এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হনুমানের রোমন্থন এবং মনস্তাপ

    Ashoke Ghosh লেখকের গ্রাহক হোন
    ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৮ বার পঠিত
  •                 হনুমানের রোমন্থন এবং মনস্তাপ
     
    গঙ্গার উৎসমুখ গঙ্গোত্রীর সন্নিকটে এক সুবিশাল বিস্তৃত শিলাখণ্ডের উপরে অধোবদনে উপবেশন করিয়া মহাবলী চিরঞ্জীবী হনুমান বিষণ্ণবদনে রোমন্থন করিতেছিলেন -
     
    তাঁহার জন্মগ্রহণের পর হইতে কত সহস্র বৎসর অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে, এই ধরাধামে কত কিছু ঘটিয়া গিয়াছে, কত রাজা-মহারাজা-সম্রাটের উত্থান-পতন হইয়াছে, কত দুর্যোগে প্রাণীকুল বিপন্ন হইয়াছে, ক্ষমতার লালসায় কত যুদ্ধ-বিগ্রহ সংঘটিত হইয়াছে, তিনি সকলই চাক্ষুস করিয়াছেন। চিরঞ্জীবী হইবার বরপ্রাপ্তিতে তিনি যৌবনারম্ভে উৎফুল্ল হইয়াছিলেন, কিন্তু শ্রীরামচন্দ্রের জীবনাবসানের পর এবং তাঁহার সকল স্বজন মিত্র ও সুহৃদগণের স্বর্গগমনের পর হইতে যত দিন অতিবাহিত হইতেছে তিনি একাকীত্বের যন্ত্রণায় মানসিকভাবে তত বিপর্যস্ত হইতেছেন। মানসিক যন্ত্রণা হইতে মুক্তি পাইবার নিমিত্ত তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অদৃশ্যভাবে বিচরণ করিতে থাকেন, কিন্তু তাঁহার দুঃসহনীয় মানসিক যন্ত্রণা নিরসন না হইয়া ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাইতেছে। সুহৃদ, স্বজন ও মিত্রহীন হইবার পর হইতে কয়েক সহস্র বৎসর সমগ্র পৃথিবী নিরন্তর ভ্রমণ করিবার কালে তিনি কখনও কখনও বিভীষণ, পরশুরাম, বেদব্যাস, মার্কণ্ডেয়, অশ্বত্থামা আদি চিরঞ্জীবীগণের দর্শন পাইয়াছেন। তাঁহাদের সহিত বাক্যালাপে হনুমান জানিতে পারিয়াছেন যে, তাঁহারাও হনুমানের ন্যায় জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হইয়া বিবিধ উপায়ে প্রাণত্যাগ করিবার চেষ্টা করিয়াও চিরঞ্জীবী হইবার কারণে সফলকাম হইতে পারেন নাই। চিরঞ্জীবী হইবার বরদান তাঁহাদের জীবনে অভিশাপে পর্যবসিত হইয়াছে।
    হনুমানের স্মরণে আসিল, কিস্কিন্ধ্যার নৃপতি সুগ্রীব ও শ্রীরামচন্দ্রের আদেশে মাতা জানকীর অনুসন্ধান করিবার কালে বালিপুত্র অঙ্গদ, জাম্ববান আদির সহিত সমুদ্রতীরে উপস্থিত হইবার পর সমুদ্র লঙ্ঘন করিয়া লঙ্কা যাইবার সময় জাম্ববান তাহাকে তাহার জন্মবৃত্তান্ত এইরূপ বলিয়াছিল –
     
    “একদা এক তপস্বী বানরের রূপ ধারণপূর্বক বনমধ্যে তপস্যারত ছিলেন। পুঞ্জিকস্থলা নামে এক অপ্সরা ক্রীড়াচ্ছলে একদিন সেই তপস্বীর তপস্যায় বিঘ্ন ঘটাইলে তপস্বী পুঞ্জিকস্থলাকে এই বলিয়া অভিশাপ দিলেন যে সে বানরীরূপে জন্মগ্রহণ করিবে। তপস্বীর অভিশাপে পুঞ্জিকস্থলা কুঞ্জর নামক এক বানররাজার কন্যারূপে জন্মগ্রহণ করিলে তাহার নামকরণ হইলো অঞ্জনা। অঞ্জনা যৌবনবতী হইবার পর সুমেরু পর্বতের বানররাজ কেশরীর সঙ্গে তাহার বিবাহ হইয়াছিল। বিবাহের বহুদিন পরে বসন্তকালের এক মনোরম দ্বিপ্রহরে উদ্ভিন্নযৌবনা অঞ্জনা অতি স্বচ্ছ্ব সূক্ষ্ম বসনাবৃতা হইয়া এক সুরম্য বনমধ্যে সরোবরে স্নান করিবার জন্য উপস্থিত হইলো। তখন কোকিলের কুহুতানে এবং নানাবিধ পাখিদের কূজনে বনভূমি মূখরিত হইয়া উঠিয়াছিল। বিভিন্ন বনফুলের সৌরভে বনভূমি আমোদিত হইয়াছিল। ঝিরিঝিরি দখিনা বাতাসে অঞ্জনার সূক্ষ্ম বসন বারংবার স্খলিত হইয়া অঞ্জনার যৌবনদৃপ্তা শরীরের আকর্ষণীয়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দৃশ্যমান হইতেছিল। অঞ্জনার অপরূপ রূপ দর্শনে বায়ুদেবতা পবনদেব কামতাড়িত হইয়া অঞ্জনার নিকট উপস্থিত হইয়া তাহাকে সবলে আলিঙ্গন করিয়া সম্ভোগ করিতে চাহিলে অঞ্জনা সলজ্জে বাধাদান করিতে থাকেন। তখন পবনদেব আত্মপরিচয় দিয়া অঞ্জনাকে কহিলেন, হে অনিন্দ্যসুন্দরী, তোমার মনোহর রূপদর্শনে আমি কামার্ত হইয়াছি। আমি তোমার সহিত মিলিত হইলে তোমার একটি বীর্যবান, বুদ্ধিমান, মহাবল পুত্র জন্মগ্রহণ করিয়া ত্রিভূবনে অক্ষয় কীর্তি স্থাপন করিবে। অঞ্জনা পবনদেবের সহিত মিলিত হইবার পরিণামস্বরূপ যথাকালে অঞ্জনা একটি পুত্রসন্তান প্রসব করিলেন। জন্মগ্রহণ করিবার পর কিছুদিন অতিক্রান্ত হইলে একদিন প্রভাতকালে আকাশে উদীয়মান সূর্যকে দর্শন করিয়া অঞ্জনাপুত্র কোনো সুপক্ক ফল ভাবিয়া তাহাকে খাইবার উদ্দেশ্যে ভীষণ বেগে উল্লম্ফন করিয়া সূর্যের প্রতি ধাবিত হইল। সেই সময় সূর্যকে গ্রাস করিবার জন্য রাহু সূর্যের প্রতি অগ্রসর হইতেছিল কিন্তু অঞ্জনাপুত্রকে সূর্যের প্রতি ধাবিত হইতে দেখিয়া রাহু ভীত হইয়া ইন্দ্রকে স্মরণ করিলে ইন্দ্র তথায় উপস্থিত হইয়া অঞ্জনাপুত্রকে তাহার বজ্রদ্বারা আঘাত করিয়াছিলেন। ইন্দ্রের বজ্রের আঘাতে অঞ্জনাপুত্রের হনু (চোয়াল) ভঙ্গ হইলে সে অচেতন অবস্থায় ভূতলে পতিত হইল। অঞ্জনাপুত্রের এইরূপ অবস্থা দর্শনে পবনদেব ক্রুদ্ধ হইয়া পৃথিবীর সমস্ত বায়ুপ্রবাহ স্তব্ধ করিয়া প্রত্যাহার করিয়া লইলে বায়ুর অভাবে সমস্ত প্রাণীকুলের প্রাণসংশয় হইয়া উঠিল। সমস্ত প্রাণীকুলের প্রাণসংশয় দেখিয়া মহাদেব, ব্রহ্মা, বরুণ, অগ্নিদেব আদি পবনদেবকে অনুনয় করিলেন বায়ুকে মুক্ত করিয়া দিবার নিমিত্ত যাহাতে সৃষ্টি বিনষ্ট না হয়। সমস্ত দেবতার অনুনয়ে পবনদেব কহিলেন সকল দেবতা আমার পুত্রকে বরদান করিলে তিনি বায়ুকে মুক্ত করিয়া দিবেন। যেহেতু দেবরাজ ইন্দ্রের দ্বারা নিক্ষিপ্ত বজ্রের আঘাতে হনুমান আচেতন হইয়াছিল, সেইহেতু তিনি অঞ্জনাপুত্রকে বরদান করিলেন যে অঞ্জনাপুত্রের শরীর ইন্দ্রের বজ্রের মতো কঠিন ও শক্তিশালী হইবে এবং বজ্রের আঘাতও তাহার উপর ব্যর্থ হইবে। তারপর অন্যান্য দেবতারাও হনুমানকে এইপ্রকার বর দিলেন - অগ্নিদেব বর দিলেন যে আগুন তাহাকে দহন করিবে না, বরুণদেব বরদান করিলেন যে জল তাহার কোনো ক্ষতিসাধন করিবে না, পবনদেব বরদান করিলেন যে হনুমান বায়ুবৎ বেগবান হইবেন এবং তিনি যথা ইচ্ছা অবাধে যাইতে সক্ষম হইবেন ও বায়ু হইতে তাহার কোনো ক্ষতিসাধন হইবে না। ব্রহ্মা তাহাকে অমর বর দিলেন এবং তাহার নাম রাখিলেন হনুমান, আর তুমিই সেই হনুমান। এইরূপে নানাবিধ বরপ্রাপ্তির ফলে তুমি অসীম ও অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হইয়া কৈশোরকালে তোমার ক্ষমতা অনাবশ্যকভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির উপর প্রয়োগ করিয়া কৌতুক উপভোগ করিতে। এইরূপে একদা ধ্যানমগ্ন ঋষিদের সহিত কৌতুক করিলে, ঋষিগণ তোমাকে অভিশাপে দিলেন যে, তুমি তোমার অপরিসীম ক্ষমতার বিষয় বিস্মৃত হইবে, তবে যদি কেহ কখনো তোমার যৌবনকালে দেবতাগণের বরদানে লব্ধ অপরিসীম ক্ষমতার বিষয়ে স্মরণ করাইয়া দেন তখন তুমি পুনরায় তোমার ক্ষমতার বিষয়ে অবহিত হইতে পারিবে।”
     
    হনুমানের পুনরায় স্মরণে আসিল, সমুদ্র লঙ্ঘণ করিবার কালে তিনি তাঁহার দেহ পর্বতের ন্যায় বিস্তৃত করিয়া লঙ্কায় পৌঁছাইবার নিমিত্ত প্রচণ্ড বেগে উল্লম্ফন করিয়া সমুদ্র অতিক্রম করিতেছিলেন, তখন নাগমাতা সুরমা সাপিনী কিরূপে তাঁহার শক্তি পরীক্ষার্থে যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টি করিয়াছিলেন, তারপর সিংহিকা রাক্ষসী তাঁহার গতিরোধ করিলে কিরূপে সেই রাক্ষসীকে বধ করিয়াছিলেন। লঙ্কায় পৌঁছাইয়া অশোককাননে রাক্ষসীবেষ্টিতা মাতা জানকীকে দেখিবার পর তিনি শ্রীরাম প্রদত্ত অঙ্গুরীয় প্রদর্শন করাইয়া তাঁহার লঙ্কায় আসিবার অভিপ্রায় জানাইয়া রাবণের পুত্র অক্ষয়কে বধ করিয়া লঙ্কাপুরী দহন করিয়াছিলেন।
     
    হনুমানের স্মৃতিপটে ভাসিয়া উঠিল - শ্রীরাম ও রাবণের যুদ্ধকালে তিনি প্রবল বিক্রমে ধুম্রাক্ষ, অকম্পন, জম্বুমালি প্রভৃতি রাক্ষস সেনাপতিদেরকে এবং রাবণের দুই পুত্র ত্রিশিরা এবং দেবান্তক সহ বহু সহস্র রাক্ষসসেনা বধ করিয়াছিলেন। রাবণের প্রবল পরাক্রান্ত পুত্র ইন্দ্রজিৎকে লক্ষ্মণ বধ করিবার পর প্রিয় পুত্রবধের প্রতিশোধ লইবার নিমিত্ত রাবণ লক্ষণের উপ্র শক্তিশেল প্রয়োগ করিলে লক্ষ্মণ অচেতন হইয়া পড়িয়াছিলেন। লক্ষণের এইরূপ অবস্থা দর্শনে বানরদের মধ্যে বৈদ্যরাজ সুষেন কহিলেন যে, সূর্যোদয়ের পূর্বে বিশল্যকরণী, সুবর্ণকরণী, অস্থিসঞ্চারিনী ও মৃতসঞ্জীবনী নামক বনৌষধি প্রয়োগ না করিলে লক্ষণের প্রাণান্ত হইবে আর, ঐ ঔষধ গন্ধমাদন পর্বতে পাওয়া যাইবে। সুষেনের এই নিদান শ্রীরামকেও বিচলিত করিয়া তুলিয়াছিল, কারণ, সুদূর গন্ধমাদন পর্বতে যাইয়া সূর্যোদয়ের পূর্বে বনৌষধি আনয়ন করা সাধ্যাতীত। লঙ্কার সমুদ্রতটে অচৈতন্য প্রিয় ভ্রাতার মস্তক ক্রোড়ে লইয়া শ্রীরাম রোদন করিতেছিলেন। এই ঘোর সঙ্কটে তিনি শ্রীরামকে আশ্বস্ত করিয়া পবনগতিতে গন্ধমাদন পর্বতে উপস্থিত হইয়া সুষেন বর্ণিত বনৌষধি চিনিতে সক্ষম না হওয়ায় গন্ধমাদন পর্বত উপাড়িয়া সূর্যোদয়ের পূর্বে লইয়া আসিলে গন্ধমাদন পর্বত হইতে ঔষধ সংগ্রহপূর্বক বৈদ্যরাজ সুষেন লক্ষ্মণের মৃতপ্রায় শরীরে প্রয়োগ করিয়া লক্ষ্মণকে নিরাময় করিয়াছিলেন।
     
    শ্রীরাম ও রাবণের সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের সময় মহীরাবণ শ্রীরাম ও লক্ষণকে মায়াবলে হরণ করিয়া পাতাললোকে বন্দী করিলে, তিনি মহীরাবণ ও অহিরাবণকে বধ করিয়া শ্রীরাম ও লক্ষণকে পাতাললোক হইতে উদ্ধার করিয়াছিলেন। তদনন্তর, বিভীষণের উপদেশে তিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশ ধারণ করিয়া রাবণের পত্নী মন্দোদরীকে ছলনা করিয়া তাহার নিকট হইতে রাবণের মৃত্যুবাণ লইয়া আসিয়া শ্রীরামকে অর্পণ করিলে, সেই মৃত্যুবাণ নিক্ষেপ করিয়া শ্রীরাম রাবণকে বধ করিয়াছিলেন। রাবণবধের অব্যবহিত পরে মাতা জানকীকে উদ্ধার করিয়া আনিয়া তাঁহার সতীত্বে সন্দেহ প্রকাশ করিয়া শ্রীরাম যখন মাতা জানকীকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে বাধ্য করিয়াছিলেন, তখন হনুমান অসহনীয় মানসিক যন্ত্রণায় কাতর হইয়াও শ্রীরামের প্রতি অটল ভক্তির বশে তাহার সেই মানসিক যন্ত্রণা প্রকাশ করিতে পারেন নাই। মাতা জানকী অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইবার পর, বিভীষণকে লঙ্কার রাজপদে অভিষিক্ত করিয়া শ্রীরাম, লক্ষ্মণ, মাতা জানকী, সুগ্রীব, অঙ্গদ এবং বানরসেনাদের সহিত হনুমান অযোধ্যা নগরীতে উপনীত হইলে আপামর অযোধ্যাবাসী যে আবেগমথিত বিপুল সংবর্ধনার আয়োজন করিয়াছিল তাহা অদ্যাবধি হনুমানের মানসপটে সমুজ্জ্বল।
     
    অযোধ্যায় আগমনের পর বেশ কিছুদিন সুগ্রীব, অঙ্গদ এবং বানরসেনাগণ সেথায় নানাবিধ আমোদ-প্রমোদ উপভোগ করিয়া শ্রীরাম প্রদত্ত প্রচুর উপহার গ্রহণপূর্বক কিস্কিন্ধ্যায় প্রত্যাবর্তন করিলেও হনুমান শ্রীরাম এবং মাতা জানকীর সেবকরূপে অযোধ্যায় রহিলেন। অযোধ্যায় পরমানন্দে কিছুদিন অতিবাহিত করিবার পর মাতা জানকী সন্তানসম্ভবা হইয়াছেন জানিতে পারিয়া হনুমান যৎপরোনাস্তি আনন্দলাভ করিলেন। কিন্তু, কিছুদিনের মধ্যেই শ্রীরাম প্রজারঞ্জনের নিমিত্ত সন্তানসম্ভবা মাতা জানকীকে পরিত্যাগ করিয়া তাঁহাকে বনমধ্যে নির্বাসনের আদেশ দিয়াছেন জানিয়া হনুমান নিদারুণ মনোকষ্টে অন্তরালে অশ্রূমোচন করিয়াছিলেন। মাতা জানকীকে পরিত্যাগ করিয়া তাঁহাকে বনমধ্যে নির্বাসিত করিলে, মহামুনি বাল্মিকী তাঁহাকে স্বীয় আশ্রমে লইয়া আসিয়া আপন কন্যার ন্যায় সযত্নে রাখিয়াছিলেন। যথাকালে মাতা জানকী যুগল পুত্র প্রসব করিলে মহামুনি বাল্মিকী তাহাদের নামকরণ করিয়াছিলেন কুশ ও লব এবং তাহাদেরকে বাল্যাবস্থায় সকল প্রকার শাস্ত্র ও শস্ত্রের শিক্ষাদান করিয়াছিলেন। কুশ ও লব শস্ত্রবিদ্যায় এমনই পারদর্শী হইয়াছিল যে, স্বয়ং শ্রীরাম ও লক্ষ্মণ তাহাদের সহিত যুদ্ধে পরাজিত হইয়াছিলেন।
     
    হনুমান সাতিশয় মনোবেদনার সহিত স্মরণ করিলেন যে, শ্রীরাম যজ্ঞের আয়োজন করিয়া সপুত্র মাতা জানকীকে আনয়ন করিলেন। যজ্ঞ আরম্ভের পূর্বে মাতা জানকীর সতীত্ব সম্পর্কে প্রজাগণের সন্দেহ নিরসনের নিমিত্ত শ্রীরাম পুনরায় মাতা জানকীকে অগ্নিপরীক্ষা দিবার আদেশ দিলে, মাতা জানকী নিরতিশয় তাপিতা হইয়া সশরীরে ভূমিমধ্যে প্রবেশ করিয়া প্রাণ বিসর্জন দিয়াছিলেন। মাতা জানকীর এইরূপ করূণ পরিণতি দর্শনে হনুমান হাহাকার করিয়া অশ্রূমোচন করিয়াছিলেন। মাতা জানকী ভূমিমধ্যে প্রবেশ করিয়া প্রাণ বিসর্জন দিবার পর হইতে হনুমান সর্বদা বিমর্ষ হইয়া থাকিতেন এবং তাহার লোচনদ্বয় অশ্রূপূর্ণ হইয়া উঠিত। হনুমানের খাদ্যে রুচী রহিল না, চক্ষু হইতে নিদ্রা অন্তর্হিত হইল, দেহ ক্রমশঃ কৃশ হইতে লাগিল, কোনো কর্মে মনোসংযোগ করিতে পারিতেছিলেন না। অতঃপর বহু বৎসর অতিবাহিত হইবার পর শ্রীরাম পার্থিব শরীর ত্যাগ করিয়া বৈকুন্ঠলোকে গমন করিলে হনুমান অযোধ্যা ত্যাগ করিয়া পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে শোকাকুল চিত্তে ভ্রমিতে লাগিলেন।
     
    হনুমান এইরূপে বহুশত বৎসর অস্থিরচিত্তে ভূমণ্ডলের সর্বত্র বিচরণ করিতে করিতে ত্রেতাযুগের অবসান হইয়া দ্বাপর যুগ আরম্ভ হইয়া বহু শত বৎসর অতিক্রান্ত হইবার পরে হনুমান কিছুকাল গন্ধমাদন পর্বতের সানুদেশ হইতে স্বর্গলোক যাইবার পথিমধ্যে একদিন এক বিশাল শিলার উপরে অবস্থান করিতেছিলেন। এমন সময় হনুমান দেখিতে পাইয়াছিলেন যে ভীমসেন সেই পথে স্বর্গের অভিমুখে আসিতেছেন। সেই পথ সংকীর্ণ হইবার কারণে কেবলমাত্র একজন ব্যক্তি চলিবার উপযুক্ত। হনুমান অবহিত ছিলেন যে তিনি যেরূপ পবনদেবের ঔরসজাত পুত্র ভীমসেনও সেইরূপ পবনদেবের ঔরসজাত পুত্র, সেইহেতু ভীমসেন তাঁহার ভ্রাতা। তিনি ভীমসেনের শক্তি পরীক্ষার্থে সেই শিলার উপর শয়ন করিয়া তাঁহার বিশাল লাঙ্গুল আন্দোলন করিতে থাকিলে, প্রচণ্ড শব্দ উৎপন্ন হইয়া পর্বতের গুহায় গুহায় প্রতিধ্বনিত হইতেছিল। সেই শব্দ শ্রবণে ভীমসেন শিহরিত হইয়া দেখিলেন যে স্বর্গলোকে যাইবার পথ রুদ্ধ করিয়া পর্বতের মতো এক মহাকপি একটি শিলার উপর শয়ন করিয়া লাঙ্গুল আন্দোলন করিতেছেন। ভীমসেন নির্ভয়ে হনুমানের নিকটে উপস্থিত হইয়া উচ্চনাদে গর্জন করিয়া তাহাকে পথ হইতে সরিতে বলিলে হনুমান তাঁহার চক্ষু ঈষৎ উন্মীলন করিয়া ভীমের প্রতি অবজ্ঞাভরে চাহিয়া বলিয়াছিলেন, আমি সুখে নিদ্রামগ্ন ছিলাম, তুমি আমাকে কিহেতু জাগাইলে? ভীম আত্মপরিচয় জানাইয়া পরুষকন্ঠে বলিয়াছিলেন, তুমি কে, আমার পথ ছাড়িয়া দাও? হনুমান বলিয়াছিলেন, আমি সামান্য বানর, বার্ধক্য হেতু উঠিবার শক্তি নাই, আমাকে লঙ্ঘন করিয়া অথবা আমার লাঙ্গুলটি সরাইয়া যাও। তখন ভীমসেন বানরকে যমালয়ে পাঠাইবেন স্থির করিয়া তাহার লাঙ্গুল ধরিয়াছিলেন, কিন্তু নড়াইতে সমর্থ হইতে পারেন নাই। ভীমসেন সর্বশক্তি দিয়া চেষ্টা করিয়াছিলেন, তাঁহার শরীর হইতে দরবিগলিত ধারায় স্বেদ নির্গত হইতেছিল, কিন্তু লাঙ্গুল নড়াইতে পারেন নাই। বিফল হইয়া ভীমসেন নত হইয়া হনুমানকে প্রণাম করিয়া সবিনয়ে কহিয়াছিলেন, হে বানরশ্রেষ্ঠ, প্রসন্ন হউন, আমার কটুবাক্য ক্ষমা করুন। আমি আপনার শরণাগত হইয়া আপনার পরিচয় জানিতে চাহিতেছি?
     
    হনুমান তখন আত্মপরিচয় দিলে ভীমসেন উচ্ছ্বসিত হইয়া কহিয়াছিলেন, আপনি আমার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা, আপনার দর্শন পাইয়া আমি ধন্য। হে মহাবীর, সমুদ্র লঙ্ঘনকালে আপনার যে রূপ ছিলো সেই রূপ দর্শন করাইয়া আমাকে কৃতার্থ করুন। হনুমান ভীমের প্রার্থনা পূরণ করিলে ভীমসেন তাঁহার সেই আশ্চর্য ভীষণ বিন্ধ্যপর্বতের ন্যায় কলেবর দর্শন করিয়া রোমাঞ্চিত হইয়াছিলেন। অতঃপর হনুমান তাঁহার দেহ সংকুচিত করিয়া ভীমকে আলিঙ্গন করিয়া কহিয়াছিলেন, কুন্তীপুত্র, দুর্যোধনাদির সহিত তোমাদিগের যুদ্ধকালে আমি অর্জুনের পতাকার উপরে অদৃশ্যভাবে উপবেশন করিয়া ভয়ঙ্কর গর্জন করিবো, তাহাতে তোমরা অনায়াসে শত্রুবধ করিতে পারিবে। ভীমসেনকে এইকথা বলিয়া হনুমান অন্তর্হিত হইয়াছিলেন। তদনন্তর, কুরুক্ষেত্রে কৌরব ও পাণ্ডবগণের মহাযুদ্ধের সময়ে হনুমান অর্জুনের পতাকার উপরে অদৃশ্যভাবে উপবেশন করিয়া ভয়ঙ্কর গর্জন করিয়া কৌরবগণের চিত্তে ত্রাসের সঞ্চার করিয়াছিলেন।
     
    কুরুক্ষেত্রে কৌরব ও পাণ্ডবগণের মহাযুদ্ধের পর অল্পাধিক পঞ্চ সহস্রাধিক বৎসর অতিক্রান্ত হইয়া পৃথিবীতে এখন কলিযুগ। এই সুদীর্ঘকাল হনুমান আপনার চিরঞ্জীবীত্বকে অভিশাপ গণ্য করিয়া নিদারুণ মনস্তাপে পীড়িত হইয়া অস্থিরচিত্তে নিরন্তর ভূমণ্ডলে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করিতেছেন। কলিযুগ আরম্ভ হইবার পর হইতে অদ্যাবধি হনুমান চাক্ষুস করিয়াছেন মনুষ্য কিরূপে একদা প্রকৃতির উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল থাকিয়া ক্রমশঃ আপন মেধাশক্তিতে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করিয়া জীবনযাত্রা নির্বাহ সাবলীল করিবার নিমিত্ত নানাবিধ অপ্রাকৃত বস্তুর উদ্ভাবন করিয়াছে। এক শ্রেণীর মনুষ্য তাহার বিশেষ জ্ঞানকে অপব্যাবহার করিয়া বহুবিধ বিনাশকারী বস্তুর উদ্ভাবন করিয়াছে এবং সমগ্র ভূমণ্ডলের বাতাবরণ দূষিত করিয়া প্রাণীকুলের জীবন দুর্বিষহ করিয়া তুলিয়াছে। ভূমণ্ডলে মনুষ্য ভিন্ন অন্য কোনো প্রাণীর মধ্যে আত্মঘাতী ও বিনাশকারী আচরণ দৃষ্ট হয় নাই।
     
    হনুমান ত্রেতা এবং দ্বাপর যুগে দেবতা, দানব, অসুর, যক্ষ, রাক্ষসাদি প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন, মনুষ্যের মধ্যে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র চারি প্রকার বর্ণভেদ আছে বলিয়া জানিতেন। হনুমান ইহা দর্শন করিয়া সাতিশয় শঙ্কিত যে, কলিযুগের প্রারম্ভকাল হইতে সহস্রাধিক বৎসর অবধি ভূমণ্ডলে মনুষ্যগণের মধ্যে একটি মাত্র ধর্ম প্রচলিত হইয়াছিল, যাহার শাস্ত্রাবলিতে পরবর্তীকালে কিছু ব্রাহ্মণ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে সংযোজন, বিয়োজন এবং বিকৃতি ঘটাইয়া অব্রাহ্মণদিগকে, বিশেষভাবে দরিদ্র শূদ্রবর্ণের মনুষ্যদিগকে, নানা অছিলায় ত্রস্ত ও শোষণ করিতেছে। প্রথম দিকে একটি মাত্র ধর্ম প্রচলিত হইয়াছিল, যাহা সনাতন নামে পরিচিতি লাভ করিয়াছে এবং যাহার অবলম্বনকারীগণ হিন্দু নামে বিদিত। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে কতিপয় মনুষ্য আরও অনেক ধর্মের প্রবর্তন করিয়া মনুষ্যকুলে বিভাজন ঘটাইয়া একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রবৃত্ত হইয়াছে, যাহার বিষময় ফলে কোটি কোটি মনুষ্যের রক্তে ধরাভূমি স্নাত হইয়াছে।
     
    হনুমান সবিশেষ অবগত আছেন যে, দেবতাদের বরে আগুন তাঁহাকে দহন করিবে না, জল তাহার কোনো ক্ষতিসাধন করিবে না, তিনি বায়ুবৎ বেগবান হইবেন এবং যথা ইচ্ছা অবাধে যাইতে সক্ষম হইবেন ও অমরত্ব লাভ করিবেন, কিন্তু তাঁহার কোনো দৈবী কিংবা অলৌকিক ক্ষমতা নাই, তিনি কাহারও রোগমুক্তি ঘটাইতে পারেন না, কাহারও মনোস্কামনা পূর্ণ করিতে পারেন না, কাহারও ভাগ্যও পরিবর্তন করিতে পারেন না। তিনি বানর শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত, সেইহেতু তিনি মনুষ্যের চতুর্বর্ণের মধ্যে গণ্য নহেন। তিনি দেবতা নহেন, তথাপি, কতিপয় নীচাশয় ধুরন্ধর ব্যক্তি আত্মস্বার্থসিদ্ধির নিমিত্ত দুরভিসন্ধিবশত তাঁহাতে দেবত্ব আরোপ করিয়া সহস্র সহস্র মন্দির নির্মাণ করিয়া তাঁহার কল্পিত অজস্র মূর্তি তথায় প্রতিষ্ঠা করিয়া দুর্বলচিত্ত জ্ঞানান্ধ মনুষ্যদিগকে নিরন্তর ছলনা করিতেছে, কিন্তু ইহা রুধিবার শক্তি তাঁহার নাই।
     
    হনুমান সম্যকভাবে অবহিত আছেন যে, সত্য ত্রেতা এবং দ্বাপর যুগে কোনো সন্তান তাহার পিতার ঔরসজাত না কানীন না ক্ষেত্রজ, সেই বিষয়ে কেহ কোনো প্রশ্ন বা বিরূপ সমালোচনা করিতেন না। কিন্তু, কলিয়ুগে কতিপয় মনুষ্য তাঁহার প্রকৃত পিতা বানররাজ কেশরী না পবনদেব এই প্রশ্ন ও বিরূপ সমালোচনা করিতে থাকায় তিনি অত্যন্ত বিড়ম্বিত বোধ করিতেছেন।
     
    সমগ্র ভূমণ্ডলে মনুষ্য যেরূপ পাপাচরণ করিতেছে, মনুষ্য চরিত্রের যেরূপ স্খলন হইয়াছে, ঈশ্বর ও ধর্মের নামে যেরূপ ঘৃণার বিষে মনুষ্যসমাজকে কলুষিত করিতেছে, তদ্দর্শনে হনুমান প্রতিনিয়ত আপনার মৃত্যুকামনা করিতেছেন। কিন্তু, চিরঞ্জীবীত্বের বরপ্রাপ্তিজনিত দুঃসহ অভিশাপ তাঁহার মৃত্যুর পথে কণ্টকস্বরূপ হইবার কারণে, তিনি নীরবে আশ্রূমোচন করিতে লাগিলেন।
                                   ______
     
     
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন