উপসংহারকোটি কোটি নক্ষত্র আজ বুঝি চঞ্চল,
তাদের সমাবেশে নিশিদিগন্ত উজ্জ্বল
চাঁদের জ্যোৎস্নায় বালুচর আজ মুখর
সমুদ্রের ঢেউগুলোও জমিয়েছে আনন্দ-আসর।
আজ রাত্রি যেন চাইছে কিছু বলতে
স্নিগ্ধ বাতাসের বারতা ছড়িয়ে পড়ে চারিপ্রান্তে
প্রকৃতিও আজ চেয়েছে উৎসুক-নয়ানে
সাক্ষী হতে চায় এ মহামিলনের সন্ধিক্ষণে।
দুইটি ক্লান্ত হৃদয় চলেছে দুইপথে ;
ওদের গন্তব্য ওই সাগরের মিলনতটে।
অবশেষে মিলে গেল সে দুটি প্রাণ
স্তব্ধ রাত্রি পেল এক সুর,মিলনের গান।
গোধূলির রূপকথা
দিনের শেষ সন্ধিক্ষণে সূর্যকিরণ আপনমনে
ফিরে ফিরে চলে।
তালের সারি বারে বারে বিষণ্ণ দুপুরে দীঘির পাড়ে
হাতছানিতে কী যেন বলে।
শেষ রাঙা আলোটুকু জগতের শেষ ভালোটুকু
রাখিতে না পায় স্থান
এই জলাশয় বনবিথীকায়
যায় যে করে ম্লান।
আলসে মেয়ে গোধূলি সাঁঝের শঙ্কা-শরম ভুলি
মুখখানি তার চেয়ে দেখে ওই
পদ্মদীঘির জলে
রূপকথারই পুরে পিলু-বঁরোয়ার সুরে
তিরপূর্ণির স্বপ্নতটের
শব্দকমল ফোটে।
মরুকন্যা
তৃষ্ণাতুর মরুতট জুড়ে শুন্যতার হাহাকার
বালুতটে বোবা কান্নার ভাষা,
তাকে আবার দিলো কেউ বালুঝড় উপহার
আর অন্তরের গভীরে থাকা জমাট নিরাশা।
তৃষ্ণায় মরুকন্যা তথাপি আকুল
ডাক শুধু তার, "বৃষ্টি! বৃষ্টি"
একবার যদি বর্ষা দেখা দিতো তারে!
তা হয়না, বদলায় না মহাকালের সৃষ্টি
কারো কান্নাভরা হাহাকারে।
বালির গভীরে জাগে তরঙ্গ - স্পন্দন
মরুকন্যা হিল্লোলিত এ কি সুখে!
নিশ্চুপ অন্তরে তার ঝঙ্কৃত দয়িত-বন্দন
আজি আকাঙ্ক্ষিত তারি সম্মুখে !
দুজনে
ওরা নাকি বন্ধু খুব, একপ্রাণ
তবু লাগে খুনসুটি
পথ আলাদা দুটি
কথা হয় বন্ধ ক'দিন, অভিমান।
ছেলেটি ডানপিটে, হুল্লোড়ে মন তার
মেয়েটি নিশ্চুপ
হয়তো ভাবে খুব
মানুষের গড়া সমাজ, কেন আজ ছারখার?
ছেলেটি ফিজিক্স-প্রিয়, গিটারে তোলে ফিউশন
ভালোবাসে ব্রাজিলীয়-কফি
মেয়েটির 'পোভার্টি অফ ফিলসোফি',
ছেলেটির হাতে 'স্টেট এন্ড রেভোলিউশন।'
মেয়েটি জলছবি, শীতের ময়দানে তার কুয়াশা চাই!
বর্ষায় তুমি সেতারে ভেসো
মেয়েটি বলে, "এসো,"
ছেলেটি দেখায় কপট রাগ : "ধ্যাৎ , যাচ্ছেতাই!"
"কালো রঙ প্রিয় হয়?" বললো ছেলে ক্রোধে
মেয়েটির চাপা হাসি
"আমি তো ভালবাসি"
আলতো লাল আভা মুখে, শুধু সে কি রোদে?
একছাতায় পথ পেরোয়, দুজনে হয়ে কাছাকাছি
নিয়ম ওরা ভাঙে কতো,
ছেলেটি বলে , "রয়েছো তো?"
মেয়েটির হাসি, " থাকবো, দোঁহে যতোদিন বাঁচি।"
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।