যখন ছোট ছিলাম, নিউজিল্যাণ্ড বললেই রাদারফোর্ড, ক্রিকেট, এইমস, রিচার্ড হ্যাডলি, আর এডমন্ড হিলারী বাদ দিলে দেশটা নিয়ে এই সবের বাইরে বিশেষ কিছুই সেরকম জানতাম না। মাঝে মাঝে টেলিভিশনে টেসট সিরিজের ছবিতে ক্রাইসটচার্চের ল্যাঙ্কাসটার পার্ক আর ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে টেস্ট ম্যাচ হলে দেখতাম, সে দেশে ঘেরা মাঠ আর চারপাশে ছড়ানো গ্যালারীতে মাঠের চারধারে লোকজন, পাশেই সমুদ্র আর পাহাড়ের ছবি | অপূর্ব দৃশ্য দেখে মন ভরে যেত। উড়ু উড়ু মনে ভাবতাম এই দেশটা একদিন দেখতেই হবে।
একদিন কলকাতায় ব্রিটিশ কাউনসিল লাইব্রেরীর দোতলায় জারনালের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে নিউজিল্যাণ্ডের ছবি দেখেছিলাম। সে অবশ্য বিজ্ঞাপণ, সেই ছবিতে দেখলাম সমুদ্র, সেই সমুদ্রের জল ভেদ করে উঠেছে মন্দার পাহাড়সদৃশ এক পর্বতচূড়া, তার মাথায় বরফ আর সরু গ্লেসিয়ারের ধারা নেমে আসছে তার গা বেয়ে । ছবিটা মনে ছিল বহুদিন, কেমন যেন মন উদাস করা ছবি। বহু বছর পরে যখন সে দৃশ্য নিজের চোখে দেখেছিলাম দক্ষিণ দ্বীপের মিলফোর্ড সাউণ্ডে, পাহাড়ের নাম মাইটার পিক, সে যে কি অপূর্ব, বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম, শুধু পাহাড় তো নয়, সমুদ্রের ইনলেটে জাহাজ চারপাশ ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিল, সমুদ্রের জল ভেতরে ঢুকে এসেছে, আর চারপাশে পাহাড়, সেই পাহাড়ের গা বেয়ে জলপ্রপাত নেমে এসে আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের বুকে, তার সঙ্গে জাহাজের পাশে ডলফিনের দল সাঁতার দিতে দিতে সঙ্গ দিচ্ছে |
ছবি: মাইটর পিক |
যাব বললেই কি যাওয়া যায়? নিউজিল্যাণ্ডে হালে হয়ত যাতায়াত সহজ হয়েছে, দু দশক আগেও প্রশান্ত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ভারত থেকে যাওয়া আসা অন্তত আমার অভিজ্ঞতায় সহজ ছিল না। কলকাতা থেকে নিউজিল্যাণ্ডের কোন শহরেই সরাসরি যাবার উপায় ছিল না (এখনো মনে হয় নেই), যেতে গেলে সিঙ্গাপুর বা হংকং হয়ে যেতে হত, হালে আমেরিকা, ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরাসরি উড়ান শুরু হয়েছে | দেশটা প্রায় পৃথিবীর যে কোন দেশের থেকে বেশ অনেকটাই দূরে, পৃথিবীর দক্ষিণতম প্রান্তদেশে, প্রশান্ত মহাসাগরেরও দক্ষিণ প্রান্তে, আরেকটু দক্ষিণে গেলে, প্রায় হাজার খানেক কিলোমিটার দক্ষিণে, মনে করুন কলকাতা থেকে লক্ষ্নৌ এর দূরত্ব, অতিক্রম করলেই, আন্টারকটিকার তুষার রাজ্যে গিয়ে পড়বেন | এহেন দেশে আজ থেকে আটশো বছর আগে উত্তাল সমু্দ্র পেরিয়ে মাওরিরা যে কি উপায়ে পাড়ি জমিয়েছিল ভাবলেই আমার অবাক লাগে। সবই যেন রূপকথা, আর মাওরিদের আশ্চর্য সব রূপকথাই কি কম? (কোন একটা কিস্তিতে লিখব) | এ বছর ক্যাপ্টেন কুকের নিউজিল্যাণ্ড আবির্ভাবের আড়াইশো বছর পূর্ণ হল, কৃতিত্ব কন্ট্রোভার্সি সবই আছে, সব মিলিয়ে সালতামামির হিসেবে সেও অনেক দিনে হল।
দূরত্ব না হয় এক রকম, তার ওপরে আমরা কলকাতায় যে সমস্ত ট্র্যাভেল এজেন্টদের জিজ্ঞাসা করতাম তাঁরা নিউজিল্যাণ্ড যাওয়া নিয়ে অবিশ্বাস্য সব গল্প শোনাতেন, নিউজিল্যাণ্ড আর অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে কিরকম যেন গুলিয়ে ফেলতেন না কি গুলিয়ে দিতেন, এখন এখানে বসে সে সব ভাবলে অবাক লাগে | অথচ নিউজিল্যাণ্ড আর অস্ট্রেলিয়া দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন দেশ, দুদেশের মানুষের ইতিহাস, ভূগোল, মায় কথাবার্তার ধরণ ধারণ, আচার বিচার, সবেতে বিস্তর ফারাক, মিশিয়ে ফেলার কোন সঙ্গত কারণই নেই । দুটো দেশই না হয় কমনওয়েলথ দেশ হতে পারে, তবুও তাদের নিকটতম প্রতিবেশী দুই শহরের মাঝে টাসমান সমুদ্রের ২০০০ কিলোমিটারের দূরত্ব, সিডনি থেকে ক্রাইস্টচার্চ আসতেই প্লেনে ঘন্টা তিনেক লেগে যায়। অস্ট্রেলিয়া অপেক্ষাকৃত গরমের দেশ, লাল রুক্ষ্ম জমি, মহাদেশ যাকে বলে। সে তুলনায় নিউজিল্যাণ্ড শীতের দেশ, তিনটে দ্বীপে ভাগ করা, উত্তরে অকল্যাণ্ডে ৫০ লাখ লোকের প্রায় অর্ধেক ধরুণ অকল্যাণ্ড আর আশেপাশে থাকেন, দক্ষিণ দ্বীপ অনেকটাই প্রশস্ত, লোকজন কম, অপেক্ষাকৃত ফাঁকা। তৃতীয় দ্বীপটি, স্টুয়ার্ট দ্বীপ, দক্ষিণতম প্রান্ত, আরো কম লোকের বাস, বেশীর ভাগটাই জঙ্গলাকীর্ণ, নানারকমের রঙের পাখী আর মাছের স্বর্গরাজ্য |
পাভলোভা মিষ্টি, উইকিপিডিয়ার সূত্রে প্রাপ্ত ছবি
অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যাণ্ডের দেশের মানুষের মধ্যে যেমন বন্ধুত্ব তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা | এই যেমন ধরুণ কথাবার্তায়, উচ্চারণে | আপনি জানেন অজি (অস্ট্রেলিয়ান) আর কিউইদের (নিউজিল্যাণ্ডের মানুষ) ইংরিজি কমনওয়েলথ দেশেরই মতন, বানানবিধি প্রভৃতি সব এক রকমের, কিন্তু উচ্চারণের বেলা কিউই ইংরেজী স্বরবর্ণ এক সিলেবল এগিয়ে আর অস্ট্রেলিয়ান (“অজি”) এক সিলেবল পিছিয়ে। ব্যাপারটা কেমন জানেন? মনে করুন আপনি ফিশ আর চিপস (মাছভাজা আর আলুভাজা) কিনতে অস্ট্রেলিয়ায় গেলেন, সে খাবারের উচ্চারণ সেখানে “ফিঈঈশ” আর “চিঈঈঈপস”, আর ওই একই খাবার, টাসমান সাগর পেরিয়ে কিউইর দেশে তার উচ্চারণ হয়েছে “ফশ” (“ফুশ” ও চলতে পারে) আর “চপস” (“চুপস”) ও দিব্যি চলতে পারে। তারপর ধরুন পাভলোভা নামের মেরাং | ডিমের সাদা আর নানা রকমের ফলের সমারোহে তৈরী এক মিষ্টি; আনা পাভলোভা ১৯২৫ সালে অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যাণ্ডে ট্যুরে এসেছিলেন, তাঁর সম্মানে এই মিষ্টি তৈরী হয়, তাই নিয়ে অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যাণ্ড দুই দেশই দাবী করে সে মিষ্টি তাদের দেশেই তৈরী হয়েছে। নিউজিল্যাণ্ডের তে আরা নামে সরকারী অভিধান দেখবেন এও দাবী করেছে যে জনৈকা কিউইর লেখা রেসিপি থেকে পার্থ এর অজি হালুইকর এ মিষ্টি বানিয়েছিলেন, অতএব ল্যাঠা চুকে গেল, দু-দেশই যুগ্মজয়ী | সিডনি মর্ণিং হেরাল্ড জানাচ্ছেন অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারী বলেছেন এ জিনিস কিউইদের উদ্ভাবন, কিউইদের পক্ষ অবলম্বন করেছেন, অতএব | তারপর ক্রিকেট, নেটবল, আর রাগবি খেলা নিয়ে দু দেশের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
সে যাই হোক, এ সব আপাত তুচ্ছ দ্বন্দ্ব বাদ দিলে, দু দেশের মানুষের মধ্যে বিস্তর সখ্যতা, প্রায় ভাইভাই (ঠাঁই ঠাঁই কিছুটা আছে, তবে সে কখনোই বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যায় না) | আপনি যদি না জানেন, তো একেবারে প্রথম বার দেশে এসে পড়লে কান খুব খোলা না রাখলে মহা গোলমাল। দু-তিনটে বাজে গল্প দিয়ে এবারের পর্ব শেষ করি। প্রথম গল্পটা অনেকেই জানেন, দ্বিতীয়টা আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে, আর তিন নম্বরটা স্বনামধন্য পরলোকগত হাস্যকার যশপাল ভাট্টি মশাইয়ের কাছে শোনা।
রমেনবাবু সদ্য নিউজিল্যাণ্ডে এসেছেন, যেদিন পৌঁছেচেন সেদিনই এসে সস্ত্রীক সান্ধ্যকালীন ভ্রমণে বেরিয়েছেন, পথে এক কিউই ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা | ভদ্রলোক প্রাথমিক কুশল বিনিময়ের পর দুম করে বললেন, “হ্যাভ ইউ কাম হিয়ার টু ডাই?” এ কথা শুনে রমেনবাবু যারপরনাই বিস্মিত, সাহেব কি বলতে চায় কিছুই বুঝে উঠতে পারলেন না, এখানে মারা যাবার জন্য এসেছেন এহেন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার মানে কি? ! খানিক পরে বোধগম্য হল, সাহেব বলতে চাইছিলেন, “Have you come here today”? এ আর ওয়াই পাশাপাশি অদ্ভুত উচ্চারণে আই হয়ে গিয়ে এই অবস্থা।
আরেকবার। নিউজিল্যাণ্ডে আসার দিন কয়েক পরে বিকেলে রাস্তায় পায়চারি করছি, এমন এক সাহেব হন্তদন্ত হয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, অন্তত আমি যা শুনলাম, “হেই ইণ্ডিয়ান, থাই খাওয়ে?” আমি এরকম অদ্ভুত অনুরোধের বিন্দুবিসর্গ না উপলব্ধি করে ভাবলাম সাহেব বোধহয় আমাকে খাওয়াতে চায়, কোথায় যেতে চাই জানতে চাইছে (কিন্তু অচেনা একটা লোককে কেনই বা এরকম অদ্ভুত অনুরোধ করবে তাও বুঝিনি)। আমি কাছাকাছি একটা খাবার দোকানের দিকে দিকনির্দেশ করতেই ভদ্রলোক বেজায় খুশী হয়ে ধন্যবাদ দিয়ে সেদিকে চলে গেলেন। পরে মনে হল, ভদ্রলোক আমাকে থাই খাবার খাওয়ানোর কথা বলতে আসেন নি, জিজ্ঞেস করছিলেন, Indian Take Away কোথায় জানি কিনা! এও রমেনবাবুর কেসের মতন অবস্থা “টেক” কথাটা “টাইক” আর “এওয়ে” হয়ে দাঁড়িয়েছে “আওয়াই” | দুটো দ্রুত পাশাপাশি হয়েছে “থাই খাওয়ে”, :-)
তবে নিউজিল্যাণ্ড দেশটা সত্যি ভারি বিচিত্র, মানুষজনও তথৈব। যেবার প্রথমবার আসছিলাম, আমার সম্পর্কে শ্যালক আমাকে বললেন, “ভায়া, দেখ যেন জুতোয় ধুলো ময়লা না থাকে, সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে কি হয়েছিল জান তো?” তিনি তার মাস খানেক আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেট দলের এখানে খেলতে আসার ঘটনার কথা বলছিলেন | সেবার ক্রাইস্টচার্চে (বা অকল্যাণ্ডে খুব সম্ভবত), সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বাওসিকিউরিটির লোকজন আটকে দিয়েছিল তাঁর জুতোয় বা খেলার কিটের মধ্যে ঘাস বা ওইজাতীয় কিছু পাওয়া গিয়েছিল। এখানে বাইরের দেশ থেকে খাবার দাবার আনার ব্যাপারে সাংঘাতিক কড়াকড়ি। কোন রকম বাইরের খাবার ডিক্লেয়ার না করে আনা যাবে না। একবার দিওয়ালির সময়ে যশপাল ভাট্টি এসেছেন, তাঁকে এয়ারপোর্টে বাওসিকিউরিটির লোকজন জিজ্ঞাসা করেছে, সঙ্গে করে ভারতীয় মিষ্টি নিয়ে এসেছেন কি না। যশপাল একবার বললেন আনেন নি, দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাসা করার পর আবার বললেন, আনেন নি | তিনবার জিজ্ঞাসা করার পর তিনি আর পারলেন না। বললেন, “আগে যদি জানতাম আপনাদের জন্য মিষ্টি নিয়ে আসতাম, আপনারা যে এত মিষ্টি ভালবাসেন কি করে জানব বলুন!”
সুন্দর দেশ, বিচিত্র দেশ, কিউইআনার দেশ। এই পর্ব এখানে শেষ করছি, পরের বার কিউইআনা নিয়ে লিখব।
দারুণ! কি স্বাদু লেখা।
লেখা টি সত্যি সুন্দর ...শুভেচ্ছা রইল
ভাল লাগল।
কি সুন্দর ছবি আর লেখা! যেন ভ্রমণ কাহিনী নয়, প্রবাসীর সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো।
নিউজিল্যান্ডের এইসব সুন্দরের সঙ্গে গত বছরের অসুন্দর মনে দাগ কেটেছে। গোলাপেও কীট থাকে বৈকি।
মনে করিয়ে দেই, গত বছর ক্রাইসটচার্চের দুটি মসজিদে হামলা করে ৫১ জনকে হত্যায় অভিযুক্ত ব্রেন্টন টারান্ট নামক উগ্র ব্যক্তিকে সম্প্রতি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের একটি আদালত। ব্রেন্টন “হোয়াইট পাওয়ার” নামক উগ্র বর্ণবাদী গোষ্ঠীর সমর্থক। সাজাপ্রাপ্ত যুবকের প্যারোলে মুক্তি পাওয়ারও কোনো সুযোগ থাকবে না।
খবরে প্রকাশ, এই প্রথমবারের মত নিউজিল্যান্ডে প্যারোল ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দেয়া হলো। হামলাকারী ব্রেন্টনকে আমৃত্যু কারাগারে থাকতে হবে।
নিউজিল্যান্ডের বিচার ব্যবস্থায় মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ এক সভ্যতার যাত্রা।
আরো লিখুন। সম্ভব হলে আরো ছবি, দু-একটি ভিডিও ক্লিপিং যোগ করুন, অনুরোধ রইলো।
পুনশ্চঃ
এস-এর ভিডিও ক্লিপিংটি অসাধারণ! ব্রেভো! J
চমৎকার এই পর্বটা
খুব ভালো
চমৎকার লেখা ।দু হাজার উনিশসালে ক্রাইস্টচার্চ, কাইকুরাসহ আরো কিছু জায়গা ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছে। অসাধারণ লেগেছে এখানকার প্রকৃতি। আর সিকিউরিটি নিয়ে প্রতিটি কথা সত্য। ছোট মেয়ে ওখানে এক সেমিস্টার স্টাডিয়াবোর্ড করতে গিয়েছিল। ওর সঙ্গেছিল হাইকিং বুট ।সেটা ও আগে থেকে জানিয়ে দেয়। সেই জুতোর তল্লাশি করতে যা সময় নেয় তাতে ওর ক্রাইসিচার্চের কানেটিং ফ্লাইট মিস হয়ে যায় ।ছ ঘন্টা পরে অন্য ফ্লাইটে করে পৌঁছায়। কিন্তু ততক্ষণে উনিভার্সাইটির বরাদ্দ গাড়ি ওকে ছেড়ে চলে যায়। পরে আমাদের এখান থেকে সেই উনিভার্সিটিতে যোগাযোগ করে অন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। তাই আমাদের যাওয়ার সময় মেয়ে পইপই করে বলে দিয়েছিল সঙ্গে যেন কোন খাবার বা মশলা না থাকে।