মহম্মদ ইউনুস অর্থনীতিতে নোবেল প্রাইজ পান নি। তিনি অর্থশাস্ত্রের অধ্যাপক। তিনি সেই বিশ্বখ্যাত গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার জনক, যা উন্নয়নশীল দুনিয়ার বহু মানুষের ও বিশেষত মহিলাদের জীবনে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছিল। তবু তাঁকে অর্থশাস্ত্রের সেরা শিরোপাটা দেওয়া যায় নি। ২০০৬ সালে তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। আর্থিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান যতই বড়ো হোক, তাতে কৌলীন্য ছিল না। সুগভীর তত্ত্ব, গাণিতিক জটিলতা, অর্থমিতির (econometrics) মডেলিং- কিছুই তো নেই। সারা পৃথিবীর সেরা অর্থনীতিবিদ হওয়া কি সহজ কথা!
ঠিক এই জায়গাতেই এ বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা একটি বৈপ্লবিক ঘটনা। যে তিনজন এবার সেরার সেরা মনোনীত হয়েছেন, তাঁদের কাজের ক্ষেত্রটি কিন্তু অর্থশাস্ত্রের গজদন্তমিনারের থেকে বেশ দূরে। কারণ তাঁরা গবেষণা করেন কোনো গাণিতিক তত্ত্বের বিমূর্ত ধারণা নিয়ে নয়, বাজার-খেলা-চুক্তি-নিলাম (market, game, contract, auction) ইত্যাদির তাত্ত্বিক নকশা নিয়ে নয়। তাঁরা কাজ করেন তথ্য নিয়ে, পরিসংখ্যান নিয়ে, চারপাশে পাওয়া আর চোখে দেখা পর্যবেক্ষণ নিয়ে। সেইসব বাস্তব ঘটনার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক (correlation) আর কার্যকারণ সম্পর্ক (causation) আলাদা করে বোঝাই এঁদের কাজের মূল কথা। কিছু ঝড় এবারেও উঠেছে। অভিজাতেরা বলছেন, এ তো রাশিবিজ্ঞানকে পুরস্কার দেওয়া হল, অর্থশাস্ত্র তো নয়! তাত্ত্বিক বনাম বাস্তবিক অর্থনীতিচর্চার এই লড়াই বহু পুরোনো। এই লড়াই কৌলীন্যের। এই লড়াই শিক্ষাক্ষেত্রের জাতপাতের।
বিতর্ক আর আলোচনার কেন্দ্রে থাকা এই ত্রয়ীর নাম ডেভিড কার্ড, জশুয়া আনগ্রিস্ট এবং গিডো ইম্বেন্স। পুরস্কারের অর্ধেক কার্ডের এবং অর্ধেক বাকি দুজনের। এঁদের কর্মক্ষেত্র যথাক্রমে ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বার্কলে, এম আই টি এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। একাডেমির বিবৃতিতে বলা হয়েছে এঁদের বিশেষ অবদান যথাক্রমে শ্রম বিষয়ক অর্থনীতি (labour economics) ও কার্যকারণ সম্পর্ক বিশ্লেষণের পদ্ধতিতে (analysis of causal relationships)। তিনজনেই করেন পরিসংখ্যান (data) ভিত্তিক গবেষণা (empirical research)। চারপাশের দৈনন্দিন ঘটনাবলী আসলে একেকটি স্বাভাবিক পরীক্ষা (natural experiment)। তাকে বুঝতে হলে এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হলে তার কারণ ও ফল বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। প্রধানত শ্রমের বাজারে পরিলক্ষিত বিষয় ও তার সম্পর্কিত রাশি ও পরিসংখ্যানগুলি বিশ্লেষণ করা দিয়ে যাত্রা শুরু এই অর্থনীতিবিদদের। এই ধরণের কাজ পরিসংখ্যান নির্ভর ও অভিজ্ঞতাপ্রসূত (empirical)। এই পদ্ধতির ব্যবহার সমাজবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় গবেষণায় প্রভূত সাহায্য করতে পারে। পরিসংখ্যান ভিত্তিক গবেষণার এই স্বীকৃতি তাত্ত্বিক অর্থশাস্ত্রচর্চার দুনিয়ায় একটি বিপ্লব।
কার্যকারণ সম্পর্ক কীভাবে প্রাকৃতিক বা স্বাভাবিক পরীক্ষার ফলাফল ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে তা বুঝতে এই সময়ের কয়েকটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্নের দিকে নজর দেওয়া যাক। শ্রমের বাজারে ন্যূনতম মজুরি বাড়লে কি কর্মসংস্থান কমে যাবে? শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে কি শেষ পর্যন্ত তাদেরই ক্ষতি হয়ে যাবে? ডেভিড কার্ড ও তাঁর সহগবেষক অ্যালেন ক্রুগার ১৯৯২ সালে এই পরীক্ষাটি করেছিলেন নিউ জার্সি ও পেনসিলভানিয়ার রেস্তোঁরায়। প্রথমটিতে ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো হয়েছিল, কিন্তু দ্বিতীয়টিতে নয়। প্রাথমিক অর্থশাস্ত্রের জ্ঞান বলে মজুরি বাড়লে মালিক কম কর্মচারী নিযুক্ত করবেন, শ্রমিকেরা চাকরি খোয়াবে। অথচ বাস্তবে দেখা গিয়েছিল তেমনটি ঘটে নি। মজুরির প্রভাবকে আলাদা করে কার্যকারণ খুঁজতে গিয়ে তাঁরা এমন প্রমাণ পান নি যে ন্যূনতম মজুরি কর্মসংস্থানকে প্রভাবিত করেছে। এই ধরণের আরো বহু বাস্তব অভিজ্ঞতাপ্রসূত কাজ ডেভিড কার্ড পরে করেছেন যা অর্থশাস্ত্রের সাধারণ সূত্রগুলিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করতে পারে।
আরেকটি উদাহরণ ইউরোপের বেকারত্ব। পশ্চিম ইউরোপে ন্যূনতম মজুরি বেশি এবং বেকারত্বও বেশি। অর্থনীতির সূত্র মিলে যাচ্ছে। পারস্পরিক সম্পর্ক যেমনি হোক, এর কার্যকারণ সম্পর্কটি কিন্তু আলাদা। বলা হয়, এদেশের আত্মমর্যাদাসম্পন্ন অনেক মানুষ আজেবাজে কাজ করার পরিবর্তে বেকার থাকা শ্রেয় মনে করেন। সেক্ষেত্রে বেশি ন্যূনতম মজুরি কিন্তু আর বেকারত্বের কারণ রইল না। এটা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
আবার দেখা যেতে পারে মহিলাদের সন্তানধারণ ও শ্রমের যোগানের কার্যকারণ সম্পর্ক। আমেরিকার কোন মা পরপর দুটি এক লিঙ্গের সন্তান জন্মালে হয়তো তৃতীয়বার গর্ভবতী হতে চান। এর কারণ হিসেবে দেখা গেছে যে তাঁরা বৈচিত্র্যের পিয়াসী। আবার এও দেখা গেছে যে, এই মহিলারা শ্রমের বাজারে কম যোগদান করেন। অন্যদিকে ভারতে তৃতীয় সন্তানের জন্মের কারণ ও সেই মায়েদের শ্রমের বাজারে যোগদানের কারণ অবশ্যই আলাদা। দুই ক্ষেত্রেই বেশি সন্তান জন্মালো। কিন্তু শুধু পারস্পরিক সম্পর্ক দেখে এ ক্ষেত্রে কার্যকারণ সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা ঠিক হবে না।
এমনি শতেক প্রশ্ন। অভিবাসী শ্রমিক কি স্থানীয় শ্রমিকদের মজুরি কমিয়ে দিতে পারে? মানুষ যদি একটা সার্বজনীন ন্যূনতম আয় (universal basic income) পায়, তবে কি তারা আর কাজ করতে চাইবে না? শিক্ষা বাধ্যতামূলক হয়ে গেলে কি তা শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ আয়ের ওপর বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে? এইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজতে হবে, কেবল পারস্পরিক সম্পর্ক দিয়ে বোঝা যাবে না।
ডেভিড কার্ডের আরেকটি বিখ্যাত গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৮০ সাল নাগাদ ১,২৫,০০০ কিউবান মানুষ মিয়ামি এসে জাহাজ উত্তোলনের কাজে যোগ দেয় এবং তাদের অনেকে মিয়ামিতে বাস করতে শুরু করে। ফলে এই শ্রমক্ষেত্রে মোট কর্মসংস্থান ৭% বেড়ে যায়। এতে কিন্তু মিয়ামির শ্রমিকদের মজুরি বা চাকরি কোনোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি।
এই ধরনের বহু গবেষণার মধ্যে দিয়ে ডেভিড কার্ড ও তাঁর ছাত্র জশুয়া আনগ্রিস্ট এবং গিডো ইম্বেন্স এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন কার্যকারণ সম্পর্কের দ্বারা সিদ্ধান্তগ্রহণ (causal inference) পদ্ধতিকে। অর্থশাস্ত্রের বিমূর্ত তত্ত্বের জগতে এসেছে এই গবেষণার ধরণ, যেখানে পরিলক্ষিত ঘটনা (observation) আর বিপরীত অর্থকে (counterfactual) পাশাপাশি রেখে বোঝার চেষ্টা করা হয়। এই তুলনামূলক পদ্ধতিতে যুক্তি আছে, সাক্ষ্য আছে আর আছে অর্থনীতির সাধারণ সূত্রের বদলে বাস্তবের সাধারণ জ্ঞানের প্রয়োগ। এইখানেই এই ত্রয়ী অর্থশাস্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে নতুন পথের দিশারী। নোবেল বিজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার ডুফলো এ বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণাকে একটি ‘বিপ্লব’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব ও মডেলের দুনিয়া থেকে বাস্তব অর্থনীতিকে মুক্ত করেছেন এই তিনজন অর্থনীতিবিদ। অর্থশাস্ত্রে যাঁরা পরিসংখ্যান নিয়ে নাড়াচাড়া করেন, যাঁরা অভিজ্ঞতামূলক গবেষণা করেন, তাঁরা এই তিন অর্থনীতিবিদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবেন।
অর্থনীতির ছাত্রমাত্রেই স্বীকার করবেন, আমাদের চিরাচরিত শিক্ষণপদ্ধতি অঙ্ক, তত্ত্ব আর মডেলিং দিয়ে ভরপুর। দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় জানি কীভাবে তা বহু ছাত্রকে অনুৎসাহী করে তোলে। বিমূর্ত তত্ত্ব, ফলিত গণিত আর অর্থমিতির মডেল ক্লাসরুমকে সরিয়ে নিয়ে যায় চেনাজানা জগৎ থেকে বহু দূরে। অঙ্ক আতঙ্ক নয়, কেবল বাস্তবকে বোঝার হাতিয়ার, এই বোধ শিক্ষার্থীকে উৎসাহিত করার জন্য ভীষণ প্রয়োজন। বাস্তবের কার্যকারণ সম্পর্ক বুঝতে পারলে অর্থশাস্ত্রকে একটা ‘ওরে বাবা! কী ভীষণ কঠিন বিষয়’ বলে হয়তো মনে হবে না। আজকে কম্পিউটার প্রযুক্তির যুগে অর্থনৈতিক গবেষণায় বিগ ডাটা ও মেশিন লার্নিং-এর ব্যবহার ব্যাপক। যন্ত্রগণনার সাহায্যে পরিসংখ্যান থেকে কিছু ধরণ (pattern) ও প্রবণতা (trend) পাওয়া যায়। সেই ফলাফলকে কার্যকারণ সম্পর্ক দিয়ে বুঝলে তবেই তো গল্পটা সম্পূর্ণ হবে। অর্থশাস্ত্র সমাজ বিজ্ঞান, মানুষ তার সব আলোচনার কেন্দ্রে। ইতিহাস, দর্শন আর যুক্তির বিন্যাসেই তো তার পরিপূর্ণতা। অঙ্কের ঝোঁকে আর তত্ত্বের ভারে যদি সেই মানবিক মুখটাই হারিয়ে যায়, তবে এই অতি সম্মানিত শাস্ত্রের সার্থকতা নিয়ে প্রশ্ন করা যেতেই পারে।
নয়া ধ্রুপদী অর্থনীতি কি এই শতাব্দীর সমস্যাগুলো সমাধান বাতলে দিতে পারছে? অনুন্নয়ন থেকে অসাম্য, পরিবেশ থেকে দারিদ্র্য, অপুষ্টি থেকে বেকারত্ব, পরিযায়ী শ্রমিক সমস্যা থেকে লিঙ্গ-বৈষম্য, একবিংশ শতাব্দীর অজস্র সমস্যার মোকাবিলা করতে কি পারছে ধনতান্ত্রিক বাজারের ধারণা? ভারতের প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক কৌশিক বসু স্পষ্ট বলেছেন, কারিগরী উন্নতি আর পরিবেশ পরিবর্তনের যুগে অর্থনীতির চিরাচরিত অনেক ধারণাকেই জায়গা ছেড়ে দিতে হবে, অনেক অনুমান আর স্বতঃসিদ্ধ অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। এই কথাটা কোভিড-উত্তর সময়ে সবাই উপলব্ধি করেছেন যে ভবিষ্যতের পূর্বানুমান ব্যাপারটা আর আগের মতো সহজ নেই। পুরোনো পরিসংখ্যান, অভিজ্ঞতা আর অনুমান নিয়েই যে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সে দিন আগত। নয়া ধ্রুপদী বাজার অর্থনীতির তত্ত্ব অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়লে তাত্ত্বিক অর্থনীতিচর্চার ধারাটিকেই বদলাতে হবে। ২০০৯ সালে ইলিনর অস্ট্রম নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন সাধারণ মালিকানার প্রাকৃতিক সম্পদের (commons) সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাতে তাত্ত্বিক বা ফলিত গণিতের ভাগ তেমন ছিল না। অথচ সে প্রশ্নগুলোই বিশ্বব্যাপী পরিবেশ, জলবায়ু আর প্রাকৃতিক সম্পদের এই সংকটের সময়ে অন্যতম মোক্ষম প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। অর্থনীতিবিদদের সময়ের সাথে, পরিবর্তিত চাহিদার সাথে বদলাতে হবে। তাই কার্ড-আনগ্রিস্ট-ইম্বেন্স-এর নোবেলজয়কে পরিবর্তনের দ্যোতক মনে করে স্বাগতম।
এক সাক্ষাৎকারে কার্ড বলেছেন, বর্তমান সময়ে বাস্তব সমস্যা বিস্তর। নতুন তাত্ত্বিক উদ্ভাবনের চেয়ে বোধ হয় সময়কে বোঝাটাই বেশি জরুরি। একটা সময় ছিল যখন প্রচুর তত্ত্বের জন্ম হতো। যেমন আশির দশকে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক থিসিস লেখা হত গেম থিয়োরী নিয়ে। আদতে সেগুলি দিয়েই অর্থশাস্ত্রের এই সম্ভ্রম-যুক্ত শাখাটির জন্ম ও বিস্তার। আজ সে সুযোগ আর প্রয়োজন দুটিই হয়তো কমতি। আর বাড়তি বাস্তব সমাধানের অন্বেষণ। আর সে কাজে অভিজ্ঞতা, সাধারণ জ্ঞান আর রাশি-পরিসংখ্যান মস্ত অবলম্বন।
অর্থশাস্ত্রের দুনিয়ায় গাণিতিক কাঠিন্যের মাত্রা দিয়ে একটা জাতবিচার আছে। তাই পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করার লোকেরা ব্রাত্য। গণিতশাস্ত্র আর পদার্থবিদ্যার বহু ছাত্রই আজকের অর্থনীতিবিদদের মধ্যে প্রথম সারিতে আছেন। কিছুটা তাঁদের কারণেও এই মানবিক শাস্ত্রটি ক্রমাগত গাণিতিক আর বিমূর্ত হয়ে উঠেছে। তাই এবারের নোবেলের খবরে সেই নীচের তলার পরিসংখ্যান-ভিত্তিক গবেষকেরা উৎসাহিত হবেন, এ এক দৃঢ় বিশ্বাস। এ কথা বললেও হয়তো অত্যুক্তি হবে না, যে এই ঘোষণাটি হয়তো মহিলা অর্থনীতিবিদদের জন্যেও সুসংবাদ বয়ে এনেছে। অর্থনীতিতে এ যাবৎ মাত্র দুজন মহিলা নোবেল পেয়েছেন, মোট ৮৪ জনের মধ্যে। অন্য যে কোনো বিষয়ে মহিলাদের নোবেলজয়ের চেয়ে এটি কম। কী কারণে মহিলা অর্থনীতিবিদেরা বিমূর্ত তাত্ত্বিক গবেষণায় সংখ্যালঘু তা বিশ্লেষণ ও বিতর্কসাপেক্ষ। তবে অভিজ্ঞতা ও পরিসংখ্যান ভিত্তিক গবেষণায় যে মহিলাদের বেশি দেখা যায়, তা স্পষ্ট। এটিও অবশ্যই পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কার্যকারণ সম্পর্ক খোঁজার পক্ষে একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। যাই হোক, অর্থশাস্ত্রের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে, পরিসংখ্যানভিত্তিক কাজের গবেষক হিসেবে আমাদের মতো যারপরনাই সাধারণরা এবার উল্লসিত। এই বছরের নোবেল অপাংক্তেয়কে মুক্ত করেছে, ব্রাত্যজনকে সম্মান করেছে, অর্থশাস্ত্রের গোঁড়ামিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। রয়াল সুইডিশ একাডেমিকে এই বছরের স্বেরিগস রিকসব্যাংক পুরস্কার ঘোষণার জন্য আন্তরিক সাধুবাদ।