এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  পড়াবই  প্রথম পাঠ

  • ছত্রে ছত্রে মানসিক দৈন্য, বর্ণবৈষম্য, বিদ্বেষ, সামন্ততান্ত্রিক রুচির ক্লেদ

    সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়
    পড়াবই | প্রথম পাঠ | ৩০ আগস্ট ২০২০ | ৭৪৬৫ বার পঠিত
  • অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। মহাবিজ্ঞানী। কিন্তু মানুষটি কেমন ছিলেন? ১৯২২-২৩ সালে এশিয়া-আফ্রিকায় ভ্রমণকালে তিনি যে ডায়েরি লিখেছিলেন তার পাতায় পাতায় মেলে অশ্বেতাঙ্গদের প্রতি কুরুচিকর মন্তব্য। ২০১৮ সালে এ ডায়েরি প্রকাশিত হয়েছে বই হয়ে। পড়লেন চিকিৎসক সিদ্ধার্থ  মুখোপাধ্যায়

           

    শিব্রাম চক্কোতি মশাই তাঁর সাহিত্য-শৈশবে ‘মস্কো বনাম পন্ডিচেরি’ নামে একটি অসাধারণ  বই লেখেন। সাম্যবাদ ও অধ্যাত্মবাদ পরিক্রমা।  সেখানে অতি উমদা একটি কথা ছিল, যা আমার মতো বাঙাল এইভাবে মনে রেখেছে —আমরা মহাপুরুষদের এতটাই ‘মহা’ করে তুলি, যে  তাদের  পৌরুষ কমতে কমতে শেষে ‘পুরুষত্ব’-ই প্রায় নাকচ হয়ে যায়।

    এখানেও তাই। তিনি বিরাট মাপের বিজ্ঞানবিদ হয়েছিলেন অধীতবিদ্যায়। তার মানে এই নয় যে, তাঁকে সর্বদা ‘মডেল মনুষ্য’ হতেই হবে... পরকীয়াবর্জিত জীবন যাপন করতে হবে... মদ্যপান করবেন না… চুরুটের ধোঁয়া ছাড়বেন না... ইত্যাদি এবং ইত্যাদি।

    দ্বৈতসত্ত্বা নয়... একটি জীবনেরই দ্বৈতযাপন কিন্তু স্বীকৃত স্বাভাবিক ফেনোমেনন। দুজনেই এক অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। কখনও ভালোমানুষ—নমস্য বিজ্ঞানসাধক। আবার কখনও ভালোমানুষি ঝেড়ে ফেলা ‘মানুষ’ মাত্র—প্রণম্য নন।

     
    ***

    জার্মান-ইহুদি অ্যালবার্ট আইনস্টাইন শেষজীবন কাটিয়েছিলেন প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইমেরিটাস হয়ে। অন্যান্য ‘মেমোরি‌বিলিয়ার’ সঙ্গে সেখানেই রয়েছে তাঁর নিজের হাতে লেখা  নানা মৌলিক গবেষণাপত্র, অসমাপ্ত আত্মজীবনী (লিখেছিলেনই অবশ্য কয়েকটি পাতা) আর মোটাসোটা বেশ ক-খানা ডায়েরি—জার্মান ভাষায় লেখা। তাঁর উইলে নির্দেশ ছিল, মৃত্যুর পঞ্চাশ বছরের আগে কিচ্ছুটি প্রকাশ করা যাবে না।  তিনি মারা যান ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল। তাঁর নানা অশ্রুতপূর্ব কর্মকাণ্ড প্রকাশিত হতে থাকে ২০০৫ সালের শেষ থেকে।

    সেগুলিতে উঠে এসেছে তাঁর বিবাহিত জীবনের  হিসেব-না মেলা-আপেক্ষিকতা, তাঁর প্রথম যৌবনের  অগাধ ভালোবাসার (?) মনস্বিতা স্ত্রী মিলেভা মারিচের ওপর ‘ইমোশনাল (এবং অর্থনৈতিক... হয়তো শারীরিক) অত্যাচার’, সন্তানদের প্রতি পূর্ণ বিমুখতা, ডজনখানেক সঙ্গিনীসম্প্রীতি...। দুর্মুখরা বারংবার আঘাত দিয়েছেন তাঁর প্রতি অবিমিশ্র শ্রদ্ধার আধারে। তর্ক করলে দেখিয়ে দিয়েছেন তাঁর ডায়েরিগুলি!



    *** 

    ২০১৮ সালে ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছে আইনস্টাইনের ডায়েরির আর-একটি অংশ— The Travel Diaries of Albert Einstein—যাতে রয়েছে ১৯২২ সালের অক্টোবর থেকে ১৯২৩ সালের মার্চ মাস অবধি  স্ত্রীর সঙ্গে স্পেন থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে মিশর, ফলিস্তিন-সহ পশ্চিম এশিয়া এবং তারপর সিঙ্গাপুর থেকে চিন, হংকং হয়ে জাপান ভ্রমণের রোজনামচা। 

    বিস্ময়কর ভাবে সেখানে উঠে এসেছে নানা বর্ণবাদী ও জাতি-বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং বিতর্কিত মূল্যায়ন। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী উঠেছে আলোচনার ঝড়। দীর্ঘ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে ডায়েরি বা ব্যক্তিগত চিঠির পাতায় অকপটে তিনি কখনও ব্যক্তিবিশেষের ব্যাপারে বর্ণবাদী মন্তব্য করেছেন, নতুবা বিতর্কিত জেনারেলাইজেশন করেছেন একটি গোটা জাতিকে ধরে!

    ডায়েরিটি জার্মান থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করা-সহ পুরো বইটি প্রকাশের গুরুদায়িত্বে ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির ‘আইনস্টাইন পেপার্স প্রজেক্ট’-এর সহপরিচালক জে’এভ রোজেনক্রাঞ্জ। সংকলন করতে গিয়ে তিনি যখন আইনস্টাইনের বয়ানগুলো পড়ছিলেন, তখন ভাবছিলেন, ‘কী করে এমন (বর্ণবাদী) মানুষ একজন মানবতাবাদী আইকন হলেন!’ আইনস্টাইনকে কেন মানবতাবাদী আইকন মানা হত, সে আলোচনায় পরে আসছি। তার আগে চলুন দেখে নিই তাঁর ডায়েরির কিছু পাতা।



    ***

    এই সফরে আইনস্টাইনের সঙ্গী ছিলেন তাঁর ‘The Then  Wife’ এলসা লওয়েন্থাল। রোজনামচা পড়ার আগে খুব সংক্ষেপে এলসার প্রসঙ্গে বলা যাক। না হলে, ভ্রমণের কুশীলবদের নিয়ে পাঠক ধন্দে পড়ে যেতে পারেন। এলসা ছিলেন তাঁর খুড়তুতো বোন এবং প্রাক্তন প্রেমিকা।  ১৯১৮ সালে তিনি বিবাহিত আইনস্টাইনের জীবনে ফিরে আসেন। শুধু তাঁর সঙ্গে থাকার অভিপ্রায়ে স্ত্রী মিলেভা মারিচের শত আপত্তি বা ছোটোছেলের শারীরিক অবস্থা সত্ত্বেও আইনস্টাইন চলে যান বার্লিন। মিলেভাকে বার্লিন নিয়ে যেতে তাঁর ছিল প্রবল অনীহা। অন্তত ছেলে দুজনের জন্য তাঁদের একসাথে থাকা উচিত—মিলেভার এই চিঠির উত্তরে আইনস্টাইন একটি চুক্তিপত্র পাঠিয়েছিলেন মিলেভাকে যেটি তাঁর জগদ্‌বিখ্যাত  অঙ্কের সূত্রগুলির মতোই স্মরণীয় হয়ে আছে—




    অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ও তাঁর প্রথম স্ত্রী মিলেভা মারিচ (ছবিসৌজন্য উইকিপিডিয়া)



    ক. তোমায় নিশ্চিত করতে হবে যে,

    ১. আমার কাপড়চোপড় কাচা, পরিচ্ছন্ন ও গোছানো থাকবে

    ২. আমার ঘরে দিনে তিনবার খাওয়া পরিবেশন করা হবে

    ৩. আমার শোবার ঘর ও পড়ার ঘর পরিচ্ছন্ন থাকবে, বিশেষ করে আমার কাজের টেবল শুধু আমার কাজের জন্যই তৈরি থাকবে

    খ. আমার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তুমি পরিহার করবে, কেবল সামাজিক ভাবে যেটুকু যা দরকার তা বাদে। বিশেষ করে তোমায় ছাড়তে হবে—

    ১. বাড়িতে আমার পাশে বসে সময় কাটানো

    ২. আমার সঙ্গে তোমার বেড়াতে বেরোনো

    গ. আমাদের সম্পর্কে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে—

    ১. আমার থেকে কোনো অন্তরঙ্গ ব্যবহার আশা করবে না, কোনো বকাঝকা, শাসানি চলবে না

    ২. আমি অনুরোধ করলে আমার সঙ্গে কথা বন্ধ রাখবে

    ৩. আমি চাইলে আমার পড়ার বা শোবার ঘর ত্যাগ করবে

    ঘ. কথা দেবে যে আমাদের সন্তানদের সামনে আমায় কথায় বা ব্যবহারে ছোটো করবে না।

    আইজাকের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ রচনার শেষ মুহূর্তগুলোয়  তাঁর নির্জনতা ও প্রশান্তি বজায় রাখার জন্য অতি অপমানকর সেইসব শর্ত মিলেভা মেনেও নিলেন। কিন্তু এরপর বিবাহবিচ্ছেদ ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা! শেষঅবধি ১৯১৮-র জুলাইয়ে বিয়েটা ভাঙল।

    এর মধ্যে আবার এলসা লওয়েন্থালের মেয়ে ১৭ বছরের ইলসের মোহে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন আইনস্টাইন। বিয়েও করতে চান তাঁকে। কিন্তু শেষমেশ তা হয়নি, মেয়ে ইলিসেকে বিদেশে সরিয়ে দিয়েছিলেন  মা। ১৯১৯ সালে মানুষটি এলসাকে বিয়ে করেন।

     
    ***

    সেই এলসা লওয়েন্থালকে নিয়ে আইনস্টাইন বেরিয়েছিলেন এশিয়া-আফ্রিকা ভ্রমণে। সদ্য নোবেলবিজয়ী মানুষটিকে চিন-হংকং-সিঙ্গাপুর-জাপান-শ্রীলঙ্কা-মিশর-মরক্কোর মানুষজন যথাসাধ্য আপ্যায়িত করেছিলেন। রাজন্যবর্গ তো বটেই আমজনতাও।  সস্ত্রীক তিনিও তাদের সাথে বসে পানাহার করেছেন, বাজনা বাজিয়েছেন, আর অবসরের প্রহরে লিখেছেন ডায়েরি।




    অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী এলসা লওয়েন্থাল। (ছবিসৌজন্য লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস। প্রিন্ট্‌স অ্যান্ড ফটোগ্রাফ্‌স ডিভিশন, ওয়াশিংটন ডিসি)



    কী অদ্ভুত সেসকল এন্ট্রি! প্রতিছত্রে ঝরে পড়েছে মানসিক দৈন্য, সাদা-কালো-বাদামি বর্ণবৈষম্য, বিদ্বেষ, সামন্ততান্ত্রিক রুচির ক্লেদ। 

    চিনের অতিথিশালায় বসে তিনি লিখেছিলেন, ‘চিন আর হংকং-এর লোকগুলো যেমন নোংরা, তেমনি মোটাবুদ্ধির। কুলি শ্রেণির, বিদ্যাবুদ্ধি-রহিত, জঘন্য চেহারার। উবু হয়ে খেতে বসে... ঠিক যেন ইউরোপবাসীদের প্রাতঃকৃত্য করার ভঙ্গি। যাদের পুরুষ মনে হয়, তারা নাকি নারী আর নারীদের কথা নাই বা বললাম। আচ্ছা, এই মেয়েদের দেখেও কাম উদ্রেক হতে পারে!’

    মনে পড়ছে, হাসপাতালে আইনস্টাইনের জীবনের অন্তিম মুহূর্তগুলিতে, তাঁর ব্যক্তিগত নার্সটি ছিলেন এক চিনদেশীয় মহিলা, মায়ের স্নেহে তাঁকে শুশ্রূষা করেছিলেন। কে যেন বলেছেন—সময়ের নাম মহাজন/ ঘণ্টাপ্রতি GST  লন!

     
    ***

    ইজিপ্টের পোর্ট সঈদে কিছুটা সময় কাটিয়েছিলেন আইনস্টাইন দম্পতি। বন্দরে পৌঁছালেন যখন, জাহাজ থেকে নামার জন্য তক্তা বিছিয়েছিলেন এক মিশরীয়। আইনস্টাইন সেই লোকটির বিবরণ দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘নোংরা ডাকাত-দর্শন লেভান্টাইন’। পুরো পোতাশ্রয়ের আবহ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, এই ‘লেভান্টাইন’ লোকগুলিকে ‘যেন কেউ নরক থেকে থুতুর মতো ছিটিয়ে দিয়েছে’।



    *** 

    শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে ছিলেন কয়েকদিন। মহাপ্রাজ্ঞ মহাজন রোজনামচায় লিখলেন, ‘এদের চাহিদা কম... কুঁড়েমি বেশি।  অকথ্য নোংরা আর দুর্গন্ধ এদের বিশেষত্ব’।



    ***

    জাপানে ছিলেন সবচেয়ে বেশিদিন। জমিয়ে আড্ডা দিয়েছেন সম্রাটের মজলিশে। গেইশাসুন্দরীদের সান্নিধ্য তাঁকে করেছে চাঙ্গা আর চনমনে। কিন্তু মনে মনে বলেছেন অন্য কথা—‘জাপানিগুলো কোনো কাজের নয়। বুদ্ধিশুদ্ধি কম। কলা শিল্প আর সাহিত্য নিয়ে মেতে আছে। এসব নাকি স্বভাবগত! যত্তো সব’!




    জাপানে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। ১৯২২। (ছবিসৌজন্য উইকিপিডিয়া)



    তবে এর কিছুদিন পরেই এই মানুষটিই আবার জাপানিদের বিষয়ে লিখছেন, ‘বিশুদ্ধ আত্মা এদের। কোনো লোকদেখানো ভড়ং নেই। আমি তো মুগ্ধ। এজাতের উন্নতি অবধারিত।’

    ভোল পালটানোর কারণ আন্দাজ করা যেতে পারে।  ডায়েরির মাঝের এন্ট্রি দেখাচ্ছে, ‘ইলসে-কে আসার ছাড়পত্র দিয়েছে জাপান সরকার। অনেক বোঝানোর পরে... অবশেষে। কতদিন পরে দেখা হবে তার সাথে—আমার ইলিসের সাথে।…  জাপান দেশটা সত্যি সুন্দর। মানুষগুলোও’।



    ***

    আইনস্টাইন ভারতীয়দেরও ছাড়ান দেননি। প্রথমে একটু চমকেছিলাম।  আদতে প্রফেসরসাহেব তো তখন এদেশে আসেননি।  তাহলে ভারতীয়দের এত কাছ থেকে দেখলেন কোথায়? লেখা পড়ে বুঝলাম উনি কলম্বোতে কিছু এদেশীয় মানুষ দেখেছিলেন। ব্যস, খাতায় লিখলেন, ‘ভারতীয়দের জীবনযাত্রা প্রাগৈতিহাসিক। জলবায়ুর জন্যই… তারা সামনের বা পিছনের দিকে মিনিট পনেরোর বেশি ভাবতে পারে না’!




    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। ১৯৩০। (ছবিসৌজন্য উইকিপিডিয়া)



    ঝাঁকড়াচুলো এই অধ্যাপকটি মানুষ হিসেবে ছিলেন গাছপাকা বর্ণচোরা, হিপোক্রিট। ভারতীয়দের সম্বন্ধে যখন এমনধারা লিখছেন, তার আগেই রবি ঠাকুর নোবেলজয়ী হয়েছেন, এবং পরে দুজনের যথেষ্ট  হৃদ্যতাও হয়েছে। আমি অন্তত বিশ্বাস করব না যে উনি ততদিনে স্যার জগদীশচন্দ্র বসুর নাম শোনেননি আর সবচেয়ে বড়ো মিথ্যাবাদিতা হবে যদি বলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন ওনার অপরিচিত!



    ***  

    বিজ্ঞানীরা একটু মুখচোরা হন, সমাজের বিতর্কিত কিছু নিয়ে তাঁরা সাধারণত কথা বলেন না, এটি একটি প্রচলিত ধারণা। এই ধারায় সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বড়ো ব্যতিক্রম মানা হত আইনস্টাইনকেই। জার্মানিতে থাকাকালীন তিনি নিজেই ইহুদি-বিদ্বেষের শিকার হয়েছিলেন। উগ্র জাতীয়তাবাদ, সমরবাদ ও জাতিবিদ্বেষ নিয়ে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের দরুন তিনি চক্ষুশূল হয়েছিলেন নাৎসিদের। দেশান্তরী হয়ে মার্কিনমুলুকে পারেখে তিনি সামাজিক সমস্যার নতুন চিত্র দেখলেন, কিন্তু নিজেকে বদলাননি। তাই সেখানে গিয়ে বনে গেলেন কৃষ্ণাঙ্গদের রাজনৈতিক অধিকার আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ সমর্থক ও কর্মী। ১৯৪৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া এক ঐতিহাসিক বক্তৃতায় দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আইনস্টাইন বললেন, ‘এদেশে সাদা আর কালো মানুষে বিভাজন টানা হয়েছে। এই বিভাজন কালো লোকেদের সমস্যা নয়। এটা হল শ্বেতাঙ্গদের একটা রোগ।’

    হিটলারের তাড়ার তরাসে পালিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে বলেন, ‘জাতপাতধর্মবর্ণ-বিদ্বেষ হল সবচেয়ে বড়ো পাপ। খুনীর চেয়েও বড়ো অপরাধী হল সেই মানুষটি যে অন্যকে এর প্রেক্ষিতে ঘৃণা করে’।



    আইনস্টাইনকে ঘিরে চালানো হয়েছে শরণার্থী বিষয়ক রাষ্ট্রপুঞ্জের হাইকমিশন (UNHCR)-এর শরণার্থী সম্পর্কিত নানা ক্যাম্পেন। তাদের একটি স্লোগান ছিল, ‘শরণার্থীরা কেবল একবস্তা জিনিসপাতিই সঙ্গে করে আনে না তার নতুন দেশে। আইনস্টাইনও শরণার্থী ছিলেন।’ শরণার্থীদের প্রতি মূলধারার মানুষের ইতিবাচক ধারণা তৈরি ও বিদ্বেষহ্রাসের এ প্রচারণায় ‘আইকন’ হয়েছিলেন যে ব্যক্তি, তিনিই কিনা আবার চিনের অধিক জনসংখ্যার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘ব্যাপারটা দুঃখজনক হবে যদি চিনারা অন্যান্য সব জাতি-বর্ণের লোকেদের জায়গা নিয়ে ফেলে!’ তার মানে তিনি গোটা একটি জাতিকে নিজেদের অস্তিত্বের পক্ষে ‘বিপদ’ ভেবেছিলেন! স্পষ্ট জাতিবিদ্বেষ যাকে বলে।

    এসব পড়ে পাঠক হয়তো ভাবছেন—কাকে বিশ্বাস করব তবে? আপনাদের জন্য বইটির সম্পাদক ও প্রকাশক রোজেনক্রাঞ্জ বলেছেন—যেহেতু প্রকাশের উদ্দেশ্যে ডায়েরিগুলো লেখেননি আইনস্টাইন, তাই ভাবপ্রকাশেও খুব একটা লাগাম তিনি রাখেননি এবং সেগুলোতে বর্ণবাদ-জাতিবিদ্বেষের বাইরে অনেক ভালো কথাও আছে! তো এবার ভাবুন, বিশ্বের সবচেয়ে ঝানু ও সতর্ক কূটনীতিকও কি শোবার ঘরে একা থাকলে পোশাক নিয়ে অতি-সতর্কতা অবলম্বন করেন? 
     
    আজ কেউ কেউ বলছেন যে আইনস্টাইন একথা লিখেছিলেন বন্ধ ডায়েরির পাতায়। তার বাহ্যিক প্রকাশ ঘটেনি তো কখনও। মনে রাখা দরকার ভদ্রলোক ততদিনে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, জগৎজোড়া নাম হয়েছে। এমন লোকের ডায়েরি কিন্তু হরিপদ কেরানির রোজনামচা নয়।  আজ নয় কাল তা প্রকাশিত হবেই। হয়েছেও। 
    অর্থাৎ, উনি যা করতেন আর যা ভাবতেন, তার মাঝের বিস্তর ব্যবধান কোনোদিনই ঘোচেনি। যাপনে এবং লেখনে। সেগুলি সবই তাঁর বৌদ্ধিক দ্বিচারিতার অলংকারে ‘হলমার্ক’ হয়ে রয়ে গেছে।

    যা-ই হোক, আইনস্টাইনের নৈতিক দ্বিচারিতা বিচারের ভার দিনশেষে পাঠকের হাতেই ন্যস্ত রইল। আমার এই  লেখাটি কাউকে কাউকে আঘাত করবে—আঘাত করার মতো বলেই। তাকে সুগার-কোটেড নির্মোক দিয়ে লুকিয়ে রাখতে চাইনি বলেই।
    মহাকাল বড়ো সেডিস্ট যে।





    তথ্যসূত্র —
    1) The Travel Diaries of Albert Einstein. Edited and Translated by Ze’ev Rosenkranz. Princeton University Press. 2018.

    2) Einstein's travel diaries reveal 'shocking' xenophobia. Alison Flood. The Guardian, Tue, 12 June, 2020

    3) Troemel-Ploetz, D. (1990). Mileva Einstein-Marić: The Woman Who Did Einstein's Mathematics. Women's Studies International Forum. 13 (5): 415–432.
    --



    বইটি অনলাইন কেনা যেতে পারে— এখানে




    গ্রাফিক্স: স্মিতা দাশগুপ্ত
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • পড়াবই | ৩০ আগস্ট ২০২০ | ৭৪৬৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • dc | 103.195.***.*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:২২96853
  • "আইনস্টাইন তো কোয়ান্টাম ফিজিক্সও স্বীকার করেননি। নিজের ফিল্ডেও ইনফ্যালিয়েবল ছিলেন না"

    এটা বোধায় পুরো ঠিক হলোনা। আইনস্টাইন কোয়ান্টাম মেকানিক্সের "স্পুকি অ্যাকশান অ্যাট এ ডিসট্যান্স" মেনে নিতে পারেন নি আর প্রোবাবিলিস্টিক ওয়েভ ফাংশান নিয়েও আপত্তি করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে আইনস্টাইন-্বোর বিতর্ক স্মরন করা যেতে পারে, যা খানিকটা ফিলোজফিকালও ছিলো। স্বীকার করেননি নয়, বরং নিজের অবস্থান থেকে যুক্তি সহকারে বিরোধিতা করেছিলেন। আর আইনস্টাইনই কিন্তু পোডোলস্কি আর রোসেন এর সাথে বিখ্যাত ইপিআর প্যারাডক্স প্রোপোজ করেছিলেন যেখানে দেখানো হয়েছিল বোর আর শ্রডিঙ্গার এর কোয়ান্টাম ইনটারপ্রেটেশান অসম্পূর্ণ। এর ভিত্তিতে পরে বোম, জন বেল ইত্যাদিরা অনেক কাজ করেছেন।
  • সম্বিৎ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৪২96857
  • হামভি সরল করে লিখেছিনু। প্রোব্যাব্যালিস্টিক নেচার সম্বন্ধে "গড ডাজন্ট প্লে ডাইস" বলে হ্যাটা করেছিলেন।

  • dc | 103.195.***.*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:৩৩96860
  • হ্যাঁ, সেই বিখ্যাত উক্তি, গড ডাজ নট প্লে ডাইস ঃ-) আসলে আইনস্টাইন কোপেনহেগেন ইনটারপ্রেটেশান মেনে নিতে পারেন নি কারন উনি বোর আর শ্রডিংগারের নন-্লোকালিটি মানতে চাননি। তার কারন প্রথমত জেনারাল রিলেটিভিটিতে নন-্লোকালিটি আনা যেতো না (এখনও যায়না), দ্বিতীয়ত ফিলোজফিকালি ওনার মনে হয়েছিল যে নন-্লোকালিটি বা হিডেন ভেরিয়েবল, এগুলো আনা মানেই কোয়ান্টাম থিওরিতে কোথাও গলদ আছে। আমার কাছে আইনস্টাইন আর বোর এর এই ইন্টারপ্রেটেশান সংক্রান্ত তর্ক ভারি ইন্টারেস্টিং।
  • Atoz | 151.14.***.*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:৩৮96861
  • তারপরে জন বেল তো একেবারে দেখিয়েই দিলেন নন-লোকালিটি ই আছে। দেখাতে গেছিলেন, নেই, একসপেরিমেন্টে দেখা গেল এন্ট্যাঙ্গলমেন্ট! এই কোয়ান্টাম মানে একেবারে তুর্কীনাচন নাচিয়ে দিল মানুষকে!
  • dc | 103.195.***.*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:৪৪96862
  • আর একটু বলে নি, আইনস্টাইন কিন্তু ডিটারমিনিজম এ বিশ্বাস করতেন। মানে কোয়ান্টাম মেকানিক্স আর জেনারাল রিলেটিভিটি, এই দুটোকে মেলানোর অন্যতম প্রধান বাধা হলো প্রথমটি নন-্ডিটারমিনিস্টিক, অন্যটি ডিটারমিনিস্টিক। আর অন্য দিক দিয়ে দেখলে, জিআরকে কোয়ান্টাইজ এখনও অবধি করা যায়নি কারন জিআর প্রোবাবিলিস্টিক না। এই তো হলো ব্যপার ঃ-)
  • dc | 103.195.***.*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:৪৯96863
  • হ্যাঁ, জন বেল থিওরেম লিখে দেখালেন নন-্লোকালিটি আছে, আর অ্যালান অ্যাসপেক্ট হাতে কলমে সেটা দেখিয়ে দিলেন। অর্থাত জেনারাল রিলেটিভিটির অন্তত ওই অংশটা ভুল বা রিইন্টারপ্রেট করতে হবে।
  • সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় | 122.163.***.*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:৪৫96866
  • Black Board এর হালুম বাঘা তো পরিচিত ব্যক্তিত্ব কিন্তু Black Dairy র দুমলাটের  ভিতর যে বিল্লিটি থাকেন -- সেইটি বেরিয়ে পড়েই তো যত্ত গড়বড় !   

  • দীপ | 2409:4060:2189:da76:dddb:4d5a:fa74:***:*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:১৭96867
  • , ।।। ।।।।। ।।।।। ।।।।।
  • Himadri Mitra | 103.225.***.*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:৫০96876
  • Bahugami bigyani.osadharan gyani.

  • Anuradha Maity | 42.***.*** | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:১৩96925
  • Apurbo....eishob lekha porle nijeke jiggesh korte icjche hoye era ki dhoroner manush....eto ajana tothyo debar jonno ami khub khushi dactarbabu...fabulous write up.

  • সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় | 42.***.*** | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:২২96926
  • অনেকখানি  ধন্যবাদ। 

  • একক | 103.124.***.*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:০৮96955
  • আমি হয়তো কোনো তথ্য পড়ার সময় বাদ দিয়ে যাচ্ছি , কিন্তু আইনস্টাইন কোনোদিন , রেশিয়াল অধিকারের বিরুদ্ধে কিছু বলেছেন , বা রাষ্ট্রের সামনে বিভিন্ন রেসের আলাদা আলাদা মাপকাঠি হওয়া উচিত এরকম কোনো বক্তব্য বা কার্যে সাবস্ক্রাইব করেছেন , এমন কিছুই খুঁজে পেলুম না | রেসিস্ট তো একটিভিটি হয় , যখন আমি রেসের ভিত্ত্বিতে রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক বৈষম্যকে প্রমোট বা সাপোর্ট করি |

    কাকে বোকা ভাবি , কার নাকে পোঁটা , কারা ছাগল, এসব মানুষের ব্যক্তিগত অনুভূতি , এর সঙ্গে রেসিজম কে এক করে দেখা খুবই "ওক এক্টিভিজম " লাগলো | আজকাল ওক জিনিসপত্র চলছে খুব অবশ্য , সবাই সবার মাথার ভেতরের ইজারা নেওয়ায় মেতে উঠেছে | কারণ প্রয়োগের জমিতে হেরে ভূত |

    আবারো বলছি , আইনস্টেইন কোথাও কোনো রেসের অধিকারের বিরুদ্ধে কিছু বলে থাকলে সেটা মিস করেচি | কাজেই সে ক্ষেত্রে ওক কথাটা ফিরিয়ে নেবো | নচেৎ , একটা উদাহরণ দিয়েই বলি : এইযে আমি মনামি না কে একজন খুব জিলাছাপ নায়িকা আছেন , তো তাঁকে জিলাছাপ ভাবি বলে কাল তিনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নেপোটিজমের শিকার হলে ব্যাপারটার প্রতিবাদ করবো না এরকম আদৌ নয় | একচুয়ালি দুটোর কোনো সম্পর্ক নেই | এই সুস্থ স্বাভাবিক বৈপরীত্য আসলে ব্যক্তি ও সমাজের সহাবস্থান , ওক -রা এই হার্মোনিটা গুলিয়ে দিতে চায় ও মনের ওপর রাষ্ট্রীয় দখলদারির জমি তৈরী করে , মুখে উদারতার কথা বলে |

    *** পুরো বক্তব্য বই নিয়ে , বই এর সমালোচক তাঁর কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে করেছেন , চাইলে এনগেজ করা এড়িয়ে যেতে পারেন |
  • খোরাক | 76.72.***.*** | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:২২97089
  • এখানেও পোচ্চুর কমেন্ট নিজেই করে গেচেন দেকচি!

  • সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় | 42.***.*** | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:১৬97092
  • ঠিকই কয়েচেন। একই নেট থেকে বিভিন্ন জন ল্যান মাধ্যমে মতামত দিয়েছেন। আপনি উদ্বিগ্ন হবেন নাকো। 

  • হে হে | 104.225.***.*** | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:৫৬97095
  • সলিড খোরাক মাইরি। সংরক্ষনযোগ্য পিস।

  • দীপাঞ্জন | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:০৫97136
  • এককের সাথে একমত | রেসিজম (বর্ণবিদ্বেষ) আজকাল এতো লুজলি ব্যবহৃত হচ্ছে যে শব্দটা প্রায় অর্থহীন হয়ে পড়েছে |

    আর একটা সমস্যা হলো কালেকটিভ পপুলেশন আর সেই পপুলেশন এর এক ইন্ডিভিজুয়ালকে গুলিয়ে ফেলা | "ভারতীয়দের জীবনযাত্রা প্রাগৈতিহাসিক" আইনস্টাইনের এই মন্তব্যের সাথে, তাঁর আর রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত পরিচিতির, বিরোধ কোথায়? "ভারতীয়দের" মানে তো (সব) ভারতীয়দের নয়, অন অ্যাভারেজ |

    পপুলেশন সম্পর্কে পসিটিভ স্টেটমেন্ট এ অসুবিধে নেই - ইস্ট আফ্রিকানরা ভালো লং ডিসটেন্স রানার বা ওয়েস্ট আফ্রিকানরা ভালো স্প্রিন্টার ঠিক আছে, কিন্তু আফ্রিকানদের আইকিউ চাইনিজদের থেকে কম বললেই খেলা শেষ | জেমস ওয়াটসন হলেও শেষ, অ্যান্ড্রু সালিভান হলেও শেষ | হিউমান বায়ো ডাইভার্সিটি নিয়ে কোনো নেগেটিভ কালেকটিভ স্টেটমেন্ট করলেই "ক্যাথিড্রাল" এর হাতে,অন্তত আমেরিকাতে, "রেসিস্ট" দাগ নিয়ে কেরিয়ার খতম | যার ফলে নীশ কনসারভেটিভ ব্লগোস্ফিয়ার বাদ দিলে প্রচন্ড সেলফ-সেন্সরিং চলে | তার থেকে এই ডাইরি বেটার |

    আইনস্টাইন আর রেস্ প্রসঙ্গে আমার যেটা ইন্টারেষ্টিং লাগে সেটা হলো "এশিয়ান এক্সক্লুশন এক্ট" চালু থাকা সময়ে, এশিয়ানদের বা এমনকি অসাধারণ নন এমন জিউদেরও যে অসুবিধের মধ্যে দিয়ে যেতে হতো, সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকায় ইমিগ্রেট করা | সেই প্রসঙ্গে কোনো রেফারেন্স থাকলে ভালো হতো | রেসিস্ট, প্রকৃত অর্থেই, ইমিগ্রেশন এক্ট এর অ্যাডভান্টেজ নেওয়ায় কোনো অস্বস্তি ছিল কি ?
  • Mohua Chatterjee | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:৫৪97397
  • চরম খোরাক :-)


    তবে , একটু বেশি করে দেখলে বোঝা যাবে আন্টি সেমিটিক ফ্লাভোর তো আছে। 


    আমরা সবাই কিন্তু অল্প আধটু বর্ণবিদ্বেষী (মানে একটু প্রাদেশিক তাই অত গেয়ে লগে না এই বলছিলাম আরকি 

  • dc | 103.195.***.*** | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:০৭97398
  • অল্প আধটু বর্ণবিদ্বেষী????!!!! ভারতীয়দের মতো প্রচন্ড রেসিস্ট খুব কম আছে। আমরা ভয়ানক রকম বর্ণবিদ্বেষী। 

  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন