২০১৭ সালে কলকাতার মাণিকতলা থেকে ৩০ টি ঘোড়া দিয়ে দেওয়া হয় এক “গুজরাতি” এনজিওকে। বাধ্য হয়ে দেওয়া, কারণ ঘোড়াগুলির তৎকালীন মালিকের আপ্রাণ চেষ্টা সত্বেও ঘোড়াগুলি লাগবে যে কাজে সে কাজটি বজায় রাখা যায়নি।
না, কাজটি কোন আখাম্বা ধনীর বেতমিজ ছেলে ফিটন চেপে গড়ের মাঠে হাওয়া খেতে যাবার মতো চোখে ঝিলমিল লাগানো কাজ নয়। কিম্বা রেস খেলার জন্য দানাপানি খাইয়ে চকচকে করা হচ্ছিল ঘোড়াগুলিকে, এরকমও নয় ব্যাপারটি। ওগুলো গবেষণার কাজে ব্যবহৃত ঘোড়া।
বাইরে থেকে আনা এন্টি ভেনম সিরাম বাঙ্গলার সাপে কাটায় কাজ করছে না, এরকম অভিযোগ চিকিৎসক মহল থেকে বহুদিন হল উঠে আসছে। মুশকিল হলো যে শহরবিলাসী বাবুবিবিদের সর্পদংশনের খবর না রাখলেও দিব্যি চলে যায়। বাঁধানো রাস্তায় আর ঝকঝকে আলোর নীচে রজ্জুতেই শুধু সর্পভ্রম হয়! তাই কোথাকার ঘোড়া কোথায় চালান হলো ,এতো মাথা না ঘামালেও চলে। কিন্তু প্রত্যেক বছর পশ্চিমবঙ্গে বর্ষাকালে ধান রুইতে গিয়ে বা আঁধার রাস্তায় আঘাটায় পা ফেলে সর্পদংশনে যারা মারা যায়, সেই ৩৫০০ হাজার গ্রামবাসীর কাছে ঐ ঘোড়াচালানের খবরের অন্য মানে হবে। কারণ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যালস এন্ড ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষ থেকে মাণিকতলা আস্তাবলে ঐ ঘোড়াগুলোকে গবেষণার কাজে ব্যবহার করে তৈরি হতো জীবনদায়ী সর্পদংশনের ওষুধ বা বিষে বিষক্ষয়ী এন্টি ভেনম সিরাম। বাংলার সাপের বিষের যথাযথ প্রতিষেধক,বাংলাতেই তৈরি। সে ওষুধে অনেক প্রাণ বাঁচলেও, বেশ কয়েক বছর হলো ইউনিটটি তুলে দেওয়া হয়েছে। সরকারি অনুমতির অভাবে বর্তমানে ওখানে এন্টি ভেনম সিরাম উৎপাদনের সম্পূর্ণ আধুনিক ব্যবস্থা থাকা উৎপাদন কিন্তু বন্ধ। বাইরের রাজ্য থেকে ওষুধ আনা এবং প্রাণহানি জারি আছে।
ঐ ঘোড়াগুলো হচ্ছে এক একটি প্রতীক। এক বিরাট দেশের এক অসীম প্রতিভাবান, শুদ্ধহৃদয় বিজ্ঞানসাধকের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রথম ফার্মা কম্পানিকে অধিগ্রহণের পর কী করে লাটে তুলে দিতে হয় তার প্রতীক, বহুদিন পর বেশ লাভের মুখ দেখা প্রতিষ্ঠানকে কি করে স্ট্র্যাটেজিক সেলের লিস্টে ঢুকিয়ে দিতে হয় তার প্রতীক, কী করে ব্যবসাবিমুখ বাঙ্গালিকে ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানি খুলে বসার বদলে চপ তেলেভাজার ঠেক, নিদেনপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর চায়ে কা দুকানে ভিড়িয়ে দেওয়া যায়,হয়তো বা সেই মানসিকতারও প্রতীক। কারণ বিদেশির চাকরি নিয়ে দাসত্বশৃঙ্খল পায়ে পরার বিরোধী ছিলেন আচার্য এবং বাঙালিকে স্বাধীন ব্যবসায় উৎসাহিত করাই তাঁর লক্ষ্য ,একথা তিনি বেঙ্গল কেমিক্যালস প্রতিষ্ঠা করবার সময় বহুবার বলেছেন।
এইসব পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটার কোনো প্রয়োজনই হতো কি, যদি ট্রাম্প সাহেব হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেটের জন্য মৌখিক হুমকি না দিতেন তার প্রধান মিত্রকে?
এই ট্যাবলেট মূলত ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় লাগে, এছাড়া রিউম্যাটয়েড আর্থারাইটিস এবং লুপাসের মতো প্রা্ণঘাতী অসুখেও কাজে লাগে। কিন্তু প্রতিষেধকহীন করোনা অতিমারীতে চিকিৎসকেরা নাকি এই ওষুধ ব্যবহার করেই ফল পেয়েছেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গত চৌঠা এপ্রিল ভারত সরকার একটি নোটিফিকেশন জারি করেন যে যেহেতু এদেশে এই অতিমারি ছড়িয়ে পড়লে ওষুধটির আকাল দেখা দেবার সম্ভাবনা আছে সে কারণে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন বা ঐ জাতীয় ওষুধ রপ্তানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হলো (the export of hydroxychloroquin and formulations made from hydroxychloroquin,therefore,shall remain prohibited,without any exception.)। ঠিক কাজই হয়েছিল, কারণ যে ভাবে করোনা রোগির সংখ্যা বেড়ে চলেছে তাতে শীঘ্রই এই ওষুধের আকাল দেখা দেবার সম্ভাবনা আছে।পাড়ায় পাড়ায় সব ওষুধের দোকানেই ম্যালেরিয়ার এই পরিচিত ড্রাগটি সহজলভ্য হলেও করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটবার পর থেকে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন উধাও। নাকি সরকার এর খুচরো বিপণন বন্ধ করে কেন্দ্রীয়ভাবে বিতরণের প্রয়াস নিয়েছে।
তার মানে ওষুধটি এখন ব্যক্তি ভারতীয়ের কাছে সহজলভ্য নয়, তবু চাহিদার তুলনায় এর যোগান এতোই অপ্রতুল হবার সম্ভাবনা, যে তারপরে এর রপ্তানিও নিষিদ্ধ হবার কথা ছিল। স্বাভাবিক, কারণ এই ওষুধ তৈরির কাঁচা মাল ,অন্যান্য ওষুধের মতোই, চিন থেকে আসে। আর চিন এতো বড় দুর্বিপাক খুব ভালোমতো মোকাবিলা করলেও,সেখান থেকে কাঁচা মালের যোগান কবে আবার স্বাভাবিক হবে, হলেও আমাদের দেশ তা নেবার মতো অবস্থায় থাকবে কিনা,এসব বলা আর ফুটপাথে টিয়ার মুখ থেকে ভবিষ্যত বাণী শোনা, একই ব্যাপার।
ওষুধটি যে কোনো দেশেই এই অতিমারির সময়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতে করোনায় সুপ্রযুক্ত ড্রাগ কোনটি ,সেটা পৃথিবীর কোনো বৈজ্ঞানিক,কোনো চিকিৎসক জানেন না। ল্যাবোরেটরি স্টাডিতে যা দেখা গেছে তার ওপর ভিত্তি করে The National Task for COVID19 এসিম্পটম্যাটিক বা লক্ষণহীন স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য,যারা করোনা রোগির প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসছে, তাদের পক্ষে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ডোজ প্রতিষেধক হিসেবে জরুরি বলে জানিয়েছে। আর জরুরি তাদের জন্য যারা করোনা রোগির বাড়ির রোগলক্ষণহীন বাসিন্দা,তার আপনার লোক। যাকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় রোগির কাছাকাছি আসতেই হবে। এইসব কারণে দেশে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের স্টক যথেষ্ট রাখা খুবই জরুরি।
এর মধ্যেই মোদি-ইয়ার ট্রাম্পসাহেবের গুসসা এবং হুমকি। রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। আর কাউকে না হোক আমেরিকাকে হাইড্রোক্লোরোকুইন দিতেই হবে। “দিলে আমরা মোদীর প্রশংসা করব,না দিলে প্রত্যাঘাত”- অথ শ্রীট্রাম্প উবাচ। গত সেপ্টেম্বরে হাউস্টনে হাউডি মোদিতে এসে নাচনকোঁদনের কৃতজ্ঞতা্র ভার তো ছিলোই ,এবার যুক্ত হলো প্রত্যাঘাতের ভয়। ট্রাম্পসাহেবের উপস্থিতিতে দিল্লীতে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গায় সার্বিক নীরবতা পালন করাও তো কৃতজ্ঞতার বোঝা ভারি করে। ফলে মাত্র তিনদিন পরে ৭ই এপ্রিল জরুরী মিটিং ডেকে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলো। ভারতীয় হাইড্রোক্লোরোকুইনের আমেরিকা পাড়ি দেওয়া এখন খালি সময়ের অপেক্ষা।
চিত্রনাট্যটিতে শুধু তিনটি পীড়াদায়ক ফাঁক আছে। একটির কথা আগেই বলা হয়েছে। দেশে যেটুকু কাঁচামাল জমানো আছে তা শেষ হয়ে গেলে, দ্রুতই হবে রপ্তানি প্রত্যাহার করায়, ওষুধের আকাল দেখা দেবে। দ্বিতীয়ত, ভারতের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলংকা,নেপাল - এরাও ওষুধের দাবীদার ছিলো। নিরপেক্ষ নীতির খাতিরে এদেরও কিছু দিতে হয়। তাতে আরো সংকট ঘনীভূত হবে। তার থেকে রপ্তানি বন্ধ করে দেশের মানুষের চাহিদা মেটানোই কি আদর্শ ছিল না ? নিজস্ব সূত্র মারফত জানা, বেঙ্গল কেমিক্যালসের হাতে জমা কাঁচা মালই যদি মাপকাঠি হয় ,তাহলে নির্দ্বিধায় বলা যেতে পারে দেশে খুব বেশি কাঁচা মাল মজুত নেই। এখানেও কিছু তৈরী ওষুধ থাকলেও, নতুন বরাত কিন্তু পাওয়া যায়নি। খবরের কাগজে প্রকাশ ইপকা ল্যাব এবং জাইডাস ক্যাডিলা নামে দুটি গুজরাতি কম্পানিকে এই ওষুধ উৎপাদনের নতুন বরাত দেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ওষুধ উৎপাদনের উপযোগী সমস্ত আধুনিকীকরণ বেঙ্গল কেমিক্যালসে সম্পূর্ণ। তবু তাকে কি দেশের এই দুর্দিনে বসিয়ে রাখা হবে? কিছু কাগজে ইচ্ছাপূরণের খবর করা হয়েছে যে বেঙ্গল কেমিক্যলসই দুর্দিনের উদ্ধারকর্তা হয়ে উঠছে। কিন্তু বেঙ্গল কেমিক্যালসের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল কতটা ওষুধ স্টকে আছে সেই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও সুনির্দিষ্টভাবে ওষুধ তৈরির বরাত এখনো পাওয়া যায়। গেলেও কাঁচা মালের অভাব একটি প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে বাধ্য। সেখানে চিনের কারণে প্রচন্ড অনিশ্চয়তা রয়েছে। ফলে যাবতীয় আশায় ছাই ঢেলে বেঙ্গল কেমিক্যালস এখনো যে তিমিরে, সেই তিমিরেই।
আকাশের গায়ে কেন টক টক গন্ধের মতো তাই ইদানীং বেঙ্গল কেমিক্যালসের বঞ্চনার গায়েও গুজরাতি গুজরাতি গন্ধ। ঘোড়া চলে যায় গুজরাতি এনজিওতে, ওষুধের বরাত পায় গুজরাতি ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানি। বাংলা শুধুই ঘুমায়ে রয়? বেঙ্গল কেমিক্যালসের কর্মচারী ইউনিয়ন ত্রিধাবিভক্ত। দুটির মাথায় শাসকদলের দুই মহারথী। একজনের দৌড় বিধানসভায় ,তো আর একজনের পার্লামেন্টে। আর একটি ইউনিয়ন বামপন্থীদের। তিনটে ইউনিয়ন এক হয়ে মামলা লড়ে তবে বেচে দেবার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জয় ছিনিয়ে আনতে পারে। কিন্তু অদম্য সরকার বাহাদুর দেশের লাভজনক সংস্থাগুলিকে বিক্রি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তাই সিঙ্গল বেঞ্চের এই রায়ের বিরুদ্ধে আবার আবার ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করা হয়েছে। সে মামলার এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। তার আগেই আবার বিক্রয়যোগ্য সম্পত্তির যে লিস্ট প্রকাশ করা হয়েছে তড়িঘড়ি করে, তাতেও জ্বলজ্বল করছে বেঙ্গল কেমিক্যালসের নাম । সাব জুডিস বলে একটা কথা আছে কি আমাদের আইনি ডিকশনারিতে? তার অর্থ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পরিষ্কার তো?
বেঙ্গল কেমিক্যালসের উৎপাদন ব্যবস্থা পরিষ্কার দুটি ভাগে বিভক্ত। একটি হোম ইউটিলিটি প্রোডাক্ট বা গার্হস্থ্য উপযোগী পণ্য, যাতে আছে ন্যাপথলিন,ফিনাইল,ভেষজ দ্রব্য যেমন জোয়ানের পাচক,কালমেঘ ইত্যাদি। আর একটি মেডিক্যাল প্রডাক্ট,যাতে আছে হাইড্রোক্লোরোকুইনের মতো আধুনিক এলোপ্যাথ ওষুধবিষুধ। প্রথমটি বাজারজাত করবার জন্য কম্পানির নিজস্ব আউটলেটের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে একেবারেই সরকারী আদেশ ও অর্ডার মাফিক চলতে হবে। একসময় এখানে ৫০০ র বেশী ওষুধ তৈরি হতো। দেশজোড়া চাহিদাও ছিল তুঙ্গে ।কিন্তু কোন অদৃশ্য অঙ্গুলিহেলনে বেঙ্গল কেমিক্যালসের মেডিক্যাল প্রডাক্ট ডিভিশন নিয়ে যাওয়া হয় কানপুরে, এখানে পাণিহাটিতে পড়ে থাকে কেবল হোম ইউটিলিটি প্রডাকশন। কানপুরের কারখানা কখনোই সে ভাবে দাঁড়াতে পারেনি। ৬০ বছর ধরে লসে চলবার পর ২০১৭ তে ২৫ কোটির বেশি লাভ করেও স্ট্র্যাটেজিক সেলে যাবার হুমকি থেকে বেরনো যাচ্ছে না । অথচ আগামী ৫ বছরে কম্পানি আশা রাখে আরো ৩০ কোটি লাভের।
এই যে আধুনিক ওষুধের উৎপাদন এই ডিভিশনটি যদি শুধু রাজ্য সরকারে আনুকুল্য পায় তাহলেই বেঙ্গল কেমিক্যালস কেল্লা ফতে করে দিতে পারে। রাজ্য সরকারের হাসপাতালগুলি যদি সরকারি ওষুধের বরাত দেবার ক্ষেত্রে বেঙ্গল কেমিক্যালসের কথা মনে রাখে তাহলেই কম্পানি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এই হাসপাতালগুলো বেঙ্গল কেমিক্যালস থেকে কোনো ওষুধই কেনে না। দোর্দন্ডপ্রতাপ ইউনিয়নের লিডাররা কি এই ব্যাপারে একমত হয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন রাখতে পারেন না ?
সদ্য লাভের মুখ দেখা এই সংস্থার সম্পত্তি কিন্তু নেহাত কম নয়। মাণিকতলা,পাণিহাটি মুম্বাই, কানপুরের কারখানা ছাড়া কলকাতা শহরে এর বিশাল বিশাল বাড়ি আছে। মুম্বাইয়ের প্রভাদেবীতেেকটি বিশাল অট্টালিকার মালিক, যার আর্থিকমূল্য টাকায় ১০০০ কোটির বেশি। একসময় লাহোরেও এর একটি শাখা ছিল। স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠেই যায় যে বিপুল সম্পত্তির অধিকারী এই সংস্থাকে রুগ্ন ঘোষণা করে স্ট্র্যাটেজিক সেলে ঠেলে দিতে পারলে কার লাভ ? সম্পূর্ণ আধুনিকীকরণ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বরাত দেবার বেলায় আগ্রহের খামতি কেন ?
১৯৯৭ সাল থেকে বেঙ্গল কেমিক্যালসে নতুন নিয়োগ বন্ধ। ভি আর এস নিতে অনেকেই বাধ্য হয়েছেন, তারপর কর্মীসংখ্যা কয়েক হাজার থেকে নেমে এসে দাঁড়ায় কয়েক শ-তে। এখন ৩২০ জন স্টাফ আর ১০০ক্যাজুয়াল ওয়ার্কার. । ১৮৫ জন কর্মী,অফিসারের বেতন ২২ বছর ধরে ফ্রোজেন করে রাখা হয়েছিল। কোনো ইনক্রিমেন্ট, ডিএ কিছুই পাননি তারা।
তবু মনে হয় এখনো ঘুরে দাঁড়াবার সময় একেবারে চলে যায়নি। ওখানকার কর্মীদেরই একাংশের মতে যদি কিছুটাও মূলধন সরাবরাহ করা হয়, আধুনিক সুযোগসুবিধাযুক্ত প্ল্যান্টগুলি নিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে এই সংস্থা। নতুন নিয়োগ খুব জরুরি। তেমনি জরুরি ম্যানেজমেন্টের সক্রিয়তা। ভালো ওষুধ একসময় যা এখানে তৈরি হতো, পরে প্রাইভেট কম্পানিগুলোকে বরাত দেওয়া হয়, সেগুলো আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। ভালো প্রডাক্ট নার্চার করা বা যত্ন নেবার জন্য চাই ভালো মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি। গুণগত মান বজায় রাখার জ্ন্য চাই কঠিন নজরদারি। এইগুলি সবই একসময় বেঙগল কেমিক্যালসে ছিলো। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মিলিত উদ্যোগ এবং কর্মীদের আগ্রহ আবার তা ফিরিয়ে আনতে পারে। তবে সর্বাগ্রে চাই জন সচেতনতা এবং সৃষ্টিমুখী আন্দোলন। এই ইস্যু নিয়ে যত বেশি আলোচনা, লেখালিখি হবে এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্যটি ততো দ্রুত সাধিত হবে।