এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • সীমান্তহত্যার সুলুক সন্ধান!

    bikarna লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২২ জুন ২০২৫ | ১৯৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • পর্ব ২
    সীমান্ত হত্যা নিয়ে লেখার জন্য যে চিন্তা ভাবনা নিয়ে বসে ছিলাম তা থেকে একটু সরে যেতে হচ্ছে। সঙ্গত কারণেই সরে যেতে হচ্ছে। পরে আবার আমার যে ছক সেই ছকে ফিরব। কিন্তু সীমান্ত হত্যা নিয়ে লিখতে বসে বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা না করলে এই লেখা পুরোটাই হালকা হয়ে যাবে, ওজন হারাবে। 

    বিষয়টা হচ্ছে গত এপ্রিলে কাশ্মীরে পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠীর নির্মম হত্যাকাণ্ড। ধর্মের নামে, ইসলামের নামেই এইটা করেছে। কেউ এইটাকে অন্য দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করলে ভণ্ডামি হবে। জঙ্গিরা নিশ্চিত করেছে ইসলামের নাম যেন স্পষ্ট ভাবেই ডুবে। কোন রাখঢাক করে নাই ইসলামকে ব্যবহার করতে। যারা নিজেদের পরিচিত ইসলামের সাথে এই ইসলামের মিল খুঁজে পান না তারা প্রতিবাদ করবে, কোন প্রকার যদি কিন্তু না রেখেই করবে। কিন্তু আমরা আমাদের দেশেই দেখছি তীব্র ভারত বিদ্বেষের কারণে এমন ন্যাকারজনক ঘটনার পরেও ভারতের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে রাজি না মানুষ। এই তীব্র ভারত বিদ্বেষ নিয়ে ভাবা উচিত, সামনে এইটা নিয়েও আলোচনা করব। 
     

    এই জঙ্গি আক্রমণের জবাবে ভারত দুম করেই পাকিস্তানে আক্রমণ করে বসল। রীতিমত যুদ্ধাংদেহী অবস্থা। এইখানেই আমার আপত্তি। আমি যদি আমার যুদ্ধ বিরোধী অবস্থানে থাকতে চাই তাহলে ভারতের পাকিস্তানে আক্রমণ করাকে সমর্থন করতে পারি না। আর আমি সব সময়ই যুদ্ধ বিরোধী অবস্থানে থাকতে চাই। আরেক দেশের সার্বভৌমত্বের ওপরে আক্রমণ এইটা মেনে নেওয়ার মত না। পাকিস্তান থেকে জঙ্গি ঢুকে জঘন্য অপরাধ করেছে এর জন্য সেই দেশে ঢুকে আক্রমণ করে আসা সমাধান? আমাদের দেশের যে অবস্থা, সরকার যেভাবে মৌলবাদীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে, কালকে এখান থেকে যদি একটা দল সীমান্ত অতিক্রম করে এমন একটা কাণ্ড করে তাহলে ভারত বাংলাদেশে বোম ফেলবে?
     

    এখন আসেন লাখ টাকা দামের প্রশ্নে। যে দেশের সাথে চরম বৈরী সম্পর্ক সেই দেশের সীমান্ত এত অরক্ষিত থাকে কীভাবে? এক দল সশস্ত্র জঙ্গি ঢুকে মানুষ মেরে চলে গেল আর কেউ কিছু করতে পারল না কেন? আর এদিকে আমাদের সীমান্তে গরু ছাগল আনতে গিয়ে গুলি খেয়ে মরে মানুষ! রহস্যটা কই? আগের লেখায় অনেকেই মন্তব্য করেছেন যে চোরাকারবারিদের তো মারবেই! যদিও আইনে নাই তবুও যদি ধরে নেই যে তাদের কথায় যুক্তি আছে তাহলে সেই যুক্তি এখানে খাটে না কেন? 
     

    সহজ জিনিসটা বুঝেন একটু,  আরেক দেশে জঙ্গি চাষাবাদ হচ্ছে এই জন্য সেই দেশে আক্রমণ করার থেকে জরুরি ছিল নিজের ঘরের বেড়া ঠিক করা। অন্য দেশ এমন কাণ্ড প্রশ্রয় দিতেই পারে। কিন্তু আমার বাঁচার উপায় কি? প্রতিবার আমি আক্রমণ করব? না আমি আমার দেউরি পর্দা ঠিক করব? ছাগল ঢুকে ফসল নষ্ট করে এর সমাধান ছাগলের মালিকের বাড়িতে গিয়ে আক্রমণ করা না আগে ছাগল যেন জমিতে না ঢুকতে পারে তার সমাধান করা? ঢুকতে যেন না পারে এবং ঢুকলে যেন ধরা পরে, এইটাই বাঁচার সহজ বুদ্ধি। আশেপাশের অনেকের অনেক ছাগল থাকতে পারে, আমি সবার বাড়িতে ঢুকে আক্রমণ করব? তাহলে কাজ করব কখন? আমার তো এই বাড়ি ওই বাড়ির সাথে মারামারি করতে করতেই দিন যাবে! আগে বেড়া ঠিক করেন, তারপরে হুঙ্কার দিন যে তোমার ছাগল জমিতে ঢুকলে কিন্তু শেষ! গোস্তের ভাগও পাবা না!
     

    আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এমন একটা কাণ্ডের প্রতি অগণিত মানুষের সমর্থন দেওয়া। পাকিস্তানকে ঘৃণা করার হাজারও কারণ আছে। আমরা স্বাধীনতার এত বছর পরে পর্যন্ত অতিষ্ঠ তাদের যন্ত্রণায়। কিন্তু তাই বলে যুদ্ধ শুরু করে দিব আমরা? যুদ্ধ তো শেষ ধাপ। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে যুদ্ধ না করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। এই সত্যটা বুঝতে হবে সবার। আর ভারতকে বুঝতে হবে বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে যদি কোন জঙ্গি সংগঠন লুকিয়ে বা প্রকাশ্যে বা যেভাবেই হোক সীমান্ত অতিক্রম করে কোন সর্বনাশা কাণ্ড করে বসে তাহলে তাদের শিক্ষা দিতে এই ভূখণ্ডে আক্রমণ সমাধান না। যারা এই কাজ করবে তারা এই ভূখণ্ডকে নিজেদের দেশই মনে করে না। কোন এক অদ্ভুত কারণ তারা কোন এক আজব স্বপ্নের দেশকে নিজের দেশ মনে করে। যার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কমই আছে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে বিষয়টা হয়ত তেমন না। রাষ্ট্র সেখানে মদদ দেয় নানা আকামের। জঙ্গিরা রাজার হালে থাকে। আফগানিস্তান আর পাকিস্তানের হিসাবটা আলাদা। কিন্তু তারপরেও এমন আক্রমণ সমাধান না। নিজের দেওয়াল শক্তিশালী করা হচ্ছে প্রথম ও প্রধান কাজ। শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধ যুদ্ধ অবস্থাটা অল্পের মধ্যে শেষ হওয়ায় রক্ষা। কিন্তু প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই গেল। 
     

    এখন বলেন কেন আমি একজন বাংলাদেশী হিসেবে এই প্রশ্ন তুলব না? বছরের পর বছর ধরে যাদের সাথে সম্পর্ক বন্ধুত্বের, কেউ বলতে পারবে না আমাদের এখান থেকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানো হয়েছে ভারত বিরোধী। অনালাইনে প্রচুর আস্ফালন দেখা যায় কিন্তু কংক্রিট কোন প্রমাণ আছে কি বাংলাদেশ ভারতের ভিতরে কোন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে? হ্যাঁ, একটা সময় সেভেন সিস্টারের অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা ঢাকায় রাত্রিযাপন করতেন। কিন্তু সেই দিন বাসি হয়েছে। আমি যেটা বলতে চাচ্ছি দীর্ঘদিন ধরে যাদের সাথে দারুণ সম্পর্ক, যাদেরকে বন্ধু বলতে কংগ্রেস, বিজেপি কেউ দুইবার ভাবে না সেই সীমান্তে দিনের পর দিন মানুষ মরছে গুলি খেয়ে আর যারা তৈরিই হয়েছে আছে ভারতকে শান্তিতে থাকতে দিবে না, সুযোগ পাওয়া মাত্র যে দেশের জঙ্গি গোষ্ঠী ঢুকে একের পর এক ন্যাকারজনক কাজ করে যায় সেই সীমান্ত প্রহরী ঘুমায়? কীভাবে পাহারা দেওয়া হয়? 
     
    ওই সীমান্তে সন্ত্রাসী এসে ঢুকে মানুষ মেরে যায় আর আমাদের এই সীমান্তে ১৪ বছরের স্বর্ণা দাস গুলি খেয়ে মারা যায়। ভারতের সীমান্ত রক্ষীদের যোগ্যতা নিয়েও তো সন্দেহ করতে পারে কেউ। কেউ তো প্রশ্ন করতে পারে যে অমিয় ঘোষদের সব বীরত্ব  শুধু ফেলানি আর স্বর্ণা দাসের মত কিশোরীদের সাথেই, অন্য দিকে মানুষ মরে ২৬ জন!

    আমি জানি বিষয়টা ভারতীয়দের জন্য বেশ স্পর্শকাতর। কিন্তু এই প্রশ্ন নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই তোলা উচিত না? আমি তুলছি কারণ এইটাকে আমার কাছে রীতিমত অশালীন মনে হয়েছে। এইটা কোন কথা হতে পারে? দুঃখিত কিন্তু আমি এই প্রশ্ন করবই। এমন না যে পাকিস্তান ভারত সীমান্ত খুব শান্ত, সেখানেও মৃত্যুর থাবা আছে। কিন্তু পার্থক্য আছে, পাকিস্তান সীমান্তে হত্যাকাণ্ড হয় যুদ্ধের নামে, বাংলাদেশ সীমান্তে হয় বন্ধুত্বের মুখোশে। পাকিস্তান সীমান্তে মারা যায় সৈন্য আর আমাদের সীমান্তে মারা যায় কৃষক, কিশোরী, নিরীহ মানুষ।

     সীমান্ত হত্যা নিয়ে অসহায় লাগে। অনেক আজগুবি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। কেন যায়, কেন ওইখানে গেল, কেন কেন? সোজা বিষয়টা বুঝে না আমাদের সীমান্ত চীনের দেওয়াল না, আমাদের এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে মানুষের বাড়িঘর সীমান্তে ঢুকে গেছে। এই পাশে বাড়ি ওই পাশে ক্ষেত! মরে এরাই। কয়জন চোরাকারবারি মরছে আজ পর্যন্ত? যে 'আত্মরক্ষার জন্য গুলি'  আইন আছে তা আজ পর্যন্ত কয়জনের জন্য খাটে? দশ? পাঁচ? দুই? একজনও না? কেন ভাই? কেউ বন্দুক তুলল না গুলি মেরে দিলেন? আর আমরা প্রশ্ন তুললে বলবেন ওই জায়গায় গেল কেন? তাহলে সাহস করে সোজা বলে দিন এইখানে আসলেই গুলি। ভণ্ডামি করার দরকার কী? নানান প্রটোকল, চুক্তি ফুক্তি ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে সোজা কথা বলে দিন। এখন তো বাংলাদেশ সরকারও বন্ধুত্বের আশেপাশে নাই। বন্ধু বন্ধু খেলা বন্ধ হোক। 

    আগের লেখাও বলছিলাম যে দুঃখ বেশি এই কারণে যে বাঙালি হয়েও পশ্চিমবঙ্গ থেকে দিনের পর দিন এই অনাচারের কোন প্রতিবাদ চোখে পরে না আমাদের। পশ্চিমবঙ্গের বেশ জ্ঞান বুদ্ধি সম্পন্ন একজনের সাথে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল আমার। তিনি সেখানের নামকরা পত্রিকায় কাজ করেন। আমি তাকে এই একটা প্রশ্নই করেছিলাম, কেন তারা জানেও না এমন অন্যায়ের ব্যাপারে? কেন একটা শব্দও উচ্চারণ হয় না এখান থেকে? এর একটা সহজ উত্তর দিয়েছিলেন, কেউই আর্মি বিরোধী বা আর্মি সংক্রান্ত কোন বিষয়ে কথা বলতে চায় না! ঘুরেফিরে সেই আদি অকৃত্রিম সমস্যা! উপমহাদেশের এই বিষফোঁড়ার সমস্যা ভারতের নেই বলে জানতাম কিন্তু দেখছি একটু রঙ বদলে এখানেই এই জিনিস বহাল তবিয়তে রয়েছে! 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    পর্ব ২
  • ব্লগ | ২২ জুন ২০২৫ | ১৯৮ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    লাল রঙ - Nirmalya Nag
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ২৫ জুন ২০২৫ ১৩:১৯732177
  • অতি সঙ্গত প্রশ্ন। খুবই ঠিক কথা বলেছেন। বি এস এফ ঠিক আর্মি নয় কিন্তু প্রায় আর্মির সমান ক্ষমতা ভোগ করে। গত বছরই সীমান্ত থেকে ৫০ কিমি অবধি এলাকা বিএস এফের হাতে দিয়েছে ভারত। আর তারপরেই পহেলগামে পাকিস্তানি জঙ্গীরা ঢুকল বেড়াল মারল ফিরে গেল। সচলায়তনে ধুসর গোধুলি নামে একজন সীমান্তহত্যা নিয়ে খুব লেখালেখি করতেন। তাছাড়া আর কোথাও কিছু বিশেষ দেখি নি। 
     
     
  • D M | 103.217.***.*** | ২৫ জুন ২০২৫ ১৩:২৪732178
  • আজ্ঞে হ্যাঁ, ভারত সরকার ও সেনাবাহিনী ঠিক করেছে যে এরপর থেকে পাকিস্তানি জঙ্গি বা সেনাবাহিনী ভারতে ঢুকে আক্রমণ চালালে তাকে পাকিস্তানের তরফে ভারতের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হিসেবে দেখা হবে, ও রিট্যালিয়েশন হিসেবে ভারতও পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ করতে দ্বিধা করবে না । এটা নতুন রেড লাইন, টিট ফর ট্যাট পলিসি । পাকিস্তানের তরফে ভারতকে আক্রমণের উৎসাহপ্রদান ও জঙ্গিদের দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে শ্যাডো ওয়ার চালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস মাথায় রাখলে এই নতুন রেড লাইন বা পলিসিকে অন্যায় বলা খুব কঠিন । ভারত সবসময় সর্বংসহা হয়ে থাকবে কেন ? অন্যদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে যেহেতু ভারতের বন্ধুত্বের ঐতিহ্যই আছে এবং যেহেতু এটা জানা যে বাংলাদেশে ভারতের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন বহু লোকজন আছেন, সেহেতু কিছু জঙ্গি বর্ডার ক্রস করে আসছে বলেই ভারত সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এমন অবস্থান নেবে তা মনে হয় না । তবে বাংলাদেশের ইসলামিক এক্সট্রিমিস্ট অথরিটি যদি আগামী অনেকগুলো দশক ধরে ক্ষমতায় থাকে এবং পাকিস্তানের মতই জঙ্গি ঘাঁটি গড়ে তোলে ও ভারতে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার পলিসি নেয়, তা হলে কী হবে বলা খুব মুশকিল । আশা করব সেটা কোনও ভাবেই হবে না, সুস্থমস্তিষ্কের বাংলাদেশীরা এই এক্সট্রিমিস্টদের জিততে দেবেন না ।
  • D M | 103.217.***.*** | ২৫ জুন ২০২৫ ১৩:৩৪732179
  • এবং আপনি সীমান্ত অরক্ষিত থাকা ও সেই সুযোগে জঙ্গিরা ঢুকে এসে ছাব্বিশ জনকে মারা নিয়ে যে কথা বলছেন তা সঙ্গত প্রশ্ন । ভারতেও অনেকে এই নিয়ে সরকারের জবাবদিহি চাইছেন ও দায়িত্ববোধের অভাব নিয়ে ঘোরতর সমালোচনা করছেন । কিন্তু এটা জেনে রাখবেন বাংলাদেশ থেকে ইসলামিক এক্সট্রিমিস্ট চর ও সে রকম সংগঠনের সদস্যদের পশ্চিমবঙ্গের অনেক অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকে পড়া, ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় ভাঁড়ানো ও তারপর সারা ভারতে ছড়িয়ে গিয়ে নিজের কর্মকান্ড চালানোর অনেক নজির সামনে এসেছে ও আসছে । এগুলো কল্পনা নয় । এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যর্থতা ও ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত অরক্ষিত রাখা নিয়েও বহু কথা উঠছে । জানতে হলে আনন্দবাজার ইত্যাদি বাংলা সংবাদপত্রের দিকে নজর রাখবেন ।
  • bikarna | ২৫ জুন ২০২৫ ২৩:৪০732184
  • আমি তুলনাটা করছে বুঝে শুনেই। কারণ এইটা রীতিমত অন্যায়! আপনি একটা বাচ্চা মেয়েকেও ছাড়ছেন না, গুলি মেরে দিচ্ছেন অথচ যেদিকে আসল বিপদ সেদিকে নজর নাই। আমাদের সাথে তাহলে কেন এই প্রহসন? 
    আমি বাংলাদেশ থেকে লিখছি এইটা তো বুঝা যাচ্ছে? তাহলে জেনে রাখুন আমি জেনে বুঝেই লিখেছি যে যদি এদিক থেকে তেমন জঙ্গি আক্রমণ হয় ভারতে তাহলে কী হবে? কতখানি বাহির থেকে বুঝা যাচ্ছে এই দেশের অবস্থা আমি জানি না। আমি যা দেখছি তা হচ্ছে জঙ্গিরাই হর্তাকর্তা হয়ে বসে আছে। কুৎসিত রকমের পাকিস্তান প্রেমের উত্থান হয়েছে, পাকিস্তান নিউক দিচ্ছে, আমরা ভারতকে দেখিয়ে দিব, এগুলা এখনকার সময়ের খুব স্বাভাবিক কথার চর্চা। এগুলার কোন ভিত্তি নাই? এমনেই আউলফাউল লোকজনের ফালতু কথা? না, তেমন ভেবে হালকা করে দেখার সুযোগ নাই। যখন স্বয়ং ইউনুস সাহেব সুযোগ পেলেই সেভেন সিস্টার্স নিয়ে খোঁচা দেয়, তার চেলাচামুণ্ডারা পারলে কালকেই চিকেন নেক দখল করে, টেলিভিশনে টকশোতে সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ব্যাখ্যা করে বুঝায় কীভাবে ভারতকে শায়েস্তা করা হবে, তখন আপনি হালকা করে দেখতে পারবেন? এ ছাড়া নিয়ম করে মোল্লাদের আস্ফালন তো চলছেই। সমস্ত বিরোধিতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, নানা মানুষের উদ্বেগকে পাত্তা না দিয়ে, ভারতের সরাসরি আপত্তি সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত চিন্ময় দাস প্রভু জেলে! ফালতু একটা মামলায় ধরে রেখেছে। ডক্টর ইউনুসের সেই মেরুদণ্ড নাই যে মোল্লাদের, নিজের প্রিয় ছাত্রদের বিরোধিতা করে তাঁকে মুক্তি দিবে! 
     
    এগুলা আমার ভিন্ন চিন্তা। কিন্তু মূল চিন্তা হচ্ছে এই সব জঙ্গিদের জন্য আমি ভারতের অকারণ আক্রোশের স্বীকার যেন না হই। একই নিয়ম চালু থাকলে সামনে সেইদিন আসলে আমি অবাক হব না। 
    তৃতীয় পর্বের অপেক্ষায় থাকুন। এই লেখাটা আমি অনেকদিন ধরেই লিখতে চাচ্ছিলাম। এর জন্য নানা জায়গায় ঘুরেছি, সীমান্ত গুলো দেখেছি, চোরাকারবারিদের সাথে কথা বলেছে, অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যাওয়াদের দুই একজনের সাথে বসেছি, হত্যার স্বীকার হওয়া এক পরিবারের সাথে সামনে কথা বলার কথা আছে, যার খবর পেপার পত্রিকাতেও আসে নাই! তাই অপেক্ষা করুন, পড়তে থাকুন। আমি দেখি কতদূর যাওয়া যায় এই অমানবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে। ধন্যবাদ। 
  • D M | 103.217.***.*** | ২৭ জুন ২০২৫ ১৪:২৯732196
  • হ্যাঁ, অবশ্যই বি এস এফ যদি একটি বাচ্চা মেয়েকে সম্পূর্ণ অকারণে গুলি করে মেরে থাকে সেটা মারাত্মক  অন্যায় ও বর্বরতা । অন্যায় নয় তেমন দাবি আমি কোথাও করিনি । কিন্তু আপনাকে একটা কথা বুঝতে হবে যে বি এস এফ অনেক মানুষের একটি অর্গানাইজেশন । যেমন বাংলাদেশ অনেক মানুষের একটি দেশ । বাংলাদেশের কিছু লোক উগ্র মানসিকতার শরিক হয়েছে বলে কি আমি বলব, গোটা বাংলাদেশ উগ্রবাদী হয়ে গেছে ? সে রকম যারা বলে তাদের আমি ঘোরতর বিরোধী । ঠিক তেমনি, বি এস এফের কিছু জওয়ান যদি অন্যায় করে থাকে তার জন্য গোটা বি এস এফকে কলঙ্কিত করা ভুল ।  কিন্তু আপনার লেখার একটা বড় অংশ জুড়ে আছে যে ভারত পাকিস্তানের ভেতর ঢুকে আক্রমণ চালিয়েছে সেটা নৈতিকভাবে বেঠিক । এই কথাতেই আমার ঘোরতর আপত্তি । দীর্ঘদিন থেকে সেখানে জঙ্গিশিবির মৌরসিপাট্টা গেড়ে জঙ্গিদের ট্রেনিং দিয়ে ভারতের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে ভেতরে পাঠিয়ে হিংসা ছড়াচ্ছে । কাজেই ভারত যদি নীতি নেয় যে তারা পাল্টা সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে জঙ্গিশিবির শেষ করবে সেটা একেবারেই বেঠিক নয় । আর খেয়াল করবেন, ভারত সরকার বা বাহিনী কখনও দুম করে সিদ্ধান্ত নেয় না , কারণ বিশ্বের সামনে ভারতের নৈতিক হাই গ্রাউন্ড বজায় রাখার প্রয়োজন হয় । তাই ভারত বাংলাদেশ নিয়ে এক্ষুণি বা অদূর ভবিষ্যতেও কিছু করবে মনে হয় না । কিন্তু বাংলাদেশ যদি আগামী দশ পনেরো বছরে পাকিস্তানের মত জঙ্গিশিবির স্থাপন করে ভারতে জঙ্গি ঢুকিয়ে  হিংসা ছড়ানোর ঐতিহ্য স্থাপন করে ফেলে, তখন কী করা হবে বলা মুশকিল।  আশা করব, সে রকম কখনোই হবে না, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ শেষপর্যন্ত জিতবে না
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন