করোনাজনিত লকডাউনের মধ্যে সরকারি অধ্যাদেশ এবং তার পরে কৃষি বিষয়ে কয়েকটি বিতর্কিত আইন প্রবর্তন, গত বছররে নভেম্বর থেকে সারা দেশের কৃষকদের পথে নামিয়েছে। নতুন বছরে প্রজাতন্ত্র দিবসের ঘটনাবলীর কাছাকাছি সময়ে, গুরুচণ্ডা৯কে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কৃষি বিষয়ক আলোচনা, তথ্য সংগ্রহের জন্য তাদের ওয়েব সাইটে একটি বিভাগ শুরু হোক। আইনি, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, পরিবেশ সংক্রান্ত যে বিষয়গুলি এই আন্দোলনের ফলে উঠে এসেছে, সেগুলির চটজলদি সংক্ষিপ্তসার দেখার, আন্দোলনকারীদের মতামত জেনে নেওয়ার একটা ব্যবস্থা হিসেবে।
কয়েকটি পর্যায়ে লেখাগুলি প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কিছু সাক্ষাৎকার বা আড্ডা, কিছু অনুলিখিত বক্তৃতা, কিছু বিশেষত আইন বিষয়ে ডকুমেন্টেশন, কিছু প্রশ্নোত্তরের আকারে সাজানো তথ্য সংগ্রহ ইত্যাদি নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলায় কৃষক আন্দোলন সংক্রান্ত আলোচনার একটা চলমান একত্রীকরণই প্রধান উদ্দেশ্য। প্রতিটি লেখায় আলাদা কৃতজ্ঞতা বা দায়িত্ব স্বীকার করা রইল।
প্রতিটি লেখার কিছু টীকা এবং লেখচিত্র তৈরি করা হয়েছে। স্বভাবতই তাতে এই বিরাট বিষয়টির সঠিক এবং সম্পূর্ণ প্রতিনিধিত্ব হয়েছে, বা পাঠকের সম্ভাব্য সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এরকম কোন দাবি নেই, তবে অনেকগুলি দৃষ্টিভঙ্গিকে একজায়গায় আনার একটা প্রচেষ্টা করা হয়েছে। এবং এটাও পরিষ্কার করে নেওয়া দরকার, সংকলক হিসেবে আমার অকারণ নিরপেক্ষতার কোন ঘোড়ারোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে আমার দার্শনিক অবস্থান সম্পূর্ণ ভাবে আন্দোলনকারী কৃষকের পক্ষে, আর আইনে, আইন প্রণয়ন পদ্ধতিতে প্রতিভাত সরকারি অবস্থানটির মধ্যেও আসলে খুব সুক্ষ্ম বিচার বিশেষ কিছু নেই, গোদা করেই কৃষিজাত বিপণনে বৃহৎ পুঁজির সার্বিক নিয়ন্ত্রণ তৈরিই অতি সংক্ষিপ্ত উদ্দেশ্য। অতএব নিরপেক্ষতার পরিসরের সংকোচন মূলত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্যোগেই হয়েছে, বাকিটুকু প্রতিক্রিয়া মাত্র। আমরা অনেকেই ভাগ্যবান, আমাদের সংসার কৃষি নির্ভর না, ন্যায্য মূল্য পেতে আমাদের নিজেদের দেশের রাজধানী শহরগুলির বাইরে আন্দোলন চালাতে গিয়ে লাঠি, জলকামান, দেশদ্রোহিতার মামলার সাহচর্য করতে হচ্ছে না।