! একেবারে হামিনস্ত, হামিনস্ত, হামিনস্ত! হ্যাঁ, শুধু এই খাবার খাওয়ার জন্যে একটা নতুন দেশেও আসা যায় ছ-সাত ঘন্টার যাতায়াত সত্ত্বেও! আর চকোলেট - হোম-মেড বেলজিয়ান চকোলেট, সে যে কি অপূর্ব, আমার মত চকোলেটে নিরূৎসাহ ব্যক্তিকেও একসাথে গোটা আট-দশ খাইয়ে ছাড়ল! কোনোটায় কফির স্বাদ, কোনোটায় অরেঞ্জ, কোনোটায় আবার ব্লু-বেরী বা স্ট্রবেরী, কোনোটায় শুধুই নরম চকোলেট, এমনকি চকোলেটের গভীরে রাম বা ওয়াইন-ও ভরে দেওয়া আছে। তাদের দেখতেও নানা রকমের, এমনকি সমুদ্রের শামুক, ঝিনুক, সী-হর্স, স্টার ফিশ – সব রকম হাজির! বেলজিয়াম-কে শুধু এই ওয়াফেল আর চকোলেটের জন্যেই মনে রেখে দেব।
     




    রাজার বাড়ি 


    গ্র্যান্ড প্লেস - টাউন হল 

     
    গ্র্যান্ড প্লেস - কিংস হাউজ 




    আস্তাবল ও মাহেন্দ্রক্ষণ 

     
    মানেকিন পিস - জলাধারটিও কমোড-এর আকৃতির


    একটি ঘড়ি , চব্বিশটি ঘন্টা ও বারোজন বিশেষ ব্যক্তির সমারোহে,এর বাদ্যি বড়ই সুমধুর - পনেরো মিনিট অন্তর বাজে

     
    আসুন - লা বুটিক টিনটিন 


    ফারাও-এর চুরুট - এ এক নস্টালজিয়া 

     
    অন্য কিছু নয় , শুধু ওই ভদ্রমহিলার গান যদি একটু শুনতে পেতাম! 


    নানান স্বাদের  বেলজিয়ান ওয়াফেল - হামিনস্ত 

     
    শনিবার বেলজিয়াম থেকে ফিরে রবিবার আর বেরনোর ইচ্ছে ছিল না তেমন। তাও আপিসের কাজকর্ম কিছু সেরে নিয়ে দুপুরের পর বেরিয়ে পড়লাম অ্যামস্টারড্যাম সেন্ট্রালের উদ্দেশ্যে, এদিক ওদিক কিছু হেঁটে আসব, মধ্যাহ্নভোজন সেরে নেবো মধ্যপ্রাচ্যের কোনো এক রেস্তোঁরায়। রেমব্র্যান্ট স্কোয়ারে রেমব্র্যান্টের ভাস্কর্য দেখা হল, কিছু আলোকসজ্জাও দেখা হল, এখানে ক্রিসমাসের আগে লাইট ফেস্টিভ্যাল হয়, এবারে তার থিম ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’। তার-ও কিছু থীম দেখলাম পথে পথে; পথঘাট যথারীতি বেশ সরগরম, আলোয় সেজে উঠেছে, কোথাও একদল ব্যান্ড-বাজিয়ে রাস্তা দিয়ে চলেছে, কোথাও পর্যটকের ভিড় আর গাঁজার গন্ধে তো সর্বক্ষণ-ই আকাশ-বাতাস মধুময়! ড্যাম স্কোয়ারে খানিক সময় কাটিয়ে ফিরে এলাম।
     



     

    পরের গন্তব্য হুফডর্পের একটি দুর্গ। শুক্রবার, ফিরে আসার আগের দিন কাজকর্ম শেষ হতে কি করা যায় ভেবে বেরিয়ে পড়লাম। দেখলাম এখানে একটা দুর্গ আছে আমার আস্তানার মাইল দুয়েকের মধ্যে, ফোর্ট ভ্যান হুফডর্প। শহরতলীর রাস্তা ধরে গুগল ম্যাপ দেখে শুনে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম সেখানে, দুর্গ বটে, তবে তেমন উচ্চতা, রাজকীয়তা কিছু নেই। অ্যামস্টারড্যামকে শত্রু আক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে একসময় পুরো শহরের বাইরে দিয়ে বৃত্তাকারে ঘিরে দেওয়া হয়েছিল ৪৬ টি ছোটো ছোটো দুর্গ, ব্যাটারি, খাল, নালা, পরিখা আর লকগেট দিয়ে, এদের একসাথে বলা হয় ডিফেন্স লাইন অব অ্যামস্টারড্যাম। এই নির্মাণ ১৮৮০ থেকে ১৯১৪-র মধ্যে। ফোর্ট ভ্যান হুফডর্প সেই ৪৬ দুর্গের একটি। আবহাওয়া ভালো না, লোকজন-ও কাউকে দেখলাম না আশেপাশে, যদিও বেশ কিছু সাইকেল আর গাড়ি পার্ক করা। অগত্যা নিজেই ঘুরে ঘুরে চারপাশ দিয়ে হেঁটে দেখলাম, পুরনো পরিখা, নজরদারীর জানলা সার দিয়ে, উপর থেকে বাঙ্কারে ঢোকার জায়গা মাটির নীচে। মাটির উপরে দোতলা আর নীচে একতলা।  পরিখার ওপাশে একটা পেল্লায় ট্র্যাডিশনাল উইন্ডমিল। দেখা-শোনা সাঙ্গ করে সন্ধ্যে নামার আগে আবার ফেরার পথ ধরি।

    ফোর্ট ভ্যান হুফডর্প 

    নজরদারীর জানলা আর বাঙ্কারে ঢোকার পথ  


    শনিবার ফেরার বিমান রাত আটটায়। সুতরাং সারাদিন কি করা যায় ভাবতে ভাবতে মনে হল আগের বার জ্যানসে স্ক্যানস গেলেও হীরেনদা বলেছিলেন কিন্ডারডাইকের কথা। কিন্তু সে যেতে গেলে বেশ ঘুরপথ, তবে এখানকার এত ভালো গণ-পরিবহনের উপর সেটুকু ভরসা করাই যায়। সকাল সকাল এয়ারপোর্ট পৌঁছে স্টোরেজে ব্যাগ রেখে দিয়ে চলে গেলাম রটারড্যাম। সেন্ট্রাল স্টেশনের বাইরেই ২৩ নম্বর ট্রাম ধরে চললাম বেফারওয়ার্ড বলে এক জায়গায়, সেখান থেকে ৪৮৯ নম্বর বাস ধরে কিন্ডারডাইক। এই প্রথম এদেশে ট্রামে চড়া হল। এবং গতি একেবারেই কলকাতার ট্রামের মত। তবে আওয়াজের ব্যাপার নেই, সেটা কাঁচে ঢাকা থাকার জন্যেও হতে পারে। যে এরাসমাস ব্রিজ আগের বার দূর থেকে দেখেছিলাম, এবার সেই ব্রিজ পার হলাম ট্রামে চড়ে, আবার পথের পাশে রটারড্যাম ফুটবল স্টেডিয়াম-ও দেখা হল। আজকের আবহাওয়া খুব, খুবই খারাপ। হাওয়া, বৃষ্টি, ঠান্ডা সবই আছে। কিন্ডারডাইকে নামার পর বৃষ্টি আর হাওয়া দুয়ের বেগ বাড়ল। তড়িঘড়ি গিয়ে ঢুকলাম স্যুভেনির-এর দোকানে। এখানে এক ছাউনির তলায় একটি স্যুভেনির-এর দোকান, একটি ক্যাফে-কাম-রেস্তোঁরা আর টিকিট কাউন্টার, বোট রাইড বা মিউজিয়াম ইত্যাদির জন্যে। আর কিচ্ছুটি নেই। টয়লেট একখান আছে, যার প্রবেশাধিকার মেলে স্যুভেনির কিনলে, একেবারে বারকোড সহ টয়লেটের টিকিট (আমার এখানে ধাঁ করে শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত উপন্যাসের  মেজদার কথা মনে পড়েছিল, বাইরে যাওয়ার টিকিট)। অবশ্য তা না হলে আপনাকে আস্ত এক ইউরো খরচ করতে হবে। এই দুই দোকানের মাঝে রয়েছে সিঁড়ি উপরে ছাদে যাওয়ার, উপর থেকে পুরো এলাকাটা ৩৬০ ডিগ্রী দেখা যায়। একটা ক্লে মডেলও রাখা রয়েছে ছাদে। এই দুই দোকানের ছাউনির বাইরে দিয়ে দুভাগে দুই সমান্তরাল সরু রাস্তা চলে গেছে সামনে, একপাশে পায়ে চলার রাস্তা, আর একপাশে বাইসাইকেল। রাস্তার দুপাশে ফালি দিয়ে লম্বা ঘাসের জঙ্গল (প্রেয়ারি ঘাস ধরণের) আর দুপাশেই লম্বা-চওড়া ক্যানাল। ক্যানালের ওপাশে ট্র্যাডিশনাল উইন্ডমিলসের সারি। প্রায় তিনশো বছর আগে এই উইন্ডমিল-গুলো তৈরী করা হয়েছিল দে লেক আর নুর্ড নদীর জলের প্লাবন সামাল দিতে। এই দুই নদী ত্রিকোণ আকারে কিন্ডারডাইকের দুপাশ দিয়ে বয়ে গেছে। আর এর মাঝামাঝি তৈরী করা হয়েছে এই দুই সমান্তরাল নালা বা ক্যানাল আর একটি বিশাল জলাধার। এই উইন্ডমিলগুলো নদীর জল বেড়ে গেলে বাড়তি জল টেনে নিয়ে এই নালায় আর জলাধারে চালান করে দিত আর নালাগুলোর জলস্তরের ভারসাম্য রাখত। এখনো বেশ কিছু উইন্ডমিল চালু আছে, তবে মূল কাজটা ডিজেল-চালিত পাম্প দিয়েই এখন করা হয়। আবহাওয়া আজ খারাপ, নইলে জায়গাটা খুব-ই সুন্দর। খারাপ আবহাওয়ায় আজ লোকজন-ও কম। কিন্তু পথ ধরে কিছুটা এগোতেই অদ্ভুতভাবে বৃষ্টিটা একেবারেই ধরে গেল, মেঘ যদিও ঘিরে রইল। দুধারে আটটা করে ষোলটা হাওয়াকল কিন্ডারডাইক এলাকায়, বাকি তিনটে অন্য এলাকায়, তবে তারাও এই ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইটের অংশ। এই রাস্তায় হাঁটার অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারণ। একেবারে নিস্তব্ধ চারিদিক, হাওয়ার বেগে ঘাসের জঙ্গলের নড়াচড়ার আওয়াজ , ক্যানালের জলের বয়ে চলা, মাঝে মধ্যে একটা দুটো বোট, মাছধরা নৌকা, ক্যানালের মাঝে মাঝে অনেক দূরে দূরে এপার থেকে ওপার যাওয়ার কাঠের সেতু, হাওয়াকলের অলস বেগে ঘুরে চলা সব মিলিয়ে যেন এক অপার্থিব পরিবেশের সৃষ্টি করে দিয়েছে, উজ্জ্বল রোদে কেমন লাগত জানিনা, এই বর্ষামুখর আবহাওয়ায় কিন্ডারডাইক আরও বুঝি রোমাঞ্চকর! তিনশো বছর আগের সব গল্পই যেন কিন্ডারডাইক আজও তার ঝুলিতে ভরে রেখেছে! পুরনো গন্ধ এখনো মোছেনি গা থেকে। প্রায় কিলোমিটার খানেক চলার পর আবার ঝিরঝির বৃষ্টি নামে। আমিও ফেরার পথ ধরি। 
     
    এরাসমাস ব্রিজ পার হয়ে 


    রটারড্যাম স্টেডিয়াম 


    কিন্ডারডাইক - ৩৬০ ডিগ্রী 


    দু-ধার মিলিয়ে ষোলটি 


    এবারের হল্যান্ড এটুকুই, কাজের ফাঁকে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত স্রেফ হাঁটার আনন্দে এদিক-ওদিক ঘুরে দেখা, তাই পুনশ্চ ক’রে আগের হল্যান্ডের গল্পেই এই অংশটা জুড়ে দিলাম। এবারের সবচেয়ে বড় পাওনা – খাঁটি বেলজিয়ান ওয়াফেল, বেলজিয়ান চকোলেট আর অবশ্যই কিন্ডারডাইক।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৮৮৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • খাঁটি বেলজিয়ান ওয়াফেল | 173.49.***.*** | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৪৬527267
  • ছবি দেখে খানিকটা ক্রেপের মত লাগল। তবে কি ওয়াফেল আসলে জালি জালি খুপরি কাটা গোল, চৌকো, বা অন্য আকৃতির প্রাতঃরাশটি নয়? 
  • সুদীপ্ত | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:২৩527269
  • খাঁটি... - আমি দুটো ওয়াফেল খেয়েছিলাম, তার বেসগুলো খোপ খোপ, ওয়াফেল যেমন হয়, আকৃতি একটির ছিল ত্রিকোণ, একটি চারকোণা। এমন হতে পারে বড় গোলাকার ওয়াফেল থেকে ওইভাবে কাটা। আর ছবির ওয়াফেল ক্যাফেতে সাজানো ছিল, হতে পারে শুধু শো-পিস হিসেবে বানানো, তবে আসল জিনিসটি এত পাতলা নয় আর উপরে আরও অনেক কিছু থাকে একসাথে, যদিও সেটা আপনার পছন্দের উপর।
  • | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩:৩২527271
  • আহা বেলজিয়ান ওয়াফেল আর বেলজিয়ান আপেল পাই দুইই বড় ভাল।  হল্যান্ডের থেকে বেলজিয়ামের স্বাদ বেশী লেগেছিল।  ব্রাসেলসে আমাদের অফিসের পরের স্টপ ছিল গোডিভা ফ্যাক্টরি। সপ্তাহে একদিন ছাঁটকাট চকোলেট খুব সস্তায় বিক্রি করত সেখান থেকে।  গ্র‍্যান্ড স্কোয়ারের প্রায় পাশেই একটা চকোলেট ফ্যাক্টরি ছিল, সেখানে স্টেপ বাই স্টেপ চকোলেট তৈরী দেখাত ৭ ইউরোর বিনিময়ে।  ম্যানিকিনের ছবি আমিও তুলেছিলাম পোষাকপরা। অফিসে সবাই খুব হাসল 'আরে একদিন পেন্টু পরিয়েছে আর সেদিনই গিয়ে ছবি তুলে আনলে!' 
     স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লাম একটু।
     
    ( দুত্তোর আঙুল লেগে একবার রেটিং পড়ে গেলে আর বদলানো যায় না এ বড্ড বাজে) 
  • সুদীপ্ত | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:৪৭527276
  • দমদি - হ্যাঁ আপেল পাই টা বাদ দিয়েছি আপেল পছন্দ করি না বলে। আর দোকানগুলো বেশ, ঢুকলে এমনিই জোর করে চকোলেট হাতে ধরিয়ে দেয় চেখে দেখার জন্যে। হল্যান্ডের খাবার দাবার আমার বিশেষ পছন্দ হয় নি চীজ-এর রকমফের-টুকু বাদ দিয়ে। 
  • হীরেন সিংহরায় | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৫৫527278
  • ভারী সুন্দর ! কাজে গাড়িতে ঘুরেছি অনেক কিছুই  দেখি নি! আপনার লেখায় দেখে নিলাম। রটারডাম থেকে মে মাসের ঝকঝকে দিনে সাইকেলে চড়ে  কিনডারডাইক প্রথম যাই চল্লিশ বছর আগে । সেই স্মৃতি জাগিয়ে দিলেন! 
  • সুদীপ্ত | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৪৩527282
  • ধন্যবাদ হীরেনদা, কিন্ডারডাইক আপনার কথাতেই ঘোরা হল, আগের কোনো এক লেখায় বলেছিলেন;  রটারড্যাম থেকে কিন্ডারডাইক সাইকেলে! দারুণ ব্যাপার! 
  • হীরেন সিংহরায় | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৩:১১527294
  • সে এক সময় ছিলো ! ফ্রাংকফুরটে স্টেট ব্যাংকে কাজ , পকেট গড়ের মাঠ! সহযোগী সমবায় ( Mitfahrezentrale) মানে অন্য কারো গাড়ির তেলের পয়সা ভাগ করে উটরেখট , সেখান থেকে ট্রেনে রটারডাম। বন্ধু বান্ধবীর সঙ্গে সারাদিন সাইকেলে ঘোরা! শিশুদের বাঁধ! ঘাসের ওপরে এলিয়ে বসে দেখেছি এতগুলো হাওয়া কল! 
  • সুদীপ্ত | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:১০527307
  • বাহ, হীরেনদা আপনার এই ছোটো ছোটো অভিজ্ঞতা-গুলোর স্মৃতিকথনও পড়ার ইচ্ছে রইল, সময় করে লিখে ফেলুন
  • হীরেন সিংহরায় | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৩৭527311
  • বই মেলায় একটা বেরুচ্ছে! নাম দিয়েছি ইউরোপে এখন 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন