একজন প্রকাশকের অনুরোধ এসেছিল একটি পাণ্ডুলিপি দেখে যদি কিছু মন্তব্য করি। আমি অবাক। আমাকে কেন ? কারও পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা করব? এ তো পেশাদারি দক্ষতা দাবি করে। এসবের জন্য আমি নিজেকে ঠিক যোগ্য মনে করি না যে!
না না, সম্পাদনা-টনা করতে হবে না। আমার ক্যালি নিয়ে প্রকাশকের কোন ভ্রম নেই। শুধু পড়ে কিছু ফীডব্যাক দিলেই চলবে। এবার আমি রাজি হয়ে যাই। ফোকটে একটা গল্প বা উপন্যাস পড়ে নেব, আর কী চাই? তা’ কত শব্দের লেখা? কোন ফন্টে?
জবাব শুনে আমার উৎসাহের বেলুন চুপসে যায়। কম্পিউটারে লেখা নয়, এই পাণ্ডুলিপিটি ক্যুরিয়ারে ওনার দপ্তরে এসেছে। বড় একটি লাইন টানা খাতায় হাতে লেখা!
আমি খিঁচিয়ে উঠি। পারব না, বয়েস হচ্ছে। আতস কাঁচ দিয়ে পিঁপড়ের সারি অক্ষর দেখে তার রস গ্রহণ করব অমন রসিয়া আমি তো নই।
--পাকামি কোর না। উনি আনন্দ পুরষ্কারপ্রাপ্ত লেখক মিহির সেনগুপ্ত। ওনার ‘বিষাদবৃক্ষ’ বা ‘সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম’ পড়েছ? ওনার ভাই অভিজিৎ সেনের লেখা ‘রহু চন্ডালের হাড়’ পড়েছ? ধুর! কিছু না পড়েই ‘সফরী ফরফরায়তে’?
আমি মিইয়ে যাই। প্রকাশক বোঝান- মিহিরবাবু নিজে তোমার থেকে ফীডব্যাক নিতে রাজি হয়েছেন।
কিন্তু আমি তো ওনাকে চিনি না। কোন পরিচয় হয় নি। তাহলে?
শোন, ওনার রয়েছে তিন ‘ব’। এটার মানে নিশ্চয়ই জানা আছে?
-হ্যাঁ, বাঙাল-বদ্যি-বরিশাল। অ, উনি বরিশালের? তপন রায়চৌধুরির মত?
--তপনবাবুর সংগে ওনার হৃদ্যতার সম্পর্ক। সেসব পরে হবে। সাতদিন পরে আমার দপ্তরে এসে পাণ্ডুলিপিটা নিয়ে যেও। পনেরদিনের মধ্যে পড়ে পাঠ-প্রতিক্রিয়া লিখে পাঠাবে।
--কিন্তু ওই হাতে-লেখা-খুদে-পিঁপড়ের সারি?
--ফের বাজে কথা! উনি বড় বড় অক্ষরে ডাবল স্পেস দিয়ে লেখেন। সুন্দর হাতের লেখা। আরে আনন্দ পাবলিশার্স ওনার হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি পড়ে ফেলে আর তোমার যত ন্যাকামি! আর তোমাকে বেছে নেওয়ার কারণ হোল তুমি ব্যাংকে চাকরি করেছ। উনিও তাই। তুমি ব্যাংকের ইউনিয়নবাজির সংগে যুক্ত ছিলে। উনিও তাই। তোমার একসময় অতিবাম রাজনীতির সংগে কিঞ্চিৎ দলাই মলাই ছিল।
-উনিও তাই? আমি ফোনে প্রায় চেঁচিয়ে উঠি।
--ঠিক ধরেছ, এবার বুঝলে -কেন তুমি? ও হ্যাঁ, আরেকটা ফ্যাক্টর। গুরুচণ্ডা৯তে ধারাবাহিক বেরিয়ে গাঙচিল থেকে প্রকাশিত তোমার ‘বাঙাল জীবনের চালচিত্র’ উনি পড়েছেন। খুশি হয়েছেন। ওনার লেখার মূল থিম হল-দেশভাগ। এ’নিয়ে উনি ঋত্বিক ঘটকের মতই অবসেসড্।
আমি ছোটকার বাড়ি গিয়ে বলি –তোমার কাছে বিষাদবৃক্ষ আছে? পড়তে চাই।
--চমৎকার লেখা, নিয়ে যা। সংগে পরের বইটাও নে—‘সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম’।
আমি দুটোই বগলদাবা করি এবং ঘরে ফিরে বুঁদ হয়ে পড়তে থাকি।
ধীরে ধীরে ফুটে ওঠে এক শতাব্দী আগের একটি সম্পন্ন হিন্দু পরিবারের গল্প। ইংরেজি জানার সুবাদে সেই সময়ে চাণক্য-বুদ্ধির মিহিরের জ্যাঠ্যামশায় কীভাবে স্কুল পরিচালনা মিউনিসপ্যালিটি, সবেতেই নিজের ক্ষমতা কায়েম করেছিলেন তার এক নির্মম নিরপেক্ষ বর্ণনা। তার পাশাপাশি দেখতে পাই মুসলমান প্রজাদের। কৃষক পরিবার ও এক জেদি কিশোর মিহিরকে। দেশভাগের পটভূমিতে লেখা আর দশটা বাজারচলতি লেখাগুলোর থেকে কত আলাদা! এই লেখায় টের পাই কেন দেশভাগ অমন রক্তক্ষয়ী হয়েছিল।
এরপর ‘সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম’ পড়ে হতবাক হই। এই ভদ্রলোক আমার চেয়ে মাত্তর দু’বছরের বড়। কিন্তু এঁর জাত আলাদা। ইনি আমার মত কলকাত্তাই বাঙাল ন’ন। এর বুকের মধ্যে ছলছল জলেশ্বরী ঢেউ তোলে। তার টানে উনি ফিরে যান দুর্গাপূজোর সময় নদীর তীরে পিতৃপুরুষের ভিটেয়, একবার নয়—নিয়ম করে ছ’টি বছর।– ৮০ -৯০ দশকে। সেখানে সারারাত পালা দেখেন, খেয়াল করেন পুজোয় টিন কম পড়লে মসজিদ কমিটির অল্পবয়েসি সেক্রেটারি সেখান থেকে যোগান দেয়। হ্যাঁ, দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়েছে। পুতুলপুজোয় মসজিদের টিন! গোঁড়াদের চক্ষে ব্লাসফেমির নামান্তর। ধমক ভয় দেখানো সব ছাড়িয়ে বিজয়ী হয় ভালবাসা।
যথাসময়ে পাণ্ডুলিপিটি পড়ে ফেলি। সেখানেও সাদা-কালো মানুষ নয়। ডালহৌসীতে সরকারি ব্যাংকের রাশভারি বিলেত ফেরত বড়কর্তাটি বইপাগল। মাঝে মাঝে আগুনখেকো উঠতি ইউনিয়ন কর্মী মিহিরকে ডেকে পাঠান নিজের চেম্বারে। শাসন করতে নয়, বই নিয়ে আলোচনা করতে। সে’তালিকায় ঢুকে পড়ে মাওয়ের দার্শনিক রচনাও।
সত্তরের দশকে রাস্তার থেকে সি আরপি তুলে নেয় এক সহকর্মীকে। সরকারি ইউনিয়ন এবং কর্তৃপক্ষ আইনের অজুহাতে এনিয়ে কোন পদক্ষেপ করতে অস্বীকার করেন। খ্যাপা মিহির ব্যাংকে কাজ বন্ধ করিয়ে জনাকয়েক সঙ্গীকে নিয়ে সেই বড়সাহেবের চেম্বারে ঢুকে তাঁকে আটকে রাখেন। দাবি—অফিস যাওয়ার পথে ধরা পড়া ব্যাংক কর্মচারির বিনা ওয়ারেন্টে সিআরপি তুলে নিয়ে গেছে। ব্যাংক তার নৈতিক দায়িত্ব এড়াতে পারেনা। কিছু করুক, লালবাজারে এবং লর্ড সিনহায় ফোন করুক। নইলে ঘেরাও চলবে।
আলোচনার পর রাস্তা বাতলে দিলেন সেই বড় সাহেব। ব্যাংক হেবিয়াস কর্পাস করবে এবং তার আগে পুলিশের উচ্চস্তরে খোঁজ করবে। মিহির অটল। আগে ছেলেটি ব্যাংকে ফিরে আসুক, তবে ঘেরাও উঠবে। তাই হোল, ছেলেটি রাস্তায় পড়ে থাকা অনামা মৃতদেহ হওয়ার দুর্ভাগ্য থেকে রেহাই পেল।
খবর এল, আমি সসংকোচে যে ক’টি পরিবর্তন সাজেস্ট করেছিলাম সবক’টি ওনার যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। উনি অসুস্থ, আমাকে দেখা করতে বলেছেন। যেতে হবে ভদ্রেশ্বরে।
গুরুর নীপা কবি বিকাশ গণচৌধুরিকে অনুরোধ করায় ও সংগে সংগে রাজি। যেদিন স্টেশনে নামলাম তার আগের দিন ওখানে জনৈক ট্রেড ইউনিয়ন নেতার মৃত্যু হয়েছে। রাজনৈতিক হত্যা। অটোচালক বলে সন্ধ্যের আগে ফিরে আসবেন। আমরা রাস্তার থেকে গাড়ি তুলে নেব।
একটি সরকারি স্কুলের সামনে স্টপেজ। তারপর খানিকটা হন্টন। মাঝে মাঝেই ফোন করি –ল্যান্ডমার্ক বলি, হারিয়ে যাচ্ছি নাতো! চশমা চোখে অসুস্থ মানুষটি দাঁড়িয়ে আছেন রাস্তার উপরে। লজ্জা পাই।
তারপর কথা আর কথা, গল্প আর গল্প। খাওয়া আর খাওয়া। ভাজাভুজি এড়ানোর চেষ্টা করি। মিষ্টি দেখে নিজেকে সামলাতে পারি না।
ঐতিহাসিক বরিশালিয়া তপন রায়চৌধুরির কথা তোলায় মিহির আবেগে ফেটে পড়েন।
--অনেক বড় মাপের মানুষ, বুঝলে? ওনার ‘রোমন্থন অথবা ভীমরতিপ্রাপ্তর পরচরিত চর্চা’ পড়ে কয়েকটা বরিশালি ভুল চোখে পড়ল। বয়েস কম ছিল, সোজা অক্সফোর্ডে চিঠি লিখলাম। কি আশ্চর্য? অল্পদিনের মধ্যেই উত্তর এল। সবিনয়ে সবকটি কথা মেনে নিয়েছেন। অতবড় পণ্ডিত মানুষ। কিন্তু অহংকার নেই। কোলকাতায় আসলে খবর দিতেন। তারপর আমরা- দুই অসমবয়েসি বরিহালিয়া --ডায়লেক্টে আড্ডা দিতাম।
আমাদের দুজনকে অটো হরতালের আগে বেরিয়ে পড়তে হবে। উঠতে ইচ্ছে করছিল না। বললেন—যখন কোলকাতায় ছিলাম তখন কেন পরিচয় হয়নি? তাহলে রোজ আড্ডা দিতাম। আমি বলি—“দেখা হইল নারে শ্যাম আমার সেই ‘নত্তুন’ বয়সের কালে”!
হো হো করেহেসে উঠে বলেন—মুজতবা আলীর ছোট বেলায় শোনা কীর্তন? ঠিক বলেছি?
আমি হেসে উঠে সায় দিই।
রাস্তায় নামার পর বলি—আপনাদের পরিবার আগে পার্কসার্কাসের সার্কাস এভিনিউয়ে থাকতেন, বড়দার সংসারে। পরে আপনারা চার নম্বর পুলের কাছে গোবরা কবরখানার পাশে উঠে যান।
উনি চমকে উঠে বললেন—এসব আপনি জানলেন কী করে?
--আপনার সেজদা দিলীপ, ডাকনাম কানু, আমাদের বাড়িতে কাকাদের ব্যাচেলরস ডেন ঘরটায় আড্ডা দিতে আসতেন। প্লেট বাটি বাজিয়ে গান ধরতেন, হৈ হৈ করে জমিয়ে রাখতেন। উনি আমার ছোটকার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। আমাদের নীচের তলার মুন্নাদার সংগে মডার্ন স্কুলে পড়তেন। কিন্তু আপনার আরেক দাদা পারিজাত ছিলেন আমার কাকার সহপাঠী। কাজেই দেখতে পাচ্ছেন—বরিশাল বা বদ্যি না হলেও—
বিকাশ তাড়া দেয়। স্টেশন অনেকটা দূর। শেষ অটো মিস করলে ভুগতে হবে।
ফিরে এলাম উপহার পাওয়া কয়েকটি বই নিয়ে—‘ভাটিপুত্রের বরিশালি গদ্যসংগ্রহ’, ‘ধানসিদ্ধির পরণকথা’ ও ‘বিদুর নিয়ে’। কথা দিলাম নিয়মিত যোগাযোগ রাখব বলে।
কথা রেখেছিলাম, দুজনেই। ফোনে আড্ডা হত। আমি গুরুচণ্ডা৯তে প্রাথমিক খসড়া বেরোনো ‘ছত্তিশগড়ের চালচিত্র’এর পান্ডুলিপি প্রকাশকের দপ্তরে পাঠানোর আগে ওনাকে দিয়ে চেক করিয়ে নিলাম।
খবর পেলাম হার্টের অপারেশন হয়েছে। উনি চেক আপ এবং রিকভারি করিয়ে ভদ্রেশ্বর ফিরলে দেখা করতে গেলাম, স্ত্রীকে সংগে নিয়ে—ওনার আদেশ ছিল।
আড্ডা জমল দুই দম্পতির চা-পান পর্বে।
অকস্মাৎ নীল আকাশে বিদ্যুৎ। কোন প্রকাশক বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় কিছু মহিলার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সংকলন প্রকাশের জন্য সংগ্রহ করছিলেন। এর মধ্যে ওনার স্ত্রীর অভিজ্ঞতাও ছিল। কিন্তু প্রাথমিক পাঠান্তে কারও ফীডব্যাক আসে যে ওতে বালুচ কম্যান্ডারের বদান্যতার কথা বাদ দিতে হবে।
মিহিরবাবুর স্ত্রী আমাকে বললেন—নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা লিখেছি। ফরমাইশে সাদাকে কালো করে মিথ্যে কথা লিখব না। তাতে না ছাপতে হয় না ছাপবে!
আমি একবাক্যে সমর্থন জানালাম। সুখের কথা, সংকলনে ওনার লেখা প্রকাশিত হয় একটুও কাটছাঁট না করে।
মিহিরদা আমাকে দিলেন তাঁর আরও দুটো গ্রন্থ- ‘নিষ্পাদপ অরণ্যে’ এবং ‘যুদ্ধান্তে’। কথায় কথায় জানলাম, নতুন করে মহাভারত পড়ছেন এবং তার কিছু আখ্যান নিয়ে আজকের চোখে কাহিনীর পুনর্নির্মাণ করে লিখছেন।
এতদিন লিখেছেন ব্যক্তিগত স্মৃতি ও অনুভবের আখ্যায়িকা, সেগুলোও কোন উপন্যাসের চেয়ে কম নয় । উনি কোথাও পাত্রপাত্রীর বা স্থানকালের বর্ণনা বদলে দেননি। কিছুই লুকোনোর দরকার বোধ করেননি। ‘কোথাও কোন মিল দেখা গেলে তা কাকতালীয়’ গোছের ক্লিশে হয়ে যাওয়া বাক্যবন্ধে ওনার ছিল ঘোর আপত্তি। একজন নামজাদা প্রকাশককে , ওনার ভাষায়, কলার ধরে শূন্যে তুলে দিয়েছিলেন। কারণ সে ভদ্রলোক টাকাপয়সার ব্যাপারে কথার খেলাপ করে উলটে অস্বীকার করছিলেন।
সেদিন তাঁর মুখে শুনি দীর্ঘ বর্ণনা। কীভাবে তাঁর চোদ্দবছরের শালীকে খানসেনারা তুলে নিয়ে যায়। কারণ, স্থানীয় বাঙালী রাজাকারেরা মেয়েটিকে মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন সাহায্যকারী এবং অন্তর্ঘাতে যুক্ত বলে খবর দিয়েছিল। মিথ্যে অভিযোগ, উদ্দেশ্য অসৎ। কিন্তু মেয়েটি রক্ষা পায় বালুচ ক্যাম্প কম্যান্ডারের জন্যে। সেই কম্যান্ডার রাজাকারদের কথা না শুনে কিশোরীর কথা বিশ্বাস করেছিল এবং তাকে সুরক্ষা দিয়ে মেয়েটির কথামত কাছের এক গাঁয়ে পরিচিতের বাড়িতে নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছিল।
আমি বলি- এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। বিভীষণ তো রাবণের আপন ভাই এবং মাস্টারদা সূর্য সেনকে ধরিয়ে দিয়েছিল নেত্র সেন, যে নাকি ওনার আত্মীয়!
তারপর শুনি- সামান্য কটা টাকা অবলম্বন করে লুঙ্গি পরে মুসলমান সেজে বেআইনি ভাবে সীমান্ত অতিক্রমণের চেষ্টায়, পথে ঠগের হাতে সব টাকা হারিয়েও, সেরেফ জেদের বশে মিহির কীভাবে ইছামতী পেরিয়ে গেলেন। তারপর কপর্দকহীন অবস্থায় বরিশালে নিজের গাঁয়ে পৌঁছে হবু শ্বশুরবাড়ির সংগে আলোচনা করে বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে সরকারি ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে কোলকাতার বাসায় ফিরে এলেন।
কিন্তু এরপরে আমি কোলকাতার বাস তুলে ভিলাই চলে আসায় আর ওনার সংগে মুখোমুখি আড্ডা হয়নি। শেষ বলেছিলেন মাথায় যন্ত্রণা হয়। আর বই পড়তে বা লিখতে উৎসাহ পাচ্ছেন না।
ধীরে ধীরে ফোনে বার্তালাপ কমে গেল। গত সপ্তাহে স্ত্রীর সঙ্গে কথায় কথায় বলছিলাম অনেকদিন মিহিরদার খবর নেওয়া হয়নি। আমিই ফোন করব। কিন্তু এখন বোধহয় ওঁর বিশ্রামের সময়, এখন বোধহয় ওঁর--।
এইসব করতে করতে দুঃসংবাদ দেখলাম গুরুর ভাটপাতায়। অপরাধী মনে হচ্ছে।
আমিও বুড়ো হচ্ছি, দুই বুড়োয় অনেক কথা বলার ছিল। অনেক প্রাইভেট জোকস জমে ছিল যে!