এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • লা পত্নী ভ্যানতাড়া পর্ব-১ 

    রানা সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৩০ বার পঠিত
  •  
    প্রণয় একজন বছর আটত্রিশের যুবক। মা-বাবা মারা গেছেন বছর ১৫ আগে। মা মারা যাওয়ার একবছরের মধ্যে বাবাও মারা গেলেন। মা যখন মারা যান প্রণয় তখন হাসপাতালে। মাকে শেষ দেখাটাও দেখতে পায় নি সে। ওর একমাত্র দিদি প্রমিতা খুব চেষ্টা করেছিল খানিকটা মাকে বাঁচানোর। কিন্তু সেই সময় ওদের পরিবারের ওপর দিকে যেন একটা ঝড় বয়ে গেছিল। সদ্য বিবাহিত প্রমিতা স্বামীর অত্যাচারে ফেরত এসেছে শ্বশুরবাড়ি থেকে। অনেক ভালো পাত্র পেয়েও প্রমিতা বিয়ে করেছিল ওর ভালবাসার মানুষটিকে। কিন্তু প্রণয়ের জামাইবাবুর পরিবার ছিল একে গেঁয়ো তায় সামান্য শিক্ষিত। কালচার টালচারের বালাই তেমন ছিল না।

    ওদিকে অবসর নেওয়া বাবার এমআইএসের আয় আর তাদের সবার চিকিৎসা ইত্যাদিতে প্রণয়দের আর্থিক অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে গেছিল। প্রণয় নিজেও ছোটবেলা থেকে অসুস্থ থাকত। প্রায়ই ভুগত আমাশায়। কখনও আমাশা ভালো হলেও আবার শুরু হয়ে যেত হাঁপানি। না, তেমন কোনও আউটডোর গেমস খেলতে সে পারত না। তার ওপর প্রণয়ের মা ছিল খুব পজেসিভ। চাকরী করতেন একটা প্রাইভেট ফার্মে। ক্যামাক স্ট্রিটের দিকে অফিস ছিল। কিন্তু মাইনে তেমন একটা কিছু আহামরি ছিল না। পরে সেই অফিস উঠে যায়। সামান্য কিছু টাকা পেয়েছিলেন মা।  

    মায়ের কথাতেই প্রণয় ভর্তি হয়েছিল যোগব্যায়ামে। খানিকটা হয়ে উঠেছিল সুস্থ। তবে ছোটবেলায় মায়ের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য সে সম্পুর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি। তার এই হাঁপানি আর ব্রংকাইটিসের সমস্যা একজন দূর সম্পর্কের আত্মীয়কে দেখানোর পর তিনি যে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ দিয়েছিলেন তাতে প্রণয়ের সারা গায়ে দেখা দিয়েছিল খোস-পাঁজরা। গরমের মধ্যে যাদের শরীর জুড়ে খোস-পাঁজরা হয়েছে তারাই জানেন এর যন্ত্রণা। আসলে ইরেপশনের মাধ্যমে প্রণয়ের হাঁপানির অ্যালার্জি সারিয়ে দিতে চেয়েছিলেন সেই হোমিওপ্যাথিক আত্মীয়। কিন্তু ছেলের যন্ত্রণা নিজের চোখে আর সইতে পারছিলেন না মা। আর ব্যাপারটা না বুঝে বা সেই আত্মীয়কে জিজ্ঞাসা না করেই প্রণয়কে খাইয়ে দিয়েছিল অ্যালোপ্যাথি ওষুধ। ফলে সেই খোসপাঁজরা নির্মূল হয়ে গেলেও হাঁপানি আর পেটের অসুখ গিয়েছিল থেকে।

    এমনিতে ছোটবেলায় সে বেশ দুরন্তই ছিল কিন্তু শরীর দিত না। প্রণয়কে নিয়ে তার মা বেশ চিন্তায় থাকতেন। করিবাজি থেকে শুরু করে অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, কবচ, তাবিজ, পাথরঃ কী না করেছেন। প্রবল দুষ্টুমির জন্য মা একে ওকে বলে প্রণয়কে ভয় দেখিয়ে শান্ত রাখতেন। সেই ভয়ই রয়ে গেছিল অবচেতনে।              

    তবে কৈশোর থেকেই প্রণয় ছিল নার্ভাস প্রকৃতির ছেলে। একসময় কলকাতার রাস্তা পেরোতেই ভয় পেত। কাকে ঠিক কী বলতে হবে সেইসবও ফেলত গুলিয়ে। কিন্তু বুকের ভেতর অনেক কিছু করবার এক দুর্নিবার টান সে করত অনুভব। রাজা শশাঙ্ক, চাঁদের পাহাড়ের শঙ্কর, কর্ণেল সুরেশ বিশ্বাস, টিনটিন থেকে শুরু করে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস, মাষ্টারদা সূর্য সেন, বিনয়-বাদল-দীনেশ সঙ্গে মিহির সেন, বাচেন্দ্রি পাল ছিল তার আরাধ্য। আরাধ্য ছিল চেঙ্গিস খাঁ, আকবর, পৃথ্বীরাজ চৌহান, নেপোলিয়ান, অ্যাস্টেরিস্ক-ওবেলিস্ক, কর্ণ আর অরণ্যদেব। ফুটবল খেলতে না পারলেও টিভিতে বিশ্বকাপ ফুটবল, উয়েফা কাপ আর ইয়োরোপের লিগের পোকা ছিল সে। আর মন দিয়ে পড়ত সব রহস্য-রোমাঞ্চ কাহিনী।

    ওদিকে প্রমিতার বিয়েতে তার জামাইবাবু একগাদা টাকা চাইলেও মায়ের জন্য চুপ ছিল সে। মা তাকে আর বাবাকে কিছু বলতে বারণ করেছিলেন। বলেছিলেন যে প্রমিতা এখন যদি পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে এলাকায় মুখ দেখাতে পারবে তারা? তার চেয়ে টাকা ধরে দিয়ে দেওয়াই ভালো। প্রমিতা ছিল জেদী প্রকৃতির মেয়ে। সঙ্গে ছিল মুখরা। পড়াশোনা একাদশ শ্রেণি অবধি করেই জলাঞ্জলি দিয়েছিল। আর সবসময় মাকে চাপে রাখত।

    এদিকে প্রণয়ের মা পাড়ায় নানান মানবিক ব্যাপারে যেতেন এগিয়ে। একটি মেয়েদের সংগঠনের সঙ্গেও ছিলেন জড়িত। রাজনীতির রঙ না দেখে শুধুমাত্র এলাকার উন্নতি এবং নেতাদের দোষগুণ খোলাখুলি সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি হয়ে গিয়েছিলেন তাদের চক্ষুশূল।

    সেইজন্য যখন প্রমিতার সঙ্গে ওর শ্বশুরবাড়ির সমস্যা তৈরি হয়েছিল তখন এলাকার কিছু লোকজন এবং কিছু শাসক শ্রেণীর তথাকথিত ‘ফুটো নেতা’ নানাভাবে তাদের ওপর তৈরি করেছিল চাপ কারণ প্রমিতার ওপর অত্যাচার করার রিপোর্ট লোকাল থানায় লেখাতে ৪৯৮ ধারায় কেস দিয়ে প্রমিতার বরকে ধরে নিয়ে গিয়ে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রেখেছিল পুলিশ। কিন্তু সেই সময় প্রণয়ের বাবা আর মা কারুরই শরীর ঠিক ছিল না। ক’দিন তারা খুবই উৎকণ্ঠায় কাটিয়েছিলেন। থানা আর হাসপাতালে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতে হত আর তার মধ্যেই প্রণয়ের মা মারা যান। আর সেই শোকে পরের বছর মারা যান বাবা।

    প্রণয়ের মনে হয়েছিল তাকে যেন একটা অন্ধকার ঘরে কিছু বিষাক্ত প্রাণীদের হাতে ছেড়ে তাঁরা গত হলেন। সেইসময় প্রণয়ের নার্ভাসনেস ভয়ানকভাবে বেড়ে গেছিল। সঙ্গে ঘাড়ে স্পন্ডিলাইসিসের জন্য মাঝেমধ্যে মাথা ঘোরাত। তখন প্রণয় আবার যোগব্যায়াম শুরু করে। আস্তে আস্তে ভালো হয়ে উঠতে থাকে। প্রমিতা ওদের বাড়িতেই গেছিল থেকে। এদিকে বাবা-মায়ের জমানো টাকা, প্রমিতার বিয়ে এবং তাঁদের চিকিৎসায় প্রায় শেষ। সঙ্গে ছিল বাড়ির শরীকী ঝামেলা।

    ওদিকে অ্যাকাউন্টেন্সি নিয়ে অনার্স পাশ করার প্রায় দশ বছর পর শেষে কাছের একটা অফিসে সামান্য চাকরি পেল প্রণয়। আর তার বছর দুই কাজ করার পর প্রণয়ের জীবনে এল সীমান্তি; সীমান্তি মুখার্জী।

    প্রণয়দের বাড়িটা ছিল কলকাতায়। শিশুমঙ্গল হাসপাতালের কাছেই। পুরনো এজমালি বাড়ি। শরীর-স্বাস্থ্য তেমন একটা ভালো না থাকলেও দীর্ঘ যোগব্যায়াম আর ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করে করে প্রণয় হয়ে উঠেছিল হ্যান্ডসাম। ওদিকে এই বছর দশেকে সে দুটো প্রেমে হাফসোল খেয়েছে। মেয়ে দুটো নিজেরাই ওর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে, পরে প্রপোজ করেও বাতিল করে দিয়েছে শুধুমাত্র প্রণয়ের দারিদ্রতার জন্য। বেশ খানিকটা ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিল প্রণয় তখন।

    সীমান্তি তখন ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি থেকে সদ্য ইংরেজি নিয়ে পাশ করে বেরিয়েছে। লেক মার্কেটের কাছে একটা স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করতে গিয়ে আলাপ হয়েছিল তাদের। রঙটা চাপা হলেও সীমান্তি ছিল বেশ সুন্দরী এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী। সীমান্তি থাকত যাদবপুরের দিকে। যদিও কবিগুরু লিখে গেছেন, ‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে / কে কখন ধরা দেবে কে জানে’, তবুও মাঝেমধ্যে এই ভাবনাটা থেকে থেকেই প্রণয়ের মনে উদয় হত যে কী এমন দেখে সীমান্তি তার প্রেমে পড়ল!

    মাসকতক প্রেমপর্ব চলার পর প্রণয় বুঝতে পারল যে সীমান্তি তার মায়ের মতোই সাংঘাতিক রকমের পজেসিভ। তাকে যেন শাসন করতে চায়। মাঝেমধ্যেই এ মল সে মলে তারা ঘোরাঘুরি করত কারণ সীমান্তি নন্দন চত্বর বা মোহরকুঞ্জে যেতে চাইত না। সে চাইত মলে ঘুরতে, খাবার খেতে আর উইন্ডো শপিং করতে। বলতো যে টাকা রোজগার করে ভালো ভালো পোশাক আর দামী গয়না সে একদিন কিনবে।

    কিন্তু একদিকে সীমান্তিকে হারাবার চাপ, কাজের জায়গার চাপ, শরীকী বাড়ি নিয়ে আত্মীয়স্বজনদের চাপে মাঝেমধ্যেই অস্থির লাগত প্রণয়ের। ডিপ্রেশন চলে আসত তার যখন দেখত সীমান্তিকে প্রায়ই সুপুরুষেরা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাত বা মেসেজ করত। সেগুলো আবার একসঙ্গে ডিনার করার সময় প্রণয়কে হাসতে হাসতে দেখাত আর বলতো যে দেখো, এতগুলো পুরুষ আমার পেছনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তুমি যদি আমার কথা মতো না চলো বা রোজগার না বাড়াতে পার তাহলে কিন্তু বাদ পরে যাবে। তাই কাজে উন্নতি করো আর রোজগার বাড়াও; নয়তো আমার আশা তোমাকে ছাড়তে হবে।

    এদিকে সীমান্তিকে হারাবার ভয়ে রোজগার বাড়াতে গিয়েই হল বিপত্তি। সারদা আর রোজভ্যালিতে প্রণয় টাকা রেখেছিল। কিন্তু সেখানে লালবাতি জ্বলল। আরও কয়েকজন তার থেকে টাকা নিয়ে ফেরত দিল না। ফলে আবার ফিরে এল টেনশন আর ভয়। রোজগার কীভাবে বাড়াবে তার টেনশন, সীমান্তিকে হারানোর টেনশন, জীবনে হেরে যাওয়ার টেনশন।

    আর এই টেনশনেই কী যে হল সে জানে না। দেখা গেল মাঝেমধ্যে উল্টোপাল্টা সময়ে তার পটি পেয়ে যাচ্ছে। প্রথম প্রথম খাওয়ার আড়াই-তিন ঘণ্টা পরে হচ্ছিল। তারপর সেটা নেমে এল একঘন্টা থেকে আধঘণ্টার মধ্যে। এমন বেগে পেয়ে যাচ্ছিল যে রোখা যাচ্ছিল না। মনে হচ্ছে যেন খেলেই পটি হবে। নিজের পটিগুলোকে কাছ থেকে দেখল প্রণয়। মিউকাসে ভরপুর। তাহলে কি আবার আমাশা হল? রাত্তিরে ভালো করে ঘুম হচ্ছে না। জাঙিয়া প্যান্টে একেবারে লেপ্টালেপ্টি হয়ে যাচ্ছিল।

    যদিও আমাশা হলে চট করে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খায় না সে। মায়ের কথা মনে পড়ল। ক’দিন থানকুনি আর গ্যাদাল পাতা সঙ্গে চিকেন ভাতের সঙ্গে ফুটিয়ে খেল সে। কিন্তু কিছু দিন ঠিক থাকার পরেও আবার সেই চাপ আর সেটা সামলাতে পারছিল না সে। বেগ ধরে রাখা যাচ্ছিল না বাসে বা মেট্রোতে। কাজের জায়গায় বার বার ল্যাট্রিন যেতে হচ্ছিল তাকে। সঙ্গে ছিল পেটের মধ্যে ভুটভাট। মাঝেমধ্যে তলপেটে চিনচিন করছিল।

    গুগুলে সার্চ করে কিছুদিন বেল খেল কিনে। দেখল খানিকটা সামলানো গেছে। এর মধ্যে প্রণয়ের এক বন্ধু প্রবাল জর্জিয়া যাওয়ার আগে ওকে নিমন্ত্রণ জানালো তাদের গ্রামের বাড়িতে। প্রণয় ভাবছিল যে সে এই অবস্থায় যাবে কীনা! 

    কিন্তু প্রবালের জোরাজুরিতে সেখানে গিয়ে একটু উল্টোপাল্টা খাওয়ার পর আবার ফিরে এল পটির সমস্যা। বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ল প্রণয়। ক্যানসার ট্যান্সার হল না তো? মনে পড়ল যে মারা যাওয়ার আগে মায়ের এইরকম হয়েছিল। নাহ্‌! এবার একজন ডাক্তার দেখাতেই হবে।

    টাকা মার যাওয়ার ঘটনা অবশ্য প্রণয় সীমান্তিকে জানায় নি। শেষে একগাদা কথা শুনতে হবে। কিন্তু ওর সঙ্গে মলে ঘুরতে গিয়েও মাঝেমধ্যে সীমান্তিকে অবাক করে দিয়ে প্রণয় ল্যাট্রিনে চলে যাচ্ছিল। মনে মনে এই ভেবে শান্তনা পাচ্ছিল যে নন্দন চত্বর বা মোহরকুঞ্জে ঘুরলে প্যান্টেই হয়তো হয়ে যেত। মলে তবু ল্যাট্রিন আছে বলে রক্ষে। ওদিকে কাগজে রোজ খবর বেরোচ্ছে আর তাতে প্রণয় বেশ বুঝতে পারছে যে সারদা বা রোজভ্যালিতে বিনিয়োগ করা টাকা সে আর কোনদিনও ফেরত পাবে না। যে লোকগুলোকে সে টাকা দিয়ে অসময়ে সাহায্য করেছিল তারা শুধু টাকা ফেরত দিচ্ছিল না, সঙ্গে প্রণয়কে গালগালাজও করছিল।

    এদিকে এজমালি বাড়ি নিয়ে আবার চাপ দেওয়া শুরু করেছে আত্মীয়রা। প্রমিতা আবার তার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করা করেছে শুরু।  

    তবে কাজের মধ্যে ভালো খবর যে নতুন দুটো কোম্পানি প্রণয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের মাসে মাসের অ্যাকাউন্ট সঙ্গে জিএসটি সামলাতে বলেছে। যদিও সরকার আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিল যে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের মতো বি.কম. পাশ করা ব্যাক্তিরাও সই করলে সেটা গ্রাহ্য হবে, কিন্তু তবুও বড় বড় কোম্পানীরা চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের ওপরই ভরসা রাখে।

    এই নতুন দুটো কোম্পানীর খোঁজ তাকে এনে দিয়েছে বৈদেহী। বৈদেহী ওদের পাশের বাড়িতেই থাকে। একসময় প্রণয় ওকে অঙ্ক দেখিয়ে দিত। ওর বাবা নেই। মা বিদিশা ওর বাবার ব্যাঙ্কের কাজটা পেয়েছেন। সেখানকারই দুজন ক্লায়েন্টকে প্রণয়ের নম্বর দিয়েছিল বিদিশা।     

    কারণ তার আগে একদিন এমন হয়েছিল যে রাতে এলাকার দোকান থেকে হাতে সেঁকা রুটি আর তরকারি খেয়ে প্রায় ১৪ বার পটি করে বেহুঁশ হয়ে পড়েছিল প্রণয়। তারপর হুঁশে এসে বৈদেহীকে ফোন করে ডেকে ওষুধ আনিয়ে খেয়েছিল সে। প্রণয় খুলে বলেছিল তার টাকা মার যাওয়ার কথা। আর তার এই অবস্থা দেখে বৈদেহীই বিদিশাকে বলেছিল যে প্রণয়ের জন্য কিছু একটা করতে যাতে ওর রোজগার খানিকটা বাড়ে।

    বৈদেহী দুমদাম করে মাঝেসাঝেই চলে আসত তার মাষ্টার প্রণয়ের কাছে। মেয়েটা দেখতে সুশ্রী আর বেশ আকর্ষনীয়। সম্প্রতি রবীন্দ্রভারতী থেকে ‘ড্রামা’ নিয়ে মাস্টার্স করেছে। তবে তার এতবার আসবার কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে জবাব দিত যে বিদিশা বলেছে তার খোঁজ নিতে। ফোনে পাশের বাড়ির লোকের খোঁজ নেওয়া বিদিশার একদম না পসন্দ। তিনি বলেন যে মোবাইল এসে মানুষকে যেন আরও একা করে দিয়েছে। প্রণয়ের মা-বাবা অসুস্থ থাকাকালীন বিদিশা নানাভাবে তাদের সাহায্য করেছিল। সাহায্য করেছিল প্রমিতার সময়েও। প্রণয়ের মাও ওদের জন্য করতেন। বলতেন প্রতিবেশী হচ্ছে আত্মীয়র থেকেও বেশি। চাইলে অনেক কিছুই কালকে পাল্টানো যায়, কিন্তু প্রতিবেশী পাল্টানো যায় না।

    (ক্রমশ)
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৩০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন