এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  বিবিধ

  • খাম্মামের হারিয়ে যাওয়া মানুষজন - প্রথম কিস্তি

    সিদ্ধার্থ মিত্র লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | বিবিধ | ০৬ আগস্ট ২০১২ | ১২২১ বার পঠিত
  • আউশউইৎজে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে কাটানো নৃশংসজনক নিজের দিনগুলির কথা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রাইমো লেভি বলেন – “আজ এই মুহূর্তে টেবিলে বসে এইসব লেখার সময় আমার ঠিক প্রত্যয় হয় না যে এই ঘটনাগুলো আদৌ ঘটেছিল কিনা”।

    খাম্মামের জঙ্গল থেকে অনেকদূরে একটা ব্যস্ত শহরের মাঝে বসে এই কথাগুলো লিখতে লিখতে জঙ্গলের মধ্যে দেখা ওই ক্যাম্পগুলোর কথা বিশ্বাস করতে আমার সত্যিই কষ্ট হচ্ছে। নাৎসী ক্যাম্পে ঘটে থাকা মানুষের প্রতি মানুষের অমানবিক অত্যাচারের চাইতেও অনেক বেশী বিকৃতি ইতিহাসের পাতার বাইরে আজকের দিনের পৃথিবীতে আরও ভীতিপ্রদর্শকভাবে অন্য কোথাও ঘটতে পারে – এটা মেনে নিতে পারা খুব কঠিন। আমার বেড়ে ওঠার মূলে ছিল একটা বিশ্বাসের ভিত্তি, যে, মানুষ একে অপরের বোধগুলির প্রতি অনুভূতিপ্রবণ; আর একটা ভাবনা যে, প্রতিটা রাজ্য নিজের ভালো এবং খারাপের সবটুকু নিয়ে একটা সত্ত্বা যার লক্ষ্য নিজের চৌহদ্দিতে প্রতি রাজ্যবাসীর সার্বিক উন্নতিসাধন – ব্যক্তি হিসেবে প্রতিটা মানুষের হিতের জন্য একটা সম্মিলিত প্রয়াস।

    ছত্তিসগড়ে হিংসামূলক কাজকর্মের জন্য উৎখ্যাত ১৬,০০০ জনেরও বেশী মানুষ অন্ধ্রপ্রদেশের খাম্মাম অঞ্চলে ২০৩ টে অস্থায়ী উপনিবেশে রয়েছেন। এইসব ক্যাম্পগুলির কিছু কিছু গ্রামের আশেপাশে। কিছুসংখ্যক এই ক্যাম্প মানবাধিকার সংস্থাগুলির দ্বারা নথিভূক্ত। তা সত্ত্বেও রাজ্য এই উপনিবেশগুলির অস্তিত্ব স্বীকার করতে নারাজ। বাস্তবিকই, রাজ্যের গন্ডীর মধ্যে এই ১৬,০০০ মানুষের বাঁচা বা মরা রাজ্যের দায় নয় – এটা বুঝিয়ে দিতে অন্ধ্রপ্রদেশ এই মানুষগুলির অস্তিত্বকেই অস্বীকার করেছে। এ যেন এমন এক অদৃশ্যকরণ জাদুকৌশল যেটা দক্ষতম জাদুকরেরও বিচারবুদ্ধির বাইরে। আপনি সরকারি নথিপত্র দেখতে পারেন, কিন্তু কোথাও এই নামহীন মানুষগুলির উল্লেখ নেই।

    কেন? এই ১৬,০০০ মানুষ ক্যাম্পসমেত সত্যিই আছেন, এটা স্বীকার করতে রাজ্যের আপত্তি কোথায় – আপনি জিজ্ঞেস করতেই পারেন। অবিলম্বে এই বাস্তুহারা মানুষগুলিকে খাদ্য এবং বাসস্থান যোগানো হবে – এটা রাজ্যের কর্তব্য! এরকম ক্ষেত্রে রাজ্যের এই বুলি আওড়ানো আর শেষমেষ কিছু না-করা, এটাই তো রেওয়াজ। তবে এমন ব্যতিক্রম কেন ?

    এইসব ক্যাম্প আসলে টিপ অফ আইসবার্গ। এর পেছনে লুকিয়ে আছে রাজ্যের দ্বারা অভিনীত ঘৃণ্য কাজকর্ম,যাতে বহির্জগৎ জানতে না পারে – রাজ্যের পক্ষে এটাই কাম্য।

    ছত্তিসগড় পৃথিবী এবং বিশ্বের তালিকায় খনিজ আকরিক উৎপাদনকারী রাজ্য হিসেবে অগ্রগণ্য। টিন, ডোলোমাইট, হিরে, ইউরেনিয়াম, লৌহ-আকরিক, কয়লা এগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০০০ সালে রাজ্য হিসেবে অন্তর্ভূক্তির পরে রাজ্য সরকার বিভিন্ন মাইনিং সংস্থার সঙ্গে কয়েকশ’ MoU সাইন করেছে। এই কনট্র্যাক্টগুলোর পরিণতি কয়েক বিলিয়ন ডলার, বিনিয়োগের ধাঁচ অনুযায়ী আশা করা হচ্ছে আগামী বছরগুলোয় এই বিনিয়োগ কয়েক ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। রাজ্যের অন্য যেকোনও জায়গার তুলনায় ছত্তিসগড়ের দক্ষিণস্থিত বস্তার অঞ্চলে এইসব আকরিকের পরিমান সর্বাধিক। লক্ষ লক্ষ বছর আগে মাটির অনেক গভীরে হওয়া আলোড়ন এই সব খনিজ আকরিক বস্তারের ভূপৃষ্ঠ জুড়ে বিস্তৃত হয়। এই সমৃদ্ধি ধনীদের করে তোলে অকল্পনীয় রকমের ধনী।

    আর নির্ধনদের বর্ণনার অতীত দরিদ্র।

    জনোন্ন্যয়নের নিরীখে বিপুল জঙ্গলে ঢাকা আদিবাসি সম্প্রদায় নিয়ে ছত্তিসগড় সম্ভবত দরিদ্রতম। জঙ্গলের মধ্যে ১২০০ গ্রাম আর মাত্র ৫০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র যেগুলির বেশীরভাগ কর্মচারীবিহীন। আঞ্চলিক তুলনার হিসেবে এখানে মানুষের গড় আয়ু ন্যূনতম, ৬০ শতাংশেরও বেশী মানুষ অপুষ্টির আওতায়, স্বাধীনতা-পরবর্তী যুগে বস্তারের অবস্থান এখনও প্রস্থর যুগে, যার তুলনা শুধু দরিদ্রতম সাহারা-প্রান্তিক আফ্রিকার সঙ্গে করা চলে। সাহায্যের পরিবর্তে রাজ্যের দ্বারা প্রবর্তিত নীতির দরুণ জীবন-নির্বাহে অপারগ এই দরিদ্ররা বাধ্য হয়েছে উৎখ্যাতির পথে। রাজ্যের এমন অবহেলা,দেশের এই অঞ্চলে নকশাল উপস্থিতির অন্যতম কারণ। এই সশস্ত্র নকশাল দলের পুরোভাগে আজ দরিদ্র, অবহেলিত আদিবাসীরা শপথ নিয়েছে রাজ্যের বিরূদ্ধে লড়াইয়ে, যে লড়াইয়ের মূলমন্ত্র দেশের সর্বত্র দরিদ্রের অধিকারবোধের রক্ষা।

    তবু অব্যাহত ছিল জঙ্গলের জীবন। দরিদ্র সত্ত্বেও নিজেদের সাধারণ পারিপার্শ্বে এই আদিবাসীরা নিজেদের জমি, জল, জঙ্গল নিয়ে পুষ্ট ছিলেন। কিন্তু সেইসব বদলে যাওয়ার সময় হয়েছে তখন।

    ২০০৫ সালে টাটা স্টীল কোম্পানি বস্তারের অন্তর্ভূক্ত বাইলাডিলায় দুই বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি লৌহ আকরিক নিষ্কাশনের কন্ট্র্যাক্ট সই করে। সালফার মুক্ত এই বিশেষ লৌহ আকরিক বিশ্বের মধ্যে সর্বোত্তম। এর ঠিক পরের দিন ছত্তিসগড় রাজ্য সরকারদ্বারা সরাসরি মদতপুষ্ট ব্যাক্তিগত-রক্ষীবাহিনী সালওয়া-জুডুম গঠন করা হয়। আপাতভাবে নকশাল-প্রতিরোধের কারণে তৈরী সুইস-আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত এই সালওয়া-জুডুম বাহিনী রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় আধা-সামরিকবাহিনীর সঙ্গে মিলে বস্তার জেলার ৬৪৪টা আদিবাসী গ্রাম জ্বালিয়ে খাক করে দেয়, খুন এবং ধর্ষণ করে সংখ্যাতীত আর ঘরছাড়া করে ৩,০০,০০০ ও বেশী গ্রামবাসীদের। প্রায় ৫০,০০০ যায় সালওয়া-জুডুমের তৈরী উচ্ছেদ ক্যাম্পে; ২,০০,০০০ গা-ঢাকা দেয় জঙ্গলে আর ৫০,০০০ প্রাণ নিয়ে পালায় প্রতিবেশী দক্ষিণরাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে।

    অন্ধ্রে পলাতক ৫০,০০০ এর মধ্যে ১৬,০০০’এর ঠাঁই হয় খাম্মামের ক্যাম্পে। শেষোক্ত এই ১৬,০০০ রাজ্যের শিরঃপীড়ার কারণ হয় – কারণ রাজ্যের নক্কারজনক পন্থা ও তার ফলাফল জানাজানি হয়ে যাওয়া। নিজেদের ভুল শুধরে নেওয়ার পরিবর্তে রাজ্য খাম্মামের ক্যাম্পগুলির উপস্থিতি সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে। কারণ এই ১৬,০০০ বাস্তুহারাদের অস্তিত্বস্বীকারের অর্থ তাদের “ইন্টার্ন্যালি ডিসপ্লেস্‌ড পিপল” (IDP) আখ্যা দিয়ে তাদের অনুদানের আওতায় নিয়ে আনা।

    শুধু অনুদানের প্রশ্ন নয়, রাজ্যের এই অস্তিত্বস্বীকার অবারিত করত সম্ভাব্য প্রশ্নের – এইসব “ডিসপ্লেস্‌ড পিপল” কীভাবে এখানে এসে পৌঁছোলেন। কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরোত সালওয়া-জুডুম, মাইনিং জায়ান্ট আর রাজ্যের গৃহমন্ত্রকে সাজানো ষড়যন্ত্রের কথা। তাদের উচ্ছিন্ন স্বীকার করার অর্থ এই আদিবাসীরা যে আসলে বস্তারের কোটি কোটি টাকা দামের জমির আসল মালিক – এটা স্বীকার করা। তাদের অস্তিত্বস্বীকার কর্পোরেট লালচের মুখে মাছির ভনভন।

    “তো গভর্নমেন্ট মানতে নহীঁ হ্যায় ক্যায়া ইয়ে লোগ হ্যায়? ইন লোগোঁ কো NREGA নহীঁ মিলতা হ্যায়?”

    সকালের ঠান্ডা বাতাস আমার মুখের উপর আড়াআড়ি বয়ে যাচ্ছিল। মোটরসাইকেল মেঠো উঁচু-নীচু রাস্তার উপর ধাবমান। ইদানিং বৃষ্টির জন্য পাশের জমিতে মাটি ভিজে। ডিসেম্বরের অপ্রত্যাশিত বৃষ্টি জমির পাশে শুকনো হতে দেওয়া সোনালী-ফলনের প্রায় সবটাই খেয়ে নিয়েছে।

    কৃষি ও সামাজিক উন্নয়ন বিভাগের (ASDS) কর্মী প্রসাদ আজ গাইড হয়ে আমাকে তার মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যাচ্ছিল। আজ ভোরসকালে আমরা রেখাপল্লীর ASDS অফিস থেকে যাত্রা শুরু করেছি, উদ্দেশ্য কাছাকাছি স্থিত কিছু “IDP” ক্যাম্প দেখতে যাওয়া।

    “কুছ লোগোঁ কো NREGA কার্ড দিলাতে হ্যায়, লেকিন ...”

    আমি শুনেছি এই ক্যাম্পগুলোর ব্যাপারে। যাঁরা এই ক্যাম্পগুলোয় রিসেন্টলি গিয়েছেন তাঁদের লেখা কিছু ট্রাভেলগও পড়েছি। তাঁদের দ্বারা বর্ণিত এই ক্যাম্পগুলোর দশা অবশ্যই কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলোর মত জঘন্য নয়। বরং, মৃত্যু এখানে আসে অনেক ধীরলয়ে। মৃত্যুর কারণ হয় ক্ষুধা, অপুষ্টি আর নিরাশায়, জীবনের অঙ্গ হিসেবে। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ পড়া আর ছবি দেখা যথেষ্ট কষ্টকর ছিল; আমি নিজের চোখে দেখতে চেয়েছিলাম, ওখানকার সত্যিকারের খন্ডচিত্রগুলো।

    আমাদের প্রথম গন্তব্য ক্রমশঃ কাছে এসে পড়ছিল, গ্রামের নিকটবর্তী ব্যস্ত বাজারের কাছে একটা ক্যাম্প। আমার চোখ দেখছিল অদূরে ঘন জঙ্গলে ঢাকা একটা পাহাড় যেটা অন্ধ্রপ্রদেশকে প্রতিবেশী রাজ্য ছত্তিসগড় থেকে পৃথক করেছে। প্রায় এক বছর আগে আমি ওই পাহাড়ের ওপারে একটা পূনর্বাসিত গ্রাম দেখতে এসেছিলাম। ওই অঞ্চল থেকে নকশাল তাড়ানোর জন্য সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনী দিয়ে গঠিত “অপারেশন গ্রীন হান্ট”এর কারণে ওই অঞ্চল এখন ‘নো-গো-জোন’। এই অপারেশন সফল কি না, অথবা হলে কতটা – সেই ব্যাপারে কেউই অবগত নয়। কিন্তু এই অপারেশনের প্রাক্বালে আরও আরও উচ্ছিন্ন বাস্তুহারা তৈরী হচ্ছে, হিংসা ও মৃত্যু থেকে পার পেতে।

    জঙ্গলে তৈরী ২০৩টা ক্যাম্পের মধ্যে এটা মাত্র একটা। এই ক্যাম্পে বসবাসকারী মানুষের বেশীরভাগই ছত্তিসগড় থেকে পালিয়ে আসা মুরিয়া আর গোট্টি কোয়া সম্প্রদায়ভূক্ত। কিছু ক্যাম্প জঙ্গলের আরও গভীরে। ASDS ‘অ্যাকশন এইড’ আর ‘একো’ (ইউরোপীয়ান কমিশন অফ হিউম্যানিটারিয়ান এইড অ্যান্ড সিভিল প্রোটেকশন)’এর সাথে মিলে ১৪৬টা ক্যাম্পে ত্রাণ যোগাচ্ছিল। বাদবাকি ৫৭টা ক্যাম্পের অবস্থা অজানা।

     

    উপরের প্রথম ম্যাপে কালো চিহ্নিত অংশটি ছত্তিসগড়ের, যেখান থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাপটি অন্ধ্রপ্রদেশের যেখানে এই ক্যাম্পগুলি অবস্থিত।

    বাজারের একটু আগে প্রসাদের সঙ্গে ASDS’এর এক ভল্যান্টীয়ারের দেখা হয়। সে কথা বলতে থামে। তারপর আমার দিকে ফিরে বলে, “অভি ইধর OGH চল রহা হ্যায়, যো ক্যাম্প হম জানেওয়ালে থে উধর জা নহীঁ সকতে”।

    “OGH ইধর?” আমার বিস্ময় চাপা থাকেনি। আমি ভেবেছিলাম, OGH  কেবলমাত্র ছত্তিসগড়, ঝাড়খন্ডের জঙ্গল আর উড়িষ্যায় একটা দূরবর্তী দুঃস্বপ্ন। কিন্তু এখানে অন্ধ্রপ্রদেশেও! একটা ভরা বাজারের মাঝখানেও!

    “ইধর ভি সার্চ হোতা হ্যায়”, লোকটা বলল, “নকশাল লোগ কভি কভি ছত্তিসগড় সে আদিবাসিওঁ কে সাথ ইধর চলে আতে হ্যায়”।

    এখানেও OGH... শহরে, গ্রামে, পথেঘাটে ... সেইসব পথ যারা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে অনেকদূরে চলে গেছে।

    এরা এখন সর্বত্র।

    কর্তৃপক্ষ দাবী করে নকশালরা আদিবাসীদের সঙ্গে মিশে গ্রামে বাজারে চলে আসে। কাউকে বিশ্বাস করার প্রশ্ন ওঠে না। একটা ব্যাপার নিশ্চিত, সালওয়া জুডুম গ্রাম কে গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার পর যে ২,০০,০০০ লোক বাড়ি ছেড়ে পালায় তাদের মধ্যে অনেকেই জঙ্গলে গিয়ে আর ফেরেনি। খাওয়ার কিছু নেই ওই জঙ্গলে, কয়েকদিনের বেশী কেউ বাঁচবে না ওখানে। জঙ্গলে লুকিয়ে থাকে যারা তাদের কেউ কখনও খাবার কিনতে বাজারে আসে, আর আবার নিঃশব্দে জঙ্গলে মিলিয়ে যায়। তারা কি নকশাল? কর্তৃপক্ষের দাবী, নকশালরা কখনও আদিবাসীদের সঙ্গে মিশে পুলিশ মারতে আসে। মাসখানেক আগের একটা মুঠভেড়ে বাজারে এক মাওবাদী মারা যায়। এই দাবীগুলো নিশ্চিত বলা যায় না।

    কিন্তু একটা ব্যাপার নিঃসন্দেহ। জীবনের গতিপথ পুরোপুরি পাল্টে গেছে। জঙ্গলের নিকটবর্তী গ্রামগুলোয় মানুষের প্রতিদিনকার বেঁচে থাকায়, শ্বাস নেওয়ায় একটা ভীতি আর সন্দেহের আবহ অদৃশ্য আততায়ীর মত থাবা গেড়ে বসেছে। খুব বোঝা যায়, এমনকী এই আপাতনিরীহ বাজারের হইহট্টগোলের অনেক গভীর পিঞ্জরে আতঙ্ক ক্রমবর্দ্ধমান।

    প্রসাদ ওর এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করতে গেল আমি কোন কোন জায়গায় যেতে পারি, আর আমাকে বলে গেল কাছের একটা চায়ের দোকানে অপেক্ষা করতে।

     

    লাল, সবুজ, হলুদ – সব রঙ উপচে পড়ছিল গোটা বাজার ঘিরে। মহিলা, পুরুষ সবার পোষাকে রঙের বাহার ... অনেক পথ হেঁটে এরা এসেছে নিজেদের সব্জিটুকু অথবা জঙ্গল থেকে পাওয়া ফল-পাকুড় বেচতে। গাঢ় লাল তেঁতুল-বিচী, নধর পুরুষ্টু হলুদ মহুয়ার ফল, নানা রকম আকন্দ, এইসব। ব্যস্ত একটা দিন। স্থানীয় এবং ছত্তিসগড় থেকে আসা আদিবাসী সবাই নিজের নিজের পশরা সাজিয়ে বসেছিল রাস্তার ধারে।



    চায়ের দোকানে অপেক্ষা করার সময় আমি দেখলাম কোনও ইউনিফর্মহীন, কিন্তু নীল প্যান্ট পরনে ১২-১৫ জনের একটা দল, বাজারের দিকে চলেছে। তাদের সবার হাতে রাইফেল।

    এদের দেখে আমার সালওয়া-জুডুম মনে হয়নি; অন্ততঃ ছবিতে দেখা ভীতি উদ্রেককারি ব্যক্তিগত রক্ষীবাহিনীর মত নয়। তাও ছত্তিসগড় থেকে এত দূরে, আমার মনে হয়নি ওরা এত সক্রিয়।



    যে OGH’এর কথা হচ্ছিল, আমার বোধগম্য হল, এরা তারা। সাধারণ ধ্যানধারণার বিপরীতে, OGH  মানেই ক্যামুফ্লেজ্‌ড ইউনিফর্ম পরিহিত কম্যান্ডোর দল নয়। “সার্চ” অপারেশনের কাজে গভীর জঙ্গল ছাড়াও এরা দৃশ্যত-সাধারণ এলাকাতেও “অপারেশন”এর কাজকর্ম করে।

    এরা বাজারের মাঝখানে কী করছে সেটা স্বচক্ষে দেখতে আমি একটু দূরত্ব রেখে ওদের অনুসরণ করি। ওরা এক এক করে প্রত্যেক বিক্রেতার কাছে যায়, তার সব্জি, পরিধেয় সব আঁতিপাতি করে খোঁজে, প্রশ্ন করে। লুকিয়ে আমি ওদের একটা ছবি তুলি। তারপর মনস্থির করি আরও কাছে গিয়ে ওরা যখন সার্চ করছে তখন একটা ছবি তুলবো। হঠাৎ আমি কিছু বোঝার আগেই আমি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম, ওরা দেখি সোজা আমার দিকে এগিয়ে আসছে। যতটুকু সময় ছিল তাতে আমি আমার ছোট্টো ডিজিট্যাল ক্যামেরাটা প্যান্টের পিছনের পকেটে লুকিয়ে ফেলি। বছর তিরিশের কাছাকাছি একটা ছেলে, দেখে মনে হল ওদের লীডার, খুব অবহেলার সঙ্গে একটা সফিসটিকেটেড পিস্তল হাতে নিয়ে আসছিল। আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম, মনে করছিলাম ওরা আমাকে জাস্ট দেখতে না পেলেই হল। কিন্তু তা হওয়ার ছিল না।

    আমাকে পার হয়ে যাওয়ার সময় ওই লীডার ছেলেটা আমার মুখের দিকে খুব শার্পভাবে দেখে। আর তারপর থেমে যায়। সাথে থাকা পুলিশগুলোও ঠিক তাই করে। ও আমার পাশে দাঁড়ায়। আর হাতে রাইফেল নিয়ে দু’জন পুলিশের একজন আমার সামনে আর অন্যজন একদম পেছনে।

    দান্তেওয়াড়া’র এস পি অমরেশ মিশ্র’র কথায়, জঙ্গলে দু’ধরণের মানুষ দেখা যায়। হয় নকশাল, নইলে নকশাল-সমব্যথী। সাধারণতঃ জঙ্গলের ট্রাইব্যাল লোকেরা ওই ক্যাটিগরিতে পড়ে। রাজ্য প্রসাশনের চোখে এদের বাইরে রয়েছে বুদ্ধিজীবী এবং শিক্ষিতেরা যারা বাইরে থেকে সাধারণ জনগনকে উস্কানি দিতে রাজ্যে আসে। এরা আমাকে সেই ক্লাসের লোক সন্দেহ করেছে। বাজারের আদিবাসী জনগনের মধ্যে উত্তেজনা-সৃষ্টিকারী এক জনবিপ্লব উদবোধক।

    আমার নার্ভাস লাগছিল। নিজের সব দৃঢ়তা সঞ্চয় করে আমি ঠিক করি যত নার্ভাসনেসই হোক না কেন, আমি সেটা বাইরে দেখাবো না। আমার ক্যামেরায় শেষ ছবি রাইফেলসমেত এদের হেঁটে যাওয়ার দৃশ্য। আমাকে প্রশ্ন করলে ওই ছবিটা কেন তুলেছি সেটা এক্সপ্লেইন করা কোনোভাবেই সজহ হবে না।

    “আপ কাহাঁ সে আয়ে হ্যায়?”

    “কোলকাতা”, আমি উত্তর দিলাম।

    লীডারের থেকে সম্মতি পেয়ে আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অফিসার আমার একটা শুরুওয়াতি শরীর তল্লাস করে। মোক্ষম জিনিসটা চোখ এড়িয়ে যায় তার – প্যান্টের পকেটে আমার ক্যামেরাটা। তার তল্লাস শেষ হলেই পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশটা তন্নতন্ন খোঁজে আমার কাঁধ, পিঠ – খোঁজে লুকোনো অস্ত্রের জন্য। ওরা আমার ব্যাকপ্যাক খুলে দেখে। ২০১০’এর কোলকাতা বইমেলায় পাবলিশ হওয়া সংহতি’র সেই বুকলেট’টার কথা মনে পড়ে “স্টেটমেন্ট এগেইনস্ট অপারেশন গ্রীন হান্ট”। মনে মনে একটা আইডিয়া ছিল, ASDS কর্মীদের সাথে ওটা শেয়ার করবো। সৌভাগ্যক্রমে ওটাও ওদের চোখ এড়িয়ে গেল। সম্ভবতঃ ওরা শুধু বিস্ফোরক খুঁজছিল, আর পার্টির ইস্তেহার।

    সার্চ শেষ হলে দু’জন পুলিশ আমার খুব কাছ ঘেঁষে সামনে আর পিছনে দাঁড়াল। আর হাতে পিস্তল নিয়ে ইনস্পেকটর আমার পাশে।

    “আপ কেয়া করতে হ্যায়?”

    “কমপিউটার প্রোগ্র্যামিং।”
    এর পরের প্রশ্নটা আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেয়।

    “আপ কা কৌন সা ল্যাপটপ পসন্দ হ্যায়?”

    “ল্যাপটপ?” আমার অবিশ্বাস্য লাগছিল।

    ও আমার আরও কাছ ঘেঁষে আসে। চোখেমুখে সন্দেহের ছাপ সুস্পষ্ট।

    “কেয়া আপ কো ল্যাপটপ মালুম হ্যায়?”

    “হাঁ হাঁ, ল্যাপটপ। সোনি, ডেল, তোশিবা ...”

    আমার উত্তর ওকে শান্ত করে। কিন্তু ওর প্রশ্ন তখনও বাকি ছিল।

    “সোনি ল্যাপটপ কিতনে মে মিলতি হ্যায়?”

    আমার কোনও ধারণাই ছিল না। একহাজার ডলার? “চালিস হাজার?” আমি আন্দাজে ঢিল ছুঁড়ি।

    মনে হল আমার উত্তর ওর রেঞ্জের মধ্যে। এতক্ষণে হয়ত ওর মনে হতে শুরু করেছে যে আমি সত্যিই আমি যা বলে নিজেকে দাবী করেছি, এবং আমি মাওবাদী প্রচারক নই... তবু ও জিজ্ঞেস করতেই থাকে “কওন সি ব্র্যান্ড কি ল্যাপটপ আচ্ছা হ্যায়?”

    “সোনি ঠিক হ্যায়, ডেল ভি, ...”

    পাঠক খেয়াল করবেন, এই বার্তালাপ ল্যাপটপ নিয়ে নয়, কিন্তু এখন এটা সেই দিকেই মোড় নিয়েছে!

    এই সময়, অবশেষে, প্রসাদ নিজের বন্ধুর সঙ্গে এসে পৌঁছোয়। আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে দেখে মুখে একটা আকর্ণ বিনয়পূর্ণ হাসি নিয়ে তড়িঘড়ি এগিয়ে আসে।
    “আরে কেয়া বাত হ্যায় জী। ইয়ে আদমি হমারা সাথ হ্যায়, ক্যাম্প দেখনে কে লিয়ে আয়া”।

    “ক্যাম্প দেখনে কে লিয়ে?” ইনস্পেকটর কটমট করে তাকায়, আর আমার দিকে নতুন সন্দেহ নিয়ে দ্যাখে।

    শেষমেষ দেখা গেল প্রসাদ ইনস্পেকটরের বন্ধু কাউকে চেনে। আরও কয়েক মিনিটে আমাদের মিটিং শেষ হয়, আর তারপর আমরা ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওনা দিই।

    মূল লেখা (http://sanhati.com/excerpted/3377/) থেকে অনুবাদ করেছেন, সায়ন্তন দে 

                                                                                                                                    ( চলবে)

                                                                                                                                আলোকচিত্রঃ লেখক


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ০৬ আগস্ট ২০১২ | ১২২১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শুদ্ধ | ***:*** | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০৭:৪৭90201
  • ছত্তিশগড়ের ঘটনা আসলে ঘটেনি। ছত্তিশগড় বলে ভারতের কোনো রাজ্য নেই। এমনটা ভেবে নিতে পারলে বেশ সুখে দিন কাটিয়ে দেওয়া যায়। মাঝে মাঝে রাষ্ট্রীয় হিংসা আর পাল্টা মাও হিংসা খুব খারাপ বলে দিতে পারলে আরো ভাল। তুরীয় বুদ্ধিজীবিপনার তুঙ্গে থাকা যায়। আমি এখন সে ভাবেই খুব ভাল আছি। আপনি লিখে যান, কিন্তু ছত্তিশগড় আসলেই একটা কল্পিত নাম। সব উন্নয়নবিরোধীদের প্রচার মাত্র।
  • aranya | ***:*** | ০৭ আগস্ট ২০১২ ১১:৫৮90202
  • যদি শুধু সংখ্যাগুলো দেখি - ৫০০০০ মানুষ অন্ধ্রে পালায়, তার মধ্যে ১৬০০০ রয়েছে ২০৩-টে ক্যাম্পে। অবিশ্বাস্য লাগে। বাকি ৩৪০০০ কোথায় গেল - মৃত ?
    ৬৪৪-টা আদিবাসী গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, ৩,০০০,০০০ লোক ঘরছাড়া - এত গ্রাম, এত মানুষ !! মাওবাদীদের মারতে হবে - বুঝলাম। একটাও আদিবাসী গ্রাম জ্বালান হয় কি করে? সালওয়া জুডুম সুপ্রীম কোর্ট নিষিদ্ধ করেছিল না?
    আদিবাসী সমাজে একসময় ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণা ছিল না - ফসল, শিকার সবাই ভাগ করে নিত। সেই মানুষগুলোর হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে পরিকল্পিত ভাবে একের বিরুদ্ধে অন্যকে লড়িয়ে দেওয়া হল - সালওয়া জুডুম। বর্বর, ঘৃণ্য এক ব্যবস্থা - সুপ্রীম কোর্ট যাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল ।
    বিলিয়ন বিলিয়ন ড্লারের কর্পোরেট বিনিয়োগ, প্রফিট; রাষ্ট্রের, সরকারের সর্বস্তরে অনন্ত করাপশন, লোভ;
    অরণ্য ধ্বংস, আদিবাসী হত্যা, আদিবাসী উচ্ছেদ - স্বাধীন ভারতবর্ষ ।
  • রূপঙ্কর সরকার | ***:*** | ০৮ আগস্ট ২০১২ ০৫:৪৬90203
  • অরণ্য, সালওয়া জুড়ুম সুপ্রীম কোর্ট নিষিদ্ধ করেছেন। নাম পালটে 'নীল প্যান্ট' করলেই হল। স্টেট প্সনসর্ড টেররিজম নব নব রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে পৃথিবীর প্রায় সব দেশে। আমাদের দেশটা ব্যতিক্রম কোনওভাবেই নয়। মুশকিল হচ্ছে, আন্দোলনটা শুধু মাওবাদীরাই করবে ? অনুরাধা তলওয়ার, যিনি টাটাদের ন্যানো প্ল্যান্টের কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতলেন দলবল নিয়ে, তিনি টাটাদের ছত্রিশগড়ের স্টীলপ্ল্যান্টের রাস্তায় নামতে যান না কেন? আর অন্যরাও কি যান? এই ধরণের সংগঠন তো কম দেখিনা। সেই ছেলেবেলা থেকে শুনছি, বেড়াল নাকি নরম মাটিতেই আঁচড়ায়।

    সায়ন্তন, এমনই বিষয়, যে লেখার জন্য বাহবা দেবনা, শুধু চাই আরও অনেকে এসব জানুক।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন