নো-ভোট-টু-বিজেপি একটি আন্দোলনের নাম। পরিষ্কার কথা, যাকে খুশি ভোট দিন, বিজেপিকে নয়। ভোটটা বিজেপির বিরুদ্ধে দিন। কারণ বিজেপি’র মতো হিংস্র ও ভয়ানক এই মুহূর্তে কোনও দল ভারতবর্ষে নেই। এই আন্দোলন নজর কেড়েছে মানুষের। আসন্ন নির্বাচনের জন্য ভোটের কথা আসছে বটে, কিন্তু এই-স্লোগান নিছক ভোটের স্লোগান নয় বলেই আমার মনে হয়। ভোট গুরুত্বপূর্ণ আয়ুধ, আবার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই তার বাইরে গিয়েও লড়তে হবে। জনমানস থেকে, জনসমাজ থেকে ক্রমশ গেঁড়ে-বসা বিভাজনের রাজনীতিকে উপড়ে ফেলতে হবে। বে-পরোয়া এই শক্তির সিংহভাগ শক্তি আসে মন্ত্রী-সান্ত্রী-পুলিশ-হাকিম-মিডিয়াসহ জেড-ক্যাটিগরির রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাবলয় থেকে, এই ক্ষমতাবলয় থেকে এদের দূরে রাখতে পারলে বেলুনের হাওয়া বেরিয়ে যায় অনেকটাই। এই হাওয়া বার করতে ভোট একটা মস্ত অস্ত্র বটে! যাইহোক, ‘যাকে খুশি ভোট দিন, বিজেপিকে নয়’, এখানেই হয়েছে কেলো, সিপিএম এতে ক্ষুব্ধ। ক্রুদ্ধ। সরকারিভাবে দলের ক্রোধ কিনা জানি না, ফেসবুকের সিপিএম-নামধারী ভক্ত-ক্যাডাররা খুব ক্রুদ্ধ। সরাসরি তাঁরা তীব্র ট্রোলিং-এ নেমে পড়েছেন এই ক্যাম্পেইনের বিরুদ্ধে। এমনকী সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে গিয়ে পোস্টার-ছেঁড়া বা উপরে-অন্য-পোস্টার-চাপিয়ে-দেওয়া অবধি গড়িয়েছে সেই ক্রোধ। নো-ভোট-টু-বিজেপি প্রচারে বিজেপি কতটা ক্রুদ্ধ জানা নেই, কিন্তু ক্যাডাররা দৃশ্যত ক্রুদ্ধ। সরকারিভাবে দল যদিও এই স্ট্যান্ডের বাইরে গিয়ে কথা বলেনি বা ক্যাডারদের এমত ট্রোল-আচরণের প্রতিবাদও করেনি।
আচ্ছা একটু পিছে মুড়কে দেখা যাক, কীভাবে শুরু হল এই ক্রোধ-লকলক বিরুদ্ধ প্রচার? মূলত নো-ভোট-টু-বিজেপি অংশ, সিপিআইএম লিবারেশন ও দীপঙ্কর ভট্টাচার্য – সবটা মিলিয়ে সম্প্রতি একটা মণ্ড তাঁরা বানিয়েছেন আর তার নাম দিয়েছেন লিবারেল। দীপঙ্কর ছিল তাঁদের প্রথম টার্গেট। কেন? গত বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ১২টি সিট জিতে মুহূর্তে উল্লেখযোগ্য বাম দল হিসেবে, দেশে প্রাসঙ্গিক আলোচনায় চলে আসে ভাকপা-মালে। দীপঙ্কর বলেন, বাংলায় তৃণমূলের থেকে বড় শত্রু বিজেপি। ব্যস, সেই বাক্য হল না হজম, শুরু হল সিনে মে জ্বলন।
তারপর নো-ভোট-টু-বিজেপি ক্যাম্পেইন জোরদার হল বাজারে। লেফট লিবারেলগণ, মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায়, সমর্থন করলেন দীপঙ্কর-উবাচ ও নো-ভোট-টু-বিজেপি প্রচার। বাংলায় লিবারেশনের কোনও স্টেক ছিল না অ্যাদ্দিন, কিন্তু সহি-বাম হিসেবে ভাকপা-মালের এন্ট্রি যেন শুরু হয়েছে বাংলায়, দীপঙ্কর ও তাঁদের দলের গ্রহণযোগ্যতা যেন ক্রমবর্দ্ধমান, আঁচ পেয়ে বিপন্নতাবোধ তাড়িয়ে বেড়াল ক্যাডারদের। সঙ্ঘী রাজনীতির ভয়াবহতা উপেক্ষা করে তারা পেছনে পড়ল লেফট লিবারেলদের। ‘লিবারেল’ শব্দকে গালি হিসেবে ব্যবহার করলে, নিজেকে যে কনজারভেটিভ হিসেবে দেগে দেওয়া হয়, সেই বোধও গেল হারিয়ে!
ট্রোলিং যে-একটি মানসিক বিকার, সমবেত ট্রোলিং যে-একটি মাস হিস্টিরিয়া, বেমালুম লোপাট হল মস্তিষ্ক থেকে! গোলি মার ভেজে মে! উল্টে তাদের স্বর মিলে গেল আরেসেস-বিজেপির স্বরের সঙ্গে! সঙ্ঘের বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধাচারণ করা জনপ্রিয় স্লোগানের বিরোধিতা করতে গিয়ে তারা সঙ্ঘের সহায়ক শক্তি হয়ে উঠল, এটাই ট্র্যাজেডি। নিতান্তই অপরাধবোধে সম্ভবত, অতি সম্প্রতি, সোশ্যাল মিডিয়ায় সিপিএম ক্যাডারদের পক্ষে দু-একটি পোস্ট দেখা যাচ্ছে, বিজেপিকে একটিও ভোট নয়, সম্ভাব্য বিজেপিকেও নয়। তাই সই, সকলেই চায় কমিউনিস্ট পার্টি গর্জে উঠুক আরেসেস-বিজেপির মতো সংগঠিত শক্তির বিরুদ্ধে, কিন্তু হা হতোস্মি, সেই প্রচারের সংখ্যার স্বল্পতা ও সদিচ্ছার অভাব দেখেই মালুম, বাঁ হাতে ফুল ছুঁড়ছেন চাঁদবণিক!
বাস্তবতা এমনই, সদিচ্ছা ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিটি মানুষ আজ পরিষ্কার স্ট্যান্ড নেবেন, যে দল যে-কেন্দ্রে বিজেপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী তাকেই ভোট দেওয়া হবে। যদি তৃণমূল হয় তৃণমূল, যদি সিপিএম হয় সিপিএম, কংগ্রেস হলে কংগ্রেস। সিধা হিসাব। বিরোধী দল রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে জোট করতে না-পারলে, মানুষই করবে মহাজোট। কিন্তু এই পরিষ্কার স্ট্যান্ড সিপিএমের না-পসন্দ। কিন্তু কেন? তার কারণ পানীয় জলের মতো পরিষ্কার, গত ভোটের হিসেব কষলে তাদের দুর্বলতা প্রকাশ হয়ে যাবে হাটের মাঝে, দু’বছর আগের লোকসভা ভোটে ৪২ আসনেই তাদের জামানত জব্দ হয়েছে, ২৯৪ বিধানসভা আসনের একটিতেও তাদের লিড নেই! ১৬৪-তে এগিয়ে তৃণমূল, ১২১-এ বিজেপি, সিপিএমের জোটসঙ্গী কংগ্রেস এগিয়ে বাকি ৯টিতে, সিপিএম ০। গত বিধানসভা ভোটের পাটিগণিত ধরলেও গুনতিতে আসে না পার্টি। ফলত ‘যে দল যে-কেন্দ্রে বিজেপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী’ বললেই সিপিএমের নাম আর থাকে না, তৃণমূল (এমনকী কংগ্রেসের নামও) এগিয়ে আসে। কোনও অবস্থাতেই তারা এই অবস্থাকে মেনে নিতে পারবে না। তাই তাদের আবদার নো-ভোট-টু-বিজেপি’র লগে লগে বলতে হবে ভোট-ফর-লেফট বা নো-ভোট-টু-টিএমসি। মামারবাড়ির আবদারের থেকেও এককাঠি বেশি আবদার!
বস্তুত, ডিভিডেন্ড পাবে তৃণমূল, এমন কোনও অবস্থাকে তারা মানবে না। তৃণমূল দলটি একটি ক্লাব গোছের, নেত্রীর ফ্যানক্লাবও বলেন অনেকে। দলগতভাবে তৃণমূলের যা বৈশিষ্ট বা অবস্থান, আপাতত তারা ডিভিডেন্ড পেলেও, ভবিষ্যতে, লড়াইয়ের মাঠে থেকে সেই ডিভিডেন্ড ছিনিয়ে আনা অপেক্ষাকৃত সহজ। অন্তত বিজেপির থেকে ছিনিয়ে আনার থেকে সহজতর। এই সত্য জানার জন্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক হওয়ার দরকার নেই। কিন্তু এই সত্য বোঝার মতো মানসিকতা বা বাস্তববোধ আজ সরকারি বামকুলের লুপ্ত।
এমনকী যে-কৃষক আন্দোলন নিয়ে দু’দিন আগেও ক্যাডাররা সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা কাঁপাত, সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতাদের বাংলায় আসন্ন আগমন নিয়ে তারা স্পিকটি নট, কারণ কৃষক নেতৃত্ব রাজ্যে আসবেন মূলত বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার করতে। কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্বে পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য হান্নান মোল্লা থাকা সত্ত্বেও ক্যাডারকুল মন থেকে মানতে পারছে না, কৃষক-নেতৃত্বের আসন্ন বাংলা-আগমন। কাঁটা আরও বিঁধছে কারণ কৃষক-নেতৃত্ব যাবেন দুই মাইলফলক সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে, জমায়েতে বলবেন বিজেপির বিরুদ্ধে। আগ্রাসী মনোভাব দেখে অনেকের আশঙ্কা, কৃষকদের না-আবার চালচোর বলে গালি দিয়ে দেয় অবিমৃষ্যকারী ক্যাডারকুল! অবশ্য কৃষকদের গালি দিলে ঝুঁকি আছে, তাঁরা আবার পাল্টা জমিচোর বলে দিতে পারেন!
কিন্তু কেন এই দশা হল ‘কমিউনিস্ট’ নামধারী একটি দলের? এই উত্তর খোঁজার জন্যও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হওয়ার প্রয়োজন নেই। মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ক্ষমতা হারানোর জ্বালা আজ দাউদাউ ঈর্ষা ও যন্ত্রণায় পরিণত। আর ঈর্ষার কোনও ইস্তেহার হয় না। আমরা তো সাতের দশকের সেলিম-জাভেদের হিন্দি সিনেমা দেখে-দেখে জেনে গিয়েছি, বুকের আগুন মাথায় উঠলে একমাত্র প্রতিহিংসাই পারে সেই আগুন নেভাতে! তাই হা-রে-রে-রে প্রতিহিংসা, এখন নেতা থেকে ক্যাডারে সংক্রমিত। ধর্মান্ধ হুজুরের খুঁট ধরতেও তাই কাঁপে না হাত! সোশ্যাল মিডিয়া দেখলে মনে হয়, অরাজনৈতিক অসূয়াজনিত এই সংক্রমণ কখন যে ক্যাডারকে ভক্তে পরিণত করেছে, সে ধরতেও পারেনি!
অবস্থা আজ এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে, প্রগতিশীল বাম আন্দোলন উচ্ছন্নে যায় যাক, বাংলার মাটি সাম্প্রদায়িক রাজনীতির রক্তে ভিজলে ভিজুক, বাংলার সংস্কৃতির সাড়ে-সব্বোনাশ ঘটলে ঘটুক, এনার্সি-লাঞ্ছিত মানুষের হাহাকারে ভরে যাক ডিটেনশন ক্যাম্প, কোই পরোয়া নেই! এমনকী নিজে মরলে মরব, তাও ভি আচ্ছা, তবু মেরে মরব!
ফলত বুকে বোম-বাঁধা আত্মঘাতী জঙ্গির মতো এগিয়ে চলেছেন ধুতি-পরা বৃদ্ধ স্ট্যালিন। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে টুম্পা-সোনা নামক নয়া-ইন্টারন্যাশানাল! ক্রমশ সেই সুর ফেয়ারওয়েল। বেহালা-বিধুর।
সিপিআইএম, একটি ফ্যাসিস্ট গাম্বাট পার্টি হিসেবে নিজেদের সর্বদাই হনু মনে করে। মনে করে স্যামুয়েল প্যাটির হত্যাকে সমর্থন করবে, অথচ কালুবর্গি আর দাভোলকরের হত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।
ছাগলের তিন নং বাচ্চারা জানেনা, ওদের ওসব কৌশল গণশক্তির যুগে চলত, এখনকার সহজলভ্য তথ্যের যুগে ওরা জাস্ট অপাংক্তেয়।
এরা চালচুরি নিয়ে দেড়শ পাতার হ্যাজ নামিয়ে দেবে, অথচ কয়লা বা কমনওয়েলথ নিয়ে নিজেদের নিচেরটা মুখে নিয়ে বোবা হয়ে যাবে।
রাম্বামকে একটি ভোটও নয়। নো ভোট টু বিজেপি স্লোগানের মানেই তাই। ইউ এ পি এ, ক্যানারসির বিরুদ্ধে থাকুন।
@ চেনা আলো চেনা অন্ধকার বাম থেকে যে গেছে সে আর চাইলেও কোনোদিন ফিরতে পারবে না। দরজা চিরকালের মত বন্ধ হয়ে গেল (অন্তত cpi ba cpim এর ক্ষেত্রে)। কিন্তু বিজেপি তে পাত্তা না পেয়ে অনেক প্রাক্তন tmc আবার tmc তে back করছে এবং অভ্যর্থনা পাচ্ছে।
আর সব চেয়ে বড় কথা হলো যেভাবে কয়লা ও গরু কাণ্ডে এক এক করে cbi আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছে, মে মাসের পর tmc দল টা অস্তিত্ব থাকবে কিনা সন্দেহ। অতি বামদের দেখে দুঃখ হয় তারা এমন একটা দলকে নিজেদের গডফাদার করেছেন যে দল টা অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। তবে একটা বাম শক্তি আর্থিকভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে, লাজ লজ্জাহীন তোষামোদি মিডিয়ার প্রপাগান্ডা প্রতিহত করে এবং অতি বামদের sabotaging করাকে পাত্তা না দিয়ে যেভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ে চলেছে তাতে ওদের হুঁশ ফিরতে পারতো। ফেরেনি যখন তখন জনগণের কাছে ' আদর্শবাদী ' অতি বাম দলের প্রকৃত চরিত্র উন্মোচন হয়ে গেছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে অতি বামদের, বিশেষ করে নকশালদের সন্মান করতাম যারা ভুল ঠিক যাই হোক একটা চেষ্টা করেছিল সমাজ পরিবর্তন করার। তবে এখনকার অতি বামরা অনেক বেশি চালাক। তবে অতি বামরা মিছে ভয় পাচ্ছেন। বিজেপি যদি ক্ষমতায় চলেই আসে তবে অতি বামরা ট্রটস্কি র দিব্যি দিয়ে বিজেপি কে নিজেদের গডফাদার বানিয়ে নেবেন। তবে ইতিহাস ক্ষমা করবে না একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে মনে হয়
পাবলিক যদি রাজনীতি বুঝত তাহলে কি আর কুপমন্ডুক শব্দটার প্রয়োজন হয়? RSS কি চায়় আর পবতে কি হচ্ছে সেটা ভাবতে তো!
পাবলিক রাজনীতি বোঝে না। তবে কে বা কারা রাজনীতি বোঝে ?
একটা বাম শক্তি আর্থিকভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে
CPI(M)'s income declined from Rs 104.84 crore to Rs 100.96 crore.
পাবলিক রাজনীতি বোঝে না। তবে কে বা কারা রাজনীতি বোঝে ?
ছাগলেরা, নেসেসারিলি
আপনারা বুঝতেই পারছেন। গুরুচন্ডালির রেসিডেন্ট রাজনৈতিক বোদ্ধা ও বিশেষ-অজ্ঞ পন্ডিত বলেছেন যে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এবং তৃণমূল একজোট হয়েছে (৮০% ভোট), কারণ তারা বাম ও কংগ্রেস এর জোটকে (১০%) হারাতে বদ্ধপরিকর। বাম ও কংগ্রেসের জোট পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা কুক্ষীগত করে রেখেছে, তাদের হাত থেকে ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে গোখরো সাপের খেলা চালু করছে বিজেপি ও তৃনমূল জোট।
পশ্চিমবঙ্গে এই দ্বিমুখী জোট-বনাম-জোট এর ৮০-বনাম-১০ এর লড়াই এ আপনারা সঠিক দিক বেছে নেবেন।
- পঃবঃ ছাগল ভেড়া সমিতি
মেঘের আড়ালে আর কেনো ??
#NoVoteToBJP নামানো লাজুক তৃণমূল, মানে আমাদের আগুনখোর লিবেরেশনের কমরেড বিপ্লবীরা , একই সাথে সোজাসুজিভাবে বলুন না #VoteForTMC । পলিটব্যুরো থেকে দীপ্ংকরবাবু কি এখনো সেই প্রস্তাব পাশ করান নি ?
অবশ্য আপনাদের কষ্টটাও মাঝে মাঝে বোঝার চেষ্টা করি । নন্দীগ্রামে আপনারাই যে উদোম শ্রেনীস্ংগ্রাম আর বিপ্লব নামিয়েছিলেন আরএসএস করা শুভেন্দু , মুকুল ইত্যাদিদের নিয়ে তা সম্পূর্ণ হয়নি ।( নোট: শুভেন্দু , মুকুল কিছুদিন আগে দুজনেই স্বীকার করেছেন পূর্বে তাদের আরএসএস-এর সাথে যুক্ত থাকার কথা ।) ( পুনশ্চ: আমি নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুর ইস্যুতে সিপিএমের নীতি এবং সেইসময় তাদের ব্যবহারিক রাজনীতির বিরুদ্ধে ।)। এছাড়াও সেইসময়ের কালপ্রিট পুলিশ কর্তা থেকে এলাকার 'হার্মাদ' সিপিএমেরা পরে তৃণমূলে এসেছেন ।
অবশেষে সেই বিশুদ্ধ লেনিনবাদী বিপ্লব এবার সম্পূর্ন করার সময় আসিয়াছে ।
বিজেপির সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে চারবার বিজেপির সাথে জোট করে ভোট লড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলই সেই বিপ্লবের কান্ডারী হবে ।
সিপিএমই তো সাম্প্রদায়িক দল বাংলায় । তারাই তো বাবরি মসজিদ ধবংসের পরও , গুজরাত দাঙ্গার পরেও বিজেপি সরকারে যোগ দিয়েছিল ; সিপিএমের নেতারা সেই সরকারের রেলমন্ত্রী, ক্রিয়ামন্ত্রী হয়েছিল । 2001 , 2004 ,2006 একসাথে ভোটে লড়েছিল ।
মমতা এসব কিছুই করেননি । আরএসএস নেতাদের 'প্রকৃত দেশপ্রেমিক' মমতা তো বলেননি , আবার আরএসএস নেতারাও গদ্গদকন্ঠে মমতাকে 'বাংলার দূর্গা ' বলেনি । এসবই সিপিএম করেছে । তারপর, লালকৃষ্ণ আডবাণী, অরুণ জেটলি , মুরলী মনোহর জোশী এরা বিজেপির ভালো লোক , এছাড়াও আডবানীকে রাষ্ট্রপতি করা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আপত্তি নেই - ইত্যাদি কথাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন নি । আডবানীকে নিশ্চয় বিপ্লবীর মকনে করেন লিবেরেশনের কমরেডরা , আসল বামপন্থিরা ( মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো সারটিফিকেট দিয়েছেন দীপ্ংকরবাবু রাই আসল কমিউনিস্ট !)।
২০১১ সালের পর সিপিএম ( তৃণমূল নয় ) ক্ষমতা আসার পরই রাজ্যে হিন্দু স্ংহ্তি , হিন্দু জাগরণ মঞ্চ , অস্ত্রসহ রামনবমীর মিছিল , রাজ্যে আরএসএস শাখার সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে । বসিরহাট-আসানসোল- ধূলাগড়-কাচড়াপাড়া-ভাটপাড়া এবং আমাদের বাড়ির পাশে আমডাঙায় দাঙ্গা , একরকম বছরের নিয়মিত সাম্প্রদায়িক অশান্তি শুরু হয়েছে । এসবই সিপিএমের আমলে ,মানে 2011 এর পর ।
এখন আবার রাজনৈতিক ম়ঞ্চ থেকে হনুমান চল্লিশা , চন্ডীমন্ত্র পাঠ ইত্যাদি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় আসল কমিউনিস্টরা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আগুনঝরা বিপ্লব নামাবেন ব'লে নেমেছেন মেঘনাদ হয়ে । হ্যাজ নামাচ্ছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। । কিন্তু সরাসরি তৃণমূলকে ভোট দিন - মানে যার জন্য এত নাটক , সমাবেশ , মিছিল ।
কাকে ঠকাচ্ছেন ( মানে , ভাবছেন সেরকম ;আপনাদের মধ্যে আবার আত্মশ্লাঘা , প্যাট্রোনাইজিং ব্যাপারটা হেব্বি কমন তো।) আপনারা ? এই ইন্টেলেকচুয়াল ডিজঅনেস্টির , এত চাতুরীর কি কোনও প্রয়োজন ছিল ?
আপনাদের ওই মিথ্যচারীতার ,ব্যবসার ফান্ডিং , রাজনৈতিক প্রোটেকশন বাংলায় দিদির দল করে ,এটা মোটামুটি সবাই বোঝে ( মানে , যারা চায় বুঝতে ।) ।
2011 এর ভোটের আগে এই গুরুচন্ডালী থেকেই পণ্ডিত আগুনখোর আসল কমিউনিস্টরা , আমেরিকার ,অতি-দক্ষিনপন্থী Q-NAN গোছের কন্সপিরেসি নামিয়েছিলেন - সিপিএম নাকি বডি কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছে , বহুলোক নিখোঁজ করে দিয়েছি , গাড়িবোঝাই লাশ ইত্যাদি । মানে ওয়াটসআপ আসার আগে , একক্থায় ফেক নিউজ ফ্যাশন হওয়ার আগেই আপনারা ফেক নিউজের উইপোনাইজ করতে শুরু করেছিলেন । ( পুনশ্চঃ আমি একথা বলছি না যে, বিমানবাবুরা সুর্যোদয় করাতে গিয়ে মানুষের উপর অত্যাচার করেনি , লুটপাট করেনি ।)
তাই নিজেদের বামপন্থি বলে মনে করলে অন্তত নূন্যতম সততার পরিচয়টুকু দেবেন । নইলে সাধারন লোকে এমনিতেও বাল্টি ব'লে পোছেনা আপনাদের , বিজেপির বিরুদ্ধে যে উদ্যোগগুলো নিচ্ছেন আপনারা তার বিশ্বাসযোগ্যতা থাকবে না ।
আমিও চাই বিজেপি বাংলা থেকে দূর হোক । এই নোংরা দলটি বাদ দিয়ে যে কেউ আসুক । তাতে সেটা তৃণমূল হলেও ক্ষতি নেই ।
কিন্তু দয়াকরে এই লুকা-ছুপি খেলার নোংরামি বন্ধ করুন । চেষ্টা করে দেখুন । অনেক দিনের বাজে অভ্যেস তো সময় হয়তো লাগবে ,কিন্তু বেটার লেট দ্যান নেভার ।
সিপিএম নিজের জোটসঙ্গী লিবারেশনের রাজ্য কমিটির সদস্যর নন্দীগ্রামের লেখা নিয়ে কেমন নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়েছে দেখ সিপিম।
!
বিশিষ্ট সাংবাদিক স্নিগনেন্দু বাবু বাংলায় বিজেপি আরএসএস এর উত্থান নিয়ে বইটি লিখেছেন । সেখানে তিনি আরএসএস নেতাদের যে বক্তব্য তিনি ছেপেছেন তাতে স্পষ্টভাবে তারা বলছেন তৃণমূল বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর কীভাবে আরএসএস বাংলায় তাদের শাখা সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ।
তবে এও ঠিক বামেরা 34 ক্ষমতায় থেকে বাঙালিকে এই হিন্দুত্ব রাজনীতি বিষয়ে সচেতন করার জন্য যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছিল - একথাও বলা যাবে না । তারা হয়তো গায়ের জোরে এই অন্ধকারের শক্তিকে বাড়তে দেয়নি,কিন্তু সেটুকুই যে যথেষ্ট ছিলনা তা 2011 এর পর প্রমাণ হয়েছে ।
তারজন্য অবশ্য তৃণমূলের আইডেন্টিটি পকিটিক্স অনেকাংশে দায়ী৷ একথা অবশ্য আমার ' আসল কমিউনিস্ট' কমরেডরা মানবেন না । তারাও অনুপ্রাণিত দিদির চন্ডীমন্ত্রে , হনুমান চল্লিশার পাঠে ।
এগুলো বলতে ভাল লাগে। চন্ডীপাঠ অনুপ্রাণিত দিদি ইত্যাদি। তাই কোনদিন কৃষক-শ্রমিক সমস্যা নিয়ে একটা কথাও না বলে নিয়মিত ধর্মীয় মঞ্চ থেকে উগ্র বক্তব্য দেয়া পীরজাদার থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া কমরেডদের চোখে পড়েনা।
এভাবে বিজেপিকে আটকানো যাবে? বুকে হাত দিয়ে বলুন কারো সাহায্য চাইনা, আমরা মানে কং+বাম+পীরজাদা জোট আটকে দেব। এবার হিসেবটা দেখান, কীভাবে জিতবেন বলে নিশ্চিত?
এখানে কেউ মমতাকে সততার প্রতীক মনে করেনা। কংগ্রেসের একটি আদর্শহীন উপদল। কংগ্রেসের হাত ধরে বামকে সরাল। বাংলার বাইরে কেউ পোঁছেনা। কিন্ত বিজেপি ? একজন আলেকজান্ডার, আরেেকজন ডাাকাাত।
বিহারে লালুর পরিবারের লূঠের সামনে দিদিভাইপো নস্যি। লালু এখনও জেলে। ছেলেমেয়ের বিরুদ্ধেও একগাদা করার করাপশনের কেস। জেলে গিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের হাত ধরতে বামফ্রন্টের কোন নীতিগত অসুবিধা হয়নি?
বিজেপির বিরুদ্ধে যেখানে যে প্রার্থী শক্তিশালী তাঁকেই ভোট দিতে হবে। মোট কথা বিজেপি ও বিজেপির সঙ্গে জোটবদ্ধ কোনো প্রার্থকে একটিও ভোট নয় । কেবলমাত্র একমুখী চেষ্টা হতে হবে " বিজেপি হারাও,দেশ বাঁচাও ।
বামঃ আগে মমতাকে হ্ঠাও, বিজেপিকে আমরা দেখে নেব, মমতা প্রধান শত্রু, মোদি সেকেন্ডারি।
তিনোঃ বামদের হঠাও, বিজেপিকে আমরা দেখে নেব, অনেক কাছ থেকে দেখব, বিজেপি দলের মধ্যে ঢুকে কাছ থেকে দেখব।
বিজেপিঃ মর শালারা। নেপোগিরিতে আমাদের সঙ্গে পারবি না, বাংলার মিষ্টি দই এবার আমরা মারবোই মারবো।
চমতকার লাগলো, অনেক ধন্যবাদ।
একটা ছোট্ট জিনিস নিয়ে জিজ্ঞেস করতে / মন্তব্য করতে চাই। ভুল বলে থাকলে মার্জনা করে দেবেন -
"জামানত" বোধহয় বাংলায় নেই। জামিন বা আমানত আরো খাটে।
আপনার আরো লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
এই নিন। অতিবদ অতিবামেদের সেকুলার নেতৃত্ব। দেখুন কেমন করে বিজেপির পাতা ফাঁদে পা দিতে হয়। একে দিয়ে বিজেপিকে আট্কাবেন?
আপনি মিছেই টেনসন করছেন রঞ্জন। মোটে সাত পার্সেন্ট ভোট নিয়ে বামেরা কিই বা করবে? বিজেমূল এমনিতেই জিতবে।
novotetobjp বনাম votetobjp পার্টির লড়াই তো হেব্বি জমেছে গুরু।
এইগুলো শুধু প্রতিশোধস্পৃহা নয়, এই ট্রোলিং-এর খবর কি পার্টি নেতৃত্ব রাখে না? অবশ্যই রাখে। তার মানে, এটা তাদের রাজনৈতিক লাইনও। এইটা ভেবে দেখার এই লাইন কেন তাদের নিতে হতে পারে?
ক) গত ভোটে সিপিএম সমর্থকদের অধিকাংশ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন, তার পরও সেই সমর্থন ফেরানোর জন্য সিপিএম কোনও কর্মসূচী নেয় নি। এর ব্যাখ্যা এরকম হতেই পারে, যে ভোট ট্রান্সফার করার জন্য সিপিএম বিজেপির থেকে টাকা পেয়েছিল। সেই চুক্তি এখনও বলবৎ। ফলে সিপিএম বিজেপির পে-রোলে আছে। এইবার ধরুন, আপনি ভোডাফোনের দোকানে কাজ করেন। মার্কেটে হাওয়া উঠল ভোডাফোন বয়কট করা হোক। আপনার ফাটবে না?
খ) ত্রিপুরায় সিপিএমের হারের পরে এটা প্রমাণিত যে সিপিএম সব ক্ষেত্রে বিজেপিকে আটকানোর মতন জায়গায় নেই। বিশেষতঃ, ক্ষমতা হারানোর পর তার সংগঠনের যে স্কেলে সংকোচন হয়, তা নকশাল ফ্রিঞ্জগ্রুপগুলোকেও শ্লাঘা প্রদান করে। তাই, বিজেপিকে আটকানোর বিকল্প সিপিএম নয়। বিজেপিকে আটকানো যদি ভোটের মূল উদ্দেশ্য হয়, তাহলে সিপিএমের কোনও লাভ নেই, বরং ক্ষতি- এরকম আত্মসমালোচনা তাঁরা করেই থাকতে পারেন।
গ) সিপিএমের যেকজন কর্মী সমর্থক টিকে আছেন, তাঁরা এক লাইনের এজেন্ডায় রয়েছেন- তৃণমূল হঠাও। ২০০৬ অবধি তৃণমূলের অস্তিত্বের যেমন একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল সিপিএম বিরোধিতা, এখন সিপিএমেরও তাই। ফলে নো ভোট টু বিজেপি ক্যাম্পেন, যা বলছে বিজেপির বিরুদ্ধে ইচ্ছে হলে তৃণমূলকেও ভোট দিতে, তার বিরোধিতা না করলে সিপিএমের ভিটেমাটি চাঁটি হবে।
আমরা ভেবে দেখলে বুঝব এই সবকটি কারণই এই আত্মহত্যামূলক লাইনে নিয়ে যায়। সিপিএমের অনেক অন্যভাবে ইন্টারভেন করার জায়গা ছিল। বিশেষতঃ নিও নরমাল আনার জন্য করোনার ভয়ে যেভাবে লকডাউন ফাউন করে স্কুল কারখানা ট্রেন বন্ধ করে রাখা হল, তার বিরুদ্ধে এন জিও না চালিয়ে রাস্তায় নামলেই গণসমর্থন ফিরে পেত। কিন্তু, ২০০৬ থেকে সিপিএম গাধার গাঁড়কে নিজের রাজনৈতিক অভীষ্ট ধরে এগোচ্ছে।
"ত্রিপুরায় সিপিএমের হারের পরে এটা প্রমাণিত যে সিপিএম সব ক্ষেত্রে বিজেপিকে আটকানোর মতন জায়গায় নেই।"
আর কত অসত্য, অর্ধসত্য শুনতে হবে? ত্রিপুরার প্রায় পুরো কংগ্রেস প্রথমে তিনোমুল হয়ে পরে বিজেপিতে চলে যায়। পবতেও সেই ট্রেন্ড চালু হয়েছে। সেইজন্যেই শুধু বিজেপিকে আটকে লাভ নেই। তিনোমুলকেও আটকানো দরকার কেননা তিনোরাই বিজেপির লাইফ লাইন।
যাঁরা সরাসরি রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নন বা কোনো রাজনৈতিক দলের দলদাস নন তাদের মনোভাব প্রকাশ করার একটা পরিসর যা গণতান্ত্রিক সমাজকে ঋদ্ধ করে তুলে ধরার এমন প্রয়াস এবারের নির্বাচনে এক নতুন জানালা খুলে দিয়েছে।
প্রতিবারই নির্বাচনে বাংলা তার স্বভাবসিদ্ধ নতুনত্বের পরিচয় নিয়ে আসে যা বাকি দেশ অনুসরণ করে।
এই প্রয়াস ও প্রচারের এক বালি দানা সম অংশ হতে পেরে গর্বিত।
NO VOTE TO BJP
এটা পেলাম।
প্রসঙ্গ ভোট কাটুয়া:
যে পাখি কাঠ ঠুকে খায়, তার নাম কাঠঠোকরা। তেমনই যে পার্টি ভোট কেটে খায়, তার নাম ভোট কাটুয়া। কিন্তু ভোট তো কাটারই জিনিস। সে তো সবাই কারো না কারোর ভোট কাটে, তবে এমন অদ্ভুত নামকরণ কেন?
এই শব্দটি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে। সেখানে AIMIM এর ভাগ্যে এই শিরোনাম জুটেছিল, কারণ শাসকদলের বিরুদ্ধে যে মহাগঠবন্ধন তৈরি হয়েছিল, তাতে তারা সামিল হয়নি এবং পৃথক ভাবে ভোট লড়ার ফলে কিছু কেন্দ্রে শাসকদল বিরোধী ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ার ফলে বিরোধী জোটকে হারস্বীকার করতে হয়েছিল। যদিও এখানে দুটো কথা বলার আছে।
এক, মহাগঠবন্ধনে মিমকে সামিল করানোর জন্য যথেষ্ট স্পেস ছাড়া হয়নি। মিমের সদিচ্ছা থাকলেও তাতে সাড়া দেওয়া হয়নি, বরং উল্টোটাই হয়েছে। তারা ১০টা সিট চেয়েছিল, তাতে রাজি হয়নি কংগ্রেস। ওরা নিজেরা ৭০টা দখল করে রেখেছে এবং ধেড়িয়েছে। বিহারের কোন বড় সভা না করে সেই সময় রাহুল গান্ধী কেরলে পড়ে থেকেছে। এখন প্রশ্ন হল, কংগ্রেসকে তাহলে ভোট কাটুয়া বলা হবে না কেন? নাকি বড় পার্টির জন্য এসব শব্দবন্ধ খাটে না! টুপি-দাঁড়ি দেখলেই এইগুলো মনে পড়ে!
দুই, মিম ২০টা আসনে প্রার্থী দিয়েছিল, তার মধ্যে মিম, মহাগঠবন্ধন এবং এনডিএ যথাক্রমে ৫, ৯ এবং ৬টা আসন পেয়েছিল, এর মধ্যে একটি মাত্র আসনে মিম এবং মহাগঠবন্ধনের প্রাপ্য ভোট যোগ করলে এনডিএ কে হারাতে পারতো। কিন্তু এনডিএ তো এগিয়ে ছিল ১৫টি আসনে। কিন্তু তবু 'ভোটকাটুয়া' তকমা জুটলো মিমের কপালে!
অর্থাৎ মোদ্দা যা দাঁড়ালো, শাসকদলের শাসনে যারা অতিষ্ঠ, তাদের ভোট যাদের কারণে ভাগাভাগি হয়ে যায় তাদের ভোট কাটুয়া বলা হয়। সেই মতো পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের শাসনে যারা অতিষ্ঠ, তাদের ভোট যাদের কারণে ভাগাভাগি হয়ে যেতে পারে, তাদেরকে ভোট কাটুয়া বলা যেতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গে শাসকদল তৃণমূল। তৃণমূলের শাসনে যারা খুশি নন, তারাই পরিবর্তন চাইছেন, যাচ্ছেন বিজেপিতে। সে কারণেই বিজেপি এখানে প্রধান বিরোধী শক্তি। এখন সে জায়গায় যদি আরেকটি বিরোধী শক্তি হাজির হয়, তাহলে কে কার ভোট কাটবে? Anti Tmc ভোট বিজেপি থেকে শিফট হবে সেই তৃতীয় ফ্রন্টে অর্থাৎ সংজ্ঞানুসারে, তৃতীয় ফ্রন্ট বিজেপির ভোট কাটুয়া।
এই সহজ সত্যটা বুঝতে এত অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, কিন্তু তবু হচ্ছে। হয়তো অভিজ্ঞতার অভাব থেকেই হচ্ছে। একটা জিনিস দেখুন, আমাদের রাজ্যে শাসনে আছে তৃণমূল। কন্যাশ্রী-রূপশ্রী-সাইকেল যেমন তাদের একটা ভোটব্যাঙ্ককে সুরক্ষিত করেছে, তেমনি আম্ফান দুর্নীতি, সারদা-নারোদা-রোজভ্যালি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে একশ দিনের কাজ- প্রতিটি প্রকল্প থেকে টাকা তোলা, এমনকি মিডডে মিল- রেশনের চাল চুরি করা--এসব কিছুর ফলে কিছু মানুষ তৃণমূলের হাত থেকে মুক্তি চাইছেন অবিলম্বে। একটা বড় পরিমাণ মানুষের অবস্থান এখন No_vote_to_tmc, সেই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়েই বাংলায় বিজেপির ভিত শক্ত হচ্ছে। সে জন্যই ওদের কেন্দ্রীয় স্লোগান 'আর নয় অন্যায়' বা ওদের রথের নাম 'পরিবর্তন যাত্রা'। এখন তৃণমূলের অত্যাচারে যারা ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, তাদেরকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে তৃণমূলের কোলে ঠেলে দেওয়া নিশ্চয়ই কোনো সচেতন নাগরিকের কাজ হতে পারে না, আর সেটা তাদের পক্ষে সম্ভবও নয়। ফলতঃ যদি সত্যিই No_vote_to_bjp করতে হয়, তাহলে anti tmc ভোট টানার জন্য bjp ছাড়া অন্য কোন ফ্রন্টকে শক্তিশালী করতে হবে। এটা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো বিকল্প নেই। আর যদি কেউ Yes_vote_for_tmc করতে চান, তাহলে তার কথা আলাদা। সে ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। তবে সেটা মুখে স্পষ্টভাবে বলে দিলে বোধ হয় ভালো হয়।
আর এর সাথে কিছু x-factor আছে।
এক, ধরুন, বিজেপিকে রুখতে সমর্থন-টমর্থন দিয়ে কোন তৃণমূলের নেতাকে বিধায়ক হিসেবে জেতালেন। রেজাল্টের পর তিনি বিজেপিতে ঝাঁপ দিলেন। একথা নিশ্চয়ই মানবেন, আজকে দাঁড়িয়ে সেটা কোন অলীক কল্পনা নয়। কি করবেন তখন?
দুই, মমতা ব্যানার্জিকে TMC জোট করতে গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল হতে হচ্ছে। হ্যাঁ, TMC জোটের কথাই বলছি। A,B,C- তৃনমূলের অন্তত তিনটি লবি আছে সব জায়গায়। ইলেকশনের আগের ক্ষমতা এবং টাকার যথাযথ বন্টন হলে এই জোট ভেঙে যাবে। A টিকিট পেলে, B যদি দাবিমতো ক্ষমতা বা টাকা না পায় দরজা খোলা পেলে বিজেপিতে শিফট করবে আর না পেলে আড়ালে থেকে বিজেপিতে ভোট করাবে। আর C হয়তো নির্দল প্রার্থীও হয়ে যেতে পারে। কি করবেন তখন?
এবারের নির্বাচন সত্যিই অন্যবারের মতো নয়। ফ্যাসিবাদের মুখোমুখি আমরা। সে বিপদ বুঝে যদি সঠিক রাস্তা না নেওয়া হয়, সুইসাইডাল হতে পারে কিন্তু। দয়া করে একটু ভাবুন।
বিজেপি, তিনোমুল এবং কংগ্রেসকে আটকাতে হবে। আবার খগেন মুর্মু বিজেপিতে যাচ্ছে। মানে বিজেপি, তিনো্মুল, কংগ্রেস এবং সিপিএমকে আটকাতে হবে। আবার তেজস্বীকেও আটকাতে হবে। নোটা ছাড়া গতি নেই।
তিনোরা হয়্ত ৪৫% ভোট পাবে। বাকি ৫৫% কোথায় যাবে?
যারা সত্যি সত্যি বিজেপিকে আটকাতে চায় অথচ সরাসরি রাজনীতি করে না তাদের অবিলম্বে একটি সদর্থক স্লোগান তোলা উচিতঃ "হয় তিনো নয় জোট।
২০১১ তে "যে আসে আসুক সিপিএম যাক" নামক বালখিল্য স্লোগানের লং টার্ম এফেক্ট এখন দেখা যাচ্ছে। "যে আসে আসুক" এর মধ্যে বিজেপিও প্রছন্ন ছিল। সেই স্লোগানধারীরা এখন পশ্চাতের চামড়া খোয়ানোর ভয়ে ভেক বদলে আবার একটি নির্বোধ নন-্কমিটাল স্লোগান দিয়ে বিজেপিকে আটকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে।
পলিটিশিয়ানের সুচিন্তিত বক্তব্যের সাথে অনেকটাই সহমত। বিহারে আসল ভোট কাটুয়া হল কংগ্রেস। একগাদা সিট নিল,, কিন্ত স্ট্রাইক রেট খুব খারাপ। লেফট গ্রুপের রেট ভাল। ওদের কিছু সিট বেশি দিলে ফল অন্যরকম হতে পারত।
কিন্ত কমরেড, জেতার পর বিজেপির দিকে টাকা বা পদের লোভে চলে গিয়ে গণেশ উল্টে দেয়া? এ ব্যাপারে ত গোটা দেশে রেকর্ড করেছে কংগ্রেস। আসামের হিমন্ত বিশ্বশর্মা একাই বিজেপিকে আনলেল। ইউপিতে সবচে বড় নেতা রীতা বহুগুণা। এমপিতে জোতিরাদিত্য 17 জনকে নিয়়ে। কর্ণাটকে 17 জনকে নিয়ে জারখোলি, যিনি সেক্স কাণ্ডে ধরা পড়়়লেন।
গুজরাতের গোয়ার মণিপুরের কংগ্রেস দলটিকে প্রায় তুলে দেওয়া বিধায়কের? বঙ্গে আপনার প্রধান জোটসঙ্গী কং থেকে দরকার পড়লে টোপ গিলবেনা? ভাবুন।
তিনোরা "দরকার পড়লে টোপ গিলবেনা? ভাবুন। "
গত দশ বছরে সিপিয়েমের কতজন নেতা তৃণমূলের টোপ গিলেছে?বিজেপির হাজারগুণ শাঁসালো টোপ বাম বিধায়করাও কি গিলবে না?
তাহলে তো মিটেই গেল। বিজেপই পবর ভবিতব্য। তক্ক শেষ। যাও সবে নিজ নিজ কাজে।
না, বিজেপিকে মমতা আটকে দেবেন। তাঁকে সাহায্য করুন।
আরেকটি misconception। নিজেরা আসতে না পারলে বিজেপি কোন না কোন ভাবে মমতাকেই ক্ষমতায় রাখবে। বামেদের উত্থান আটকে রাখার জন্য। তিনোর কতজন ও কারা কারা RSS এর হয়ে কাজ করে চলেছে তা অবোধ পাবলিকের পক্ষে জানা সম্ভব নয়।
পাবলিক অবোধ ও ছাগোল, তারা কুয়োর ব্যাঙ, রাজনীতি বোঝে না - সত্যিই কি তাই?