এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ২০২৪ 

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ | ১০২২ বার পঠিত
  • আরেকটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। রাত পোহালেই শুরু হয়ে যাবে নির্বাচন। আমার পরিচিত বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন অনেকেই নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত আছে। কেউ দায়িত্ব পেয়ে শঙ্কায় আছে কেউ আফসোস করছে দায়িত্ব না পেয়ে। নির্বাচন নিয়ে মূলত আমার চিন্তা এদেরকে নিয়েই, উনারা সবাই সুস্থ ভাবে ঘরে ফিরতে পারলেই আমি আপাতত খুশি। বড় বড় কথা, গুরু গম্ভীর আলোচনার থেকে এইটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। 

    কতজন ভোটার, কতগুলা ভোট কেন্দ্র এগুলা যে কেউ গুগল করলেই জানতে পারবে। তাই নির্বাচন নিয়ে কথা বলার সময় এগুলা আর এখানে লিখলাম না। নির্বাচন কমিশন ১৫০০ কোটি টাকা বাজেট দিয়েছে এবারের নির্বাচনের জন্য, এবং সবারই ধারণা এইটা দিয়ে সম্ভব না, ২০০০ কোটি টাকা লাগবে এই নির্বাচন শেষ করতে। এবারই প্রথম নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্তদের দুইদিনের খরচ দেওয়া হবে, এর আগে শুধু নির্বাচনের দিনের জন্য টাকা দেওয়া হত সবাইকে। 

    কথা হচ্ছে অন্য জায়গায়। এই টাকা খরচ করে যা করা হচ্ছে তা পুরোটাই নিয়ম রক্ষার জন্য। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ছাড়া আর কোন যুক্তিই নাই এই নির্বাচনের। প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে আসে নাই। কাজেই নিজেদের ভিতরে কে কে সংসদে বসবে তাই ঠিক করার নির্বাচন হচ্ছে। বিএনপি কেন আসল না? বিএনপি না আসার পিছনে সব দায় আওয়ামীলীগের? এগুলা অনেক জটিল প্রশ্ন, আমি আমার ধারণার কথা লিখতে পারি শুধু। 

    আগেই বলে নেই এই ঢঙের নির্বাচন নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যথা নাই। সুষ্ঠ নির্বাচন মানে সব দলের অংশ গ্রহণে নির্বাচন হলে কী যে ফল ধরত ডেউয়া গাছে তা আমার জানা আছে। বাংলাদেশের মানুষের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার যোগ্যতা নিয়ে আমার প্রশ্ন বরাবরই ছিল এখনও আছে। আমি চোখের সামনে দেখছি স্বীকৃত রাজাকারদের জাতীয় পতাকা গাড়িতে লাগিয়ে ঘুরতে, দেখছি তাদের আস্ফালন। তো আমি সেই তখনই এই জনগণের কাছ থেকে সুচিন্তিত মতামত দেওয়ার আশা বাদ দিয়েছি। ভোট দিয়ে দেশ পাকিস্তানদের সাথে যুক্ত করে দেওয়ার আয়োজন হলে এদের অনেকেই হয়ত আবার পাকিস্তানের সাথে আমাদেরকে যুক্ত করে দিতে চাইবে। এবং তখনও দেখা যাবে কেউ কেউ টেলিভিশনে খুব গম্ভীর হয়ে আলোচনা করবে কেন আমাদের উচিত পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয়ে যাওয়া। আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে এইটা কত জরুরি এমন কলাম দেখা যাবে পত্রিকার পাতায়। এইটা হবে না হয়ত কিন্তু এইটা আমার আশঙ্কা। কারণ আমি নিজামির গাড়িতে, মুজাহিদের গাড়িতে পতাকা উড়তে দেখছি! আমি ভয় পাই তাই ওই জনগণকে যারা এদেরকে নির্বাচন করেছিল তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে। তাদের সংখ্যা কমছে ভাবার কোন কারণ নাই, বরং নানা পরিচর্যায় তাদের সংখ্যা বৃদ্ধিই পেয়েছে। 

    বিএনপি আসল না। আসবে কেন তাও আমি বুঝি নাই। এই পদ্ধতির মাধ্যমে গত নির্বাচনে তারা আসছিল, ফলাফল? সবাই জানে। একটা দলকে পুরোপুরি খেয়ে ফেলা এইটা গণতন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর না। আওয়ামীলীগ তাই করল, একটুও ছাড় দিল না। ছাড় না দেওয়ার হাজারও যুক্তি আছে, বিশেষ করে ২১ আগস্টের পর থেকে এই দেশে একে অন্যকে শেষ করে দেওয়ার রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে যেহেতু। কিন্তু নিজেদের স্বার্থেও উচিত ছিল বিএনপিকে সংসদে রাখা। যে তরিকায়ই হোক বিএনপি গত নির্বাচনে ২০/৩০টা আসন পাইলে সুস্থ একটা রাজনৈতিক চর্চা দেখা যেত দেশে। এবং সেই উদাহরণ দিয়ে এবারেও বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে বাধ্য করা যেত। কিন্তু মনোপলি একবার মজা পেয়ে গেলে তা সম্ভবত আর ছাড়া যায় না। আওয়ামীলীগও ছাড়তে পারবে না, পারেও নাই। 

    এগুলা আওয়ামীলীগের দায়। বিএনপির দায় নাই? আছে, মূলত তাদেরই দায়টাই বেশি। তাদের নেতৃত্বের অসারতায় আজকের দিন এসে হাজির হয়েছে। বিএনপি নেতারা কী এইটা বুঝে? নেতৃত্বে দেউলিয়া হওয়ার ফলে যে তারা ক্ষমতার দুই তিনশ মাইলের মধ্যে আসতে পারছে না এইটা যদি এখনও না বুঝে তাহলে আর কবে বুঝবে? এই নেতৃত্ব বোমা মেরে শেখ হাসিনাকে উড়িয়ে দিতে চেয়েছে। বোমা মারা ছাড়াও এই নেতৃত্ব এমন একটা কাজ করেছে যা দেশের ইতিহাস পাল্টে দিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামের যে পদ্ধতি আমাদের এখানে মোটামুটি সফল ভাবে চলছিল সেই পদ্ধতিটাকে মেরে ফেলেছে। এই নেতৃত্বই দুই নাম্বারই করে নিজেদের পছন্দের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান আনার জন্য বিচারপতির চাকরির বয়স বৃদ্ধি করে এবং গণ্ডগোলের শুরু। সেই ল্যাজ ধরেই ইয়াজউদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হওয়া, সেনা সমর্থিত দুই বছরের এক আধ্যাত্মিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আগমন আর এরপরে আওয়ামীলীগ যুগের শুরু। 

    শুধু যে ওই ভুল তা না। এরপরেও তাদের নেতৃত্বরা ভুল করেই গেছে। পিছনে যাই হোক আমরা দেখছি আওয়ামীলীগ প্রধান চেষ্টা করে গেছেন আলোচনার। ফোন করেছেন, খালেদা জিয়ার ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি গেছেন সব ভুলে খালেদা জিয়ার বাড়িতে। অথচ দেশের প্রধানমন্ত্রীকে খালেদা জিয়া ফিরিয়ে দিয়েছে দরজা থেকে! মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনা ২১ আগস্ট কথা মনে রেখেও সেদিন খালেদার জিয়ার বাড়িতে গিয়েছিল আর আপোষের, সমঝোতার, সুস্থ রাজনীতির সেই সুযোগ বিএনপি নষ্ট করেছে শেখ হাসিনাকে ঘরের দুয়ার থেকে ফিরিয়ে দিয়ে। এবং আমি যদি ভুল না করি এরপরেই শেখ হাসিনা ভিন্ন শেখ হাসিনা। এরপরে সম্ভবত আর আপোষ, আলোচনা, সমঝোতা কোন কিছুর চেষ্টা আওয়ামীলীগ বা শেখ হাসিনা করে নাই। এরপরে শুধুই পিষে ফেলার ইতিহাস। আওয়ামীলীগ দুধে ধোয়া তুলশী পাতা না, সে নিজের আখের গোছাবেই। বিএনপি নিজেদের ভুলে জনগণকে আওয়ামীলীগের দয়ার সামনে ফেলে দিয়েছে। জনগণের পক্ষে বলার মত কেউই নাই। বিএনপি নিজেরাও জানে না তারা কী চায়। ওরা ক্ষমতায় আসলে কী করবে তাও জানে না। খালি ভাবে অলৌকিক ভাবে কেউ তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে! 

    কতখানি দেউলিয়া একটা দল তার প্রমাণ হচ্ছে সাত তারিখের নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া! জনগণকে ভোট দিতে যেতে না করছে, অনুরোধ করছে। বলছে সরকার কাওকে ভোট দিতে বাধ্য করতে পারে না কিন্তু সেই চেষ্টাই করছে, মানুষকে ভোট দানে বাধ্য করছে! শক্ত করে বলতেও পারছে না এই এই নির্বাচন মানি না, তামাশার নির্বাচন বন্ধ করেন। তারা অনুরোধ করছে জনগণকে যে তারা যেন ভোট দিতে না যায়! হাস্যকর সব কারবার এই দলের। আর করছে সবচেয়ে কুৎসিত কাজটা। মানুষের মনে আতঙ্ক আনার জন্য আগুন দিয়ে মানুষ মারছে। গত পাঁচ তারিখ রাতে রেলে আগুন দিয়ে যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটা ঘটাল এর দায় কীভাবে এড়াবে? 

    মানুষ কিন্তু নির্বাচন পছন্দ করে। কেন জানি মানুষের ধারণা যে ভোট দিতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই যে একদলের নির্বাচন হচ্ছে, মানুষের এইটা নিয়ে কোন আগ্রহই থাকবে না, এমন হওয়ার কথা না? কিন্তু তা হচ্ছে না! আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক প্রজ্ঞাই বলেন আর যাই বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে এই নির্বাচন জমিয়ে দিয়েছে। শহরের মানুষ কিছু নাক উঁচু ভাব দেখাচ্ছে, ম্যালা তত্ত্ব কপাচাচ্ছে ( যেমন আমি নিজেই!)  কিন্তু গ্রামের মানুষ, যেখানে সবচেয়ে বেশি ভোটার, তারা সবাই ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে। যারা ভাবছেন যে ভোটার শূন্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে তারা সম্ভবত ধোঁকা খেতে যাচ্ছেন। কালকে বিপুল পরিমাণ মানুষ ভোট দিবে এইটা আমি এখনই বলে দিতে পারছি। কারণ আমি সাধারণ মানুষের এই নির্বাচন নিয়ে যে উচ্ছ্বাস তা দেখেছি। মিথ্যা বলব না, এইটা আমাকে বিরক্ত করেছে। সব ফেলে এই নির্বাচনের জন্য এত আগ্রহ?    
       
    ফলাফল যেহেতু জানাই তাই এইটা নিয়া চিন্তা করে লাভ নাই। আমরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যে গুটি গুটি পায়ে আগাচ্ছে। করোনা, ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্বমন্দা এর মধ্যেও আমাদের দারিদ্র্যতার হার কমেছে। ২০১৬ সালে মোট জনসংখ্যার ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ ছিল দারিদ্র। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী এখন ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র। একই সঙ্গে, দেশে অতি দারিদ্র্যের হারও কমেছে। ২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী, দেশে অতি দারিদ্র্যের হার এখন ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০১৬ সালে এই হার ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। আরও নানা সূচকেই বাংলাদেশ এগিয়েছে। আমার কাছে এইটাই জরুরি।এগিয়ে যেতে হবে, গতির হেরফের হতে পারে কিন্তু থামা যাবে না, পিছিয়ে যাওয়া যাবে না। আইনের শাসন, বিচার ব্যবস্থা শক্তিশালী,  অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা কাটিয়ে উঠা এই সবই চাওয়া আমার নতুন সরকারের কাছে। 
     সকলকে জ্ঞান দাও প্রভু ক্ষমা কর। শুভ হোক, মঙ্গল হোক এই চাওয়া। 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ | ১০২২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • guru | 2409:4060:219c:e66b:75e6:8559:ff20:***:*** | ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:১৭527451
  • শরীফ ভাই আচ্ছা বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের ব্যাপারটি নিয়ে জনগণ কি ভাবছে ?? আওয়ামী লীগ ওনাকে কেন জেলে পুরলো ভাই ? 
  • মোহাম্মদ কাজী মামুন | ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:১৮527460
  •  "কারণ আমি সাধারণ মানুষের এই নির্বাচন নিয়ে যে উচ্ছ্বাস তা দেখেছি।"
    ....আমার অবজার্ভেশান ভিন্ন। আমি এমনকি সরকার দলীয় সমর্থকদের মাঝেও উচ্ছ্বাস দেখতে পাইনি। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা  না হলে কোন খেলা কি দর্শক টানতে পারে খুব একটা?   
  • কিংবদন্তি | ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৪১527468
  • কাজী মামুন, হতেই পারে। আমাদের এখানে আসলে চিত্র ভিন্ন ছিল। প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে নৌকা আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। এই কারণেও হয়ত এখানে মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল, জমজমাট আমেজ ছিল। আজকে নির্বাচন শেষে নৌকা প্রার্থী হেরে গেছে চল্লিশ হাজারের বেশি ভোট ব্যবধানে। সারা দেশে চল্লিশ শতাংশ ভোট কাস্ট হলেও আমাদের এখানে প্রায় ষাট শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। এখানে নির্বাচন সুষ্ঠও হয়েছে। যা দেখছি তাই লেখছি আমি। 
  • দীমু | 182.69.***.*** | ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৪৪527469
  • বাংলাদেশের ইভিএম/ব্যালটে নোটার অপশন থাকে?
  • কিংবদন্তি | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:৩৮527490
  • দীমু, প্রশ্নটা বুঝি নাই। ব্যালেটে নোটার অপশন মানে? 
  • | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:২৩527491
  • ভারতে নোটা বলে একটা অপশান থাকে ব্যালট পেপারে। প্রার্থীদের একজনকেও পছপ্নদ না হলে নোটায় ভোট দেওয়া যায়।  সেটা একরকম প্রত্যাখ্যান সব প্রার্থীকে।
  • | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:২৩527492
  • *পছন্দ
  • lcm | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:৪০527493
  • ভারতে লিস্টের কাউকে পছন্দ না হলে NOTA ( = None Of The Above) তে ভোট ​​​​​​​দেওয়া ​​​​​​​যায় 
     
    আমেরিকায় একটা বাক্স থাকে, লিস্টের কাউকে পছন্দ না হলে ওখানে নিজের পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে দেওয়া যায়, বলে   Write-in Candidate 
  • সিএস  | 103.99.***.*** | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:২০527494
  • এ বছরে নাকি সারা পৃথিবীতে ৪০টা মত দেশে ভোট আছে, যা কিনা গণতন্ত্রের পরীক্ষা !

    শুরু হল, বাংলাদেশে মোটামুটি ভোটের নামে প্রহসনের কাছাকাছি কিছু একটা দিয়ে।

    মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইত্যাদি কতখানি এই ভোটের মধ্যে রইল বা প্রসারিত হল, সে নিয়ে সন্দেহ আছে। তো সরকারের দায় আছে (যে কোন দেশেই) গণতান্ত্রিক পরিস্থিতিটা জারি রাখা, না থাকলে লোকের মধ্যে ক্ষোভ থাকলে সে ফুটে বেরোবেই।হাসিনার আমল নিয়ে মোটামুটি এটাই বক্তব্য, এখানে সেখানে পড়ে যা বুঝেছি। বিএনপি খারাপ ছিল বলে হাসিনা আরো অটোক্রেটিক হয়ে গেল, সে মনে হয় ঠিক যুক্তি নয়, লেখাটায় যেন সেরকম আঁচ পেলাম।
  • কিংবদন্তি | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫৪527496
  • ওহ! না, না ভোটের কোন পদ্ধতি নাই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে না ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়ে ছিল, ওই একবারই। এরপরে আর না ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল না। 
  • guru | 103.2.***.*** | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৩৫527503
  • বাংলাদেশে কখনোই অবাধ ও মুক্ত নির্বাচন হয়নি অন্ততঃ ১৯৭০ সালের পরে | আমার মনে হয় শরীফ ভাই বলতে চান যে বাংলাদেশের মূলতঃ দরকার একটি স্টেবল সরকার দারিদ্র দূরীকরণের জন্য যেটি একমাত্র হাসিনাই দিতে পারবেন | মুক্ত গণতন্ত্র বাকস্বাধীনতা এসব আপাতত প্রয়োজন নেই |
  • কিংবদন্তি | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০১:২৮527509
  • guru, মোটা দাগে এইটাই আমার বক্তব্য। আর না, অবাদ ও মুক্ত নির্বাচন ১৯৭০ সালের পরে আর হয় নাই এইটা ঢালাও ভাবে বলার সুযোগ নাই। ৯১, ৯৬, ২০০১ সালের নির্বাচনে একটু এদিক সেদিক হলেও নির্বাচন ভালই ছিল। আর ২০০৮ সালের নির্বাচন সম্ভবত স্বাধীনতার পরে সবচেয়ে ভাল নির্বাচন ছিল। ফখরুদ্দিন সরকারকে অনেকেই গালি দিলেও এইটা সত্য যে তারা একটা ভাল ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল যা পরবর্তীতেও চালু আছে আর তারা একটা ভাল নির্বাচন করে দিয়ে গিয়েছিল। 
     
    আর আপনে প্রথমে যে প্রশ্ন করেছেন সেটার বিষয়ে আমার জানা শোনা কম। যতদূর জানি একেবারে ভুয়া না মামলাটা। আইনের মার প্যাঁচেই আটকে গেছেন ইউনুস সাহেব। একই রকম পরিস্থিতে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানকে কেউ কোনদিন হয়ত আদালতে টেনে নিয়ে যায়নি কিন্তু তাই বলে আইনে নাই তেমন না। সরকারের ক্ষোভ তো আছেই উনার উপরে। সরকার দৃঢ় ভাবেই বিশ্বাস করে বাহিরে বাংলাদেশ বিরোধী লবিং এ ইউনুস সাহেবের প্রত্যক্ষ হাত আছে। সরাসরি প্রমাণ আছে কি না জানি না। তবে সরকারের ক্ষোভের মাত্রা দেখে বুঝা যায় তারা পরিষ্কার ভাবেই জানে যে ঘটনা সত্য। 
     
    ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয় লোকটাকে এতটা হয়রানি না করলেও পারত। দেশে তো আর ভুরিভুরি নোবেল বিজয়ী নাই, একজন আছে তাকে সম্মান দেখাইলে তো আর সম্মান কমবে না কারো। কিন্তু ওই যে বললাম, অনেকেই মনে করে ইউনুস সাহেব নিজেই নিজের অবস্থান নষ্ট করেছেন। দল গঠন করতে গিয়ে প্রথমেই বিশাল একটা শ্রেণীর কাছে তিনি ভিলেন হয়েছেন, এখানে বিএনপি আওয়ামীলীগ দুই দলই আছে। আর পরবর্তীতে পদ্মা সেতুর ঋণের টাকা আটকে দেওয়ায় তার নাম এসে বাকি ষোলকলা পূর্ণ করেছে। 
  • কিংবদন্তি | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:২৩527518
  • ওয়াল ষ্ট্রীট জার্নালে বাংলাদেশের রাজনীতি, মার্কিন নীতি ইত্যাদি নিয়ে একটা প্রতিবেদন বের হয়েছে। প্রতিবেদনটা বেশ চমৎকার। আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন। ডক্স লিংক দিলাম। 
     
     
  • guru | 115.187.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:১৭527520
  • শরীফ ভাই ,
     
                        সদানন্দ ধূমের লেখাটা আমি আগেই পড়েছি | উনি এর আগেই পাকিস্তানের নির্বাচনেও ইমরান খানের যাতে ক্ষমতায় আসা না হয় সেটি আগেই লিখেছেন | কারণটা মোটামুটি বাংলাদেশের মতোই | উনি চাইছেন দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোতে মোটামুটি একটা ভারতপন্থী সরকারই থাকুক যার ফলে ভারতের আদানীর মতো ব্যাবসায়ীদের সুবিধা হবে | এই নিয়ে উনি এর আগেও WSJ এ অনেককিছু লিখেছেন | আমার নিজের মনে হয় সারা পৃথিবী থেকেই আস্তে আস্তে so-called মুক্ত অবাধ বাকস্বাধীনতা গণতন্ত্র এর বদলে একটি নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের ঝোঁক বাড়বে | কারণ দেখানো হবে যে মুক্ত অবাধ গণতন্ত্রে বিদেশী বিনিয়োগ আসেনা ফলে উন্নয়ন বিঘ্নিত হয় কাজেই দক্ষিণ এশিয়াতে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের প্রয়োজন যার ফলে দারিদ্র দূরীকরণ ও উন্নয়ন আসবে | বাংলাদেশকে মডেল "controlled democracy" হিসাবে ভারত তুলে ধরতে পারে | সেটাই সদানন্দ ধূমে বলেছেন | তবে সদানন্দ ধূমে ভারতীয় স্বার্থকে সামনে রেখে লিখছেন , আম্রিকার সব এক্সপার্টের বক্তব্য সেটা নাও হতে পারে |
     
                     আমি নিজে বাংলাদেশে বর্তমান নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের পক্ষে ও বিপক্ষে অনেক কিছুই বলতে পারি | পক্ষে এটা বলা যায় যে হয়তো আরো অনেকটাই উন্নয়ন বাংলাদেশে হবে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রে |  তবে উন্নয়ন নিজের থেকেই অন্য সমস্যা তৈরী করে | যেমন ধরুন বাংলাদেশে গত ১০ ১৫ বছরের উন্নয়নের ফলে একটা শিক্ষিত মিডল ক্লাস তৈরী হয়েছে যাদের মধ্যে যথেষ্ট aspirations আছে বড় কিছু করবার | এরা সবাই মোটামুটি আম্রিকি মিডিয়া বা আলজাজিরা এসব জানে | এখন এদের মধ্যে মধ্যবিত্ত মূল্যবোধ থেকে এস্পিরেশন্স আসবে আরো বড়ো কিছু করবার | প্রথমেই এরা এমন সব মূল্যবোধ বিসর্জন দেবে যেগুলোকে আপনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলেন | উন্নয়নের এস্পিরেশনে এইসব ধারণা পশ্চাদপর বলেই বিবেচিত হবে তখন |
     
                 আমার মনে হয় আপনি ভয় করেন যে বাংলাদেশে ভবিষ্যতে হয়তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিপন্ন হবে | সত্যি কথা বলতেকি এস্পিরেশনাল মিডল ক্লাসের মধ্যে মৌলবাদের প্রভাব বাড়ে এটি আমরা ভারতে বহুবার দেখেছি এখনো দেখছি | হাসিনার নিজেরও সত্যি কথা বলতেকি নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ঠিক সেরকম প্রয়োজন নেই যেহেতু তার নির্বাচনে তো বিরোধীই নেই | লড়াইয়ের ময়দানে বিরোধী না থাকলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রয়োজন হয়না | দ্বিতীয়তঃ মুক্তিচেতনার প্রয়োজন হয় বিরোধীরূপে , সরকারে থাকলে সেই চেতনাই তখন শাসকের কাছে ভয়ংকর বিপদ | কাজেই হাসিনা খুশিই হবেন যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একটু একটু করে মরে যায় | 
     
               আপনার ভয়ের কারণটি সত্য | কিন্তু এর জন্য যেভাবে বিপদটা আসবে সেটা হয়তো হাসিনার জয়ের ও আরো উন্নয়নের পথ ধরেই আসবে | সত্যি কথা বলতেকি এটা হয়তো হাসিনা নিজেও জানেন এবং তা সত্ত্বেও তিনি পারবেননা এটিকে আটকাতে যেহেতু মৌলবাদ উন্নয়নের পথ ধরেই আসে | হয়তো হাসিনা এটাকে আটকাতে চানও না | হয়তো তার কাছে এখন জামাতিদের থেকে মুক্তমনারা অনেক বেশি বিপদজনক | আপনি নিজেও এই নিয়ে বহুবার লিখেছেন যে জামাতি ইসলামীর বহু নেতাকর্মী এখন নৌকা ছাপ দিয়ে করেকর্মে খাচ্ছে | আপনি নিজে একারণে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যতে ক্ষতি হবে বলে লিখেছেন | কিন্তু এখন আপনার মতো চিন্তাধারার মানুষের প্রয়োজন হয়তো হাসিনার তেমন নেই |
     
          মোটামুটি আমি আগামী ১০ ১৫ বছরে বাংলাদেশে এরকম নিয়ন্ত্রিত গনতন্র , কিছুটা উন্নয়ন , প্রবল আর্থিক অসাম্য এবং মৌলবাদের প্রসার দেখতে পাচ্ছি | আমার মনে হয় আপনিও এরকমই কিছু দেখছেন |
  • বিপ্লব রহমান | ১২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:৪৪527570
  • আমরা আর মামুরা নির্বাচন! কী মজা!! cool
     
  • hmmm | 23.154.***.*** | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৪২527582
  • বিপ্লব রহমান | ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫৫527741
  • বেলুনটি চুপসে দিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি) 
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন