এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  অর্থনীতি

  • নিতুই নব : সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের পরমগতি প্রাপ্তি

    হীরেন সিংহরায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | অর্থনীতি | ১২ মার্চ ২০২৩ | ১৯০১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৫ জন)
  • নিতুই নব : সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের পরমগতি প্রাপ্তি



    এক

    স্টিভেন স্পিলবেরগের Jaws ছবির ক্যাচ লাইন ছিল – যেই আপনি ভাবলেন এবার  সমুদ্রে স্নান করাটা নিরাপদ*।

    কয়েকদিন ধরে একটু কানাঘুষো চলছিল যে চল্লিশ বছরের পুরনো সান্টা ক্লারার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের ঘরে টাকা কম পড়িয়াছে।

    বৃহস্পতিবার, মার্চের ৯ তারিখ  ক্যালিফোর্নিয়ার দুপুর বারোটা নাগাদ ( কলকাতার পরের দিন সকালে যখন আপনি চায়ের প্রথম পেয়ালা হাতে ধরেছেন ) একটি টেলিফোন কনফারেনসে ব্যাঙ্কের সিইও বেকার সমবেত শ্রোতাদের বললেন, “শান্ত থাকুন (স্টে কাম)। আমাদের ঘরে অর্থের কোন অভাব নেই। আমরা নতুন শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলব এবং আমাদের ভল্টে রাখা কিছু বন্ড বিক্রি করব। আপনাদের অর্থ পাবেন, দয়া করে তাড়াহুড়ো করবেন না”।

    এত বলি তিনি ব্যাঙ্কের ভল্টে রক্ষিত ২৭ বিলিয়ন বন্ড বিক্রির আদেশ দিলেন। তা বেচে দেড় বিলিয়ন ডলার লোকসান হলো। বিকেল হতে সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম ষাট শতাংশ কমে গেল।



    পরদিন ১০ মার্চ শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়া আর্থিক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ব্যাঙ্ক বিক্রির চেষ্টা সফল হল না দেখে দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করেছেন। ঘোষণা হল  “আড়াই লক্ষ ডলার অবধি জমা টাকা ফেডারাল রিজার্ভের বিমা প্রকল্প দ্বারা সুরক্ষিত। সোমবার ১৩ মার্চ সে টাকা প্রাপককে দেওয়া হবে। এর বেশি যদি জমা থাকে, ব্যাঙ্কের টেবিল চেয়ার ঘটি বাটি বেচে যা আদায় হতে পারে, তা থেকে শোধ দেওয়া হবে। ব্যাঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে অযথা ভিড় বাড়াবেন না।”  

    কয়েকটা পাতা উলটে দেখা যাক।

    সোমবার ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০০৮ সালে লেমান ভ্রাতৃবৃন্দের ব্যাঙ্কটি দেউলে হলে হঠাৎ সকল নিয়ন্ত্রক সংস্থা সরজমিন তদন্তে লেগে পড়লেন। কার ঘরে কোন ঘোগ লুকিয়ে আছে দেখতে হবে। ইউরোপ আমেরিকার বহু ব্যাঙ্কের আলমারি খুললে ক্যাশ নয়, নানান প্রকারের কঙ্কাল দেখা গেলো। মাথার টুপি হাতে নিয়ে সিটি গোল্ডম্যান ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকা ডয়েচে রয়্যাল ব্যাঙ্ক অফ স্কটল্যান্ড আপন দেশের সরকারের কাছে হাত পাতলেন - প্রভু, এবারের মতন বাঁচান। সরকারি অর্থমন্ত্রীরা বলতে পারলেন না এতদিন তো খুব মউজ করছিলেন তখন মনে ছিল না যত হাসি তত কান্না?  দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের শাজাহান নাটকের প্রথম সংলাপটির (এ তো বড়ো দুঃসংবাদ দারা! ) সুরে আমেরিকান অর্থমন্ত্রী হ্যাঙ্ক পলসেন রাষ্ট্রপতি বুশকে বললেন, “রাজকোষ উন্মুক্ত করা হোক। টাকা ছাপার মেশিন চলুক রাত্রিদিন। এখুনি সাতশ বিলিয়ন ডলার দিয়ে আমার পছন্দমত কয়েকটি আমেরিকান ব্যাঙ্ককে না বাঁচালে আমাদের চেনা দুনিয়া রসাতলে যাবে”। সেই সঙ্গে অনুগত তল্পিবাহক ফেডারাল রিজার্ভের অধ্যক্ষ শ্রী বেরনানকেকে বললেন, “শুধু টাকা ছাপা নয়, সুদের হার কম করে দিন”।

    আটলান্টিকের ওপারের ধ্বনি এপারেও গুঞ্জরিত হল।  ব্রিটেন ফ্রান্স জার্মানির সরকার ভাঁড়ার খুলে দিলেন – সামনে নির্বাচন আছে না? ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ইসিবি-র সামনে আরও অনেক ফাঁড়া – শুধু ব্যাঙ্ক নয়, গ্রিস পর্তুগাল আয়ারল্যান্ড ইতালিকে বাঁচাতে হবে। সংসার চালাতে অপারগ তারা, আপন আয় ব্যয়ের হিসেব মিলছে না - কাছা খুলে যাবার যোগাড়। অতএব? অতএব টাকা ছাপো, সুদের হার কম করে দাও এত সস্তা হোক যে গ্রিস পর্তুগাল ইতালির বন্ড জার্মান ডাচ ফরাসিরা হাসিমুখে কিনে নেবে। এরা ইউনিয়নের সদস্য। অনেক দরিদ্র  আফ্রিকান দেশ জাতীয় আয়ের অর্ধেক ব্যয় করে, গ্রিস ইতালি আয়ের ডবল ব্যয় করে। কিন্তু এরা আমাদের লোক - এদের কেস আলাদা।  

    আচ্ছা, বেমক্কা টাকা ছাপানো, সুদের হার নামিয়ে দেওয়া থেকে কি মুদ্রাস্ফীতি হতে পারে না? কামায় সিকি ওড়ায় টাকা?

    কাঁটা কলের অর্থনীতির গুরুগৃহে মুদ্রাস্ফীতি নামক দানবটির বিষয়ে জেনে ভীত হয়েছি। জার্মানিতে আসার পরে বয়স্ক মানুষদের কাছে তার গল্প শুনেছি - সকালবেলা ট্রামের ভাড়া এক মিলিয়ন মার্ক, বিকেলে দু মিলিয়ন। এবারে অর্থনীতি বেত্তারা বললেন মুদ্রাস্ফীতির কথা হচ্ছে না। আমরা এক নতুন শব্দবন্ধের সন্ধান দিচ্ছি তার নাম কোয়ানটিটেটিভ ইজিং - সোজা কথায় বাজারে নতুন টাকা ছাড়া। মুঠো মুঠো ইউরো, ডলার। লে যাও।

    ২০২২ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরষ্কার প্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ শ্রী বেঞ্জামিন শালোম বেরনানকে আপন পাঠাভ্যাসের  কালে ১৯৩০ সালের মহা মন্দা নিয়ে রিসার্চ করেছিলেন। তাঁর মতে  দেশব্যাপী আর্থিক দুর্যোগের সময়ে ফেডারাল রিজার্ভ টাকার সরবরাহ কমিয়ে ও সুদের হার বাড়িয়ে যে ভুল করেছিলেন তার কারণেই  সে মন্দা এতো দীর্ঘস্থায়ী হয়েছিল।  ক্লিনটন আমলে বাজার রইল চড়ে  । ২০০১ সালে ডট কম বোমাটি ফাটলে সেই অচ্ছে দিন শেষ হল । তখন শালোম বেরনানকে তাঁর বস , তৎকালীন আমেরিকান কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কর্তা শ্রী গ্রিনসপানকে আপন রিসার্চ পেপারটি পড়িয়ে বললেন , সার এই বাজারকে ফেরাতে গেলে সুদ কমানো আর টাকা ছাপানো ছাড়া অন্য গতি নেই । গ্রিনসপান বললেন তবে তাই হোক ।

    আহা সে কি সুখের দিন ছিল। সুদের হার প্রায় শূন্য, অর্থের অভাব নেই। যেমন খুশি ব্যাংকিং বোমা বানাও বেচো ,  বোনাস কামাও। এ রকম দিন বেশিদিন টেকে না – সাব প্রাইম সঙ্কট,  ব্যাঙ্কে দেউলে হলে সরকারের কাছে অর্থ ভিক্ষা করার গল্প আমরা জানি।  আমাদের বলা হলো বাড়িঘর নিয়ে বন্ডের খেলা আর তার ডেরিভেটিভের লঙ্কা কাণ্ড এখন ইতিহাস। আমাদের শিক্ষা হয়েছে। আপনাদের সকলের আর্থিক অবস্থান একেবারে সুনিশ্চিত।  আমরা সব ব্যাঙ্কের হাঁড়ির খবর নিয়েছি – নানা রকম অ্যানালিসিস, স্ট্রেস টেস্ট (মানে তার সম্পদ ও দায়ের চুল চেরা হিসেব - ডলারের দাম বাড়লে, সোনার দাম কমলে, খদ্দেরের জমা টাকা কম পড়লে কি কি হতে পারে) করে তাদের সুস্বাস্থ্যের সার্টিফিকেট দিয়েছি। জনগণ আপনারা শেয়ার বাজারে টাকা লুটোলে আমাদের কিছু করার নেই কিন্তু সকল ব্যাঙ্ক এবং সেখানে আপনার টাকা একেবারে সুরক্ষিত।

    আল ইজ ওয়েল।
     
    এমনি করে দশ বছর কাটল। 

    হঠাৎ এই গত বছর ধনী দেশগুলির সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কেরা আকস্মিক ত্রস্ত হলেন - একি ব্যাপার? মুদ্রাস্ফীতি কেন বাজারে? লোকের আয় বেড়েছে বলে তারা বেশি ব্যয় করছে বলে এটা কি ঘটল? না, তা তো নয় (ওয়েজ বেসড ইনফ্লেশন)। মুদ্রাস্ফীতির যে বিষবৃক্ষ গ্রিনসপান, বেরনানকে, মারভিন কিং (ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড), জঁ পল ত্রিশে (ইসিবি) মিলে বপন এবং তাতে নিয়মিত জল ও সার দিয়ে ২০০৮-২০১২ সালের ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিপন্ন অর্থনীতিকে বাঁচিয়েছিলেন তার ফলটি আজ সেই বৃক্ষে দোদুল্যমান। সেই নাটিকার পাঁচজন নায়ক বা খলনায়ক প্রভূত পেনশন, (একজন আবার নোবেল প্রাইজ) নিয়ে কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন।

    অতঃকিম ?

    এবারের সংগ্রাম মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম! আমাদের হাতিয়ার ‘সুদের হার’ আর ‘টাকার সরবরাহ’।

    রিভার্স গিয়ার। সুদের হার বাড়াও, নোট কম ছাপো। টাকার ভাও বেশি হলে জিনিসপত্রের চাহিদা কমবে। লোকে খরচা করবে হিসেব করবে। সুইগি থেকে খাবার না আনিয়ে গৃহবধূরা স্বহস্তে রন্ধন করবেন, নেটফ্লিক্সের চাঁদা বন্ধ করবেন। ব্যাঙ্কের খাতায় জমার পরিমাণ বাড়বে অবসর প্রাপ্ত মানুষ যারা ব্যাঙ্কে জমা টাকার সুদ থেকে জীবনযাত্রা নির্বাহ করেন, তাঁরা দু হাত তুলে আশীর্বাদ করবেন। মুদ্রাস্ফীতি কমলে গ্যাঁটের টাকার মূল্য বাড়ে।

    সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কটি কোন কারণে ডুবিল? তার ভল্টে জমা ডলারের পরিমাণ এত বেশি যে তা কোথায় লাগাবেন ভেবে না পেয়ে সিইও বললেন আমাদের অর্থ নিশ্চিত থাকুক।  সুদ কম ক্ষতি নেই কিন্তু সে টাকা মারা যাবার ভয় যেন না থাকে আর লাগাও লম্বা সময়ের জন্য।  সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো নিবেশ  দীর্ঘ মেয়াদি আমেরিকান সরকারি ঋণপত্র এবং খ্যাতনামা কোম্পানির দশ বছরের বন্ডে।

    যেদিন থেকে আমেরিকান কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদের হার বাড়ানো শুরু করেছেন, সেদিন থেকেই সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে রাখা বন্ড এবং সরকারি ঋণপত্রের বাজার দর কমেছে কারণ অত্যন্ত সহজ – স্বল্প মেয়াদি সুদের হার যখন দীর্ঘ মেয়াদি বন্ড বা ঋণ পত্রের সমান অথবা বেশি, বন্ড বেচলে কম পয়সা পাওয়া যায়।

    মুদ্রাস্ফীতিকে শাসাতে ফেড যে কামান দাগলেন, তার প্রথম বলির নাম সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক যার সম্পদের পরিমাণ দুশ বিলিয়ন ডলার - আমেরিকান ব্যাংকিঙের ইতিহাসে দেউলে হওয়ার তালিকায় দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাঙ্ক (ওয়াশিংটন মিউচুয়াল এখনও পয়লা নম্বরে)।

    ক্রমশঃ
     
    • Just when you thought it was safe to go back in the water:  Shark by Peter Benchley. (author of the film Jaws).
     
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১২ মার্চ ২০২৩ | ১৯০১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পলিটিশিয়ান | 2600:8802:590e:d800:8850:c93:9ee1:***:*** | ১২ মার্চ ২০২৩ ০৭:২৫517292
  • হীরেনবাবু 
     
    আপনার অর্থনীতি বিষয়ক লেখা পড়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। এ লেখাটিও সেই অপেক্ষার মূল্য দিল।
     
    লেখায় আপনি বলেছেন "মুদ্রাস্ফীতি কেন বাজারে? লোকের আয় বেড়েছে বলে তারা বেশি ব্যয় করছে বলে এটা কি ঘটল? না, তা তো নয় (ওয়েজ বেসড ইনফ্লেশন)।" দেখছিলাম মুদ্রাস্ফীতি বেশী হচ্ছে খাদ্য ও এই জাতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ক্ষেত্রে। দুটি প্রশ্ন
     
    এক, মাইনে যদি না বাড়ে তাহলে খাদ্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মুদ্রাস্ফীতি কিভাবে হয়? 
     
    দুই, যদি আয় বাড়ার সাথে মুদ্রাস্ফীতির যোগ না থাকে তাহলে সুদ বাড়িয়ে কিভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানো যাবে?
  • Indra Mukherjee | ১২ মার্চ ২০২৩ ১০:০১517294
  • MNREGA ইত্যাদির জন্য UNDERPRIVILEGED শ্রেণী র লোক জনের হাতে পয়সা  গেলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি  হোতে  পারে । সঠিক Supply বৃদ্ধি হলে কিছুটা neutralized হয় 
     
    ভালো লক্ষণ ।
  • ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিপন্ন অর্থনীতিকে বাঁচিয়েছিলেন তার ফলটি আজ সেই বৃক্ষে দোদুল্যমান | 173.49.***.*** | ১২ মার্চ ২০২৩ ১০:১৫517295
  • এই ব্যাপারটা একটু কষ্টকল্পনা হয়ে যাচ্ছে না, যেখানে ডড-ফ্রাঙ্ক ("সকল ব্যাঙ্ক এবং সেখানে আপনার টাকা একেবারে সুরক্ষিত") রিপিল করা হয়েছে? এস এফ ব্যাঙ্ক বিগত দু তিন বছরে অ্যাসেট দ্বিগুন করেছে, অথচ ফেডারেল রিজার্ভের নজরে আসেনি এই অ্যাসেটের কোয়ালিটি! ডোনাল্ড ট্রাম্প জেদ করে কম সুদ রেখে দেন, কোভিডকাল ইজি মানি বাজারে আনতে বাধ্য করে - এ সব মেনে নিলেও ফেডের এই নজরদারীর গাফিলতিকেই কি প্রকৃত দায়ী করা যায় না? 
  • এস এফ ব্যাঙ্ক | 173.49.***.*** | ১২ মার্চ ২০২৩ ১০:১৬517296
  • এস ভি ব্যাঙ্ক হবে 
  • হীরেন সিংহরায় | ১২ মার্চ ২০২৩ ১০:৪৬517298
  • অবশ্যই যায়! সেটাই তো আমার মূল গান!  পরের পর্বে এই নিয়ে লিখব।  
  • dc | 2401:4900:1f2b:c113:a55d:8126:f872:***:*** | ১২ মার্চ ২০২৩ ১০:৫১517299
  • সামনের হপ্তায় আরও কয়েকটা ব্যাংক রান হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কন্ট্যাজিয়ন এফেক্টে কটা কোম্পানি ধ্বসে যায় সেও দেখার। 
  • হীরেন সিংহরায় | ১২ মার্চ ২০২৩ ১১:০৩517301
  • ঠিক। আগের দিন সিলভারগেট ব্যাংকের রূপোলী দরোজা বন্ধ হয়েছে। স্যাম ব্যাংকম্যান ফ্রিড কাহিনির সংগে সেটা দিব্য জুডে যায়। তবে সিলিকন ভ্যালি আকারে বডো এবং তার ইমপ্যাকট হয়তো বেশি হবে। ওমাহার সন্ত আজ সকালবেলা মৃদু হাসবেন- বলি নি বাছারা? ক্রিপটোর দিকে যাস নি ? 
  • dc | 2401:4900:1f2b:c113:a55d:8126:f872:***:*** | ১২ মার্চ ২০২৩ ১১:১৬517302
  • ওমাহার দুই সন্ত :-)
  • Amit | 121.2.***.*** | ১২ মার্চ ২০২৩ ১৫:০৩517313
  • এর মধ্যে এসভি ব্যাংক কেনার জন্যে আবার এলন মাস্ক বাজারে গুজব নামিয়ে দিয়েছে। ক্যায়োস যেভাবে যেদিকে বাড়ানো যায়। দেয়ার ইস সাম মেথডস ইন হিস্ ম্যাডনেস। 
  • dc | 2401:4900:1f2b:c113:a55d:8126:f872:***:*** | ১২ মার্চ ২০২৩ ১৬:২৮517316
  • সোমবার কি ডাও জোনস আরও পাঁচশো পয়েন্ট পড়বে? হাতে মোটে আর একটা দিন, দেখা যাক কি হয়। টাইম বম্ব মে টাইম বহোত কম হ্যায়। 
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ মার্চ ২০২৩ ০০:৪৪517339
  • সময় সুযোগ পেলে পড়ুন সেপারেটিং ফুলস ফ্রম দেয়ার মানি - স্কট ম্যাকডোনাল্ড 
    কাল তারা ডাউ জোন্স ফুটসি ড্যাক্স মিব কাক কারঁ আলো করবে ! 
  • যদুবাবু | ১৩ মার্চ ২০২৩ ০৪:৩০517344
  • এক্ষুণি খবরে দেখলামঃ https://www.federalreserve.gov/newsevents/pressreleases/monetary20230312b.htm

    ("No losses associated with the resolution of Silicon Valley Bank will be borne by the taxpayer." ... "Finally, the Federal Reserve Board on Sunday announced it will make available additional funding to eligible depository institutions to help assure banks have the ability to meet the needs of all their depositors.") 

    এক্ষুণি এক সিনিয়র দাদা বলছিলো যে ওদের কোম্পানিই এসভিবির ক্লায়েন্ট ছিলো, তো সে এই কাল, সোমবার অব্দি চাকরি থাকবে কি না নিশ্চিত ছিলো না। তাকে কী যে বলবো বুঝলাম না। এতো নিস্ফল আক্রোশ হয় এসব দেখে শুনে যে বলার কথা নয়। এক ভদ্রলোক টুইটারে যথার্থই বলেছেন, "You can’t privatize the profit and socialize the losses." 

    আরও বেশি রাগ এই জন্য যে কোপটা তো কেষ্টুবিষ্টুদের ঘাড়ে পড়ে না।  

    আমার সেই ২০০৮ সালের কথা মনে পড়ছে। আমি তখন বার্কলেজ ব্যাঙ্কে কাজ করি, ক্রেডিট রিস্ক, মুম্বই, সিজে হাউস এর ছ'তলায় আপিস। থাকি শহরের পুরো অন্যপ্রান্তে গোরেগাঁও, বন্ধুদের সাথে। একদিন সকালে উঠে জামা-জুতো গলাতে গলাতে হঠাৎ দেখি এক বন্ধু ফোন ধরে ধপ করে চেয়ারে বসে পড়লো, মুখ রক্তশূন্য। জানলাম লেম্যান দেউলে হয়ে গেছে।সে ছেলেটি পরে অন্য চাকরি পেয়ে যায়, এখন খুবই সফল, কিন্তু সেই বছর একদম ফ্রন্ট সীট থেকে যা দেখেছি, শুনেছি ... ব্যাঙ্কিং এর উপরেই আর আস্থা করতে পারি না। 
  • Amit | 121.2.***.*** | ১৩ মার্চ ২০২৩ ০৪:৫০517345
  • আরো যেটা ভয় লাগে দেখে এরকম মাল্টিবিলিওন ডলারের এনটিটি এরকম তাসের ঘরের মত দুদিনের মধ্যে ভেঙে পড়া। পুরো বিজনেস টাই যেন বাবল এর দাঁড়িয়ে। 
  • Amit | 121.2.***.*** | ১৩ মার্চ ২০২৩ ০৯:০৪517348
  • এসভির পর এবার সিগনেচার ব্যাঙ্ক  লাটে উঠলো। রিসেশন কি দুয়ারে আসিতেছে ?
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ মার্চ ২০২৩ ১৩:৩৮517354
  • যদু বাবু 

    যথার্থ! লাভ আমার, লোকসান জনগণ ভাগ করে নিক! অসাধারণ যুক্তি! আজ সকালের খবর অনুযায়ী এসভিবি-কে বাঁচানো হবে যদিও জ্যানেট ইলেন কাল রাতে তেমন কোন প্রতিশ্রুতি দেন নি।

    আপনার বন্ধুর যন্ত্রণা লেমান মোমেন্ট সম্পূর্ণ অনুধাবন করি। আমি তার ভুক্তভোগী। ১৯৮২ সালের জুলাই মাসে সে যাবত বৃহত্তম আমেরিকান দেউলে ব্যাঙ্কের (কনটিনেনটাল ইলিনয় – ৪০ বিলিয়ন তার অ্যাসেট) কর্মী ছিলাম। তখন সবে বিয়ে হয়েছে! শ্রী বেরনানকে বেল আউট নামক উদ্ধার পদ্ধতি তখনও লিখে ওঠেন নি কিন্তু এই ব্যাঙ্ককে বাঁচানো হয়েছিল সরকারি প্রচেষ্টায়। পরের দু বছর ব্যাঙ্ক চলল খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে - কারো কাজ যায় নি তবে বোনাসও জোটে নি! শেষ অবধি ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকা কিনে নিল – এক হিসেবে ২০০৮ সালের ঘটনাবলির স্লো মোশন মুভি।

    চল্লিশ বছর আগে পাঁচ পারসেন্টের কম আমেরিকান গ্র্যাজুয়েট ব্যাঙ্কে ঢুকত,  তিরিশ হাজার ডলার বা কুড়ি হাজার পাউনড বছরের মাইনে!

    ওয়াল স্ট্রিট (এক) ছবির শেষ সিকুয়েন্স মনে করুন - মারটিন শিন তার ছেলেকে কোর্ট হাউসে নামাতে এসেছে, জানে তার সাজা হবে। ছেলেকে বলল, “বাবা, যখন ছাড়া পাবে ফিরে এসে এমন কাজ করো যেখানে কিছু বানানো হয়, বন্ড বিক্রি নয়’’। আজ সেটি সংক্রামক ব্যাধি -
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ মার্চ ২০২৩ ১৩:৪৪517355
  • অমিত 
     
    ছোঁয়াচ আপাতত টেক সেক্টরে। ইউকের ৩০% স্টার্ট আপ তাদের কর্মচারীদের এ মাসের মাইনে দিতে পারবে না। আমাদের মুনি ঋষি অবধি চিন্তিত - হমে দেখনা হ্যায়। পরশু বাজেট! 
     
    বল মা তারা দাঁড়াই কোথা?
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ মার্চ ২০২৩ ১৪:০৫517356
  • এইচ এস বি সি  লন্ডনের এসভিবি ব্যাঙ্ক এক পাউনডে কিনে নিলো আজ সকালে ( আই এন জি যেমন বেয়ারিং ব্রাদারস কেনে ১৯৯৪ সালে)। সরকার খুশি। সামনে বাজেট এবং ভোট আসছে ....
  • dc | 2401:4900:1f2b:75c3:fd0b:cdaa:cf3e:***:*** | ১৩ মার্চ ২০২৩ ১৯:৪১517361
  • সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক আর সিগনেচার ব্যাংক পটোল তুলেছে, ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকও গেল বলে। কন্ট্যাজিয়ন এফেক্ট ঠেকানোর জন্য আমেরিকার সরকার ঘোষনা করেছে যে প্রথম দুটো ব্যাংকের সব ডিপোজিটরের পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে (শুধু আড়াই লাখ ডলার না, পুরো ডিপোজিট) আর এই বেইল আউটের টাকা আসবে ফেডারাল ফান্ড থেকে, ট্যাক্সপেয়ারের টাকার থেকে না। আর বাইডেনও বারবার ঘোষনা করছেন কেউ যেন প্যানিক না করে, সবাই যেন শান্ত হয়ে নিজের নিজের জায়গায় বসে থাকে। কিন্তু মুশকিল হলো, সরকার যতো বলবে শান্ত হতে পাবলিক ততো বেশী করে প্যানিক করবে। 
     
    আরেকটা কথা হলো, দুটো ব্যাংক নয় সরকার বাঁচালো, কিন্তু সিস্টেমিক রিস্কের কি হবে? বহু ব্যাংক আর বড়ো কোম্পানি মিউনিসিপাল বা সরকারি বন্ডে ইনভেস্ট করেছিল যখন সুদের হার ছিল ০ থেকে ১ পার্সেন্ট। এখন সুদের হার তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠে গেছে ৫ থেকে ৬ পার্সেন্টে, ফলে বন্ড য়িল্ডও গেছে পড়ে। ফলে কোম্পানিগুলো এখন বন্ড সেল করতে গেলে অনেকটা লস বুক করতে হবে। সেল যদি নাও করে তো মার্জিন কল হলেও কোম্পানি উঠে যাবার যোগাড় হবে। 
     
    কাজেই দেখা যাক কন্ট্যাজিয়ন এফেক্ট কতোদূর ঠেকানো যায়। টাইম বম্ব মে টাইম বহুত কম হ্যায় ভাই। 
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ১৩ মার্চ ২০২৩ ১৯:৫১517362
  • কোন গল্প কোথায় যে শুরু হয় আর কোনদিকে যে গড়িয়ে যায়! 
    আজ সকালে এন ওয়াই টির প্রতিবেদন -
    এসভিবি সংকটে মার খাবে পরিবেশ রক্ষা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন উদ্যোগ।
    আজ বাইডেন-এর ঘোষণা আসতে চলেছে আলাস্কায় তেল তুলবার অনুমতি জানিয়ে - পরিবেশবাদী এবং স্থানীয়দের আপত্তি সত্ত্বেও।
    কোন পৌষে যে কার হাসি ফোটে! অবশ্য আদার খোসার গন্ধে জীবন কাটানো আমরা আর জাহজের খবরে করবই বা কি! 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন