যে ৪০ লক্ষ বাসিন্দাকে আসলে অনুপ্রবেশকারী বলে শনাক্ত করা গেছে, তাদের কি বহিস্কার করা উচিত নাকি তুখোড় প্রতিভাবান বলে সকলকেই মাথায় করে রাখা উচিত ?
জেলা |
জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর বাইরে জনসংখ্যা (শতকরা হিসেব |
দরং |
৩২.৪৯ |
হোজাই |
৩২.৪৯ |
বঙাইগাঁও |
২২.৪৯ |
বাক্সা |
১৭.৫৬ |
কামরূপ (মেট্রো) |
১৭.৪৯ |
শোণিতপুর |
১৭.৪৯ |
পশ্চিম কার্বি আংলং |
১৭.৪৯ |
চিরাং |
১২.৫ |
নগাঁও |
১২.৫ |
ওদালগুড়ি |
১২.৫ |
বিশ্বনাথ |
১২.৪৯ |
কাছাড় |
১২.৪৯ |
গোয়ালপাড়া |
১২.৪৯ |
কার্বি আংলং |
১২.৪৯ |
মরিগাঁও |
১২.৪৯ |
তিনিসুকিয়া |
১২.৪৯ |
ধেমাজি |
৭.৫ |
ধুবড়ী |
৭.৪৯ |
ডিব্রুগড় |
৭.৪৯ |
গোলাঘাট |
৭.৪৯ |
হাইলাকান্দি |
৭.৪৯ |
কামরূপ |
৭.৪৯ |
করিমগঞ্জ |
৭.৪৯ |
কোক্রাঝর |
৭.৪৯ |
লক্ষ্মীপুর |
৭.৪৯ |
শিবসাগর |
৭.৪৯ |
দক্ষিণ সালমারা |
৭.৪৯ |
ডিমা হাসাও |
৫.৫৭ |
বরপেটা |
২.৫ |
চারাইদেউ |
২.৫ |
যোরহাট |
২.৫ |
মাজুলি |
২.৫ |
নলবারি |
২.৫ |
জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত পর্যায়ের যে খসড়া প্রকাশিত হয়েছে, তার চেহারা একটু একটু করে পরিস্কার হচ্ছে। ৫ই অগস্ট আসামের দৈনিক পত্রিকা ‘নিয়মিয় বার্তা’য় ৩৩টি জেলার মোট আবেদনকারীর সংখ্যা আর বাতিল আবেদনপত্রের সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। কোন জেলায় শতকরা কত আবেদনপত্র বাতিল হয়েছে সেই হিসেবও ওই কাগজে প্রকাশিত হয়েছে। সেই হিসেব ওপরের সারণীতে দেওয়া আছে, যা থেকে অন্ততঃ এই কথাটা বলতেই হয় যে এই সংখ্যাগুলো অদ্ভুত, ভারী অদ্ভুত।
প্রথমতঃ ৩৩ টা জেলার বাতিল আবেদনপত্রের শতকরা হিসেব মাত্রই কয়েকটা সংখ্যার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছে। ৯টা জেলায় শতকরা বাতিল আবেদনপত্রের সংখ্যা হল একেবারে এক, ১২.৫ (দশমিকের পরে প্রথম ঘর অবধি কাছাকাছি পূর্ণসংখ্যা ধরে)। ১১ টা জেলায় এই সংখ্যা হল ৭.৫ (কাছাকাছি পূর্ণসংখ্যা ধরে) আর ৪ টে জেলায় ১৭.৫ এর কাছাকাছি। প্রত্যেক জেলার আবেদনকারীর সংখ্যা আলাদা আলাদা, বাতিল আবেদনের সংখ্যাও তাই। এদের অনুপাত এবং তার শতকরা হিসেবও সেইরকম আলাদা আলাদা হওয়া উচিত। অর্থাৎ ৩৩ টা জেলার থেকে ৩৩ টা আলাদা সংখ্যা আসা উচিৎ যাদের মধ্যে দু-একটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে প্রায় কোনো মিল বা পুনরাবৃত্তি বা সম্পর্ক থাকার কথাই নয়। তাহলে এতগুলো জেলার বাতিল আবেদনকারীর সংখ্যার শতকরা হিসেব কি করে একই রকম হল ! কেনই বা সেই হিসেবগুলো কয়েকটি বিশেষ সংখ্যার আশেপাশেই দল বেঁধে রয়েছে ! এইরকম ঘটা যে একেবারেই অসম্ভব তা নয় তবে তার সম্ভাবনা খুবই বিরল।
দুনম্বর, যেটা লক্ষ করার সেটা হল সংখ্যাগুলোর মান। কাকতালীয়ভাবেই মানগুলো সবই ০.৫ এর কাছাকাছি, যেমন ২.৫, ৭.৫, ১২.৫, ১৭.৫ এইরকম। আবারও বলি এইরকম ঘটার সম্ভাবনা বিরল যেহেতু আদতে সংখ্যাগুলো নিজেরাই আলাদা আলাদা এবং সম্পর্কহীন, এলোমেলো।
তাহলে এই অদ্ভুত সংখ্যাগুলোর দুটো ব্যাখ্যা হতে পারে। প্রথমতঃ অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা অত্যন্ত সুচারু এবং সুপরিকল্পিতভাবে প্রবেশ করেছিলেন; তাঁরা অত্যন্ত সুচতুরও ছিলেন। কোনো রাজ্যে প্রবেশ করার সময়ই তাঁরা জানতেন অনেকদিন পরে সেই রাজ্যের কতজন নাগরিকপঞ্জিতে নাম তোলার জন্য আবেদন করবেন। তাঁরা নিজেরদের অনুপ্রবেশ এমনভাবে সুনিপুণভাবে নিয়ন্ত্রন করেছিলেন যাতে বিভিন্ন জেলায় তাদের শতকরা হিসেব ঠিক ০.৫-এর গুণিতক হয় আবার হিসেবটা বিভিন্ন জেলায় ঠিক একইরকমও হয় ! এক দারুণ প্রতিভাবান গোষ্ঠীর মানুষের এক দুর্দান্ত ভবিষ্যৎ-দর্শনের দৃষ্টান্ত না ?
আর একটা সম্ভাবনা হল ক্ষমতাই ঠিক করেছে কোন জেলা থেকে শতকরা কত মানুষকে বাদ দিতে হবে (ওদেরও তো একটা লক্ষ্যমাত্রা থাকে, তাই না!)
(সংবাদপত্রের সব তথ্য সঠিক বলে ধরে নেওয়া হয়েছে)