এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  পুজো ২০১০

  • পুরা ভারতের পশুভাবনা

    দীপ্তেন
    ইস্পেশাল | পুজো ২০১০ | ০১ অক্টোবর ২০১০ | ৭৬৬ বার পঠিত


  • মানে সেই বেদ থেকে মহাভারত পর্যন্ত, মাঝে খান দশেক উপনিষদ ছুঁয়ে, এই হচ্ছে "পুরা ভারতে"র সময়সীমা। তো, তিন ভাগে লিখি। প্রথম পর্ব যেখানে পশু = জন্তু । কোনো প্যাঁচ পয়জার নেই। সেকেন্ড পর্বে লিখি সেই চেনা জন্তুদের কথা যারা বাহন হিসাবে বা অন্য কোনো ভাবে ঠাঁই পেয়েছে দেবলোকে, দেবতাদের বাহন বা স্রেফ দেবতা হিসাবেই। আর থার্ড ক্যাটেগরিতে মিথের পশু, যাদের সত্যিই কোনো অস্তিত্ব নেই, সেই সব ফ্যান্টাসির জীবেদের কথা।

    ১. পশু = জন্তু

    আমাদের মুনি ঋষিরা দুর্দান্ত পর্যবেক্ষক ছিলেন। আর তাঁদের প্রিয় টাইমপাস ছিলো লিস্ট বানানোর। কতো যে উদ্ভট বিষয়ের উপর তেনারা লিস্ট বানিয়েছিলেন,তার ইয়ত্বা নেই। কাকেরা যে এগারো রকম ভাবে উড়ে থাকে সেটি আপনি জানতেন ? (মহাভারত, কর্ণপর্ব)

    শুক্ল:যজুর্বেদে একট জব্বর লিস্ট আছে,(২৪ অধ্যায়),হয়তো দুনিয়ার প্রাচীনতম এইরকম তথ্যসংকলন। মোট ছশো নয়টি পশু( ও পাখীর) কথা লেখা আছে। অনেকগুলির নাম আছে, কিছু চেনা যায়, বেশীর ভাগই চেনা যায় না। অনেক পশুর নাম নেই, শুধু বিবরণ আছে । সেগুলি এতৈ সংক্ষিপ্ত যে চিনবার কোনো সহজ উপায়ও নেই।

    কিছু চেনা পশু, যেমন অশ্ব, শিং হীন গবয়, হনুমান, ছাগল, ভেড়া এসবের উল্লেখ আছে। পাখীর মধ্যে হাঁস, মুরগি, ময়ুর,শকুন,পায়রা। আর কিছু নাম, চেনা খুব কঠিন বা আদৌ সম্ভব নয় যেমন শিশুমার, কুলীপয়, নক্র, মদ্‌গু, লাবক, কৌলিক, গোবাদী, পারুষ্ণ।

    আর কিছু আছে অনামা জীব যাদের খুব ছোট্টো বর্ণনা আছে। কে জানে, একদা কোনো উৎসাহী zoologist নানান তথ্য ঘেঁটে বার করতে পারেন কিনা এদের পরিচয়। "রক্তবর্ণ, ধূম্রবর্ন মিশ্ররক্ত ও কুলসদৃশ পশু' বা "কৃষ্ণবর্ণের ছিদ্র বিশিষ্ট, একপাশে কৃষ্ণ ছিদ্র, সর্বত্র কৃষ্ণছিদ্র বিশিষ্ট পশু', "সাদা কেশ যুক্ত, সমস্ত সাদা কেশ ও মণির বর্ণের মত কেশ বিশিষ্ট পশু', "সামনের পায়ে সাদা বর্ণ বিশিষ্ট , এক পার্শ্বে পায় সাদা বর্ণ, সমস্ত বাহু সাদাবর্ণ বিশিষ্ট পশু',

    কৃষ্ণযজুর্বেদেও অমনি লিস্টি আছে তবে সেটি বেশ ছোটো (৫ম কান্ড,৫ম প্রপাঠক)। কিছু কিছু প্রাচীন নামের বর্তমান সুলুক সন্ধান দিয়েছেন টীকাকারেরা, কিন্তু সেগুলিও খুব পরিষ্কার নয়। যেমন পইংগরাজ পাখী নাকি সমুদ্রের তরঙ্গে বিচরনকারী মহান পক্ষীবিশেষ ,কুষীতক পক্ষী হচ্ছে সমুদ্র কাক, আতী হচ্ছে কুরংগী পাখী আর দর্বিদা হচ্ছে জলপক্ষী। এই টীকায় কিন্তু পাখীগুলিকে চেনা অসম্ভব। শিৎপুট না কি এক মার্জার সদৃশ পশু। কিন্তু এতে করে ন্যাট জিও দেখা প্রজন্ম খুশি হবে না। লিস্টটি শুক্লযজুর্বেদের মতনই, চেনা এবং অচেনা নাম, আর খুব সংক্ষিপ্ত বিবরণের অনামা পশুতে ভর্তি। ঠাঁই পেয়েছে নীল মাছিও। অবশ্যই সিংহ ও বাঘ।

    গৃহপালিত পশু মানে গোরু, মহিষ, ঘোড়া, উট এইসবের উল্লেখ রয়েছে সর্বত্র । উল্লেখ আছে গাধার কথাও। অনেক সময় রথ টানতো এই গাধারা, অশ্বিনীকুমারদের রথও টানতো গাধারা। যদিও ঋগবেদেই (১/১৬২/২১) আবার অশ্বের কাছে প্রার্থনা জানানো হয়েছে যেনো গাধার বদলে অশ্বিনীকুমারদের রথে ঘোড়াই যুতে দেওয়া হয়। ভারতবর্ষে (মনে আর্যাবর্তএ)ভালো জাতের ঘোড়া বিশেষত: যুদ্ধের জন্য ঘোড়া একেবারেই হত না। ভালো জাতের ঘোড়া আসতো কাম্বোজ, গান্ধার, আজান অর্থাৎ মুলত: পশ্চিম আফগানিস্তান থেকে। হয়তো এগুলি ছিলো মালভূমির ঘোড়া। এই ট্র্যাডিশন চলবে মুঘল যুগ পর্যন্ত, বছরে প্রায় ষোলো হাজার রণ অশ্ব আরব আর স্তেপে থেকে আমদানী হতো হিন্দুস্তানে।

    যুদ্ধে তো লাগতৈ এই ঘোড়াকে, আর ধর্মীয় নানান অভিচারে ঘোড়া ছিলো খুব পবিত্র পশু। বহু স্তোত্র আছে ঘোড়া নিয়ে। আর অশ্বমেধ যজ্ঞের ব্যাপার স্যাপার আর লেখার দরকার নেই। দিব্বি ঘোড়ার মাংসও খাওয়া হতো, তবে তা বৃষ মাংসের মতন জনপ্রিয় হয়তো ছিলো না।

    আসলে বেদে ও পুরাণে ঘোড়ার উপর এত লেখা আছে যে সেটি নিয়ে একটা আলাদা প্রবন্ধই হয়ে যেতে পারে। খালি কয়েকটি তথ্যের কথা লিখি। রাজা মহারাজারা কেউ বিশেষ ঘোড়ায় চড়তেন না, রথ বা হাতিই ছিলো উপযুক্ত স্থান। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় একবার দ্রোণকে দেখি ঘোড়ার পিঠে চেপে ব্যুহ পরিদর্শনে নেমেছেন আর যুধিষ্ঠির আর শকুনি, একবার করে রণাঙ্গন ছেড়ে পালিয়েছেন ঘোড়ার পিঠে চড়ে। হরিবংশও (আর বায়ুপুরাণেও,একই গল্পের স্লাইট ভেরিয়শনে) একবারই দেখি উল্লেখ আছে এক নৃপতির ঘোড়ার পিঠে চড়ার। বোধহয় ঘোড়াগুলি খুব ছোটো ছিলো আর তখ্‌নকার দিনে কম্পপাউন্ড বো, যেটি আকৃতিতে ছোটো এবং সে কারনেই ঘোড়সওয়ার তীরন্দাজদের পক্ষে উপযুক্ত, সেই টেকনলজি পুরাভারতে খুব একটা দানা বাঁধেনি । প্রাণীজ আঠা দিয়ে জুড়ে এই সব ধনুক বানাতে সময় লাগতো এক বছরের ও বেশি, তাছাড়াও ভারতের আর্দ্র আবহাওয়াতে খুব একটা টেঁকসইও হতো না।

    আর নামকরণসও হত না। অর্জুনের চার ঘোড়ার নাম ছিল (বলাহক, মেঘপুষ্প, শৈব্য ও সুগ্রীব), হরিবংশে এক ঘোটকীর সাক্ষাত মেলে নাম তার হৃদ। ব্যাস এই পর্যন্তই। আর কিছু ছিলো জেনেরিক নাম, যেমন ইন্দ্রের ঘোড়া দুটির নাম হরি, মরুদগনের অশ্বের নাম পূষতী, বা বায়ুর "অশ্ব সকলের নাম" ছিলো নিষুৎ।

    অগ্নিপুরাণে আছে অশ্বলক্ষণ ও অশ্ব চিকিৎসা। হাতী আর গরুর চিকিৎসার কথাও আছে। তবে ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো সাপ নিয়ে অধ্যায়টি। প্রায় পুরোটাই কুসংস্কার আর উপকথার ভাঁড়ার। তবে ছান্দোগ্য উপনিষদে নারদ যখন তার জ্ঞান কি কি বিষয়ে বলে এক বিশাল লিস্টি ফাঁদলেন তার মধ্যে সর্পবিদ্যাও ছিলো । কিন্তু এই সর্পবিদ্যর আর কোনো রেফারেন্স দেখি নি।

    চিড়িয়াখানা ছিলো কি ? বায়ুপুরাণে যে দেখি দক্ষযজ্ঞে শিব, "খাঁচা ছাড়া সিংহের" মতন ধেয়ে গেলেন যজ্ঞভূমিতে ? রাজা রাজড়ারা কি আর সখ করে বাঘ, সিংহ বা পাখী পাখালি পুষতেন না?

    আর আরেকটি অদ্ভুত পশুর কথা উল্লেখিত হয়েছে অনেক স্থানে সেটি শরভ মৃগের কথা। কাশ্মীরবাসী এই মৃগ ছিলো উটের মতন বিশালকায়, আটটা পা যার চারটে পা উর্দ্ধমুখে (হয়তো শিং) এবং এরা ছিলো সিংহ ঘাতিনী। শুক্লু যজুর্বেদে(১৩/৫১/১) উল্লেখ আছে, উল্লেখ আছে অগ্নিপুরাণেও। এর সিং দিয়ে তৈরি হত শারঙ্গ ধনু। প্রকৃতিপ্রেমিক ঋষিদের চোখে ও কানে বাদ পড়েনি তুচ্ছ ব্যাঙেরাও। ঋগবেদে(৭/১০৩) দিব্বি আছে ব্যাঙেদের স্তুতি। বলা হয়েছে "তোমরা সুন্দর শব্দবিশিষ্ট হয়ে জলের উপর লম্ফ প্রদান করে শব্দ কর, তখন তোমাদের সমস্ত পর্বযুক্ত শরীর সমৃদ্ধ হয়। এদের একের শব্দ গরুর ন্যায়, অপরের শব্দ ছাগলের ন্যায়, একটি ধুম্রবর্ণ, অন্যটি হরিদ্বর্ণ। সকলেরই এক নাম অথচ রূপ বিবিধ প্রকারের।"

    কিন্তু কুকুর? অদ্ভুত ব্যাপার নানান উপকথার সঙ্গে খুব জড়িয়ে আছে কুকুর।

    ঋগ্বেদে(৭/৫৫) তো কুকুরদের নিয়ে একেবারে একটা প্যারাগ্রাফই আছে। প্রায় পুরোটাই টুকে দিলাম " হে শ্বেতবর্ণ ও কোন কোন অংশে পিংগলবর্ণ সরমাপুত্র! তুমি যখন দন্ত প্রকাশ কর তা আমার নিকট আহারের সময় সৃক্কণী প্রদেশে আয়ুধের ন্যায় বিশেষ রূপে শোভা পায়। তুমি সুখে নিদ্রা যাও। হে সারমেয়! তুমি চোর ও ডাকাতদের প্রতি গমন কর। তুমি শূকরকে নিবারণ কর। শূকরও তোমায় বিদারণ করুক। ইন্দ্রের স্তোতাগনের নিকট কেন যাও ? আমাদের কেন বাধা দাও ? সুখে নিদ্রা যাও। তোমার মাতা নিদ্রা যান, তোমার পিতা নিদ্রা যান।" বোঝা যাচ্ছে রচয়িতা বশিষ্ট ঋষি, কুকুর খুব একটা পছন্দ করতেন না ।

    ছান্দোগ্য উপনিষদে (১/১২) একটা দারুন কিন্তু অসমাপ্ত গল্প আছে। বক বা গ্লাব নামে এক ঋষি নির্জনে এক পাহাড় চূড়ায় গেলে তার কাছে হাজির এক সাদা কুকুর। আরো কতকগুলি কুকুর অত:পর এসে গেলো। তারা সাদা কুকুরটিকে বল্লো আমরা ক্ষুধার্ত; আপনি অন্নের গান করুন। সাদা কুকুরটি এরপর সামগায়ীদের মতন হিংকার তুলে গান গাইলো " ওম, আমরা ভাত খাবো, জল খাবো, দেবতারা সবাই আসুন। ওম। "
    এটি একটি প্যারডি না হেঁয়ালি সেই বিয়ে ব্যখ্যা প্রচুর আছে।

    তবে কুকুরের গল্প, তর্কসাপেক্ষে কুকুর নিয়ে লেখা শ্রেষ্ঠতম কাহিনীটি যুধিষ্ঠিরের মহাপ্রস্থানের পথের কথা। বহুল প্রচলিত গল্পটির আর পুনরুক্তি করতে চাই না। "মহাভারতের কথায়' বুদ্ধদেব বসু আশা রেখেছিলেন, আগামী দিনে কেউ একজন, ভারতীয় বা য়োরোপীয় ভাষায় লিখবেন এই কথিকাটি। নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করবে হস্তিনাপুর থেকে সঙ্গী এই অনাহুত অলক্ষিত কুকুরটি, এতো দীর্ঘ পথ কেমন ভাবে চলেছিলো? কোন শক্তিতে ? ছয়জনের পংক্তির পরে, সব শেষে কি সে শ্রেনীবদ্ধ ভাবে চলেছিলো ? না কি আগে পিছনে ছুটে সে চলেছিলো নিজের ছন্দে? কোনো খরগোশ বা বিড়াল শিশুকে আমিষের লোভে হত্যা করেছিলো ? বিনা আর্তনাদেই কি সে লক্ষ্য করেছিলো একে একে পাঁচজন সঙ্গীর মৃত্যু ?

    "এক অদ্ভুত ছবি ফুটে ওঠে আমাদের মনে : চারিদিকে পর্বত, দিনের রৌদ্রে স্ফটিকের মতন উঙ্কÄল ও তারার আলোয় শুভ্র নীলাভ তুষারপুঞ্জ - তারই মধ্য দিয়ে, অতি সংকীর্ণ জনহীণ একটি পথ বেয়ে বেয়ে চলেছেন এক কুকুর সঙ্গী মানুষ। .. যুধিষ্ঠিরের শেষ যাত্রায় শেষ পর্যায়ে তাঁর সঙ্গে যে এই অশুচি জীব ছাড়া আর কেউ রইলো না, এই ঘটনাতেই তার বিজয় পতাকা উত্তোলিত হলো. ।"

    ২. দেবলোকের পশুরা

    মানে সেই সব পশু ও পাখীরা যারা দেবতাদের সঙ্গে সঙ্গে ঠাঁই পেয়েছেন দেবলোকে। সবার আগেই হনুমান। ইনি অমর ও এর পুজো আচ্চা ভারতবর্ষের বহু স্থানে। এবং বাসুকি নাগ, আর মন্থন উদ্ভুত উচ্চৈ:শ্রবা আর ঐরাবত। বাকীদের প্রায় সবাই ঠাকুর দেবতার বাহন । আর রয়েছেন বিষ্ণুর কিছু অবতারেরা।

    ঐরাবতের সংসারের কথা আছে বায়ু পুরাণে (৬৯ অধ্যায়ে)। শ্বেতবর্ণ ও চারটে দাঁত, ঐরাবতের স্ত্রীর নাম অভ্রমূ, আর চার ছেলের নাম অঞ্জন, সুপ্রতীক, বামন ও পদ্ম।

    বড় এক্সেপশন সরমা, দেবতাদের কুকুর। কুকুর কারো বাহন নয় সঙ্গে এসেছে। সরমাও নিজের অধিকারেই দেবতাদের সঙ্গে, এমনটি আর কোনো জন্তুর সৌভাগ্যে ঘটে নি।

    মুলত: ঋগবেদের দশম মন্ডলেই সরমার আনাগোনা। ১০৮ সূক্তটি পুরোটাই সরমার উদ্দেশ্যে। পণিদের সাথে সরমার সংলাপ। সরমাকে দেখে তো পণিরা অবাক, বললেন কি ভাবে এলে এতো দূরের পথে ? কঞ্জ রাত্রি ধরে আসতে হয়েছে তোমায় ? আর নদীই বা পার হলে কি ভাবে? সরমা বললেন তোমরা যে বিস্তর গোধন সংগ্রহ করেছো , সেগুলি এবার অমি নিয়ে যাব। পণিরা হাঁ হাঁ করে উঠলেন, বল্লেন "তুমি দূরদেশ হতে এসেছো, সে ইন্দ্র দেখতে কেমন? তার সাথে আমরা বন্ধুত্ব চাই"। সরমা নারাজ, বললেন ইন্দ্র আপনাদের সবাইকে হারিয়ে দেবে যুদ্ধে। দেখো, ভালোয় ভালোয় গরুগুলি দিয়ে দেও, না হলে ফল ভালো হবে না। পণিরা বল্লেন , ধুর, এই যায়গা খুবই সুরক্ষিত, তুমি গাভীদের আওয়াজ পেয়ে চলে এসেছো, কিন্তু খামোখাই এসেছো । সরমা আরো থ্রেট দিলেন। নো কম্প্রোমাইস। পণিরা অগত্যা তখন বললেন ঠিক আছে, তোমায় না হয় কিছু ভাগ দিচ্ছি। সরমা রাজি নন, বললেন গাভীদের রেখে পালাও। সব দেবতারাই এই গাভীদের খবর জানতে পেরেছেন, এই এইবার এলেন বোধহয়, তার আগেই মানে মানে কেটে পরো।

    ঐ দশম মন্ডলেই ১৮ সুক্তে আবার কুকুরের কথা আছে। সরমার সন্তান, দুটি কুকুর, এরা যমের প্রহরী, তারা পথ রক্ষক আর তাদের এক একজনেরই চার চারটে চোখ।

    সরমা আবার একটি ছোট্টো ক্যামিও রোলে থাকবেন মহাভারতের আদি পর্বে, জনমেজয়ের ভাই একটি কুকুরকে বিনা দোষে পিটালে ক্রুদ্ধ সরমা এসে হাজির। জনমেজয়কে শাপ দিলেন সরমা। যেটুকু উল্লেখ আছে দেবলোকের কুকুরের, সেখানে তাঁরা কিন্তু স্বাধীন ও দোর্দন্ডপ্রতাপ।

    বিষ্ণুর অবতার কিন্তু বিভিন্ন গ্রন্থে বিভিন্ন রকমের । এমন কি অবতারের সংখ্যাও সর্বত্র দশ নয় , কোথাও সাত, কোথাও বারো,কোথাও কুরি । যেখানে দশাবতারে মেলে এখানে দেখবেন এক কিতাবে একেক লিস্ট। তবে সব কটি ঘেঁটে দেখি কোন কোন পশু ছিলো তাতে ? ছিল মাছ, শুয়োর (বরাহ অবশ্য শুনতে ভালো),কচ্ছপ, হাঁস এবং ঘোড়া।

    দধিক্রা একজন গৌণ দেবতা ; ঋগ্বেদের চতুর্থ ও নবম মন্ডলে এর স্তুতি আছে। বেশ কয়েকটি সুত্রে দধিক্রাকে চলমান ও বেগবান অশ্ব, জয়শীল ও বেগবান অশ্ব, মনুষ্যের প্রেরক অশ্ব বলা হয়েছে। একটি (৪/৩৮/৬-৭) সুত্র : "তিনি যুদ্ধ গমনে অভিলাষ করিয়া রথশ্রেণীতে যুক্ত হইয়া গমন করেন। তিনি অলংকৃত ও লোকের হিতকর (অশ্বের) ন্যায় শোভমান। তিনি মুখস্থিত লৌহখন্ড দংশন করেন এবং ধুলি লেহন করেন।" কিন্তু দধিক্রা টেঁকেন নি, নাহলে একটি অশ্বদেবকে আমরা চিনতাম।

    আর বাহনের লিস্ট দিতে গেলে পাতায় কুলোবে না। এতো দেবতা, এতো তাদের নানান রকমের মুর্তি ও বাহনের বৈচিত্র যে সেটিই একটি প্রবন্ধের বিষয় হতে পারে।

    কতকগুলি ক্ষেত্রে বেশ বাড়াবাড়ি হত। যেমন ধরুন বরাহ অবতার, "কেশবধৃত শূকররূপ জয় জগদীশ হরে"। কিন্তু তাঁরও বাহন চাই আর সেটি হলো কচ্‌ছ্‌প। কুর্ম অবতার, তিনি কিন্তু বাহন শুণ্য।

    আর দেবতারাও সবাই ঠিক "জন্মগ্রহণ" করেন নি, তারা পুরাণে পুরাণে ইভলভ করেছেন, তাদের বাহনেরাও পাল্টে গেছেন বারে বারে। "সরস্বতী বারংবার বাহন পরিবর্তন করেছেন। মেষ, সিংহ, ময়ুর ও হংস - এই চারটি প্রাণী সরস্বতীর বাহনরূপে কল্পিত হয়েছেঞ্জ। তো, কোন পশু কোন দেবতার, সেই রকম কোনো মৌরসীপাট্টা নেই। আর প্রায় সব ছোটো বড় সব জন্তুই বাহন সুত্রে দেবলোকে যেতে পেরেছেন।

    তাও দু একটা একটু অন্যধরনের বাহনের কথা উল্লেখ করছি, বাহন হিসেবে যাদের কল্পনা করা বেশ চমকপ্রদ । যেমন শনিগ্রহের বাহন শকুন, বরুনের ছিলো মাছ। শিবদুতীর শিয়াল, মঙ্গলচন্ডীর গোসাপ। সব থেকে বেশি বাহন বৈচিত্র চৌষট্টি যোগিনীর রূপ কল্পনায়। বাহনের মধ্যে রয়েছে শুয়োর, কাক, মোরগ,ব্যাঙ ইত্যাদি।

    পক্ষীরাজ ঘোড়া ও অন্যান্যরা

    মানে সেই সব পৌরাণিক বাসিন্দা যারা অন্তত: কিছুটা হলেও পশু ।

    যারা স্রেফ ঠাকুর দেবতার মধ্যে পড়েন তাদের মধ্যে আছে নৃসিংহ অবতার। হয়গ্রীব, ছাগমুখ দক্ষ আর হস্তীমুখ গণেশ - কিন্তু শুধুই প্লাস্টিক সার্জারীর অবদান, প্রকৃতিতে এদের মধ্যে কোনো পশ্বাভাব নেই যেমনটি ছিলো নরসিংহ অবতারের।

    হয়গ্রীব খুব জনপ্রিয় অবতার নন। যদিও গুয়াহাটী এবং দক্ষিণ ভারতে বেশ কয়েকটি মন্দির আছে এনার নামে। আকৃতিতে গ্রীক সেনটাউরের একেবারে উল্টো। হয়গ্রীব অবতারের চেহারা মানুষের, মুখটি ঘোড়ার।

    নামকরা কিমেরা অবশ্যই গরুড়। ঋগবেদ থেকে মহাভারত ইস্তক প্রচুর পুরাণেই গরুড়ের কথা আছে। কৃষ্ণযজুর্বেদে একটি আখ্যান আছে সেটি প্রচলিত গল্পটির আকর মনে হয়। কিন্তু যেহেতু গরুড় দেবতা নন, নেহাৎই বাহন মাত্র তাই তাঁর চেহারার ঠিকঠাক বর্ণনা কোথাও নেই। জন্মের সময় তাঁর অগ্বিপ্রভ মুর্তি দেখে স্বর্গবাসীরা ভয় পেয়েছিলেন, এ কথা লেখা আছে মহাভারতের আদি পর্বে। কিন্তু গরুড় কি শুধুই একটি পাখী না কি মিশরের সুর্য দেবতা হোরাসের মতন তার শরীরটি মানুষের কিন্তু শুধু মুখটি পাখীর? শুধু জানা যায় গরুড়ের বিশাল ডানা ছিলো, প্রাচীন কাল থেকে সব ছবি বা মুর্তি আছে, দেশে ও দক্ষিণ-পুর্ব ভারতের মন্দিরে, সে গুলি কিন্তু ঐ পাখীমানুষেরই মুর্তি।

    আর গরুড়ের নামে একটি পুরাণ ও আছে, আশ্চর্যের বিষয় তাতে গরুড় নিয়ে একটিও কথা নেই !

    আর গরুড় বললেই গরুড়ের জন্মশত্রু নাগেদের কথা আসে। এই "নাগ" ও বেশ অদ্ভুত জীব। কখনো নিতান্তই সাপ, কখনো পুরোটাই মানুষ, আর কখনো এক সাপমানুষ। অনেক মুর্তি আছে দক্ষিণভারতে, নাগেদের মুখ মানুষের,শরীরের নীচের দিকে সাপের মতন। হিন্দু মিথের সব থেকে খ্যাতনামা নাগ ছিলেন উলুপী পুত্র ইরাবান(তামিলে আরাবন)। নাগকন্যা উলুপী ও অর্জুনের পুত্র ইরাবান কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে যোগদান করেন ও খুব বীরত্বের সাথে লড়াই করেন। রাক্ষস অলম্বুষের সাথে লড়াইতে দুই পক্ষই মায়াযুদ্ধ করেন। ইরাবান সর্প রূপ নিলে অলম্বুষ গরুড় মুর্তি ধারন করে ও অবশেষে ইরাবানের মস্তক ছিন্ন করে নিহত করে। ঐ ধড়হীন ছিন্ন মস্তক ইরাবানের পুজ্য দেবমুর্তি দক্ষিণ ভারতে বিশেষত: তামিল দেশে বেশ প্রচলিত।

    তবে দেহটি মানুষের মুখ পশুর বোধহয় একটিই ব্যতিক্রম আছে হিন্দু পুরাণিক সাহিত্যে সেটি কুবেরের অনুচর কিন্নর বা কিম্পুরুষেরা। এদের চেহারা দু ধরনেরই হতো অর্থাৎ অশ্বমুখ মানব দেহ বা উল্টোটা, যেমন মানবমুখ আর অশ্বশরীর। কুবেরের একটি কুৎসিত কাল্ট ছিলো (বায়ুপুরাণ)। তিনি ও তার অনুচরদের খুবই কুৎসিত দেখানো হয়েছে। কুবের ছিলেন তিন ঠ্যাঙে, খুব মোটা মাথা, আটটা মাত্র দাঁত, তামাটে দাড়ি, ছুঁচলো কান, লালচে গায়ের রং , একটা হাত ছোটো আর আরেকটি বড়। তার অনুচর যক্ষ ও কিন্নরেরাও ছিলো কুৎসিত। তবে কিন্নরেরা ছিলেন মধুরকন্ঠী, ঐটুকুই যা কনসেসন।

    গঙ্গার বাহন মকরের প্রাচীন যা মুর্তি পাওয়া যায় তাতে করে সেটি যে ১০০% কুমীর বা পুরোটাই শুশুক, এরকম নিশ্চিত করে বলা যায় না। মাঝামাঝি একটা সংকর প্রজাতি। মকরের এই রূপকল্প কিন্তু জ্যোতিষ থেকে রণবিদ্যা, সর্বত্রই চালু ছিল।

    আর যা পশুমানব দেবলোকবাসী তাঁরা হচ্ছেন শক্তি দেবীর অনুচর বা গণ। কুলার্ণবতন্ত্রে এদের বিশদ বিবরণ আছে। যেমন ডাকিনী হচ্ছেন সর্পবদনা ও মনুষ্যমুখী, রাকিনী দেবীর মুখ পেঁচার মতন, দেহ "সর্বালংকার ভুষিতা ও নীলবর্না", কাকিনী দেবীর শরীর মাণিক্যের মতন দ্যুতিসম্পন্না কিন্তু মুখ ঘোড়ার মতন, শাকিনী দেবী কাজলের মতন কালো ও বিড়ালমুখী, হাকিনী দেবী নীলমেঘবর্ণা ও ভল্লুকমুখী। চৌষট্টি যোগিনীরও (স্কন্দপুরাণ) অনেকেই পশুমুখী। স্থান পেয়েছে কুমীর, সিংহ, সাপ,বানর, ভালুক, হাতি। তবে এঁরা দেবলোকের বাসিন্দা হলেও খুব সুবিধের জীব নন। মানুষকে যেন একটু ভয় পাওয়ানোর জন্যই এঁদের এরকম রূপকল্পনা।

    এতো সব দেব দেবী ও তাঁদের বাহন থাকলেও শুধুমাত্র গরুড় ও বিষ্ণুর মধ্যেই একটা মিত্রতার সম্পর্ক ছিলো এবং গরুড় প্রায় নিজেই দেবত্বের দাবী রাখতেন । বৃষরাজ নন্দী যতটা না দ্বাররক্ষক হিসাবে মন্দির শিল্পে স্থান পেয়েছেন ততটা কিন্তু পুরাণের কথকথায় গুরুত্ব পান নি।

    সেই অধিকার শুধুমাত্র রামায়ণের হনুমানেরই ছিলো, যিনি এখন নিজেই হিন্দুদের সবথেকে জনপ্রিয় দেবতাদের একজন।
    ---------------
    জন্তু, মানে বুনো জন্তু আর বন জঙ্গল তো একই সত্বা, তাই অরণ্যের উপর একটি কবিতা দিয়ে এই লেখা শেষ করছি।

    ঋগবেদ, ১০ম মন্ডল, ১৪৬ সূক্ত, কবি দেবমুনি ঋষি।

    "হে অরণ্যানি, তুমি যেন দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাও। তুমি কেন গ্রামে যাবার পথ জিজ্ঞেশ করো না ? তোমার কি একাকী থাকতে ভয় হয় না ? এক জন্তু উত্তর দিচ্ছে বৃষের ন্যায় শব্দ করে , আর এক জন্তু চী চী ইত্যকার শব্দ করে যেন তার উত্তর দিচ্ছে। যেন এরা বীণার ঘটায় ঘটায়,পর্দায় পর্দায় শব্দনির্গত করে অরণ্যানীকে বর্ণনা করছে। অরণ্যানীর মধ্যে কোথাও যেন গাভী চড়ছে এরূপ ভ্রম হয়,কোথাও যেন একটি অট্টালিকার মত দৃষ্ট হয়, সন্ধ্যাবেলা যেন তার মধ্য হতে শত হত শকট নির্গত হয়ে আসছে। তবে কি এ ব্যাক্তি গাভীকে আহ্বান করছে ? তবে কি আরেক ব্যক্তি কাষ্ঠ ছেদন করছে? অরণ্যানীর মধ্যে ব্যক্তি থাকে, সে জ্ঞান করে যেন সন্ধ্যাবেলা কেউ চিৎকার করে উঠলো।

    বাস্তবিক অরণ্যানি কারো প্রাণ বধ করেন না। অন্য অন্য পশু না এলে সেখানে কোন আশঙ্কা নেই। সেখানে সুস্বাদু ফল আহার করে অতি সুখে কালক্ষেপ হয়। মৃগনাভীর মতন অরণ্যানীর সৌরভ কত, আহার সেখানে বিদ্যমান আছে। সেখানে কৃষক লোক আদৌ নেই। অরণ্যানি হরিণদের জননী স্বরূপা। এ রূপে আমি অরণ্যানীর বর্ণনা করলাম।"

    ছবি- সাম্পান
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ০১ অক্টোবর ২০১০ | ৭৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন