পৃথিবীর প্রায় সর্ব প্রান্তের (আইসল্যান্ড থেকে শুরু করে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত) নানা দেশের লোক জনের সাথে মেলা মেশা করেছি বা এখনো করি কর্মসূত্রে বা বন্ধুত্ব/চেনাশুনার খাতিরে। এর মধ্যে কিছু কিছু দেশ আছে যাদের জন্য মনের গভীরে একটা আলাদা স্থান থেকে যায় – আমি নিশ্চিত আপনাদের অনেকেরই এমন মনে হয়। আমার ক্ষেত্রে সেই বিশেষ দেশটি হল মলটা।
মলটা (বা উচ্চারণভেদে মালটা) নামক দেশটির নাম শোনেন কি? ঘাবড়াবেন না, আমিও অনেক বড় বেলা পর্যন্ত জানতাম না বিশেষ কিছুই এই দেশ সম্পর্কে। ভৌগলিক ভাবে দেখতে গেলে ইতালির ঠিক দক্ষিণে ভূমধ্যসাগর পরিবেষ্টিত একটি দ্বীপ দেশ হল মলটা। মাত্র সতেরো হাজার বছর আগে পর্যন্ত নাকি ইতালির মূল ভূখন্ডের সাথে লেজুড়ের মত জুড়ে ছিল এই দেশ। আর এখন মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে ভারতের দক্ষিণে শ্রীলঙ্কার মত কেস হয়ে গেছে – ইতালির মূল ভূখন্ড থেকে মলটার দূরত্ব মাত্র আশি কিলোমিটার । খুবই ছোট্ট দেশ – পূব থেকে পশ্চিমে ২৭ কিলোমিটার মত প্রস্থ আর উত্তর থেকে দক্ষিণেও প্রায় ওই একই দৈর্ঘ্য – মোট এলাকা ৩২৫ বর্গ কিলোমিটারের মতন। মোট লোক সংখ্যা মাত্র ৫ লক্ষ! মলটার ছেলে পুলেদের সাথে যখন প্রথম আলাপ হয়, তখন ওরা বলেছিল যে একটা প্রচলিত কথা আছে, যদি এক মলটীজের সাথে অন্য অচেনা মলটীজের দেখা হয়, তাহলে মাত্র তিনটি প্রশ্ন লাগে একে অপরের ঠিকুজি কুষ্টি এবং কমন চেনাশুনা বের করে ফেলতে! দেশটা এতই ছোট!
যদি গুগুল সার্চ করেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দেশ – তো মনে হয় না প্রথম দশে আপনি মলটা দেশের নাম পাবেন – সেখানে দেখবেন ফিনল্যান্ড এবং অন্যান্য স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশগুলিরই আধিক্য। কিন্তু এই সুখীর সংজ্ঞার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ বা আমরা যাকে বলি ‘আনন্দে’ বেঁচে থাকা তা ঘুলিয়ে ফেললে চলবে না। তেমন লিষ্টী বানাতে হলে প্রথম বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে মলটার নাম একেবারে প্রথম দিকে থাকবে। বিশাল আনন্দে এবং টেনশন ফ্রী জীবন কি ভাবে কাটাতে হয় এদের কাছ থেকে শেখা যেতে পারে।
আমরা ভারতবর্ষে যেমন শক, হুন, পাঠান, মোগল ইত্যাদির মিলে যাওয়া নিয়ে গর্ব অনুভব করি – তেমনি মলটার ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে নানা সভ্যতার মিলে মিশে যাওয়া নানা সময়ে। মলটা দ্বীপে মানুষ বসবাসের ইতিহাস প্রায় ৮০০০ হাজার বছরের পুরানো। নানা সভ্যতার সম্রাটেরা – রোমান, গ্রীক, আরব, নর্মান, আরাগোনীজ, ফরাসী এবং সবশেষে ইংরাজরা রাজত্ব করেছে এখানে। ১৮১৩ সাল নাগাদ ইংরাজরা রাজত্ব শুরু করে এখানে এবং এই তো সেদিন, ১৯৬৪ সালে মলটা স্বাধীনতা লাভ করে ইংরেজদের হাত থেকে। প্রাচীন থেকে মধ্যযুগ এবং আজকের আধুনিক যুগেও মলটা দেশটিকে অনেকেই দখলে রাখতে চেয়েছিল মূল তার স্ট্রাটেজিক লোকেশনের জন্য – মিলিটারী কারণে এই দ্বীপ দখলে রাখা জরুরী ছিল। তো যাই হোক, সেই সব নিয়ে কচকচিতে আজ ঢুকবো না – অন্য কোন সময় সেই গল্প লেখা যাবে ক্ষণ।
মলটা নামটি কোথা থেকে ঠিক এসেছে সেটা কনফার্মড নয় – তবে বেশীর ভাগই মনে করেন যে প্রাচীন গ্রীকরা এই দ্বীপটিকে বলত ‘মেলিট’ যার অর্থ ‘মধু-মিষ্টি’ – কারণ মলটার সেই সময়ের মধু নাকি খুব বিখ্যাত ছিল। আর সেই মেলিট থেকেই মলটা – রোমানরা এই দ্বীপকে বলত মেলিটা। মলটার রাজধানীর নাম ভ্যালেট্টা – খুবই ছোট শহর, মাত্র ০.৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকার – ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে ছোট রাজধানী এটাই।
মলটা দেশের যে ছেলেটির সাথে আমার প্রথম বন্ধুত্ব হয় তার নাম যোসেফ। যোসেফের গল্প মনে হয় আগে এখানে লিখেছি দুই একবার। যোসেফকে ভালো করে চেনার আগে আমি তেমন কিছু জানতাম না মলটা দেশটি সম্পর্কে। তার পর তো ক্রমে ক্রমে পরিচিত হই নিক, নোয়েল, আমান্দা, ক্যামিলিয়া, মার্কো, ক্রীস এবং আরো অনেকের সাথে। কয়েকবার গেছি মলটা ঘুরতে, যোসেফের বাড়িতেই থাকতাম – তবে অনেকদিন যাওয়া হয় না ওদিকে। এই বার করোনা না এলে আগষ্ট মাসে মলটা যাবার কথা ছিল যোসেফের বিয়ে অ্যাটেন্ড করতে। যোসেফ বিয়ে করছে এক কলম্বিয়ান মেয়েকে যে মলটা দেশেই কলম্বিয়ান এমব্যাসীতে কাজ করে। যোসেফ হচ্ছে গিয়ে কলম্বিয়ান এমব্যাসীর অনারেরী কনস্যুলেট – সেই থেকেই চেনাশুনা মোনিকার সাথে। ক্রমে পরিচয় এবং পরিণয়ের পথে।
যোসেফ এখন ইউনিভার্সিটি অফ মলটার এক নামকরা প্রোফেসর হয়েছে। খুব ভালো কাজ কর্ম করে মেডিক্যাল ইমপ্ল্যান্ট নিয়ে – মাঝে মাঝেই কাগজে নাম বেরোয়। আমাকে মাঝে মাঝে ওর পি এইচ ডি ছাত্রদের এক্সটার্নাল সুপার ভাইজার হয়ে থিসিস রিভিউ করার আমন্ত্রণ জানায়। তো এই মিলিয়েই চলছে এখনো। শেষবার গিয়েছিলাম মলটা অনেকজন মিলে যোসেফের সাথে দেখা করতে – আইরীণ, ওলা, জেন আর আমি। খুব আনন্দে কেটেছিল কয়েকদিন। ক্যাকটাসের ফল দিয়ে বানানো ওয়াইন আগে খাই নি বা ডিটেলস জানতাম না। যোসেফ এর কাকার সাথে আলাপ হল – যিনি খুবই উৎসাহের সাথে নিজের বাড়িতে ওয়াইন বানানো দেখালেন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। বাড়ির নীচের বেসমেন্টে যে পরিমাণ অ্যালকোহল ফার্মেন্ট হচ্ছে দেখলাম, তাতে করে যদি কোন কারণে আগুন ইত্যাদি ধরে যায়, তাহলে পুরো বোম ফাটার মত কেস হয়ে বাড়ি উড়ে যাবে বলে মনে হল। সেটা ব্যক্ত করতে যোসেফ বলল চিন্তার কিছু নেই – এটা কমন ব্যাপার, আর বোমার সাথে আমরা মলটীজরা খুবই পরিচিত।
আচ্ছা, বোমার কথায় মনে এল। যদি বর্গ কিলোমিটারের হিসাব ধরেন, তাহলে মলটা দেশই পৃথিবীর সবথেকে বেশি বোমা ফেলা হয়েছে – বেশীর ভাগটাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে। জার্মানরা মলটায় যত বেশী বোমা ফেলেছিল, তত বেশী বোমা ইংল্যান্ডেও ফেলে নি মনে হয়! ১৯৪২ সালের ৯ই এপ্রিল মলটার সবথেকে বড় চার্চ মোস্টা ডোম-এ উপাসনা করছিল প্রায় তিনশো মত লোক – সেই সময় জার্মান সেনারা একটা ৫০০ কেজি বোমা ফেলে সেই চার্চে। ছাদ ফুটো করে সেই বোমা মেঝেতে পড়লেও, বিষ্ময়কর ভাবে ফাটে নি সেদিন! যোসেফ সেটাই রেফার করছিল মনে হয় – জার্মান বোমাই আমাদের কাবু করতে পারে নি, তো ওয়াইনে আগুন ধরে আর কি ক্ষতি হবে!
আর তা ছাড়া এই মলটার সাথে আমার বাঙালি আঁতলামোর একটা গল্প জুড়ে গেছে। আজকাল আর নিজের বাঙালীয়ানার পরীক্ষা দেওয়া হয় না, আর দেবার মনে হয় দরকারও নেই! নিজের বাঙালীত্ব প্রমাণের শেষ ধাপটা অতিক্রম ফেলেছি সেই প্রায় এগারো বছর আগে যখন নিজের কবিতার প্রথম এবং এখনো পর্যন্ত একমাত্র বইটি বের হয়ে যায়। কথায় বলে বাঙালি ছেলেপুলের নাকি গোঁফ উঠলে পাতলা পায়খানার মতন কবিতার বেগ পায় – তোড়ে কবিতা নেমে আসে। আমারও তেমনি কেস হয়েছিল মনে হয়।
বার খেয়ে তো কবিতা বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরী করে ফেললাম, কিন্তু প্রচ্ছদ করবে কে! তখনো বিয়ে হয় নি, তাই এমন উপায় নেই যে প্রচ্ছদ অমৃতা-কে দিয়ে আঁকিয়ে পুরো ব্যাপারটা হোম প্রোডাকশন করে নেব! আর আমি কোন শিল্পীকে চিনিনা – ফলতঃ একে ওকে জিজ্ঞেস করা শুরু করলাম, ভাই একটা কেউ প্রচ্ছদ করে দেবার লোক পাওয়া যাবে? আমার মাথার ভিতর তখনো ঘুরছে এই ব্যাপারটা যে, প্রচ্ছদ করতে হলে কবিতাগুলি মূল ভাষায় পড়া জরুরী। একে তাকে মেল করলাম – বেশীর ভাগই উত্তর দিল না, যারা দিল তাদের অ্যাসেসমেন্ট আমি করলাম এই ভাবে, “বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বীচি”।
একদিন কথা প্রসঙ্গে আমার এই প্রচ্ছদ শিল্পী খুঁজে পাবার ব্যাথার কথা যোসেফ-কে বললাম। যোসেফ সোফায় বসে বসে ঈষৎ মদ্যপান করছিল, আমাকে বলল, “আরে ধুর এটা কোন ব্যাপার হল। তুই আমার খুড়তুতো ভাই ক্রীস-কে বল, ও করে দেবে”। ক্রীস-কে আমি চিনতাম, ওই যোসেফ এর সূত্রেই চেশাশুনা, ক্রীসের পুরো নাম, ক্রীস অ্যাকুইলিনা – সে তখন বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটিতে ক্রিয়েটিভ ডিজাইন নিয়ে পড়ছে। মাতাল যোসেফ সেই রাত একটার সময় ক্রীস-কে ফোন লাগালো, বল খুব জরুরী দরকার, তুই এক্ষুণি নিয়ে চলে আয়। ক্রীস হন্তদন্ত হয়ে ব্রডওয়ের কোন পাব থেকে বেরিয়ে আমাদের বাড়ি চলে এল। এসে দ্যাখে জরুরী তো কিছু নয় – বরং বইয়ের প্রচ্ছদ করতে হবে! তবে ক্রীস খুব ভদ্র ছেলে, মুখে কিছু না বলে আমার কাছ থেকে পুরো ব্যাপারটা শুনলো। যে বইয়ের নাম “শহীদ হবার আগের মৌমাছিগুলো” তা ইংরাজীতে অনুবাদ করা কি চাপের তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন! অনেক কষ্ট করে আমি বইয়ের সারমর্ম ক্রীস-কে বোঝালাম। সে বললো বুঝলাম, আমি ধ্বন্দে রইলাম – কারণ আমি নিশ্চিত ছিলাম যে নিজে কবিতা না পড়ে উপযুক্ত প্রচ্ছদ অসম্ভব। আজকে যখন ফিরে দেখি নিজের প্রথম বইটা, অনেক কিছুই পাল্টাতে ইচ্ছা করে। নতুন করে লিখতে করে অনেক কবিতা - কিন্তু ক্রীস-এর করে দেওয়া প্রচ্ছদটা পাল্টাতে ইচ্ছে করে না – আমি আজও নতুন করে ওই কবিতাগুলি লিখলেও, ক্রীসের আঁকা প্রচ্ছদটাই রেখে দিতাম। সেই প্রচ্ছদ বড় প্রিয় হয়ে আছে আজও।
সেবারে গিয়ে ক্রীস সহ বাকিদের সাথে সারাদিন ঘোরাঘুরি – এদিক ওদিকে আশেপাশের আইল্যান্ডে ভ্রমণ। মলটায় অনেকগুলো ভালো বীচ আছে – কোনটা পাথুরে আবার কোনটা বালির – ইচ্ছে মত পছন্দ করে গেলেই হল। আর রাতে ফিরে পার্টি – রাত বারোটার সময়ে ডিনার করে ভাঁট মেরে ফিরে দেখলাম যোসেফ আবার ফ্রেস হয়ে স্নান করে ড্রেস করে রাতের পার্টি-তে বেরুচ্ছে! রাত বারোটা নাকি সবে সন্ধে! কি আর করা যায় – রোম গেলে রোমান হতে হবে কথাতেই আছে।
মলটার রাজধানী ভ্যালেট্টা খুব সুন্দর একটু শহর – অনেক ইতিহাস জড়িয়ে। আরেকদিন আলাদা করে লিখতে হবে সেই গল্প। আমান্দা তখন চাকুরী করত ওদের ন্যাশানাল মিউজিয়ামে – আমাদের ভি আই পি ট্যুর দিয়ে দিল। একদিন যোসেফ বলল তাহলে আমাদের ইউনিভার্সিটির ডিপারর্টেমেন্ট একটা টক দিয়ে দে – সেটাও দিয়ে দিলাম। অনেক ছেলে পুলে এসেছিল।
একদিন সন্ধ্যেবেলা যে সুযোগ টা এসে গেল তা চট করে আসে না – তখন ইউরো কাপের কোয়ালিফিকেশন খেলা চলছিল। সেদিন ছিল পর্তুগালের সাথে খেলা মলটার। ভ্যালেট্টা শহরের স্টেডিয়ামে খেলা – এমন খেলায় বুঝতেই পারছেন অন্য দেশে এমন খেলায় টিকিট পাওয়া খুব চাপের। কিন্তু মলটায় এমন টেনশন কিছু নেই – যোসেফ বলল চলতো আগে, টিকিটের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। মাঠের কাছে গিয়ে কাকে ফোন করল – খানিক বাদেই হাতে টিকিট চলে এল। মলটার হয়ে গলা ফাটালাম সেদিন গ্যালারীতে বসে – এমন অভিজ্ঞতাও খুব বেশী হয় না।
লিখতে গেলে তো অনেক কিছু হয়ে যাবে – আজকে এই পর্যন্তই। মলটার আরো গল্প অন্য কোন সময় হয়ত লিখব।
ধ্যাৎ সুকি। এমন জমে গেছে, তখন শেষ করে দিলেন?
পুরো কেএলপিডি কেস!
প্রচ্ছদটা দেখতে চাই।
বড় সুন্দর লিখেছেন ভাই। একটু মেদিনার গল্প লিখুন। ছোট অলিগলি আর সেই ফনটানেলার বারানদায় কফি খেতে খেতে মলটা দেখা। রোমান জলের পাইপ? অনেক কিছু মনে পড়ে গেল
সুকি ফাঁকিবাজ হয়ে যাচ্ছে।
রঞ্জনদা, হ্যাঁ দুম করেই শেষ হয়ে গেছে এখন মনে হচ্ছে! আর একটু লিখতে হবে এই নিয়ে - লিখব সামনে
হু- এই তো একজন পোষ্ট করে দিয়েছে দেখছি প্রচ্ছদের ছবিটা!
হিরেনবাবু মনে হচ্ছে আপনি মলটা গিয়ে ভালোই এনজয় করেছেন। তবে আমার ক্ষেত্রে হয়েছি কি ওখানে গিয়ে বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম - তাই গেছি তো প্রায় সবজায়গাতেই,কিন্তু নাম মনে নেই! কারণ মনে রাখার প্রয়োজন তখন ছিল না - এই এতদিন পরে লিখতে গিয়ে স্ট্রাগল করছি।
আর 'জনগণের স্বার্থ' - আপনি যেই হোক,অনেক কৃতজ্ঞতা। মনে হচ্ছে আপনি আমার লেখা পড়েন :)
বি-দা, আপনার অবজার্ভেশন একদম উড়িয়ে দিতে পারছি না। তবে এটা পুরোপুরি সত্যিও নয়। আমি এখন ফেসবুক লেখক হবার চেষ্টা করছি। তাই বড় লেখা আর লিখি না - পার্ট বাই পার্ট লিখি। আগে শুধু গুরু-তেই লিখতাম। কিন্তু দেখলাম এখানেও রীচ বাড়ানো,কি করে আরো বেশী পাবলিকের কাছে পোঁছানো যায় সেই নিয়ে মনোযোগ দেওয়া শুরু হয়েছে (বাই দি ওয়ে তার মধ্যে খারাপ কিছু দেখি না আমি)। তাই ভাবলাম লাইকের আর রীচের চক্করেই যদি ঢুকতে হয় তাহলে ফেসবুকের থেকে ভালো কি আর আছে! ফেসবুকে একটা গ্রুপে লিখি - আপনাদের আশীর্বাদে একটা ভালো ফ্যান বেস তৈরী হয়েছে - 'দাদা আপনি কি জিনিস' 'কত কি জানেন' ,'আপনার লেখা পড়ার আশায় বসে থাকি' এমন সব বলে - বেশ ভালো লাগে শুনে। নিজেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং কেউকেটা মনে হয় (ফ্রী-তে এবং মনের আনন্দে লেখার জন্য যেগুলো খুবই জরুরী)।
সুকি খুবই ফাঁকিবাজ হয়ে গেছে। কিম্বা আমার সিন্ড্রোম ধরেছে। কিছুটা লেখার পরেই প্রচন্ড বোর হয়ে "কী হইতে কী হইল বুঝা গেল না, মোহন বাক্স হইতে বাহির হইয়া আসিল" লিখে লেখা শেষ করে দেয়। তবে আগেই বলেছি, আর যাতে ফাঁকি মারছ মার, নিমোর গল্পে ফাঁকি মারলে সুকিরই একদিন কি আমারই একদিন।
হ্যাঁ, পড়ি তো বটেই, এখনি প্রচ্ছদ খুঁজতে গিয়ে পুরনো লেখা কিছু আবার পড়লাম/ পড়ছি।
চাকরির দায়ে দুনিয়া ঘুরেছি । কোন দেশ দেখার সময় বিশেষ পাই নি । ওই তারই মধ্যে যা মনে রেখেছি। বন্ধুদের সংগে মেদিনা । বারাকা গার্ডেনস থেকে গভীর রাতে আলোকিত দ্বীপের ছবি। কোথাও থেকে দেখা দুর সিসিলির ছায়া। খুব ভাল লাগল।
ন্যাড়াদা আমাকে নিমো নিয়ে মাঝে মাঝেই থ্রেট দিচ্ছে! সিরিয়াস হতে হবে মনে হচ্ছে আমাকে