আমি বেশ কিছুদিন আগে বাবা ও মায়ের সঙ্গে কাটোয়া লোকালে চড়ে হাওড়া থেকে নবদ্বীপ যাচ্ছিলাম। বিভিন্ন স্টেশন পেরিয়ে গেল অনেক খাবার-দাবারও উঠলো, প্রতিবারই আমার মনটা খাই খাই করে উঠছিল। কিন্তু মনমতো কোন খাবারই পাচ্ছিলাম না। এরপর যখন উত্তরপাড়া স্টেশন এল আমি জানালা দিয়ে দেখলাম একটা লোক মাথায় হাঁড়ি করে ট্রেনে উঠছে। আমি ভাবতে লাগলাম এই হাঁড়ির মধ্যে কি খাবার আছে? ঠিক তখনই আমি শুনতে পেলাম লোকটা বলছে 'গরম ঘুগনি খাবে গরম ঘুগনি আছে'। এটা শুনে আমি অস্থির হয়ে উঠলাম। কারণ ঘুগনি আমার প্রিয় খাবার। আমি বাবার কাছে বায়না করা শুরু করলাম 'আমাকে ঘুগনি কিনে দাও প্লিজ কিনে দাও।' তখন আমার বাবা আমাকে ঘুগনি কিনে দিল। ট্রেনের অনেক লোক ঘুগনি কিনছিল। সেই ঘুগনি কাকু একটা শালপাতার বাটি করে ঘুগনি দিচ্ছিল, সঙ্গে টকজল, শসা এইসবও দিচ্ছিল, দারুণ লোভনীয় ব্যাপার। শালপাতার বাটি হাতে নিয়ে যেই আমি কাঠের চামচ দিয়ে ঘুগনিটা মুখে তুলতে যাবো এমন সময় দেখলাম আমারই বয়সী একটা ছোট ছেলে ট্রেনের লোকজনের কাছে ভিক্ষা করছে। আর আমার দিকে তাকাচ্ছে। তার মা-বাবাও মনেহয় নেই তাই তাকে কেউ ঘুগনি কিনে দেয়নি। দেখে আমার খুব কষ্ট হলো, আমি আমার বাবাকে বললাম তার জন্যও ঘুগনি কিনে দিতে। যেই সে ঘুগনি পেল তার কি আনন্দ। ভিক্ষা করা ছেড়ে দিয়ে আমার পাশে বসে সে ঘুগনি খেতে শুরু করল আর আমরা দুজনে মিলে অনেক গল্প করলাম। তখনই জানতে পারলাম যে ঘুগনি তারও ভীষণ প্রিয় খাবার। গল্প করতে করতে কখন যে নবদ্বীপ স্টেশন চলে এলো আমি বুঝতেই পারিনি। আমার এই প্রিয় খাবার ঘুগনির জন্যই আমি ট্রেনে আমার একটা বন্ধুকে পেলাম। যদিও তাকে নবদ্বীপ স্টেশনে ছেড়ে দিতে হল কিন্তু তার স্মৃতি আমার মনে সারা জীবন থেকে যাবে।
কোভিড কেটে গেলে অবশ্যই কলকাতা আসবো। কাটোয়া লোকালে চড়ে ঘুঘনি খাব, প্রমিজ।
অর্চি ও তার বন্ধুকে ঢাকা থেকে ভালবাসা
তোমার লেখা পড়ে আমার ও ঘুগনি খেতে লোভ হচ্ছে ।খুব ভালো লাগলো তোমার আর তোমার বন্ধুর ঘুগনি খাওয়ার গল্প .
মন ছুঁয়ে গেল। এমনভাবেই সবসময় বন্ধুদের পাশে থেকো।
গল্পটার মধ্যে দিয়ে এক সুন্দর মানসিকতার পরিচয় স্পষ্ট হয়। একটা শিশু র কাছে থেকে যা অবশ্য ই প্রশংসনীয়।
খুব ভালো লাগলো
ভীষন ভালো লাগলো অর্চিষ্মান
কি ভালো লিখেছো বাবু
বাহ্ অপূর্ব
ঘুগনি আমারো প্রিয় ভীষণ । আমিও খাই ট্রেনে পেলে.
অর্চিষ্মান, খুব ভালো লিখেছো তো! আমারও ট্রেনে উঠলেই এটা খাবো-সেটা খাবো মনে হয়। তোমাদের দুজনের ঘুগনি খাবার গল্প খুব এন্জয় করলাম।
শরণ্যা, তোমার ছবিও ভালো লাগলো।
খুব খুব ভালো লেগেছে গল্পটা ।অনেক লেখো!❤