এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ "আমাদের কথা" - বিজয়া রায়

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৮ জুন ২০২০ | ৫৫৫৮ বার পঠিত
  • সত্যজিৎ রায়ের স্ত্রী বিজয়া রায়ের লেখা "আমাদের কথা" শেষ করলাম। একেবারেই সদ্য শেষ করলাম। মাথায় রেশ থাকতে থাকতেই মনে হল কিছু লেখা দরকার এই বই নিয়ে। এই বই নিয়ে আমার বলার আছে অনেক কিছুই। সত্যজিৎ রায়ের মত এত বড় একজন মানুষের স্ত্রীর লেখা বই, স্বাভাবিক ভাবেই আমার প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। আমি এমন কিছু জানতে চাচ্ছিলাম যা আমরা যে সত্যজিতকে চিনি তার বাইরের অন্য কিছু। আমার প্রত্যাশা অপূর্ণ থাকেনি, বরং আমার প্রত্যাশার থেকেও প্রাপ্তি অনেক অনেক বেশি হয়েছে।
    আমার জন্য বেশি প্রাপ্তি সহজ হয়েছে কারন আমি সাহিত্যিক সত্যজিৎ আর চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ ছাড়া ব্যক্তি সত্যজিৎ সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না।( না, বাপ দাদার খবর আর আদি বাড়ি কিশোরগঞ্জ এইটুকু জানতাম!) তাই শুরু থেকেই আমি একের পর ধাক্কা খেতে থাকি। প্রথম ধাক্কা খেলাম সত্যজিৎ আর বিজয়া মামাতো পিসতুতো ভাই বোন! হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সাধারণত এই ধরেনর বিয়ে করে না। যদিও সত্যজিৎ বা বিজয়ারা সবাই ব্রাহ্ম ধর্মালম্বী ছিলেন। তবুও এই বিয়ে ওই সময়ে বেশ আলোড়ন তৈরি করে। আবার বিজয়া ছিলেন সত্যজিৎ থেকে বয়সেও বড়। এটাও এক ধরনের প্রথার বিপরীতে যাওয়া।

    কাজিন বলেই কিনা সারা জীবন এই দুইজনের রসায়ন দুর্দান্ত ছিল। বিজয়া ছাড়া সত্যজিৎ সত্যজিৎ হতে পারত কিনা বুঝা মুশকিল। সত্যজিৎ ছিলেন পুরোপুরি স্ত্রী নির্ভর মানুষ। অন্তত বই পড়ে আমার তাই উপলব্ধি হয়েছে। বিজয়া রায় যেভাবে সব দিক সামলে উনাকে উনার কাজের প্রতি নিবেদিত রাখতে পেরেছে তা এক কথায় অনবদ্য। সংসারের নানান ভেজাল, দিন দুনিয়ার নানান সমস্যা সব সামলান কাজ ছিল বিজয়া রায়ের। সত্যজিৎ শুধু উনার কাজের প্রতি মনোযোগ ছিলেন। তীব্র ভাবে কাজ পাগল ছিলেন। প্রচণ্ড গরম, বিদ্যুৎ নাই, সবাই অস্থির, সত্যজিৎ নির্বিকার। প্রিয় স্ত্রী নতুন গয়না পরে সামনে আসছে, উনি প্রথমে হয়ত খেয়ালই করলেন না, যখন খেয়াল করলেন, তখন বাহ! সুন্দর বলে আবার কাজে ডুবে গেলেন। বেখালি মানুষটাকে দেখেশুনে রাখতই বিজয়া রায়। একা একা বিদেশ গেছেন, টাকা, মানিব্যাগ হারিয়ে রেখে এসেছেন! এমন একটা মানুষের জন্য বিজয়া রায়ের মত মানুষ না হলে চলবে কেন? এ জন্য বিজয়া রায় নিজেও কিন্তু কম ত্যাগ করেননি। নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে তিনি তোয়াক্কা না করে সত্যজিতের সাথে মিশে গেছেন।

    তিনি নিজে গুনি শিল্পী ছিলেন। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের কাছে হুট করেই হাজির করা হয়েছিল উনাকে। উদ্দেশ্য রবীন্দ্রনাথের পরিচালনায় বর্ষামঙ্গলে গান গাওয়ানো। বিজয়া রায়ের ছোট পিসি উনাকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সামনে হাজির করলেন। এর আগে অবশ্য যে গান দুটো গাইতে হবে তা উনার গলায় তোলা হয়। উনার স্বভাব সুলভ প্রতিভার ফলে অমন কঠিন গান সহজেই নিজের গলায় তুলে নিয়েছিলেন। তখন তিনি রীতিমত বাচ্চা। রবীন্দ্রনাথের সৌম্য ভঙ্গি দেখে একটুও না ঘাবড়ে পায়ের কাছে বসে শুনিয়ে দিলেন "বন্ধু, রহো রহো সাথে, আজি এ সঘন শ্রাবণপ্রাতে।" ও "অশ্রুভরা বেদনা দিকে দিকে জাগে।আজি শ্যামল মেঘের মাঝে বাজে কার কামনা ॥" দুইটা গানই কঠিন গান, তিনি টানা গেয়ে গেলেন, কবিগুরু চুপ করে দুইটা গানই শুনলেন। শুনে বিজয়ার মাথায় হাত রেখে বললেন, আজকে বিজয়াই গাইবে! রবীন্দ্রনাথের যে গান পছন্দ হয়েছিল তা বলা বাহুল্য। রবীন্দ্রনাথ বিজয়াকে নিজের কাছে রেখে গান শেখাতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি।

    এমন চমৎকার কণ্ঠের পরেও তিনি শিল্পী হতে পারেননি। পরবর্তীতে মানুষের সামনে গান গাইতে গেলে উনার কণ্ঠ বন্ধ হতে যেত। তাই শিল্পী হয়ে উঠা হয়নি আর। কিন্তু তিনি শুধু গানের শিল্পীই ছিলেন তাও কিন্তু না। তিনি সিনেমায় অভিনয় করছেন। বোম্বে গিয়ে হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সেই অভিনয়কেও তিনি ছেড়ে দিয়েছেন বিয়ের পর। হতে পারতেন অনেক কিছুই, কিন্তু তিনি হলেন সত্যজিৎ রায়ের স্ত্রী। আর আমরা পেলাম কালজয়ী সত্যজিৎ রায়কে।

    আমাদের কথায় একের পর এক উঠে এসেছে সত্যজিতের প্রতিটা সিনেমার গল্প। সিনেমা তৈরির ভাবনা মাথায় আসার পর থেকে শুটিং শেষ করে প্রদর্শনী পর্যন্ত বলে গেছেন একের পর গল্প। আর যার ফলে প্রতিটা সিনেমার পিছনে বিজয়া রায়ের অবদান আমরা জানতে পারি। একজন নারী পিছনে থেকে কীভাবে সত্যজিতকে এগিয়ে নিয়ে গেছে তা পরিষ্কার জানা যায়। শিল্পী নির্বাচন থেকে শুরু করে সিনেমার প্রপস, অভিনেতাদের পোশাক আশাক সমস্ত কিছু ঘুরে ঘুরে কিনে আনতেন। এবং উনার পছন্দের সাথে সত্যজিতের পছন্দ এত মিলে যেত যে কোনদিন এই সব নিয়ে দ্বিমত হয়নি। প্রতিটা সিনেমার ক্ষেত্রেই একই গল্প। শুরুতেই চিত্রনাট্য লেখা হত, তা প্রথমেই বিজয়া রায়কে পড়ে শুনানো হত, তারপর শিল্পী বাছাই, লোকেশন সব হত। শুধু যে কেনাকাটা বা পছন্দ অপছন্দ তা না, পথের পাঁচালির শুটিংয়ের সময় নিজের গহনা বন্ধক রেখে সত্যজিৎ রায়কে টাকার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন। পৃথিবী খ্যাত একেকটা সিনেমা তৈরি হচ্ছে, তার পিছনের গল্প জানার মত চমৎকার আর কী হতে পারে?

    অন্য আরেকটা দিকও ফুটে উঠেছে এই আত্মকথায়। সিনেমা বানাতে গিয়ে সত্যজিতের মত পরিচালকের বারবার অর্থকষ্টে পড়া! বিদেশ থেকে নানান সাংবাদিক আসছে, সাক্ষতকার নিচ্ছে, আর উনার স্টুডিও দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছেন। এমন হতদরিদ্র অবস্থা থেকে কীভাবে এমন কালজয়ী জিনিস তৈরি হচ্ছে তা ভেবেই কূল পাচ্ছে না তারা। কিন্তু সত্যজিৎ তা করে গেছেন। অর্থকষ্ট উনার পিছু ছাড়েনি। যদিও উনার ব্যাক্তিগত জীবন কিন্তু অর্থকষ্টের কোন ছাপ ছিল না। বরং উনারা যে বনেদি পরিবার তা রাখঢাক করার পরেও বেশ ভাল ভাবেই ফুটে উঠেছে।
    বিজয়া রায় বেশ কয়েকবার বলার চেষ্টা করেছেন যে উনারা খুব সাধারণ পরিবার ছিলেন। অর্থকষ্ট ছিল না কিন্তু খুব বেশি কিছু ছিল না উনাদের। যা আমার কাছে সত্য মনে হয়নি। কারন যে বর্ণনা তিনি দিয়েছেন রায় বাড়ির জন্মদিনের কিংবা বড়দিন উদযাপনের তা সাধারণ কোন কিছু বলে মনে হয়নি। প্রতিবার বিদেশ ভ্রমণে উপহারের স্তূপ সকল আত্মীয় স্বজনের জন্য নিয়ে আসা সহ আরও নানা কাণ্ডে পরিষ্কার বুঝা গেছে উনারা আসলে সমাজের ওই স্থানে বাস করছেন যার কাছে সাধারণ হওয়া মানে হচ্ছে এবার জন্মদিনটাতে বেশি কাওকে দাওয়াত দেওয়া হল না কিংবা এবারই বড়দিনে বাবুকে ( সন্দীপ রায়) কিছু উপহার দেওয়া হল না!

    বেশ কিছু অভিযোগও আছে আমার। আসলে অভিযোগ বলা ঠিক হবে না হয়ত। বলা যায় আমার কাছে দৃষ্টিকটু লেগেছে বলা চলে। যেমন তিনি বড়দিনের কথা বললেও একবারের জন্য ঈদের কথা উল্লেখ্য করেননি। কিংবা বলা যেতে পারে একজন মানুষ ইতিহাসের এত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাস করেও রাজনীতি নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথা না ঘামানো আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। বাংলাদেশ কেন যুদ্ধ করছে বা ওপার বাংলায় গৃহযুদ্ধ হচ্ছে! বলে মুক্তিযুদ্ধকে বর্ননা করে গেলেন। না উনার কোন ভূমিকার কথা জানতে পারলাম না সত্যজিতের কথা জানতে পারলাম মুক্তিযুদ্ধে নিয়ে। দুই একটা করে বিষয় শুধু বলে গেছেন আর কিছু না। পশ্চিমবঙ্গ উত্তাল, মানুষ মারা যাচ্ছে, উনার বক্তব্য শুধু দুই এক লাইন বলে যাওয়া। এই ব্যাপারে সত্যজিতের কোন উক্তি বা মনভঙ্গি আমরা জানতে পারি না। আমরা বা যদি বলি আমি কারো আত্মজীবনী পড়তে ইচ্ছা প্রকাশ করি সাধারণত উনাকে জানা এবং একই সাথে উনার সময়কে জানার জন্য। আরও ভাল ভাবে বলতে গেলে বলতে হয় ওই সময়টাকে তিনি কীভাবে দেখেছেন তা জানার জন্য। উনাকে এবং সত্যজিতকে যতখানি জানা গেছে এই বই পড়ে সময়কে জানা যায়নি একটুও। ডায়রির পাতায় লেখা দুই এক লাইন দিয়ে সময়কে ধরা যায় না, আজকে ইন্দিরা গান্ধিকে গুলি করে মেরে ফেলেছে বলে একটু দুঃখ প্রকাশ আমাদেরকে কিছুই জানায় না।
    কিছুই করার নেই। তিনি হয়ত এমনই মানুষ। বিন্দুমাত্র রাজনৈতিক ভাবনাহীন অনেক মানুষই তো আমরা দেখি। তিনিও তেমন একজন। তিনি হলেও সমস্যা নেই, সত্যজিতের চিন্তা ভাবনা জানা গেল না এটাই আফসোস। হয়ত তার জন্য অন্য কিছু পড়তে হবে আমাদের।

    ব্যক্তি বিজয়া রায় নিয়ে কয়েকটা কথা না বললেই নয়। তিনি উনার এই লেখায় অনেকটুকু অংশই ব্যয় করেছেন মানুষের সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে। আমি জানি না একজন মানুষের কথা বলার পরেই কেন বলতে হবে তিনি দেখতে কী সুন্দর! বা তিনি দেখতে মোটামুটি! প্রায় প্রতিটা মানুষের কথা বলতে গিয়েই তিনি তারা খাটো না লম্বা, কালো না সাদা, দেখতে সুন্দর না চলে ধরেনর তা বলে গেছেন। যা আমাকে তৃপ্তি দেয়নি, বরং বিরক্ত করেছে অনেকখানি। যারা সত্যজিতের আত্মীয় স্বজনের রূপের বর্ণনা জানতে আগ্রহী, কে কতটা দেখতে ভাল জানা যাদের প্রয়োজন তারা খুব আগ্রহ নিয়ে পড়তে পারেন এই বিষয় গুলো।

    আর একটা বিষয় নিয়ে বলা দরকার মনে করছি। তা হচ্ছে উনি খুব বেশি সাহিত্য নিয়ে কথা বলেননি। আমাদের কথা পুরোটা জুড়েই সত্যজিতের সিনেমার গল্প। পরিচালক সত্যজিতের সাথে বেশ ভাল ভাবেই পরিচয় হয়েছে আমাদের। কিন্তু তিনি তো শুধু পরিচালক ছিলেন না। উনার অসাধারন সব গল্পের গল্প যদি একটু থাকত তাহলে আমাদের তৃষ্ণা আরেকটু মিটত। বই বিক্রির টাকায় সংসার চলে এমন কথা বলেছেন বেশ কয়েকবার। কিন্তু ওই পর্যন্তই। প্রফেসর শঙ্কু, ফেলুদা কিংবা তারিণীখুড়োর মত চরিত্র একজন লেখক বাংলা সাহিত্যে আনলেন আর তার পিছনের গল্প বা তা নিয়ে লেখকের অভিব্যক্তি আমাদের জানা হল না এ একবারেই মেনে নেওয়ার মত না।

    সত্যজিৎ রায়কে আমরা, মানে আমাদের প্রজন্ম কতটুকু জানে আমি জানি না। আমি সিনেমা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। বারবার করে দেখিছি। আমরা এখন যেমন আমেরিকান, কোরিয়ান, স্প্যানিশ সহ নানান দেশের পরিচালকের নাম শুনে অবাক হয়ে যাই। আমাদের সত্যজিৎ রায় ছিলেন তখনকার সময়ের তেমন এক পরিচালক। পুরো দুনিয়া অবাক হয়ে যেত উনার কাজ দেখে। আমরা আকিরা কুরোশাওয়ার নাম শুনে, ছবি দেখি তাজ্জব হই এখন, আর কুরোশাওয়া অবাক হয়ে কাজ দেখতেন সত্যজিতের। দুইজনের বন্ধুত্বের গল্প পাওয়া যায় আমাদের কথায়। আজকে পুরো ভারতবর্ষের একটা সিনেমা বা কোন পরিচালক বাইরের স্বনামধন্য কোন চলচিত্র উৎসবে আমন্ত্রণ পেলে তা খবর হয়, তাকে মানে ওই খবরকে বিক্রি করা হয় আরও কয়েক বছর। আর সত্যজিৎ রায় একটা করে সিনেমা করেছেন বিভিন্ন জায়গা থেকে আমন্ত্রণ এসে যেত সমানে। উনি যদি বুঝতেন যে এই সিনেমাটা উৎসবে দেওয়ার মত না, তাহলে না করতেন। কিন্তু উৎসব কমিটির ছবি ভাল মন্দের থেকেও জরুরি হত রেয়ের সিনেমা উৎসবে থাকা। তাই জোর করেই নিয়ে যেতে চাইত। কান, বার্নিল সহ কত যে পুরস্কার পেয়েছে তিনি তার সব গল্প পাওয়া যায় আমাদের কথায়। আমরা অবাক হই এমন একজন মানুষ, বাংলা ভাষায় চলচিত্র তৈরি করে পুরো বিশ্বকে যিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

    সাড়ে পাঁচশ পৃষ্ঠার বই যখন শেষ হয়ে আসছে, মহারাজা যখন সমানে অসুস্থ হয়ে পরছেন তখন আমাদেরকে আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছিল এই লোকটা কী জিনিস ছিল। আমি সিনেমার হিসাব করছিলাম তখন, শুধু মনে হচ্ছিল না, এই অসুস্থতায় তিনি যাবেন না, এখনো তো আগন্তুক করা বাকি, এর আগে যাবেন কী করে? অসুস্থ অবস্থায় শেষ সিনেমা আগন্তুক তৈরি করলেন, উৎপল দত্ত তার জীবনের অন্যতম সেরা অভিনয় করলেন। আর শেষ সিনেমায় এসেও সত্যজিৎ দেখালেন তিনি কত বড় পরিচালক, কী দুর্দান্ত কাজই না করে গেছেন। আগন্তুক সিনেমার শুটিং শেষ হওয়ার পর, শেষ শট নেওয়ার পর তিনি বলে উঠেন, "যাঃ, আমার যা কিছু বলার ছিল সব ফুরিয়ে গেল, আমার আর কিছুই বলার নেই।" এই কথা শোনার পর বিজয়া রায়ের যেমন লেগেছিল, আমাদেরও তেমনি যেন লাগে। আমরা জানি তাই সত্য হয়েছিল। কিংবা বলা চলে উনার সময় ফুরিয়ে গেছিল, সত্যজিতের মত মানুষ কী কোনদিন ফুরিয়ে যায়?

    ভিতর বাহিরের নানান সত্যজিৎ রায়ের গল্প জানার জন্য আমাদের কথার বিকল্প নাই। বইটার আরেকটা বিশেষ গুণ হচ্ছে ঝরঝর ভঙ্গিতে লেখা। এত বড় বই কিন্তু যেন এক টানে পড়ে শেষ করা যায়। আমি যদি চেষ্টা করতাম তাহলে হয়ত এক বসায় শেষ করে উঠতে পারতাম। মাঝে মাঝে অনলাইনে গুঁতোগুঁতি না করে, ফেসবুকে উঁকিঝুঁকি না দিয়ে যদি পড়ে যেতাম তাহলেও পড়ে যাওয়া যেত। একবারের জন্য এখন থাক, আর ভাল লাগছে না বলে রেখে দিতে ইচ্ছা করত না। বিজয়া রায় যে লেখক হলেও ভাল করতেন এটা তারও প্রমাণ বলা চলে। আমি মনে করি সাহিত্য ও চলচিত্র প্রেমী এমন সকলের পড়া উচিত আমাদের কথা।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৮ জুন ২০২০ | ৫৫৫৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ০৯ জুন ২০২০ ১১:১৫94151
  • এহ এ বইটা দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক বেরোত।্কি প্রচন্ড হ্যাজ, হপ স্কিপ জাম্প করে করে পড়তাম। লেখনশৈলী খুবই বোরিং।

    যেটা নজরে পড়েছিল সেটা হল সত্যজিতের যে মহিলা সম্পর্কে সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গীর আন্দাজ পাই ছোটগল্প ইত্যাদিতে সেটার প্রভাব বিজয়ার উপরেও যথেষ্ট। প্রচুর গুণ থাকা সত্তএও বিজয়া তাই সত্যজিতের ছায়াতেই রয়ে গেলেন।
  • | ০৯ জুন ২০২০ ১১:১৫94152
  • *সত্ত্বেও
  • b | 14.139.***.*** | ০৯ জুন ২০২০ ২১:১৩94163
  • হ্যঁ। একটা জায়গাতে ছিলো মানিক আমার চোখ টিপে ধরলেন। বইতে সেটা বাদ গেছে কি না জানি না।
    সেকালের ব্রাহ্ম পরিবারে তুতো ভাইবোনের মধ্যে বিবাহের আরেকটা উদাহরণ আছেঃ অতুলপ্রসাদ সেন। সেও ১৯০০ সালে।
  • অর্জুন | 223.223.***.*** | ১০ জুন ২০২০ ০০:৫৭94172
  • ২০০৩- '০৪ পর্যন্ত 'দেশ' পত্রিকায় ধারাবাহিক বেরিয়েছিল বিজয়া রায়ের 'আমাদের কথা'। শ্রীমতী রায় নিয়মিত ডায়রি লিখতেন। সেই সব ডায়রি এবং ওঁর স্মৃতি সম্বল করে এই বই। 

    আমি তখন প্রবাসে এবং সদ্য এম এ পাশ করে চাক্রিতে ঢুকেছি । তাই প্রথম দিকে 'দেশ' বেরোলেই খুব উৎসাহ নিয়ে পড়তাম । কিন্তু অচিরেই লেখাটি নিরাশ করেছিল এবং লেখাটির পরিচিত পাঠকদের সঙ্গে হাসাহাসির খোরাক জুগিয়েছিল। 

    আমার স্কুল জীবনে 'সানন্দা' পত্রিকায় সুপ্রিয়া দেবীর 'আমার জীবন আমার উত্তম' ধারাবাহিক বেরুত। সেটা পড়ার অনুমতি ছিল না। কিন্তু বাড়িতে মহিলাদের মধ্যে সেই বইটি নিয়ে আলোচনা শুনতাম ও আমি আর আমার পিসতুতো দিদি লুকিয়ে চুরিয়ে লেখাটা পড়তাম । 

    'আমার জীবন আমার উত্তম' এ উত্তম- সুপ্রিয়ার সম্পর্ক মূলত পরকীয়া হওয়ায় তার সঙ্গে একটি স্ক্যাণ্ডেলাস চার্ম ছিল। 'আমাদের কথা' য় সেটাও ছিল না। 

    লেখাটির প্রথম দিকে উনিশ শতকের বিশ, ত্রিশ, চল্লিশের দশকের একটি বিখ্যাত, অভিজাত ব্রাহ্ম পরিবারের  নানা খুঁটিনাটি বিবরণ পাওয়া যায় । বাকীটা শুধুই দৈনন্দিন ধারাবিবরণী । 

    ছোটবেলা থেকে তিনি সত্যজিৎ রায়ের ছায়া সঙ্গিনী তাই সত্যজিতের চলচ্চিত্র ও অন্যান্য সৃষ্টির সঙ্গে তিনি যুক্ত অর্থাৎ উপস্থিত কিন্তু চলচ্চিত্রে কস্টিউম এবং প্রথমদিকে কাস্টিং ছাড়া বিজয়া রায়ের সত্যজিতের চলচ্চিত্র ভাবনায় নূতন কোনো ভূমিকা একেবারেই স্পষ্ট নয় । 

    এমনকি বিভিন্ন আন্তরজাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অন্য ভাষাভাষীর ফিল্ম ও চলচ্চিত্রকার এবং সেখানে সত্যজিৎ এর প্রতিনিধিত্বের কথার চাইতে তাঁর শপিং ও শহর ভ্রমণের বর্ণনা বেশী ছিল। আপত্তি হত না যদি এটা 'আমাদের কথা' না হয়ে 'আমার কথা' হত।  

    তবে বিজয়া রায় সেই সময়ের মহিলা যারা দেশে প্রথম বহির্জগতে পা রাখছেন ।  বেছে নিচ্ছেন নিজের ইচ্ছে মত পেশা। ১৩-১৪ বছর বয়েসে বাবাকে হারিয়ে পাটনা থেকে কলকাতায় কাকার বাড়ি চলে আসা। কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে অতিক্রম করে চাকরির জগতে ঢোকা । বইয়ে আছে প্রথমে একটি মেয়েদের স্কুলে চাকরি নিয়েছিলেন বিজয়া। মাইনে অত্যন্ত কম হওয়ায় ডিপার্টমেন্ট স্টোরে চাকরি নিলেন। তারপর চলচ্চিত্রে প্রবেশ। বোম্বেতে ফিল্ম  কেরিয়ার গড়বেন বলে কয়েক বছর রইলেন । সেখানে তখন তার দিদি সতী দেবী মিউজিক ডিরেক্টর । দেশের প্রথম মহিলা মিউজিক ডিরেক্টর । 

    ফিল্মে চূড়ান্ত ভাবে অসফল হলেন । তারপর সব মেয়েই যা করে । বিয়ে! তাও বয়েসে ছোট পিসতুতো ভাইকে। 

    এই যে একটার পর একটা ভিন্ন প্রকৃতির পেশার জগতে ঢোকা ! কৈশোর থেকে তুতো ভাইকে প্রেম করে তাঁকেই বিবাহ করা, কোনোটাই সহজ ছিল না । কিন্তু বিজয়া রায়ের স্মৃতিকথা পড়ে তার এই জীবন পথ একেবারেই কঠিন মনে হয় না !  

    সত্যজিৎ রায়ের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে লেখাটি শেষ হয়। মৃত্যু দৃশ্যটির বর্ণনা আমাকে খুব টাচ করেছিল।  তারপরেও অনেককাল রইলেন তিনি। সত্যজিৎ-হীন বিজয়ার কথা আর জানাননি। 

  • অর্জুন | 223.223.***.*** | ১০ জুন ২০২০ ০১:০৭94174
  • বিজয়া রায়ের পিতা চারুচন্দ্র দাস ও সত্যজিৎ রায়ের জননী সুপ্রভা রায় হলেন ভাই, বোন । চারুচন্দ্র ও সুপ্রভার এক তুতো দাদা হলেন অতুলপ্রসাদ সেন । তিনিও নিজের মামা কে জি গুপ্ত'র মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। ঐ পরিবারে অনেক সংগীত প্রতিভা আছে । যেমন সাহানা দেবী, কনক দাস, মঞ্জু গুপ্ত ......।  তবে কাজিন ম্যারেজ ব্রাহ্মদের মধ্যে প্রচলিত কিনা সেটা বলা যাচ্ছেনা । সম্ভবত না। 

    'আমাদের কথা'য় আরেকটি বিষয় আমায় অবাক করেছিল । বিজয়ার আপন মাসিমা দেশবন্ধু পত্নী বাসন্তী দেবী। অথচ পুরো বইয়ে পরাধীন দেশের রাজনৈতিক অবস্থার কথা একটা লাইনেও নেই !! 

    'লক্ষণের শক্তিশেল' -এ চোদ্দখানা গান ছিল যার স্বরলিপি প্রস্তত করেছিলেন বিজয়া রায়। আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তিন খণ্ডের সুকুমার সমগ্রে সেটা অন্তর্ভুক্ত । এ তথ্যটি আমাকে দিয়েছেন @এলেবেলে ওরফে দেবোত্তম চক্রবর্তী । 

  • ফেমিলি ট্রি | 2001:ac8:21:8::2fa1:***:*** | ১০ জুন ২০২০ ০১:১৮94176
  • ওজ্জুনবাবু , বুইতে অসুবিদে হচ্চে , হেঁ হেঁ। কে কার পিস শ্বশুর কে কার মামাতো ভাই ছপি সহ বুঝায়ে দ্যান দিকি। মানে কচি করে এট্টা ফেমিলি ট্রি আঁকেন।

  • pi | 2402:3a80:a33:f683:0:3:2044:***:*** | ১০ জুন ২০২০ ০১:২৬94178
  • নিচের অনুচ্ছেদের শেষ বাক্যে খটকা লেগে রইল। বিজয়া রায় নিজের কেরিয়ার ছেড়ে অন্য কোনকিছু প্রায় না করে শুধুই সত্যজিত রায়ের স্ত্রী হয়ে না থাকলে সত্যজিত রায় কালজয়ী হতেন না? এভরি সাকসেসফুল ম্যানের পিছনে সর্বত্যাগী উইম্যানের তত্ত্ব?

    "এমন চমৎকার কণ্ঠের পরেও তিনি শিল্পী হতে পারেননি। পরবর্তীতে মানুষের সামনে গান গাইতে গেলে উনার কণ্ঠ বন্ধ হতে যেত। তাই শিল্পী হয়ে উঠা হয়নি আর। কিন্তু তিনি শুধু গানের শিল্পীই ছিলেন তাও কিন্তু না। তিনি সিনেমায় অভিনয় করছেন। বোম্বে গিয়ে হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সেই অভিনয়কেও তিনি ছেড়ে দিয়েছেন বিয়ের পর। হতে পারতেন অনেক কিছুই, কিন্তু তিনি হলেন সত্যজিৎ রায়ের স্ত্রী। আর আমরা পেলাম কালজয়ী সত্যজিৎ রায়কে"
    ----

    তবে হ্যাঁ, দেশে ধারাবাহিক পড়ার সময় পুরো হেজে গেছিলাম, আমিও প্রচুর স্কিপ মারতাম। আমার তো সুসাহিত্যও মনে হয়নি, সিরিয়াস সাহিত্য ছেড়ে দিলাম, তরতরে ঝরঝরে স্বাদু লেখনীও মনে হয়নি, সমসাময়িক সমাজ রাজনীতি উঠে না আসা তো ছেড়েই দিলাম।
    ভীষণ খাপছাড়া অগোছালো, ডায়রি থেকে খাপচাখাপচা তুলে নেওয়া মনে হয়েছিল,অনেক্ বেশি সম্পাদনার প্রয়োজন মনে হয়েছিল।
    বাকি অনেক কথা অন্যেরা বলে দিয়েছেব। আর আমারো মতে আমাদের কথার বদলে আমার কথা নাম হলে বেটার হত, বা আমার কথা, আমার বাবুর কথা।
  • অর্জুন | 223.223.***.*** | ১০ জুন ২০২০ ০১:৩৪94179
  • বিজয়া রায়ের এই একটিই গানের রেকর্ড আছে।  

    খুবই ভালো গলা। 

  • এলেবেলে | 202.142.***.*** | ১০ জুন ২০২০ ০২:০৬94180
  • এমনিতে কিছুই লিখতাম না কারণ আমাদের কথা আমার কাছে দেশ থেকে কেটে বাঁধিয়ে রাখা আছে কেবলমাত্র ছবিগুলোর জন্য। না হলে এত খাজা লেখা জাস্ট টানা যায় না। এর থেকে সুরমা ঘটকের ঋত্বিক ঢের ভালো। শুধু অর্জুনের শেষ মন্তব্যটা একদমই ভালো লাগল না। নিকের গোপনীয়তা এভাবে নষ্ট করা উচিত তো নয়ই, শোভনও নয়। অর্জুনের থেকে এটা আশা করিনি।

  • সম্বিৎ | ১০ জুন ২০২০ ০২:১৯94181
  • দেশে যখন বেরোচ্ছিল, নাম দিয়েছিলাম "বাবু-বৃত্তান্ত"। খালি বাবুর জন্মদিনে পুডিং করলাম আর ক্রিসমাসে বাবুর জন্যে অমুক করলাম। কানাঘুষো শুনেছিলাম দেশ ওনার সংগ্রহের ছবি চেয়েছিল। উনি বলেছিলেন, লিখতে দিলে তবেই ছবি। ধারাবাহিকের সময়ে পুরোটা পড়তেও পারিনি। গেল বছর বইটা পড়লাম। এবার অবশ্য তত অসহ্য লাগেনি। শেষও করেছিলাম।  

  • অর্জুন | 223.223.***.*** | ১০ জুন ২০২০ ০২:২৪94182
  • সেকি ! আপনি তো নিজেই একদিন 'ভাটিয়ালি তে ঘোষণা করলেন আপনার পরিচয়  ! 

    আমি ভাবলাম সবাই জানে এখানে !! 

  • কিংবদন্তি | ১০ জুন ২০২০ ২১:২২94207
  • @pi, না, "এভরি সাকসেসফুল ম্যানের পিছনে সর্বত্যাগী উইম্যানের তত্ত্ব" না। আমি শুধু যা হয়েছে তাই বলেছি। ওই ভদ্র মহিলা না থাকলে কী হত কে জানে? পথের পাঁচালি থেকে শুরু করে অনেক সিনেমার পিছনেই তো এই নারীর অবদান আছে। কাজেই কী হত তা বলা মুশকিল। সত্যজিতের সাফল্যের পিছনে এই মহিলার অবদান আছে তা অস্বীকার করার উপায় নাই। আর সাহিত্য গুণ? সরাসরি ডাইরি থেকে তুলে দিয়েছে তা সত্য। খুব বিচ্ছিরি লেগেছে অনেক জায়গায়। এমন দোষ খুঁজলে আরও অনেক পাওয়া যাবে আমি নিশ্চিত। উনি যে পরিমাণ শপিঙের গল্প করেছে তা রীতিমত অসহ্য লেগেছে অনেক সময়। চলচিত্র উৎসবে সত্যজিৎ প্রধান বিচারক হয়ে গেছেন, আমরা জানতে পারলাম শুধু উনার কেনা কাটার গল্প। বইয়ের নাম আমাদের না হয়ে আমার গল্প হতেই পারত, তাতে কেউ মনে হয় আপত্তিও করত না। বাবু বাবু  করেও মেজাজ খারাপ করেছে তাতেও কোন সন্দেহ নেই, বিশেষ করে এই সময়ে যখন পড়ছি, যখন আমরা জানি বাবু আসলে কী মাল! এমন অনেক কিছুই দোষ আছে বইটার। আমি সত্যজিতের স্ত্রীর বইয়ের ভিতরে অত দোষ খুঁজতে যাইনি, এটাই হচ্ছে সত্য কথা। উনি লেখক না, আমি বিজয়া রায়কে বিজয়া রায় বলে চিনিও না, সম্ভবত কেউই চিনে না। কাজেই বিজয়া রায় নিয়ে খুব বেশি দোষ খুঁজতে যাওয়া উচিত মনে হয়নি আমার। আমার লক্ষ্য তো ছিল সত্যজিৎ, তা কতটুকু পেয়েছি তাই বিবেচনায় ছিল বেশি আমার।  কিন্তু ঝরঝরে মনে হয়নি? আমার কাছে কিন্তু মনে হয়েছে, সহজেই পড়া গেছে, এক টানে পড়ে যাওয়া গেছে। অন্তত আমি পড়তে পেরেছি। কী জানি, যখন যখন ব্রেক দিয়েছিলাম তখন কী তাহলে আর পড়তে না পেরে বাদ দিয়েছিলাম? হতেও পারে! 

  • কিংবদন্তি | ১০ জুন ২০২০ ২১:২৫94209
  • @অর্জুন, ধন্যবাদ, গানটার জন্য আর আরও কিছু দুর্দান্ত তথ্যের জন্য। 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন