পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে যে কটি দল লড়ছে তাদের মধ্যে বিজেপিরই সরাসরি জনতার ভোটে, বিশেষত একক ভাবে সরকার গঠনের সুযোগ সবচেয়ে কম। তাদের ভয়ানক শক্তিশালী দেখানো হচ্ছে মিডিয়াতে, বাস্তবে তার প্রতিফলন কম। সেটাও তাদের প্রচারের অঙ্গ। এবং এটাও যোগ করা উচিত, তৃণমূলের নেতাদের আচরণ , প্রতিটি স্তরে আর্থিক দুর্নীতি, স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করার নীতি, ইত্যাদি কারণে তাদের জনপ্রিয়তা কমলে তার লাভের গুড় বিজেপির একার ভাগ্যে জোটার সম্ভানাও কম।
দেখুন প্রতিটি আপিসে কিছু লোক থাকে, তাদের কোন কাজ দিলেই তারা দাবি করে, অন্য বিভাগের অন্য কোন কাজে তারা কারো অনুরোধে বড্ড ব্যস্ত। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, সেই বিভাগে আবার অন্য গুল দেওয়া হয়েছে। মানে ঘুঘুপক্ষীর গুগু (গুছোনো গুল) আর কী! বলতে নেই, বহুদিন রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের জীবনে, এ হেন সাথী রাজনৈতিক কর্মী দু একটি সব সময়েই পেয়েছি যাঁরা সব সময়েই যে কোনো কাজের সময়েই অন্য কাজে বড্ড ব্যস্ত থাকেন। (অতিপরিচিতির মৃদু হাসি দিয়ে শুরু করুন, অট্টহাসির সুযোগ আসবে)। বিজেপির পরাক্রম প্রায় সেরকম। ৭ ও ৮-এর দশকের কংগ্রেসের অতি কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনা পদ্ধতির দীর্ঘ নীতিনিষ্ঠ সমালোচনা করার পরে বিজেপির উত্থান হয়েছে, ততোধিক কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে, যারা ফ্রিজে ফ্রিজে নিষিদ্ধ মাংসর সঙ্গে পাড়ায় পাড়ায় দেশদ্রোহী খুঁজে পাছেন দেশ জুড়ে।
ফাউ রসিকতাটি হল, পশ্চিমবঙ্গে বলা হয় তাঁরা ঝাড়খণ্ডে শক্তিশালী, আসামে তো বটেই, কেরালায় ঝড় তুলেছেন, গোটা উত্তরপূর্বে গেরুয়া গরিমা প্রতিষ্ঠিত, আর সেখানে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গে তো বিজেপির দাদা হৈ হৈ ব্যাপার, মুম্বাই তো দাদা পাকিস্তান হয়ে গেল।
ট্রাম্প সম্পর্কে বার্নিরা ব্যাবহার করেন 'প্যাথোলোজিকাল লায়ার' শব্দবন্ধ, আমি মানুষটা একাধারে নরম ও তুলতুলে, তাই কাউরে ইনছাল্ট করতে পারি না।
জুমলারোগে আক্রান্ত বিজেপির অতিপ্রাজ্ঞ নেতৃবর্গ, বিশেষত অমিত শাহ মশাই বিধানসভা নির্বাচন এলেই সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে মাঝে মাঝেই হুংকার ছাড়েন। বিনীত ভাবে বলতে গেলে, সর্বভারতীয় মিডিয়াতে এই অভ্যাসটি রসিকতা হিসেবেই পরিচিত। আমাদের এখানে ইদানিং এক সম্ভ্রম মিশ্রিত মুগ্ধতার উদয় হয়েছে, বলা যায় তারা সেই দশা পেরিয়ে এসেছে।
এঁর দুটি বিচিত্র অভ্যাস আছে। প্রথমটি হল, যে কোনো বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটা ভিত্তিহীন সংখ্যা দিয়ে বিজেপির সম্ভাব্য আসন সংখ্যা ঘোষণা করে দেওয়া। সেই ভবিষ্যদ্বাণীগুলিতে দেখা যায়, বিজেপি সবাইকে উড়িয়ে জিতে যাচ্ছে। দ্বিতীয়টি হল প্রায় অবধারিত ভাবে সেটা না মিললে এ সম্পর্কে আর কিছুই না বলা, যেন তেন প্রকারেণ সরকার গঠনে সচেষ্ট হওয়া। অর্থবল, নীতিহীন দূরদৃষ্টিহীন তাঁদের মানদণ্ডেই জাতীয় ঐক্যের পক্ষে ক্ষতিকারক জোট, আর মানুষের মনের অন্ধকারের শক্তিতে বিপুল আস্থা - এই তো তাঁদের জোর। এর সামনে থরহরি হতে গেলে সেটা সলজ্জভাবে হওয়াই ভালো।
আমরা কয়েকটি উদাহরণ দেখে নিতে পারি। সাম্প্রতিক কালে একটা হিসেব অনুযায়ী ২০১৮ থেকে ১১ বার মত তাঁর ভবিষ্যৎবাণী অসার প্রমাণিত হয়েছে। একটু হেসে নেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হল, অবশ্য বড় মিডিয়ার শ্রদ্ধাবনত একনিষ্ঠ অনুরাগীরা গম্ভীর থাকতেই পারেন।
সারণি ১ - রাজ্য বিধানসভাগুলিতে বিজেপি দলের অবস্থান
(সূত্র - ক - দুটি রাজ্যের ক্ষেত্রে ছাড়া সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে। একটি উদাহরণ হল - এই ওয়েবসাইট https://eci.gov.in/files/file/3841-gujarat-general-legislative-election-2017/ থেকে Performance of Poltical Parties.pdf নামক ফাইল দেখা হয়েছে।
মধ্য প্রদেশ ও তেলেঙ্গানার তথ্য নেওয়া হল যথাক্রমে ইন্ডিয়া টুডে, ইকোনোমিক টাইমসের এই দুটি লিংক থেকে।
https://www.indiatoday.in/elections/story/madhya-pradesh-assembly-election-result-2018-declared-congress-bjp-anandiben-patel-cm-shivraj-singh-chouhan-1407588-2018-12-12
https://economictimes.indiatimes.com/news/elections/assembly-elections/telangana/electionresult/66160988.cms
খ - তথ্যসূত্র সম্পর্কে
মধ্য প্রদেশের ক্ষেত্রে এই ফাইলটির তথ্য অসম্পূর্ণ, মাত্র ৮ টি আসনের কথা আছে এখানে, অসম্পূর্ণ তথ্য অথবা প্রযুক্তিগত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সেখানে যে ভাবে বিজেপি ক্ষমতা দখল করেছে সেটি আপত্তিকর হলেও, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবপেজে তথ্যের সম্পূর্ণতার অভাবটিকে কেন্দ্র করে চক্রান্ত তত্ত্ব গড়ে তোলা কঠিন। কর্নাটকেও বিজেপি যথেষ্ট আপত্তিকর পদ্ধতিতে ক্ষমতা দখল করেছে, কিন্তু নির্বাচন কমিশনের তথ্য সম্পূর্ণ রয়েছে।
তেলেঙ্গানার ক্ষেত্রেও এই বিশেষ ফরম্যাটের ফাইলটি অনুপস্থিত। জম্মু কাশ্মীরের ক্ষেত্রেও তাই, ২০১৪ র পরে নির্বাচনও হয় নি, তুলনীয় ফরম্যাটে ফাইল খুঁজে পাইনি। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহৃত হওয়ার পর থেকে তো জম্মু কাশ্মীরের গঠনগত পরিবর্তন হয়েছে, তাই বলা মুশকিল এখানে অন্যান্য রাজ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের তথ্যের সঙ্গে কী ভাবে অতীতে অনুষ্ঠিত বা ভবিষ্যতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের ফলাফলের তথ্য কী ভাবে তুলনীয় হবে।
গ - তথ্যসূত্রের আরেকটি সমস্যার কথা বলা যাক। উইকিপিডিয়া যদি দেখেন, দেখবেন বিধানসভা ও বিধান পরিষদগুলির দলভিত্তিক আসনসংখ্যার তথ্য আলাদা করা নেই সব ক্ষেত্রে, অন্তত সর্বত্র আলাদা করা নেই, যেখানে করা আছে, সেখানে প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ দেওয়া নেই, তাই আমি সংকলক হিসেবে নির্বাচনের ফলাফলের ব্যাপারে, তথ্য নির্বাচনের সময় একই সূত্রের তুলনীয় তথ্য নিয়ে আসার এবং নিহিত পক্ষপাত পরিত্যাগ করার উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনের তথ্যের উপরেই নির্ভর করতে চেয়েছি। ক্ষমতাসীন জোটকে চিহ্নিত করার ব্যাপারে আমি নিচের উইকি পেজটির সাহায্য নিয়েছি।
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_current_Indian_ruling_and_opposition_parties
এই উইকি পেজ এর সম্পাদকদের ডেটা ভিজুয়ালাইজেশনের যুক্তিটি সম্ভবত নির্বাচন-পূর্ব রাজনৈতিক ঘোষণা, প্রাপ্ত আসনসংখ্যা নয়, যেমন তামিল নাড়ু এবং সিকিমে বিজেপিকে দেখানো ক্ষমতাসীন জোটসঙ্গী হিসেবে, কিন্তু তাদের আসন নেই। এছাড়া যেসব রাজ্যে বিজেপি রয়েছে ক্ষমতাসীন জোটসঙ্গী হিসেবে, তার মধ্যে একটিকে (হরিয়ানা) একক ক্ষমতাসীনভাবে দেখিয়ে রেখেছেন। এটা ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা সংশয় বলে আমার মনে হয় না, তবে যুক্তিটি আরেকটু খুঁজে দেখতে হবে।
ঘ - ভোটের পরের দলবদল যে ভাবে বেড়েছে, তাতে ভোটের অর্থ বিশেষ থাকছে না অনেক ক্ষেত্রে। আমরা প্রতিটি রাজ্যের ক্ষেত্রেই, অনুষ্ঠিত বিধানসভার সাধারণ নির্বাচনের ফল ই ধরেছি। যেসব ক্ষেত্রে নির্বাচনের ফল, দলবদলের জেরে বদলে গিয়েছে, আমরা অধুনা সরকারে অধিষ্ঠিত সেই দল বা জোটের নামই ব্যবহার করেছি। উপনির্বাচনের ফলাফল আলাদা করে দেওয়া হয় নি, যদিও উপনির্বাচন এই বিজেপির আমলেই রাজ্য সরকার গড়ার অস্ত্র হয়ে উঠেছে, তবুও এই প্রলোভন আমরা ত্যাগ করেছি, কারণ তাহলে সমস্ত রাজ্যের মধ্যে তুলনাযোগ্য তথ্য থাকে না।)
সারণি থেকে কতকগুলি বিষয় পরিষ্কার,
- বিধান পরিষদগুলি বাদ দিলে, বিধানসভা, সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচনের জন্য যে ৪০২৪ টি আসন রয়েছে, তার মধ্যে ১২৮০টি বিজেপির দখলে। তারা ৭টি একক ভাবে, ১০টিতে জোট করে, সব মিলিয়ে ১৭ টি রাজ্যে ক্ষমতায় বা ক্ষমতাসীন জোটে রয়েছে। সেই ১০টির মধ্যে ৪ টিতে সংখ্যালঘু জোট সঙ্গী হিসেবে। বাকিরা উবে যায় নি।
- তার মধ্যে কর্নাটক এবং মধ্যপ্রদেশে বিজেপির জয় হয়েছে, যাকে বলে রহস্য মিশ্রিত রোমাঞ্চকর পদ্ধতিতে। তাকে ঠিক জনসমর্থন বলে না।
- বহু রাজ্যেই দুইয়ের অধিক প্রধান দল রয়েছে।
- আমাদের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্রের হাতে প্রচুর বেশি ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও, স্থানীয় উচ্চাশার প্রকাশ হিসেবেই, কেন্দ্রীয় দলগুলি কখনো ব্যবহৃত হবে, কখনো স্থানীয় দলকে ব্যবহার করবে, এতে নতুন কিছু নেই, তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশের কোন মতাদর্শর বিনিময়ে এই দেওয়া নেওয়া হল, সেটা একটু দেখার, খোঁজ নেওয়ার বিষয়। এটা মনে করার কোন কারণ নেই, সবসময়েই পরাক্রমশালী কেন্দ্রীয় দলের ভিন্নতা অস্বীকার করা মতাদর্শের জয় হচ্ছে।তবে দেশের বিপদের দিনে এই ধরণের নির্বাচনী জোট থেকে কেউ বেরিয়ে আসবে তখনি যখন তার নির্বাচকদের মধ্যে স্বার্থে টান পড়বে। এই যেমন শিরোমণি অকালি দল জোট থেকে বেরিয়ে এলো কৃষি প্রশ্নে। শিবসেনা বেরিয়ে এসেছে, স্রেফ আসন সংখ্যা মেলাতে না পেরে এবং শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের নাগরিক বৈচিত্রকে খানিকটা স্বীকার করে নিয়ে।
- কৃষক আন্দোলনের এখন যা পরিস্থিতি, তাতে হরিয়ানা, পাঞ্জাবে, পশ্চিম উত্তর প্রদেশ, রাজস্থানে, বিজেপি নেতাদের জনপ্রিয়তা তীব্রভাবে নিম্নমুখী। জনবিরোধী নীতি এই অবক্ষয় অব্যাহত রাখবে। যে সরকারকে তার সমর্থকরাও প্রশ্ন করতে পারবেন না, সেই সরকারের সমর্থন আলগা হবেই।
- এছাড়া দক্ষিণে, এক কর্ণাটক ছাড়া বিজেপির অবস্থা খুবই খারাপ। তথ্যপ্রযুক্তি, নতুন ভারত ইত্যাদির পীঠস্থান কর্নাটকের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর মূল খ্যাতি, বিধায়ক কেনাবেচা, খনি কেলেঙ্কারিতে।
- উত্তরপ্রদেশে, নারী নিরাপত্তা, আইন শৃঙ্খলার অবস্থা গোটা দেশের লজ্জা। কর্মসংস্থানের সুরাহাও কিছু হয়নি। কাকতালীয়ভাবে সেখানে বিজেপি এককভাবে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে। তাদের নীতি যদি জনমুখী আদৌ হত, সেটা প্রয়োগ করার কোন বাধা সেখানে থাকার কথা নয়।
কেন্দ্রে বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের টাকায় চলা প্রচারযন্ত্রটির সৃষ্ট জগৎ, একান্ত উনিজির জন্যেই তৈরি, প্রকৃতপক্ষে আত্মনির্ভর না হলেও আত্মকেন্দ্রিক, নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত। এই একান্ত আপন বটগাছের ছায়া প্রাদেশিক রাজনৈতিক শক্তি পরীক্ষায় বিজেপিকে রক্ষা করতে সাধারণ ভাবে ব্যর্থ, ছলনা, চাতুরি, কোথাও রাষ্ট্রশক্তির নির্লজ্জ প্রদর্শন, কোথাও অত্যাচারিতের আর্তনাদ, কোথাও পাশাপাশি দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করেই, স্রেফ বন্ধু মিডিয়ার জোরে তাকে টিঁকে থাকতে হচ্ছে। উল্টে উনিজির গায়ে যাতে বিজেপির কৃতকর্মের আঁচটি না লাগে, তাই দলকেই তাঁকে সাংবাদিক সম্মেলন থেকে, বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্তি থেকে রক্ষা করতে হচ্ছে। এই পরিকল্পিত সংযোগহীনতা এতই হাস্যকর যে পরিযায়ী শ্রমিকরা যখন শয়ে শয়ে মাইল হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন, দেশ মহামারীতে, কর্মহীনতায় ধুঁকছে তখন ২০২০-র অগাস্ট মাস নাগাদ, উনিজিকে ময়ুরপক্ষীর যত্নে ব্যস্ত দেখাতে হয়েছে। নিহিত রাজনৈতিক বিচক্ষণতাটির কথা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়।
আপনারা জানেন, বহুদিন ধরেই, মিডিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রতিপাদ্য হল, কেন্দ্রে, বিজেপির বিকল্প কেউ নেই, এরকম একটা ধারণার প্রচার করা। এবং বিপুল সংসদীয় সংখ্যাধিক্যকে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগ্রহণের পক্ষে সুবিধাজনকভাবে দেখানো। যেন মানুষের দাবিদাওয়া, গণতান্ত্রিক আলাপ আলোচনা, মত বিনিময়, সাধারণ ও গণতন্ত্রে অত্যন্ত স্বাভাবিক দর কষাকষি, মায় চিন্তার গভীরতার সমস্ত সুযোগই দেশের প্রগতির পথে বাধা। বৃহৎ পুঁজির বাজার ও দেশের সম্পদ দখলে যে বড্ড তাড়া। কংগ্রেস এবং অন্যান্য নেতাদের মূর্খামিতে অনেক সময় তাদের কাজ সহজ হয়েছে। কিন্তু আসল গল্পটা হল, ধান্দার ধনতন্ত্রের প্রসারে যাতে গণতান্ত্রিক আলাপ আলোচনা ইত্যাদিতে কোন বাধা না হয়ে দাঁড়ায় তার পথ প্রশস্ত করা। তবে শেষ রক্ষা কতদূর হবে বলা মুশকিল, শিরোমণি অকালি দলের মত দীর্ঘদিনের সঙ্গীরাও মোদীর জনবিরোধী সরকারের দায় বয়ে বেড়াতে চাইছেন না।
দ্য হিন্দু পত্রিকা একটা হিসেব করেছে সম্প্রতি। বিধানসভা নির্বাচন, লোকসভা নির্বাচনের আগে, লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে আর লোকসভা নির্বাচনের পরে যা হয়েছে, তাতে বিজেপির ভোটের ভাগের কিরকম তারতম্য হয়েছে, এই বিষয়টি তারা মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন।
তাতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, বিধানসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত শতাংশ ভোট এবং লোকসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত শতাংশ ভোটের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।
নির্বাচনে বিজেপির ভোটে শতাংশের পার্থক্য (সূত্র- https://www.thehindu.com/data/how-has-bjp-fared-in-recent-assembly-elections-compared-to-lok-sabha-polls/article30799458.ece)
নির্বাচনের মরশুমে সর্বক্ষণের সংবাদমাধ্যম, আসলে শাসকের পক্ষ থেকে একটি সংগঠিত এবং ব্যাপক গণবিস্মৃতির চর্চা
শ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে, যে কটি দল লড়ছে, তার মধ্যে বিজেপিই একমাত্র দল, যারা ২০১৪ র বিপুল জয়ের পরে সুপ্রীম কোর্টে প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ার পরে জানিয়ে ছিল, প্রচারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি নির্বাচন প্রচারের অঙ্গ, তা রক্ষা করা সম্ভব নয়। এই কৃতিত্ব এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও নেই, সত্যের সঙ্গে যাঁর সম্পর্ক, আজকের নব্য সমাজ মাধ্যমের ভাষায় যাকে বলে, কম্প্লিকেটেড।
ভোলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, উন্মাদ রাজার নোটবন্দির সিদ্ধান্ত। কৃষি, ক্ষুদ্র শিল্প, অসংগঠিত ক্ষেত্র, যার থেকে এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারে নি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, সাধারণভাবে ভারতের সরকারি সংখ্যাতত্ত্বের বিশ্বাসযোগ্যতার ক্ষতি করেছিল প্রথম মোদি সরকার।
এসব কি আমরা ভুলে যাব, এতই জাতক্রোধ? ভোলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, মহামারীর মধ্যে খাদ্য, বাসস্থানহীন, কপর্দকশূন্য পরিযায়ী শ্রমিকরা যখন শয়ে শয়ে মাইল হেঁটে পেরোনোর চেষ্টা করছেন, ঘোষিত বাজেটে সরাসরি সাহায্যের জন্য একটাকাও বরাদ্দ হয় নি। আজ প্রতিশ্রুতির বন্যা বওয়াচ্ছে বিজেপি, তারা নাকি সরকারি চাকরিতে নিয়োগ চালু করবে, যেখানে আসল খবর হল, সরকারি চাকরি ব্যবস্থাটাকেই তুলে দিতে চাইছে বিজেপির সরকার, সরকারি কাজকর্ম চালাতে চাইছে, কম মাইনের এজেন্সির কর্মচারীদের মাধ্যমে বা সামাজিক সুরক্ষার দায়িত্ব না নিয়ে, কয়েক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ চাইছে ত্রিপুরা এবং উত্তরপ্রদেশ সরকার। (সূত্র- https://www.livemint.com/news/india/govt-jobs-drying-up-both-at-central-and-state-levels-11601427164487.html; https://www.nationalheraldindia.com/opinion/contractual-salary-culture-growing-in-govt-low-paid-casual-recruitment-for-full-time-jobs-is-normal; https://www.newsclick.in/UP-Govt-Slammed-Proposal-Five-Year-Contractual-Jobs-Group-B-C-Employees ; https://nenow.in/north-east-news/tripura/bjp-led-tripura-government-outsources-departmental-jobs-to-private-companies.html )
সাধারণ ভাবে সরকারি ক্ষেত্রেও সারা দেশেই ঠিকা নিয়োগের প্রবণতা ক্রমশ বেড়েছে, মহামারীর মধ্যেও।
ত্রিপুরায় দশ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করেছে সেখানকার সরকার। (https://eisamay.indiatimes.com/nation/tripura-government-seeks-supreme-court-permission-to-appoint-10000-terminated-teachers-as-peon-cook/articleshow/77245148.cms)
রাজ্য তালিকার অন্তর্গত কৃষিতে, নতুন কেন্দ্রীয় আইন এনে খাদ্য সুরক্ষাকে, কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্যের দাবিকে নস্যাৎ করতে চাইছে একদিকে, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের এককালীন সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। ভোলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারে প্রস্তাবিত কৃষি বিমা, বিজেপিশাসিত গুজরাট রাজ্যও প্রত্যাখ্যান করেছে। এবং ভোলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, বিজেপির কৃষি নীতিতে দু রকম মানুষের কোন স্বীকৃতিই নেই, দিনমজুর আর ক্ষেতমজুর, কৃষির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত শিল্প ইত্যাদিতে নিয়োজিত মানুষের কথা ছেড়েই দিন। তাঁরা কেউ কেউ জনবিরোধী নতুন শ্রমিক নীতির আওতায়।
আসামের স্থানীয় রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যে বিজেপি এনআরসির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ দুঃস্থ বাংলাভাষী মানুষের নাগরিকত্ব হরণ করেছে , সি এ এ আইন করে ভারতীয় রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে চ্যালেঞ্জ করেছে, সেই প্রক্রিয়া পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ করতে চাইছে। এই পরিকল্পনা সফল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, বিদেশি চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের নাগরিকত্বকেই প্রতিদিন প্রতিনিয়ত প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিচ্ছে বিজেপি।
বিজেপির বড় শত্রু হল চিন্তাশীল মানুষ, যাঁরা সংস্কারহীন, বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন, মুক্তচিন্তার চর্চা করেন, এবং সংবেদনশীল, সহানুভূতির সামাজিক আদর্শের প্রচার করেন বা জীবনযাপন দিয়ে সৎ নাগরিকতার প্রমাণ প্রতিদিন দেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই উচ্চশিক্ষার বিশেষত নতুন জীবন দর্শন, নতুন সহাবস্থান ভিত্তিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার হিউম্যানিটিজ চর্চা কেন্দ্রগুলিকেই তারা আক্রমণের লক্ষ্যস্থল করেছে। নির্বাচনের মরশুমে কলম ধরা সম্মানিত মানুষ যাঁরা বামেদের ভুল ধরতে ব্যস্ত, তাঁরা নিজেরা না বুঝলেও বা তাঁরা যে বুঝেছেন যে আজগুবি নিরপেক্ষতার দাবিতে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে না চাইলেও, তাঁদের গবেষণার, চিন্তার, আলোচনার পরিসরকে ধ্বংস করাই বিজেপির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। তার প্রমাণ তারা সর্বত্র রেখেছে, রাখছে।
সাংগঠনিক নিষ্ঠা, সততা ও ঐক্যের রূপকথা
স্থানীয় মিডিয়ার কাহিনিবিন্যাসে আর এস এস সম্পর্কে একটা গদ গদ মুগ্ধ ভাব আজকাল দেখা যায়।
নরেন্দ্র মোদি যখন প্রধান হয়েছিলেন, প্রচারের ধরনের মধ্যেই ছিল, চিন্তা ভাবনা গবেষণা কোন কিছুরই দরকার নেই, কারণ অর্থনীতির সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তো অনেকেই বলে দিতে পারেন, অর্থনীতি বিষয়ে বিতর্কের, সাংবিধানিক আলোচনা আর কী বা অবশিষ্ট আছে, শুধু নির্মম প্রয়োগ চাই।
অন্যদিকে আর এস এস এর বেলায় মিডিয়ার প্রচারের ফলে মানুষের বিচার পদ্ধতি একদমই উল্টো।
নোটবন্দির মত হঠকারী সিদ্ধান্ত যখন নেওয়া হল, তখন এক আর এস এস-এর অর্থনীতিবিদের সন্ধান মিলেছিল, তিনিই নাকি এমত মহৎ কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। নোটবন্দির গোপন কর্মের তিনিই ব্রহ্মা। সেই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের অর্থনীতির, শ্রমিক কৃষকের কী অবস্থা হয়েছিল আজ সকলেই জানে। কত উদ্যোগ, বিশেষত ছোটো ব্যবসা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তার কোন হিসেব নেই। যে কোনো ইস্যুতে ফাইনাল সলিউশনের এই নেশা আমাদের খুবই চেনা।
ভারতীয় সংস্কৃতির অসহিষ্ণু রক্ষণশীল ধারাগুলির পৃষ্ঠপোষকরা, বাংলার রাজনৈতিক আলোচনায় আজকাল প্রায়ই শোনা যায়, রাজনীতিতে নতুন করে নাকি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন গত এক দশকে, আজকে বিজেপির উত্থান নাকি তারই প্রতিফলন। আর এস এস এর গোটাটাই নাকি রহস্যময় চিন্তাশীলতা। স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করে, আজ তারা লোককে স্বদেশপ্রেমী হয়ে ওঠার ব্যাপারে বক্তৃতা করে, একই সঙ্গে বৃহৎ ব্যবসায়ী সংস্থার কাছে তাদের প্রিয় সরকারের আত্মসমর্পণ, দেশের সম্পদ বিক্রয় অনুমোদন করে। সংখ্যালঘু বিরোধী, ইতিহাস বিকৃতির মূল কারিগর গোদা গোছের দক্ষিণপন্থার কত আড়াল লাগতে পারে? তাদের কর্মীরা নাকি একাধারে আত্মত্যাগে উজ্জল আর রাষ্ট্রশক্তিতে সম্পূর্ণ সম্পৃক্ত। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে থাকায় সরকারকে বাইরে থেকে পরিচলনা করার শক্তি রাখেন। সরকারের কাজে বাইরে থেকে হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠে শুধু সোনিয়া গান্ধী আর ইউপিএ সরকারের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করার সময়।
তারা কিনা কেবলই “মাটি কামড়ে” পড়ে থাকেন, তাদের জন্যেই বিজেপির এই উত্থান। তাদের প্রচুর স্কুল খুলেছে, শিক্ষিত বাঙালিও মুগ্ধ। তাঁরা সকলেই মুগ্ধ যাঁরা শিক্ষায় নাক গলানোর জন্য এতদিন বামপন্থীদের সমালোচনা করেছেন।
মাঝে বলা হল, বিজেপি এবার “ফিল্টার লাগাবে”, কিছুতেই আর অন্য দলের নানা বিতর্কিত নেতাকে তারা দলে জায়গা দেবে না। তাদের বিশুদ্ধতার নাকি ক্ষতি হচ্ছে। জাতবিদ্বেষের তাত্ত্বিক দের গায়ে দৈনন্দিন নোংরা রাজনীতির আঁচড়ের ভয়, বিচিত্র শুচিবায়ুগ্রস্ত ভাবটি সম্পর্কে সম্পর্কে একটু খোলা মাথায় চিন্তা করতে অনুরোধ করা হল, তার পরে এই লেখায় দ্বিতীয়বার হাসির বিরতি দেওয়া হবে, এবং অট্টহাস্যে আপত্তি করা হবে না। মস্তিষ্কের অভ্যন্তরের জন্য তো আর আলাদা স্যানিটাইজার হয় না।
প্রতিশ্রুতি আর ৭০ বছর
বিজেপি যে কোনো নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নির্বাচনের প্রচার হিসেবে দেখে, এই দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই তারা সরকারি ভাবে বয়ানও দিয়েছে। এবং ২০১৪তে কৃষক শ্রমিকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি তারা মহামারীর সুযোগ নিয়ে আইন করে ভেঙেছে, কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্যের দাবি, শ্রমিকের অধিকার নস্যাৎ করা হয়েছে। এমনকি বিচার চাইবার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদেরকেই বিচারক বানানো হয়েছে, সরকার ও বিচার ব্যাবস্থার মধ্যেকার প্রয়োজনীয় ব্যবধান ধুলায় মেশাচ্ছেন তাঁরা, আর আমাদের মেনে নিতে হবে, তাঁদের কৃতকর্মের মহত্বের কথা। তাঁদের সমর্থকরা প্রায়ই বলে থাকেন অযোধ্যায় মন্দিরের স্থাপনা আর কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার তাদের বহুদিনের ঘোষিত কর্মসূচি তারা ক্ষমতায় এসে পালন করেছে। এমন একটা ভাব যেন এই কাজ দুটি না করলে ভারতবর্ষ থমকে ছিল। কাশ্মীরের মানুষকে মূল ধারায় নিয়ে আসার বদলে, কাশ্মীরে সংবিধানকে মেনে নিয়ে যে রাজনৈতিক দলগুলো ভারতীয় গণতন্ত্রে অংশগ্রহণ করছিল, তাদের মূল ধারায় ব্রাত্য করার প্রচেষ্টা চলছে। সামাজিক বিদ্বেষ বৃদ্ধি ছাড়া এসব কর্মসূচির কোন গুরুত্ব নেই, ঐতিহাসিক সমস্যা সমাধান করার দায়িত্ব নিয়েছেন যাঁরা, তাঁরা দলিত, নিম্নবর্গের, মহিলাদের সম্মান পুনরুদ্ধার করার কাজেও মন দিতে পারতেন, দেননি, কারণ তাঁদের রাজনৈতিক মতাদর্শ আসলে সামাজিক প্রগতির পক্ষে নয়, সমানাধিকারের পক্ষে তো নয়ই, নাগরিকের সম্মান তাদের কর্মসূচিতে নেই। আধুনিক জীবনের সংগে সামঞ্জস্যহীন।
সংবিধানকে যে প্রধানমন্ত্রী ঘটা করে পূজা করে তাঁর দ্বিতীয় পর্যায়ের সরকারের কাজ শুরু করলেন, সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করাই তাঁদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলার হৃদয়বিদারক সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ইতিহাস, ৬-এর দশক থেকে রাজনীতি যার ঊর্ধ্বে উঠতে পেরেছিল, তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে এই দল।
কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে প্রগতিশীল অন্তর্ভুক্তির যে মানদণ্ড তিলে তিলে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে, তাকে সমূলে উৎপাটন করতে চাইছে বিজেপি। গণতন্ত্রের শক্তি হিসেবে পরিচিত সমস্ত বৈশিষ্টকেই বিজেপি রাষ্ট্রীয় দৌর্বল্যের লক্ষণ বলে দেখাতে চাইছে।
এই নির্বাচনকেকে বাংলার যাবতীয় ইতিহাসকে ভুলিয়ে উচ্চবর্ণ রক্ষণশীল রাজনীতির পুনরুত্থানের প্রচেষ্টায় ব্যবহার করা হচ্ছে, একই সঙ্গে চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন সুবিধেবাদী ধনতন্ত্রকে সম্পদ সৃষ্টির সুযোগ করে দেওয়ার কাজে বাংলার জনমত যাতে কোন মতেই বাধা না হয়ে দাঁড়ায় তার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এবং তৃণমূল সরকারের সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক কর্মপদ্ধতিতে ত্রস্ত ক্রুদ্ধ মানুষের ক্ষোভকে সেই কাজে ব্যবহার করার প্রচেষ্টা হচ্ছে, দিল্লিতে ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষ থেকে। দুঃখের কথা, তাদের একাধারে অকারণ শক্তি প্রদর্শন অন্যদিকে সাংগঠনিক অসহায়ত্বের কাহিনি, স্রেফ জাতিবিদ্বেষের মনোভাবের একটা বাধাহীন প্রকাশের সুযোগ পেয়ে, অনেক শিক্ষিত মানুষই নতুন করে গ্রহণ করছেন। আমরা আশায় আছি, তাঁদের বোধোদয় হবে, অভিজ্ঞতাকে নির্বাচনের মূল আধার করবেন, প্রচার সর্বস্ব ঢক্কানিনাদকে নয়। বিজেপি যা যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে একটাও যেখানে তারা ক্ষমতায় আছে করে দেখাতে পারেনি, নিজেদেরই সৃষ্ট সামাজিক বিভেদে নাকানি চোবানি খেয়েছে।
বিজেপি বিরোধী ভোটের ভাগ
এই প্রেক্ষিতে বলেই নেওয়া যায়, আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অতি সরেস, তিনি ভয় পাচ্ছেন, অনেক আসন না জিতলে, বিজেপিতে কিছু যাওয়ার পরে সরকার গড়ার মত সাথী কেউ থাকবেন না। সাধারণ ভাবে অনেক মানুষের মধ্যেই এই ভীতি সঞ্চারিত, এই ভীতি আসলে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি কিছু না, এই ভীতি হল বিদ্বেষের শক্তির কাছে, মিথ্যাচারের শক্তির, অর্থবলের কাছে রাজনীতির মূল ধারার পরাজয়ের ভীতি। হাতে ইভিএম -এর বোতাম থাকা সত্ত্বেও ভবিতব্যে বিশ্বাসের নামে ভ্রান্ত রাজনীতির কাছে আত্মসমর্পণ। এই নির্বাচনে যদি বিজেপি সরাসরি জনসমর্থনে একক ভাবে বা অন্যদলের সফল বিধায়ক দের সাহায্য নিয়ে সরকার গড়তে সক্ষম হয়, তাহলে সেটা বাংলার মানুষের ঐতিহাসিক লজ্জা হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
একটা তত্ত্ব আছে রাজ্যের দলগুলির পক্ষে বিজেপির এই অর্থবলের মোকাবিলা করা সম্ভব না। রাজ্যের ধনতন্ত্র সেরকম বিকশিত না, যা ধরুন মহারাষ্ট্রের মত, বা তামিলনাড়ুর মত স্থানীয় প্রতিরোধে স্থানীয় দলকে সাহায্য করবে। কয়েকটি কথা আছে, আমাদের দেশের রাজনৈতিক ফান্ডিং, স্থানীয় স্তরে এখনো সেরকম পরিষ্কার না, তাই কোন ব্যাবসায়িক গোষ্ঠী কাকে কত টাকা দিচ্ছে, আর কোন স্বার্থে দিচ্ছে তার সম্পূর্ণ তথ্য বের করা মুশকিল। দ্বিতীয়ত স্থানীয় ব্যবসার তত্ত্ব যদি সম্পূর্ণ সত্যি হত, বিকশিত ধনতন্ত্রের রাজ্যগুলিতে বিজেপি সম্পূর্ণ ব্রাত্য হত, তা তো হয় নি। আর কোন ধনিক গোষ্ঠী যতই স্থানীয় হোক, ব্যবসার নিজ নিয়মেই তাকে ব্যাপ্তির সুযোগ খুঁজতেই হবে, সেক্ষেত্রে জাতীয় দলের সঙ্গে তাদের সহজ সম্পর্ক থাকতেই পারে। আর এখানে তৃণমূলের প্রচারের বহর দেখে, তারা স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণের বিনিয়োগ দেখে তাদের খুব অর্থ সরবরাহে শুকিয়ে যাওয়া পার্টি মনে হচ্ছে কি? আরেকটা কথাও পরিষ্কার করা দরকার, খুল্লমখুল্লা জাতি বিদ্বেষের মতাদর্শগত ঐক্য না ব্যবসায়িক প্রসারের স্বার্থ নাকি, যে কোন প্রকারে স্থানীয় প্রভাব টিঁকিয়ে রাখার নেশা কোনটা যে স্থানীয় অর্থবল কে পরিচালিত করবে খুব তথ্যনিষ্ঠভাবে বোঝা মুশকিল। আগে থেকে শুধু এটুকুই বলা যায়, রাষ্ট্রশক্তির উপরে নির্ভরতার জন্য কপর্দকহীনের দুর্নাম হয়, বলা হয় সৃজনশীল অংশ সাহায্যে বঞ্চিত হচ্ছে, কিন্তু মজাটা হল, সরকারের সঙ্গে মসৃণ সম্পর্ক রাখতে, জয়ীদের দলে থাকতে অর্থবলে বলীয়ান মানুষদের আকুলি বিকুলি কিছু কম না, স্থান নিরপেক্ষে।
বিজেপি একটিই পদ্ধতিতে এই বাংলায় জিততে পারে, যদি মানুষ নিজের মনের অন্ধকারের দাসত্ব করবে বলে মনস্থির করে। অনেকে বলছেন, বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হয়ে ভালো হল না, বিজেপির লাভ হবে। প্রথমত শাসক দলের পক্ষ থেকে ধর্মনিরপেক্ষ ফ্রন্ট গড়ে তোলার সাংঘাতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেরকম কোন খবর অন্তত প্রকাশ্যে নেই। রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল রাজ্যস্তরে কোন কোয়ালিশন রাজনীতিতে বিশ্বাস করে, এরকম কোন প্রমাণও নেই। তাদের ২০১১-র জোট সঙ্গীরা অনেকেই আজ তাদের সঙ্গে নেই। আর এই ভোট ভাগের তত্ত্বের মৌলিক সমস্যাটি হল ধরে নেওয়া হচ্ছে তৃণমূলে ভোট একই স্তরে থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে নতুন কোন জনমত তৈরি হয়নি। যাই হোক এটুকুই আশা তৃণমূলের বিকল্প হিসেবে বিজেপি আর বিজেপির বিকল্প হিসেবে তৃণমূলকে যাঁরা আজ বলে নয় অনেকদিন ধরেই দেখছিলেন, এবং তার পেছনে একটা ক্ষমতা ভাগাভাগির তত্ত্ব কাজ করছিল, যেন কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্কের সর্ব সমস্যার ম্যাজিক ঔষধ, প্যাকেজ ডিলের মাপের মত। নির্বাচন কমিশন তার কাজ করলে, আর মানুষের নিজের মনের অন্ধকারের দাসত্ব করার আর জেনেবুঝে মিথ্যা বিশ্বাস করার ইচ্ছে না হলে, বিজেপির মত দলের পক্ষে সরকার গড়ার জায়্গায় থাকার সুযোগ বিশেষ নেই।
অর্থবল, মিথ্যাচার শেষ হাসি হাসবে নাকি আমাদের ভাষা, প্রগতিশীল ঐতিহ্যের, সহাবস্থানের অহংকার, আমাদের শিরদাঁড়া সোজা হবার পথ বেছে নেবে, তা সময়ে বোঝা যাবে, তবে দেশ জুড়ে বিজেপির পরাক্রমের তত্ত্ব খ্যাখ্যা হাস্যরবে পরিত্যাগ করুন। আর বিজেপি (আদি) ও বিজেপি (নব্য) সততার দাবি করলে, কাটমানির দুঃখ ভোলার জন্য তিনদিন বিশ্রাম নিয়ে, অট্টহাস্যের সঙ্গী উপযুক্ত ঘোড়া ভাড়ায় পেতে ময়দানে, ভিক্টোরিয়ার সামনে থেকে ঘুরে আসুন। মুসলমান ঘোড়াওয়ালাদের সঙ্গে দরদাম গল্পগুজব করতে গিয়ে সাম্প্রদায়িকতার গোপন অসুখটি সেরে গেলেও যেতে পারে।
ভালো বিশ্লেষণ - এবার দেখা যাক কি দাঁড়ায় !!
শহরের উচ্চ বা মধ্যবিত্তদের ওপর অবশ্য খুব ভরসা করার কোনো কারণ দেখিনা
একটু দেরি হল না?
ভালো বিশ্লেষণ। তবে ছত্তিশগড়ের তথ্যে একটু ভুল আছে। আগের পনের বছরে লাগাতার ৪৫+ সীট পেয়ে বিজেপি সরকার চালিয়েছিল। তাই ২০১৮তে অমিত শাহের ঘোষণা ছিল ৬০+। পেলেন ১৫।
খুব ভালো লেখা। যদিও একটু দেরি হয়ে গেছে তবুও চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।
এটা ঠিকই যে বিজেপির যতটা না সমর্থন, তার থেকে অনেক বেশি প্রচার। একটা কারণ হল সোশাল মিডিয়া এবং মিডিয়া দুটোতেই বিজেপি বিরোধীশুণ্য করে ফেলেছে। ফলে ডেইলি ইভিনিং নিউজ আর সোশাল মিডিয়া ফীড দেখে শুনে মনে হয় যে বিজেপিই সবথেকে বড় শক্তি।
এদিকে গোবলয়েও এক উত্তরপ্রদেশ ছাড়া কোনও বড় রাজ্যেই তাদের একা সরকার গড়ার ক্ষমতা নেই। দক্ষীন ভারতেও একমাত্র কর্ণাটকেই তাদের নিজস্ব একটু ভোট আছে। এর বাইরে যে রাজ্যটিতে বিজেপি সত্যিই ক্ষমতায় থাকার ক্ষমতা রাখে সেটি হল গুজরাত। দিল্লিতে ক্ষমতায় আসতে পারবে না জেনে সেখানকার রাজ্য সরকারের ক্ষমতা খর্ব করে দিলো।
পশ্চিমবঙ্গই তাদের শেষ আশা। এখানেও সরকার গড়তে না পারলে বিজেপির অবস্থা আরো খারাপ হবে। এখানে লোকে এখনও বিজেপির অপদার্থতা দেখেনি। তাই হয়তো কেউ কেউ এখনও আশা করছেন যে ডবল ইন্জিনের সরকার ইত্যাদি। অথচ উত্তরপ্রদেশে কি হচ্ছে, সেই নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ইনফ্যাক্ট একমাত্র গুজরাত ছাড়া যে রাজ্যগুলোতে বিজেপি খুব বড় শক্তি (রাজস্থান, বিহার, উঃপ্র, মঃপ্র, ছত্তিশগড়) এগুলো কোনোটাতেই ভিকাশের কোনও নিদর্শন নেই। ইচ্ছাও নেই। নইলে উত্তরপ্রদেশে অন্য কাউকে সিএম বানাতো।
আরো একটা কথা লিখি। ২০১৯এ বিজেপির উত্থানের পিছনে তিনটে কারণ খুব স্পষ্ট।
এক, অ্যান্টি ইনকামবেন্সি। দিদি এবং তাদের ভাইদের অত্যাচার অনেকেই সহ্য করতে পারেনি। বিশেষ করে তার আগের পন্চায়েত ইলেকশানে কি হয়েছে, সেসব সকলেই দেখেছে।
দুই, বিজেপি সত্যিই কিছুটা পোলারাইজেশান করতে পেরেছে। লোকে দেশভাগের ৭০ বছর পরে হঠাত সেই নিয়ে খুব ছেনছেটিভ হয়ে পড়েছে। দিদির মাইনরিটি তোষণ হঠাত অনেকের নজরে এসেছে। ইমাম ভাতাটা দিদির ব্লান্ডার।
মোদি হাওয়া টাওয়া কিছু নেই। ওসব বাজারি মিডিয়ার তৈরী। মোদি আর অমিত শাহ ভুল বাংলা বলবে, এর জন্য কেউ বিজেপিকে ভোট দেয়নি। যদি সত্যিই কাউকে ক্রেডিট দিতে হয় সেটা দিলু আর মুকুল।
তিন, যদিও ভোট বেড়েছে তবুও এখনও কোলকাতা এবং আশেপাশে বিজেপি তেমন সীট পায়নি। এত অবাঙালী থাকা সত্ত্বেও। কারণ কোলকাতায় যেসব অবাঙালীরা থাকতে আসেন, সবাই বিজেপি পন্থী নয়। মাড়োয়ারিদের মধ্যেও বিজেপির সমর্থন তেমন উল্লেখযোগ্য না হলে অবাক হবনা। তবুও এটা ঠিকই যে অনেক উচ্চ এবং মধ্যবিত্ত বাঙালিই কোলকাতাকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগেন। তাদের হয়তো মনে হয়েছে যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে বোধয় কোলকাতার গরুর দুধে সত্যিই সোনা পাওয়া যাবে। অথচ ভেবে দেখুন দিল্লি বা মুম্বাইতেও লোকে বিজেপির বিরোধীতা করছে।
এখন সেটিং মকফাইট করে ভোটের দিন লাইভ টিভিতে প্রারা্থী পরিচয় করাচ্ছে যাস্ট ইন টাইম
বোধিকে ফেচু। এটি গুরুর পেটেন্ট নেওয়া শব্দ। অর্থ না বুঝলে শমীক বা সিকির স্মরণ নেওয়া যেতে পারে।
লেখাটির কিছু কিছু ব্যাপারে একমত নই। "সাংগঠনিক নিষ্ঠা, সততা ও ঐক্যের রূপকথা"য় যা বলা হয়েছে, সেটাতে একমত নই। আরেসএসের মধ্যে দ্বন্দ্ব নেই এটা সম্ভবপর নয়। দ্বন্দ্ব ও সমন্বয় দুটিই আছে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে। কেন বলছি ? প্রকৃতি ও এঙ্গেলসের ডায়লেক্টিস অফ নেচার বলছে বিশ্বব্রহ্মান্ডের কোন বস্তুই দ্বন্দ্ব ও সমন্বয় ছাড়া বিকশিত হতে পারে না। শুধু দন্দ্ব বা শুধু সমন্বয় বস্তুর বিলোপ ঘটায়। সে "না" হয়ে যায়। বস্তুর ক্ষত্রে এই "না" হয়ে যাওয়াটা কখনোই ঘটে না, কারন প্রতিটি বস্তুর মধ্যে ব্যতিক্রমহীনভাবে সমন্বয় ও দ্বন্দ্ব বিরাজমান। তাই বস্তুর রূপান্তর ঘটে, বিলোপ হয় না। হোমো স্যাপিয়ানীয় জ্ঞানচর্চাসমূহ যেহেতু বস্তু নয় তাই তার বিকাশ, অবিকাশ, সংকোচন ও অবলুপ্তি আছে। কিন্তু সবটাই নির্ভর করে আবারও সমন্বয়-দ্বন্দ্বের সামঞ্জস্যে। গত ১০০ বছরে আরএসএসের বিকাশ ঘটেছে, এটা অস্বীকার করার একমাত্র উপায় উটপাখী হওয়া।
ন্যায়শাস্ত্রে বলছে আগুন থাকলে ধোঁয়া হবেই। অতএব ধোঁয়ার উপস্থিতি আগুনের প্রমাণ। সমন্বয় ও দ্বন্দ্বের সামঞ্জস্যপূর্ণতার কারন যদি বিকাশ হয়। তবে ন্যায়শাত্রের সিদ্ধান্তটি ধরে বলাই যায় বিকাশ হওয়া মানে সমন্বয় ও দ্বন্দ্বের সামঞ্জস্যপূর্ণ উপস্থিতি। এখন সঙ্গত প্রশ্ন আসতেই পারে ১০০ বছর বা তারও বেশী সময় ধরে নানান সংগঠন বিকশিত হয় নি। তবে কি তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সমন্বয় ছিলো না ? ১৩৬ বছরের ও ১০০ বছরের দুটি সংগঠনকে ধরা যাক। দুটি সংগঠনেই দ্বন্দ্ব হলেই ভাঙ্গন হয়েছে। এবং এটি ক্রমান্বয়ে চক্রাকারে বেড়েছে। ফলে ভঙ্গ অংশগুলিতে দ্বন্দ্ব ক্রমাগত কম ও সমন্বয় ক্রমাগত বেড়েছে। কোন কোন ভঙ্গ অংশ শুধু দ্বন্দ্ব বা শুধু সমন্বয়ের কারনে বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু বেঁচেবর্তে থাকা অংশগুলির বিকাশ ঘটে নি, আবার বিলুপ্তও হয়নি। ফলে ন্যায়শাস্ত্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সমন্বয় বিদ্যমান, তাবে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নয়। যাজ্ঞে। এসব শিবের গীত থাক। মোদ্দা, একটি সংগঠনের বিকাশে দ্বন্দ্ব ও সমন্বয়ের কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে তাদের কর্মীদের।
আরএসএসের সাংগঠনিক নিষ্ঠা, সততা ও ঐক্যের নিদর্শনে মদীয় একটি লেখার উল্লেখ করতে চাই। গুরুতেই প্রকাশিত হয়েছিলো, “অন্য কোথা অন্য কোনখানে” শিরোনামে। কর্ণাটকের আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলে দুটি আরএসএস বা বনবাসী কল্যান সমিতির সর্বক্ষণের কর্মীর কাজকম্মো নিয়ে। আখ্যানটি যতদূর মনে পড়ে ২০১৩ কি ২০১৪ সালের। এ বিষয়ে ত্রিপুরাবাসী গুরুচন্ডাল বন্ধুরা যারা, বাঙ্গালীরা যাদের ব্যাপকার্থে “টিপরা” বলে, তাদের সম্পর্কে ওয়াকিব-হাল। তিনি আলোকপাত করতে পারেন।
আর একটা কথা, আদি ও নব্য বিজেপি কারা ? পরিষ্কার নয়।
খুব ভালো লেখা। শুধু বক্তব্য নয়, লেখার ধরণটিও ভালো লাগল।
- আমি মানুষটা একাধারে নরম ও তুলতুলে, তাই কাউরে ইনছাল্ট করতে পারি না।
- সত্যের সঙ্গে যাঁর সম্পর্ক, আজকের নব্য সমাজ মাধ্যমের ভাষায় যাকে বলে, কম্প্লিকেটেড।
খুব ভাল ও জরুরি লেখা
আগামী ৭০ বছর বিজেপি রাজ, যাই
করো আর তাই করো !! অবশ্য এই টাইপের ভান্টানো লেখা ছাড়া আর কিই বা করার আছে !!!
জয় শ্রীরাম
আগামী ৭০ বছর বিজেপি রাজ, যাই
করো আর তাই করো !! অবশ্য এই টাইপের ভান্টানো লেখা ছাড়া আর কিই বা করার আছে !!!
জয় শ্রীরাম