হিন্দুস্তানে বামৈস্লামিক ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত হয় ১৫২৬ খ্রীষ্টাব্দে, যখন উজবেকিস্তান থেকে মঙ্গোলিয়া তথা চিন, এবং কেজিবির যৌথ গুপ্তচর বাবর কাবুল হয়ে হিন্দুস্তান আক্রমণ করেন। ধুন্ধুমার যুদ্ধ হয়। তখন হিন্দুস্তানের রাজধানী দেহলির রাজা ছিলেন ধার্মিক ইব্রাহ্মিণ লোদী। বামৈস্লামিকরা যথারীতি সংগ্রাম সিংহ নামক এক বিশ্বাসঘাতক হিন্দু দালালকে বশ করে ফেলে। যখন প্রচন্ড যুদ্ধ চলছে, সেই অবস্থায় দালালের সাঙ্গোপাঙ্গোরা হঠাৎ 'আমাদের সংগ্রাম চলছে চলবে' বলে লোদীর বিরুদ্ধেই স্লোগান দিতে শুরু করে। ধাক্কা সামলাতে না পেরে লোদী যুদ্ধে হেরে যান। তাঁর বংশধররা চলে যান গুজরাতে। কেজিবি এবং চৈনিক চরদের নজর এড়াতে তাঁদের পদবী লোদী থেকে পাল্টে মোদী করে নিতে হয়। তাতে তাঁরা প্রাণে বাঁচেন।
যুদ্ধ যেখানে হয়েছিল, জায়গাটির নাম ছিল জলপথ। সিংহাসনে বসতে না বসতেই বদলে নাম করে দেওয়া হয় পানিপথ। দেহলির নাম পাল্টে হয় দিল্লি। রামের জন্মভূমি অযোধ্যার নাম পাল্টে করে দেওয়া হয় ফৈজাবাদ। এখানেই শেষ নয়, কেজিবির নির্দেশে বাবর সোজা চলে যান অযোধ্যায়। রামের জন্মভূমির উপর যে মন্দির ছিল তাকে ভেঙে, গুঁড়িয়ে তৈরি করেন এক খুব খারাপ ধরণের এক মসজিদ। ১৯৯২ সালে মহাবিদ্রোহের আগে পর্যন্ত মসজিদটি ওখানেই ছিল।
হিন্দুস্তানবাসী এই অধার্মিক শাসনকে সহজে মেনে নেয়নি। বাবর মারা যেতেই আর এক ধার্মিক বীর সুর শাহ দেহলি দখল করে নেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি তৈরি করেন হিন্দুস্তানের প্রথম হাইওয়ে, জিটি রোড। এই প্রকল্পের আদলেই পরবর্তীতে স্বর্ণ চতুর্ভুজ সড়ক মহাযোজনার সূত্রপাত হয়। দুঃখের কথা এই, যে, এই হিন্দু মহাপুরুষ বেশিদিন রাজত্ব করতে পারেননি। কালিঞ্জর দুর্গের কাছে সন্ত্রাসবাদীরা তাঁকে গান পাউডার দেগে হত্যা করে। পৃথিবীতে সেই প্রথম সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ। রাজস্থানের মরুভূমির এক মরুদ্যানের কাছে এই হামলা হয়েছিল বলে এর নাম ছিল ওয়েসিস অ্যাটাক। নাম বদলে এখন একেই বলা হয় আইসিস আক্রমণ। আইসিসের আক্রমণের প্রথম শহীদ সুর শাহ অযোধ্যার মন্দির পুনরুদ্ধার করতে পারেননি। কিন্তু খুবই রামভক্ত ছিলেন বলে তাঁর স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয় সাসারামে। সুর শাহের বংশধররাও গুজরাতে চলে যান। মোদী বংশের মত শাহ বংশও সেখানে খুব বিখ্যাত হয়। পরবর্তীকালে এই দুই বংশধররাই বাবরি মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে সমস্ত পরাজয়ের শোধ তোলেন। গুজরাতি এবং হিন্দি ভাষায় লিখিত 'বাল অমিত' গ্রন্থে এই দিগ্বিজয়ের সম্পূর্ণ বিবরণ পাওয়া যায়।
সুর শাহের মৃত্যুর পর সমগ্র হিন্দুস্তানে দুঃখের দিন নেমে আসে। চিন এবং কেজিবির চররা এখানে বংশ পরম্পরায় রাজত্ব করতে থাকে। অজস্র মন্দির ভেঙে ফেলা হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল দেহলির কাছে অগ্রদেশের বিখ্যাত শিবমন্দির তেজঃমহল। শোনা যায় এটি ছিল বিশ্বের উচ্চতম মন্দির। এর মধ্যে অবস্থিত লিঙ্গটিই নাকি এত বড় ছিল যে যমুনার অন্যপার থেকে দেখা যেত। লিঙ্গের অগ্রে অবস্থিত বলে গোটা জনপদেরই নাম হয় অগ্রদেশ। আগাগোড়া শ্বেতপাথরের তৈরি মহাতেজা লিঙ্গটি ছিল মহাশক্তির আধার। শিবরাত্রির সময় জল ঢালার জন্য লিঙ্গের অগ্রদেশ থেকে প্রয়াগ সঙ্গমস্থল পর্যন্ত মহিলাদের লাইন পড়ত। কেউ কেউ দশমাস অপেক্ষা করে তারপর একে স্পর্শ করতে পারতেন এবং তৎক্ষণাৎ তাঁদের পুত্রলাভ হত। যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়েও ধৈর্য হারিয়ে ফিরে যেতেন, বাড়ি পৌঁছনোর আগেই তাঁদের মাথায় হত বজ্রপাত। এই জাগ্রত মন্দিরটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন সম্রাট শাজাহান। মন্ত্রঃপূত লিঙ্গটিকে ভাঙার সাহস কেউ করেননি। সেটিকে অবিকৃত রেখেই চারদিকে মিনার তৈরি ফেলা হয়। তার নাম হয় তাজমহল। জায়গার নাম বদলে করা হয় আগ্রা। শিবলিঙ্গের মুন্ডটি থেকেই গম্বুজাকৃতি এক বিশেষ স্থাপত্য চালু হয় ভারতবর্ষে। হিন্দু ঐতিহ্যকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে এর নাম দেওয়া হয় পারসিক বা ইসলামী স্থাপত্য। হিন্দু লিঙ্গের গায়ে খোদাই করে দেওয়া হয় গোটা কোরান। এই অপরাধে শিবের অভিশাপে স্থপতি ইশা আফান্দি নুলো হয়ে যান। কিন্তু চিন এবং রাশিয়ার চক্রান্তে তাজমহলকে শাজাহানের কৃতিত্ব হিসেবেই ইতিহাস বইতে লেখা হতে থাকে। পুরোনো ইতিহাস মুছে যায়। অটোক্যাড, স্যাটেলাইট ইমেজ ইত্যাদি নানা উচ্চমানের প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ধার করা নিচের বিজ্ঞাসম্মত ছবিগুলি দেখলেই চক্রান্তের ব্যাপারটি বোঝা যাবে।
পরবর্তী সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে ষড়যন্ত্র চরমে ওঠে। তাঁর এক ভাই সুজা ছিলেন বঙ্গাল মুলুকের সুবেদার। সুজাকে খুন করার পর আওরঙ্গজেবের নজর আসে পূর্ব দিকে। একের পর এক ধর্মীয় স্থানকে তিনি হেয় করেন। পবিত্র হিন্দু তীর্থ কাশীর মন্দির ধ্বংস করে সেখানে আনারস চাষের ব্যবস্থা করা হয়। মন্দিরে আনারস ফলছে শুনে আওরঙ্গজেব নাকি উৎফুল্ল হয়ে বলেন ‘বনা আনারস’। সেই থেকে জায়গাটির নাম হয় বনারস। গোটা বঙ্গাল মুলুকে রাষ্ট্রভাষার বদলে চালু করা হয় অচল বাংলা। রামকে হেয় করার জন্য সেই ভাষায় বোকা ছাগলের নাম দেওয়া হয় রামছাগল। পুরোনো হিন্দু তীর্থক্ষেত্র গয়া কে ব্যঙ্গ করে রাজনীতিবিদদের আয়ারাম-গয়ারাম বলা শুরু হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে পূর্ব প্রান্তের ত্রিপুরাতে। হাজার হাজার বছর আগে মণিপুরে এসেছিলেন মহাভারতের মহাবীর অর্জুন। রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদাকে লুকিয়ে বিয়ে করার জন্য তিনি ত্রিপুরার গহীন জঙ্গলের মধ্যে তৈরি করেন দেবী নলিনীর বিখ্যাত মন্দির। মন্দিরটি ছিল বিরাট পুষ্করিণীর মধ্যে, সেখানে বনপদ্ম ফুটত। 'নলিনীর বিল' থেকেই জায়গাটির নাম বিলনলিয়া বা বিলোনিয়া। শুধু রামায়ণ নয়, সঙ্গে মহাভারতকেও হেয় করার জন্য আওরঙ্গজেব এই মন্দিরটি ধ্বংস করে ফেলেন। শুধু তাইই নয়, বঙ্গালের পশ্চিম দিকের মতো, এখানেও চালু করে দেওয়া হয় চিরস্থায়ী প্রোমোটাররাজ। ইতিহাসে একেই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তো বলা হয়। এই প্রোমোটাররা শুধু মন্দির ভাঙে তাইই নয়, গোটা হ্রদ বুজিয়ে ফেলে তার উপর রাস্তা, গোল চক, এইসব বানিয়ে দেয়। এমনকি দেবী নলিন এর লিঙ্গ পাল্টে, উচ্চারণের বর্ণবিপর্যয় ঘটিয়ে, তার নাম দেওয়া হয় দেব লেনিন। একসময়ে যেখানে পুকুরের পদ্মের উপরে বসে চাঁপার মতো আঙুলে দেবী নলিনী বীণা বাজাতেন, সেখানে বসানো হয় কেজিবির এক রাশিয়ান দাড়িওয়ালা লোকের মূর্তি। এই লোকটিকে শোষিতের মুক্তিসূর্য ঘোষণা করে হিন্দু দেবদেবীর বিকল্প হিসেবে দেখানো শুরু করা হয়। কেজিবির চক্রান্ত সম্পূর্ণ হয়।
পরবর্তীকালে রাশিয়ার মহাফেজখানা ঘেঁটে, লেনিনমূর্তি উল্টে নানারকম ফরেনসিক রিপোর্ট পরীক্ষা করে ভক্তরা পরিষ্কার দেখিয়ে দিয়েছেন, তথাকথিত দেব লেনিন আসলে কোনো মূক্তিসূর্য নন, বাম ও ইসলামী যৌথ চক্রান্তের অংশ। একেই এক কথায় বামৈস্লামিক বলা হয়। নিচের ছবি দেখলেই ব্যাপারটি পরিষ্কার বোঝা যাবে।
এই সমস্ত বর্ণনা থেকে এ কথা জলের মতো স্পষ্ট যে হিন্দুস্তানের ভাগ্যাকাশে বামৈস্লামিক ষড়যন্ত্র তার কালো ছায়া দীর্ঘদিন ধরে বিস্তার করেছে। স্থাপত্য, সঙ্গীত এমনকি দেবীমূর্তিও এরা চুরি করে নিয়েছে। ছিনিয়ে নিয়েছে ঐতিহ্য। সতীদাহের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রথা তারা রদ করেছে, ভারতীয় নারী আজ আর পুড়ে মরতে পারেনা। চালু করেছে বিধবা বিবাহ। কয়েক হাজার বছরের পুরোনো জাতিভেদপ্রথা আজ উঠে যাবার মুখে। গোটা জাতিই আজ ধ্বংসের সামনে।
তবে সৌভাগ্যক্রমে, এই চক্রান্ত চাপা থাকেনি। ভারতবর্ষের নানা বুদ্ধিমান লোকেরা, লোদী এবং শাহ বংশের বংশধরদের নেতৃত্বে ব্যাপারটি ধরে ফেলেছেন। তাই ১৯৯২ সালে মহাবিদ্রোহের সময় বাবরি মসজিদ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে দুই সাধ্বীর গলা জড়াজড়ি করে নৃত্য হিন্দুস্তানবাসীরা ভোলেনি। ভোলেনি ‘ইয়ে তো সির্ফ ঝাঁকি হ্যায়/ কাশী মথুরা বাকি হ্যায়’ যুদ্ধ জিগিরের কথাও। নলিনী শব্দের অর্থ পদ্ম। এমনকি ভক্তরা এই প্রতীক নিয়ে প্রচুর যুদ্ধের শেষে ত্রিপুরার বিধর্মী বিগ্রহটিকেও উপড়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। এখন বাকি আছে শুধু তাজমহল ভেঙে অগ্রদেশ পুনরুদ্ধার। পুরোনো ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণ। সে কাজও আশা করা যাচ্ছে দ্রুতই সুসম্পন্ন হবে। বানরসেনায় যোগদান করে আপনিও সেই শুভকাজে অংশীদার হতে পারেন।