

ছবি: ঈপ্সিতা পাল ভৌমিক
এখন আকাশ। কুচকুচে। ধ্যাৎ এটা শুক্লপক্ষ, ক্যালেন্ডার বলেছে। তো? আমি কুচকুচেই দেখতে পাই; তারা ছিটানো। আজি যত তারা ........ফুটকি ফুটকি ফুটকি। জ্বলজ্বলে। সবুজ। অগুন্তি, না অগুন্তি নয়, গোনা যায়। সফটওয়্যার আছে, আই পি ল্যাব। আই পি ল্যাব ভাইরাস গুনে চলে। টেন টু দি পাওয়ার এইট। সেভেন। এইট। সাইবারগোল্ড দিয়ে রং করা সবুজ ওরা সব, অ্যানোডিস্ক ফিল্টারকে কুচকুচে কালো দেখায়। আই পি ল্যাবের কখনো ভুল হয় না। মেথানলের গন্ধকে ও অকারণ আজে অগুরু ব'লে ভাবেনি। একটা প্যাঁচা ডাকছে কোথাও, চী-ঋ-ঋ-ঋ , আমারে কুড়ায়ে নেবে । আমার তোবড়ানো অলফ্যাক্ট্রি আবার ভুল বলতে থাকে ..... রূপশালী রূপশালী রুপশালী, ধুস। জানলায় আকাশ টোকা দেয়। শুক্লপক্ষই। নিরাচন্দের পর ছ দিন চলে গেছে।
পোড়ো বিকেলের কার্নিশ থেকে দিন চোঁয়াচ্ছিলো। টুপ টাপ, টিপ, আবার টুপ। আজ বুধবার নয়। তো কি? একটা ধুলো-ছাই কার্পেট, না খাওয়া ব্যাঙের ছাতারা, প্যাঁচানো চুল্লীর হাত আঁকড়ে কালচিটে তেল সবাই জঙ্গল হতে চায়। একের পর এক আর একের পর এক। জঙ্গলের মধ্যে রেল লাইন পাতা নেই। তবু আমি শুনতে পাই একটা মালগাড়ি চলে যাচ্ছে। পাটরী আর পাইয়া নতুন একটা যুগলবন্দী বাজায় --'টাট্টানগর ফসকে গেলো। টাট্টানগর ফসকে গেলো'। নবীনবরণ হয়নি তবু কতক গুলো বই তাল দিতে দিতে আমার চোখের সামনে অনেক হতে থাকে। পিতপিতে খসখসে চোদ্দশো তেরো,বারো এগারো.... 'ডাক , ডাক ডেকেছিস?' মোটা মোলায়েম তেরোশো ছিয়ানব্বই, পঁচানব্বই,তেরোশো নব্বই । সেই জানাশোনা বীন গাছটার মতো ওদের সংখ্যা বাড়ছে। মুলিসীয় নামতা না জেনেও বইরা সব কিছু ঢেকে ফেলে। একটা আটদিন বয়সী চাঁদ ছাড়া।
অতিবালুচরী গুলো পরাগ গুঁড়ো হয়ে গেছিলো আমার ফুসফুসে। সেদিনের মত, ওদিনের মতো। আমার ব্যথিত কোন ঝিল্লিতে, ফ্যারিংসে, সব কটা অ্যালভিওলার বেলুনে পরাগ গুঁড়োরা বক্সিং গ্লাভস পরে আসে। অতিবালুচরীরা তাই নেই করে দিলো আমায়। চৌকো একটা পর্দায় তখন খরাজ গলা। ক্লোভার মধুর মত গাঢ় খুশী লালচে বাদামী বল হয়ে সাঁতার কাটতে থাকে কড়াইয়ে। ছোলার ডাল, আলু-কপি, পায়েস। চৌকো পর্দাটায় ছবি আসে, ছবি যায়। আমার না-নতুন জামায় একের পর এক খুশী পাখি আঁকা হতে থাকে। নীল-সবুজ,সবুজ-নীল। ওদের নাচুনে ল্যাজ গুলো চোখের পরে চোখ মেলে ঝিকমিক খোঁজে। ঝিকমিক খোঁজে। আ-দু-রে গলায় ঝিকমিক বলে 'রাত ,আজ আর বাড়ি গিয়ে কাজ নেই'।
এখন আকাশ। ব্লু অ্যান্ড গোল্ড। দিবাকর যদিও কাথবার্টের দেখানো রাস্তায়। এই সময় অনেকে খোঁজে অনেক কিছু। চুলবুলে আঙুলরা পা খোঁজে, ধীর স্থির আঙুলরা মাথা হয়তো। রবারের চারকোণ বিছনার ওপরে সাদা ওটাকে একটা মেঠো বাদামী ইঁদুর মনে হয় আমার। কালো কালো চাবিরা হয়তো খাগের কলম এই রকম সময়ে। ক্ষুদে পিঁপড়ে হয়ে ভালো চাওয়া গুলোকে নানা স্বাদের মাটিতে চলে যেতে দেখি। ফিরে আসা কবুতর নীলে গুলে যাবার সময় আস্তে আঙুলে টোকা দেয় কোথায় যেন। তবু দেখতে পাই ক্ষুদে পিঁপড়েরা নিশ্চিন্তে জিরোতে আসে আমার চিনি ফুরোনো বাক্সে। ইথারের কোন একটা ঢেউয়ে একটা কলসী ভরার শব্দ শুনতে পাই স্পষ্ট। তখনো না আসা, চাঁদনির দিকে দশ পা এগিয়ে যাওয়া নিচাঁদের দিকে তাকিয়ে আমার সেলফোন ফিসফিসে হয়ে বাজতে থাকে...... " টু মাচ অফ এ গুড থিং,ইজ এ গুড থিং।ফিলিং লাইক দিস ক্যান্ট বী রং।'