(আপনাকে মনে রেখে, রবীন্দ্রনাথ)
সাত্যকীর খুব ভয় করছে। চারদিকে উন্মত্ত জনতা তরবারী, ত্রিশূল আর গৈরিক পতাকা হাতে হুংকার তুলছে। সকলের কপালে তিলক, কাঁধে গৈরিক উত্তরীয়। কিন্তু সমগ্র আর্যাবর্তে এই মুহূর্তে এমন কোনও ব্যক্তি নেই যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রথকে আবার সচল করতে পারে। দ্বিপ্রহর অতিক্রান্ত, কিন্তু রথের চাকা এক চুলও নড়েনি। কারণবারি সেবন করে মানুষ রাগে ফুঁসছে। বিলি করা হয়েছিল অঢেল মদ্য, অস্ত্র এবং অগ্নিসংযোগের দ্রব্যাদি। এখন নিষাদ এবং শূদ্রের রক্ত না দেখে এই হিংস্র অগ্নি নির্বাপিত হবে না। কিন্তু রথ যদি না অগ্রসর হয়, সে বড় লজ্জার। আরও কিছু সময় অতিক্রান্ত হলে রথের সারথীই যে বধ হবে উন্মত্ত জনরোষে, সে বিষয়ে আপাতত কোনও সন্দেহ নেই।
কিন্তু এর আগে কখনো এমন হয়নি। গুর্জরদেশের সৌরাষ্ট্রের উপর দিয়ে যখন সমগ্র জম্বুদ্বীপে আর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার কামনায় শ্রীকৃষ্ণ তাঁর রথযাত্রা সূচিত করেছিলেন, তখন থেকেই সে যাত্রার নিয়তি ছিল অপ্রতিরোধ্য বিজয়। অবশ্য রথযাত্রা করতেই হত। কিছুকাল পূর্বেই হস্তিনাপুর থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে রাজকার্য, অমাত্য, সান্ত্রী, শাসন ইত্যাদি কর্মে সাতাশ শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে শূদ্র, দ্রাবিড় এবং নিষাদদের হাতে। এ রায়দান অসহ্য, এবং সমগ্র জম্বুদ্বীপের আর্য স্বাভিমানের উপর মস্ত বড় আঘাত। দূষিত রক্তের অধিকারী এই সব পশুর মত লোকজন, যারা গণ্ডায় গণ্ডায় সন্তান উৎপাদন, সন্ত্রাসী কার্য্যকলাপ এবং অরণ্য আশ্রমের সমাহিত শান্ত পরিবেশকে দূষিত করা ছাড়া আর কিছুই করেনি এতকাল ধরে, সেই তাদেরকে এখন তোষণ করে চলতে হবে! এবং সেটাও হস্তিনাপুর রাজচক্রবর্তীর পেছনে জনসমর্থন সংহত করবার খাতিরে! এতখানি অন্যায় স্বাভিমানী আর্যের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। প্রথম গর্জন এসেছিল পশ্চিম প্রান্তের মহারট্ট প্রদেশের তিলক কুলপতির থেকে। তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করে বলেছিলেন এই রায় কার্যকর হলে সমগ্র জম্বুদ্বীপ দ্রাবিড় রক্তে সিঞ্চন করে পরিশুদ্ধ করবেন তিনি। আর্যহৃদয়সম্রাট চতুর শ্রীকৃষ্ণ বুঝেছিলেন এটাই উপযুক্ত ক্ষণ। এখনই যদি আর্য সংখ্যাগুরুকে রক্তের স্বাদ না দেওয়া যায়, তাহলে সাম্রাজ্য গঠনের স্বপ্ন অধরাই থাকবে। এই সাম্রাজ্য গঠনের মূল বাধা যে প্রাচীন প্রথা, অর্থাৎ মহাজনপদগুলির গণতান্ত্রিক উপায়ের মাধ্যমে সম্রাট নির্বাচন, সেই গণতন্ত্রকে পিষে ফেলে আর্য একনায়কতন্ত্রের বিজয়রথ চালাবার এটাই শ্রেষ্ঠ সময়। ঠিক সেই কারণেই মন্দির স্থাপনার আহ্বান।
আর কাকেই বা বিগ্রহ হিসেবে পূজিত করা হবে, ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ছাড়া? কে না জানে, ত্রেতাযুগে শূদ্র নিতে গেল ব্রাহ্মণের মান, চাইলে তপস্যা করতে, এত বড়ো আস্পর্ধা, সেদিনও অকাল লেগেছিল দেশে। দয়াময় রামচন্দ্রের হাতে যখন কাটা গেল সেই পাপিষ্ঠ শূদ্রের মাথা, একমাত্র তখন দেবতা তুষ্ট হলেন। রক্ষিত হল প্রকৃতির বিধান। চিরদিনই তো উঁচুর মান রেখেছে নিচু মাথা হেঁট করে। উঁচু-নিচুর সাঁকোর উপর দিয়েই তো রথ চলে। সেই বিধানকে মান্যতা দিয়েছিলেন যে আসমুদ্রকূলতিলক, এই মাৎস্যন্যায়ের দিনে তিনি ছাড়া আর কে-ই বা হতে পারেন পরিত্রাতা বিগ্রহ? কৃষ্ণ রাষ্ট্রবিক্ষোভ সৃষ্টি করলেন, অযোধ্যাতে শ্রীরামের জন্মভূমিতে দ্রাবিড় উপাসনালয় গঠিত হয়েছে। সেই উপাসনালয়কে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে রামলালার মন্দির স্থাপনা করলে তবেই আর্য-সিংহের আহত স্বাভিমানে সান্ত্বনার প্রলেপ পড়বে। আসলে এসবই বাগাড়ম্বর, সাত্যকী ভালই বোঝে। আর্য-সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতে শ্রীরামচন্দ্র অথবা রক্তের বিশুদ্ধতা, কোনওটাই খুব প্রয়োজনীয় নয়, কিন্তু সময়বিশেষে উপযোগী অস্ত্র। এ দ্বাপরযুগে না চলে অস্ত্র, না চলে শাস্ত্র, চলে কেবল স্বর্ণমুদ্রা – এ কথা বহুবার সে নিজেই শুনেছে শ্রীকৃষ্ণের মুখে। সেই মুদ্রার ব্যবসাকে চিরস্থায়ী করবার উদ্দেশ্যেই একনায়কতন্ত্র, কারণ সেখানে বাণিজ্য হবে অবাধ ও সুগম। আর সেই কারণেই এই রথযাত্রা, মন্দির নির্মাণের ডাক। দিকে দিকে শূদ্র নিধন।
হ্যাঁ, নিধন। গত প্রায় তিরিশ দিবসে কয়েক সহস্র শূদ্র এবং দ্রাবিড় নিধন ঘটেছে। যে যে অঞ্চল দিয়ে রথ গেছে, তা মৈত্রক হোক অথবা সৌরাষ্ট্র কি উজ্জয়িনী, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর উত্তেজক ভাষণ দিয়ে মানুষকে উন্মাদের মত রক্তপিপাষু করে তুলেছেন। সেই সঙ্গে বিলি হয়েছে অজস্র অস্ত্র এবং মদ্য। ফলশ্রুতিতে, সেই অঞ্চলগুলিতে হিংস্র আর্য জনগণ দ্রাবিড় মহল্লাগুলিতে আক্রমণ চালিয়েছে। পুড়িয়ে মেরেছে শূদ্র রমণীকে। ধর্ষণ এবং হত্যা চলেছে যথেচ্ছাচারে। সমগ্র আর্যাবর্ত জুড়ে হিংসার আগুন জ্বলে উঠেছে। প্রাণভয়ে গৃহত্যাগ করে শত শত দূষিত রক্তের অবমানবেরা আত্মগোপন করে আছে কৌশালি মিথিলা পাটলিপুত্রের সন্নিহিত অরণ্যগুলিতে। মহারট্ট প্রদেশের তিলক কুলপতি হুংকার ছেড়েছেন, একবার অনুমতি পেলে এই দ্রাবিড়দের পূজিত চন্দ্র-নক্ষত্র খচিত সবুজ রং-কে তিনি সমগ্র জম্বুদ্বীপ থেকে মুছে ফেলবেন। কলিঙ্গরাজ প্রমোদ বলেছেন যত অস্ত্র জমা হয়েছে সেগুলিকে ব্যবহার করলে এক রাত্রির মধ্যে জম্বুদ্বীপ দ্রাবিড় এবং শূদ্র শূন্য হয়ে যাবে।
কিন্তু মগধে এসে এ কী হল! রথ আর নড়ছে না কেন? আজ প্রাতঃকাল থেকেই এই সমস্যা। ইতোমধ্যে বহু চেষ্টা করা হয়েছে। একাধিক বলশালী পুরুষ এসেও নড়াতে পারেনি রথ। অশ্বেরা ক্লান্ত, তাদের সমগ্র শরীর থেকে স্বেদবিন্দু ঝরে পড়ছে। অজগরের মত নিশ্চল হয়ে পরে রয়েছে রথের রশি। কোন অশুভের সংকেত বহন করছে এই স্থবিরতা? রথের ভিতর স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পর্যন্ত অধৈর্য, বিরক্ত। রথ যদি একান্তই অগ্রসর না হয়, মগধের মত জনসমর্থনের গুরূত্বপূর্ন কেন্দ্র হাতছাড়া হবে তাঁর। এবং মগধ হাতের বাইরে চলে যাওয়ার অর্থ হল সেই বিরক্তিকর এবং অলাভজনক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটিকেই মান্যতা দিয়ে চলা।
গভীর ভাবনায় আচ্ছন্ন ছিলেন কৃষ্ণ। একটু পরে তড়িদাহতের মত উঠে দাঁড়ালেন। তিনি জানেন রথ কেন চলছে না।
রথের মাথায় ধীরে ধীরে উঠে এলেন ভগবান। সমবেত জনতা তাঁকে দেখে জয়ধ্বনি দিয়ে উঠল। আকাশে তখন দ্বিপ্রহরের সূর্য তার অগ্নিকিরণ বিচ্ছুরণ করছে। সেই স্বর্ণপ্রসবিনী বলয়ের সামনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে এক অলৌকিক পুরুষ মনে হচ্ছিল, যাঁর সমগ্র শরীর থেকে যেন হলাহল বিকিরিত হচ্ছে।
জলদগম্ভীর গলাতে প্রভু বললেন, "এ দুঃসময় কেন, তা আমি জানি। মূঢ় অধিবাসীগণ, তাকিয়ে দেখো, মহাপ্রলয়ের আগমন। গুরুগুরু শব্দ মাটির নীচে। ভূমিকম্পের জন্ম হচ্ছে। গুহার মধ্য থেকে আগুন লক্লক্ মেলছে রসনা। পূর্বে পশ্চিমে আকাশ হয়েছে রক্তবর্ণ। প্রলয়দীপ্তির আঙটি পরেছে দিক্চক্রবাল। "
জনতা ভয়ে আর্তনাদ করে উঠল। শিহরণ উঠল সাত্যকীর সর্বাঙ্গে।
“এ সবই ঘটমান, কারণ রথের চাকা চলছে না। ত্রেতাযুগে পুরোহিত মন্ত্র পড়তেন আর রথ হত অগ্রগামী। এ যুগে সে শাস্ত্র আর চলে না। কে দেবে এই রথের রশিতে টান?”
একজন চিৎকার করে উঠল “দেশে পুণ্যাত্মা কেউ নেই কি আজ? ধরুক-না এসে দড়িটা!”
শ্রীকৃষ্ণ গর্জন করে উঠলেন। “এ কোনও পুণ্যাত্মার কাজ নয় অজ্ঞান বালক! আর্যরথ চলছে না, কারণ আমাদের মননে দেখা দিয়েছে দোলাচল, দ্বিধা। আমরা দ্রাবিড় শূদ্র এবং নিষাদের প্রতি ঘৃণায় একনিষ্ঠ থাকতে পারিনি। আমাদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এই হত্যা এবং রক্তপাতের সার্থকতা নিয়ে। উত্তর দাও তোমরা আমার প্রশ্নের, এমন কেউ কী আছ যে পবিত্র ঘৃণায় অবিচল, জরুরী রক্তপাতে নিষ্কম্প, ধর্মরাজ্য স্থাপনার্থে অবশ্যম্ভাবী নিষ্ঠুরতায় নির্বিকার? বলো, উত্তর দাও আমাকে, কার হৃদয় এতখানি পবিত্র, কর্তব্যপালনে এতখানি অটল? একমাত্র তার হাতের ছোঁয়া পেলে তবেই চলবে রথ”।
উপস্থিত জনতা ইতস্তত করতে লাগল। কেউ সামনে এগিয়ে এল না।
শ্রীকৃষ্ণ পর পর তিনবার এই প্রশ্ন করলেন। “কার হৃদয় ঘৃণায় শুদ্ধ, হত্যা এবং ধর্ষণে অবিচল?”
সহসা জনতার মধ্য থেকে বজ্রপাতের মত উত্তর ভেসে এল “আমি।”
সকলে তাকিয়ে দেখল, এক শ্মশ্রুমণ্ডিত তরুণ। পরণে তার কাষায়বস্ত্র। দুই চোখে দীপ্ত অগ্নিশিখা, যেন দুই খণ্ড অজগরের মাথার মণি ঘৃণার আঁচে জ্বাজল্যমান।
মন্ত্রমুগ্ধের মত মানুষ তাদের পথ ছেড়ে দিল। এগিয়ে এসে তরুণ ভগবানের পদতলে প্রণিপাত করল।
“ওঠো, বৎস। কী নাম তোমার? কোথা থেকে আসছ?”
“আমি পশ্চিমের অনর্ত রাজ্য থেকে আপনার সঙ্গে চলেছি প্রভু। ইতোমধ্যে শতাধিক হত্যায় রঞ্জিত করেছি আমার হৃদয়, যা কখনো শূদ্রের কল্যাণ ভাবনাতে পাপবিদ্ধ হয়নি।”
“কি জাত তোমার?”
“মধ-ঘাঞ্চি প্রভু।”
অনগ্রসর সম্প্রদায়! শ্রীকৃষ্ণ শিহরিত হয়ে চক্ষু মুদিত করলেন। আর্যরথের রশি টানবে নীচ বর্ণ! তাহলে কোথায় যাবে ব্রাহ্মণ্যবাদ?
কিন্তু কিয়ৎকাল পরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে চক্ষু উন্মীলন করলেন তিনি। এই যদি মহাকালের ইচ্ছা হয়, তবে তাই হোক। কী এসে যায় ব্রাহ্মণ্য দিয়ে, আর্যরক্তের শুদ্ধতা দিয়ে, যদি তা স্বর্ণপ্রসবিনী না হয়, একনায়কতন্ত্রের পথে সহায়ক না হয়? কেন জানি না, এই তরুণের চোখ দেখে তাঁর মনে হচ্ছে, এ পারবে। তাঁর যোগ্য সেনাপতি হয়ে উঠতে পারবে এ।
কৃষ্ণ তরুণের কাঁধে হাত দিয়ে বললেন, "যাও বৎস, জয়যুক্ত করো নিজের পবিত্র ঘৃণা"।
মানুষ রুদ্ধশ্বাসে দেখল, তরুণ গিয়ে রথের রশি ধরল। সাত্যকী প্রস্তরবৎ হয়ে আছে, যেন কী ঘটছে কিছুই বুঝছে না। উপস্থিত অশান্ত ক্লান্ত অশ্বেরাও যেন কোন মন্ত্রবলে সজীব হয়ে উঠল। তরুণ টান মারল রথের রশিতে। আর কী আশ্চর্য, গগনবিদারী হুংকার নির্গমন করে অগ্রসর হল আর্যরথ।
জয়ধ্বনি করে উঠল জনতা। পাগলের মত উল্লাসে ত্রিশূল এবং তরবারি আকাশে তুলে হুংকার ছাড়ল। নতুন সেনাপতি পেয়ে গেছে তারা। আজ জম্বুদ্বীপে অপরক্তের পশুদের মহানিধনের পালা।
বাষ্পরুদ্ধ নয়নে তরুণকে আলিঙ্গন করলেন শ্রীকৃষ্ণ। “অভিনন্দন বৎস, জনতার এ মহাতরঙ্গ চালনার যোগ্য কাণ্ডারি তুমিই। তুমিই আমার উত্তরাধিকার।”
“আমি কি আমার ঘৃণার পবিত্রতা প্রমাণ করতে পেরেছি প্রভু? হত্যা এবং ধর্ষণে নিজের নির্বিকারত্ব স্থাপনে সক্ষম হয়েছি?”
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মৃদু হেসে তরুণের মাথায় হাত রাখলেন। “তুমি এখনো অপরিণত মস্তিষ্কের বৎস। তাই এই সত্য অবলোকন করছ না যে তুমি এখন সেনাপতি। ঘৃণা হল গড্ডলিকা ন্যায় জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেবার জিনিস। কিন্তু নেতা নিজের মনকে ঘৃণায় অন্ধ করে রাখলে রাজনীতি রণনীতির কুটিল হিসেব করবে কী উপায়ে? মানুষকে চালিত করো ঘৃণা এবং মদ দিয়ে। হত্যা করো শূদ্রকে। কিন্তু নিজের অন্তর্লোকে স্থির জেনো যে এই সমস্ত ঘৃণা, হত্যা, ধর্ষণ, এই শ্রীরামচন্দ্র, এই মন্দির, এই সবকিছুই আসলে ব্যবহার্য অস্ত্র। রক্ত চিরস্থায়ী নয়, নয় ঘৃণাও। চিরস্থায়ী একমাত্র স্বর্ণমুদ্রা। একমাত্র বাণিজ্যের প্রতি আনুগত্য রাখো বৎস। তবেই আমাদের বিজয়রথ এগিয়ে চলবে নগর থেকে গ্রামে, লোকালয় থেকে বন্দরে, পর্বত ছাড়িয়ে অরণ্যের দিকে, কাল থেকে কালান্তরে, যুগ পেরিয়ে, পরম আরাধ্য সংঘের মুক্তিদূত হয়ে অনিঃশেষ মহাকালের শেষ গন্তব্য থার্ড রাইখের যাত্রাপথে...”
মহা কল্লোলের মধ্যে ভাসমান রণতরীর ন্যায় রথের মাথায় অশ্বের রশি হাতে উপবেশন করল নরেন্দ্র নামক তরুণ। ভেতরে বসে ভগবান কৃষ্ণ তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে হাসলেন। রথ একটু পিছিয়ে গেল। সে যাক। তিনি জানেন, চলবার আগে চাকা সবসময়েই একটু পিছিয়ে আসে।