এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  অর্থনীতি

  • নিতুই নব পর্ব ৩ 

    হীরেন সিংহরায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | অর্থনীতি | ১৯ মার্চ ২০২৩ | ১৩৮৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • নিতুই নব: পর্ব ৩
     
    ক্রেদি সুইসের সেকাল  
     
    দুর্গম গিরি
     
    আমাদের কনফারেনস অনুষ্ঠিত হবে জুরিখ* বিমান বন্দর থেকে প্রায় দেড়শ কিলো মিটার দূরে , দু হাজার মিটার উঁচুতে অবস্থিত সাঙ্কট মরিতসে।  গাড়ি নয় ট্রেনে যাওয়া । চার ঘণ্টার ট্রেন সফর –মাঝপথে কুর স্টেশনে ট্রেন বদল করতে হয় ।  কনফারেন্সে যাবার পথে জানুয়ারি মাসের আধো অন্ধকার সকালে কুর স্টেশন থেকে বরফে ঢাকা উন্নত পর্বত মালার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ভেবেছিলাম - দু হাজার বছর আগে হানিবাল পনের হাজার ঘোড়া , সাঁইত্রিশটি  হাতি নিয়ে পেরিয়েছিলেন এই দুর্গম গিরি ?  
     
    দুশ বছর আগে সেনাপতিরা এক সম্রাটকে বলেন এ গিরিপথে সামরিক অভিযান অসম্ভব ।  নাপোলেওঁ বলেছিলেন অসম্ভব শব্দটা কেবল মূর্খের অভিধানে পাওয়া যায় ।  
     
    যখন মুম্বাই থেকে একুশ মাইল  দূরের থানা  অবধি ট্রেন চলছে, সুইজারল্যান্ডের দীর্ঘতম রেললাইনটি  ছিল বাসেল থেকে ফরাসি সীমান্ত অবধি , দু  কিলো মিটারের- সে সময় ব্রিটেনে নয় হাজার , জার্মানিতে ছ হাজার , ফ্রান্সে তিন হাজার বেলজিয়ামে তিন হাজার অস্ট্রিয়াতে দেড় হাজার কিলো মিটার রেল লাইন পাতা হয়ে গেছে।  প্যারিস এবং ব্রাসেলস এই দুটি ইউরোপীয় রাজধানীর মধ্যে ট্রেন সংযোগ হয়েছে   ১৮৪৬ সালে।  সম্পূর্ণ অনাবশ্যক একটি ট্রিভিয়া – ইউরোপে এমন দুটি দেশ আছে যেখানে এক দেশের রাজধানী থেকে অন্য রাজধানী রাজধানী আপনি প্লেনে আসতে যেতে পারেন না- প্যারিস থেকে ব্রাসেলসের  অথবা ব্রাসেলস থেকে প্যারিস! আজ এই একশ পঁচাত্তর বছর বাদেও দুই সরকার চান মানুষ ট্রেনে চড়ুক , প্লেনে নয় ! নন স্টপ – দু ঘণ্টা লাগে , আমাদের হিসেবে নয় হাজার টাকা আসা যাওয়ার ভাড়া ।
     
    ১৮৫০ সালের ম্যাপে দেখা গেল  সুইজারল্যান্ডের সকল প্রতিবেশী দেশে  ট্রেন চলছে – সুইস নাগরিক ঘোড়াগাড়িতে আসীন !  এ যেন গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরা ! বারোই সেপ্টেম্বর ১৮৪৮ সালে সুইস কনফেডারেশন স্থাপিত হয়েছে বটে তবে দেশের মানুষের যাতায়াত ও  পরিবহনের গতি বড়োই ঢিমে তালের -  ইউরোপীয় সভ্যতা সুইজারল্যান্ডকে আক্ষরিক অর্থেই পিছে ফেলে যায় ! সরকার ভাবনা চিন্তা করেন,  কিন্তু অর্থের সঙ্কুলান হয় না । অন্য দেশের কাছে হাত পাতা হলো,  ফরাসি ব্যাঙ্ক ক্রেদি মোবিলিয়ে  আগ্রহ দেখায় , ইতিমধ্যে তারা ফ্রান্সের রেল লাইনের উন্নয়নে  প্রচুর অর্থ নিবেশ করেছে । সেটা ভাল মনে করলেন না সুইস সরকার - মালিকানা  বেহাত হয়ে যাবে ।  এদিকে টাকা  নেই অন্য দিকে বাজারটি দখল করে রাখতে চান !
     
    হেনকালে  একজন ব্যবসায়ী ,রাজনীতিক  এবং আইনজ্ঞ মানুষ মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন  – জুরিখের নিকটবর্তী এঙ্গে গ্রামে তাঁর জন্ম, জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়েছেন ( বন ও বার্লিনে কিছু সেমেস্তার সহ ) : তাঁর সকল বিদ্যা বুদ্ধি জানাশুনো এবং  লবির  জোরে সুইস কনফেডারেশনের কাছে আবেদন জানালেন- রেল ব্যবস্থাকে দ্রুত উন্নত  করতে গেলে সে কাজটি দেওয়া হোক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে , ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যা শেখানোর স্কুল খোলা হোক ( যা আজকের ফেডারাল পলিটেকনিক ইনসটিটুট ;  আইদগেনোশিসে টেখনিশে হোখশুলে – ETH)। সে সব না হয় হলো, কিন্তু টাকা ? সে মানুষটি বললেন , ভাবনা করো না, রেল পত্তন এবং বিস্তারের জন্য আমরা একটি ব্যাঙ্ক স্থাপন করব । লাগে টাকা দেবে সে ব্যাঙ্ক ! তিরিশ লক্ষ ফ্রাঙ্কের শেয়ার ছেড়ে তার দশগুণ অর্থ পেলেন – সবাই উন্মুখ । প্রতিষ্ঠা করলেন প্রথম সুইস ব্যাঙ্ক – ১৮৫৬ ।( দু বছর বাদে ইকনমিসট পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার জেমস উইলসনের চার্টার্ড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়া এন্ড চায়না তার প্রথম শাখা খুলবে কলকাতায়, আজকের  এন এস রোডে , দশ বছর বাদে হংকং সাংহাই ব্যাঙ্ক – যথাক্রমে হংকং এবং সাংহাইতে ) ।
     
    একচল্লিশ হাজার বর্গ কিলো মিটারের এই  দেশের রেল নেটওয়ার্ক আজ ৫২০০ কিমি ব্যাপী, ৯৭% শতাংশ লাইনের  বৈদ্যুতিকরন  সুসম্পন্ন । গড়ে একজন সুইস নাগরিক বছরে আড়াই হাজার কিমি ট্রেন সফর করেন বলে জানা যায় । রেলের সময়ানুবর্তিতা বিশ্বের ঈর্ষা জাগায় – ট্রেনের আগমন ও প্রস্থান দেখে আপনি নিজের ঘড়ির  সময় মিলিয়ে নিতে পারেন । প্লেনের চেয়ে ট্রেনের সময়টা সুবিধেজনক দেখে জুরিখ  হাউপটবানহফ থেকে মিলানো চেন্ত্রালের  ট্রেন ধরেছি । এক শহরের চৌরঙ্গী থেকে আরেক শহরের চাঁদনি চক পৌঁছানো যায় তিন ঘণ্টায় এক আরাম কেদারায় বসে – কোন  সময় পার হয়ে যাই দুনিয়ার সবচেয়ে লম্বা ট্রেন টানেল  (১৮৮২) – গটহারড , সাতান্ন কিমি তার দৈর্ঘ্য  , বিশ মিনিট লাগে সেই সুড়ঙ্গের  অন্ধকার  থেকে আলোয়  ফিরে আসতে।  যদি এ দেশে আসেন , ট্রেনে চড়েন,  একবার মনে করবেন সেই মানুষটিকে যিনি সুইস রেলওয়ের,  গটহার্ড টানেলের প্রাণ পুরুষ !  
     
    তাঁর নাম আলফ্রেড এশার –  জুরিখের  প্রধান স্টেশনের সামনে  ,  বানহোফপ্লাতসে সুইস রেলের বিনম্র শ্রদ্ধার প্রতীক স্বরূপ তাঁর মূর্তি দেখতে পাবেন –একশ বছরের ওপর সেখানে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন ।
     
    তাঁর ব্যাঙ্কের নাম শোয়াইতজারিশে ক্রেডিটআনস্টালট  – ইংরেজিতে সুইস ব্যাঙ্ক ,  সুইজারল্যান্ডের প্রথম ব্যাঙ্ক।  কোন অজ্ঞাত কারণে বিশ্বে সেটি পরিচিত হলো তার ফরাসি অবতারে
     
    ক্রেদি সুইস
     
    ক্রেদি  সুইসকে যেমন দেখেছি
     
    রেলের ব্যবসা থেকে জীবন শুরু করলেও  , ক্রেদি সুইসের কর্মধারা  আজ নানাবিধ - বাণিজ্যিক ( কমার্শিয়াল ) ব্যাংকিং, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, প্রাইভেট ব্যাংকিং , ট্রেডিং এবং ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং । আজকের ক্রেদি সুইসের সর্বজন বিদিত লোকসান এবং স্ক্যানডালগুলি একান্তভাবেই শেষের দুটোয় নিহিত সে ব্যাপারে বিশদ বর্ণনার আগে আপনাদের ধৈর্য ভিক্ষা করে আমার নিজের অভিজ্ঞতার কথা কিছু বলি ।
     
    আমি যে ক্রেদি সুইসকে চিনেছি সেটি সিটি ব্যাঙ্কের মতন একটি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক- তার কাজ কারবার আপনার আমার মতন মানুষের টাকা জমা ও ধার নেওয়ার সঙ্গে, কর্পোরেটকে ঋণ, পরিষেবা দেওয়ার সঙ্গে।   
     
    জুরিখের পারাদেপ্লাতসে সবচেয়ে বিরাট বাড়িটি ক্রেডিট সুইসের হেড অফিস। এখানে কখনো কোন প্যারেড হয়েছে বলে জানা যায় নি ।  সেখানে পশুর বাজার ছিল । উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি এই নতুন নামকরণ হয়; তার অব্যবহিত কাল বাদে  আলফ্রেড এশার আট নম্বর পারাদেপ্লাতসে(এখন ৭০) ক্রেদি সুইসের হেড অফিসের দ্বার উন্মোচন করেন । বলা হয় বানহোফসস্ত্রাসে ( সুইজারল্যান্ডের ফিফথ এভেনিউ বা অক্সফোরড স্ট্রিট ) সহ এই অঞ্চলটি দেশের সবচেয়ে দামি রিয়াল এস্টেট। প্লাতস বা স্কোয়ারটি ট্রামের গুমটির মতন, নানান দিক থেকে ট্রাম আসে, দিক পরিবর্তন করে  আবার কোনদিকে চলে যায়!  সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে পরিচিত এবং তথায়  বসবাসকারীদের কাছে আগাম ক্ষমা  চেয়ে নিয়ে বলি পারাদেপ্লাতস আমাকে ভীষণভাবে ধর্মতলার ট্রাম গুমটির কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল, সে মত পরিবর্তনের কোন কারণ এখন অবধি দেখি নি।
     
    নয়ের দশকে বিভিন্ন সুইস ব্যাঙ্কের সঙ্গে আমার বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়ে – সিটি ব্যাঙ্ক বিশ্বময় ছড়িয়ে আছে , সুইস ব্যাঙ্কের শাখা প্রশাখা সীমিত । দুনিয়ার  খদ্দেরের ঘরে ঘুরে ঘুরে জোগাড় করা ব্যবসা ( বিশেষ করে ট্রেড ফাইনান্স ) তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে আমাদের বিন্দুমাত্র দ্বিধা ছিল না । এরা কোন আন্তর্জাতিক ঋণে অংশ গ্রহণ করলেও  আমরা জানতাম ক্রেডিট সুইস বা ইউ বি এস কি সুইস ব্যাংকিং কর্পোরেশন জাম্বিয়া বা ফিলিপাইনসে সেই খদ্দেরের দরজায় বেল বাজিয়ে আমাদের অন্যান্য বাণিজ্য  হজম করবে না !  
     
    যেমন ১৯৯৩ সালে  পাকিস্তান স্টেট অয়েল ( পি এস ও ) কোম্পানির জন্য সিটি ব্যাঙ্ক আয়োজিত একটি পাঁচ কোটি ডলারের ঋণে ক্রেডিট সুইস একটি বৃহৎ অংশ নেয় । এর কিছু কাল পরে রেনের ( মুয়েলার )  ফোন এলো – এশিয়া সফরে যাচ্ছেন , পাকিস্তানেও থামবেন । আমি রেনেকে বলেছি তা আপনি পি এস ওর সঙ্গে দেখা করুন না , আমি সব যোগাযোগ  করিয়ে দিচ্ছি । অবাক হয়ে রেনে আমাকে বলেন আপনাদের মক্কেলের ঘরে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছেন ? আমি বলেছিলাম, দেখুন যতদিন অবধি পি এস ওর লোন শোধ না হচ্ছে ততদিন তো আপনারা তাদেরও ব্যাংকার ।  আমি জানি ক্রেডিট সুইস সেখানে পি এস ওর ক্যাশ ক্রেডিট  অ্যাকাউনট খুলতে যাবে না !
     
    পরের বছর (১৯৯৪)  আমরা শুধু হাঙ্গেরি নয়,  পূর্ব ইউরোপের কোন ব্যাঙ্কের জন্য প্রথম সমবেতভাবে (সিনডিকেটেড ) একটি  আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক ঋণের আয়োজন করি – ঋণ গ্রহীতার নাম  বুদাপেস্ট বাঙ্ক।  এটি একটি দুঃসাহসী পদক্ষেপ – কমিউনিস্ট আমলে প্রায় দেউলে হয়ে যাওয়া এই ব্যাঙ্কের জন্য আমরা তিন বছরের টাকা জোগাড় করেছি  ( পূর্ব ইউরোপের ডায়েরিতে হাঙ্গেরি পর্বে এর বিস্তারিত বিবরণ থাকবে)। এর আগে পোল্যান্ডের আরেক দেউলে শিপ ইয়ার্ডের জন্য ঋণ জোগাড় করে সাহস বেড়েছিল -তবে মাঠে নেমে দেখলাম কাজটা সহজ নয়।  নব উন্মুক্ত পূর্ব ইউরোপের বাজারে  ক্রেদি সুইসের একটা অন্য অ্যাংগল থাকতে পারে, তাছাড়া এটা জাম্বিয়া নয়, হাঙ্গেরি জুরিখ থেকে এক ঘণ্টার ফ্লাইট ! সাত পাঁচ ভেবে পারাদেপ্লাতসের অফিসে ধরনা দিয়ে একটা ভাল রকম সংখ্যা জোটে ক্রেডি সুইসের কাছ থেকে **।  
     
    সে আমলে এশিয়া এবং ল্যাটিন আমেরিকায় আমাদের স্বল্প মেয়াদি ট্রেড ফাইনান্সের বিশাল ব্যবসা – নিউ ইয়র্ক বাদে কোথাও ক্রেডিট সুইসের  কোনো অফিস নেই – ডজন ডজন সুইস ব্যাংকাররা  কমার্শিয়াল ধান্দার সন্ধানে সান পাউলো থেকে বুয়েনোস আইরেস ছোটা ছুটি করেন না।  সিটি সেখানে  রাজা ।  আমাদের রিও ব্রাঞ্চের হাইমে বুলকাও , সান্তিয়াগো চিলি অফিসের এভা লামাস পাঠায় দিস্তে দিস্তে লেটার অফ ক্রেডিট ,  বিল অফ এক্সচেঞ্জ ।  ক্রেদি সুইস তা শুধু কেনেন না, পারদেপ্লাতসের অফিসে দারুণ আপ্যায়নও  করেন।  
     
    একদিন ডাইনিং রুমের জানলা দিয়ে চোখে পড়ল ঠিক উলটো দিকে লিনৎ উনড  স্প্রুংলির পেল্লায় দোকান । লিনতের   নাম শুনেছি , এয়ারপোর্টে বিক্রি হতে দেখেছি ( ইংল্যান্ডে তেমন চলতি ছিল না ) তবে সামনের দোকানটি যেন একেবারে ইস্পেসাল !  রেনে এবং তাঁর সহকারী ভিক্টোরিয়া ( পলিন্সকি )  বললেন , ওখানে চক্কর কাটেন নি এখনো ? সুইস ব্যাল্যান্স অফ পেমেন্টের উন্নয়নের জন্যে না হোক আপনার ছেলে মেয়েদের কথা ভাবুন ।  লিনৎ  উনড স্প্রুংলির চকোলেটের বাক্স নিয়ে বাড়ি ফিরলে তাদের কাছে আপনি একেবারে হিরো হয়ে  যাবেন।

     
    কথায় বলে বিজনেস এন্ড প্লেজার । পারাদেপ্লাতসে আমার বাণিজ্যের ঠিকানা ছিল দুটো – ক্রেদি সুইস আর  তার ঠিক কোনাকুনি ইউ বি এস ।  আমার ছেলে মেয়েদের প্লেজারের ঠিকানা কনফিসেরি স্প্রুংলি , বানহোফস্ত্রাসে ২১!
     
    পরবর্তীকালে ক্রেদি সুইসের সর্বনাশের অন্তত দুটো ঠিকানা জেনেছি ব্যক্তিগত ভাবে । আইন বাঁচিয়ে তার গল্প পরের সংখ্যায়।  
     
     
    ক্রমশ:
     
    *      আমার গুরু মরহুম আলি সায়েব বলেছেন ওটা ৎসুরিশ হবে তবু বাঙালির কানে পরিচিত ‘জুরিখ’
    লিখি ।  তিনি আমাকে ওপার থেকে ক্ষমা করবেন ।
    **    দ্রষ্টব্য : Syndicated Lending: A Handbook for Borrowers in Emerging Markets
           Euromoney Books 1997
     
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৯ মার্চ ২০২৩ | ১৩৮৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ১৯ মার্চ ২০২৩ ০৬:৩৮517563
  • যেমন দেখেছি থেকে যেমন দেখছি-তে আসার গল্প আসছে কি পরের পর্বে? 
  • Kishore Ghosal | ১৯ মার্চ ২০২৩ ২০:২২517609
  • রেললাইন পাতার জন্যে সুইস ব্যাংকের সূত্রপাত - বেশ আশ্চর্য ঘটনা।  এখন সেই ব্যাংকই কি বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় ব্যাংক - সেখান থেকেই কি আমাদের দেশের সক্কলের অ্যাকাউন্টে পনের লাখ টাকা  করে ঢোকার কথা ছিল? 
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০০:৩১517619
  • ubs নিয়ে নিল cs কে।
  • হীরেন সিংহরায় | ২০ মার্চ ২০২৩ ০০:৪৭517621
  • যোষিতা 
     
    ইউরোপে যখন কাজ শুরু করি পাঁচটা বিশাল সুইস ব্যাংক - বাঙ্ক ফেরাইন বাঙ্কগেজেলশাফট ক্রেদি সুইস ফোলকসবাঙ্ক জুরিখার কান্টনাল । একটা ব্যাঙ্কেরও ব্রাঞ্চ ছিল না ফ্রাঙ্কফুর্টে । আমরা ত্রস্ত হয়ে থাকতাম এদের নাম শুনে । আজ সবই ধূলায় হয়েছে ধূলি ( জুরিখার কান্টনাল বেঁচে আছে - বেশি কেরামতি দেখাতে যায় নি বলে হয়তো ) । এক জীবনে কত দেখে গেলাম 
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০০:৫৩517622
  • বড়কর্তাদের খামখেয়ালির দাম দেবে এমপ্লয়িরা। সুইস এয়ারের ক্ষেত্রেও এরকম হয়েছিল। শেইম শেইম।
    UBS এ আমি এককালে ছিলাম UBS Warburg. এবং প্রাইভেট ব্যাংকিং এ।
     
  • হীরেন সিংহরায় | ২০ মার্চ ২০২৩ ০০:৫৫517623
  • কিশোর 
     
    শুধু কাগজে ট্রেডিং নয়, সত্যিকারের কিছু করবার সাধু উদ্দেশ্য নিয়ে ক্রেদি সুইসের জন্ম।  আলফ্রেড এশারের শুধু স্ট্যাচু নয় তার রেললাইন  সারা দেশে ছড়ানো আছে । এই ব্যাঙ্কের বন্ড ট্রেডার, ডেরিভেটিভঁ সেলসম্যানকে কেউ মনে রাখবে না । ক্রেদি সুইসের বৃহত্তম আয় বড়োলোকেদের টাকা সামলানো ( ওয়েলথ ম্যানেজমেনট ) - ৩৭% । এই প্রকাণ্ড ওয়েলথ থেকে মাথা পিছু পনেরো লক্ষ ছিনিয়ে আনবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমাদের নেতা ( অবশ্যই অন্য ব্যাঙ্ক থেকেও )। 
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০০:৫৮517624
  • বাঙ্ক ফেরাইন ও বাঙ্কগেজেলশাফট জুড়ে গিয়েই তো ইউবিএস হয়েছিল।
    আমি যখন ইউবিএস ভারবুর্গে ঢুকি ক্রমাগত আপার্থাইড আমলে সাউথ আফ্রিকায় অস্ত্র সার্লাইয়ে জন্য আর্থিক লেনদেনের নথির খোঁজ করে ইমেইল আসত। পুরোটাই আইওয়াশ।
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০০:৫৯517625
  • আলফ্রেড এশারের মূর্তি সরিয়ে নেবার কথা উঠেছিল, এঁর রেসিস্ট পাস্ট আছে।
  • হীরেন সিংহরায় | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:০০517626
  • যোষিতা 
     
    আপনি যখন ওয়ারবুর্গ মার্জার দেখেছেন তাহলে সে সময়ের লন্ডনের একটা কিসসা বলি। আমাদের একজন ফোন করেছে আপনাদের ব্যাঙ্কে, অন্য দিকের কণ্ঠ বললে,  Hallo, UBS Warburg Dillon Read here আমাদের ছেলেটি থতমত খেয়ে বলেছে , গুড মর্নিং রিড। মে আই স্পিক টু দি ইউর সেকেন্ডারি লোণ ট্রেডিং ডেস্ক ? 
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:০১517627
  • কাল সকালে দেখতে হবে সুইস মারকেটের কী অবস্থা।
  • হীরেন সিংহরায় | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:০৪517628
  • ব্যাঙ্কের ভল্টে  নাম্বারড একাউন্টের কাগজ পোড়ানোর গল্প আপনার নিশ্চয় মনে আছে। যে বেচারি গার্ড এটা আবিষ্কার করে তাকেই দেশদ্রোহী আখ্যা দেওয়া হল । সুইস ব্যাঙ্কিঙ্গে যা দেখেছি  যা শুনেছি তুলনা তার নাই। এবার মনে হচ্ছে নির্ভয়ে কিছু লিখে যেতে পারব - মামলা করার কেউ থাকবে বলে মনে হয় না। ! 
  • হীরেন সিংহরায় | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:০৬517629
  • লন্ডন নিউ ইয়র্ক মিলিয়ে হাজার হাজার দশেকের কাজ গেল ধরে নিন । তবে ২০২২ এর ক্যাশ বোনাসটা অন্তত পকেটস্থ করে যাবে - অপশন গুলো এখন বাজে কাগজের ঝুড়িতে 
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:০৭517630
  • আমাদের এরকমই।
    তখন মিশেলিন কালমি রে ফরেন মিনিস্টার। আমার এক বন্ধু পোর্তুগালের এমব্যাসীতে অ্যাম্বাসাডারের সেক্রেটারি। বস বলেছেন কালমি রে র ফোন কানেক্ট করে দাও।
    মেয়েটি ডায়াল করতেই ফোনের ওপার থেকে নারীকণ্ঠ — কালমি রে।
    মেয়েটা থতমত হয়ে লাইন ট্রান্সফার করে দিয়েছে বসকে।
    এদেশে প্রেসিডেন্ট থেকে মেয়র প্রায় সকলেই সাইকেলে বা বাসে ট্রামে যাতায়াত করেন। আমরা একই দোকান থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে জিনিস কিনি, দাম দিই। কারোই বডিগার্ড নেই। ক্বচিৎ কেউ কেউ গাড়িতে চড়েন।
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:১১517631
  • আমি ভারবুর্গের সঙ্গে মূল ইউবিএসের মার্জার দেখেছি। লন্ডনের গোল্ডেন স্ট্রিট সম্ভবত সেখানে ব্যাংক সেন্টার ছিল।
    ভল্ট বা নাম্বার্ড অ্যাকাউন্টের চক্করে কত য়িহুদির সোনা এখনও বানহফষ্ট্রাস্সের নীচে আছে তার হিসেব অজানা। কারন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে মৃত য়িহুদিদের ডেথ সার্টিফিকেট প্রোডিউস করা যায় নি।
  • হীরেন সিংহরায় | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:২৩517632
  • একেবারে তাই। ১৯৩৬ সালে ইউ বি এসের ব্যাল্যান্স শিটের সাইজ এক বিলিয়ন সি এইচ এফ। যুদ্ধের পরে কতগুণ বেড়েছে সেটা হিসেব  দেখলেই বোঝা যায় - কেবল মৃত ইহুদি নয়, বহু নাৎসির টাকা জমা ছিল ।যারা ঘরে ফেরে নাই তাহাদের টাকা সুইসরা সানন্দে হজম করেছে। 
  • &/ | 151.14.***.*** | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:২৭517633
  • এরা তো দেখা যায়, ডাকাতের উপরে বাটপাড়ি করেছে, গেরস্থের উপরেও বাটপাড়ি করেছে।
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:২৯517634
  • একদম। 
    প্রাইভেট ইনশিওরেন্স বলে একটা জিনিস আছে সেটা নিশ্চয় জানেন। অয়লার হেরমেজ এরকম একটা কোমপানি। প্রাইভেট ব্যাংকিং এর ঠাকুর্দা।
    এইসএসবিসি থেকে বেএনপে পারিবা সকলেই প্রাইভেট ব্যাংকিং করে ঐ বানহফষ্ট্রাশ্সেতে। আরও অসংখ্য ব্যাংক আছে। কিছু পাকিস্তানি ব্যাংকও আছে সম্ভবত হাবিব ব্যাংক, হাবিবসন ব্যাংক। সব ঐ গোত্রের কাজ করে। বাংক ইউলিউস ব্যা আরও কঠিন জিনিস। সব একসে বঢ়কর এক।
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:৩৩517635
  • বাটপাড়ির জন্য তখন সুযোগ ছিল। যুদ্ধে এরা নিউট্রাল হয়ে গেল। য়িহুদিরা এসে টাকা সোনা প্রেশাস স্টোনস রেখে গেল। ফেরার পথে তাদের পাসপোর্টে J স্ট্যান্প লাগিয়ে দেওয়া হতো। সহজেই য়িহুদিরা চিহ্নিত হয়ে নাৎসীদের হাতে ধরা পড়ে মরতে বাধ্য হতো।
    এ নিয়ে বহু আগে বাংলালাইভে লিখতাম মনে নেই?
     
  • যোষিতা | ২০ মার্চ ২০২৩ ০১:৩৭517636
  • বহু নাৎসী টাকা পয়সা নিয়ে লাতিন অ্যামেরিকায় পালিয়েছিল। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পারাগুয়ায়, চিলে, এইসব দেশে।
     
    অন আ সেপারেট নোট, এরা রোমা ৎসিগানদের ওপরেও বহু অত্যাচার করেছে। সত্তরের দশকে অনেক রোমা মেয়েদের বন্ধ্যাকরণ করা হয় জোর করে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন