এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • লা পত্নী ভ্যানতাড়াঃ পর্ব ৪ 

    রানা সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৬৪ বার পঠিত
  • 0 | | | |
    “কী ব্যাপার?”, জানতে চাইল প্রণয়।
    হুড়মুড় করে এসে প্রণয়ের খাটে বসে পড়ল বৈদেহী। প্রণয়ের তখন খালি গা। পরনে গামছা। দেখে বৈদেহী হাসছিল। তড়াক করে উঠে অন্যঘর থেকে গামছার ওপরেই একটা লোয়ার আর একটা পুরোনো গোল গেঞ্জি পরে এল সে।বলল, “কী হয়েছে?”

    “মামু মেসেজ করেছে। চারজনের নাম পাওয়া গেছে যাদের যাদের নাম আকাশ রায়চৌধুরী আর বি এম ডবলু গাড়ি আছে”।

    “এতো তাড়াতাড়ি! কই? দেখি দেখি?”। বৈদেহীর হাত থেকে তার মোবাইলটা নিয়ে দেখতে থাকল প্রণয়।

    ১) Akash Roychowdhury; Film Director; Golf green

    ২) Akash Roychowdhury; Doctor, MD; New Alipore

    ৩) Akash Roychowdhury; Glamour Photographer; Saltlake

    ৪) Akash Roychowdhury; Senior Lecturer; Highland Park
    সঙ্গে সবার ল্যান্ডলাইনের নম্বর।

    আরেকবার নামগুলো দেখে নিয়ে বৈদেহীর দিকে তাকাল প্রণয়। বলল, “এক কাজ করলে হয় না?”

    “কী?”, মেসেজের থেকে প্রণয়ের দিকেই বৈদেহীর দৃষ্টি বেশি।

    “বলছিলাম কী, এদের বউদের যদি আমরা ফোন করে আগে থাকতে সাবধান করে দিই, কেমন হয়?”

    “ভালোই হয়। তবে…”, বৈদেহীর গলায় একটা দ্বিধা। “কিন্তু মামু যদি জানতে পারে?”

    “আরে, আমরা যদি ওকে না বলি, উনি জানবেন কীভাবে?”

    “কিন্তু ওদের কলার আইডিতে যদি নম্বর ধরা পড়ে?”

    “হুম। that’s a point”, বলে প্রণয় নিজের ভাবভঙ্গিমা বিবিসি সিরিজে দেখা জেরেমি ব্রেটের মতো করল। “তাহলে একটা কাজ করা যায়”।

    “কী গো?”

    বৈদেহীর মুখে ‘গো’ শুন একটু কেমন যেন লাগল প্রণয়ের। বৈদেহীও অপলকে দেখছে ওকে। প্রণয় বলল, “আমার এক বন্ধু আছে। সন্তু। হাজরার মোড়ে ওর একটা মোবাইলের দোকান আছে। ওকে গিয়ে বললে নিশ্চয়ই কিছু একটা হিল্লে হবে”।

    “ঠিক আছে। চলো তাহলে”।

    পেটের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠল প্রণয়ের। আলতো করে সে পেটের ভেতরের গ্যাস দিল বের করে। এমনভাবে যাতে আবার তার সঙ্গে পটি না বেরিয়ে যায়। ওষুধ নিয়মিত খাচ্ছে বটে। তবে এইভাবে গ্যাস বেরোতে গিয়ে আগে বেশ অনেকবার পটি এসেছিল বেরিয়ে।

    আবার উঠে পাশের ঘরে গেল প্রণয়। জাঙিয়ার নিচে একটা কাপড় গলিয়ে তার ওপর একটা প্যান্ট পরে নিল। তারপর একসঙ্গে বেরিয়ে দেখে বাড়ির সামনে একটা স্কুটি রাখা রয়েছে। প্রণয় আরও অবাক হল যখন বৈদেহী গিয়ে সেই স্কুটিতে বসে হেলমেট পরে স্টার্ট দিল। অবাক হয়ে খানিকক্ষণ ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে থাকল প্রণয়। বৈদেহী হাসছিল। হাতের ইশারায় ডাকল ওকে। তারপর স্কুটির পেছনে আটকে রাখা হেলমেটটা পরে প্রণয় পেছনে পড়ল বসে। ভুস করে স্কুটি ছেড়ে দিল বৈদেহী। হাওয়ায় ওর চুলগুলো হেলমেটের নীচ দিয়ে প্রণয়ের মুখে এসে ঝাপটা মারছিল। চুলের গন্ধটা বেশ সুন্দর। শ্যাম্পুর হবে হয়ত। ইস! সীমান্তি যদি এইভাবে স্কুটিতে করে ওকে বেড়াতে নিয়ে যেত! ভাবছিল প্রণয়। চটকা ভাঙল সিগন্যালে যখন বৈদেহী ব্রেক কষল।

    “এটা কবে নিলে?”

    “আজই। অনেকদিন ধরে মায়ের কাছে বায়না করছিলাম”।

    “ওহ, তাই বলো। ভালোই হল। বাস, অটোর ঝামেলা রইল না। পারলে আমরা কালকে একবার লোকগুলোর বাড়িতেও ঢুঁ মেরে আসতে পারি”।

    হাজরা মোড়ে স্কুটি দাঁড় করিয়ে সন্তুর দোকানে গেল ওরা। সব শুনে সন্তু বলল, “ঠিক আছে। তোকে একটা মোবাইল দিচ্ছি। কিন্তু কল হয়ে গেলেই সেটা অফ করে আমাকে এসে দিয়ে যাবি”।

    আলতো করে সন্তুর গালে একটা চুমু খেয়ে মোবাইলটা নিয়ে চলে গেল পাশের পার্কে। বিকেলের দিক বলে সেখানে বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড় রয়েছে। ওরা একটা ফাঁকা কোন দেখে সেখানে গিয়ে বসল।

    ফটোগ্রাফার চৌধুরির স্ত্রী তখন ঘরে বসে রান্নার প্রোগ্রাম দেখছিল। নাম সিঞ্জিনি। সে বর্ধমানের গ্রামের একজন নরম স্বভাবের মেয়ে। দেখতে শুনতে ভালোই। তবে বাড়ির আর্থিক স্বচ্ছলতা কম ছিল বলে বেশি দূর পড়াশোনা সে করতে পারে নি। সকালে ঠাকুর পুজো, বরের রান্না, দুপুরে ঘুম আর বিকেলের দিকে টিভিতে নানান প্রোগ্রাম – এই হল তার রোজনামচা। আকাশদের আদি বাড়িও বর্ধমানে। ওদের পরিবার কিন্তু বেশ ধনী। তাই সম্বন্ধটা আসতেই সিঞ্জিনির বাবা আর না করেন নি। একপ্রকার জোর করেই দিয়ে দিয়েছিল বিয়ে। 

    আর কয়েকদিনের মধ্যেই ওদের বিয়ের বছর দুই পূর্ণ হবে।সন্তানাদি নেই। গ্ল্যামার ফটোগ্রাফি নিয়ে কাজ করার সুবাদে বেশ কিছু সুন্দরী মেয়ে-বন্ধু ছিল আকাশের। শুনে সিঞ্জিনির বাবা বলেছিলেন যে সোনার আংটি আবার ব্যাঁকা। সল্টলেকে বিবি ব্লকে ওদের দোতলা বাড়ি। সেখানে মিয়া বিবি আর কাজের লোক থাকে। আর কাছেই আছে শৌনক আর পায়েল। শৌনক আকাশের বন্ধু।

    যদিও আকাশের এই মেয়ে বন্ধুদের নিয়ে সিঞ্জিনি সব সময় উৎকণ্ঠায় থাকে। ওদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই পার্টি করে রাত করে বাড়ি ফেরে আকাশ। আজকাল চারিদিকে নানান এক্সট্রা ম্যারাইটাল অ্যাফেয়ার ট্যাফেয়ারের কথা কাগজে বা টিভিতে সে দেখেছে। তবে ওর প্রতি আকাশের অবহেলা তার চোখে পড়েনি। সিঞ্জিনির বাবা গত বছর মারা গেছেন আর মা সেই ছোটবেলায়।  

    এই বিকেলের দিকে টিভিতে রান্নার প্রোগ্রামটা সে রোজ দেখে। দেখে নতুন নতুন পদ করে আকাশকে খাওয়ায়।

    হঠাৎ একটা ফোন আসাতে খানিকটা বিরক্ত হয়ে হেঁটে গিয়ে রিসিভারটা তুলল সিঞ্জিনি। বলল, “হ্যালো”।

    “আচ্ছা, এটা কি ফটোগ্রাফার রায়চৌধুরীর বাড়ি যিনি আকাশ করেন?

    “মানে!”

    “নাহ। ইয়ে, ভুল হয়ে গেছে। এটা কি আকাশ রায়চৌধুরীর বাড়ি যিনি গ্ল্যামার ফটোগ্রাফি করেন?”

    “হ্যাঁ। আপনি কে বলছেন?”

    “আপনি কে বলছেন?”

    “আমি ওর মিসেস বলছি…”

    “ধারে কাছে কেউ নেই তো?”

    “মানে! কে আপনি?”

    “ঘাবড়াবেন না ম্যাডাম। শুধু মন দিয়ে শুনুন। আমি কে সেটা জানার থেকেও ইম্পর্ট্যান্ট হল আমি কী বলছি”।

    “উফ, তাড়াতাড়ি বলুন”।

    “আমার কাছে খবর আছে যে আপনার স্বামী তার গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে মিলে আর কিছু দিনের মধ্যেই আপনাকে খুন করবে”।

    “মানে!”, চিৎকার করে উঠল সিঞ্জিনি। হাত থেকে রিসিভারটা আরেকটু হলে পড়ে যাচ্ছিল। “কী যাতা বলছেন!”

    “যাতা নয় ম্যাডাম। আমি নিজের কানে শুনেছি। তবে সাবধানে থাকবেন। আর বন্ধু কেউ থাকলে জানিয়ে রাখবেন। পুলিশ অবশ্য সব জানে। তারা নজর রাখছে। খালি প্লিজ আপনি সাবধানে থাকবেন আর আপনার বরের হাবভাব একটু নজরে রাখবেন। বাই…”। লাইন কেটে দিল প্রণয়।

    ফোনে আচমকা তার খুন হওয়ার কথা শুনে রিসিভার হাতে ভ্যাবলার মতো কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল সিঞ্জিনি। এমন একটা শক সে খেয়েছে বাবা মারা যাওয়ার সময়। কিন্তু তাকে খুন করবে আকাশ! পিঠ দিয়ে একটা শীতল স্রোতের ধারা বয়ে গেল সিঞ্জিনির। প্রাথমিক বিহ্বলতা কাটিয়ে ফোন রেখে বেডরুমে গেল সে। তারপর আলমারি থেকে আকাশের জামাকাপড় আঁতিপাঁতি করে খুঁজে একটা পুরনো ওয়ালেট বের করল। দেখল সেখানে তার আর আকাশের বিয়ের ছবি। কিন্তু তার পেছনে ওটা কী রাখা? নিজেদের ছবির পেছন থেকে একটা মেয়ের ছবি বের করল সিঞ্জিনি। ভালো করে দেখল মেয়েটাকে। নাহ্‌, একে তো ও চেনে না।
            
    ওদিকে লাইন কেটে প্রণয় ফোন এবার করল ডাক্তার রায়চৌধুরির বাড়িতে। নিউ আলিপুরে। বিকেলের দিকে ডাক্তারবাবুর স্ত্রী মিতুল তখন পাশের বাড়ির এক অবাঙালি ভদ্রমহিলার সঙ্গে গ্যাঁজাচ্ছিলেন। মিতুল হাঁটতে পারে না। একটা দারুণ শোকে তার কোমরের নীচ থেকে দুটো পায়ের নার্ভ অচল হয়ে গেছে। ওদের দুটি ছেলেমেয়ে আছে। ওরা কলেজে পড়ে।

    বাড়ির লাগোয়া আউট হাউসে ডাক্তার রায়চৌধুরী করেছেন তার চেম্বার কাম গবেষণাগার। সে এখন সেখানেই আছে। সঙ্গে রয়েছে তার সুন্দরী অ্যাসিস্টেন্ট রুক্মিণী। সে মাস তিনেক হল এমবিবিএস পাশ করে ডঃ রায়চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করছে। ডাক্তার হিসেবে কলকাতায় আকাশ রায়চৌধুরীর ভালোই নামডাক আছে। কাঁচাপাকা চুলের ডাক্তারবাবু তার বৌকে একটু সমঝে চলেন। মিতুলের চুলেও ধরেছে পাক। বছর ২০-২২ হয়ে গেল তাদের বিয়ে এবং সংসারের।

    প্রণয়ের ফোনটা আসতেই ওদের কাজের মেয়ে সেটা ধরল। “অ্যালো…”

    “কে? ইয়ে, এটা কি ডাক্তার আকাশ রায়চৌধুরির বাড়ি?”

    “অ্যাঁ, হ্যাঁ। আপনে কে বলচেন?”

    “ওর ওয়াইফ আছেন?”

    “কে! ওয়াক?”

    “আরে বউ, বউ?”

    “হ্যাঁ, আচেন”

    “ফোনটা ওকে দিন”।

    ফোনের নির্দেশ মতো ওই মহিলা পরিচারিকা সেটা নিয়ে মিতুলের হাতে দিল। অবাঙালি ভদ্রমহিলা কাজ আছে বলে চলে গেলেন।

    “হ্যালো…”, মিতুল রিসিভারটা ভালো করে ধরল।

    “এটা কি ডাক্তার রায়চৌধুরির বাড়ি? আপনি কি ওর ওয়াইফ?”

    “হ্যাঁ। কিন্তু আপনি কে বলছেন?”

    “আমি…, ইয়ে…, হ্যাঁ, আমি টিনটিন”

    “ক টিন!”

    “আরে টিনটিন; টিনটিন; রিপোর্টার…”

    “আমার সঙ্গে আবার কী দরকার?”

    “শুনুন, ব্যাপারটা কিন্তু খুব সিরিয়াস। ধারেকাছে কেউ নেই তো?”

    “ফাজলামি করছেন নাকি?”

    “না ম্যাডাম, সিরিয়াস। আমাদের কাছে খবর আছে যে কয়েকদিনের মধ্যেই ডাক্তারবাবু আপনাকে খুন করবে। আর এই ভয়ঙ্কর প্ল্যানে তার সঙ্গে আছে তার গার্লফ্রেন্ড”।

    হাত থেকে রিসিভারটা আরেকটু হলে পড়ে যাচ্ছিল মিতুলের।। “কী যাতা বলছেন?”

    “একদম সিরিয়াস। আমি নিজের কানে শুনেছি। পুলিশকে বলা আছে। তারাও নজর রাখছেন। তবে আপনি একটু সাবধানে থাকবেন…”।

    “হ্যালো, আরে শুনুন, কোন কাগজের রিপোর্টার আপনি?”

    “লা পত্নী ভ্যানতাড়া”।

    “কী!”

    “বিদেশি কাগজ। আমি সেটার কলকাতা করেস্পন্ডেন্ট”। বলে ফোনটা কেটে দিল প্রণয়।

    রিসিভারটা হাত থেকে পড়ে গেল মিতুলের। বুকের ভেতর কেমন একটা জানি করছে। খানিকক্ষণ ভাবল সে। তারপর খাটের থেকে হুইলচেয়ারে উঠে সেটা চালিয়ে গেল আউট হাউসের দিকে। গিয়ে দেখল যে নতুন অ্যাসিস্টেন্ট রুক্মিণীর সঙ্গে ডাক্তারবাবু গায়ে গা ঘেঁষিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সামনের টেবিলে একটা খাঁচার মধ্যে রাখা সাদা ইঁদুরকে একটা ইনজেকশন দিল ডাক্তারবাবু। কিছুক্ষণ পর ইঁদুরটা নড়তে চড়তে থাকল। আর তারপর আনন্দে রুক্মিণী আর ডাক্তারবাবু পরস্পর পরস্পরকে জড়িয়ে ধরল।

    ঘেন্নায় চোখ বন্ধ করে ফেলল মিতুল।

    ডাক্তার রায়চৌধুরি বলল, “ঠিক এইভাবে ওকে…”

    “কী করবেন স্যার?”, রুক্মিণী এখনও ডাক্তারকে ছাড়েনি।

    “এইভাবে তোমার সঙ্গে মিশে যাব…, আর”, ডাক্তার আরেকটা ইনজেকশনের ভায়াল হাতে নিল। “আর এইটাই হবে আমাদের পথের কাঁটা দূর করার চাবিকাঠি…”। রুক্মিণীকে আরেকটু চেপে ধরল ডাক্তার।

    “আহ্‌, এবার ছাড়ুন। কেউ দেখে ফেলবে”।

    “ফেলুক”।

    চাকা ঘুরিয়ে সরে এল মিতুল। ভাবল, “ছিঃ ছিঃ ছিঃ…, লোকটা তাহলে ফোনে ঠিকই বলেছে। মনে মনে বলল, “ঠিক আছে, আমিও এক বাপের মেয়ে। তোদের আশানাই-এ কীভাবে ছাই দিতে হয় আমারও জানা আছে”।

    ওদিকে দ্বিতীয় কলটা করে নিজেকে বেশ সত্যিকারের টিনটিন টিনটিন মনে হচ্ছিল প্রণয়ের। বৈদেহীকে বলল, “কেমন বললাম বলো একবার?”

    বৈদেহীও প্রণয়ের এইরকম স্মার্ট হাবেভাবে অবাক। জিজ্ঞাসা করল, “আচ্ছা, এই ‘লা পত্নী ভ্যানতাড়া’ ব্যাপারটা কী?”

    “ও তুমি বুঝবে না। এবার তিন নম্বর…”, ডিরেক্টর রায়চৌধুরীর ফোনে ফোন করল প্রণয়।

    “হ্যালো …”

    “কে? মিসেস রায়চৌধুরী?”

    “নাহ্‌, আমি ওর সেক্রেটারি কথা বলছি…”

    “আমি আপনার ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলতে চাইছি”।

    “কোনও টিভি বা কাগজ থেকে?”

    “হ্যাঁ। কাগজ। লা পত্নী ভ্যানতাড়া…”

    “ইয়োরোপের কোনও কাগজ বুঝি?”

    “ইয়েস মাদ্‌মোয়াজেল…। ফরাসী!”

    “হোল্ড করুন, দিচ্ছি”। সেক্রেটারি লাইনটা ডিরেক্টর রায়চৌধুরীর বউকে ট্র্যান্সফার করে দিলেন।

    সোহিনী অর্থাৎ ডিরেক্টর রায়চৌধুরীর বউ তখন বাথটবে শুয়ে গায়ে সাবানের ফেনা ঘষছিল। আজ একটা পার্টি আছে। তাই সে মাথা না ভিজিয়ে বাকি শরীরে সাবান মেখে ধুয়ে নিচ্ছিল। বাথটবের পাশের দেওয়ালে একটা ফোন আটকানো। সেখানে রিং হতেই সে তুলে বলল, “হ্যালো”।

    “শুনুন মিসেস রায়চৌধুরী…, আপনার আশেপাশে কেউ নেই তো?”

    “কেন?”, হেসে ওঠে সোহিনী।
     
    প্রণয় একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল। “না মানে একটা গুরুত্বপূর্ণ খবর আপনাকে দেব আর ব্যাপারটা কিন্তু একদম হাসির না”।

    “আমি বুঝতে পেরেছি। সাগ্নিক তো? আবার অন্যের গলা নকল করে আমাকে ফোন করেছ? ও তো এখন ঘরেই নেই…”

    (ক্রমশ)
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    0 | | | |
  • ধারাবাহিক | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৬৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন