এখন সংসদে যা বলতে পারবেন না
গোটা দেশজুড়ে এখন হিন্দুত্বের নাম দিয়ে গুন্ডামি চলছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং শাসকদলের মদতে চলছে নৈরাজ্য। শাসকদলের নেতা-কর্মীরা শুধু যৌন হেনস্থায় জড়িত তাই নয়, এরাই অপরাধী, ফলে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়া এবং মিথ্যে কথা বলে তদন্তকে ভুল পথে চালানো যে হবেই এ নিয়ে সন্দেহের আর কী অবকাশ আছে? মানুষের চোখে এভাবে ধূলো দেওয়া যে কেবল শিশুসুলভ বালখিল্যপনা তা একেবারেই নয়, বরং পরিকল্পিত স্বৈরাচার। কারণ, সরকারের মাথায় যিনি আছেন, তিনি নিজেই স্বৈরাচারী। এর আগেও গুজরাতের শাসক হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে রক্তপাতে মদত দেবার অভিযোগ আছে। আর কেন্দ্রে শাসনকালের গোড়া থেকেই তিনি একপেশে মিথ্যাচার করে চলেছেন। শাসক হিসেবে তিনি অপদার্থ, একমাত্র যোগ্যতা হল নাটক আর ভন্ডামির চাষবাস। তাঁর একমাত্র কাজ হল আম্বানি-আদানির দালালি। তিনি দেশের লোককে ভোটের আগে ১৫ লাখ টাকা করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন, পরে জানা যায় জুমলা। তিনি জুমলাজীবী, আচ্ছে দিন আনবেন বলে আম্বানি-আদানির চামচা হওয়া ছাড়া আর কারো আচ্ছে দিন আনেননি। নোটবন্দী করে কালোবাজারি রুখবেন বলেছিলেন, কোনো কালো টাকা তো উদ্ধার হয়ইনি, বরং দেশের লোকের জন্য এসেছে কালা দিন। সার্জিকাল স্ট্রাইকের নামে নৌটঙ্কি করেছেন। কটা পাইন গাছ ছাড়া আর তাতে কেউ মরেনি, দেশবিদেশের সামনে মাথা নিচু করে লজ্জিত হওয়া ছাড়া আর কিছু হয়নি। কিন্তু তার পরেও এই দ্বিচারী সরকার নির্লজ্জ ভাবে নিজের ঢাক পিটিয়ে গেছে। ওইটুকুই এরা পারে। যা পারে না, তা হল গিরগিটি না সেজে সোজা সামনে এসে কথা বলা। এই সরকারের মাথা কখনও কোনো সাংবাদিক সম্মেলনে আসারও সাহস দেখাননি, কারণ, তিনি কাপুরুষ।
যা বলতে পারবেন
গোটা দেশজুড়ে এখন হিন্দুত্বের নাম দিয়ে রামরাজত্ব চলছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং শাসকদলের উদ্যোগে চলছে সুশাসন। শাসকদলের নেতা-কর্মীরা শুধু মাতাজ্ঞানে নারীপূজা করছেন তাইই নয়, গোটা দেশবাসীকে শেখাচ্ছেন নারীকে সম্মান করতে, ফলে আচ্ছে দিন যে আসছেই, এ নিয়ে সন্দেহের আর কী অবকাশ আছে? এভাবে মানুষের সেবা করা যে কেবল ভোটের জন্য, তা একেবারেই নয়, বরং দীর্ঘকালীন নীতি। কারণ, সরকারের মাথায় যিনি আছেন, তিনি নিজেও জনতার সেবাদাস। এর আগেও গুজরাতের শাসক হিসেবে তাঁর রেকর্ড অসাধারণ । আর কেন্দ্রে শাসনকালের গোড়া থেকেই তিনি সত্যবাদী যুধিষ্ঠিরের মতোই নীতিনিষ্ঠ, শাসক হিসেবে পান্ডবদের জ্যেষ্ঠভ্রাতার মতোই সুযোগ্য, একমাত্র সততা ছাড়া যার আর কিছু হারানোর ভয় নেই। তাঁর একমাত্র কাজ হল যেকোনো মূল্যে মানবকল্যাণ। তিনি দেশের লোককে ভোটের আগে ১৫ লাখ টাকা করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন, সেজন্যই পরে নোটবন্দী করেন। অসাধুরা তাতে থরথর করে কেঁপেছে, দেশের লোকের জন্য এসেছে প্রকৃত আচ্ছে দিন। সার্জিকাল স্ট্রাইকের নামে তিনি যা করতে পেরেছেন, পাকিস্তানকে সেরকম শিক্ষা আর কেউ দিতে পারেনি। দেশবিদেশের শুধু প্রধানমন্ত্রীর নয়, গোটা দেশবাসীর ছাতি ছাপ্পান্ন হয়ে গেছে। কিন্তু তার পরেও এই পরমবীর নিজের প্রচার কখনও করেননি। তিনি এমনকি কোনো সাংবাদিক সম্মেলনেও আত্মপ্রচার করেননি। খ্যাতিতে তাঁর বিড়ম্বনা হয়, অন্যরা সুখ্যাতি করলেও তিনি নিজে কখনও করেননা। কারণ, এই দেশনায়ক শুধু দেশনায়ক নন, তিনি মহাপুরুষ।
টীকাঃ দিল্লির সচিবালয় 'অসংসদীয়' শব্দের একটি নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় থাকা শব্দগুলিকেই এই লেখায় কেটে দেওয়া হয়েছে। শুধু এই কটি শব্দই তালিকায় আছে, তা অবশ্যই নয়। পূর্ণাঙ্গ বিবরণের জন্য সচিবালয়ের নির্দেশনামাটি দেখে নিন।